Ajker Patrika

কামু বাহিনী ফিরে আসায় কাঁপছে উত্তর-পূর্ব টঙ্গী

  • প্রায় এক দশক পালিয়ে ছিলেন, ৫ আগস্টের পর এলাকায় ফিরেছেন।
  • দুই ডজন মামলার আসামি কামরুল ইসলাম কামু।
  • তাঁর বিরুদ্ধে আটটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।
নাঈমুল হাসান, টঙ্গী (গাজীপুর) 
আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৯: ০৬
কামরুল ইসলাম কামু। ছবি: সংগৃহীত
কামরুল ইসলাম কামু। ছবি: সংগৃহীত

পালিয়ে ছিলেন প্রায় এক দশক। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গাজীপুরের টঙ্গীতে ফিরেছেন দুই ডজন মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি কামরুল ইসলাম ওরফে কামু। এলাকায় ফিরেই টঙ্গীর এরশাদনগর বস্তির নিয়ন্ত্রণ নেন তিনি। কয়েক দিনের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন টঙ্গীর উত্তর-পূর্বাঞ্চল।

টঙ্গীতে এই সন্ত্রাসীর নিজ নামেই গড়ে উঠেছে ‘কামু বাহিনী’। এরশাদনগর বস্তি ও এর আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের কাছে মূর্তিমান আতঙ্কের নাম কামু।

কামরুল ইসলাম কামু টঙ্গীর এরশাদনগর বস্তির ৪ নম্বর ব্লকের তমিজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি একসময় টঙ্গী থানা বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

এরশাদনগর এলাকার একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কামু বাহিনীতে রয়েছেন দ্বীন মোহাম্মদ দিলা, মোবারক হাসেন ওরফে পাকিস্তানি মোবারক, হিরা, আলমগীর ওরফ পোটকা আলমগীর, নাসির উদ্দিন ওরফে টাকি নাসির, ওয়াসিম, রুবেল, পারুলী মানিক, সাগর, সাদিকুল ইসলাম, সোহেল, আরিফ, বাবুল চৌধুরী, নাইমসহ অর্ধশত অস্ত্রধারী ক্যাডার। তাঁদের মধ্যে দিলা ও মোবারক কামুর প্রধান সহযোগী হিসেবে কাজ করেন।

কোটি টাকার মালিক কামু স্থানীয় ও বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ১০ আগস্ট বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য হাসান উদ্দিন সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় টঙ্গীতে ফিরেছেন কামু। আগে এরশাদনগরের ৪ নম্বর ব্লকে একটি টিনশেড বাড়িতে থাকতেন তিনি। অথচ ফিরে আসার তিন মাসের মধ্যেই টঙ্গীর দত্তপাড়া চানকিটেক এলাকার পাঁচ কাঠা জমি, এরশাদনগর এলাকায় সরকারি জমি দখল, প্রায় ৫০ লাখ টাকার একটি প্রাইভেট কারসহ কয়েক কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়ে গেছেন কামু।

কামুর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, কামুর বাবা তমিজ উদ্দিন ছিলেন ডাকাত দলের সদস্য। তমিজ উদ্দিন তাঁর পরিবার নিয়ে মুন্সিগঞ্জে থাকতেন। প্রায় চার দশক আগে ডাকাতির ঘটনায় স্থানীয়রা তমিজ উদ্দিনের বসতবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তমিজ টঙ্গীর এরশাদনগর এলাকার ওই বস্তিতে ঠাঁই নেন। কামু ১৯৮০ সালে টঙ্গীতে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। কয়েক বছর পর দল পাল্টে বিএনপিতে যোগ দেন। তবে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে তাঁকে দেখা যায়নি।

অস্ত্র বেচাকেনা, হত্যা ও মাদক কারবারে কামু

২০০৪ সালে টঙ্গীতে অবৈধ অস্ত্র বেচাকেনা করতে গিয়ে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) কাছে একটি পিস্তলসহ কামু গ্রেপ্তার হন। ওই ঘটনার ১০ বছর পর বিদেশি পিস্তলসহ তৎকালীন টঙ্গী মডেল থানা-পুলিশের কাছে (বর্তমানে টঙ্গী পূর্ব থানা) গ্রেপ্তার হন তিনি। এ ছাড়া ২০১৪ সালে মাদক কারবারের তথ্য পুলিশকে দেওয়ায় পুলিশের সোর্স রাসেল, র‍্যাবের সোর্স ফয়সাল এবং ২০১৬ সালে মাদক বেচাকেনাকে কেন্দ্র করে এরশাদনগর এলাকায় শরিফ হোসেন ও জুম্মনকে কুপিয়ে হত্যা করেন কামু।

স্থানীয়রা জানান, এলাকায় ফিরেই কামু তাঁর বাহিনী দিয়ে টেকনাফ থেকে ইয়াবা বড়ি এনে বিক্রি শুরু করেছেন। মোবারক হোসেন ও নাসির উদ্দিন ওরফে টাকি নাসির নামের দুজন কামুর হয়ে এই কাজ করেন। কামুর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে ১১টি মামলা রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

আধিপত্য বিস্তারে হামলা

কামু বাহিনীর সদস্যরা এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও মাদক স্পট দখলে নিতে প্রায়ই সন্ধ্যার পর এরশাদনগর ও এর আশপাশের এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র, রামদা, হকিস্টিক, চাপাতি নিয়ে মহড়া দেয়। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাতে এরশাদনগর বস্তি এলাকায় যুবদলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের ভাগনে, রিকশার গ্যারেজের মালিক মঞ্জুরের কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের সংঘর্ষের সময় কামু বাহিনীর সদস্যরা ককটেল হামলা ও কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এমনকি টঙ্গী পূর্ব ও পশ্চিম থানা-পুলিশের কয়েকটি দলের উপস্থিতিতে দ্বিতীয় দফার হামলায় পুলিশের একটি গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৫ জন আহত হন।

এ ছাড়া গাজীপুর মহানগরীর ৪৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের ভাগনে হৃদয়কে (২৯) কুপিয়ে জখম করে কামু বাহিনী। আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কামরুল ইসলাম কামু যুবদলের নাম ভাঙিয়ে এরশাদনগর ও তার আশপাশের এলাকায় মাদক কারবার, চাঁদাবাজি, দখলবাজি করছে। আমার ভাগনের কাছেও চাঁদা দাবি করেছে।’ আনোয়ার জানান, এ ঘটনায় তাঁর সমর্থক মঞ্জু বাদী হয়ে টঙ্গী পূর্ব থানায় একটি চাঁদাবাজি মামলা করেছেন।

এর আগে গত শনিবার রাতে হিমারদিঘী এলাকার দুটি রিকশার গ্যারেজ দখল করে নেন কামু। পরে গ্যারেজমালিক রহিমকে তুলে নিয়ে হাতুড়িপেটা করে ফাঁকা স্ট্যাম্পে সই নেন। এ ঘটনায় টঙ্গী পূর্ব থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পর কামুর লোকজন রহিমের বাড়িতে হামলা চালায় বলে জানান ভুক্তভোগী। এখন তিনি পরিবার নিয়ে পালিয়ে আছে বলেও জানান।

এর আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর এরশাদনগর ৩ নম্বর ব্লকে ব্যবসায়ী ও যুবদলের কর্মী স্বপন মিয়াকে বেধড়ক পিটিয়ে হাত ও পা ভেঙে দেয় কামুর বাহিনী। কামুর বিরুদ্ধে একাধিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকলেও পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

টঙ্গী পূর্ব থানার তথ্য বলছে, অবৈধ অস্ত্র বেচাকেনা করায় ৩টি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ১১টি, বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে ২টি, জোড়া খুনসহ ৩টি হত্যা, চাঁদাবাজির একটি এবং সরকারি সম্পত্তি দখলের অভিযোগে ১টি, দাঙ্গা-হাঙ্গামার অভিযোগে ৩টি মামলাসহ অন্তত ২৪টি মামলা রয়েছে কামুর বিরুদ্ধে।

টঙ্গী পূর্ব থানা-পুলিশের এসআই আবুল হোসেন বলেন, ‘আমি থানায় দায়ের করা মামলার (জিআর) গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিষয়টি দেখি। কামরুল ইসলাম কামুর বিরুদ্ধে আটটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। তিনটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ফেরতের কাগজ তাঁর পরিচিত লোকের মাধ্যমে থানায় জমা দিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে আরও পাঁচটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।’

অভিযুক্ত কামরুল ইসলাম কামু বলেন, ‘আমি টঙ্গী পূর্ব থানা যুবদলের সমর্থক। আমি ভবিষ্যতে গাজীপুর মহানগরীর ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছিলাম। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে একটি পক্ষ। আমি এলাকার বাইরে রয়েছি, এলাকায় এসে সব বলব।’

টঙ্গী পূর্ব থানা যুবদলের আহ্বায়ক আকবর হোসেন ফারুক বলেন, বর্তমানে টঙ্গী পূর্ব থানা যুবদলে কামরুল ইসলাম কামুর কোনো পদ নেই। যুবদলের নাম ভাঙিয়ে কেউ অন্যায় বা অপকর্ম করলে সেই দায় যুবদল নেবে না।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য হাসান উদ্দিন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁর মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার অপরাধ (দক্ষিণ) এম এন নাসির উদ্দিন বলেন, কামরুল ইসলাম কামুকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুরে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে আগুন

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি 
ক্ষতিগ্রস্ত বাস। ছবি: আজকের পত্রিকা
ক্ষতিগ্রস্ত বাস। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের রাজেন্দ্রপুর বাজারের সার্ভিস লেনে দাঁড়িয়ে থাকা বলাকা পরিবহনের একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার দিবাগত শেষরাতে এই ঘটনা ঘটে। আগুন দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেয়। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় পুলিশ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে গাড়িটির আংশিক ক্ষতি হয়েছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, দুর্বৃত্তদের শনাক্তে তদন্ত চলছে। তবে এখনো কোনো মামলা হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাবি ছাত্রলীগের সাবেক নেতার বাড়িতে ভাঙচুর-ককটেল হামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ভাঙচুর করা আসবাব। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভাঙচুর করা আসবাব। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খালেদ হাসান বিপ্লবের বাসায় ভাঙচুর চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ছাড়া বাড়িটিতে ককটেল হামলাও চালানো হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত প্রায় ৩০ মিনিট বাড়িটিতে ভাঙচুর চলে।

খালেদ হাসান বিপ্লবের বাড়ি রাজশাহী নগরের মতিহার থানার কাজলা নতুন বউবাজার এলাকায়। হামলার সময় তাঁর বাবা হেলাল উদ্দিনকে (৬২) একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়েছিল। আর মা খালেদা বেগমকে (৫৩) হাতুড়িপেটা করা হয়েছে বলে তাঁরা অভিযোগ করেন।

খালেদ হাসান বিপ্লব গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে বাড়িতে নেই। তাঁকে খুঁজতে গিয়ে চালানো এই হামলায় বাড়িতে থাকা তিনটি মোটরসাইকেল, টেলিভিশন, ফ্রিজ, এসিসহ বাড়ির সব আসবাব ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা চরম আতঙ্কের মধ্যে আছেন।

পরিবারের সদস্যরা জানান, রাতে ১০০ থেকে ১৫০ জন ব্যক্তি তাঁদের বাড়িতে আসে। তখন বাইরে মূল ফটকে তালা দেওয়া থাকায় তারা ঢুকতে পারছিল না। পরে ৩০-৪০ জন প্রাচীর টপকে ভেতরে ঢোকে। এরপর ভবনের সিঁড়ির পাশের আরেকটি গেটের তালা ভেঙে ভেতরে ঢোকে। দোতলায় উঠে তারা খালেদ হাসান বিপ্লবকে খুঁজতে থাকে।

খালেদকে না পেয়ে বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। বাধা দিতে গেলে খালেদের মা খালেদা বেগমকে হাতুড়িপেটা করা হয়। একপর্যায়ে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। খালেদের মায়ের অনুরোধে পরে আগুন না দিয়ে ওই ব্যক্তিরা ফিরে যায়। তবে নামার সময় নিচতলায় থাকা তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন দিয়ে যায় তারা। এ ছাড়া তখন বাড়িটি লক্ষ্য করে কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

পরিবারের সদস্যরা ঘটনার পর ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশের টহল দলের তিনজন সদস্য রাতে বাড়িটি দেখে যান। তাঁরা খালেদা বেগমকে আগে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন। তবে ভয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে হাসপাতালে যেতে পারেননি খালেদা বেগম।

জানতে চাইলে নগরের মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মালেক বলেন, ‘আমি রাতে থানায় ছিলাম না। ঘটনার বিষয়ে আমার জানা নেই। আমার কাছে কেউ অভিযোগও করেনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজধানীতে ঝটিকা মিছিলে অর্থায়নের অভিযোগে আওয়ামী লীগের ১০ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীতে ঝটিকা মিছিলে অর্থায়নের অভিযোগে আওয়ামী লীগের ১০ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

রাজধানী ঢাকায় ঝটিকা মিছিল আয়োজন ও অর্থায়নের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১০ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

আজ রোববার সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপকমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, ডিবির একাধিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে।

গত এক সপ্তাহ ধরে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মসূচি এবং আগামীকাল ১৭ নভেম্বর সোমবার ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ কয়েকজন আসামির মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণা করবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যেই রাজধানীসহ সারা দেশে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং ককটেল বিস্ফোরণসহ বিভিন্ন ধরনের সহিংসতার ঘটনা ঘটছে।

সহিংসতা মোকাবিলায় পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট একযোগে কাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কোথাও কোথাও বিজিবিও মোতায়েন করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজধানীর তিন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ, বাসে আগুন, এক পথচারী আহত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১২: ৫২
শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে হাজারীবাগে বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ছবি: সংগৃহীত
শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে হাজারীবাগে বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীতে গতকাল শনিবার রাত থেকে আজ রোববার সকাল পর্যন্ত তিনটি স্থানে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় একজন পথচারী আহত হয়েছেন। এ ছাড়া রাতেই একটি বাসে আগুনও দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

আজ রোববার সকাল ৮টার দিকে রাজধানীর নিউ ইস্কাটনের ওয়াক্ফ ভবনের সামনে ককটেল বিস্ফোরণে আহত হন আবদুল বাসির (৫০)। তিনি প্রতিদিনের মতো হেঁটে বাংলামোটরে অফিসে যাওয়ার সময় হঠাৎ বিস্ফোরণে তার পা ও হাতে জখম হয়। তাঁর ধারণা, ফ্লাইওভার থেকে ককটেল ছুড়ে মারা হয়ে থাকতে পারে।

এর আগে রাত ৮টা ২০ মিনিটের দিকে আগারগাঁওয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ভবনের সামনে মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।

শেরে বাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাউল হক বলেন, ককটেল বিস্ফোরণের পর ওই এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে কাজ চলছে।

এদিকে শনিবার রাত ১১টার দিকে বিমানবন্দর রেলস্টেশনের কাছে আরেকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে।

এসব ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। সংশ্লিষ্ট থানাগুলো ইতিমধ্যে ঘটনাগুলোর তদন্ত শুরু করেছে।

একই রাতে হাজারীবাগ বেড়িবাঁধ এলাকায় শেখ ফজিলাতুন্নেসা কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে আগুন লাগিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। রাত ১২টার দিকে ঘটনার পর মুহূর্তেই বাসটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত