Ajker Patrika

মোবাইল কোর্টের খবরে যাত্রী নামিয়ে উল্টো পথে যাচ্ছে বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২১, ২০: ২১
মোবাইল কোর্টের খবরে যাত্রী নামিয়ে উল্টো পথে যাচ্ছে বাস

ডিজেলের দাম বাড়ায় বেড়ে গেছে বাস ভাড়া। সরকার-নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে চলছে অভিযান। তবে মোবাইল কোর্টের খবর পেলেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে রাস্তা। যাত্রীদের অভিযোগ, মোবাইল কোর্টের খবর পেয়ে যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে উল্টো ঘুরিয়ে চলে যাচ্ছে বাস।

আজ সোমবার রাজধানীর রামপুরা আবুল হোটেল ও আরামবাগের নটর ডেম কলেজের সামনে দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত মোবাইল কোর্ট বা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রফিকুল হক ও ড. সঞ্জীব দাসের নেতৃত্বে এই দুটি এলাকা অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ১৪টি মামলায় ২৯ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। 

মোবাইল কোর্টের অভিযান শুরুর কিছুক্ষণ পর থেকেই রাস্তায় কমতে থাকে বাসের সংখ্যা। কয়েকজন অভিযোগ করেন, মৌচাক এবং মালিবাগ রেলগেট এলাকায় এসেই অনেক বাস যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছে। কেন নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তাদের কোন সদুত্তর দিতে পারেনি বাস চালকেরা।

এদিকে রামপুরা আবুল হোটেলের সামনে রাইদা, অনাবিল, ভিক্টর ক্ল্যাসিক, আকাশসহ কয়েকটি বাসে নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে তাদের জরিমানা করা হয়েছে। যাত্রীদের অভিযোগ, যেখানে ২ টাকা বেড়েছে সেখানে ৫ টাকা বাড়তি নেওয়া হচ্ছে। ৫ টাকার জায়গায় ১০ টাকা বাড়তি নেওয়া হচ্ছে।

আলমগীর কবির বলেন, বাসাবো থেকে রামপুরা যাওয়ার জন্য রাইদা বাসে উঠেছিলাম। মালিবাগ রেলগেট আসার পর বাস থেকে সবাইকে নামিয়ে দেয়। জিজ্ঞেস করলে তারা কিছু না বলেই বাস ঘুরিয়ে চলে যায়। 

ব্যবসায়ী সাদমান আহমেদ রাসেল অভিযোগ করেন, যাত্রাবাড়ী থেকে তুরাগের একটি বাসে করে আসার সময় মালিবাগ রেলগেটে তাকে নামিয়ে দেয় বাসটি। তিনি বলেন, বাসের সামনে সিএনজি চালিত লেখা স্টিকার লাগানো থাকলেও অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছিল। বেশ কয়েকজনের সঙ্গে বাসে কন্ডাক্টরের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডাও হয়। আবুল হোটেলের সামনে মোবাইল কোর্ট বসেছে জেনে মালিবাগ রেলগেটে এসে জানায় বাস নষ্ট হয়ে গেছে। তখন সবাই নেমে যেতে বাধ্য হয়। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই বাসটি উল্টো ঘুরে চলে যায়।

সিটিং সার্ভিস বন্ধ হলেও বেশ কিছু বাস এখনো চেক, সিটিং সার্ভিসের নামে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে বলে যাত্রীরা মোবাইল কোর্টে অভিযোগ করেন। বেশির ভাগ বাসেই এখনো লাগানো হয়নি স্টিকার। সিএনজি চালিত স্টিকার লাগানো তুরাগ পরিবহনের যাত্রীরা নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। 

ডিএমপির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্জীব দাস বলেন, যারা অনিয়ম করছে তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। যেসব বাস ভাড়া বেশি নিচ্ছে তাদের সর্বোচ্চ দশ হাজার টাকা জরিমানার নিয়ম থাকলেও সবকিছু বিবেচনা করে তিন থেকে চার হাজার টাকা জরিমানা করা হচ্ছে। ৮টি গাড়িকে ১৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বাড়তি ভাড়া নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের অভিযান অব্যাহত থাকবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চায়ের দোকানে চলে একটি বাতি-ফ্যান, বিদ্যুৎ বিল এল সাড়ে ৫৫ হাজার টাকা

টঙ্গিবাড়ী (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি 
বিদ্যুৎ বিলের কাগজ হাতে লিটুখান বাজারের দুই দোকানদার। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিদ্যুৎ বিলের কাগজ হাতে লিটুখান বাজারের দুই দোকানদার। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাজারে ছোট একটি চায়ের দোকান চালান বাদশা ব্যাপারী। দোকানে কেবল একটি বাতি ও একটি ফ্যান চালানো হয়। সাধারণত তাঁর মাসিক বিল ২০০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে আসে। কিন্তু চলতি মাসে তাঁর হাতে এসেছে ৫৫ হাজার ৫৫০ টাকার বিদ্যুৎ বিল। বিল হাতে পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।

মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার দিঘিরপাড় ইউনিয়নের লিটুখান বাজারের দোকানদার বাদশা ব্যাপারী। বিদ্যুৎ বিলের ব্যাপারে বাদশা বলেন, ‘এটা অসম্ভব। আমার দোকানে এত বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগই নেই। বিলের নম্বরে ফোন করলে শুধু অফিসে যেতে বলে।’

এমন ‘ভুতুড়ে’ বিদ্যুৎ বিল পেয়েছেন লিটুখান বাজারের আরেক দোকানদার শহীদ খান। বাজারে খাবারের দোকান রয়েছে তাঁর। দোকানে দুটি বাতি, একটি ফ্যান ও একটি ছোট ফ্রিজ ব্যবহার করা হয়। প্রতি মাসে যেখানে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা বিল দিতেন, সেখানে এবার বিল এসেছে ২৪ হাজার ২১৬ টাকা। শহীদ বলেন, ‘বিলটা দেখে দাঁড়াতেই পারছিলাম না। এমন বিল হলে দোকান চালানোই কঠিন হয়ে যাবে।’

বাজারের অন্য ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, কয়েক মাস ধরে এলাকায় এমন অস্বাভাবিক বিল আসছে। তাঁদের ধারণা, মিটার রিডিং অথবা বিলিং পদ্ধতিতে গুরুতর ত্রুটি রয়েছে। দ্রুত তদন্ত করে সঠিক হিসাব ঠিক করার পাশাপাশি দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

বিল প্রস্তুতকারী কর্মী সুমি রানী দাস বলেন, সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের অফিসে যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘তারা অফিসে এলে আমরা সরেজমিন যাচাই করে বিল পুনরায় বিবেচনা করব।’

টঙ্গিবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. আব্দুস ছালাম বলেন, ‘মিটার রিডিং বা বিলিং সিস্টেমে ত্রুটি থাকতে পারে। আমরা সরেজমিন যাচাই করে দ্রুত সমাধানের পদক্ষেপ নেব। ভোক্তাদের অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাসার বাথরুমে পড়ে ছিল নারী প্রভাষকের লাশ, মাথায় আঘাতের চিহ্ন

বগুড়া প্রতিনিধি
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার এক বাসা থেকে ফাবিয়া তাসনিম সিধি (২৯) নামের এক প্রভাষকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

মৃত ফাবিয়া বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক। বছর দেড়েক আগে তিনি কলেজটিতে যোগদান করেন।

এই তথ্য নিশ্চিত করে বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান জানান, ফাবিয়া অবিবাহিত। তিনি বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ডা. রাশেদুল হাসানের বাড়ির তিনতলায় ভাড়া বাসায় তাঁর মায়ের সঙ্গে থাকতেন। কয়েক দিন আগে তাঁর মা গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে যান। গতকাল দুপুরের পর থেকে মেয়েকে ফোনে না পাওয়ায় তাঁর মা রাত ১০টার দিকে বগুড়া আসেন। অনেক ডাকাডাকি করে দরজা না খোলায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে বাসার বাথরুমে ফাবিয়ার লাশ দেখতে পায়।

পুলিশ জানায়, মৃত ব্যক্তির নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিল এবং মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন ছাড়াও জিবে দাঁত দিয়ে কামড় দেওয়া ছিল। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অটোরিকশাকে চাপা দিল বাস, প্রাণ গেল তিনজনের

ফরিদপুর প্রতিনিধি
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাসের চাপায় একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় শিশুসহ আরও চারজন আহত হয়। আজ শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল মিয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন নারী ও একজন পুরুষ। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালান। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।  

হাইওয়ে থানার এসআই সোহেল মিয়া বলেন, অটোরিকশাটি ভাঙ্গা থেকে টেকেরহাটের উদ্দেশে যাচ্ছিল। কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা নিউ মডার্ন পরিবহনের একটি বাস অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এই ঘটনায় বাসটি আটক করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় ৫৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চর এলাকার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছে কোস্ট গার্ড। এ সময় একটি নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আটক কয়েকজন মাঝিমাল্লার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোস্ট গার্ড হাতিয়ার একটি দল এই অভিযান চালায়। জব্দ করা জাটকাগুলোর মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকা।

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. আবুল কাশেম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোস্ট গার্ড। অভিযানে মেঘনা নদীর জাগলার চর এলাকায় একটি কাঠের নৌকায় তল্লাশি করা হয়। ওই নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। এ সময় মাঝিদের মুচলেকা নিয়ে নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ মাছগুলো মৎস্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এতিমখানা ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত