Ajker Patrika

বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙিনায় ছাত্রী হেনস্তা কি তবে বৈধ? 

মন্টি বৈষ্ণব, ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙিনায় ছাত্রী হেনস্তা কি তবে বৈধ? 

সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হলেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙিনা ছাত্রীদের জন্য অনিরাপদ হয়ে পড়ছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়টির ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে আখ্যা পাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেন, বাস, ক্যাম্পাসের ভেতরে এমনকি ছাত্রীদের হলের সামনেই যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। 

প্রশ্ন হচ্ছে নিজের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রীরা কেন অনিরাপদ থাকবেন? তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্ব-কর্তব্য কী? তারা কি এসব ঘটনায় অপরাধীদের শাস্তির ব্যবস্থা না করে সর্বদাই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার কাজে নিয়োজিত থাকবেন? 

যে ঘটনার কথা বলতে চাই, সেটি খুব বেশি দিন আগের ঘটনা নয়। গত রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে পাঁচজন তরুণের মাধ্যমে একজন ছাত্রী যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। ভুক্তভোগীর মতে, ওই পাঁচজন তরুণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। নিপীড়ক শিক্ষার্থীরা এমনকি এই যৌন নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করেছেন। এ সময় ভুক্তভোগীর সঙ্গে থাকা বন্ধু প্রতিবাদ করলে তিনিও তাদের নির্যাতনের শিকার হন। পরে ভুক্তভোগীর ও তাঁর বন্ধুর মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে দুজনকে ছেড়ে দেয় তারা। 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের যৌন নিপীড়নের ঘটনা এটিই প্রথম না। এর আগেও এমন হয়েছে। এর আগে ছাত্রলীগের চার কর্মীর বিরুদ্ধে দুই ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এলেও ক্ষমতাধরদের বিরুদ্ধে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিতে পারেনি। আগের মতো এবারও তারা নিষ্ক্রিয়। এতে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনই প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। 

প্রীতিলতা হল প্রাঙ্গণএবারের ঘটনার পর সহপাঠীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া অনাচারের বিচার চাইতে আন্দোলনে নামেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের কাছে জানতে চান, রাত ১০টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের হেনস্তা করা বৈধ কিনা? আন্দোলনের একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় না এনে ছাত্রীদের রাতে হলে ফেরার সময়সীমা নির্ধারণ করে দেন। আন্দোলনরত বিভিন্ন ছাত্রী হলের ছাত্রীরা প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে উপাচার্য বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। ছাত্রীদের এই আন্দোলনে অংশ নিচ্ছেন ছাত্ররাও। প্রতিবাদে শামিল হন শিক্ষকেরাও। 

বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের খবরে প্রকাশ—আন্দোলনের একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম মনিরুল হাসান অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা না করলে প্রক্টরিয়াল বডিসহ পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এ আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে চারটি দাবি তুলে ধরেছেন। দাবিগুলো হলো—
 ১. ছাত্রীদের হলে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোনো সময়সীমা না রাখা
 ২. যৌন নিপীড়ন সেল বাতিল করে নতুন সেল গঠন করা
 ৩. আগামী চার কর্মদিবসের মধ্যে চলমান ঘটনাগুলোর বিচার ও সুষ্ঠু সমাধান করা
 ৪. সমাধানে ব্যর্থ হলে প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ

এর মধ্যে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বাদী হয়ে হাটহাজারী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে অজ্ঞাত পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন। এ সময় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ সভাপতি রেজাউল হককে শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেওয়া হয়। গত মঙ্গলবার ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের স্বাক্ষর করা এ নোটিশ দেওয়া হয়। ধারণা করা হচ্ছে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ সভাপতি রেজাউল হকের এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা রয়েছে। 

সব মিলিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিয়ে জোর সংশয় কাজ করছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। প্রশাসনের নির্লিপ্ততা তাদের আরও বেশি শঙ্কিত করে তুলেছে। এ বিষয়ে আন্দোলনরত পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আশরাফী নীতু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ক্যাম্পাসে একের পর এক যৌন নিপীড়নের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। যৌন নিপীড়নের এসব ঘটনার কোনোটার বিচার হচ্ছে না। অপরাধী বুক ফুলিয়ে দাপট দেখিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এতে অন্যরা এ ধরনের কাজে ভয় না পেয়ে বরং উৎসাহিত হচ্ছে। বলা যায়, বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে। আবার অন্যদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে হলে ফেরার সময়সীমা নির্ধারণ করে ছাত্রীদের বন্দী করে রাখার পাঁয়তারা চলছে, যা মেনে নেওয়া ছাত্রীদের পক্ষে সম্ভব নয়। যৌন নিপীড়নের ঘটনার একমাত্র সমাধান হতে পারে প্রতিটি ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা।’ 

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি জানিয়েছেনআন্দোলনের মূল লক্ষ্য কী জানতে চাইলে এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘আন্দোলন করছি বিচার পাওয়ার জন্য। ছাত্র-ছাত্রী নির্বিশেষে সবার জন্যই নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতের জন্য। আমরা ক্যাম্পাসে নির্ভয়ে চলাফেরা করতে চাই।’ 

অথচ একটি শঙ্কামুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার উপাদান কিন্তু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে। শিক্ষার্থীদের, বিশেষত ছাত্রীদের যৌন হয়রানি থেকে মুক্ত থাকতে এবং আশ্রয় হিসেবে দুটি আলাদা কমিটি রয়েছে। এর একটি ‘যৌন হয়রানি নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্র’ নামের সাত সদস্যের কমিটি। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক প্রণীত ‘উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ নীতিমালা’ অনুসারে এ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার (প্রো–ভাইস চ্যান্সেলর)। এ ছাড়া উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের নির্দেশনায় ২০১৮ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ সদস্যের একটি ‘অভিযোগ কমিটি’ গঠন করা হয়। এ কমিটির আহ্বায়ক কাজী শামীমা সুলতানা (পদার্থ বিভাগ)। এ পর্যন্ত এই কমিটিতে তিনটি ঘটনার অভিযোগ এসেছে। ঘটনা তিনটি হলো—১. খালেদা জিয়া হলের একজন ছাত্রীর হেনস্তা; ২. ফরেস্ট্রি বিভাগের শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রী হেনস্তা এবং ৩. ছাত্রলীগের চারজন কর্মী কর্তৃক দুই ছাত্রী হেনস্তা। 

এ দুই কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. লায়লা খালেদা। তাঁর কাছে এ দুই কমিটির কাজের পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নিপীড়ন সম্পর্কিত ঘটনাগুলো প্রথমে অভিযোগ কমিটিতে আসে। পরে অভিযোগ কমিটির পক্ষ থেকে অভিযোগপত্রগুলো যাচাই-বাছাই করে ঊর্ধ্বতন কমিটি; অর্থাৎ, যৌন হয়রানি নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রে জমা হয়। এ পর্যন্ত তিনটি অভিযোগ পেয়েছি। গতকাল আমরা এই তিনটি অভিযোগ চূড়ান্তকরণের জন্য বৈঠকে বসি। এখন অভিযোগগুলোর চূড়ান্ত পর্যায়ে যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। আগামী রোববার বা সোমবার আমরা এ অভিযোগপত্রের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করব।’ 

অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন দীর্ঘ সময় পর প্রকাশের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে ড. লায়লা খালেদা বলেন, ‘করোনাকালসহ বিভিন্ন কারণে আমরা দুই কমিটির সদস্যরা সভা করতে পারিনি।’ সাম্প্রতিক ছাত্রী হেনস্তার ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই ঘটনা তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এই তদন্ত কমিটি চার কার্যদিবসে তদন্ত প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিযোগ কমিটির কাছে জমা দেবে। অভিযোগ কমিটির পক্ষ থেকে সে প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই করে ঊর্ধ্বতন কমিটির কাছে জমা দেওয়া হবে।’ 

কিন্তু এ ধরনের ঘটনা তো আর একটি-দুটি হয়নি। আগের ঘটনাগুলোর কোনো বিচার সেভাবে না হওয়ায় দায় বেড়েছে। আজ তাই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সরাসরি প্রশ্ন তুলছেন—রাত ১০টার পর ছাত্রী হেনস্তা বৈধ কি-না। কারণ, বিচার না করে, অভিযুক্তদের শাস্তির আওতায় না এনে প্রশাসনই প্রকারান্তরে এই বৈধতা দিয়ে বসে আছে। 

এ থেকে মুক্তির উপায় তবে কী? এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুবর্ণা মজুমদার বলেন, ‘আমাদের রাষ্ট্রজুড়ে বিচারহীনতার সংস্কৃতি বিরাজ করছে। এই ধরনের ঘটনায় অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছে। ভুক্তভোগীরা বিচার পাচ্ছেন না। এই বিচারহীনতার সংস্কৃতির প্রভাব পড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও। এ কারণে এ ধরনের ঘটনাগুলো ঘটছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া ঘটনা, আগের সব ঘটনাকে ছাপিয়ে গেছে। ভুক্তভোগীকে বিচারের আশায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এটা সেই বিচারহীনতার সংস্কৃতির ফলাফল।’ 

এবারের ঘটনায় জড়িত দুজনকে শনাক্তের কথা অবশ্য আজ শুক্রবার জানিয়েছে চবি প্রশাসন। যদিও সংশ্লিষ্ট থানা এখনো কিছু জানে না বলে জানিয়েছে। শনাক্ত দুজনের নাম-পরিচয়ও প্রশাসন প্রকাশ করেনি। এদিকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে অন্যদের নাগালের বাইরে। প্রশাসন এ ক্ষেত্রে ওই শিক্ষার্থীর নিরাপত্তার প্রশ্নটিকে সামনে আনলেও এ নিয়েও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। 

এই ধরনের ঘটনায় প্রশাসনের কার্যকর ভূমিকা নিতে না পারার কারণ সম্পর্কে অধ্যাপক সুবর্ণা মজুমদার বলেন, ‘প্রশাসন এ ধরনের ঘটনায় পদক্ষেপ নিতে পারছে না। কারণ প্রশাসনে যারা দায়িত্বে থাকেন, তাঁরা আসলে ক্ষমতাকাঠামোর কাছাকাছি থাকতে চান। স্বাভাবিকভাবে এখানে তাঁদের ব্যক্তিগত স্বার্থ জড়িত। এই ব্যক্তিগত লাভের কারণে তাঁরা ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। তাই এই ধরনের ঘটনায় প্রশাসন নির্লিপ্ত থাকেন। আর এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন।’ 

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও তাদের প্রতি সমর্থন জানানো শিক্ষক—সবার মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ নিয়ে একটা সংশয় রয়েছে। পূর্ব অভিজ্ঞতা ভালো না হওয়ার কারণেই এমন সংশয়। এ নিয়ে সুবর্ণা মজুমদার বলেন, ‘এই তদন্ত কমাটির তো দরকার ছিল না। কারণ, এ ধরনের ঘটনার তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি কমিটি আছে। একটি অভিযোগ কমিটি; আরেকটি যৌন হয়রানি নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্র। কর্তৃপক্ষ কেন এই দুটি কমিটিকে কার্যকর করছে না। কেন এই দুই কমিটিকে পাশ কাঠিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো? এতে বোঝা যাচ্ছে যে, অতীতের ঘটনাগুলোর মতো এই তদন্ত কমিটির মাধ্যমে সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনাও ধামাচাপা দেওয়া হবে।’ 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ঘটনা সারা দেশের শিক্ষার্থীদেরই আলোড়িত করেছে। সারা দেশের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিষয়টি নিয়ে বিচলিত বোধ করছেন। এ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক কাবেরী গায়েন বলেন, ‘প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না কারণ, প্রশাসন সরকার দলীয় এবং অভিযুক্তরাও ছাত্রলীগের বলে জানা যাচ্ছে। যাদের অনুকম্পায় সরকার-দলীয় প্রশাসন ক্ষমতায় টিকে থাকে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সাহস প্রশাসনের নেই বলেই মনে হয়। ঘটনার চার-পাঁচ দিন পার হয়ে গেলেও তাই অভিযুক্তদের ধরার সাহস হয়নি। বরং ছাত্রীদের হলে ঢোকার ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তাই নারী নির্যাতনকারীদের নয়, প্রশাসন শাস্তি দিতে চায় সব হলের ছাত্রীদের। এর মাধ্যমে নিজেরাই প্রমাণ করেছে যে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের নিরাপত্তা নেই।’ তিনি বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা আগেও ঘটেছিল। তখন সামাজিক কারণে কেউ প্রকাশ করত না, চেপে যেত। এখন ছাত্রীরা প্রতিবাদ করছেন। আমি বরং বলব, এত প্রতিবাদ সত্ত্বেও এই ধরনের ঘটনা কমছে না। কারণ যখন যে দল রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকে, তাদের অঙ্গসংগঠনের ছেলেরা এসব কাজে নেতৃত্ব দেয়। আর প্রশাসন নিজেদের গদি বাঁচানোর স্বার্থে তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারে না। নির্যাতিতকেই অভিযুক্ত করা হয় বারবার। দুঃখজনক যে, শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই কাজ করে চলেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

ফলের দোকানদার ও বেকার ছেলে: অস্ট্রেলিয়ার সৈকতে হামলাকারী সম্পর্কে যা জানা গেল

হাদিকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের পথে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শরীয়তপুরের ৩ আসন: আওয়ামী লীগের ঘাঁটি দখলে মরিয়া বিএনপি-জামায়াত

  • শরীয়তপুর-১ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীর বিরুদ্ধে সরব সাবেক এমপির অনুসারীরা।
  • নেতা-কর্মীদের নিয়ে এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
শরীয়তপুর প্রতিনিধি
শরীয়তপুরের ৩ আসন: আওয়ামী লীগের ঘাঁটি দখলে মরিয়া বিএনপি-জামায়াত

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত শরীয়তপুরে এবার বদলে গেছে নির্বাচনী সমীকরণ। জুলাই অভ্যুত্থানের পর বিদ্যমান বাস্তবতায় জেলার তিনটি আসনই নিশ্চিত করতে চায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। শরীয়তপুর-১ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী সাঈদ আহমেদ আসলামের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে দফায় দফায় সড়ক অবরোধ করেছে দলের অপর অংশ। তবে অন্য দুই আসনে এমন বিরোধ নেই। সবকটি আসনেই নেতা-কর্মীদের নিয়ে এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন বিএনপি ও জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীরা।

শরীয়তপুর-১: স্বাধীনতার পর একবারই এখানে জয় পায় বিএনপি। সেটি ছিল ১৯৭৯ সালে। এর বাইরে বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর দখলে ছিল এটি। শরীয়তপুর সদর ও জাজিরা নিয়ে গঠিত আসনটিতে এবার বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী সাঈদ আহমেদ আসলাম। তিনি জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং শরীয়তপুর-৩ আসনের বাসিন্দা। তবে তাঁর প্রাথমিক মনোনয়ন মেনে নিতে নারাজ আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি সরদার এ কে এম নাসির উদ্দীন কালুর অনুসারীরা। সাঈদ আহমেদ আসলামের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে দফায় দফায় সড়ক অবরোধ করেছেন তাঁরা। দলীয়ভাবে মীমাংসা না হলে শেষ পর্যন্ত নাসির উদ্দীন কালু স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন।

জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি ড. মোশারফ হোসেন মাসুদ। সাঈদ আহমেদ আসলাম ও মোশারফ হোসেন মাসুদ দুজনই নেতা-কর্মীদের নিয়ে ব্যাপক প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস থেকে জালালুদ্দীন আহমদ, এনসিপি থেকে মো. আব্দুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন থেকে মুফতি তোফায়েল আহমেদ কাসেমী, গণঅধিকার পরিষদ থেকে অ্যাডভোকেট খবির উদ্দিন মনোনয়ন পেতে পারেন।

শরীয়তপুর-২: নড়িয়া ও সখিপুর থানা নিয়ে গঠিত আসনটি বরাবরই আওয়ামী লীগের দখলে ছিল। শুধু ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে দুবার বিজয়ী হন জাতীয় পার্টির প্রার্থী। এবার এখানে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী দলের জেলা সভাপতি ও সাবেক এমপি শফিকুর রহমান কিরণ। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামের (এনডিএফ) সেক্রেটারি ডা. মাহমুদ হোসেন বকাউল। দুজনই এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভাসহ নানাভাবে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস থেকে মো. দবির হোসেন শেখ, ইসলামী আন্দোলন থেকে মুফতি মো. ইমরান হোসাইন এবং গণঅধিকার পরিষদ থেকে আক্তারুজ্জামান সম্রাট মাঝি মনোনয়ন পেতে পারেন।

শরীয়তপুর-৩: স্বাধীনতার পর বেশির ভাগ সময়েই এখানে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। শুধু ১৯৭৯ সালে একবার মুসলিম লীগ, ১৯৮৬ সালে একবার জাতীয় পার্টির প্রার্থী বিজয়ী হন। গোসাইরহাট, ডামুড্যা ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার একাংশ নিয়ে গঠিত আসনটিতে এবার বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী তারেক রহমানের সাবেক একান্ত সচিব মিয়া নুরুদ্দিন আহাম্মেদ অপু। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম। দুজনই নেতা-কর্মীদের নিয়ে ব্যাপক প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। খেলাফত মজলিস থেকে মুফতি খবির উদ্দিন এবং ইসলামী আন্দোলন থেকে অ্যাডভোকেট মো. হানিফ মিয়া মনোনয়ন পেতে পারেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

ফলের দোকানদার ও বেকার ছেলে: অস্ট্রেলিয়ার সৈকতে হামলাকারী সম্পর্কে যা জানা গেল

হাদিকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের পথে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কক্সবাজারের চকরিয়া: মাতামুহুরীতে বেড়া দিয়ে মাছ চাষ বিএনপি নেতার

  • দলীয় পরিচয়ে নয়, এলাকার মুরব্বিরাসহ মিলেমিশে ৩২ জন মাছ চাষ করতে নদীতে বেড়া দিয়েছি।
  • রেজাউল করিম সাবেক ইউপি সদস্য ও বিএনপি নেতা।
বাপ্পী শাহরিয়ার, চকরিয়া (কক্সবাজার) 
নদীতে বাঁশের বেড়া ও জাল দিয়ে তৈরি ঘেরে এভাবেই চলছে মাছ চাষ। এতে মাছ ধরা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয় জেলেরা। গত শনিবার দুপুর ১২টার দিকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নদীতে বাঁশের বেড়া ও জাল দিয়ে তৈরি ঘেরে এভাবেই চলছে মাছ চাষ। এতে মাছ ধরা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয় জেলেরা। গত শনিবার দুপুর ১২টার দিকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নদীতে আড়াআড়ি বাঁশ, বেড়া ও জাল দিয়ে ঘের তৈরি করা হয়েছে। সেখানে করা হচ্ছে মাছ চাষ। এমন ঘটনা ঘটছে কক্সবাজারের চকরিয়ায় মাতামুহুরী নদীতে। আর এর পেছনে রয়েছেন স্থানীয় বিএনপি নেতা। এর ফলে জেলে কিংবা স্থানীয়রা মাছ ধরতে পারছেন না। ব্যাহত হচ্ছে মাছের বংশবিস্তার।

চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের বাটাখালী সেতু এলাকায় ঘের তৈরি করার হয়েছে। এই উপজেলার বিভিন্ন স্থান দিয়ে বয়ে গেছে খরস্রোতা মাতামুহুরী নদী। নদীটি মাছ আহরণের জন্য উন্মুক্ত।

মিয়ানমার সীমান্তের মাইভার পর্বত থেকে মাতামুহুরীর উৎপত্তি। এরপর নদীটি বান্দরবানের আলীকদম, লামা ও কক্সবাজারের চকরিয়া, পেকুয়া হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যানুযায়ী নদীটির দৈর্ঘ্য ১৪৬ কিলোমিটার। চকরিয়া উপজেলায় নদীটির ৪০ কিলোমিটার পড়েছে।

বাটাখালী ও জলদাশপাড়ার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাছ চাষ করার জন্য বাঁশের বেড়া দিয়ে নদী দখলে নিয়েছেন মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য রেজাউল করিম। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন আনোয়ারুল হাসান, আবু জাফর, জামাল উদ্দিন, আরিফুল ইসলাম বাবুল, মোহাম্মদ মানিকসহ ৩২ জন। নদী দখলে জড়িত ৩২ জনের বেশির ভাগই বিএনপির ওয়ার্ড পর্যায়ের কর্মী ও সমর্থক।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চকরিয়া-বদরখালী কে বি জালাল উদ্দিন সড়কের উপজেলার সাহারবিল এলাকায় মাতামুহুরী নদী দখল করে বাটাখালী সেতুর নিচে বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়েছে। এই বেড়ার মধ্যে তাঁরা অবৈধভাবে মাছচাষ করবেন। বেড়া দিয়ে নদী দখলের কারণে স্বাভাবিক পানি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। সেখানে একটি খুপরিঘরও বানানো হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নদীর পাশে চকরিয়া পৌরসভা ও সাহারবিল জলদাশপাড়ার প্রায় ৪০০ জেলে পরিবার বাস করে। তারা মাতামুহুরী ও খাল থেকে মাছ আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করে। এখন রাজনৈতিক আশ্রয়ে নদীতে বেড়া দিয়ে দখল শুরু হয়েছে। তাই ভয়ে অনেকে নদীতে মাছ ধরতে যায় না। বাঁশের বেড়া দেওয়ার কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা নদীতে গোসল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কোনো কাজ করতে পারছে না।

এই বিষয়ে জেলে আলী আকবর বলেন, ‘৮-৯ দিন ধরে নদীর বুকে আড়াআড়িভাবে বাঁশের তৈরি বেড়া দিয়ে মাছ চাষ করতে একটি প্রভাবশালী চক্র দখল করেছে। এভাবে নদীতে বেড়া দেওয়া শুরু হলে মাতামুহুরীর কোনো অংশই বাদ যাবে না। আমরা জেলেরা মাছ আহরণ করতে পারব না।’

তবে নদী দখলকারীদের একজন আবু জাফর বলেন, ‘আমরা এলাকার বেকার যুবকদের নিয়ে মাছ চাষ করতে নদীর একপাশে বাঁশের বেড়া দিয়েছি। এখানে নদীর কোনো ক্ষতি হচ্ছে না, বাঁধও দিচ্ছি না। এ ব্যাপারে উপজেলার একজন কর্মচারী আমাদের মৌখিক অনুমতি দেন।’

আর দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য রেজাউল করিম বলেন, ‘আগামী তিন মাসের জন্য মাতামুহুরী নদীতে রাবার ড্যাম ফোলানো হলে পানি বাড়বে। দলীয় পরিচয়ে নয়, এলাকার মুরব্বিরাসহ মিলেমিশে ৩২ জন মাছ চাষ করতে নদীতে বেড়া দিয়েছি। আমরা নদীও দখল করছি না, ব্যবসাও করছি না।’

চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আনোয়ারুল আমিন বলেন, ‘নদীতে বাঁশের বেড়া দিয়ে দখল করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহীন দেলোয়ার বলেন, ‘এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রশাসন থেকে লোক পাঠানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

ফলের দোকানদার ও বেকার ছেলে: অস্ট্রেলিয়ার সৈকতে হামলাকারী সম্পর্কে যা জানা গেল

হাদিকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের পথে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সেলিম ওসমানকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
এ কে এম সেলিম ওসমান। ছবি: সংগৃহীত
এ কে এম সেলিম ওসমান। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই আন্দোলনে একাধিক হত্যা মামলার আসামি জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি এ কে এম সেলিম ওসমানকে গ্রেপ্তারে তাঁর কারখানায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে ফতুল্লার উইজডম অ্যাটায়ার্স লিমিটেড কারখানায় অভিযান চালায় ফতুল্লা মডেল থানা-পুলিশের একটি টিম। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী। তবে সেখানে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্যকে পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।

এর আগে, গত রোববার জেলা প্রশাসনের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক নেতারা সেলিম ওসমানের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। প্রায়ই তিনি গার্মেন্টসে অফিস করছেন, এমন গুঞ্জনের জবাবে তারেক আল মেহেদী জানান, সেলিম ওসমানকে গ্রেপ্তারে তাঁদের নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।

সেই বৈঠকের পরদিন উইজডম অ্যাটায়ার্সে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। সেলিম ওসমান নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এমপি ও আলোচিত আওয়ামী লীগের এমপি শামীম ওসমানের বড় ভাই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

ফলের দোকানদার ও বেকার ছেলে: অস্ট্রেলিয়ার সৈকতে হামলাকারী সম্পর্কে যা জানা গেল

হাদিকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের পথে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজধানীর দক্ষিণখানে যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর দক্ষিণখানে প্রকাশ্যে এক যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে দক্ষিণখানের নদ্দাপাড়ার তালতলা মোড়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম শাহজাহান শেখ (৪৫)। তিনি দক্ষিণখানের আশকোনা ডিলার বাড়ির হাকিম উদ্দিনের ছেলে। জানা গেছে, শাহজাহান শেখ বিমানবন্দর থানা যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। পাশাপাশি তিনি আশকোনা কমিউনিটি পুলিশের সভাপতি ও ডিশের ব্যবসা করতেন।

ওই এলাকার ব্যবসায়ী মাহফুজুর রহমান মিয়াদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শাহজাহান ডিলার একটি গলি থেকে দৌড়ে তালতলা মোড়ের দিকে আসেন। তখন কয়েক দুর্বৃত্ত পেছন থেকে দৌড়ে এসে তাঁকে এলোপাতাড়ি কোপায়। এতে তাঁর মাথা দুই খণ্ড হয়ে যায়। পরে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।’

মাহফুজ আরও জানান, দুর্বৃত্তরা ঘটনাস্থলে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি চাপাতি ও একটি ক্যাপ (টুপি) ফেলে যায়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কিছু বুঝে ওঠার আগেই প্রকাশ্যে কিছু লোক শাহজাহানকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে গেছে। কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

হত্যাকাণ্ডের পরপরই দক্ষিণখান থানা পুলিশ, র‍্যাব, ডিবি ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনকে ঘটনাস্থলে এসে আলামত সংগ্রহ করতে দেখা যায়।

ডিএমপির দক্ষিণখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরীফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, কতিপয় অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারী ধারালো অস্ত্র দিয়ে শাহজাহান শেখকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মাথা, মুখমণ্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে গুরুতর জখম করে। তিনি ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীরা মৃত্যু নিশ্চিত করে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুতসহ আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীদের শনাক্তকরণসহ আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

ফলের দোকানদার ও বেকার ছেলে: অস্ট্রেলিয়ার সৈকতে হামলাকারী সম্পর্কে যা জানা গেল

হাদিকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের পথে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত