Ajker Patrika

মুরাদনগরে একই পরিবারের ৩ খুনের ঘটনায় মামলা হয়নি, আটকও নেই

কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লার মুরাদনগরের করইবাড়ী গ্রামে একই পরিবারের তিনজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার পর বাড়িটিতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। আজকের পত্রিকা
কুমিল্লার মুরাদনগরের করইবাড়ী গ্রামে একই পরিবারের তিনজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার পর বাড়িটিতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। আজকের পত্রিকা

কুমিল্লার মুরাদনগরের করইবাড়ী গ্রামে একই পরিবারের তিনজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার এক দিন পার হলেও কোনো মামলা হয়নি। এ ঘটনায় এখনো কেউ আটক নেই। তবে পুলিশ বলছে, সেনাবাহিনীসহ যৌথ অভিযান চলছে এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মুরাদনগর থানা-পুলিশের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তিদের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে দুপুরে তাঁদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে মুরাদনগরের বাঙ্গরা বাজার থানার করইবাড়ী গ্রামে মাদক কারবার ও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে একটি বাড়ি ঘেরাও করে হামলা চালায় এলাকার একদল মানুষ। এ সময় তারা একটি পরিবারের তিনজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় ওই পরিবারের আরেকজন গুরুতর আহত হন। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন করইবাড়ী গ্রামের খলিলুর রহমানের স্ত্রী রোকসানা আক্তার রুবি (৫৩), তাঁদের ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) ও মেয়ে জোনাকি আক্তার (২৫)। আহত অবস্থায় কুমিল্লা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন রুবির আরেক মেয়ে রুমা আক্তার (৩০)।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রুবি ও তাঁর পরিবার দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক কারবার ও বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে আসছিল। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক থানায় মাদক, ডাকাতি ও সন্ত্রাসের মামলা রয়েছে। প্রশাসনের দীর্ঘদিনের নজরদারিতেও কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় গ্রামবাসীর মধ্যে ক্ষোভ জমতে থাকে।

সম্প্রতি একটি মোবাইল চুরির ঘটনায় রুবির পরিবারের সঙ্গে স্থানীয় বাছির নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করে। মোবাইল চোরকে ছাড়িয়ে আনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বাড়ে। এরপর গত বুধবার সন্ধ্যায় গ্রামবাসী বৈঠক করে রুবির পরিবারকে গ্রাম থেকে বিতাড়িত করার সিদ্ধান্ত নেয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তারা রুবির বাড়িতে হামলা চালায় এবং বেধড়ক পিটিয়ে ও কুপিয়ে তিনজনকে হত্যা করে।

এদিকে নিহত রাসেল মিয়ার স্ত্রী মীম আক্তার দাবি করেন, তাঁদের পরিবার মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত ছিল না। মোবাইল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। তিনি স্বামী, শাশুড়ি ও ননদের হত্যার বিচার এবং খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

ঘটনার পর করইবাড়ী গ্রামে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেক বাসিন্দা এলাকা ছেড়ে গেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ও টহল জোরদার করা হয়েছে।

বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিহত ব্যক্তিদের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে তাঁদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাঁদের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ করার কথা রয়েছে। অভিযোগ পেলে মামলা নেওয়া হবে। এ ছাড়া সেনাবাহিনীসহ আমাদের যৌথ অভিযান চলছে। দ্রুতই অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে।’

ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহম্মেদ খান সাংবাদিকদের বলেন, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়। যারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২১ বছর বয়সেই ব্যবসায় বাজিমাত, দুই বছরে বিক্রি আড়াই কোটির বেশি

নিহতের ফোনের ভিডিওতে মিলল ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহ চিত্র: বিবিসির অনুসন্ধান

ইন্টারনেট ছাড়াই চলবে হোয়াটসঅ্যাপের নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী

জুলাইয়ে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন হাসিনা, ফাঁস হওয়া অডিও বিশ্লেষণ করে জানাল বিবিসি

তিন বোর্ডে বৃহস্পতিবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত