Ajker Patrika

রাজনীতির বেশে ব্যবসায় ফিরতে চান গডফাদাররা

শাহরিয়ার হাসান, টেকনাফ থেকে
রাজনীতির বেশে ব্যবসায় ফিরতে চান গডফাদাররা

রাজনীতিই সবকিছুর রক্ষাকবচ। ক্ষমতার দাপটের পাশাপাশি রয়েছে সম্মানও। নির্বাচিত একজন জনপ্রতিনিধি যাই করুক না কেন সেটাই বৈধ। হয়রানিরও ভয় থাকে না। রাজনীতি ও নির্বাচন নিয়ে এমন ভাবনা কক্সবাজারের টেকনাফের ইয়াবা কারবারিদের। তাঁরা মনে করেন, রাজনীতিতে আসতে পারলেই তাঁদের সব সমস্যার সমাধান হবে। তাই কারাগার থেকে ফিরে এসেই রাজনৈতিক দলে ভিড়ে এবার নির্বাচন করতে চান তাঁরা।

দুই বছর আগে কক্সবাজারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের কাছে আত্মসমর্পণকারী ১০২ ইয়াবা কারবারির সবাই এখন জামিনে। সে সময় পুলিশ আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে ৩০ জনকে আলাদা করে ‘ইয়াবা গডফাদার’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জামিনে বের হয়ে এসে এই গডফাদাররা এবার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

স্বঘোষিত এই ইয়াবা কারবারিরা বলছেন, জনপ্রতিনিধি হয়ে এবার তাঁরা ‘জনসেবা’ করতে চান। সঙ্গে নিজের পেশা ও নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে চান। করোনা মহামারির কারণে বন্ধ থাকা টেকনাফের ৫ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচন ও আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে, তাই মাঠ কাঁপাচ্ছেন চিহ্নিত এই ইয়াবা কারবারিরা।

তবে সাধারণ ভোটাররা ইয়াবা কারবারিদের রাজনীতিতে নামা নিয়ে শঙ্কিত। ক্ষমতা দেখিয়ে তাঁরা আগের মতো ইয়াবার রাজত্ব কায়েম করবেন–এমন আশঙ্কা সবার। এঁরা যেন মনোনয়ন না পান, তা দেখার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তাঁরা।

পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি নিজেও মনে করি, ইয়াবা ব্যবসায়ীরা জনপ্রতিনিধি হলে আবারও ব্যবসায় জড়ানোর আশঙ্কা আছে। পুলিশের কাছে তাদের বিষয়ে এমনই তথ্যও আছে। তবে সবাইকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।’
টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল বশরের দাবি, আত্মসমর্পণকারী ইয়াবা কারবারিদের জামিনের পেছনে তদবির কাজ করেছে। জামিনে বের হয়ে এসে তাঁরা এখন আরও ভয়ানক হয়ে উঠেছেন। কারাগারে বসেই তাঁরা ইয়াবা সিন্ডিকেট চালিয়েছেন। এখন বের হয়ে এসে গডফাদাররা একটা সাইনবোর্ড খুঁজছেন। যেটা সামনে রেখে ব্যবসাটা বৈধ করা যায়। তাই উপজেলার মেয়র, কাউন্সিলর থেকে শুরু করে ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বার হওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন। 

নির্বাচনে অংশ দিচ্ছেন যাঁরা
জানা যায়, আত্মসমর্পণের আগেই বেশ কয়েকজন মাদক কারবারি স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন।

১০২ জনের মধ্যে টেকনাফ পৌরসভা ও ছয়টি ইউনিয়নের অন্তত ২৭ জন নির্বাচিত প্রতিনিধি ছিলেন।

সূত্র বলছে, আত্মসমর্পণ করা মাদক কারবারিদের একজন আব্দুর শুক্কুর, যিনি পুলিশের তালিকায় এক নম্বর ইয়াবা গডফাদার। জামিনে বের হয়ে তিনি এখন টেকনাফ পৌরসভার মেয়র নির্বাচন করতে চান। তিনি মেয়র প্রার্থী হিসেবে উপজেলা আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি আগে ব্যবসা (ইয়াবা) করতাম। এখন আত্মসমর্পণ করে জামিনে রয়েছি। জনগণ চায় আমি মেয়র পদে নির্বাচন করি। তা ছাড়া রাজনীতিতে থাকা ভালো। অন্যায়ভাবে কেউ হয়রানি করতে পারে না। সম্মান আর ক্ষমতাও আছে।’ 

শুধু শুক্কুর নন টেকনাফ পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে অন্তত ২০ জন চিহ্নিত ইয়াবা কারবারি প্রচার চালাচ্ছেন। কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচন করতে চান আরেক ইয়াবা গডফাদার মোহাম্মদ জোবায়ের। তিনি বলেন, ‘আমি আর মাদকের সঙ্গে নেই। এখন একটু জনসেবা করতে চাই। তা ছাড়া টেকনাফের মতো জায়গায় টিকে থাকতে হলে আপনাকে কোনো না–কোনো দিক দিয়ে ক্ষমতাবান হতে হবে। এটার বিকল্প নাই।’

টেকনাফ সদর ইউপির চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে যাঁরা প্রচার শুরু করেছেন সেই পাঁচজনের মধ্যে তিনজনই চিহ্নিত ইয়াবা কারবারি। যাঁর মধ্যে বর্তমান চেয়ারম্যান শাহজাহান মিয়াও আছেন। যাঁর বিরুদ্ধে ইয়াবা ও অস্ত্র আইনে কয়েকটি মামলা রয়েছে। তাঁর দাবি, প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্রের শিকার তিনি। তিনি ইয়াবা গডফাদার ছিলেন না। তাঁর সঙ্গে ইয়াবা কারবারিদের পরিচয় ছিল, তাতেই পুলিশ তাঁকে সন্দেহ করে।

শাহপরীর দ্বীপ ইউপির সদস্য রেজাউল করিম রেজা। যিনি আবার ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি। আত্মসমর্পণ করে ছয় মাস আগে জামিনে কারাগার থেকে বের হয়েছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি স্থানীয় দলীয় ষড়যন্ত্রের শিকার। ইয়াবা ব্যবসায়ীদের তালিকায় আমাকে বলা হচ্ছে গডফাদার। কিন্তু আসলে আমার সঙ্গে এ ব্যবসার কোনো সম্পর্ক নেই। জীবন বাঁচাতে আত্মসমর্পণ করেছি। জনগণ জানে, আমি কেমন? তাই আমি আবার ভোট করব।’

তথ্য বলছে, এ ছাড়া সাবরাং ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ১৪ জন, বাহারছড়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ৫ জন, হ্নীলা ইউনিয়নে চেয়ারম্যানে প্রার্থীসহ ১১ জন, হোয়াইক্যং ইউনিয়নে ৭ জন এবং সেন্ট মার্টিন ইউনিয়নে ৩ জন প্রার্থী রয়েছেন। যাঁরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারি ও কথিত গডফাদার।

কক্সবাজার বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী আয়াছুর রহমান বলেন, আত্মসমর্পণকারী ইয়াবা কারবারিরা স্বঘোষিত মাদক কারবারি। যাঁরা আদালতের মাধ্যমে জামিন পেয়ে এলাকায় ফিরেছেন। এঁরা যদি জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হয়ে আসেন, মাদক আর কোনো দিন রোধ হবে না। 

ইয়াবা কারবারিরা জামিন পেলেন যেভাবে
 ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ইয়াবা কারবারিরা আত্মসমর্পণের সময় ৩ লাখ ইয়াবা বড়ি এবং ৩০টি আগ্নেয়াস্ত্র তুলে দেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ৷ তাঁদের প্রত্যেককে অস্ত্র ও মাদক আইনের দুইটি মামলায় আসামি করা হয় ৷ ১০২ জনের মধ্যে ১ জন কারাগারে মারা যান ৷ কারাগারে যাওয়ার সাত মাস পর প্রথম ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট থেকে ৫ জন জামিন পান ৷ এরপর ৫ অক্টোবর কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে জামিন পান ৭ জন ৷ একই আদালত থেকে ৩ নভেম্বর জামিন পান ১৫ জন ৷ ধাপে ধাপে ১০১ জনই জামিনে বেরিয়ে এসেছেন।

কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি ফরিদুর আলম চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, আত্মসমর্পণকারী ইয়াবা কারবারিরা সবাই জামিন পেয়েছেন। তাঁরা যেহেতু একটা শর্তে আত্মসমর্পণ করেছিলেন, তাই তাঁদের মামলার এজাহার ও অভিযোগপত্র সেভাবেই দেওয়া হয়েছিল। এ জন্য এত দ্রুত অস্ত্র ও মাদক মামলায় জামিনে বেরিয়েছেন।

পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আত্মসমর্পণে কিছু শর্তের মাধ্যমে তাঁরা আইনের আওতায় এসেছেন। প্রক্রিয়া অনুসারেই তাঁদের জামিন হয়েছে। তবে মামলা এখনো বিচারাধীন। আমাদের নজরদারিতে আছেন তাঁরা।’ 

আবারও ফিরছেন মাদক ব্যবসায় 
গত ২২ মে রাতে টেকনাফ হ্নীলা ইউপির রঙ্গিখালী এলাকা থেকে ১০ হাজার ইয়াবা বড়িসহ চার মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন আত্মসমর্পণকারী ইয়াবা গডফাদার জামাল হোসেনের ছেলে শাহ আলম। তিনিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। জামিনে বেরিয়ে এসে আবার ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছেন।

টেকনাফ থানার ওসি হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আত্মসমর্পণ করা ইয়াবা কারবারিরা আবার ব্যবসায় ফিরেছেন। যে কারণে জামিনে থাকা কারবারিদের ওপর বিশেষ নজর রাখছে পুলিশ।’ 

বাকি গডফাদারদের গ্রেপ্তারে তৎপরতা নেই
মাদক ব্যবসায় জড়িত পুলিশের তালিকায় থাকায় আরও হাজারখানেক মানুষকে গ্রেপ্তার করার ক্ষেত্রে পুলিশের বিশেষ কোনো তৎপরতা নেই। দুই দফায় ১২৩ কারবারি আত্মসমর্পণ করলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ৪০ জন গডফাদার এখনো আত্মসমর্পণ করেননি। গত দুই বছরে তাঁরা গ্রেপ্তারও হননি। 
চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অনাগ্রহের কথা জানিয়ে কক্সবাজার চেম্বারের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, তালিকায় থাকা সত্ত্বেও তাঁরা লোকালয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন কিন্তু পুলিশ তাঁদের ধরছে না। মাদক কারবারিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে প্রশাসনের আগ্রহ কমে গেছে। যে কারণে বর্তমানে ব্যবসা বেড়ে গেছে। তাঁর দাবি, কৌশলে ইয়াবা ব্যবসার হোতাদের টিকিয়ে রাখা হচ্ছে।

সূত্র বলছে, গডফাদারের তালিকায় থাকা ৪০ জন পালিয়ে থাকলেও এখন সবাই এলাকায় ফিরেছেন। নাজিরপাড়ার ভুট্টো, মৌলভীপাড়ার এশরাম, আব্দুর রহমান, রেঙ্গুর বিলের মীর কাসিমের মতো কারবারিরা পুলিশের সামনেই থাকেন। নিয়মিত যাতায়াত আছে থানাতেও।

পুলিশের তালিকায় থাকার পরও গ্রেপ্তার হচ্ছে না সাবেক সাংসদ আব্দুর রহমান বদির ভাই টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর মৌলভি, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদ, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মৌলভি রফিক উদ্দীন, তাঁর ভাই ইউপি চেয়ারম্যান মৌলভি আজিজ উদ্দীন, রহমান, কাউন্সিলর শাহ আলম, রেজাউল করিম মানিক, মোহাম্মদ হোসেন, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মেম্বার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, আজম উল্লাহ, মোহাম্মদ আলম, সাবরাং ইউনিয়নের মাহমুদুর রহমান, হোয়াইক্যং ইউনিয়নের রাকিব আহমেদেরা। 

মাদক কারবারিদের কথা ভুলে গেছে সিআইডি ও দুদক 
দুই বছর আগে কক্সবাজারের তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারিদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের অনুসন্ধানে নেমেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও সিআইডি। প্রাথমিক অনুসন্ধানে সংস্থা দুইটির তদন্তে, কারবারিদের অনেকের শতকোটি টাকার মালিক হওয়ার তথ্য পেয়েছিল তারা। কিন্তু শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সিআইডি মাত্র ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। কিন্তু জব্দ করেনি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। এমনকি পরে আর এগোয়নি এসব মামলার তদন্তও। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাঈদ আল নোমানের বিরুদ্ধে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ

 নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
কর্মী-সমর্থক পরিবেষ্টিত হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান বিএনপি প্রার্থী সাঈদ আল নোমান। ছবি: আজকের পত্রিকা
কর্মী-সমর্থক পরিবেষ্টিত হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান বিএনপি প্রার্থী সাঈদ আল নোমান। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-হালিশহর) আসনের বিএনপির প্রার্থী সাঈদ আল নোমানের বিরুদ্ধে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় প্রার্থীসহ সর্বোচ্চ ৫ জন উপস্থিত থাকতে পারবেন, এমন নির্দেশনা থাকলেও শতাধিক নেতা-কর্মী নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেছেন তিনি।

আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে মনোনয়ন দাখিল করতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে যান সাঈদ আল নোমান। এ সময় তাঁর সঙ্গে শতাধিক নেতা-কর্মী ছিলেন। একপর্যায়ে পুলিশ বাধা দিলে দুই পক্ষের ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। পরে সাঈদ আল নোমান কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে কার্যালয়ে গিয়ে মনোনয়ন জমা দিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে যান। তবে শুধু সাঈদ আল নোমানই নন, মনোনয়ন জমা দিতে আসা প্রায় সব প্রার্থীই কর্মী-সমর্থক পরিবেষ্টিত হয়ে এসেছেন।

এ ব্যাপারে সাঈদ আল নোমান বলেন, ‘এটা একদিকে যেমন প্রাপ্তির, অন্যদিকে বিব্রতকরও। এটা বাবার সময় থেকে দেখে আসছি।’ এমন পরিস্থিতির জন্য বিব্রতবোধ করার কথাও জানান তিনি।

নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমার সময় প্রার্থী বা তাঁর প্রস্তাবক, সমর্থকসহ পাঁচজনের বেশি উপস্থিত থাকতে পারবেন না; এ সময় কোনো ধরনের মিছিল, শোডউন করলে আচরণবিধি লঙ্ঘন হবে।

এ বিষয়ে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. মো. জিয়াউদ্দিনের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তাঁর একান্ত সচিব মো. রিদুয়ানুল ইসলাম জানান, ‘স্যার (বিভাগীয় কমিশনার) মনোনয়নপত্র জমা নিয়ে ব্যস্ত আছেন। এই বিষয়ে তিনি পরে কথা বলবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শাহবাগে ইনকিলাব মঞ্চের অবরোধ থেকে ‘খেলনা পিস্তলসহ’ যুবক আটক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আটক আরাফাত জামান। ছবি: ডিএমপি
আটক আরাফাত জামান। ছবি: ডিএমপি

রাজধানীর শাহবাগে ইনকিলাব মঞ্চের ডাকা অবরোধ কর্মসূচি থেকে ‘খেলনা পিস্তলসহ’ এক যুবককে আটক করা হয়েছে। আজ সোমবার রাত সোয়া ৮টার দিকে ওই যুবককে আটক করা হয়।

আটক যুবকের নাম মো. আরাফাত জামান (৩৯)। তিনি ধানমন্ডীর জিগাতলা এলাকার বাসিন্দা বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কর্মসূচি চলাকালে ইনকিলাব মঞ্চের স্বেচ্ছাসেবক ও উপস্থিত সাধারণ জনতা সন্দেহজনক আচরণের কারণে ওই যুবককে আটক করে। পরে তাঁর হেফাজত থেকে একটি খেলনা পিস্তল উদ্ধার করা হয় এবং পরে পুলিশে দেওয়া হয়।

উদ্ধার করা পিস্তল। ছবি: ডিএমপি
উদ্ধার করা পিস্তল। ছবি: ডিএমপি

বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে অবরোধ কর্মসূচি থেকে ইনকিলাব মঞ্চের স্বেচ্ছাসেবক ও সাধারণ জনতা খেলনা পিস্তলসহ একজনকে আটক করে। ওই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শাহবাগ থানায় নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাড়কাঁপানো শীতে চা-শ্রমিকদের দুর্ভোগ, পরনে নেই গরম কাপড়

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
ঠান্ডার মধ্যে শীতবস্ত্র ছাড়াই কাজে বের হয়েছেন বাগানের চা-শ্রমিক নারীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঠান্ডার মধ্যে শীতবস্ত্র ছাড়াই কাজে বের হয়েছেন বাগানের চা-শ্রমিক নারীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

পৌষের মাঝামাঝিতে হাড়কাঁপানো শীতে কাবু হয়ে পড়েছে মৌলভীবাজারের জনজীবন। তীব্র শীতে খেটেখাওয়া মানুষ, বিশেষ করে জেলার ৯২টি চা-বাগানের শ্রমিকদের দুর্ভোগ বেড়েছে। কনকনে ঠান্ডার মধ্যেই কাজে যেতে হচ্ছে তাঁদের। শীত থেকে বাঁচার মতো প্রয়োজনীয় গরম কাপড়ও নেই শ্রমিকদের। একই সঙ্গে ঠান্ডার রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বাগানের বয়স্ক থেকে শিশুরা।

শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সোমবার এই অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল রোববার ১২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। আগামী কয়েক দিন তাপমাত্রা একই রকম থাকতে পারে।

সূর্যের দেখা না মেলায় ও ঘন কুয়াশা থাকায় মৌলভীবাজারে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। এই ঠান্ডার মধ্যেই গাছ-গাছালিতে ঘেরা চা-বাগানগুলোয় সকাল থেকে কাজে নেমে পড়ছেন চা-শ্রমিকের। তাঁদের পরনে নেই পর্যাপ্ত গরম কাপড়। অনেকে ঠান্ডার রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

চা-শ্রমিকেরা জানান, শীতের কারণে অনেক কষ্টে পড়েছেন তাঁরা। বাগান কর্তৃপক্ষ তাঁদের কোনো শীতবস্ত্র দেয় না। আর নিজেদের স্বল্প আয় দিয়ে গরম কাপড় কেনার সাধ্যও তাঁদের নেই। রাতে ঠান্ডার জন্য অনেকেই ঘুমাতে পারেন না। শীত নিবারণে ঘরের ভেতরে ও বাইরে খড়কুটো দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে রাত কাটাতে হয়। কেউ কেউ বস্তা বিছিয়ে ঠান্ডা থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করেন।

শমশেরনগর চা-বাগানের চা-শ্রমিক গীতা রবিদাস ও মায়া রবিদাস বলেন, ‘এই শীতে কাজ করা অনেক কষ্টের। আমরা চা-শ্রমিকেরা কোনো শীতবস্ত্র পাই না। বাগানের শ্রমিকদের অবস্থা খুবই করুণ। ঠান্ডায় অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।’

চা-শ্রমিকনেতা সীতারাম বিন বলেন, ‘প্রতিবছর শীতের সময় চা-শ্রমিকদের বেশি কষ্ট হয়। এমনিতেই শ্রীমঙ্গলসহ পুরো মৌলভীবাজার জেলায় শীত বেশি পড়ে। এ জেলায় ৯২টি চা-বাগান রয়েছে। কোনো বাগানের শ্রমিকদের পর্যাপ্ত গরম কাপড় নেই। প্রতিদিন ঠান্ডার কারণে অসুখ-বিসুখে আক্রান্ত হচ্ছেন চা-শ্রমিকেরা। বিশেষ করে শীতে বাগানের শিশু ও বৃদ্ধরা অনেক কষ্টে আছেন।

শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, কয়েক দিন ধরেই এই অঞ্চলে শীতের দাপট বেড়েছে। বিশেষ করে রাতে বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। আরও কয়েক দিন একই রকম তাপমাত্রা থাকবে।

শীতের দাপট বাড়ার সঙ্গে ঠান্ডার রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। বিশেষ করে জ্বর, সর্দি, কাশি ও ডাইরিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন বয়স্ক ও শিশুরা। অনেকেই চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেলা সদর হাসপাতালে ছুটছেন। কেউ প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা নিয়ে বাড়িতে ফিরছেন।

মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন মো. মামুনুর রহমান বলেন, শীতের মধ্যে সবাইকে পর্যাপ্ত গরম কাপড় পরতে হবে। বিশেষ করে এ সময় শিশু ও বৃদ্ধদের প্রতি বাড়তি খেয়াল রাখতে হবে। তাদেরকে বেশি করে গরম কাপড় পরিধান করে রাখতে হবে।

এ বিষয়ে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক তৌহিদুজ্জামান পাভেল বলেন, ‘আমরা সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছি। কেউ আবেদন করলে তাদের শীতবস্ত্র দেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে সদস্যপদ স্থগিত জামায়াত নেতার মনোনয়নপত্র দাখিল

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
জসিম উদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত
জসিম উদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া) আসনে সদস্যপদ স্থগিত হওয়া জেলা জামায়াতের সাবেক আমির অধ্যাপক জসিম উদ্দিন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। একই আসনে দলের মনোনীত প্রার্থী জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির কামরুল হাসান মিলন।

এ ছাড়া বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন আখতারুল আলম ফারুক, খেলাফত মজলিসের মো. রফিকুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলনের মো. নূরে আলম সিদ্দিকী।

অপর দিকে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন প্রয়াত প্রকৌশলী শামছ উদ্দিনের স্ত্রী অধ্যক্ষ আখতার সুলতানা, ছেলে তানভীর আহমেদ রানা ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য মোহাম্মদ আব্দুল করিম।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলাম জানান, এই আসনে নির্বাচনের জন্য ১০ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন, তাঁর মধ্যে আটজন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

জানা যায়, ময়মনসিংহ জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির কামরুল হাসান মিলনকে মনোনয়ন দিলে অধ্যাপক জসিম উদ্দিনের সমর্থকেরা প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে কর্মসূচি পালন করেন। তাঁরা জামায়াত মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তন ও অধ্যাপক জসিম উদ্দিনের সমর্থনে ‘ফুলবাড়িয়া ঐক্যবদ্ধ জনতা’র ব্যানারে বিক্ষোভ-মিছিল করেন।

এরপর গত ১৭ সেপ্টেম্বর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় অধ্যাপক জসিম উদ্দিনের সাংগঠনিক কার্যক্রম ও সদস্যপদ (রুকনিয়াত) স্থগিত করে জামায়াতে ইসলামী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক জসিম উদ্দিন বলেন, ‘দল আমাকে মূল্যায়ন না করলেও মানুষের ভালোবাসায় প্রার্থী হয়েছি। নির্বাচনে সাধারণ মানুষ আমার ওপর আস্থা রাখবে।’

উল্লেখ্য, একটি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়ন নিয়ে ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া) আসন। মোট ভোটার ৪ লাখ ১২ হাজার ৮৪৩ জন। এর মধ্যে ২ লাখ ৫ হাজার ৪৭৯ জন পুরুষ ও ২ লাখ ৭ হাজার ৩৬২ জন নারী এবং হিজড়া দুজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত