Ajker Patrika

খামারের বর্জ্যে খাল ভাগাড়

  • উপজেলার ১২০০ খামারের বর্জ্য বিভিন্ন খাল হয়ে যাচ্ছে কর্ণফুলী নদীতে
  • খালে ফেলা বর্জ্য থেকে তীব্র দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী, স্বাস্থ্যঝুঁকি
  • আগে সেচের জন্য খালের পানি ব্যবহার করতেন স্থানীয় কৃষকেরা
  • দূষণে মৃতপ্রায় এ খাল এখন কৃষকদের কোনো কাজে আসছে ন
মো. ইমরান হোসাইন,কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম)
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে তোলা গরুর খামারের বর্জ্য গিয়ে মিশছে শিকলবাহা খালে। এতে খালটি ভরে গেছে গোবর আর গোমূত্রে। নেই আগের সেই অবাধ পানিপ্রবাহ। ছবিটি সম্প্রতি উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়নের চরফরিদ এলাকা থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে তোলা গরুর খামারের বর্জ্য গিয়ে মিশছে শিকলবাহা খালে। এতে খালটি ভরে গেছে গোবর আর গোমূত্রে। নেই আগের সেই অবাধ পানিপ্রবাহ। ছবিটি সম্প্রতি উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়নের চরফরিদ এলাকা থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা খালে একসময় ছিল পানির অবাধ প্রবাহ। চলত বড় বড় সাম্পান, বজরা, ময়ূরপঙ্খি, পালতোলা পানসি, সওদাগরি নৌকা। তবে এখন এসব শুধুই স্মৃতি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দখল-দূষণে জৌলুশ হারিয়েছে খালটি। খালের আশপাশে গড়ে ওঠা গরুর খামারের গোবর-মূত্রসহ বিভিন্ন বর্জ্য অবাধে মিশছে পানিতে। বর্তমানে খালটি গোবরের ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।

এদিকে শুধু শিকলবাহা খালই নয়, বিষাক্ত বর্জ্যে হুমকিতে পড়েছে কর্ণফুলী নদীও। বিভিন্ন খাল হয়ে উপজেলার ১ হাজার ২০০ খামারের বর্জ্য গিয়ে মিশছে কর্ণফুলীতে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার শিকলবাহা মাজার গেট এলাকা থেকে শুরু হয়ে আলী হোসেন মার্কেট পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার এলাকায় খালের দুই পাশে গড়ে উঠেছে গরুর খামার। এসব খামারের কয়েক হাজার গরুর গোবর আর মূত্র সরাসরি ফেলা হয় শিকলবাহা খালে। এতে খালটি এখন নোংরা ডোবা ও গোবরের ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। খালে ফেলা বর্জ্য থেকে তীব্র দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। রয়েছে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিও।

সরেজমিনে দেখা যায়, খালের দুই পাশে গড়ে ওঠা গরুর খামারের বর্জ্য পাইপ-ড্রেনের মাধ্যমে সরাসরি খালে ফেলা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা বৃদ্ধ আবুল কাশেম বলেন, উপজেলার চারদিকঘেরা কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে মিলিত ছিল শিকলবাহা খালটি। নব্বই দশকের দিকে নৌপথে পণ্য আনা-নেওয়া করা হতো এটি দিয়ে। নৌপথে ছিল বাণিজ্যিক যোগাযোগও। কিন্তু ভূমিদস্যু ও প্রভাবশালীদের দখল-দূষণে এখন সংকটাপন্ন উপজেলার খালগুলো। শিকলবাহা খালের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ।

আব্বাস আলী নামের এক বৃদ্ধ বলেন, ‘ছোটকালে আমরা এই খাল থেকে মাছ ধরেছি, গোসলসহ ব্যবহারের জন্য ঘরে পানিও নিয়ে গেছি। কিন্তু এক যুগ ধরে ভয়াবহ দূষণের কারণে এটি এখন আর খাল নেই, গোবরের খালে পরিণত হয়েছে।’

তবে এ বিষয়ে কোনো খামারি কথা বলতে রাজি হননি।

প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্যমতে, কর্ণফুলী উপজেলায় ১ হাজার ২০০টি খামার রয়েছে। এসব খামারের বড় একটা অংশ কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে সংযুক্ত খালের পাড় কিংবা আশপাশে গড়ে উঠেছে।

স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, খামারের বর্জ্যে ভরাট হয়ে গেছে শিকলবাহা খাল। কৃষকেরা আগে তাঁদের চাষাবাদে খালের পানি ব্যবহার করতেন, এখন তা সম্ভব হচ্ছে না। তাঁদের দাবি, বর্জ্যে দূষিত হয়ে খাল-বিল ও জলাশয়গুলো বিষের খনিতে পরিণত করেছে। এতে চরলক্ষ্যা ও শিকলবাহা ইউনিয়নের কৃষকদের বৃষ্টির পানির ওপর নির্ভর করেই চাষাবাদ করতে হয়।

জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কর্ণফুলীর খামারি হারুন চৌধুরী বলেন, বিগত সরকারের আমলে খালটি খনন করা হয়েছিল। খালের বিভিন্ন স্থানে অপরিকল্পিত কালভার্ট নির্মাণসহ ঠিকাদার যেসব বাঁধ দিয়েছিল, সেগুলো এখনো রয়ে গেছে, যে কারণে কর্ণফুলী নদী থেকে পানি ঢুকছে না খালে। এ ছাড়া মইজ্জ্যারটেক এলাকায় পশুর বাজারের বর্জ্য ফেলাসহ খালের বিভিন্ন স্থান দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে বিভিন্ন স্থাপনা। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে খালটি খননে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) আওতাধীন শিকলবাহা খালটি এই জনপদকে বন্যার পানি থেকে রক্ষা করে। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার কৃষক সেচের জন্য এই খালের পানিই ব্যবহার করতেন। কিন্তু দূষণে মৃতপ্রায় এই খাল এখন কৃষকদের কোনো কাজে আসছে না। দুই বছর আগে ২ কোটি ৪ লাখ ১৫ হাজার টাকা ব্যয়ে খালটি পুনঃখনন করে পাউবো। মেসার্স গরিবে নেওয়াজ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খননকাজ বাস্তবায়ন করে। তবে এ নিয়ে স্থানীয়দের অভিযোগ, অপরিকল্পিত খননে কোটি টাকা খরচ করেও রক্ষা হয়নি খালটি। সে সময় খালের প্রায় ৯ কিলোমিটার অংশে খননকাজে অনিয়মের অভিযোগও তুলেছিলেন স্থানীয়রা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে শাহিদ বলেন, পাউবোর ডেল্টাপ্ল্যানের আওতায় খালটি পুনর্জীবিত ও চাষাবাদে কৃষকদের উপকারের উদ্দেশে খনন করা হয়েছিল। কিন্তু এরই মধ্যে এটি আগের অবস্থায় রূপ নিয়েছে। খালটি রক্ষায় পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।

কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুমা জান্নাত আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খালটি রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ৯ মে শিকলবাহা খালকে দূষণমুক্ত করা ও ডেইরি ফার্ম থেকে সৃষ্ট বর্জ্য জৈব সার হিসেবে ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়ে একটি বিশেষ সভা চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। করা হয় একটি কমিটিও। তবে খাল দূষণমুক্ত করতে নানা পরিকল্পনা নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি 
নিহত শিশু শামীম। ছবি: সংগৃহীত
নিহত শিশু শামীম। ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া শিশু শামীম (১০) মারা গেছে। উদ্ধারের তিন দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। আজ শুক্রবার সকালে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

নিহত ব্যক্তির মামা সাব্বির হোসেন ও সখীপুর থানা-পুলিশ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত শামীম উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের শাহিন আলমের ছেলে ও স্থানীয় কীর্তনখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

নিহত শিশুর পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার দুপুর ১২টার দিকে শামীম বাড়ি থেকে বের হয়। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। একপর্যায়ে তাঁরা বাড়ির আশপাশের বনাঞ্চলে অনুসন্ধান চালান। পরে রাত ৮টার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে একটি বন থেকে শামীমকে রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। রাত ৯টার দিকে তাকে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার ধানমন্ডিতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।

নিহত শামীমের মামা সাব্বির হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছিলাম শিয়ালের আক্রমণে এমন হয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা জানান, এটি শেয়াল-কুকুরের আক্রমণের চিহ্ন নয়, শিশুটির মাথা ও শরীরের আঘাত করা হয়েছে।’

সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, নিহত শামীমের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুমকীতে অটো-টমটম সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ২

দুমকী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
দুমড়েমুচড়ে যাওয়া গাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুমড়েমুচড়ে যাওয়া গাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা

পটুয়াখালীর দুমকীতে অটোরিকশা ও সিমেন্টবাহী টমটমের সংঘর্ষে দুজন নিহত ও দুজন আহত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে লেবুখালী-বাউফল মহাসড়কের রাজাখালী (স্থানীয় নাম পিছাখালী ব্রিজ) এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বগা থেকে আসা যাত্রীবাহী অটোরিকশা বিপরীত দিক থেকে আসা সিমেন্টবাহী টমটমের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে ছয় বছরের রবিউল নিহত হন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে ৬০ বছর বয়সী ইব্রাহিম খানকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত সুমন সরদার (২৫) ও আব্দুল কাদেরকে (৫০) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আহত আব্দুল কাদেরের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সুমনের একটি হাত সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে। নিহত ও আহত ব্যক্তিদের বাড়ি বাউফল উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।

দুমকী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম উদ্দীন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দুর্ঘটনাকবলিত অটোরিকশা ও টমটমটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিবার অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দৌলতপুর সীমান্তে ভারতীয় নাগরিক পুশ ইনের চেষ্টা: ব্যর্থ হয়ে ১৪ জনকে ফেরত নিল বিএসএফ

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি 
১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুশ ইনের চেষ্টা করে বিএসএফ। শূন্য লাইন থেকে গতকাল দুপুরে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুশ ইনের চেষ্টা করে বিএসএফ। শূন্য লাইন থেকে গতকাল দুপুরে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সারা দেশে যখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি চলছে, ঠিক সেই সময় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্ত দিয়ে ১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুশ ইনের চেষ্টা চালিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) তৎপরতায় ওই চেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ১৪ ভারতীয় নাগরিককে জিরো লাইন থেকে ফেরত নিয়ে যায় বিএসএফ।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দিবাগত গভীর রাতে দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর বিওপির সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে প্রবেশ করানোর চেষ্টা করা হয়।

বিজিবি সূত্র জানায়, বিএসএফের আহ্বানে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে একটি পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের (৪৭ বিজিবি) অধীন মহিষকুন্ডি বিওপিতে কর্মরত সুবেদার আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের বিজিবি প্রতিনিধিদল এবং ১৪৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের নিউ উদয় কোম্পানি কমান্ডার এসি অনিল কুমারের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের বিএসএফ প্রতিনিধিদল বৈঠকে অংশ নেয়।

বৃহস্পতিবার বেলা ১টা ৪০ মিনিট থেকে ২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত সীমান্তের মেইন পিলার ১৫৪/০৭ এস-সংলগ্ন ভারতের অভ্যন্তরে চাইডোবা মাঠে এই পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিবির পক্ষ থেকে বাংলাদেশে ভারতীয় নাগরিক পুশ ইনের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয় এবং অবিলম্বে তাদের ফেরত নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

পরে শূন্য লাইনে অবস্থানরত ব্যক্তিদের পরিচয় ও ঠিকানা যাচাই করে তারা সবাই ভারতের ওডিশা প্রদেশের জগতসিংপুর সদর উপজেলার তারিকুন্ডা এলাকার বাসিন্দা বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। যাচাই শেষে বিএসএফ তাদেরকে ভারতের অভ্যন্তরে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।

পুশ ইনের চেষ্টা করা ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন মৃত হারুন শেখের ছেলে শেখ জব্বার (৭০), তাঁর চার ছেলে শেখ হাকিম (৪৫), শেখ ওকিল (৪০), শেখ রাজা (৩০) ও শেখ বান্টি (২৮); শেখ ওকিলের স্ত্রী শাবেরা বিবি (৩০); শেখ হাকিমের স্ত্রী শমশেরি বিবি (৪০); শেখ রাজার স্ত্রী মাইনু বিবি (২৫); শেখ জব্বারের স্ত্রী আলকনি বিবি (৬০); মৃত শেখ হোসেনের স্ত্রী গুলশান বিবি (৯০); শিশুদের মধ্যে রয়েছে শাকিলা খাতুন (১১), নাছরিন আক্তার (১২), শেখ তাওহিদ (১১) ও আড়াই বছর বয়সী শেখ রহিত।

এই ঘটনায় সীমান্তবাসীর মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। নির্বাচনকালীন স্পর্শকাতর সময়ে ভারতের এমন পুশ ইন চেষ্টাকে কেন্দ্র করে সীমান্ত এলাকায় নানা আলোচনা ও প্রশ্ন উঠেছে।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাশেদ কামাল রনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে কোনোভাবেই অবৈধ অনুপ্রবেশ বা পুশ ইন মেনে নেওয়া হবে না। সীমান্ত নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিজিবি সব সময় কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিরাজগঞ্জে দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ, আহত ২

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা তালতলা এলাকায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা তালতলা এলাকায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় মালবাহী দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক ট্রাকের চালক ও হেলপার গুরুতর আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

শুক্রবার সকালে উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা তালতলা এলাকায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন আজকের পত্রিকাকে জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা গবাদিপশুর খাবার (ভুসি) বহনকারী একটি ট্রাকের সঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা পাথরবোঝাই আরেকটি ট্রাকের সংঘর্ষ হয়। এতে একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে এবং অপরটি মহাসড়কের ওপর দাঁড়িয়ে যায়।

দুর্ঘটনার পর রেকার দিয়ে ট্রাক সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আহত চালক ও হেলপারের পরিচয় এখনো জানা যায়নি বলে জানান ওসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত