Ajker Patrika

১১ বছর আগে গুলিতে নিহত ৩ যুবদল কর্মী, বিচারের প্রত্যাশায় স্বজনরা

গাজী মমিন, ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর)
আপডেট : ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ২২: ৪২
১১ বছর আগে গুলিতে নিহত ৩ যুবদল কর্মী, বিচারের প্রত্যাশায় স্বজনরা

২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের আহ্বানে ডাকা মিছিল সমাবেশকে কেন্দ্র করে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে সংঘর্ষ ও গুলিতে নিহত হন উপজেলার তিন যুবদল কর্মী। 

তারা হলেন-উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের পূর্ব গাজীপুর তিনকড়ি ব্যাপারী বাড়ির আ: মতিন ব্যাপারী ও তফুরেরনেছা দম্পত্তির ছেলে জাহাঙ্গীর ব্যাপারী, রূপসা উত্তর ইউনিয়নের বারপাইকা গ্রামের মো. আব্দুল আলিম ও হাজেরা বেগম দম্পত্তির ছেলে আরিফ হোসেন এবং একই ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামের আব্দুর রহিম ও সফুরা বেগম দম্পত্তির ছেলে বাবুল ভূঁইয়া। 

নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে ওই সময়ে মামলা করা হলেও তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের পাল্টা মামলার কারণে তাদের মামলার কার্যক্রম আর এগোয়নি। একযুগ মুখে বুঝে সবকিছু সহ্য করলেও স্বৈরাচারের পতনের পর নতুন করে বিচারের আশা করছেন ওই তিন পরিবারের স্বজনরা। এক যুগেও তাদের স্বজনদের হত্যার বিচার না পাওয়ার যন্ত্রণা তাদের কুরে কুরে খাচ্ছে। 

সরেজমিনে নিহত তিন যুবদল কর্মীর বাড়ি গিয়ে তাদের মা-বাবা ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে পরিবারের দু: সহ জীবনের স্মৃতি এবং প্রত্যাশার কথা জানা গেছে। 

রূপসা উত্তর ইউনিয়নের বারপাইকা গ্রামের মুন্সি বাড়ির মরহুম আ: আলিমের তিন সন্তানের মধ্যে সবার ছোট আরিফ হোসেন। পেশায় ছিল টাইল্স মিস্ত্রি আরিফ। ২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর শুক্রবার জুমার নামাজের পর বাড়ি থেকে বের হয়ে বিএনপির মিছিলে যোগ দেন। কিন্তু মিছিলে এসে বাড়ি ফেরেন লাশ হয়ে। 

মা হাজেরা বেগম জানান, ছেলেকে হারানোর পর থেকে তার সংসারের সুখ চলে গেছে। তার স্বামী মারা যায়। মেঝ ছেলে দেলোয়ার হোসেন ব্রেন স্ট্রোক করে। আরিফের বিধবা স্ত্রী আদরের নাতনিকে নিয়ে অন্যত্র বিয়ে করে চলে যায়। 

ভাই দেলোয়ার হোসেন বলেন, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের ক্ষমতার দাপটে তার ভাই আরিফের হত্যার বিচার পাননি তারা। মামলা করা হলেও উল্টো মামলা দিয়ে আমাদের মামলাকেই শেষ করে দিয়েছে। ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচারের পতনের পর মামলাটি পুন: তদন্তের আবেদনের পর খারিজ করে দেয় আদালত। তবে প্রত্যাশা করছি অন্তর্বর্তী সরকারের সঠিক নির্দেশনায় মামলাটি পুনরায় তদন্ত হবে এবং আমরা ন্যায় বিচার পাবো। 

একই ইউনিয়নের দক্ষিণ বদরপুর গ্রামের আনিছ ভূঁইয়া বাড়ির আ: রহিমের ৬ সন্তানের মধ্যে বড় বাবুল ভূঁইয়া। বিএনপির ডাকা মিছিলে অংশ নিতে ফরিদগঞ্জ সদরে আসে কিন্তু ফেরে লাশ হয়ে। 

বাবা আব্দুর রহিম জানান, ‘সেদিন ছেলের গুলি খাওয়ার সংবাদ শুনে হাতে থাকা ৫০ টাকা নিয়ে ছুটে গিয়েছি ফরিদগঞ্জে। পুলিশের রক্তচক্ষু ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের চাপের মধ্যেই ছেলেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছি, কিন্তু পারিনি।’ 
 
নিহত বাবুলের স্ত্রী রোকেয়া বেগম বলেন, কাঠ মিস্ত্রীর কাজ করে সংসার চালাতেন তার স্বামী। স্বামীর মৃত্যুর পর তিন সন্তানকে নিয়ে অনেক কষ্ট করেছি। আওয়ামী লীগের লোকজন টাকার লোভ দেখালেও তাতে সাড়া দেইনি। অপক্ষোয় রয়েছি স্বামী হত্যার বিচারের। 

পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের পূর্ব গাজীপুর গ্রামের তিনকড়ি বাড়ির মৃত আব্দুল মতিনের ৯ সন্তানের সবার ছোট জাহাঙ্গীর বেপারীও ওইদিন আরও নেতাকর্মীর মতই মিছিলে এসেছিলেন। কিন্তু সেও লাশ হয়ে ফিরে। 

বড় ভাই সেলিম ব্যাপারী জানান, জাহাঙ্গীরের মৃত্যুতে সবকিছুই ওলোটপালট হয়ে যায় তার সংসারে। একপর্যায়ে তার স্ত্রী চলে যায়। মেয়েটির বিয়ে হয়ে গেছে। কিন্তু ছোট ভাইয়ের হারানোর ব্যথা ভুলতে পারছি না। ফ্যাসিস্টরা এতদিন আমাদের কথা বলতে না দিলেও এখন বিশ্বাস করি খুনীদের বিচার হবেই। 

ফরিদগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. আবুল কালাম আজাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, জাহাঙ্গীর, বাবুল ও আরিফের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছিল। কিন্তু স্বৈরাচার সরকারের প্রশাসন মামলাটির প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে ব্যর্থ হয়। আমরা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এমএ হান্নান চৌধুরীর পক্ষ থেকে আর্থিক ও মানসিক সহযোগীতার মধ্যদিয়ে ওই পরিবারগুলোর পাশে অতীতে ছিলাম। এখন যেহেতু স্বৈরাচার সরকার চলে গেছে, আশা করি মামলাটি পুনতদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীরা বিচারের আওতায় আসবে। আমরা বিএনপি পরিবার ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে সহযোগিতা করবো। 

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ব্যাংকিং ও রাজস্ব বিষয়ক সম্পাদক লায়ন মো. হারুনুর রশিদ বলেন, আমরা নিয়মিত জাহাঙ্গীর, বাবুল ও আরিফের পরিবারের খোঁজখবর রেখে আসছি। তাদের সঠিক বিচার পাওয়ার জন্য যা যা করা প্রয়োজন আমরা তাই করবো। 

ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হানিফ সরকার বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। বাদী পক্ষ আমাদের কাছে এসেছিল। মামলা যেহেতু আদালতে বিচারাধীন। তাদেরকে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। আদালত আমাদের যে নির্দেশনা দেবে, আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার: বিএনপিএস

কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে বসবাস করা ৫৫ শতাংশ নারী ও কন্যা শিশু প্রতিনিয়ত সুরক্ষা, শিক্ষা, পুষ্টি ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, আশ্রয়শিবিরগুলোয় ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠকে এ তথ্য তুলে ধরে সংস্থাটি।

বিএনপিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সাল থেকে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে তারা কক্সবাজারের ৩৩টি শিবিরে বসবাস করছে, যা বিশ্বে বৃহত্তম শরণার্থী আশ্রয়স্থলগুলোর একটি। এই জনগোষ্ঠীর ৫২ শতাংশের বেশি নারী ও কন্যা।

সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে আট বছরেরও বেশি সময়ে কক্সবাজারের প্রায় ৫ লাখ মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই দীর্ঘস্থায়ী সংকটের প্রভাবে স্থানীয় জনগোষ্ঠী জীবিকা, মজুরি, বন ও জলসম্পদ, স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক সংহতির ওপর ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পড়েছে। ফলে এটি শুধু শরণার্থী সংকট নয়; এটি মানবিকতা, উন্নয়ন এবং শান্তির এক যৌথ চ্যালেঞ্জ।

‘শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অধিকার ও দায়িত্ব’ শীর্ষক এ গোল টেবিল বৈঠক সঞ্চালনা করেন বিএনপিএসের উপপরিচালক নাসরিন বেগম। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ শামসুদ্দৌজা নয়ন। এ ছাড়া শরণার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এম এ সানোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ পরিবশে আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য হুমায়রা বেগমসহ সংশ্লিষ্টরা বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শামসুদ্দৌজা নয়ন বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আন্তর্জাতিক অর্থ সহায়তা কমে এসেছে। এর ফলে সামাজিক নিরাপত্তা সংকট তৈরি হচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নারীরা।

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপত্তা, খাদ্য, আশ্রয়, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং ও সহিংসতা থেকে সুরক্ষার অধিকার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কাঠামোর অধীনে নিশ্চিত করা নৈতিক ও আইনগত দায়িত্ব। একইভাবে, আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়েরও টেকসই উন্নয়ন, পরিবেশ সুরক্ষা, সম্মানজনক কাজ এবং জনসেবায় ন্যায্য প্রবেশাধিকারের জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যবিপ্রবির প্রথম উপাচার্য রফিকুল ইসলাম মারা গেছেন

­যশোর প্রতিনিধি
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার মারা গেছেন (ইন্না...রাজিউন)। আজ বুধবার সকালে ঢাকার নিজ বাসা থেকে বের হয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে একটি বেসরকারি বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার যবিপ্রবি স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক। পরবর্তীতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। সেখানে তিনি কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি কৃষিবিদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও যবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এ ছাড়া তিনি একজন কৃষি বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলী হিসেবে দেশের কৃষি খাতের যান্ত্রিকীকরণ ও আধুনিকায়নে দীর্ঘ পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে কৃতিত্বের সঙ্গে অবদান রেখেছেন।

এদিকে, ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হোসেন আল মামুন, রিজেন্টবোর্ড সদস্যবৃন্দসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার।

এক শোক বার্তায় যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ বলেন, রফিকুল ইসলাম সরকার ছিলেন একজন সৎ, মানবিক, ধর্মভীরু ও দায়িত্বশীল মানুষ। যবিপ্রবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ অবধি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতিতে নিরলস পরিশ্রম করেছেন।

তিনি ছিলেন একজন দক্ষ প্রশাসক এবং বরেণ্য কৃষি বিজ্ঞানী। যবিপ্রবির সূচনালগ্নে তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও দূরদর্শী পরিকল্পনা বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আজকের এই অবস্থানে পৌঁছাতে ভিত গড়ে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে তিনি শূন্য থেকে একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার যে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলেন, তা যবিপ্রবি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার যানজট

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ২৪
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে কাঁচপুর সেতু থেকে লাঙ্গলবন্দ পর্যন্ত ১০ কিলোমাটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে একটি ট্রাক দুর্ঘটনার পর দীর্ঘ সময় সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় এ যানজট তৈরি হয়।

এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থেকে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, ব্যক্তিগত যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাত সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লাঙ্গলবন্দ ব্রিজ এলাকায় একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর রেলিংয়ে সজোরে আঘাত করে। ট্রাকটিতে প্রায় ২৭ টন মালামাল বোঝাই ছিল। দুর্ঘটনায় সেতুর রেলিং ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তিনি আরও জানান, ট্রাকটিতে অতিরিক্ত মালামাল থাকায় রেকার দিয়ে সরানো সম্ভব হয়নি। ফলে প্রথমে অন্য একটি ট্রাকে মালামাল স্থানান্তরের কাজ শুরু করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় লাগায় দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাকটি বিকেলের আগে সরানো যায়নি। এর ফলে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

পণ্যবাহী ট্রাকচালক শাহ আলম জানান, দুর্ঘটনার কারণে রাস্তা বন্ধ ছিল বুঝতে পারছি। কিন্তু এত সময় লাগবে ভাবিনি। মালামাল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছে।

আরেক যাত্রী আক্তার হোসেন বলেন, আমি চট্টগ্রামে যাচ্ছি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু তিন ঘণ্টা ধরে একই জায়গায় আটকে আছি। ছোট বাচ্চা নিয়ে খুব বিপদে পড়েছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক টিম কাজ শুরু করে। বিকেল নাগাদ মালামাল সরিয়ে ট্রাকটি সড়ক থেকে অপসারণ করা হলে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমাদের একাধিক টিম কাজ করছে। টানা তিন দিনের ছুটি থাকায় মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মগবাজারে ককটেল বিস্ফোরণে নিহতের মরদেহ ঢামেক মর্গে

ঢামেক প্রতিবেদক
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৫
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মগবাজারে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত সিয়াম মজুমদারের (২১) মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে হাতিরঝিল থানা পুলিশ মরদেহটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন।

হাতিরঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইদুর রহমান জানান, সিয়াম মজুমদারের (২১) বাড়ি খুলনার দিঘুলিয়া উপজেলার কলোনীতে। তার বাবার নাম আলী আকবর মজুমদার। পরিবারের সাথে নিউ ইস্কাটন দুই হাজার গলির ১০১ নম্বর বাসায় থাকতেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার তার মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে।

নিহত সিয়ামের সহকর্মী অহিদুল হাওলাদার জানান, নিউ ইস্কাটনে ‘জাহিদ কার ডেকোরেশনের’ কর্মচারী সিয়াম। গত ৩-৪ বছর যাবৎ এখানে কাজ করে সে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে দোকানে কাজ সেরে চা পান করার জন্য বের হয়েছিল সিয়াম। চা পান করেই চলে আসবে। এর আধাঘণ্টা পর দোকানে এসে কয়েকজন খবর দেয়, তাদের দোকানের কর্মচারী সিয়াম মারা গেছে। রাস্তায় তার মরদেহ পড়ে আছে। সঙ্গে সঙ্গে তারা দোকান থেকে ঘটনাস্থলে গিয়ে সিয়ামের রক্তাক্ত মৃতদেহ দেখতে পান। সিয়াম অবিবাহিত ছিল। তার বাবা সিএনজি অটোরিকশা চালক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত