Ajker Patrika

হেফাজতে নজর, থানায় থানায় নিরাপত্তা জোরদার

নিজস্ব প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২১, ২০: ০০
হেফাজতে নজর, থানায় থানায় নিরাপত্তা জোরদার

ঢাকা: থানায় থানায় জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা। আজ রোববার সকাল থেকে বেড়েছে পুলিশের টহল। বাড়ানো হয়েছে কওমী মাদ্রাসা কেন্দ্রীক ফোর্স। হেফাজতে ইসলামের নাশকতা প্রতিরোধে থানা, ফাড়ি ও তদন্ত কেন্দ্রের নিরাপত্তা বাড়ানোর পাশাপাশি সরকারি স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

আজ দুপুর থেকে অফিস ডিউটি কমিয়ে সব সিনিয়র অফিসাররা মাঠে ডিউটি করছেন বলে আজকের পত্রিকাকে জানান গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ। মেট্রোপলিটন ও জেলা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ঝুঁকি বিবেচনা করে কওমি মাদ্রাসা কেন্দ্রীক সার্বক্ষনিক পুলিশ ফোর্স রাখা হয়েছে। অফিস ডিউটির বদলে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে পুলিশি টহল।

পুলিশ সদরদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, পুলিশের ওপর হামলায় ব্যর্থ হলে নাশকতাকারীরা সরকারি স্থাপনা ক্ষতি করতে পারে। যে কোনো ধরনের নাশকতা ও হামলা প্রতিরোধে মেট্রোপলিটন, জেলা ও থানা পর্যায়ে সরকারি স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশের যেকোন ইউনিটে সব সময় কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ জন একত্রে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। এছাড়া টহলরত অবস্থায় থাকতে বলা হয়েছে কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ জন ফোর্স। পুলিশের উপর কোনো হামলা হলে যাতে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে, সে জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক ফোর্স ও আগ্নেয়াস্ত্র দেওয়া হয়েছে টহলরত পুলিশ সদস্যদের।

অতিরিক্ত ফোর্সের বিষয়ে যশোর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, আমরা ডিসি-এসপি-ইএনও এর কার্যালয়সহ সরকারি স্থাপনার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি। যেসব জায়গায় নিরাপত্তা ঘাটতি রয়েছে, সেসব জায়গায় নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত ফোর্স দেওয়া হয়েছে। সেই সাথে টহল বাড়ানো হয়েছে। থানা ফাড়ির নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রতিনিয়ত উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দেখছেন।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, কওমী মাদ্রাসার তালিকা করে ছাত্রসংখ্যা ও শক্তিমাত্রা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। কওমী মাদ্রাসা ও হেফাজতে ইসলামের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহে জোর দেওয়া হয়েছে।

হেফাজতের ইসলামের নেতাকর্মীরা গত ২৬ মার্চ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি নাশকতা চালায় ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া জেলায়। জেলার ৫৮টি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে। ভাঙচুর করা হয়েছে দুইটি মন্দির। প্রেসক্লাব ও স্থানীয় সরকারি দলীয় নেতাদের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও আগুন লাগানো হয়েছে। 

জেলার সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ইশতিয়াক আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, নাশকতার পর থানায় এলএমজি পোস্টসহ নিরাপত্তা জোরদার করেছি। টহল বাড়ানো হয়েছে। হেফাজত নেতা মামুনুল হক গ্রেপ্তার হতে পারেন তথ্য পাওয়ার সাথে সাথেই মাদ্রাসা কেন্দ্রীক টহল বাড়িয়ে দিয়েছি।

হঠাৎ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চলমান কার্যক্রমের অংশ মন্তব্য করে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হোসেন বলেন, যে কোনো অপ্রিতকর ঘটনা কঠোর হাতে দমন করতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া আছে।   

হেফাজত কর্মীরা এখন অনেকটাই শান্ত দাবি করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, হেফাজতের শীর্ষ নেতা মামুনুল হকের রিসোর্ট কাণ্ডের পর সংগঠনটির অনেক কর্মী মানসিকভাবে নেতৃত্ব নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে হেফাজত মাঠে নেমে জালাও পোড়াও করার সাহস পাবে না। তবে হেফাজতকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নিতে পারে সেই আশঙ্কায় পুলিশ সব সময় সতর্ক রয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তাদের বক্তব্যের প্রমাণ মেলে রোববার দুপুরে মোহাম্মদপুরের মাদ্রাসা থেকে মামুনুল হককে গ্রেপ্তারের ঘটনায়। তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসার সময় কয়েকজন মাদ্রাসা ছাত্রকে কয়েক মিনিট বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। তারা বিভিন্ন স্লোগান দেয়। কিছু শিক্ষার্থী গাড়ির পিছুপিছু মিছিল নিয়ে মূল রাস্তায় যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে পুলিশের বাধায় শেষ পর্যন্ত তারা ফিরে যান। কর্মীদের অতীতের মত মারমুখী হতে দেখা যায়নি।  

তবে নেতাদের গ্রেপ্তারে কর্মীরা শান্ত থাকবে এটা মানতে নারাজ দলের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আতাউল্লাহ আমিনী। তিনি বলেন, লকডাউনের ফাঁদে ফেলে রমজান মাসে আলেম-ওলামা হয়রানি ও গ্রেপ্তার করে দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হচ্ছে। হয়রানি, গ্রেপ্তারর বন্ধ, আটকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি না দিলে আলেম-ওলামারা ঐক্যবদ্ধভাবে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন। তিনি বলেন, হয়রানি ও গ্রেফতার করে আলেম-ওলামাদের আন্দোলনকে ঠেকানো যাবে না। কর্মীরা দেশের প্রয়োজনে জীবন দিতে  প্রস্তুত বলে তিনি মন্তব্য করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নানা বিতর্কে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন

  • এবারই প্রথম বিজয় দিবসে করা হয়নি আলোকসজ্জা।
  • জাতীয় সংগীতও পরিবেশন করা হয়নি সেদিন সকালে।
  • বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনায় বেফাঁস মন্তব্য শিক্ষকের।
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) প্রশাসনের বিরুদ্ধে সম্প্রতি নানা অভিযোগ উঠেছে। বিজয় দিবসে আলোকসজ্জা করা হয়নি, পরিবেশন করা হয়নি জাতীয় সংগীত। এর আগে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনায় এক শিক্ষকের বেফাঁস মন্তব্যে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

২০১১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতিটি জাতীয় দিবসের ২ থেকে ৩ দিন আগে আলোকসজ্জা করা হতো বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। এ বছর মহান বিজয় দিবসে অজ্ঞাত কারণে করা হয়নি আলোকসজ্জা। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে বিজয় দিবসে অর্থাৎ গত মঙ্গলবার দুপুরে আলোকসজ্জার কার্যক্রম শুরু হয়। বিজয় দিবসের কর্মসূচিও দায়সারাভাবে পালনের অভিযোগ উঠেছে ববি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

শিক্ষার্থীরা জানান, আগে প্রতিবছর ১৪ থেকে ১৬ ডিসেম্বর ৩ দিন ববি ক্যাম্পাসে থাকত জাঁকজমক আলোকসজ্জা। এবার আলোকসজ্জা না হওয়ায় গত সোমবার বিকেলে তাঁরা উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে প্রতিবাদ জানান। তখন উপাচার্য জানান, আলোকসজ্জার জন্য কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। গাফিলতি হয়ে থাকলে কমিটি করেছে। তবে কমিটিতে কারা রয়েছেন, তা জানাতে অস্বীকার করেন তিনি। বিজয় দিবসের সকালে জাতীয় সংগীত পরিবেশন না করারও কারণ জানা যায়নি।

আলোকসজ্জা না হওয়ায় ববি ছাত্রদল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিন্দা জানিয়ে মঙ্গলবার সকালে বিবৃতি দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সেদিন দুপুরে আলোকসজ্জার কাজ শুরু করে কর্তৃপক্ষ।

ববি ছাত্রদল সভাপতি মোশারফ হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়ে তড়িঘড়ি করে আলোকসজ্জা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে প্রতিবছর মূল ভবনটি লাল-সবুজ রঙের আলোয় সজ্জিত হতো, এবার সেটা হয়নি। এ ছাড়া বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ববি কর্তৃপক্ষ তেমন প্রচার চালায়নি। ফলে অনুষ্ঠানগুলোয় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল খুবই নগণ্য।

এ ছাড়া বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনায় এক শিক্ষক বেফাঁস মন্তব্য করেন। সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. তৌফিক আলমের উপস্থিতিতে কোস্টাল স্টাডিজ ও ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, ‘বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে পার্শ্ববর্তী ইন্ডিয়ানরা।’

তবে সভার সভাপতি ড. ধীমান কুমার রয় বলেন, আলোচক ড. হাফিজ আশরাফুল হকের বক্তব্য তাঁর ব্যক্তিগত।

এদিকে গত শুক্রবার রাতে শীতকালীন উৎসবের আয়োজন করেছিল বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা সাংস্কৃতিক সংগঠন (ববিচাস)। সেই অনুষ্ঠানেও হামলাচেষ্টার অভিযোগ করেন আয়োজকেরা। তাঁদের দাবি, সাধারণ ছাত্রদের প্রতিরোধে তাঁরা ফিরে যেতে বাধ্য হয়।

এ বিষয়ে ববিচাস সভাপতি সামিউল আলম নির্ঝর বলেন, অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর কয়েকজন শিক্ষার্থী রড, লাঠিসোঁটাসহ এসে সেখানে মব সৃষ্টির চেষ্টা করেন। কিন্তু ছাত্রদল কর্মীদের উপস্থিতি বেশি থাকায় তাঁরা চলে যেতে বাধ্য হন। এ বিষয়ে তাঁরা প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে ববি প্রক্টর ড. রাহাত হোসাইন ফয়সালকে ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে উপাচার্য মোহাম্মদ তৌফিক আলম বলেন, কমিটির গাফিলতিতে সঠিক সময়ে আলোকসজ্জা হয়নি। কমিটিকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

বুদ্ধিজীবী দিবসে শিক্ষক হাফিজুল হকের বক্তব্য প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, তাঁর বক্তব্যের খণ্ডিত অংশ প্রচার করে বিকৃত করা হয়েছে। বিজয় দিবসের কর্মসূচিতে জাতীয় সংগীত পরিবেশন না হওয়ার বিষয়ে উপাচার্য তৌফিক আলম বলেছেন, বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীত পরিবেশন হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কার্ডিকন চট্টগ্রাম-২০২৫: দেশীয় চিকিৎসার ওপর আস্থা তৈরির তাগিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
৯টি দেশের ৫৫০ জনের বেশি হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞের অংশগ্রহণে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কার্ডিওভাসকুলার সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
৯টি দেশের ৫৫০ জনের বেশি হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞের অংশগ্রহণে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কার্ডিওভাসকুলার সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইউরোপ, আমেরিকা ও এশিয়ার ৯টি দেশের ৫৫০ জনের বেশি হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞের অংশগ্রহণে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কার্ডিওভাসকুলার সম্মেলন ‘কার্ডিকন চট্টগ্রাম-২০২৫’। চট্টগ্রাম সোসাইটি অব ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজির (সিএসআইসি) উদ্যোগে ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর নগরের রেডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে ভিউ হোটেলে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে হৃদ্‌রোগ চিকিৎসার আধুনিক প্রযুক্তি, গবেষণা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের পাশাপাশি দেশীয় চিকিৎসাব্যবস্থার ওপর আস্থা রাখার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।

‘শ্রেষ্ঠত্বের দিকে পদক্ষেপ’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত সম্মেলনে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা ১০০টির বেশি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন। কর্মসূচিতে ছিল স্টেট অব দ্য আর্ট লেকচার, প্লেনারি সেশন, হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ, ইকোকার্ডিওগ্রাফি ওয়ার্কশপ, ফেলোস কোর্স, ইসিজি সিম্পোজিয়াম, পোস্টার ও কেস ডিসকাশন (সিডি) উপস্থাপন।

সম্মেলনের সমাপনী ও গালা সেশনে সভাপতিত্ব করেন সিএসআইসি সভাপতি ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম চৌধুরী। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ওমর ফারুক ইউসুফ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাহাদাত হোসেন বলেন, দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার ওপর আস্থা না থাকায় প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক রোগী চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাচ্ছে। ফলে দেশের অর্থনীতি বড় অঙ্কের ক্ষতির মুখে পড়ছে। তিনি বলেন, ‘দেশে এখন এনজিওগ্রাম, এনজিওপ্লাস্টি, স্টেন্টিং, পেসমেকারসহ জটিল হৃদ্‌রোগ চিকিৎসা সফলভাবে হচ্ছে। মৃত্যুর হারও উল্লেখযোগ্য নয়। তারপরও রোগীরা ভারতসহ পার্শ্ববর্তী দেশে যাচ্ছেন, যা আমাদের জন্য উদ্বেগজনক।’

শাহাদাত হোসেন বলেন, রোগীর বিদেশমুখী প্রবণতা বন্ধ করা গেলে দেশে আধুনিক যন্ত্রপাতি, এমআরআই, কালার ডপলার, ক্যাথল্যাবসহ আরও উন্নত চিকিৎসা অবকাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব।

সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাড়াও পর্তুগাল, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান, নেপাল ও ভারত—এই ৯টি দেশের খ্যাতনামা হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। আন্তর্জাতিক বক্তাদের মধ্যে ছিলেন পর্তুগালের অধ্যাপক ফুয়াস্তু জে পিন্টো, ইতালির অধ্যাপক অ্যান্থোনিও কলোম্বো, যুক্তরাষ্ট্রের ডা. রফিক আহমেদ ও অধ্যাপক চৌধুরী এইচ আহসান, মালয়েশিয়ার অধ্যাপক সাজলি সাহলান বিন কাসিম, ভিয়েতনামের ডা. ফেম নাত মিনহ, পাকিস্তানের ডা. গোলাম হুসাইন সোমরু, নেপালের ডা. অরুণ মাসকেই এবং ভারতের অধ্যাপক অশোক শেঠসহ আরও অনেকে।

পাশাপাশি দেশের শীর্ষ হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞদের মধ্যে গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন ইউনাইটেড হাসপাতালের চিফ কনসালট্যান্ট এন এ এম মোমেনুজ্জামান, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের অধ্যাপক ফজিলা-তুন-নেছা মালিক, ইউনাইটেড হাসপাতালের অধ্যাপক মো. আফজালুর রহমান, এভারকেয়ার হাসপাতালের অধ্যাপক আতাহার আলী, এনআইসিভিডির সাবেক পরিচালক মীর জামাল উদ্দিন ও বর্তমান পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী।

এ ছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নাজমুল হোসাইন, বাংলাদেশ কার্ডিয়াক সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ শফিউদ্দিন, মেম্বার সেক্রেটারি অধ্যাপক এ এফ খবির উদ্দিন আহমেদ এবং বাংলাদেশ সোসাইটি অব কার্ডিওভাসকুলার ইন্টারভেনশনের সভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আসাদুজ্জামানসহ দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রতিনিধিরা সম্মেলনে অংশ নেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পঞ্চগড়ে আট দিন ধরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ: রাতে কনকনে শীত, দিনে ঝলমলে রোদ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
পঞ্চগড় সদর উপজেলার টুনিরহাট এলাকা থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
পঞ্চগড় সদর উপজেলার টুনিরহাট এলাকা থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

উত্তরের জনপদ পঞ্চগড়ে আট দিন ধরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। রাতে কনকনে হিমেল হাওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়লেও দিনে ঝলমলে রোদের দেখা মিলছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় জেলার তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ। বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার থাকায় শীতের অনুভূতি আরও তীব্র হয়ে উঠেছে।

সকালে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কুয়াশাহীন ভোরে সূর্য উঠেছে ঝলমলে আলো নিয়ে। সূর্যের আলোয় ঝলমল করছে জেলার প্রকৃতি। স্বাভাবিক কর্মচাঞ্চল্য দেখা গেছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, এক সপ্তাহ ধরে তাপমাত্রায় কিছুটা ওঠানামা থাকলেও তা ১০ ডিগ্রির নিচেই রয়েছে। বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে বুধবার ৯ দশমিক ৭, মঙ্গলবার ৯ দশমিক ৫, সোমবার ৯, রবি ও শনিবার ৯ দশমিক ৩, শুক্রবার ৯ দশমিক ৫ এবং আগের বৃহস্পতিবার ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। গতকাল বুধবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সংজ্ঞা অনুযায়ী, তাপমাত্রা ১০ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ৮ থেকে ৬ ডিগ্রির মধ্যে হলে মাঝারি এবং ৬ ডিগ্রির নিচে নেমে গেলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়। সে হিসেবে বর্তমানে তেঁতুলিয়াসহ পঞ্চগড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করছে।

সদর উপজেলার টুনিরহাট এলাকার কৃষক আব্দুল হাকিম বলেন, ‘রাতে যে ঠান্ডা পড়ে, তা সহ্য করা মুশকিল। ভোরবেলা ঘর থেকে বের হওয়া যায় না। হাত-পা বরফের মতো হয়ে যায়। তবে দিনে রোদ ঝলমল করে। এই রোদের কারণে মাঠের কাজ কোনোমতে চালিয়ে নেওয়া যাচ্ছে।’

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ‘গত কয়েক দিনে জেলার তাপমাত্রা ক্রমেই নিম্নমুখী। আজ সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে, যা মৃদু শৈত্যপ্রবাহের আওতায় পড়ে। বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় শীতের প্রভাব আরও বেশি অনুভূত হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জমিতে পুকুর কাটতে বাধা দেওয়ায় কৃষককে ভেকুচাপায় হত্যার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজশাহী মোহনপুর উপজেলায় ফসলি জমিতে পুকুর খননে বাধা দেওয়ায় এক কৃষককে ভেকু (এক্সকেভেটর) চাপা দিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত ব্যক্তির নাম জুবায়ের হোসেন (২৫)। তিনি উপজেলার বড় পালশা গ্রামের বাসিন্দা। ঘটনার পর স্থানীয় জনতা মাটি খননের যন্ত্রটিতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছেন। পুলিশ ভেকু চালককে আটক করেছে।

নিহতের পরিবারের দাবি, পুকুর খননে বাঁধা দেওয়ায় জুবায়েরকে এক্সকেভেটরের চাকার নিচে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তারা বিচার চান। ঘটনার পরে চালক আবদুল হামিদকে (২৮) আটক করেছে পুলিশ। আটক আবদুল হামিদ টাঙ্গাইল জেলার কাদিমহামজানি উত্তরপাড়ার বাসিন্দা।

রাজশাহীর মাঠে মাঠে বিভিন্ন প্রভাবশালী মহল কৃষককে না জানিয়ে কিংবা অনুমতি না নিয়েই জোর করে পুকুর খনন করে। সেই পুকুর তারা ইজারা দেয় এবং পরবর্তীতে ইজারামূল্যের একটি অংশ কৃষককে দেয়। এতে রাজশাহীতে কৃষিজমি রাতারাতি পুকুর হয়ে যাচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পালশা গ্রামে পুকুর খনন করা হচ্ছিল। তবে কৃষিজমি রক্ষায় স্থানীয়দের সঙ্গে জুবায়ের বাঁধা দেন। এ সময় ভীমনগর গ্রামের কয়েকজনের সঙ্গে এলাকাবাসীর বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে এক্সকেভেটরের নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন জুবায়ের। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক জুবায়েরকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মরদেহ পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।

এদিকে খবর পেয়ে মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহিমা বিনতে আখতার ঘটনাস্থল ও নিহতের বাড়িতে যান। এসময় তিনি নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেন।

ইউএনও ফাহিমা বিনতে আখতার বলেন, ‘পুকুর খনন করবে জেনে এলাকাবাসী বাঁধা দেয়। এলাকাবাসী ফসলী জমিতে পুকুর খনন করতে দেবে না। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে এক্সকেভেটর গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লেগে জুবায়ের আহত হন। পরে তার মৃত্যু হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমি এখানে আসার পরে শুনেছি ঘটনার পরে জনতা গাড়িটিতে আগুন দিয়েছে। এছাড়া পুলিশ চালককে আটক করেছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

যোগাযোগ করা হলে মোহনপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মঈনুদ্দীন জানান, তিনি ঘটনাস্থলে আছেন। এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত