Ajker Patrika

ব্যবসাকে রাজনীতিকীকরণ করা চলবে না: আমীর খসরু

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট  
সিলেট বিজনেস ডায়ালগ-২০২৫’ অনুষ্ঠানে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিলেট বিজনেস ডায়ালগ-২০২৫’ অনুষ্ঠানে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক ব্যাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ব্যবসাকে রাজনীতিকীকরণ করা চলবে না। এটা পলিটিক্যাল স্টেটমেন্ট না, এটা বিএনপির সিদ্ধান্ত। যেসব ব্যবসা সংগঠন রয়েছে, রাজনীতিকীকরণ করা চলবে না। তবে ফ্যাসিস্টদের দোসরমুক্ত করতে হবে। ফ্যাসিস্টদের রেখে আগামী দিনে কোনো সংগঠন চালানো যাবে না। এরপরে কে নেতা হবেন, সেটা ব্যবসায়ীদের সিদ্ধান্ত, এখানে কোনো দলীয়করণের সুযোগ নেই।’

আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সিলেট নগরের মেন্দিবাগ এলাকার জালালাবাদ গ্যাস অডিটোরিয়ামে ‘সিলেট বিজনেস ডায়ালগ-২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু এসব কথা বলেন। সিলেট ও জাতীয় অর্থনীতির বর্তমান চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা ও সম্মিলিত অগ্রগতির রূপরেখা নিয়ে বিভাগের চার জেলার ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণে এ মতবিনিময় সভা হয়।

সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় গেলে মানুষের কর্মসংস্থান কয়েকগুণ বেড়ে যায়। কারণ হচ্ছে, আমরা ব্যবসায়ীদের সমর্থন করি। বিএনপি হচ্ছে ব্যবসায়ী-সমর্থক একটি দল। যখন ব্যবসায়ীকে আপনি সমর্থন করবেন, তখন সে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার তো ব্যবসায়ী ছাড়া আর কেউ নেই। এটা তো বুঝতে হবে। আগামী দিনের সরকার শুধু ব্যবসায়ীবান্ধব নয়, সরকার ব্যবসায়ের সার্বক্ষণিক সংযোগ রেখে কাজ করবে। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক না থাকলে সরকার বিচ্ছিন্ন হয়, যেটা আমরা গত ১৬ বছরে দেখেছি। সুতরাং এগুলোকে মাথায় রেখে আমরা আগামী দিনের বাংলাদেশ গড়তে চাই।’

বিএনপি ক্ষমতায় এলে কী কী উদ্যোগ নেওয়া হবে—সেসবের ফিরিস্তি তুলে ধরে আমীর খসরু বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ১৮ মাসে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান করা হবে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেবে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে। ন্যূনতম এসএসসি পাস তরুণ-যুবকদের আইটি খাতে চাকরি দেওয়া হবে।’ অনুষ্ঠানে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির গুরুত্বপূর্ণ এই সদস্য বলেন, ‘শিক্ষার কারিকুলাম বদলাতে হবে। বর্তমান শিক্ষার কারিকুলাম দিয়ে আমরা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যেতে পারব না। আমরা আইটি সেক্টরকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করছি। আমরা চাই, গার্মেন্টস সেক্টরের পরে আইটি সেক্টরে মানুষজন বেশি কাজ করবে।’

বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে মানুষের প্রত্যাশা বেশি। আগের মতো রাজনীতি হবে না। এখন মানুষের মন-মানসিকতার পরিবর্তন হয়েছে, প্রত্যাশার পরিবর্তন হয়েছে, আকাঙ্ক্ষার পরিবর্তন হয়েছে। আমরা যারা রাজনীতি করি, এটার সঙ্গে যদি চলতে না পারি, আমি পরিষ্কারভাবে আপনাদের বলতে চাই, তাদের কোনো রাজনীতি বাংলাদেশে থাকবে না। ওই রাজনীতিবিদেরা থাকবে না, তাদের দলেরাও থাকবে না। আমরা এটাকে অনুধাবন করে, আমরা এটাকে ধারণ করে, এখন থেকে কাজ শুরু করেছি, যাতে আমাদের সময় নষ্ট না হয়।’

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরের সভাপতিত্বে ও মহানগর বিএনপির সহসভাপতি ব্যারিস্টার রিয়াসদ আজিম ও কোষাধ্যক্ষ এনামুল কুদ্দুস চৌধুরীর যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজেএমই) সাবেক সভাপতি এস এম ফজলুল হক। এ ছাড়া সভায় ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বক্তব্য দেন। সভায় সিলেট বিভাগের চার জেলার ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি স্থানীয় বিএনপি নেতারাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিক, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী ও মিজানুর রহমান চৌধুরী, জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, নাসিম হোসাইন, বদরুজ্জামান সেলিম, ফয়সল আহমদ চৌধুরী, মহানগর ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান রিপনসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকেরা ‘দুটি কারণে জাতীয় সংসদের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়া উচিত’ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক ব্যাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘যেকোনো দলেরই গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে নির্বাচন নিয়ে কথা বলার। এটা নিয়ে আমি কথা বলতেছি না। নির্বাচন কমিশন নিজেরাই প্রস্তুত নির্বাচন দেওয়ার জন্য। তারাই বলেছে, তারা নির্বাচন দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। জাতীয় নির্বাচনের জন্য তারা প্রস্তুত। বিএনপি হচ্ছে জনগণের দল, জনগণকে নিয়েই দল গঠন করে। সুতরাং আমরা জনগণের সঙ্গে সব সময় থাকি। বিএনপি জনগণকে নিয়েই নির্বাচন চায়। একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন জাতির কাম্য। এটার জন্য দেশের মানুষ অপেক্ষা করছে। যত দ্রুত আমরা দেশকে গণতান্ত্রিক পথে নিয়ে যেতে পারি, বাংলাদেশের মানুষের সাংবিধানিক, রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে পারি, দেশবাসীর আকাঙ্ক্ষা, আমাদের সবার আকাঙ্ক্ষা, একটি নির্বাচনের মাধ্যমে একটি ভালো, বিগেনিংভাবে স্টার্ট করতে পারি, সেটাই চাওয়া।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চাঁদপুরে হেফাজতে নির্যাতন, ৪ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা

চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুরে হেফাজতে নির্যাতন, ৪ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ থানায় পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ এনে অজ্ঞাতনামা চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী ও ডাকাতি মামলার আসামি মো. খোকন (৩৯)। গত শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) তিনি ফরিদগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন।

এর আগে ফরিদগঞ্জ থানায় গত ২৮ নভেম্বর চাঞ্চল্যকর ডাকাতি মামলায় আসামির দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণকালে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ফরিদগঞ্জ আমলি আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট শাহাদাতুল হাসান আল মুরাদ নির্যাতনের ঘটনায় মামলা করার নির্দেশ দেন।

আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির ফখরুদ্দিন আহমেদ স্বপন।

মামলার কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অধীন ফরিদগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট একটি ডাকাতি মামলায় (জি আর নং-৩১৫/২৫) ১৬ ডিসেম্বর তিনজন অজ্ঞাতনামা আসামিকে হাজির করা হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবিরের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এজাহারে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে উল্লেখিত খোকনের দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ডের সময় আসামি পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের বিস্তারিত বর্ণনা দেন।

আসামির গ্রেপ্তারের সময় গ্রেপ্তারের স্মারকপত্রে আসামি সুস্থ ও পুলিশ ফরওয়ার্ডিংয়ে কোনো জখমের উল্লেখ না থাকায় ম্যাজিস্ট্রেট আসামিকে পরীক্ষা করে নির্যাতনের অভিযোগ তাৎক্ষণিকভাবে লিপিবদ্ধ করেন। একই সঙ্গে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন অনুযায়ী সাত কার্যদিবসের মধ্যে চাঁদপুরের পুলিশ সুপারকে মামলা দায়েরের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে আসামিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে নির্দেশ দেন।

যার পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ ডিসেম্বর চাঁদপুর সদর হাসপাতাল থেকে আসামিকে পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেন চিকিৎসক রানা সাহা ও আসিবুল হাসান চৌধুরী। হাসপাতালের মেডিকেল পরীক্ষার প্রতিবেদনে দেখা যায়, আসামির উভয় পায়ের ঊরুর ওপর একাধিক নীলাফুলা জখম রয়েছে। যদিও চিকিৎসা সনদে উল্লেখ করা হয়, আসামির বর্ণনামতে এই জখম প্রায় চার দিন আগের।

এদিকে আদালতের মামলা করার নির্দেশের পর ২৩ ডিসেম্বর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ সার্কেল) মুকুর চাকমা ঘটনার গুরুত্ব ও স্পর্শকাতরতার কথা উল্লেখ করে ১৫ দিনের তদন্তের সময় প্রার্থনা করেন। তবে ম্যাজিস্ট্রেট সময় বিবেচনা না করে তাৎক্ষণিকভাবে মামলা করার আগের আদেশ বহাল রাখেন।

আদালতের আদেশ পর্যালোচনায় দেখা যায়, নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ আমলযোগ্য। ফলে আইনানুযায়ী এ ধরনের অপরাধে মামলা করা ছাড়া তদন্ত পরিচালনার কোনো সুযোগ নেই।

সর্বশেষ ২৭ ডিসেম্বর আদালতের নির্দেশ মোতাবেক ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা করেন। ওই মামলার তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয় থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আরিফ ইফতেখারকে।

মামলার বাদী মো. খোকন ফরিদগঞ্জ উপজেলার গুপ্টি সরদার বাড়ির শাহজাহানের ছেলে। বিভিন্ন অপরাধে ফরিদগঞ্জ থানায় চার মামলার আসামি খোকন। সর্বশেষ গত রোববার (২৮ নভেম্বর) ডাকাতির ঘটনায় ফরিদগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা সাতজনকে আসামি করে মামলা করেন উপজেলার গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের সাইসাঙ্গা গ্রামের মিজি বাড়ির রহিম বাদশার স্ত্রী পেয়ারা বেগম। ওই মামলায় গ্রেপ্তার হন আসামি খোকন।

এ বিষয়ে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. রবিউল হাসান বলেন, আদালতের আদেশের পর ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে বাড়ানো হলো মেট্রোরেলের ট্রিপ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ২৬
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বিএনপির সদ্যপ্রয়াত চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নেওয়ার সুবিধার্থে আগামীকাল বুধবার মেট্রোরেলের ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) পরিচালক (প্রশাসন) এ কে এম খায়রুল আলমের সই করা নোটিশে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, যাত্রীসাধারণের যাতায়াত নির্বিঘ্ন রাখতে বিশেষ এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

উদ্যোগের বিষয়ে ডিএমটিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) মোহাম্মদ ইফতিখার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকার ৩১ ডিসেম্বর সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় ছুটির দিনের সময়সূচি অনুযায়ী ট্রেন চলাচলের কথা থাকলেও খালেদা জিয়ার জানাজার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে মেট্রোরেলের ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, যাত্রীদের চাপ সামাল দিতে প্রয়োজন অনুযায়ী মেট্রোরেল সেবা সমন্বয় করা হবে। যাতায়াত স্বাভাবিক রাখতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছে ডিএমটিসিএল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি 
মাওলানা মুখলিছুর রহমান (চিতল মুখলিছ)। ছবি: সংগৃহীত
মাওলানা মুখলিছুর রহমান (চিতল মুখলিছ)। ছবি: সংগৃহীত

দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রকাশ্যে আপত্তিকর মন্তব্য করায় হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে মাওলানা মুখলিছুর রহমান (চিতল মুখলিছ) নামের এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়েছে স্থানীয় জনতা। তিনি শেখ হাসিনাকে চিতল মাছ ও হিরো আলমকে নোয়া গাড়ি উপহার দিয়ে ‘চিতল মুখলিছ’ নামে পরিচিতি পান। মুখলিছুর রহমান পরে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বেলা ২টার দিকে চুনারুঘাট পৌর শহরের থানা রোডে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুরে থানার গেট এলাকায় দাঁড়িয়ে মাওলানা মুখলিছুর রহমান বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ও আপত্তিকর মন্তব্য করেন। বিষয়টি বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের কানে গেলে তাঁরা তাঁকে আটক করার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে তিনি পালানোর চেষ্টা করলে উত্তেজিত জনতা তাঁকে ধরে মারধর করে। পরে স্থানীয় মুরব্বিদের হস্তক্ষেপে মাওলানা মুখলিছুর রহমান প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

যুবদল নেতা সাদ্দাম হোসেন বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁকে আটক করে গণপিটুনি দিয়েছে।

উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব মারুফ আহমেদ বলেন, থানার গেট এলাকায় বসে তিনি কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করছিলেন। বিষয়টি জানাজানি হলে উত্তেজিত জনতা তাঁকে কিছু মারধর করে। পরে উপস্থিত মুরব্বিদের হস্তক্ষেপে মাওলানা মুখলিছুর রহমান প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়। তবে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই বিষয়টি মীমাংসা হয়ে যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদি হত্যা মামলা: সিবিউন-সঞ্জয়ের তৃতীয় দফায় রিমান্ড, ফয়সাল নামে আরও একজন রিমান্ডে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ০২
হাদি হত্যা মামলা: সিবিউন-সঞ্জয়ের তৃতীয় দফায় রিমান্ড, ফয়সাল নামে আরও একজন রিমান্ডে

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যার মামলায় প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানকে ভারতে পালাতে সাহায্যকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিমকে তৃতীয় দফা রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের পর অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার ফয়সাল নামে একজনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলাম প্রত্যেককে তিন দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর গোয়েন্দা পুলিশ তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেন।

দুই আদিবাসী সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিম এবং ফয়সালকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। প্রত্যেকের সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার পৃথক দুটি আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ। শুনানি শেষে আদালত কারাগারে প্রত্যেকের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আদালতের অতিরিক্ত পিপি মুহাম্মদ শামসুদ্দোহা সুমন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

২৬ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফা রিমান্ড শেষে সিবিউন ও সঞ্জয়কে কারাগারে পাঠানো হয়। ২১ ডিসেম্বর দুজনকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। ১৮ ডিসেম্বর তাঁদের তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।

এর আগে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া ও হালুয়াঘাট থেকে এই দুজনকে আটক করে ডিবি পুলিশ।

সিবিউন ও সঞ্জয়ের রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, সীমান্তে পারাপারকারী চক্রের হোতা জনৈক ফিলিপ নামক ব্যক্তির অবস্থান শনাক্ত, গ্রেপ্তার, ফিলিপ ব্যতীত আর কারও সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি না, ফিলিপের সঙ্গে কিলিং মিশনের কে বা কারা যোগাযোগ করেছে তা জানার জন্য, কিলিং মিশনের ইন্ধনদাতা এবং অর্থদাতাদের শনাক্ত করার জন্য সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিমকে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

অন্যদিকে ফয়সালের রিমান্ড আবেদন থেকে জানা যায়, ১৬ ডিসেম্বর র‍্যাব-১১-এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নরসিংদী জেলার সদর থানাধীন তরুয়া এলাকার মোল্লার বাড়ির সামনে তরুয়ার বিলে অভিযান চালিয়ে ফয়সালকে আটক করে। অভিযানের সময় বিলের পানিতে ফেলে দেওয়া হাদি হত্যায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়। পরে তাঁকে অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

তাঁর রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, হাদি হত্যা মামলা একটি চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা। মামলার এজাহারনামীয় ও পলাতক আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়ার তথ্য অনুযায়ী, আসামি ফয়সালের দেখানো মতে নরসিংদী সদরের তরোয়া বিল থেকে ১৬ ডিসেম্বর রাত ১১টার দিকে পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করে। নরসিংদী সদর মডেল থানায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়।

তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, ফয়সালের তথ্যানুযায়ী উদ্ধার হওয়া অস্ত্র ও গুলি পল্টনে চাঞ্চল্যকর ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়েছে। অস্ত্রের উৎস ও সরবরাহকারী সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ, হত্যার মোটিভ উদ্ধার, ইন্ধনদাতাদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার, পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য ফয়সালকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে বিজয়নগর এলাকায় রিকশায় করে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করা হয়। মোটরসাইকেল করে এসে রিকশার পাশ থেকে করা গুলিতে হাদি মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন। ঘটনার পরপর তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেওয়ার হলে সেখানে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর মারা যান হাদি।

১৪ ডিসেম্বর রাতে ফয়সালকে আসামি করে পল্টন থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন ইনকিলাব মঞ্চের যুগ্ম সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের। হাদির মৃত্যুর পর তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপ নেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত