
সৈয়দ শামসুল হক ও আপনার যৌথ জীবন এবং দীর্ঘ জার্নির সমাপ্তি হয়েছে ছয় বছর হয়ে গেল। নিশ্চয় খুব মিস করেন তাঁকে। সৈয়দ হকবিহীন সময়গুলো কেমন কাটছে আপনার?
ব্যক্তিগতভাবে বলি, একটা দিনও তাঁকে ভুলিনি। কারণ, প্রতিদিনই ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে তাঁকে নিয়ে। তাঁর বই পুনর্মুদ্রণ হচ্ছে, নতুন সংস্করণ হচ্ছে, বিভিন্ন সংগঠন তাঁকে নিয়ে কাজ করছে, বিভিন্ন জায়গা থেকে লেখা চাচ্ছে—এসব কাজে নিজেকেও জড়াতে হচ্ছে।
সম্প্রতি তাঁর ৩৫ খণ্ডের রচনাবলি বের হয়েছে, পুরো পাণ্ডুলিপি দেখে দিতে হয়েছে। সৈয়দ হক সশরীরে নেই, দেখতে দেখতে ছয়টা বছর কীভাবে যেন চলে গেল। জীবন তো একটা চলমান প্রক্রিয়া, সেই প্রক্রিয়ার ভেতর আমরা এখনো বর্তমান আছি, তিনি তাঁর কর্মগুণেই আমাদের মাঝে বর্তমান হয়ে আছেন, এক দিনের জন্যও অতীত হননি।
আপনাদের তো একসঙ্গে পথচলার শুরু হয়েছিল ষাটের দশকের গোড়ার দিকে। নিঃসন্দেহে দীর্ঘতম জার্নি। আপনাদের কীভাবে পরিচয় হয়েছিল?
মূলত লেখার মাধ্যমে আমাদের পরিচয়। ‘সচিত্র সন্ধানী’ নামের মাসিক পত্রিকায় তাঁর একটি লেখা পড়েছিলাম, ‘তিন পয়সার জ্যোছনা’। লেখাটি আমার কাছে নতুন ও আধুনিক মনে হয়েছিল। পড়ার পর চিন্তা হলো, লেখকের সঙ্গে দেখা হলে তো ভালোই হয়। আমিও তখন লিখি, বিভিন্ন পত্রিকায় লেখা ছাপা হচ্ছে।
ফলে লেখকের সঙ্গে লেখকের দেখা-পরিচয় হতেই পারে। তারপর তাঁর ঠিকানায় চিঠি লিখেছিলাম। মাসখানেক পর আমার হোস্টেলের চিঠির বাক্সে হলুদ খামে একটা চিঠি এসে হাজির! আরে, এত সুন্দর ইংরেজি হাতের লেখায় কে আমাকে চিঠি পাঠাল? লেখার কালিটিও ভীষণ সুন্দর! গাঢ় চায়নিজ ইঙ্ক দিয়ে মোটা করে ছবি আঁকার মতো করে আমার নামটি লেখা—আনোয়ারা বেগম চৌধুরী। চিঠি খুলে বিস্ময় আরও বাড়ল। প্রেরক সৈয়দ শামসুল হক, যাঁর লেখা পড়ে আবেগতাড়িত হয়ে চিঠি লিখেছিলাম। তারপর কোনো উত্তর না পেয়ে ভুলেও গিয়েছিলাম। চিঠিটা কী যে সুন্দর ছিল!
তারপর কি একে অপরের মধ্যে চিঠি চালাচালি শুরু হয়? সৈয়দ হকের চিঠি নিশ্চয় খুবই সাহিত্যমানসম্পন্ন ছিল?
মাঝে-মধ্যে আমরা একে অপরকে চিঠি লিখতাম। আমি তখন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী। চতুর্থ বর্ষে পড়ি। বিভিন্ন পত্রিকায় টুকটাক লেখালেখি করি।
সৈয়দ শামসুল হক তখনই নামকরা লেখক ও সিনেমাব্যক্তিত্ব। প্রতি সপ্তাহেই কোনো না কোনো পত্রিকায় নাম ওঠে। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হলো, আমি তাঁকে কোনো দিন চোখে দেখিনি। কোনো পত্রিকাতেও তাঁর ছবি চোখে পড়েনি। ফলে তাঁকে দেখার একটা গোপন বাসনা ছিল মনে।
আপনাদের প্রথম দেখার স্মৃতি নিশ্চয় ভোলার নয়। প্রথম দেখার স্মৃতি পাঠকদের কি বলা যায়?
১৯৬৪ সালের দিকে আমাদের প্রথম দেখা হয়েছিল। একদিন বিকেলে পুরান ঢাকার একটা চায়নিজ রেস্টুরেন্টে তাঁর সঙ্গে প্রথম দেখা হয়েছিল।
যখন তাঁকে প্রথম দেখলাম, তখন তাঁর চোখ দেখে হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম—এমন চকচকে বুদ্ধির ছটায় উদ্ভাসিত চোখ আমি জীবনে দেখিনি। আমার সঙ্গে প্রথম দিনের আলাপে তাঁর সে কী স্বতঃস্ফূর্ত বাক্যালাপ! যেন তিনি আমাকে বহুদিন ধরে চেনেন, বহুদিন ধরে তাঁর সঙ্গে আমার পত্রালাপ। মেয়েদের খুব ভালো বুঝতেন, পটাতেও পারতেন। মেয়েদের পটাতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। হা হা হা!
সামনা সামনি সৈয়দ হককে প্রথম দেখার পর আপনার প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল? প্রথম দেখাতেই কি প্রেমে পড়েছিলেন?
আরে নাহ! প্রথম দেখায় প্রেমে পড়িনি, তবে তিনি পড়েছিলেন, সেটা বুঝতে পারছিলাম।
তাঁকে দেখার পর মনটা দোনোমনা হয়ে ছিল। হ্যাঁ কি না, না কি হ্যাঁ অবস্থা আরকি। তিনি ছিলেন রোগা প্রকৃতির, তারপর চোখেও কম দেখতেন। ছিলেন চালচুলোহীন, বোহেমিয়ান মানুষ। জানো তো, তিনি ষোলো বছর বয়সে বাবার ক্যাশবাক্স ভেঙে টাকা হাতিয়ে মুম্বাই চলে গিয়েছিলেন বড়মাপের চলচ্চিত্রকার হবেন বলে। মোটামুটি একরোখা ছিলেন। তারপর দেশে ফিরলেও পড়াশোনা শেষ করেননি—তো, তাঁর সঙ্গে জড়ানো একটু কঠিন ছিল বৈকি। আগে ভাবতাম, আমাকে একজন চিকিৎসককে বিয়ে করতে হবে, নিদেনপক্ষে একজন প্রকৌশলী, মনটা কেমন যেন বিমর্ষ হয়ে উঠেছিল। আর আমার ভাগ্যে এমন একজন ক্যান্ডিডেট! এ তো চোখেই দেখে না, রোজগার করবে কী! ফলে প্রেমের শুরুতে আমার মধ্যে কিছুটা দ্বিধা ছিল। কিছুদিন পর সেই দ্বিধাদ্বন্দ্ব উবেও গিয়েছিল।
যত দূর জানি, বিয়ের ক্ষেত্রে আপনার পরিবারের অসম্মতি ছিল। বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে বেশ সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন। এই সাহসিকতার পেছনে অনুপ্রেরণা কী ছিল?
তারুণ্যের একটা শক্তি আছে, যৌবনের একটা শক্তি আছে, আমি সেই শক্তির ওপর ভর করেই তাঁর সঙ্গে জড়িয়েছিলাম। তাঁর সঙ্গে জড়িয়ে যে ভুল করিনি, এটা আমার সব সময়ই মনে হয়। বাবা-মা তো জানতেন না, বুঝতেন না তাঁর প্রতিভা সম্পর্কে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই তাঁদের অমত ছিল। সৈয়দ হককে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া আমার জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল। আমি ওই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলাম, বিয়েও করেছিলাম। আমি অসাধারণ একজন মানুষকেই বিয়ে করেছিলাম। বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ভেবেছি, আমি যেহেতু ডাক্তার, সেহেতু দুবেলা খাওয়ার অভাব হবে না। নিজে উপার্জন করতে পারব, পরিবারের হালও ধরতে পারব। ফলে পরিবার প্রাথমিকভাবে রাজি না থাকলেও আমার সাহসিকতায় সবাই সম্মত হয়েছিল।
সৈয়দ শামসুল হকের স্ত্রী হিসেবে কোনো বিশেষ সুবিধা বা অসুবিধায় পড়তে হয়েছে? অনেকে বলেন, আপনার লেখক হিসেবে প্রতিষ্ঠা ও বিভিন্ন পুরস্কারপ্রাপ্তির পেছনে তাঁর ভূমিকা ছিল।
মানুষ কত কিছুই তো বলে আড়ালে-আবডালে! অনেক মেয়ে ঈর্ষান্বিত হয়ে বলেছেন, এমন লেখা আমরাও লিখতে পারি, যদি আমাদের সৈয়দ হকের মতো স্বামী পাশে থাকতেন। এটা যে কত বড় ভুল কথা! সৈয়দ হকের সঙ্গে বিয়ের অনেক আগে থেকেই আমি লেখালেখি করি। তারপর যখন ঢাকা মেডিকেল কলেজে পড়তাম, তখন তো অনেক লিখেছি। বিয়ের পর এক ছাদের নিচে থাকলেও আমরা লেখক হিসেবে ছিলাম সম্পূর্ণ আলাদা। তুমি শুনে অবাক হবে, আমরা একে অপরের পাণ্ডুলিপি পড়তাম না। লেখা বা বই প্রকাশ হওয়ার পর পড়তাম। লেখার ক্ষেত্রে তিনি কখনো আমাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেননি। পুরস্কারের কথা বললে তো, আমার কোনো পুরস্কারপ্রাপ্তিতে তাঁর ভূমিকা নেই। আমি তো অনেক পরে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেলাম, আমার ৭০ বছর বয়সে। অথচ সৈয়দ শামসুল হক ২৯ বছর বয়সে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন। তিনি এত প্রভাবশালী লেখক ছিলেন যে আমি ৪০ বছরের মধ্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পাওয়ার তদবির করাতে পারতাম। তা আমি করিনি। তিনি মারা যাওয়ার পর আমি একুশে পদক পেয়েছি। তখন তো আমার ধরাধরি করারও কেউ নেই। আমি মনে করি, আমি কষ্ট করে এসব অর্জন করেছি। এখন এসে আমি বুঝি যে সৈয়দ হকও সেটাই চেয়েছিলেন।
লেখক হিসেবে, স্বামী হিসেবে কীভাবে সৈয়দ হককে মূল্যায়ন করবেন? তাঁর লেখক সত্তা ও ব্যক্তিসত্তার মধ্যে কি সাঁকোবন্ধন ছিল? নাকি দুটি সত্তা আলাদা ছিল?
লেখক সত্তা ও ব্যক্তিসত্তা অধিকাংশ সময় এক হয় না, কিছুটা ভিন্নতা হয়। সৈয়দ হকের দুটি সত্তার মধ্যেও কিছুটা ভিন্নতা ছিল। তাঁর লেখক সত্তাকে আমি শ্রদ্ধা করেছি সব সময়। লেখক হিসেবে তিনি কোন মাপের ছিলেন, সেটা আমার বলা ঠিক হবে না। লেখক হিসেবে তাঁর বিশালত্ব আমি ব্যাখ্যা করব না। পাশে থাকলেই একজন মানুষের সব বিষয়ে, সবকিছু মূল্যায়ন করা সম্ভব হয় না। রবীন্দ্রনাথের আশপাশেও তো অনেকে ছিলেন। তাই বলে সবাই কি রবীন্দ্রনাথের বিশালত্বকে যথাযথ মূল্যায়ন বা ধারণ করতে পেরেছেন? না, পারেননি। ব্যক্তিগতভাবে বলব, তিনি লেখক হিসেবে যত বড় ছিলেন, স্বামী হিসেবে তার চেয়েও বড় মাপের মানুষ ছিলেন। আমাকে কখনো অশ্রদ্ধা করেননি, অসম্মান করেননি। আমার যে একটি লেখক সত্তা আছে, সেটা তিনি কোনো দিনই কোনো দিক থেকে বাধাগ্রস্ত করেননি। তাঁর সঙ্গে আমার দ্বন্দ্ব বাধানোর চেষ্টা করেছিলেন অনেকেই। সেসব নাম বললে তোমরা অবাক হবে। কিন্তু আমাদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব হয়নি, ব্যক্তিত্বের সংঘাত হয়নি। আমরা একে অপরকে কখনো প্রতিযোগী মনে করিনি, সহযোগী মনে করেছি। তোমাকে একটা কথা বলি, সৈয়দ হকের মুখে আমি কোনো দিন কোনো গালি শুনিনি। আমাকে তো গালি দেননি, কখনো কাউকে গালি দিতেও শুনিনি। তাহলে বোঝো, তিনি কেমন মানুষ ছিলেন। সব মিলিয়ে আমাদের জার্নি ছিল সুখে-দুঃখে মিলিয়ে রোমাঞ্চকর ও সৃষ্টিশীল।

সৈয়দ শামসুল হক ও আপনার যৌথ জীবন এবং দীর্ঘ জার্নির সমাপ্তি হয়েছে ছয় বছর হয়ে গেল। নিশ্চয় খুব মিস করেন তাঁকে। সৈয়দ হকবিহীন সময়গুলো কেমন কাটছে আপনার?
ব্যক্তিগতভাবে বলি, একটা দিনও তাঁকে ভুলিনি। কারণ, প্রতিদিনই ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে তাঁকে নিয়ে। তাঁর বই পুনর্মুদ্রণ হচ্ছে, নতুন সংস্করণ হচ্ছে, বিভিন্ন সংগঠন তাঁকে নিয়ে কাজ করছে, বিভিন্ন জায়গা থেকে লেখা চাচ্ছে—এসব কাজে নিজেকেও জড়াতে হচ্ছে।
সম্প্রতি তাঁর ৩৫ খণ্ডের রচনাবলি বের হয়েছে, পুরো পাণ্ডুলিপি দেখে দিতে হয়েছে। সৈয়দ হক সশরীরে নেই, দেখতে দেখতে ছয়টা বছর কীভাবে যেন চলে গেল। জীবন তো একটা চলমান প্রক্রিয়া, সেই প্রক্রিয়ার ভেতর আমরা এখনো বর্তমান আছি, তিনি তাঁর কর্মগুণেই আমাদের মাঝে বর্তমান হয়ে আছেন, এক দিনের জন্যও অতীত হননি।
আপনাদের তো একসঙ্গে পথচলার শুরু হয়েছিল ষাটের দশকের গোড়ার দিকে। নিঃসন্দেহে দীর্ঘতম জার্নি। আপনাদের কীভাবে পরিচয় হয়েছিল?
মূলত লেখার মাধ্যমে আমাদের পরিচয়। ‘সচিত্র সন্ধানী’ নামের মাসিক পত্রিকায় তাঁর একটি লেখা পড়েছিলাম, ‘তিন পয়সার জ্যোছনা’। লেখাটি আমার কাছে নতুন ও আধুনিক মনে হয়েছিল। পড়ার পর চিন্তা হলো, লেখকের সঙ্গে দেখা হলে তো ভালোই হয়। আমিও তখন লিখি, বিভিন্ন পত্রিকায় লেখা ছাপা হচ্ছে।
ফলে লেখকের সঙ্গে লেখকের দেখা-পরিচয় হতেই পারে। তারপর তাঁর ঠিকানায় চিঠি লিখেছিলাম। মাসখানেক পর আমার হোস্টেলের চিঠির বাক্সে হলুদ খামে একটা চিঠি এসে হাজির! আরে, এত সুন্দর ইংরেজি হাতের লেখায় কে আমাকে চিঠি পাঠাল? লেখার কালিটিও ভীষণ সুন্দর! গাঢ় চায়নিজ ইঙ্ক দিয়ে মোটা করে ছবি আঁকার মতো করে আমার নামটি লেখা—আনোয়ারা বেগম চৌধুরী। চিঠি খুলে বিস্ময় আরও বাড়ল। প্রেরক সৈয়দ শামসুল হক, যাঁর লেখা পড়ে আবেগতাড়িত হয়ে চিঠি লিখেছিলাম। তারপর কোনো উত্তর না পেয়ে ভুলেও গিয়েছিলাম। চিঠিটা কী যে সুন্দর ছিল!
তারপর কি একে অপরের মধ্যে চিঠি চালাচালি শুরু হয়? সৈয়দ হকের চিঠি নিশ্চয় খুবই সাহিত্যমানসম্পন্ন ছিল?
মাঝে-মধ্যে আমরা একে অপরকে চিঠি লিখতাম। আমি তখন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী। চতুর্থ বর্ষে পড়ি। বিভিন্ন পত্রিকায় টুকটাক লেখালেখি করি।
সৈয়দ শামসুল হক তখনই নামকরা লেখক ও সিনেমাব্যক্তিত্ব। প্রতি সপ্তাহেই কোনো না কোনো পত্রিকায় নাম ওঠে। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হলো, আমি তাঁকে কোনো দিন চোখে দেখিনি। কোনো পত্রিকাতেও তাঁর ছবি চোখে পড়েনি। ফলে তাঁকে দেখার একটা গোপন বাসনা ছিল মনে।
আপনাদের প্রথম দেখার স্মৃতি নিশ্চয় ভোলার নয়। প্রথম দেখার স্মৃতি পাঠকদের কি বলা যায়?
১৯৬৪ সালের দিকে আমাদের প্রথম দেখা হয়েছিল। একদিন বিকেলে পুরান ঢাকার একটা চায়নিজ রেস্টুরেন্টে তাঁর সঙ্গে প্রথম দেখা হয়েছিল।
যখন তাঁকে প্রথম দেখলাম, তখন তাঁর চোখ দেখে হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম—এমন চকচকে বুদ্ধির ছটায় উদ্ভাসিত চোখ আমি জীবনে দেখিনি। আমার সঙ্গে প্রথম দিনের আলাপে তাঁর সে কী স্বতঃস্ফূর্ত বাক্যালাপ! যেন তিনি আমাকে বহুদিন ধরে চেনেন, বহুদিন ধরে তাঁর সঙ্গে আমার পত্রালাপ। মেয়েদের খুব ভালো বুঝতেন, পটাতেও পারতেন। মেয়েদের পটাতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। হা হা হা!
সামনা সামনি সৈয়দ হককে প্রথম দেখার পর আপনার প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল? প্রথম দেখাতেই কি প্রেমে পড়েছিলেন?
আরে নাহ! প্রথম দেখায় প্রেমে পড়িনি, তবে তিনি পড়েছিলেন, সেটা বুঝতে পারছিলাম।
তাঁকে দেখার পর মনটা দোনোমনা হয়ে ছিল। হ্যাঁ কি না, না কি হ্যাঁ অবস্থা আরকি। তিনি ছিলেন রোগা প্রকৃতির, তারপর চোখেও কম দেখতেন। ছিলেন চালচুলোহীন, বোহেমিয়ান মানুষ। জানো তো, তিনি ষোলো বছর বয়সে বাবার ক্যাশবাক্স ভেঙে টাকা হাতিয়ে মুম্বাই চলে গিয়েছিলেন বড়মাপের চলচ্চিত্রকার হবেন বলে। মোটামুটি একরোখা ছিলেন। তারপর দেশে ফিরলেও পড়াশোনা শেষ করেননি—তো, তাঁর সঙ্গে জড়ানো একটু কঠিন ছিল বৈকি। আগে ভাবতাম, আমাকে একজন চিকিৎসককে বিয়ে করতে হবে, নিদেনপক্ষে একজন প্রকৌশলী, মনটা কেমন যেন বিমর্ষ হয়ে উঠেছিল। আর আমার ভাগ্যে এমন একজন ক্যান্ডিডেট! এ তো চোখেই দেখে না, রোজগার করবে কী! ফলে প্রেমের শুরুতে আমার মধ্যে কিছুটা দ্বিধা ছিল। কিছুদিন পর সেই দ্বিধাদ্বন্দ্ব উবেও গিয়েছিল।
যত দূর জানি, বিয়ের ক্ষেত্রে আপনার পরিবারের অসম্মতি ছিল। বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে বেশ সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন। এই সাহসিকতার পেছনে অনুপ্রেরণা কী ছিল?
তারুণ্যের একটা শক্তি আছে, যৌবনের একটা শক্তি আছে, আমি সেই শক্তির ওপর ভর করেই তাঁর সঙ্গে জড়িয়েছিলাম। তাঁর সঙ্গে জড়িয়ে যে ভুল করিনি, এটা আমার সব সময়ই মনে হয়। বাবা-মা তো জানতেন না, বুঝতেন না তাঁর প্রতিভা সম্পর্কে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই তাঁদের অমত ছিল। সৈয়দ হককে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া আমার জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল। আমি ওই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলাম, বিয়েও করেছিলাম। আমি অসাধারণ একজন মানুষকেই বিয়ে করেছিলাম। বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ভেবেছি, আমি যেহেতু ডাক্তার, সেহেতু দুবেলা খাওয়ার অভাব হবে না। নিজে উপার্জন করতে পারব, পরিবারের হালও ধরতে পারব। ফলে পরিবার প্রাথমিকভাবে রাজি না থাকলেও আমার সাহসিকতায় সবাই সম্মত হয়েছিল।
সৈয়দ শামসুল হকের স্ত্রী হিসেবে কোনো বিশেষ সুবিধা বা অসুবিধায় পড়তে হয়েছে? অনেকে বলেন, আপনার লেখক হিসেবে প্রতিষ্ঠা ও বিভিন্ন পুরস্কারপ্রাপ্তির পেছনে তাঁর ভূমিকা ছিল।
মানুষ কত কিছুই তো বলে আড়ালে-আবডালে! অনেক মেয়ে ঈর্ষান্বিত হয়ে বলেছেন, এমন লেখা আমরাও লিখতে পারি, যদি আমাদের সৈয়দ হকের মতো স্বামী পাশে থাকতেন। এটা যে কত বড় ভুল কথা! সৈয়দ হকের সঙ্গে বিয়ের অনেক আগে থেকেই আমি লেখালেখি করি। তারপর যখন ঢাকা মেডিকেল কলেজে পড়তাম, তখন তো অনেক লিখেছি। বিয়ের পর এক ছাদের নিচে থাকলেও আমরা লেখক হিসেবে ছিলাম সম্পূর্ণ আলাদা। তুমি শুনে অবাক হবে, আমরা একে অপরের পাণ্ডুলিপি পড়তাম না। লেখা বা বই প্রকাশ হওয়ার পর পড়তাম। লেখার ক্ষেত্রে তিনি কখনো আমাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেননি। পুরস্কারের কথা বললে তো, আমার কোনো পুরস্কারপ্রাপ্তিতে তাঁর ভূমিকা নেই। আমি তো অনেক পরে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেলাম, আমার ৭০ বছর বয়সে। অথচ সৈয়দ শামসুল হক ২৯ বছর বয়সে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন। তিনি এত প্রভাবশালী লেখক ছিলেন যে আমি ৪০ বছরের মধ্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পাওয়ার তদবির করাতে পারতাম। তা আমি করিনি। তিনি মারা যাওয়ার পর আমি একুশে পদক পেয়েছি। তখন তো আমার ধরাধরি করারও কেউ নেই। আমি মনে করি, আমি কষ্ট করে এসব অর্জন করেছি। এখন এসে আমি বুঝি যে সৈয়দ হকও সেটাই চেয়েছিলেন।
লেখক হিসেবে, স্বামী হিসেবে কীভাবে সৈয়দ হককে মূল্যায়ন করবেন? তাঁর লেখক সত্তা ও ব্যক্তিসত্তার মধ্যে কি সাঁকোবন্ধন ছিল? নাকি দুটি সত্তা আলাদা ছিল?
লেখক সত্তা ও ব্যক্তিসত্তা অধিকাংশ সময় এক হয় না, কিছুটা ভিন্নতা হয়। সৈয়দ হকের দুটি সত্তার মধ্যেও কিছুটা ভিন্নতা ছিল। তাঁর লেখক সত্তাকে আমি শ্রদ্ধা করেছি সব সময়। লেখক হিসেবে তিনি কোন মাপের ছিলেন, সেটা আমার বলা ঠিক হবে না। লেখক হিসেবে তাঁর বিশালত্ব আমি ব্যাখ্যা করব না। পাশে থাকলেই একজন মানুষের সব বিষয়ে, সবকিছু মূল্যায়ন করা সম্ভব হয় না। রবীন্দ্রনাথের আশপাশেও তো অনেকে ছিলেন। তাই বলে সবাই কি রবীন্দ্রনাথের বিশালত্বকে যথাযথ মূল্যায়ন বা ধারণ করতে পেরেছেন? না, পারেননি। ব্যক্তিগতভাবে বলব, তিনি লেখক হিসেবে যত বড় ছিলেন, স্বামী হিসেবে তার চেয়েও বড় মাপের মানুষ ছিলেন। আমাকে কখনো অশ্রদ্ধা করেননি, অসম্মান করেননি। আমার যে একটি লেখক সত্তা আছে, সেটা তিনি কোনো দিনই কোনো দিক থেকে বাধাগ্রস্ত করেননি। তাঁর সঙ্গে আমার দ্বন্দ্ব বাধানোর চেষ্টা করেছিলেন অনেকেই। সেসব নাম বললে তোমরা অবাক হবে। কিন্তু আমাদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব হয়নি, ব্যক্তিত্বের সংঘাত হয়নি। আমরা একে অপরকে কখনো প্রতিযোগী মনে করিনি, সহযোগী মনে করেছি। তোমাকে একটা কথা বলি, সৈয়দ হকের মুখে আমি কোনো দিন কোনো গালি শুনিনি। আমাকে তো গালি দেননি, কখনো কাউকে গালি দিতেও শুনিনি। তাহলে বোঝো, তিনি কেমন মানুষ ছিলেন। সব মিলিয়ে আমাদের জার্নি ছিল সুখে-দুঃখে মিলিয়ে রোমাঞ্চকর ও সৃষ্টিশীল।

সৈয়দ শামসুল হক ও আপনার যৌথ জীবন এবং দীর্ঘ জার্নির সমাপ্তি হয়েছে ছয় বছর হয়ে গেল। নিশ্চয় খুব মিস করেন তাঁকে। সৈয়দ হকবিহীন সময়গুলো কেমন কাটছে আপনার?
ব্যক্তিগতভাবে বলি, একটা দিনও তাঁকে ভুলিনি। কারণ, প্রতিদিনই ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে তাঁকে নিয়ে। তাঁর বই পুনর্মুদ্রণ হচ্ছে, নতুন সংস্করণ হচ্ছে, বিভিন্ন সংগঠন তাঁকে নিয়ে কাজ করছে, বিভিন্ন জায়গা থেকে লেখা চাচ্ছে—এসব কাজে নিজেকেও জড়াতে হচ্ছে।
সম্প্রতি তাঁর ৩৫ খণ্ডের রচনাবলি বের হয়েছে, পুরো পাণ্ডুলিপি দেখে দিতে হয়েছে। সৈয়দ হক সশরীরে নেই, দেখতে দেখতে ছয়টা বছর কীভাবে যেন চলে গেল। জীবন তো একটা চলমান প্রক্রিয়া, সেই প্রক্রিয়ার ভেতর আমরা এখনো বর্তমান আছি, তিনি তাঁর কর্মগুণেই আমাদের মাঝে বর্তমান হয়ে আছেন, এক দিনের জন্যও অতীত হননি।
আপনাদের তো একসঙ্গে পথচলার শুরু হয়েছিল ষাটের দশকের গোড়ার দিকে। নিঃসন্দেহে দীর্ঘতম জার্নি। আপনাদের কীভাবে পরিচয় হয়েছিল?
মূলত লেখার মাধ্যমে আমাদের পরিচয়। ‘সচিত্র সন্ধানী’ নামের মাসিক পত্রিকায় তাঁর একটি লেখা পড়েছিলাম, ‘তিন পয়সার জ্যোছনা’। লেখাটি আমার কাছে নতুন ও আধুনিক মনে হয়েছিল। পড়ার পর চিন্তা হলো, লেখকের সঙ্গে দেখা হলে তো ভালোই হয়। আমিও তখন লিখি, বিভিন্ন পত্রিকায় লেখা ছাপা হচ্ছে।
ফলে লেখকের সঙ্গে লেখকের দেখা-পরিচয় হতেই পারে। তারপর তাঁর ঠিকানায় চিঠি লিখেছিলাম। মাসখানেক পর আমার হোস্টেলের চিঠির বাক্সে হলুদ খামে একটা চিঠি এসে হাজির! আরে, এত সুন্দর ইংরেজি হাতের লেখায় কে আমাকে চিঠি পাঠাল? লেখার কালিটিও ভীষণ সুন্দর! গাঢ় চায়নিজ ইঙ্ক দিয়ে মোটা করে ছবি আঁকার মতো করে আমার নামটি লেখা—আনোয়ারা বেগম চৌধুরী। চিঠি খুলে বিস্ময় আরও বাড়ল। প্রেরক সৈয়দ শামসুল হক, যাঁর লেখা পড়ে আবেগতাড়িত হয়ে চিঠি লিখেছিলাম। তারপর কোনো উত্তর না পেয়ে ভুলেও গিয়েছিলাম। চিঠিটা কী যে সুন্দর ছিল!
তারপর কি একে অপরের মধ্যে চিঠি চালাচালি শুরু হয়? সৈয়দ হকের চিঠি নিশ্চয় খুবই সাহিত্যমানসম্পন্ন ছিল?
মাঝে-মধ্যে আমরা একে অপরকে চিঠি লিখতাম। আমি তখন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী। চতুর্থ বর্ষে পড়ি। বিভিন্ন পত্রিকায় টুকটাক লেখালেখি করি।
সৈয়দ শামসুল হক তখনই নামকরা লেখক ও সিনেমাব্যক্তিত্ব। প্রতি সপ্তাহেই কোনো না কোনো পত্রিকায় নাম ওঠে। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হলো, আমি তাঁকে কোনো দিন চোখে দেখিনি। কোনো পত্রিকাতেও তাঁর ছবি চোখে পড়েনি। ফলে তাঁকে দেখার একটা গোপন বাসনা ছিল মনে।
আপনাদের প্রথম দেখার স্মৃতি নিশ্চয় ভোলার নয়। প্রথম দেখার স্মৃতি পাঠকদের কি বলা যায়?
১৯৬৪ সালের দিকে আমাদের প্রথম দেখা হয়েছিল। একদিন বিকেলে পুরান ঢাকার একটা চায়নিজ রেস্টুরেন্টে তাঁর সঙ্গে প্রথম দেখা হয়েছিল।
যখন তাঁকে প্রথম দেখলাম, তখন তাঁর চোখ দেখে হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম—এমন চকচকে বুদ্ধির ছটায় উদ্ভাসিত চোখ আমি জীবনে দেখিনি। আমার সঙ্গে প্রথম দিনের আলাপে তাঁর সে কী স্বতঃস্ফূর্ত বাক্যালাপ! যেন তিনি আমাকে বহুদিন ধরে চেনেন, বহুদিন ধরে তাঁর সঙ্গে আমার পত্রালাপ। মেয়েদের খুব ভালো বুঝতেন, পটাতেও পারতেন। মেয়েদের পটাতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। হা হা হা!
সামনা সামনি সৈয়দ হককে প্রথম দেখার পর আপনার প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল? প্রথম দেখাতেই কি প্রেমে পড়েছিলেন?
আরে নাহ! প্রথম দেখায় প্রেমে পড়িনি, তবে তিনি পড়েছিলেন, সেটা বুঝতে পারছিলাম।
তাঁকে দেখার পর মনটা দোনোমনা হয়ে ছিল। হ্যাঁ কি না, না কি হ্যাঁ অবস্থা আরকি। তিনি ছিলেন রোগা প্রকৃতির, তারপর চোখেও কম দেখতেন। ছিলেন চালচুলোহীন, বোহেমিয়ান মানুষ। জানো তো, তিনি ষোলো বছর বয়সে বাবার ক্যাশবাক্স ভেঙে টাকা হাতিয়ে মুম্বাই চলে গিয়েছিলেন বড়মাপের চলচ্চিত্রকার হবেন বলে। মোটামুটি একরোখা ছিলেন। তারপর দেশে ফিরলেও পড়াশোনা শেষ করেননি—তো, তাঁর সঙ্গে জড়ানো একটু কঠিন ছিল বৈকি। আগে ভাবতাম, আমাকে একজন চিকিৎসককে বিয়ে করতে হবে, নিদেনপক্ষে একজন প্রকৌশলী, মনটা কেমন যেন বিমর্ষ হয়ে উঠেছিল। আর আমার ভাগ্যে এমন একজন ক্যান্ডিডেট! এ তো চোখেই দেখে না, রোজগার করবে কী! ফলে প্রেমের শুরুতে আমার মধ্যে কিছুটা দ্বিধা ছিল। কিছুদিন পর সেই দ্বিধাদ্বন্দ্ব উবেও গিয়েছিল।
যত দূর জানি, বিয়ের ক্ষেত্রে আপনার পরিবারের অসম্মতি ছিল। বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে বেশ সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন। এই সাহসিকতার পেছনে অনুপ্রেরণা কী ছিল?
তারুণ্যের একটা শক্তি আছে, যৌবনের একটা শক্তি আছে, আমি সেই শক্তির ওপর ভর করেই তাঁর সঙ্গে জড়িয়েছিলাম। তাঁর সঙ্গে জড়িয়ে যে ভুল করিনি, এটা আমার সব সময়ই মনে হয়। বাবা-মা তো জানতেন না, বুঝতেন না তাঁর প্রতিভা সম্পর্কে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই তাঁদের অমত ছিল। সৈয়দ হককে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া আমার জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল। আমি ওই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলাম, বিয়েও করেছিলাম। আমি অসাধারণ একজন মানুষকেই বিয়ে করেছিলাম। বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ভেবেছি, আমি যেহেতু ডাক্তার, সেহেতু দুবেলা খাওয়ার অভাব হবে না। নিজে উপার্জন করতে পারব, পরিবারের হালও ধরতে পারব। ফলে পরিবার প্রাথমিকভাবে রাজি না থাকলেও আমার সাহসিকতায় সবাই সম্মত হয়েছিল।
সৈয়দ শামসুল হকের স্ত্রী হিসেবে কোনো বিশেষ সুবিধা বা অসুবিধায় পড়তে হয়েছে? অনেকে বলেন, আপনার লেখক হিসেবে প্রতিষ্ঠা ও বিভিন্ন পুরস্কারপ্রাপ্তির পেছনে তাঁর ভূমিকা ছিল।
মানুষ কত কিছুই তো বলে আড়ালে-আবডালে! অনেক মেয়ে ঈর্ষান্বিত হয়ে বলেছেন, এমন লেখা আমরাও লিখতে পারি, যদি আমাদের সৈয়দ হকের মতো স্বামী পাশে থাকতেন। এটা যে কত বড় ভুল কথা! সৈয়দ হকের সঙ্গে বিয়ের অনেক আগে থেকেই আমি লেখালেখি করি। তারপর যখন ঢাকা মেডিকেল কলেজে পড়তাম, তখন তো অনেক লিখেছি। বিয়ের পর এক ছাদের নিচে থাকলেও আমরা লেখক হিসেবে ছিলাম সম্পূর্ণ আলাদা। তুমি শুনে অবাক হবে, আমরা একে অপরের পাণ্ডুলিপি পড়তাম না। লেখা বা বই প্রকাশ হওয়ার পর পড়তাম। লেখার ক্ষেত্রে তিনি কখনো আমাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেননি। পুরস্কারের কথা বললে তো, আমার কোনো পুরস্কারপ্রাপ্তিতে তাঁর ভূমিকা নেই। আমি তো অনেক পরে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেলাম, আমার ৭০ বছর বয়সে। অথচ সৈয়দ শামসুল হক ২৯ বছর বয়সে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন। তিনি এত প্রভাবশালী লেখক ছিলেন যে আমি ৪০ বছরের মধ্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পাওয়ার তদবির করাতে পারতাম। তা আমি করিনি। তিনি মারা যাওয়ার পর আমি একুশে পদক পেয়েছি। তখন তো আমার ধরাধরি করারও কেউ নেই। আমি মনে করি, আমি কষ্ট করে এসব অর্জন করেছি। এখন এসে আমি বুঝি যে সৈয়দ হকও সেটাই চেয়েছিলেন।
লেখক হিসেবে, স্বামী হিসেবে কীভাবে সৈয়দ হককে মূল্যায়ন করবেন? তাঁর লেখক সত্তা ও ব্যক্তিসত্তার মধ্যে কি সাঁকোবন্ধন ছিল? নাকি দুটি সত্তা আলাদা ছিল?
লেখক সত্তা ও ব্যক্তিসত্তা অধিকাংশ সময় এক হয় না, কিছুটা ভিন্নতা হয়। সৈয়দ হকের দুটি সত্তার মধ্যেও কিছুটা ভিন্নতা ছিল। তাঁর লেখক সত্তাকে আমি শ্রদ্ধা করেছি সব সময়। লেখক হিসেবে তিনি কোন মাপের ছিলেন, সেটা আমার বলা ঠিক হবে না। লেখক হিসেবে তাঁর বিশালত্ব আমি ব্যাখ্যা করব না। পাশে থাকলেই একজন মানুষের সব বিষয়ে, সবকিছু মূল্যায়ন করা সম্ভব হয় না। রবীন্দ্রনাথের আশপাশেও তো অনেকে ছিলেন। তাই বলে সবাই কি রবীন্দ্রনাথের বিশালত্বকে যথাযথ মূল্যায়ন বা ধারণ করতে পেরেছেন? না, পারেননি। ব্যক্তিগতভাবে বলব, তিনি লেখক হিসেবে যত বড় ছিলেন, স্বামী হিসেবে তার চেয়েও বড় মাপের মানুষ ছিলেন। আমাকে কখনো অশ্রদ্ধা করেননি, অসম্মান করেননি। আমার যে একটি লেখক সত্তা আছে, সেটা তিনি কোনো দিনই কোনো দিক থেকে বাধাগ্রস্ত করেননি। তাঁর সঙ্গে আমার দ্বন্দ্ব বাধানোর চেষ্টা করেছিলেন অনেকেই। সেসব নাম বললে তোমরা অবাক হবে। কিন্তু আমাদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব হয়নি, ব্যক্তিত্বের সংঘাত হয়নি। আমরা একে অপরকে কখনো প্রতিযোগী মনে করিনি, সহযোগী মনে করেছি। তোমাকে একটা কথা বলি, সৈয়দ হকের মুখে আমি কোনো দিন কোনো গালি শুনিনি। আমাকে তো গালি দেননি, কখনো কাউকে গালি দিতেও শুনিনি। তাহলে বোঝো, তিনি কেমন মানুষ ছিলেন। সব মিলিয়ে আমাদের জার্নি ছিল সুখে-দুঃখে মিলিয়ে রোমাঞ্চকর ও সৃষ্টিশীল।

সৈয়দ শামসুল হক ও আপনার যৌথ জীবন এবং দীর্ঘ জার্নির সমাপ্তি হয়েছে ছয় বছর হয়ে গেল। নিশ্চয় খুব মিস করেন তাঁকে। সৈয়দ হকবিহীন সময়গুলো কেমন কাটছে আপনার?
ব্যক্তিগতভাবে বলি, একটা দিনও তাঁকে ভুলিনি। কারণ, প্রতিদিনই ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে তাঁকে নিয়ে। তাঁর বই পুনর্মুদ্রণ হচ্ছে, নতুন সংস্করণ হচ্ছে, বিভিন্ন সংগঠন তাঁকে নিয়ে কাজ করছে, বিভিন্ন জায়গা থেকে লেখা চাচ্ছে—এসব কাজে নিজেকেও জড়াতে হচ্ছে।
সম্প্রতি তাঁর ৩৫ খণ্ডের রচনাবলি বের হয়েছে, পুরো পাণ্ডুলিপি দেখে দিতে হয়েছে। সৈয়দ হক সশরীরে নেই, দেখতে দেখতে ছয়টা বছর কীভাবে যেন চলে গেল। জীবন তো একটা চলমান প্রক্রিয়া, সেই প্রক্রিয়ার ভেতর আমরা এখনো বর্তমান আছি, তিনি তাঁর কর্মগুণেই আমাদের মাঝে বর্তমান হয়ে আছেন, এক দিনের জন্যও অতীত হননি।
আপনাদের তো একসঙ্গে পথচলার শুরু হয়েছিল ষাটের দশকের গোড়ার দিকে। নিঃসন্দেহে দীর্ঘতম জার্নি। আপনাদের কীভাবে পরিচয় হয়েছিল?
মূলত লেখার মাধ্যমে আমাদের পরিচয়। ‘সচিত্র সন্ধানী’ নামের মাসিক পত্রিকায় তাঁর একটি লেখা পড়েছিলাম, ‘তিন পয়সার জ্যোছনা’। লেখাটি আমার কাছে নতুন ও আধুনিক মনে হয়েছিল। পড়ার পর চিন্তা হলো, লেখকের সঙ্গে দেখা হলে তো ভালোই হয়। আমিও তখন লিখি, বিভিন্ন পত্রিকায় লেখা ছাপা হচ্ছে।
ফলে লেখকের সঙ্গে লেখকের দেখা-পরিচয় হতেই পারে। তারপর তাঁর ঠিকানায় চিঠি লিখেছিলাম। মাসখানেক পর আমার হোস্টেলের চিঠির বাক্সে হলুদ খামে একটা চিঠি এসে হাজির! আরে, এত সুন্দর ইংরেজি হাতের লেখায় কে আমাকে চিঠি পাঠাল? লেখার কালিটিও ভীষণ সুন্দর! গাঢ় চায়নিজ ইঙ্ক দিয়ে মোটা করে ছবি আঁকার মতো করে আমার নামটি লেখা—আনোয়ারা বেগম চৌধুরী। চিঠি খুলে বিস্ময় আরও বাড়ল। প্রেরক সৈয়দ শামসুল হক, যাঁর লেখা পড়ে আবেগতাড়িত হয়ে চিঠি লিখেছিলাম। তারপর কোনো উত্তর না পেয়ে ভুলেও গিয়েছিলাম। চিঠিটা কী যে সুন্দর ছিল!
তারপর কি একে অপরের মধ্যে চিঠি চালাচালি শুরু হয়? সৈয়দ হকের চিঠি নিশ্চয় খুবই সাহিত্যমানসম্পন্ন ছিল?
মাঝে-মধ্যে আমরা একে অপরকে চিঠি লিখতাম। আমি তখন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী। চতুর্থ বর্ষে পড়ি। বিভিন্ন পত্রিকায় টুকটাক লেখালেখি করি।
সৈয়দ শামসুল হক তখনই নামকরা লেখক ও সিনেমাব্যক্তিত্ব। প্রতি সপ্তাহেই কোনো না কোনো পত্রিকায় নাম ওঠে। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হলো, আমি তাঁকে কোনো দিন চোখে দেখিনি। কোনো পত্রিকাতেও তাঁর ছবি চোখে পড়েনি। ফলে তাঁকে দেখার একটা গোপন বাসনা ছিল মনে।
আপনাদের প্রথম দেখার স্মৃতি নিশ্চয় ভোলার নয়। প্রথম দেখার স্মৃতি পাঠকদের কি বলা যায়?
১৯৬৪ সালের দিকে আমাদের প্রথম দেখা হয়েছিল। একদিন বিকেলে পুরান ঢাকার একটা চায়নিজ রেস্টুরেন্টে তাঁর সঙ্গে প্রথম দেখা হয়েছিল।
যখন তাঁকে প্রথম দেখলাম, তখন তাঁর চোখ দেখে হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম—এমন চকচকে বুদ্ধির ছটায় উদ্ভাসিত চোখ আমি জীবনে দেখিনি। আমার সঙ্গে প্রথম দিনের আলাপে তাঁর সে কী স্বতঃস্ফূর্ত বাক্যালাপ! যেন তিনি আমাকে বহুদিন ধরে চেনেন, বহুদিন ধরে তাঁর সঙ্গে আমার পত্রালাপ। মেয়েদের খুব ভালো বুঝতেন, পটাতেও পারতেন। মেয়েদের পটাতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। হা হা হা!
সামনা সামনি সৈয়দ হককে প্রথম দেখার পর আপনার প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল? প্রথম দেখাতেই কি প্রেমে পড়েছিলেন?
আরে নাহ! প্রথম দেখায় প্রেমে পড়িনি, তবে তিনি পড়েছিলেন, সেটা বুঝতে পারছিলাম।
তাঁকে দেখার পর মনটা দোনোমনা হয়ে ছিল। হ্যাঁ কি না, না কি হ্যাঁ অবস্থা আরকি। তিনি ছিলেন রোগা প্রকৃতির, তারপর চোখেও কম দেখতেন। ছিলেন চালচুলোহীন, বোহেমিয়ান মানুষ। জানো তো, তিনি ষোলো বছর বয়সে বাবার ক্যাশবাক্স ভেঙে টাকা হাতিয়ে মুম্বাই চলে গিয়েছিলেন বড়মাপের চলচ্চিত্রকার হবেন বলে। মোটামুটি একরোখা ছিলেন। তারপর দেশে ফিরলেও পড়াশোনা শেষ করেননি—তো, তাঁর সঙ্গে জড়ানো একটু কঠিন ছিল বৈকি। আগে ভাবতাম, আমাকে একজন চিকিৎসককে বিয়ে করতে হবে, নিদেনপক্ষে একজন প্রকৌশলী, মনটা কেমন যেন বিমর্ষ হয়ে উঠেছিল। আর আমার ভাগ্যে এমন একজন ক্যান্ডিডেট! এ তো চোখেই দেখে না, রোজগার করবে কী! ফলে প্রেমের শুরুতে আমার মধ্যে কিছুটা দ্বিধা ছিল। কিছুদিন পর সেই দ্বিধাদ্বন্দ্ব উবেও গিয়েছিল।
যত দূর জানি, বিয়ের ক্ষেত্রে আপনার পরিবারের অসম্মতি ছিল। বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে বেশ সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন। এই সাহসিকতার পেছনে অনুপ্রেরণা কী ছিল?
তারুণ্যের একটা শক্তি আছে, যৌবনের একটা শক্তি আছে, আমি সেই শক্তির ওপর ভর করেই তাঁর সঙ্গে জড়িয়েছিলাম। তাঁর সঙ্গে জড়িয়ে যে ভুল করিনি, এটা আমার সব সময়ই মনে হয়। বাবা-মা তো জানতেন না, বুঝতেন না তাঁর প্রতিভা সম্পর্কে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই তাঁদের অমত ছিল। সৈয়দ হককে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া আমার জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল। আমি ওই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলাম, বিয়েও করেছিলাম। আমি অসাধারণ একজন মানুষকেই বিয়ে করেছিলাম। বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ভেবেছি, আমি যেহেতু ডাক্তার, সেহেতু দুবেলা খাওয়ার অভাব হবে না। নিজে উপার্জন করতে পারব, পরিবারের হালও ধরতে পারব। ফলে পরিবার প্রাথমিকভাবে রাজি না থাকলেও আমার সাহসিকতায় সবাই সম্মত হয়েছিল।
সৈয়দ শামসুল হকের স্ত্রী হিসেবে কোনো বিশেষ সুবিধা বা অসুবিধায় পড়তে হয়েছে? অনেকে বলেন, আপনার লেখক হিসেবে প্রতিষ্ঠা ও বিভিন্ন পুরস্কারপ্রাপ্তির পেছনে তাঁর ভূমিকা ছিল।
মানুষ কত কিছুই তো বলে আড়ালে-আবডালে! অনেক মেয়ে ঈর্ষান্বিত হয়ে বলেছেন, এমন লেখা আমরাও লিখতে পারি, যদি আমাদের সৈয়দ হকের মতো স্বামী পাশে থাকতেন। এটা যে কত বড় ভুল কথা! সৈয়দ হকের সঙ্গে বিয়ের অনেক আগে থেকেই আমি লেখালেখি করি। তারপর যখন ঢাকা মেডিকেল কলেজে পড়তাম, তখন তো অনেক লিখেছি। বিয়ের পর এক ছাদের নিচে থাকলেও আমরা লেখক হিসেবে ছিলাম সম্পূর্ণ আলাদা। তুমি শুনে অবাক হবে, আমরা একে অপরের পাণ্ডুলিপি পড়তাম না। লেখা বা বই প্রকাশ হওয়ার পর পড়তাম। লেখার ক্ষেত্রে তিনি কখনো আমাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেননি। পুরস্কারের কথা বললে তো, আমার কোনো পুরস্কারপ্রাপ্তিতে তাঁর ভূমিকা নেই। আমি তো অনেক পরে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেলাম, আমার ৭০ বছর বয়সে। অথচ সৈয়দ শামসুল হক ২৯ বছর বয়সে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন। তিনি এত প্রভাবশালী লেখক ছিলেন যে আমি ৪০ বছরের মধ্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পাওয়ার তদবির করাতে পারতাম। তা আমি করিনি। তিনি মারা যাওয়ার পর আমি একুশে পদক পেয়েছি। তখন তো আমার ধরাধরি করারও কেউ নেই। আমি মনে করি, আমি কষ্ট করে এসব অর্জন করেছি। এখন এসে আমি বুঝি যে সৈয়দ হকও সেটাই চেয়েছিলেন।
লেখক হিসেবে, স্বামী হিসেবে কীভাবে সৈয়দ হককে মূল্যায়ন করবেন? তাঁর লেখক সত্তা ও ব্যক্তিসত্তার মধ্যে কি সাঁকোবন্ধন ছিল? নাকি দুটি সত্তা আলাদা ছিল?
লেখক সত্তা ও ব্যক্তিসত্তা অধিকাংশ সময় এক হয় না, কিছুটা ভিন্নতা হয়। সৈয়দ হকের দুটি সত্তার মধ্যেও কিছুটা ভিন্নতা ছিল। তাঁর লেখক সত্তাকে আমি শ্রদ্ধা করেছি সব সময়। লেখক হিসেবে তিনি কোন মাপের ছিলেন, সেটা আমার বলা ঠিক হবে না। লেখক হিসেবে তাঁর বিশালত্ব আমি ব্যাখ্যা করব না। পাশে থাকলেই একজন মানুষের সব বিষয়ে, সবকিছু মূল্যায়ন করা সম্ভব হয় না। রবীন্দ্রনাথের আশপাশেও তো অনেকে ছিলেন। তাই বলে সবাই কি রবীন্দ্রনাথের বিশালত্বকে যথাযথ মূল্যায়ন বা ধারণ করতে পেরেছেন? না, পারেননি। ব্যক্তিগতভাবে বলব, তিনি লেখক হিসেবে যত বড় ছিলেন, স্বামী হিসেবে তার চেয়েও বড় মাপের মানুষ ছিলেন। আমাকে কখনো অশ্রদ্ধা করেননি, অসম্মান করেননি। আমার যে একটি লেখক সত্তা আছে, সেটা তিনি কোনো দিনই কোনো দিক থেকে বাধাগ্রস্ত করেননি। তাঁর সঙ্গে আমার দ্বন্দ্ব বাধানোর চেষ্টা করেছিলেন অনেকেই। সেসব নাম বললে তোমরা অবাক হবে। কিন্তু আমাদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব হয়নি, ব্যক্তিত্বের সংঘাত হয়নি। আমরা একে অপরকে কখনো প্রতিযোগী মনে করিনি, সহযোগী মনে করেছি। তোমাকে একটা কথা বলি, সৈয়দ হকের মুখে আমি কোনো দিন কোনো গালি শুনিনি। আমাকে তো গালি দেননি, কখনো কাউকে গালি দিতেও শুনিনি। তাহলে বোঝো, তিনি কেমন মানুষ ছিলেন। সব মিলিয়ে আমাদের জার্নি ছিল সুখে-দুঃখে মিলিয়ে রোমাঞ্চকর ও সৃষ্টিশীল।

আলসেমি শরীরে এদিক-ওদিক চেয়ে আটকে গেল চোখ পশ্চিমান্তে। রক্তিম সূর্যের বিদায় ধীর গতিতে। খুব লাল হয়েছে, সারা দিনের জ্বলন্ত প্রহরে পেয়েছে এক অপূর্ব রূপ।
২৫ দিন আগে
হুমায়ূন আহমেদ তখন ক্যানসার আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রে কেমোথেরাপি নিচ্ছেন। হঠাৎ চিকিৎসকের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে চলে এলেন নুহাশপল্লীতে। নাটক বানাবেন। অভিনেতা ফারুক আহমেদকে ডাকলেন। নুহাশপল্লীতে নাটকের শুটিংয়ের ফাঁকে গল্প করছিলেন হুমায়ূন ও ফারুক। হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘কী আশ্চর্য, তাই না ফারুক!’
১৩ নভেম্বর ২০২৫
প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
০৮ নভেম্বর ২০২৫
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
২০ অক্টোবর ২০২৫তৌহিদুল হক

রক্ত লাল
আলসেমি শরীরে এদিক-ওদিক চেয়ে আটকে
গেল চোখ পশ্চিমান্তে। রক্তিম সূর্যের বিদায়
ধীর গতিতে। খুব লাল হয়েছে, সারা দিনের
জ্বলন্ত প্রহরে পেয়েছে এক অপূর্ব রূপ।
যা স্বভাববিদ্ধ, তবে কতটা উপকারী বা বাঁচিয়ে
রাখার নিরলস অভিপ্রায়। মানুষের তরে
প্রাণীর অফুরন্ত প্রাচুর্য বিস্তৃতকরণে, কিংবা
উদ্ভিদের অন্তিম প্রেমে বসন্তের অভিষেকে।
কতটা জ্বলতে হয় পরের জন্য, কতটা ফুটন্ত
শরীর নিয়ে চালিয়ে যায় সেবার পরিধি।
এক চিরন্তন শিক্ষা, আবার উদিত হয়
দিনের শুরুতে, বিদায় প্রান্তিক অপূর্ব
মায়ায়-দিনের শেষ প্রান্তে।
এতটুকু কার্পণ্য রেখে যায়নি, হয়তো মুখ
ফিরিয়ে নিবে না কোনো দিন। তবে ভাবনার
অন্তিমে শেষ দৃশ্যের সংলাপে ভেসে
ওঠে জনদরদি রাজার মুখ। যেখানে রক্ত ঝরে
বন্যার বেগে সেখানেও প্রতিদিন ফুল ফোটে ফুল হয়ে।
যত দেখি
যত দেখি তৃপ্ত হই, শীতল হয়ে
জড়িয়ে পড়ি তোমার সমস্ত শরীরে। এক অজানা
শিহরণ ছুঁয়ে যায় হৃদয়ের সমস্ত পৃষ্ঠা জুড়ে।
যেন দীর্ঘদিনের শুষ্কতা ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে দূরে।
হারিয়ে যাওয়া রস ফিরছে মূলে, নিয়ে যাচ্ছে আদিপর্বে।
যেমন নেয় নদীর কূল, জোয়ারের ফেনা।
ভাবনার অতলে অদ্ভুত মায়া, দীর্ঘক্ষণ মোহগ্রস্ত
করে রাখে চোখের পলক, তাকিয়ে থাকি মায়ার মায়ায়। কী অপরূপ মায়া!
সেখানেও দেখি তৃষ্ণার ব্যাকুলতা নিয়ে অপেক্ষারত কান্না।
জীবনের তল্লাটে হারিয়ে খুঁজি আজ
আমারও জীবন ছিল। মায়ায় ভরা নির্বিঘ্ন আয়োজন, কলমিলতার মতো নিষ্পাপ।
তৃপ্ত হই ঘাসে, বাতাসের বেহায়া আঘাতে
অভিমানের মোড়ক ছুড়ে ফেলে হাতে তুলে নেই
কচু পাতায় টলোমলো জলের লজ্জা। এ জীবনের চাহিদা তোমায় দেখার
প্রয়োজনে তপ্ত, হয় উত্তপ্ত অথবা সহ্যের অতীত শীতল।
এ যেন কেমন
গহিন অরণ্যে সবুজ পাতার মতো, মগজে
চিন্তার রাজ্যে ভাবের উদয়, আকুল বিন্যাসে
একটু একটু করে এগিয়ে নেয়, আবার ভরা কলসির
মতো বসিয়ে রাখে-ভবের রাজ্যে। একদিন সমস্ত ভাবনা থেকে মুক্ত হয়ে
এদিক-ওদিক চলন, জীবন্ত মরণ! মানুষ
কেন বাঁচে, কীভাবে বাঁচে-প্রশ্নের সমাধা
আজ তর্কপ্রিয় সন্ধানে, মূর্ত প্রার্থনা।
সকল প্রিয়জন পরিত্যাগে, নিগূঢ় যত্নে হৃদয়ে প্রবেশ করে
নিজের অপরিচিত চেহারা, সব জিজ্ঞাসার
অন্ত-ক্রিয়ার এক উচ্চতম বিলাস।
জীবনের মানে অর্থশুন্য ভবিতব্য! এ কী হয়?
চোখের পলকে নিষ্পাপ দৃশ্যলোক-পেছন ডাকে বারবার
যেখানে থাকে আবার দেখার ইচ্ছা, নামে যে মুক্তকরণ। মিলনকান্তির আবাস।
চতুর্মুখ সমীকরণে খেলে যায় সময়ের ঝাঁজালো সিদ্ধান্ত। কেউ কী অপ্রিয় হয় কারও?
যেখানে ভেসে ওঠে নীলপদ্ম, অতীতের নিটোল কিতাব। সে-তো মানুষের ছবি!
চলে আসুন সবজি বাজারে
মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দেখেছি অনেক কিছু
যা মানুষের নয়। অ-মানুষের জন্ম-উত্তর বাঁচার
উপায় হতে পারে। পোশাকে সজ্জিত দেহ কতভাবে
হিংস্র হয়, গোপনে, অন্ধের গহনে।
প্রবেশের আগেই পেয়েছি সংকেত। কত নোংরা, পচা, আবর্জনায় ভরা একটি থালার মতো
পড়ে আছে সম্মুখে। কেউ কি দেখেছে?
হয়তো মেনে নিয়েছে সবাই, সবার আগে সে
যে ভেবেছে, কী বা আছে উপায়!
চারপাশে কত কিছুর ঘ্রাণ, চোখ যা বলে তা কি মেনে নেয় স্বাস্থ্যবার্তা
ফুটে আছে ফুলের মতো দোকানের পসরা। খেতে বা কেনায় বারণ বালাই নেই।
যা পাচ্ছে নিচ্ছে, অনেকে। কেউ গায়ে কেউ পেটে।
আহা! দেখার কেউ নেই!
এক অন্ধকারে হাঁটছে আমাদের পা।
কেউ কি আছে কোথাও, আলো নিয়ে হাতে? ভেবেছে কি কেউ
কেন আমাদের আয়োজনে সবাই নেই?
কেউ এসে শুধু একবার বলুক, এই নিন-আপনাদের জীবন টিকিট যা উত্তরণ।
চলে আসুন সবজির বাজারে, সবুজের খোঁজে।
ইতিহাস
আজ স্পষ্ট ঘোষণা, আমার চোখের সামনে কেউ নেই
নেই কেউ ভাবের অন্তিম ঘরে। এক অস্পৃশ্য অনুভব
ছুঁয়ে চলে, ভাসিয়ে দেয় অগণিত স্রোতের তুমুল আলিঙ্গনে।
আজ কিছু ভেবে বলছি না, সরাসরি জবাব---
আমি নই কারও!
সব বাতাসের সাথে মিশে থাকা চোখের প্রেম
ভাবনার বিলাসে জড়িয়ে পড়ার বাসনা----সকলের অগোচরে
অথবা সকলের মাঝে। জীবনের অর্থে হৃদয়ের গুড়গুড় আলাপ
ঘুটঘুটে অন্ধকারে হৃদয়ে খোলা আকাশ, শুধু
এক মুখচ্ছবি।
আজ কোনো ক্ষমা নেই---নিজের প্রতি! নিজের পাপে
হাঁটি আমি, সবার মাঝে একলা হয়ে। বেদনার
কালো রং নিয়ে। শুধু দেখে যাই, শুধু দেখতে যাই।
কত রং বিরাজ করে ভাবনার গরমিলে, স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রই।
দাঁড়িয়ে থেকেও হেঁটে যাই!
আজকের না বলা কথা, কোনো দিন বলা হবে না
হবে না দাঁড়িয়ে আবার ভাবা আর একটু বসলে
ভালো হতো। যে বসিয়ে রাখে যে আশায় বসে থাকে
সবকিছুর-ই সময় থাকে---
এরপর---ইতিহাস!

রক্ত লাল
আলসেমি শরীরে এদিক-ওদিক চেয়ে আটকে
গেল চোখ পশ্চিমান্তে। রক্তিম সূর্যের বিদায়
ধীর গতিতে। খুব লাল হয়েছে, সারা দিনের
জ্বলন্ত প্রহরে পেয়েছে এক অপূর্ব রূপ।
যা স্বভাববিদ্ধ, তবে কতটা উপকারী বা বাঁচিয়ে
রাখার নিরলস অভিপ্রায়। মানুষের তরে
প্রাণীর অফুরন্ত প্রাচুর্য বিস্তৃতকরণে, কিংবা
উদ্ভিদের অন্তিম প্রেমে বসন্তের অভিষেকে।
কতটা জ্বলতে হয় পরের জন্য, কতটা ফুটন্ত
শরীর নিয়ে চালিয়ে যায় সেবার পরিধি।
এক চিরন্তন শিক্ষা, আবার উদিত হয়
দিনের শুরুতে, বিদায় প্রান্তিক অপূর্ব
মায়ায়-দিনের শেষ প্রান্তে।
এতটুকু কার্পণ্য রেখে যায়নি, হয়তো মুখ
ফিরিয়ে নিবে না কোনো দিন। তবে ভাবনার
অন্তিমে শেষ দৃশ্যের সংলাপে ভেসে
ওঠে জনদরদি রাজার মুখ। যেখানে রক্ত ঝরে
বন্যার বেগে সেখানেও প্রতিদিন ফুল ফোটে ফুল হয়ে।
যত দেখি
যত দেখি তৃপ্ত হই, শীতল হয়ে
জড়িয়ে পড়ি তোমার সমস্ত শরীরে। এক অজানা
শিহরণ ছুঁয়ে যায় হৃদয়ের সমস্ত পৃষ্ঠা জুড়ে।
যেন দীর্ঘদিনের শুষ্কতা ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে দূরে।
হারিয়ে যাওয়া রস ফিরছে মূলে, নিয়ে যাচ্ছে আদিপর্বে।
যেমন নেয় নদীর কূল, জোয়ারের ফেনা।
ভাবনার অতলে অদ্ভুত মায়া, দীর্ঘক্ষণ মোহগ্রস্ত
করে রাখে চোখের পলক, তাকিয়ে থাকি মায়ার মায়ায়। কী অপরূপ মায়া!
সেখানেও দেখি তৃষ্ণার ব্যাকুলতা নিয়ে অপেক্ষারত কান্না।
জীবনের তল্লাটে হারিয়ে খুঁজি আজ
আমারও জীবন ছিল। মায়ায় ভরা নির্বিঘ্ন আয়োজন, কলমিলতার মতো নিষ্পাপ।
তৃপ্ত হই ঘাসে, বাতাসের বেহায়া আঘাতে
অভিমানের মোড়ক ছুড়ে ফেলে হাতে তুলে নেই
কচু পাতায় টলোমলো জলের লজ্জা। এ জীবনের চাহিদা তোমায় দেখার
প্রয়োজনে তপ্ত, হয় উত্তপ্ত অথবা সহ্যের অতীত শীতল।
এ যেন কেমন
গহিন অরণ্যে সবুজ পাতার মতো, মগজে
চিন্তার রাজ্যে ভাবের উদয়, আকুল বিন্যাসে
একটু একটু করে এগিয়ে নেয়, আবার ভরা কলসির
মতো বসিয়ে রাখে-ভবের রাজ্যে। একদিন সমস্ত ভাবনা থেকে মুক্ত হয়ে
এদিক-ওদিক চলন, জীবন্ত মরণ! মানুষ
কেন বাঁচে, কীভাবে বাঁচে-প্রশ্নের সমাধা
আজ তর্কপ্রিয় সন্ধানে, মূর্ত প্রার্থনা।
সকল প্রিয়জন পরিত্যাগে, নিগূঢ় যত্নে হৃদয়ে প্রবেশ করে
নিজের অপরিচিত চেহারা, সব জিজ্ঞাসার
অন্ত-ক্রিয়ার এক উচ্চতম বিলাস।
জীবনের মানে অর্থশুন্য ভবিতব্য! এ কী হয়?
চোখের পলকে নিষ্পাপ দৃশ্যলোক-পেছন ডাকে বারবার
যেখানে থাকে আবার দেখার ইচ্ছা, নামে যে মুক্তকরণ। মিলনকান্তির আবাস।
চতুর্মুখ সমীকরণে খেলে যায় সময়ের ঝাঁজালো সিদ্ধান্ত। কেউ কী অপ্রিয় হয় কারও?
যেখানে ভেসে ওঠে নীলপদ্ম, অতীতের নিটোল কিতাব। সে-তো মানুষের ছবি!
চলে আসুন সবজি বাজারে
মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দেখেছি অনেক কিছু
যা মানুষের নয়। অ-মানুষের জন্ম-উত্তর বাঁচার
উপায় হতে পারে। পোশাকে সজ্জিত দেহ কতভাবে
হিংস্র হয়, গোপনে, অন্ধের গহনে।
প্রবেশের আগেই পেয়েছি সংকেত। কত নোংরা, পচা, আবর্জনায় ভরা একটি থালার মতো
পড়ে আছে সম্মুখে। কেউ কি দেখেছে?
হয়তো মেনে নিয়েছে সবাই, সবার আগে সে
যে ভেবেছে, কী বা আছে উপায়!
চারপাশে কত কিছুর ঘ্রাণ, চোখ যা বলে তা কি মেনে নেয় স্বাস্থ্যবার্তা
ফুটে আছে ফুলের মতো দোকানের পসরা। খেতে বা কেনায় বারণ বালাই নেই।
যা পাচ্ছে নিচ্ছে, অনেকে। কেউ গায়ে কেউ পেটে।
আহা! দেখার কেউ নেই!
এক অন্ধকারে হাঁটছে আমাদের পা।
কেউ কি আছে কোথাও, আলো নিয়ে হাতে? ভেবেছে কি কেউ
কেন আমাদের আয়োজনে সবাই নেই?
কেউ এসে শুধু একবার বলুক, এই নিন-আপনাদের জীবন টিকিট যা উত্তরণ।
চলে আসুন সবজির বাজারে, সবুজের খোঁজে।
ইতিহাস
আজ স্পষ্ট ঘোষণা, আমার চোখের সামনে কেউ নেই
নেই কেউ ভাবের অন্তিম ঘরে। এক অস্পৃশ্য অনুভব
ছুঁয়ে চলে, ভাসিয়ে দেয় অগণিত স্রোতের তুমুল আলিঙ্গনে।
আজ কিছু ভেবে বলছি না, সরাসরি জবাব---
আমি নই কারও!
সব বাতাসের সাথে মিশে থাকা চোখের প্রেম
ভাবনার বিলাসে জড়িয়ে পড়ার বাসনা----সকলের অগোচরে
অথবা সকলের মাঝে। জীবনের অর্থে হৃদয়ের গুড়গুড় আলাপ
ঘুটঘুটে অন্ধকারে হৃদয়ে খোলা আকাশ, শুধু
এক মুখচ্ছবি।
আজ কোনো ক্ষমা নেই---নিজের প্রতি! নিজের পাপে
হাঁটি আমি, সবার মাঝে একলা হয়ে। বেদনার
কালো রং নিয়ে। শুধু দেখে যাই, শুধু দেখতে যাই।
কত রং বিরাজ করে ভাবনার গরমিলে, স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রই।
দাঁড়িয়ে থেকেও হেঁটে যাই!
আজকের না বলা কথা, কোনো দিন বলা হবে না
হবে না দাঁড়িয়ে আবার ভাবা আর একটু বসলে
ভালো হতো। যে বসিয়ে রাখে যে আশায় বসে থাকে
সবকিছুর-ই সময় থাকে---
এরপর---ইতিহাস!

সৈয়দ শামসুল হক ও আপনার যৌথ জীবন এবং দীর্ঘ জার্নির সমাপ্তি হয়েছে ছয় বছর হয়ে গেল। নিশ্চয় খুব মিস করেন তাঁকে। সৈয়দ হকবিহীন সময়গুলো কেমন কাটছে আপনার?
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২
হুমায়ূন আহমেদ তখন ক্যানসার আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রে কেমোথেরাপি নিচ্ছেন। হঠাৎ চিকিৎসকের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে চলে এলেন নুহাশপল্লীতে। নাটক বানাবেন। অভিনেতা ফারুক আহমেদকে ডাকলেন। নুহাশপল্লীতে নাটকের শুটিংয়ের ফাঁকে গল্প করছিলেন হুমায়ূন ও ফারুক। হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘কী আশ্চর্য, তাই না ফারুক!’
১৩ নভেম্বর ২০২৫
প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
০৮ নভেম্বর ২০২৫
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
২০ অক্টোবর ২০২৫জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

হুমায়ূন আহমেদ তখন ক্যানসার আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রে কেমোথেরাপি নিচ্ছেন। হঠাৎ চিকিৎসকের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে চলে এলেন নুহাশপল্লীতে। নাটক বানাবেন। অভিনেতা ফারুক আহমেদকে ডাকলেন। নুহাশপল্লীতে নাটকের শুটিংয়ের ফাঁকে গল্প করছিলেন হুমায়ূন ও ফারুক। হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘কী আশ্চর্য, তাই না ফারুক!’ জবাবে ফারুক বললেন, ‘কী আশ্চর্য ভাই?’ হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘এই যে প্রকৃতি, জোছনা, বৃষ্টি, নদী— কী সুন্দর! একদিন হয়তো আমি এসব আর দেখতে পারব না। একুশের বইমেলা হবে। লোকেদের ভিড়, আড্ডা; আমি সেখানে থাকব না। এটা কি মেনে নেওয়া যায়! হায় রে জীবন!’
‘আমার না বলা কথা’ বইয়ে ফারুক আহমেদ এই স্মৃতিচারণ করেছেন। লিখেছেন, ‘আমি কিছু না বলে মূর্তির মতো বসে রইলাম। একসময় তাকিয়ে দেখলাম, হুমায়ূন ভাইয়ের দুচোখের কোনায় পানি।’
হুমায়ূন আহমেদ নেই। তবে তিনি রয়েছেন দেশের তরুণদের মনে। যে বইমেলায় তিনি থাকবেন না বলে আক্ষেপ, সেই বইমেলায় তাঁর বইয়ের স্টলে তরুণদের ঢলের মধ্যে আছেন।
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে হুমায়ূন আহমেদের জন্ম এই দিনে (১৩ নভেম্বর); ভারত ভাগের এক বছর পরে ১৯৪৮ সালে। ছোট সময়ে তাঁর নাম ছিল শামসুর রহমান। তাঁর বাবা ছেলেমেয়েদের নাম পাল্টে ফেলতেন। তাঁর নাম পাল্টে রাখেন হুমায়ূন আহমেদ। হিমু, মিসির আলি, শুভ্রর মতো চরিত্রের স্রষ্টা তিনি। শুধু কথাসাহিত্যেই নয়; ‘বহুব্রীহি’, ‘অয়োময়’, ‘কোথাও কেউ নেই’,
‘আজ রবিবার’-এর মতো নাটক বানিয়েছেন, তৈরি করেছেন ‘আগুনের পরশমণি’, ‘শ্যামল ছায়া’র মতো চলচ্চিত্র।
হুমায়ূন আহমেদ বৃষ্টি, জোছনা ভালোবাসতেন। তাঁর লেখায় সেসব উঠে এসেছে বারবার। ২০১২ সালের জুলাইয়ে বর্ষাতেই তিনি পাড়ি জমিয়েছিলেন ওপারে।
তিনি নেই। কিন্তু তাঁর লেখায় উঠে আসা চান্নিপসর, বৃষ্টি বিলাস আজও আছে তরুণদের মনে। ফারুক আহমেদ তাঁর ওই বইয়ে হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে আরেকটি স্মৃতিচারণ করেছিলেন এভাবে—‘এক বিকেলে শুটিং শেষে তাঁর প্রিয় লিচুগাছের দিকে তাকিয়ে আছেন হুমায়ূন। সেখানে ঝুলছে পাকা লিচু। তিনি তাঁর কেয়ারটেকার মুশাররফকে ডেকে গ্রামের ছোট ছেলেমেয়েদের ডেকে নিয়ে এলেন। তাদের বললেন, গাছে উঠে যে যত পারে লিচু খেতে। বাচ্চারা কেউ গাছে উঠে লিচু খাচ্ছে, হইচই করছে। কেউ পকেটে ভরছে। হুমায়ূন আহমেদ অবাক হয়ে সেই লিচু খাওয়া দেখতে লাগলেন।’
ফারুক আহমেদ লিখেছেন, ‘হুমায়ূন ভাই একসময় আমাকে বললেন, এমন সুন্দর দৃশ্য তুমি কখনো দেখেছো? এমন ভালো লাগার অনুভূতি কি অন্য কোনোভাবে পাওয়া যায়? আমি কী বলব বুঝতে পারছিলাম না। হঠাৎ বললাম, না ভাই এমন ভালো লাগার অনুভূতি কোনোভাবেই পাওয়া যায় না।’
হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন ঘিরে রাজধানীসহ জন্মস্থান নেত্রকোনাতে রয়েছে নানা আয়োজন। নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ি ইউনিয়নের কুতুবপুরে হুমায়ূন আহমেদ প্রতিষ্ঠিত শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ এবং এলাকাবাসীর উদ্যোগে এসব কর্মসূচি পালন করা হবে। সকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোরআন খতম করবেন। এরপর শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ প্রাঙ্গণ থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, এলাকাবাসী এবং হুমায়ূনভক্তদের আনন্দ শোভাযাত্রা বের হবে। পরে লেখকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, জন্মদিনের কেক কাটা, বৃক্ষরোপণ, কুইজ, হুমায়ূন আহমেদের রচিত নাটক ও সিনেমার অংশবিশেষ নিয়ে অভিনয়, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, পুরস্কার বিতরণ এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া রাজধানীতে হুমায়ূন আহমেদের চলচ্চিত্র নিয়ে চলচ্চিত্র সপ্তাহ, হুমায়ূন প্রতিযোগিতা, হুমায়ূন জন্মোৎসব, টেলিভিশন চ্যানেলে নাটক ও অনুষ্ঠান প্রচারসহ নানা আয়োজনে মুখর থাকছে দিনটি।

হুমায়ূন আহমেদ তখন ক্যানসার আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রে কেমোথেরাপি নিচ্ছেন। হঠাৎ চিকিৎসকের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে চলে এলেন নুহাশপল্লীতে। নাটক বানাবেন। অভিনেতা ফারুক আহমেদকে ডাকলেন। নুহাশপল্লীতে নাটকের শুটিংয়ের ফাঁকে গল্প করছিলেন হুমায়ূন ও ফারুক। হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘কী আশ্চর্য, তাই না ফারুক!’ জবাবে ফারুক বললেন, ‘কী আশ্চর্য ভাই?’ হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘এই যে প্রকৃতি, জোছনা, বৃষ্টি, নদী— কী সুন্দর! একদিন হয়তো আমি এসব আর দেখতে পারব না। একুশের বইমেলা হবে। লোকেদের ভিড়, আড্ডা; আমি সেখানে থাকব না। এটা কি মেনে নেওয়া যায়! হায় রে জীবন!’
‘আমার না বলা কথা’ বইয়ে ফারুক আহমেদ এই স্মৃতিচারণ করেছেন। লিখেছেন, ‘আমি কিছু না বলে মূর্তির মতো বসে রইলাম। একসময় তাকিয়ে দেখলাম, হুমায়ূন ভাইয়ের দুচোখের কোনায় পানি।’
হুমায়ূন আহমেদ নেই। তবে তিনি রয়েছেন দেশের তরুণদের মনে। যে বইমেলায় তিনি থাকবেন না বলে আক্ষেপ, সেই বইমেলায় তাঁর বইয়ের স্টলে তরুণদের ঢলের মধ্যে আছেন।
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে হুমায়ূন আহমেদের জন্ম এই দিনে (১৩ নভেম্বর); ভারত ভাগের এক বছর পরে ১৯৪৮ সালে। ছোট সময়ে তাঁর নাম ছিল শামসুর রহমান। তাঁর বাবা ছেলেমেয়েদের নাম পাল্টে ফেলতেন। তাঁর নাম পাল্টে রাখেন হুমায়ূন আহমেদ। হিমু, মিসির আলি, শুভ্রর মতো চরিত্রের স্রষ্টা তিনি। শুধু কথাসাহিত্যেই নয়; ‘বহুব্রীহি’, ‘অয়োময়’, ‘কোথাও কেউ নেই’,
‘আজ রবিবার’-এর মতো নাটক বানিয়েছেন, তৈরি করেছেন ‘আগুনের পরশমণি’, ‘শ্যামল ছায়া’র মতো চলচ্চিত্র।
হুমায়ূন আহমেদ বৃষ্টি, জোছনা ভালোবাসতেন। তাঁর লেখায় সেসব উঠে এসেছে বারবার। ২০১২ সালের জুলাইয়ে বর্ষাতেই তিনি পাড়ি জমিয়েছিলেন ওপারে।
তিনি নেই। কিন্তু তাঁর লেখায় উঠে আসা চান্নিপসর, বৃষ্টি বিলাস আজও আছে তরুণদের মনে। ফারুক আহমেদ তাঁর ওই বইয়ে হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে আরেকটি স্মৃতিচারণ করেছিলেন এভাবে—‘এক বিকেলে শুটিং শেষে তাঁর প্রিয় লিচুগাছের দিকে তাকিয়ে আছেন হুমায়ূন। সেখানে ঝুলছে পাকা লিচু। তিনি তাঁর কেয়ারটেকার মুশাররফকে ডেকে গ্রামের ছোট ছেলেমেয়েদের ডেকে নিয়ে এলেন। তাদের বললেন, গাছে উঠে যে যত পারে লিচু খেতে। বাচ্চারা কেউ গাছে উঠে লিচু খাচ্ছে, হইচই করছে। কেউ পকেটে ভরছে। হুমায়ূন আহমেদ অবাক হয়ে সেই লিচু খাওয়া দেখতে লাগলেন।’
ফারুক আহমেদ লিখেছেন, ‘হুমায়ূন ভাই একসময় আমাকে বললেন, এমন সুন্দর দৃশ্য তুমি কখনো দেখেছো? এমন ভালো লাগার অনুভূতি কি অন্য কোনোভাবে পাওয়া যায়? আমি কী বলব বুঝতে পারছিলাম না। হঠাৎ বললাম, না ভাই এমন ভালো লাগার অনুভূতি কোনোভাবেই পাওয়া যায় না।’
হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন ঘিরে রাজধানীসহ জন্মস্থান নেত্রকোনাতে রয়েছে নানা আয়োজন। নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ি ইউনিয়নের কুতুবপুরে হুমায়ূন আহমেদ প্রতিষ্ঠিত শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ এবং এলাকাবাসীর উদ্যোগে এসব কর্মসূচি পালন করা হবে। সকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোরআন খতম করবেন। এরপর শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ প্রাঙ্গণ থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, এলাকাবাসী এবং হুমায়ূনভক্তদের আনন্দ শোভাযাত্রা বের হবে। পরে লেখকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, জন্মদিনের কেক কাটা, বৃক্ষরোপণ, কুইজ, হুমায়ূন আহমেদের রচিত নাটক ও সিনেমার অংশবিশেষ নিয়ে অভিনয়, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, পুরস্কার বিতরণ এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া রাজধানীতে হুমায়ূন আহমেদের চলচ্চিত্র নিয়ে চলচ্চিত্র সপ্তাহ, হুমায়ূন প্রতিযোগিতা, হুমায়ূন জন্মোৎসব, টেলিভিশন চ্যানেলে নাটক ও অনুষ্ঠান প্রচারসহ নানা আয়োজনে মুখর থাকছে দিনটি।

সৈয়দ শামসুল হক ও আপনার যৌথ জীবন এবং দীর্ঘ জার্নির সমাপ্তি হয়েছে ছয় বছর হয়ে গেল। নিশ্চয় খুব মিস করেন তাঁকে। সৈয়দ হকবিহীন সময়গুলো কেমন কাটছে আপনার?
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২
আলসেমি শরীরে এদিক-ওদিক চেয়ে আটকে গেল চোখ পশ্চিমান্তে। রক্তিম সূর্যের বিদায় ধীর গতিতে। খুব লাল হয়েছে, সারা দিনের জ্বলন্ত প্রহরে পেয়েছে এক অপূর্ব রূপ।
২৫ দিন আগে
প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
০৮ নভেম্বর ২০২৫
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
২০ অক্টোবর ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
মঞ্চনাট্যটি স্কলাস্টিকার প্রতিষ্ঠাতা ইয়াসমিন মুরশেদকে উৎসর্গ করা হয়।

স্কুলের এসটিএম মিলনায়তন প্রতিষ্ঠার রজতজয়ন্তী উদ্যাপনকে সামনে রেখে আয়োজিত এ নাট্যানুষ্ঠানের সমাপনী দিনে বিশেষ অতিথি ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব আবুল হায়াত, দিলারা জামান ও আফজাল হোসেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার অধ্যক্ষ ফারাহ্ সোফিয়া আহমেদ।
হীরক রাজার দেশে নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন। প্রোডাকশন ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন শৈলী পারমিতা নীলপদ্ম। সংগীত পরিচালনা করেন গাজী মুন্নোফ, ইলিয়াস খান ও পলাশ নাথ লোচন। নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন শাম্মী ইয়াসমিন ঝিনুক ও ফরহাদ আহমেদ শামিম।
নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন নাজিফা ওয়াযিহা আহমেদ, আরিয়াদ রহমান, আজিয়াদ রহমান, বাজনীন রহমান, মোহম্মদ সফির চৌধুরী, ফাহিম আহম্মেদ, সৈয়দ কাফশাত তাইয়ুশ হামদ ও তাজরীবা নওফাত প্রমুখ।
শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকেরা অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পরিবেশিত অভিনয়, গান ও নাচ উপভোগ করেন।

প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
মঞ্চনাট্যটি স্কলাস্টিকার প্রতিষ্ঠাতা ইয়াসমিন মুরশেদকে উৎসর্গ করা হয়।

স্কুলের এসটিএম মিলনায়তন প্রতিষ্ঠার রজতজয়ন্তী উদ্যাপনকে সামনে রেখে আয়োজিত এ নাট্যানুষ্ঠানের সমাপনী দিনে বিশেষ অতিথি ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব আবুল হায়াত, দিলারা জামান ও আফজাল হোসেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার অধ্যক্ষ ফারাহ্ সোফিয়া আহমেদ।
হীরক রাজার দেশে নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন। প্রোডাকশন ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন শৈলী পারমিতা নীলপদ্ম। সংগীত পরিচালনা করেন গাজী মুন্নোফ, ইলিয়াস খান ও পলাশ নাথ লোচন। নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন শাম্মী ইয়াসমিন ঝিনুক ও ফরহাদ আহমেদ শামিম।
নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন নাজিফা ওয়াযিহা আহমেদ, আরিয়াদ রহমান, আজিয়াদ রহমান, বাজনীন রহমান, মোহম্মদ সফির চৌধুরী, ফাহিম আহম্মেদ, সৈয়দ কাফশাত তাইয়ুশ হামদ ও তাজরীবা নওফাত প্রমুখ।
শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকেরা অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পরিবেশিত অভিনয়, গান ও নাচ উপভোগ করেন।

সৈয়দ শামসুল হক ও আপনার যৌথ জীবন এবং দীর্ঘ জার্নির সমাপ্তি হয়েছে ছয় বছর হয়ে গেল। নিশ্চয় খুব মিস করেন তাঁকে। সৈয়দ হকবিহীন সময়গুলো কেমন কাটছে আপনার?
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২
আলসেমি শরীরে এদিক-ওদিক চেয়ে আটকে গেল চোখ পশ্চিমান্তে। রক্তিম সূর্যের বিদায় ধীর গতিতে। খুব লাল হয়েছে, সারা দিনের জ্বলন্ত প্রহরে পেয়েছে এক অপূর্ব রূপ।
২৫ দিন আগে
হুমায়ূন আহমেদ তখন ক্যানসার আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রে কেমোথেরাপি নিচ্ছেন। হঠাৎ চিকিৎসকের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে চলে এলেন নুহাশপল্লীতে। নাটক বানাবেন। অভিনেতা ফারুক আহমেদকে ডাকলেন। নুহাশপল্লীতে নাটকের শুটিংয়ের ফাঁকে গল্প করছিলেন হুমায়ূন ও ফারুক। হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘কী আশ্চর্য, তাই না ফারুক!’
১৩ নভেম্বর ২০২৫
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
২০ অক্টোবর ২০২৫আজকের পত্রিকা ডেস্ক

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।
কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’
গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।
ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’
মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’
মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।
কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’
গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।
ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’
মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’
মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

সৈয়দ শামসুল হক ও আপনার যৌথ জীবন এবং দীর্ঘ জার্নির সমাপ্তি হয়েছে ছয় বছর হয়ে গেল। নিশ্চয় খুব মিস করেন তাঁকে। সৈয়দ হকবিহীন সময়গুলো কেমন কাটছে আপনার?
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২
আলসেমি শরীরে এদিক-ওদিক চেয়ে আটকে গেল চোখ পশ্চিমান্তে। রক্তিম সূর্যের বিদায় ধীর গতিতে। খুব লাল হয়েছে, সারা দিনের জ্বলন্ত প্রহরে পেয়েছে এক অপূর্ব রূপ।
২৫ দিন আগে
হুমায়ূন আহমেদ তখন ক্যানসার আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রে কেমোথেরাপি নিচ্ছেন। হঠাৎ চিকিৎসকের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে চলে এলেন নুহাশপল্লীতে। নাটক বানাবেন। অভিনেতা ফারুক আহমেদকে ডাকলেন। নুহাশপল্লীতে নাটকের শুটিংয়ের ফাঁকে গল্প করছিলেন হুমায়ূন ও ফারুক। হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘কী আশ্চর্য, তাই না ফারুক!’
১৩ নভেম্বর ২০২৫
প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
০৮ নভেম্বর ২০২৫