মারুফ ইসলাম

নিদানের কালে পূর্বসূরিদের পদাঙ্ক তালাশ করতে হয়, তাতে কখনো কখনো সঠিক পথের দিশা পাওয়া যায়। কিন্তু আমরা এমনই এক নিদানের কালের নাদান বাচ্চা যে, কত অনায়াসে প্রিয় পূর্বসূরিদের দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে রেখেছি। একজন আবুল মনসুর আহমদ, আমাদের সেরকমই এক প্রিয় পূর্বসূরি, যাঁকে আমরা স্রেফ বিসিএস পরীক্ষার্থীদের ঠোঁটের আগায় বন্দী করে ফেলেছি। আমাদের প্রজন্মের প্রায় প্রতিটি ‘বিসিএস-তরুণ’ তাঁর নাম ও ‘আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর’ বইয়ের নাম মুখস্থ করে ফেলেছে শুধু বিসিএস পরীক্ষায় একটি নম্বর পাওয়ার আশায়। এর বাইরে আবুল মনসুর আহমদ সম্পর্কে তাঁরা আর কিছুই জানে না! কী দুর্দৈব! কত হতভাগ্য এই প্রজন্ম!
আবুল মনসুর আহমদের নানা পরিচয়। তিনি একাধারে সাহিত্যিক, সাংবাদিক, রাজনীতিক, আইনজীবী, বুদ্ধিজীবী ও সমাজ সংস্কারক। কোনো পরিচয়ের চেয়ে কোনো পরিচয় ছোট নয়। প্রতিটি পরিচয় স্বতন্ত্র মহিমায় ভাস্বর। প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি জ্বলজ্বলে তারকা। তবু কবুল করতেই হয়, এসব পরিচয়ের মধ্যে তাঁর সাহিত্যিক পরিচয়ই সব থেকে উজ্জ্বল। এবং অতি অবশ্যই আরও একবার স্বীকার করে নিতে হবে যে, সাহিত্যিক পরিচয়ের মধ্যে তিনি আবার ‘ব্যঙ্গ সাহিত্যিক’ হিসেবে বিরল, ব্যতিক্রম।
বাংলা সাহিত্যে সর্বপ্রথম ব্যঙ্গ সাহিত্যের সূত্রপাত বোধ করি বঙ্কিমচন্দ্রের হাত ধরে। তিনি তাঁর কালোত্তীর্ণ চরিত্র কমলাকান্তকে তৈরি করেছিলেন বিদেশি স্যাটায়ার সাহিত্যের আদলে। কমলাকান্ত প্রভূত রস বিলিয়েছে বাঙালি পাঠক মনে, সন্দেহ নেই। এরপর যদ্দুর জানা যায়, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য মহোদয় ও বীরবল নামে খ্যাত সাহিত্যিক প্রমথ চৌধুরী বাংলা সাহিত্যভুবনে রম্য লেখক হিসেবে আবির্ভূত হন। তিনিও সাহিত্যের এ ধারায় বেশ মেধার স্বাক্ষর রাখেন। প্রমথ চৌধুরীর পর বাংলা রম্য সাহিত্যে আলোচিত হয়ে ওঠেন রাজশেখর বসু, যিনি পরশুরাম নামেই সমধিক পরিচিত। এরপর অবধারিতভাবে নাম চলে আসে ‘প্রণাবি’র অর্থাৎ প্রমথনাথ বিশীর। ধারণা করা হয়, ইংরেজি সাহিত্যের স্যাটায়ার গুরু জর্জ বার্নার্ড শ যেহেতু সংক্ষেপে নিজের নাম ‘জিবিএস’ লিখতেন, সেখান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রমথনাথ বিশীও লিখতে শুরু করেন প্রণাবি। সে যা হোক, রম্য সাহিত্যে এরপর যিনি চিরস্থায়ী আসন প্রতিষ্ঠা করলেন, তিনি আবুল মনসুর আহমদ। তাঁর রচিত ব্যঙ্গ-বিদ্রুপাত্মক রচনা ‘আয়না’ ও ‘ফুড কনফারেন্স’ তৎকালীন কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজের এক অসামান্য দলিল হয়ে রয়েছে। সন্দেহ নেই, একটি সোনার দোয়াত-কলম ছিল আবুল মনসুর আহমদের হাতে।
আবুল মনসুর আহমদের সেই সোনার দোয়াত-কলম থেকে যেসব অনবদ্য রচনার জন্ম হতো, সেসব রচনার শৈলী সম্পর্কে বন্ধুবর কবি কাজী নজরুল ইসলাম বলেছেন, ‘বাংলা ভাষার ব্যঙ্গ সাহিত্য খুব উন্নত হয়নি। তার কারণ, ব্যঙ্গ সাহিত্য সৃষ্টির জন্য অসাধারণ মেধার প্রয়োজন। এ যেন সেতারের কান মলে সুর বের করা। সুরও বেরোবে, তারও ছিঁড়বে না। আমি একবার এক ওস্তাদকে লাঠি দিয়ে স্বরোদ বাজাতে দেখেছিলুম। সেবার সেই ওস্তাদের হাত সাফাই দেখে আশ্চর্য হয়েছিলুম। আর আজ বন্ধু মনসুরের হাত সাফাই দেখে বিস্মিত হলুম। ভাষার কান মলে রস সৃষ্টির ক্ষমতা মনসুরের অসাধারণ। এ যেন পাকা ওস্তাদি হাত। আবুল মনসুরের ব্যঙ্গের একটি বৈশিষ্ট্য এই যে, ব্যঙ্গ যখন হাসায় তখন সে হয় ব্যঙ্গ; কিন্তু কামড়ায় যখন, তখন সে হয় সাপ। আর সেই কামড় গিয়ে যার গায়ে বাজে, তার ভাব হয় সাপের মুখের ব্যাঙের মতোই করুণ।’
নজরুল প্রদত্ত এই সনদকে অবিশ্বাস্য মনে হলে বারবার ফিরে যেতে হবে আবুল মনসুর আহমদের রঙ্গ-ব্যঙ্গ রচনাগুলোর কাছে। অন্তর্দৃষ্টি উন্মীলন করে পাঠ করতে হবে আয়না ও ফুড কনফারেন্স বই দুখানি। তাহলেই উপলব্ধি করা যাবে ভাষার কান মলে কী সুর তিনি সৃষ্টি করেছেন। আয়না গল্পগ্রন্থে রয়েছে মোটে সাতটি গল্প। গল্পগুলো হচ্ছে: হুজুর কেবলা, গো দেওতা কা দেশ, নায়েবে নবী, লিডারে কওম, মুজাহেদীন, বিদ্রোহী সংঘ ও ধর্মরাজ্য। প্রতিটি গল্পেই ধরা আছে সমাজবাস্তবতা। পাঠককে কখনো হাসিয়ে, কখনো চাবুকপেটা করে দেখিয়েছেন সমাজের নানা অসংগতি।
প্রসঙ্গত আলোচনা করা যেতে পারে হুজুর কেবলা গল্পের সারসংক্ষেপ। গল্পটি অতিবিখ্যাত। বিশ্বসাহিত্যের অংশ হওয়ার দাবিদার। এই গল্পে রয়েছে একজন ভণ্ড পীর। নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য জঘন্য ভণ্ডামির আশ্রয় নেয় সে। গ্রামের শিক্ষার আলোবঞ্চিত অসহায় সহজ-সরল মানুষগুলোকে বোকা বানিয়ে সে তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের খাসমহলে পৌঁছে যায়। গল্পের ঘটনা এমন: এই ভণ্ড পীর তারই এক বিশ্বস্ত মুরিদের যুবতী স্ত্রীর রূপে আকৃষ্ট হয়ে তাকে কাছে পাওয়ার লালসায় বহুবিধ ফন্দি আঁটতে থাকে। ছলনার আশ্রয় নিয়ে মুরিদ ও তার স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে ভাঙন সৃষ্টি করে। এবং একসময় সম্পর্ক ভেঙে দিতে সক্ষম হয়। অতঃপর ভণ্ড পীর ওই সুন্দরী যুবতী নারীকে বিয়ে করে। অথচ ইতিপূর্বে এই ভণ্ডের আরও তিন-তিনটি স্ত্রী বহাল তবিয়তেই রয়েছে।
এই গল্প মোড় নেয় আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত এমদাদের মাধ্যমে। এমদাদ একদা পীর মহাশয়ের ভণ্ডামি ধরে ফেলে। সে প্রবল উত্তেজিত হয়ে পীরকে শারীরিক আক্রমণ করে বসে। এই আক্রমণের সুযোগ কাজে লাগায় ভণ্ড পীর। সে এমদাদকে পাগল আখ্যা দেয়। এভাবে লেখক আবুল মনসুর আহমদ হুজুর কেবলার চরিত্রের কলুষতা আয়নার মতো করেই পাঠকের চোখের সামনে তুলে ধরেছেন।
এই হুজুর কেবলারা এখনো আমাদের সমাজে রয়ে গেছে। নানাভাবে ভোল পাল্টে তারা তাদের কৃতকার্য এখনো সম্পাদন করে যাচ্ছে। কিন্তু সমাজে নেই কোনো আবুল মনসুর আহমদ, যিনি কলমের আঁচড়ে আঁকবেন তাদের বীভৎস মুখ। তাই তো ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘পরশুরাম হিন্দু দেবতাদের নিয়ে অনেক কিছু বলেছেন, হিন্দু সম্প্রদায় তা সহ্য করেছে। আবুল মনসুর আহমদের দুঃসাহসও সেদিন সমাজ সহ্য করেছিল। কিন্তু আজ কোনো সম্পাদক এমন গল্প ছাপতে সাহস করবেন কি না এবং সমাজ তা সহ্য করবে কি না, সে সম্পর্কে আমার সন্দেহ আছে।’
এই সন্দেহ থেকেই কি বাংলার বর্তমান লেখককুল কোনো সামাজিক-রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অসংগতি নিয়ে কোনো ব্যঙ্গ করেন না? প্রশ্ন সহজ, উত্তর কঠিন। তার চেয়ে আবার আবুল মনসুর আহমদের গল্পের দিকে নজর ফেরানো যাক। ‘হুজুর কেবলা’ যেমন ইসলাম ধর্মের অপব্যবহার কেন্দ্রিক অন্ধকার নিয়ে লেখা গল্প, তেমনি ‘গো দেওতা কা দেশ’ গল্পটি হিন্দু ধর্মের অন্ধকার দিকগুলো নিয়ে লেখা। হিন্দু সমাজে গো হত্যা নিয়ে যে প্রথা প্রচলিত রয়েছে, তার গোড়া ধরে প্রবল ঝাঁকুনি দিয়েছেন আবুল মনসুর আহমদ। এ ছাড়া হিন্দু-মুসলিম বিদ্বেষ ছড়াতে ইংরেজরা যে কৌশল অবলম্বন করেছিল, তারও যৎসামান্য নমুনা পাওয়া যায় এই গল্পে। বলার অপেক্ষা রাখে না, হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গাই এই গল্পের প্রধান উপজীব্য।
শুধু ধর্মের এসব অসংগতিই নয়, সমাজপতি, রাজনীতিবিদ, মন্ত্রী, আমলা, ব্যবসায়ী, পেশাজীবী যেখানেই তিনি কোনো অন্যায়-অসংগতির দেখা পেয়েছেন, সেখানেই তাঁর কলমকে চাবুক বানিয়ে শপাৎ শপাৎ আওয়াজ তুলেছেন। তাঁর ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের রসাঘাত ও কশাঘাত মূলত ছাঁকনি হয়ে সমাজকে পরিশোধিত করত। আবুল মনসুর আহমদের লেখার আঘাত শুধু ক্ষয়প্রবণ সমাজের মুমূর্ষু মূল্যবোধ ও লৌকিক আচারকেই আক্রমণ করেনি, অধিকন্তু যারা এসব অনুষঙ্গ নিয়ে মিথ্যার ফুলঝুড়ি সাজাত, তাদের তিনি নাকা-নিচুবানি খাইয়েছেন।
তো, অস্বীকার করার আর উপায় কী যে তিনি সমকাল, সমাজ, মানুষ ও রাজনীতিসচেতন সাহিত্যিক ছিলেন? তাঁর আরেক অমর কীর্তি ফুড কনফারেন্সে কী অসম্ভব দ্যুতি নিয়ে জ্বলজ্বল করছে বাংলার সমাজ-সংসার। এ বই যখন আবুল মনসুর আহমদ লেখেন, তখন বইটি পড়ে কালজয়ী লেখক অন্নদাশংকর রায় বলেছেন, ‘“আয়না” লিখিয়া আবুল মনসুর আহমদ প্রাতঃস্মরণীয় হইয়াছিলেন। “ফুড কনফারেন্স” লিখিয়া তিনি অমর হইলেন।’
সত্যিই আবুল মনসুর আহমদ অমর হয়েছেন। বাংলা রম্য সাহিত্যের ইতিহাস লিখতে গেলে তাঁর নাম এবং ‘ফুড কনফারেন্স’-এর নাম বাদ দেওয়া সত্যিই অসম্ভব। বাংলা ভাষার সাহিত্য যারা এখনো টুকটাক পড়ে, তাদের বইয়ের শেলফে অবধারিতভাবে নাক উঁচু করে রয়েছে ‘ফুড কনফারেন্স’। ফুড কনফারেন্সের এক একটি গল্প যেন এক একটি সময়ের খতিয়ান। এই গল্পগন্থের রিলিফ ওয়ার্ক গল্পের শেষাংশে একটু চোখ বুলানো যাক:
‘সূর্যোদয়ের পূর্বেই মধুপুর গ্রামের শতাধিক ছেলে বুড়োকে হাতকড়া পরা অবস্থায় রিলিফ কমিটির তাম্বুর সম্মুখে জড়ো করা হইল। দারোগা সাহেব সাড়ম্বরে হামিদদের সকলের জবানবন্দি গ্রহণ করিলেন। জবানবন্দি শেষ করিয়া একপাল অভুক্ত অর্ধনগ্ন নরকঙ্কালকে ভেড়ার পালের মতো খেদাইয়া থানায় লইয়া গেলেন।’
কী নির্মম দৃশ্যকল্প! অথচ কী বাস্তব।
আবুল মনসুর আহমদের আরেকটি জনপ্রিয় রম্য গল্পের নাম ‘গালিভরের সফর নামা’। এই গল্পে তিনি নীতিকথার দিকগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন অম্লমধুর ব্যঙ্গের মাধ্যমে। এই গল্পের একটি অংশ এ রকম:
‘আলিম: শরিয়ত-বিরোধী বিজ্ঞান-দর্শন ও ভূগোল পড়ান হৈব না।
ডিপিআই: আচ্ছা, তারপর?
আলিম: মেয়েদের স্কুল কলেজে পড়ান হৈব না।
সেক্রেটারি: কিন্তু ডাক্তারি ও নার্সিং না শিখালে হাসপাতাল চলবে কেমনে? আওরতদের চিকিৎসা করবে কে?
আলিম: আওরতদের আবরু-ইজ্জত নষ্ট কৈরা ডাক্তারি ও নার্সিং শিক্ষা দিতে হৈব? চিকিৎসার জন্য? শুইনা হাসি পায়। হায়াত, মউত, রিজিক, দৌলত এই চারটি চিজ আল্লা নিজের হাতে রাখছেন। চিকিৎসকেরা কেউ কারও হায়াত দিছেন, এ কথা আপনার কোনো দিন শুনছেন?’
বিষয়বস্তু তো বটেই, ভাষাও তিনি ছিলেন স্বতন্ত্র। তাঁর আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তিনি ময়মনসিংহের কথ্য ভাষাকে সাহিত্যে স্থান দিতে চেয়েছেন। এটা তাঁর জাতীয়তাবাদেরই বহিঃপ্রকাশ তাতে সন্দেহ নেই। এ প্রসঙ্গে ড. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘একুশে ফেব্রুয়ারিকে আবুল মনসুর আহমদ একুশ দফায় পরিণত করেছিলেন। আমরা জাতীয়তাবোধের একটা মহান চেতনা তাঁর মধ্যে পেয়েছি।’
আজ, এই নিদানের কালে আবুল মনসুর আহমদের মতো জাতীয়তাবোধে জাগ্রত হয়ে কলম ধরার মতো কেউ নেই। তাঁর মতো ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করে সমাজের নিদ্রাভঙ্গ করার মতোও কেউ নেই। তাই এই দুর্দিনে আপনাকে বড্ড বেশি দরকার, প্রিয় পূর্বসূরি আবুল মনসুর আহমদ।

নিদানের কালে পূর্বসূরিদের পদাঙ্ক তালাশ করতে হয়, তাতে কখনো কখনো সঠিক পথের দিশা পাওয়া যায়। কিন্তু আমরা এমনই এক নিদানের কালের নাদান বাচ্চা যে, কত অনায়াসে প্রিয় পূর্বসূরিদের দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে রেখেছি। একজন আবুল মনসুর আহমদ, আমাদের সেরকমই এক প্রিয় পূর্বসূরি, যাঁকে আমরা স্রেফ বিসিএস পরীক্ষার্থীদের ঠোঁটের আগায় বন্দী করে ফেলেছি। আমাদের প্রজন্মের প্রায় প্রতিটি ‘বিসিএস-তরুণ’ তাঁর নাম ও ‘আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর’ বইয়ের নাম মুখস্থ করে ফেলেছে শুধু বিসিএস পরীক্ষায় একটি নম্বর পাওয়ার আশায়। এর বাইরে আবুল মনসুর আহমদ সম্পর্কে তাঁরা আর কিছুই জানে না! কী দুর্দৈব! কত হতভাগ্য এই প্রজন্ম!
আবুল মনসুর আহমদের নানা পরিচয়। তিনি একাধারে সাহিত্যিক, সাংবাদিক, রাজনীতিক, আইনজীবী, বুদ্ধিজীবী ও সমাজ সংস্কারক। কোনো পরিচয়ের চেয়ে কোনো পরিচয় ছোট নয়। প্রতিটি পরিচয় স্বতন্ত্র মহিমায় ভাস্বর। প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি জ্বলজ্বলে তারকা। তবু কবুল করতেই হয়, এসব পরিচয়ের মধ্যে তাঁর সাহিত্যিক পরিচয়ই সব থেকে উজ্জ্বল। এবং অতি অবশ্যই আরও একবার স্বীকার করে নিতে হবে যে, সাহিত্যিক পরিচয়ের মধ্যে তিনি আবার ‘ব্যঙ্গ সাহিত্যিক’ হিসেবে বিরল, ব্যতিক্রম।
বাংলা সাহিত্যে সর্বপ্রথম ব্যঙ্গ সাহিত্যের সূত্রপাত বোধ করি বঙ্কিমচন্দ্রের হাত ধরে। তিনি তাঁর কালোত্তীর্ণ চরিত্র কমলাকান্তকে তৈরি করেছিলেন বিদেশি স্যাটায়ার সাহিত্যের আদলে। কমলাকান্ত প্রভূত রস বিলিয়েছে বাঙালি পাঠক মনে, সন্দেহ নেই। এরপর যদ্দুর জানা যায়, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য মহোদয় ও বীরবল নামে খ্যাত সাহিত্যিক প্রমথ চৌধুরী বাংলা সাহিত্যভুবনে রম্য লেখক হিসেবে আবির্ভূত হন। তিনিও সাহিত্যের এ ধারায় বেশ মেধার স্বাক্ষর রাখেন। প্রমথ চৌধুরীর পর বাংলা রম্য সাহিত্যে আলোচিত হয়ে ওঠেন রাজশেখর বসু, যিনি পরশুরাম নামেই সমধিক পরিচিত। এরপর অবধারিতভাবে নাম চলে আসে ‘প্রণাবি’র অর্থাৎ প্রমথনাথ বিশীর। ধারণা করা হয়, ইংরেজি সাহিত্যের স্যাটায়ার গুরু জর্জ বার্নার্ড শ যেহেতু সংক্ষেপে নিজের নাম ‘জিবিএস’ লিখতেন, সেখান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রমথনাথ বিশীও লিখতে শুরু করেন প্রণাবি। সে যা হোক, রম্য সাহিত্যে এরপর যিনি চিরস্থায়ী আসন প্রতিষ্ঠা করলেন, তিনি আবুল মনসুর আহমদ। তাঁর রচিত ব্যঙ্গ-বিদ্রুপাত্মক রচনা ‘আয়না’ ও ‘ফুড কনফারেন্স’ তৎকালীন কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজের এক অসামান্য দলিল হয়ে রয়েছে। সন্দেহ নেই, একটি সোনার দোয়াত-কলম ছিল আবুল মনসুর আহমদের হাতে।
আবুল মনসুর আহমদের সেই সোনার দোয়াত-কলম থেকে যেসব অনবদ্য রচনার জন্ম হতো, সেসব রচনার শৈলী সম্পর্কে বন্ধুবর কবি কাজী নজরুল ইসলাম বলেছেন, ‘বাংলা ভাষার ব্যঙ্গ সাহিত্য খুব উন্নত হয়নি। তার কারণ, ব্যঙ্গ সাহিত্য সৃষ্টির জন্য অসাধারণ মেধার প্রয়োজন। এ যেন সেতারের কান মলে সুর বের করা। সুরও বেরোবে, তারও ছিঁড়বে না। আমি একবার এক ওস্তাদকে লাঠি দিয়ে স্বরোদ বাজাতে দেখেছিলুম। সেবার সেই ওস্তাদের হাত সাফাই দেখে আশ্চর্য হয়েছিলুম। আর আজ বন্ধু মনসুরের হাত সাফাই দেখে বিস্মিত হলুম। ভাষার কান মলে রস সৃষ্টির ক্ষমতা মনসুরের অসাধারণ। এ যেন পাকা ওস্তাদি হাত। আবুল মনসুরের ব্যঙ্গের একটি বৈশিষ্ট্য এই যে, ব্যঙ্গ যখন হাসায় তখন সে হয় ব্যঙ্গ; কিন্তু কামড়ায় যখন, তখন সে হয় সাপ। আর সেই কামড় গিয়ে যার গায়ে বাজে, তার ভাব হয় সাপের মুখের ব্যাঙের মতোই করুণ।’
নজরুল প্রদত্ত এই সনদকে অবিশ্বাস্য মনে হলে বারবার ফিরে যেতে হবে আবুল মনসুর আহমদের রঙ্গ-ব্যঙ্গ রচনাগুলোর কাছে। অন্তর্দৃষ্টি উন্মীলন করে পাঠ করতে হবে আয়না ও ফুড কনফারেন্স বই দুখানি। তাহলেই উপলব্ধি করা যাবে ভাষার কান মলে কী সুর তিনি সৃষ্টি করেছেন। আয়না গল্পগ্রন্থে রয়েছে মোটে সাতটি গল্প। গল্পগুলো হচ্ছে: হুজুর কেবলা, গো দেওতা কা দেশ, নায়েবে নবী, লিডারে কওম, মুজাহেদীন, বিদ্রোহী সংঘ ও ধর্মরাজ্য। প্রতিটি গল্পেই ধরা আছে সমাজবাস্তবতা। পাঠককে কখনো হাসিয়ে, কখনো চাবুকপেটা করে দেখিয়েছেন সমাজের নানা অসংগতি।
প্রসঙ্গত আলোচনা করা যেতে পারে হুজুর কেবলা গল্পের সারসংক্ষেপ। গল্পটি অতিবিখ্যাত। বিশ্বসাহিত্যের অংশ হওয়ার দাবিদার। এই গল্পে রয়েছে একজন ভণ্ড পীর। নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য জঘন্য ভণ্ডামির আশ্রয় নেয় সে। গ্রামের শিক্ষার আলোবঞ্চিত অসহায় সহজ-সরল মানুষগুলোকে বোকা বানিয়ে সে তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের খাসমহলে পৌঁছে যায়। গল্পের ঘটনা এমন: এই ভণ্ড পীর তারই এক বিশ্বস্ত মুরিদের যুবতী স্ত্রীর রূপে আকৃষ্ট হয়ে তাকে কাছে পাওয়ার লালসায় বহুবিধ ফন্দি আঁটতে থাকে। ছলনার আশ্রয় নিয়ে মুরিদ ও তার স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে ভাঙন সৃষ্টি করে। এবং একসময় সম্পর্ক ভেঙে দিতে সক্ষম হয়। অতঃপর ভণ্ড পীর ওই সুন্দরী যুবতী নারীকে বিয়ে করে। অথচ ইতিপূর্বে এই ভণ্ডের আরও তিন-তিনটি স্ত্রী বহাল তবিয়তেই রয়েছে।
এই গল্প মোড় নেয় আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত এমদাদের মাধ্যমে। এমদাদ একদা পীর মহাশয়ের ভণ্ডামি ধরে ফেলে। সে প্রবল উত্তেজিত হয়ে পীরকে শারীরিক আক্রমণ করে বসে। এই আক্রমণের সুযোগ কাজে লাগায় ভণ্ড পীর। সে এমদাদকে পাগল আখ্যা দেয়। এভাবে লেখক আবুল মনসুর আহমদ হুজুর কেবলার চরিত্রের কলুষতা আয়নার মতো করেই পাঠকের চোখের সামনে তুলে ধরেছেন।
এই হুজুর কেবলারা এখনো আমাদের সমাজে রয়ে গেছে। নানাভাবে ভোল পাল্টে তারা তাদের কৃতকার্য এখনো সম্পাদন করে যাচ্ছে। কিন্তু সমাজে নেই কোনো আবুল মনসুর আহমদ, যিনি কলমের আঁচড়ে আঁকবেন তাদের বীভৎস মুখ। তাই তো ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘পরশুরাম হিন্দু দেবতাদের নিয়ে অনেক কিছু বলেছেন, হিন্দু সম্প্রদায় তা সহ্য করেছে। আবুল মনসুর আহমদের দুঃসাহসও সেদিন সমাজ সহ্য করেছিল। কিন্তু আজ কোনো সম্পাদক এমন গল্প ছাপতে সাহস করবেন কি না এবং সমাজ তা সহ্য করবে কি না, সে সম্পর্কে আমার সন্দেহ আছে।’
এই সন্দেহ থেকেই কি বাংলার বর্তমান লেখককুল কোনো সামাজিক-রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অসংগতি নিয়ে কোনো ব্যঙ্গ করেন না? প্রশ্ন সহজ, উত্তর কঠিন। তার চেয়ে আবার আবুল মনসুর আহমদের গল্পের দিকে নজর ফেরানো যাক। ‘হুজুর কেবলা’ যেমন ইসলাম ধর্মের অপব্যবহার কেন্দ্রিক অন্ধকার নিয়ে লেখা গল্প, তেমনি ‘গো দেওতা কা দেশ’ গল্পটি হিন্দু ধর্মের অন্ধকার দিকগুলো নিয়ে লেখা। হিন্দু সমাজে গো হত্যা নিয়ে যে প্রথা প্রচলিত রয়েছে, তার গোড়া ধরে প্রবল ঝাঁকুনি দিয়েছেন আবুল মনসুর আহমদ। এ ছাড়া হিন্দু-মুসলিম বিদ্বেষ ছড়াতে ইংরেজরা যে কৌশল অবলম্বন করেছিল, তারও যৎসামান্য নমুনা পাওয়া যায় এই গল্পে। বলার অপেক্ষা রাখে না, হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গাই এই গল্পের প্রধান উপজীব্য।
শুধু ধর্মের এসব অসংগতিই নয়, সমাজপতি, রাজনীতিবিদ, মন্ত্রী, আমলা, ব্যবসায়ী, পেশাজীবী যেখানেই তিনি কোনো অন্যায়-অসংগতির দেখা পেয়েছেন, সেখানেই তাঁর কলমকে চাবুক বানিয়ে শপাৎ শপাৎ আওয়াজ তুলেছেন। তাঁর ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের রসাঘাত ও কশাঘাত মূলত ছাঁকনি হয়ে সমাজকে পরিশোধিত করত। আবুল মনসুর আহমদের লেখার আঘাত শুধু ক্ষয়প্রবণ সমাজের মুমূর্ষু মূল্যবোধ ও লৌকিক আচারকেই আক্রমণ করেনি, অধিকন্তু যারা এসব অনুষঙ্গ নিয়ে মিথ্যার ফুলঝুড়ি সাজাত, তাদের তিনি নাকা-নিচুবানি খাইয়েছেন।
তো, অস্বীকার করার আর উপায় কী যে তিনি সমকাল, সমাজ, মানুষ ও রাজনীতিসচেতন সাহিত্যিক ছিলেন? তাঁর আরেক অমর কীর্তি ফুড কনফারেন্সে কী অসম্ভব দ্যুতি নিয়ে জ্বলজ্বল করছে বাংলার সমাজ-সংসার। এ বই যখন আবুল মনসুর আহমদ লেখেন, তখন বইটি পড়ে কালজয়ী লেখক অন্নদাশংকর রায় বলেছেন, ‘“আয়না” লিখিয়া আবুল মনসুর আহমদ প্রাতঃস্মরণীয় হইয়াছিলেন। “ফুড কনফারেন্স” লিখিয়া তিনি অমর হইলেন।’
সত্যিই আবুল মনসুর আহমদ অমর হয়েছেন। বাংলা রম্য সাহিত্যের ইতিহাস লিখতে গেলে তাঁর নাম এবং ‘ফুড কনফারেন্স’-এর নাম বাদ দেওয়া সত্যিই অসম্ভব। বাংলা ভাষার সাহিত্য যারা এখনো টুকটাক পড়ে, তাদের বইয়ের শেলফে অবধারিতভাবে নাক উঁচু করে রয়েছে ‘ফুড কনফারেন্স’। ফুড কনফারেন্সের এক একটি গল্প যেন এক একটি সময়ের খতিয়ান। এই গল্পগন্থের রিলিফ ওয়ার্ক গল্পের শেষাংশে একটু চোখ বুলানো যাক:
‘সূর্যোদয়ের পূর্বেই মধুপুর গ্রামের শতাধিক ছেলে বুড়োকে হাতকড়া পরা অবস্থায় রিলিফ কমিটির তাম্বুর সম্মুখে জড়ো করা হইল। দারোগা সাহেব সাড়ম্বরে হামিদদের সকলের জবানবন্দি গ্রহণ করিলেন। জবানবন্দি শেষ করিয়া একপাল অভুক্ত অর্ধনগ্ন নরকঙ্কালকে ভেড়ার পালের মতো খেদাইয়া থানায় লইয়া গেলেন।’
কী নির্মম দৃশ্যকল্প! অথচ কী বাস্তব।
আবুল মনসুর আহমদের আরেকটি জনপ্রিয় রম্য গল্পের নাম ‘গালিভরের সফর নামা’। এই গল্পে তিনি নীতিকথার দিকগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন অম্লমধুর ব্যঙ্গের মাধ্যমে। এই গল্পের একটি অংশ এ রকম:
‘আলিম: শরিয়ত-বিরোধী বিজ্ঞান-দর্শন ও ভূগোল পড়ান হৈব না।
ডিপিআই: আচ্ছা, তারপর?
আলিম: মেয়েদের স্কুল কলেজে পড়ান হৈব না।
সেক্রেটারি: কিন্তু ডাক্তারি ও নার্সিং না শিখালে হাসপাতাল চলবে কেমনে? আওরতদের চিকিৎসা করবে কে?
আলিম: আওরতদের আবরু-ইজ্জত নষ্ট কৈরা ডাক্তারি ও নার্সিং শিক্ষা দিতে হৈব? চিকিৎসার জন্য? শুইনা হাসি পায়। হায়াত, মউত, রিজিক, দৌলত এই চারটি চিজ আল্লা নিজের হাতে রাখছেন। চিকিৎসকেরা কেউ কারও হায়াত দিছেন, এ কথা আপনার কোনো দিন শুনছেন?’
বিষয়বস্তু তো বটেই, ভাষাও তিনি ছিলেন স্বতন্ত্র। তাঁর আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তিনি ময়মনসিংহের কথ্য ভাষাকে সাহিত্যে স্থান দিতে চেয়েছেন। এটা তাঁর জাতীয়তাবাদেরই বহিঃপ্রকাশ তাতে সন্দেহ নেই। এ প্রসঙ্গে ড. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘একুশে ফেব্রুয়ারিকে আবুল মনসুর আহমদ একুশ দফায় পরিণত করেছিলেন। আমরা জাতীয়তাবোধের একটা মহান চেতনা তাঁর মধ্যে পেয়েছি।’
আজ, এই নিদানের কালে আবুল মনসুর আহমদের মতো জাতীয়তাবোধে জাগ্রত হয়ে কলম ধরার মতো কেউ নেই। তাঁর মতো ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করে সমাজের নিদ্রাভঙ্গ করার মতোও কেউ নেই। তাই এই দুর্দিনে আপনাকে বড্ড বেশি দরকার, প্রিয় পূর্বসূরি আবুল মনসুর আহমদ।

আলসেমি শরীরে এদিক-ওদিক চেয়ে আটকে গেল চোখ পশ্চিমান্তে। রক্তিম সূর্যের বিদায় ধীর গতিতে। খুব লাল হয়েছে, সারা দিনের জ্বলন্ত প্রহরে পেয়েছে এক অপূর্ব রূপ।
১২ দিন আগে
হুমায়ূন আহমেদ তখন ক্যানসার আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রে কেমোথেরাপি নিচ্ছেন। হঠাৎ চিকিৎসকের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে চলে এলেন নুহাশপল্লীতে। নাটক বানাবেন। অভিনেতা ফারুক আহমেদকে ডাকলেন। নুহাশপল্লীতে নাটকের শুটিংয়ের ফাঁকে গল্প করছিলেন হুমায়ূন ও ফারুক। হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘কী আশ্চর্য, তাই না ফারুক!’
২২ দিন আগে
প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
০৮ নভেম্বর ২০২৫
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
২০ অক্টোবর ২০২৫তৌহিদুল হক

রক্ত লাল
আলসেমি শরীরে এদিক-ওদিক চেয়ে আটকে
গেল চোখ পশ্চিমান্তে। রক্তিম সূর্যের বিদায়
ধীর গতিতে। খুব লাল হয়েছে, সারা দিনের
জ্বলন্ত প্রহরে পেয়েছে এক অপূর্ব রূপ।
যা স্বভাববিদ্ধ, তবে কতটা উপকারী বা বাঁচিয়ে
রাখার নিরলস অভিপ্রায়। মানুষের তরে
প্রাণীর অফুরন্ত প্রাচুর্য বিস্তৃতকরণে, কিংবা
উদ্ভিদের অন্তিম প্রেমে বসন্তের অভিষেকে।
কতটা জ্বলতে হয় পরের জন্য, কতটা ফুটন্ত
শরীর নিয়ে চালিয়ে যায় সেবার পরিধি।
এক চিরন্তন শিক্ষা, আবার উদিত হয়
দিনের শুরুতে, বিদায় প্রান্তিক অপূর্ব
মায়ায়-দিনের শেষ প্রান্তে।
এতটুকু কার্পণ্য রেখে যায়নি, হয়তো মুখ
ফিরিয়ে নিবে না কোনো দিন। তবে ভাবনার
অন্তিমে শেষ দৃশ্যের সংলাপে ভেসে
ওঠে জনদরদি রাজার মুখ। যেখানে রক্ত ঝরে
বন্যার বেগে সেখানেও প্রতিদিন ফুল ফোটে ফুল হয়ে।
যত দেখি
যত দেখি তৃপ্ত হই, শীতল হয়ে
জড়িয়ে পড়ি তোমার সমস্ত শরীরে। এক অজানা
শিহরণ ছুঁয়ে যায় হৃদয়ের সমস্ত পৃষ্ঠা জুড়ে।
যেন দীর্ঘদিনের শুষ্কতা ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে দূরে।
হারিয়ে যাওয়া রস ফিরছে মূলে, নিয়ে যাচ্ছে আদিপর্বে।
যেমন নেয় নদীর কূল, জোয়ারের ফেনা।
ভাবনার অতলে অদ্ভুত মায়া, দীর্ঘক্ষণ মোহগ্রস্ত
করে রাখে চোখের পলক, তাকিয়ে থাকি মায়ার মায়ায়। কী অপরূপ মায়া!
সেখানেও দেখি তৃষ্ণার ব্যাকুলতা নিয়ে অপেক্ষারত কান্না।
জীবনের তল্লাটে হারিয়ে খুঁজি আজ
আমারও জীবন ছিল। মায়ায় ভরা নির্বিঘ্ন আয়োজন, কলমিলতার মতো নিষ্পাপ।
তৃপ্ত হই ঘাসে, বাতাসের বেহায়া আঘাতে
অভিমানের মোড়ক ছুড়ে ফেলে হাতে তুলে নেই
কচু পাতায় টলোমলো জলের লজ্জা। এ জীবনের চাহিদা তোমায় দেখার
প্রয়োজনে তপ্ত, হয় উত্তপ্ত অথবা সহ্যের অতীত শীতল।
এ যেন কেমন
গহিন অরণ্যে সবুজ পাতার মতো, মগজে
চিন্তার রাজ্যে ভাবের উদয়, আকুল বিন্যাসে
একটু একটু করে এগিয়ে নেয়, আবার ভরা কলসির
মতো বসিয়ে রাখে-ভবের রাজ্যে। একদিন সমস্ত ভাবনা থেকে মুক্ত হয়ে
এদিক-ওদিক চলন, জীবন্ত মরণ! মানুষ
কেন বাঁচে, কীভাবে বাঁচে-প্রশ্নের সমাধা
আজ তর্কপ্রিয় সন্ধানে, মূর্ত প্রার্থনা।
সকল প্রিয়জন পরিত্যাগে, নিগূঢ় যত্নে হৃদয়ে প্রবেশ করে
নিজের অপরিচিত চেহারা, সব জিজ্ঞাসার
অন্ত-ক্রিয়ার এক উচ্চতম বিলাস।
জীবনের মানে অর্থশুন্য ভবিতব্য! এ কী হয়?
চোখের পলকে নিষ্পাপ দৃশ্যলোক-পেছন ডাকে বারবার
যেখানে থাকে আবার দেখার ইচ্ছা, নামে যে মুক্তকরণ। মিলনকান্তির আবাস।
চতুর্মুখ সমীকরণে খেলে যায় সময়ের ঝাঁজালো সিদ্ধান্ত। কেউ কী অপ্রিয় হয় কারও?
যেখানে ভেসে ওঠে নীলপদ্ম, অতীতের নিটোল কিতাব। সে-তো মানুষের ছবি!
চলে আসুন সবজি বাজারে
মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দেখেছি অনেক কিছু
যা মানুষের নয়। অ-মানুষের জন্ম-উত্তর বাঁচার
উপায় হতে পারে। পোশাকে সজ্জিত দেহ কতভাবে
হিংস্র হয়, গোপনে, অন্ধের গহনে।
প্রবেশের আগেই পেয়েছি সংকেত। কত নোংরা, পচা, আবর্জনায় ভরা একটি থালার মতো
পড়ে আছে সম্মুখে। কেউ কি দেখেছে?
হয়তো মেনে নিয়েছে সবাই, সবার আগে সে
যে ভেবেছে, কী বা আছে উপায়!
চারপাশে কত কিছুর ঘ্রাণ, চোখ যা বলে তা কি মেনে নেয় স্বাস্থ্যবার্তা
ফুটে আছে ফুলের মতো দোকানের পসরা। খেতে বা কেনায় বারণ বালাই নেই।
যা পাচ্ছে নিচ্ছে, অনেকে। কেউ গায়ে কেউ পেটে।
আহা! দেখার কেউ নেই!
এক অন্ধকারে হাঁটছে আমাদের পা।
কেউ কি আছে কোথাও, আলো নিয়ে হাতে? ভেবেছে কি কেউ
কেন আমাদের আয়োজনে সবাই নেই?
কেউ এসে শুধু একবার বলুক, এই নিন-আপনাদের জীবন টিকিট যা উত্তরণ।
চলে আসুন সবজির বাজারে, সবুজের খোঁজে।
ইতিহাস
আজ স্পষ্ট ঘোষণা, আমার চোখের সামনে কেউ নেই
নেই কেউ ভাবের অন্তিম ঘরে। এক অস্পৃশ্য অনুভব
ছুঁয়ে চলে, ভাসিয়ে দেয় অগণিত স্রোতের তুমুল আলিঙ্গনে।
আজ কিছু ভেবে বলছি না, সরাসরি জবাব---
আমি নই কারও!
সব বাতাসের সাথে মিশে থাকা চোখের প্রেম
ভাবনার বিলাসে জড়িয়ে পড়ার বাসনা----সকলের অগোচরে
অথবা সকলের মাঝে। জীবনের অর্থে হৃদয়ের গুড়গুড় আলাপ
ঘুটঘুটে অন্ধকারে হৃদয়ে খোলা আকাশ, শুধু
এক মুখচ্ছবি।
আজ কোনো ক্ষমা নেই---নিজের প্রতি! নিজের পাপে
হাঁটি আমি, সবার মাঝে একলা হয়ে। বেদনার
কালো রং নিয়ে। শুধু দেখে যাই, শুধু দেখতে যাই।
কত রং বিরাজ করে ভাবনার গরমিলে, স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রই।
দাঁড়িয়ে থেকেও হেঁটে যাই!
আজকের না বলা কথা, কোনো দিন বলা হবে না
হবে না দাঁড়িয়ে আবার ভাবা আর একটু বসলে
ভালো হতো। যে বসিয়ে রাখে যে আশায় বসে থাকে
সবকিছুর-ই সময় থাকে---
এরপর---ইতিহাস!

রক্ত লাল
আলসেমি শরীরে এদিক-ওদিক চেয়ে আটকে
গেল চোখ পশ্চিমান্তে। রক্তিম সূর্যের বিদায়
ধীর গতিতে। খুব লাল হয়েছে, সারা দিনের
জ্বলন্ত প্রহরে পেয়েছে এক অপূর্ব রূপ।
যা স্বভাববিদ্ধ, তবে কতটা উপকারী বা বাঁচিয়ে
রাখার নিরলস অভিপ্রায়। মানুষের তরে
প্রাণীর অফুরন্ত প্রাচুর্য বিস্তৃতকরণে, কিংবা
উদ্ভিদের অন্তিম প্রেমে বসন্তের অভিষেকে।
কতটা জ্বলতে হয় পরের জন্য, কতটা ফুটন্ত
শরীর নিয়ে চালিয়ে যায় সেবার পরিধি।
এক চিরন্তন শিক্ষা, আবার উদিত হয়
দিনের শুরুতে, বিদায় প্রান্তিক অপূর্ব
মায়ায়-দিনের শেষ প্রান্তে।
এতটুকু কার্পণ্য রেখে যায়নি, হয়তো মুখ
ফিরিয়ে নিবে না কোনো দিন। তবে ভাবনার
অন্তিমে শেষ দৃশ্যের সংলাপে ভেসে
ওঠে জনদরদি রাজার মুখ। যেখানে রক্ত ঝরে
বন্যার বেগে সেখানেও প্রতিদিন ফুল ফোটে ফুল হয়ে।
যত দেখি
যত দেখি তৃপ্ত হই, শীতল হয়ে
জড়িয়ে পড়ি তোমার সমস্ত শরীরে। এক অজানা
শিহরণ ছুঁয়ে যায় হৃদয়ের সমস্ত পৃষ্ঠা জুড়ে।
যেন দীর্ঘদিনের শুষ্কতা ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে দূরে।
হারিয়ে যাওয়া রস ফিরছে মূলে, নিয়ে যাচ্ছে আদিপর্বে।
যেমন নেয় নদীর কূল, জোয়ারের ফেনা।
ভাবনার অতলে অদ্ভুত মায়া, দীর্ঘক্ষণ মোহগ্রস্ত
করে রাখে চোখের পলক, তাকিয়ে থাকি মায়ার মায়ায়। কী অপরূপ মায়া!
সেখানেও দেখি তৃষ্ণার ব্যাকুলতা নিয়ে অপেক্ষারত কান্না।
জীবনের তল্লাটে হারিয়ে খুঁজি আজ
আমারও জীবন ছিল। মায়ায় ভরা নির্বিঘ্ন আয়োজন, কলমিলতার মতো নিষ্পাপ।
তৃপ্ত হই ঘাসে, বাতাসের বেহায়া আঘাতে
অভিমানের মোড়ক ছুড়ে ফেলে হাতে তুলে নেই
কচু পাতায় টলোমলো জলের লজ্জা। এ জীবনের চাহিদা তোমায় দেখার
প্রয়োজনে তপ্ত, হয় উত্তপ্ত অথবা সহ্যের অতীত শীতল।
এ যেন কেমন
গহিন অরণ্যে সবুজ পাতার মতো, মগজে
চিন্তার রাজ্যে ভাবের উদয়, আকুল বিন্যাসে
একটু একটু করে এগিয়ে নেয়, আবার ভরা কলসির
মতো বসিয়ে রাখে-ভবের রাজ্যে। একদিন সমস্ত ভাবনা থেকে মুক্ত হয়ে
এদিক-ওদিক চলন, জীবন্ত মরণ! মানুষ
কেন বাঁচে, কীভাবে বাঁচে-প্রশ্নের সমাধা
আজ তর্কপ্রিয় সন্ধানে, মূর্ত প্রার্থনা।
সকল প্রিয়জন পরিত্যাগে, নিগূঢ় যত্নে হৃদয়ে প্রবেশ করে
নিজের অপরিচিত চেহারা, সব জিজ্ঞাসার
অন্ত-ক্রিয়ার এক উচ্চতম বিলাস।
জীবনের মানে অর্থশুন্য ভবিতব্য! এ কী হয়?
চোখের পলকে নিষ্পাপ দৃশ্যলোক-পেছন ডাকে বারবার
যেখানে থাকে আবার দেখার ইচ্ছা, নামে যে মুক্তকরণ। মিলনকান্তির আবাস।
চতুর্মুখ সমীকরণে খেলে যায় সময়ের ঝাঁজালো সিদ্ধান্ত। কেউ কী অপ্রিয় হয় কারও?
যেখানে ভেসে ওঠে নীলপদ্ম, অতীতের নিটোল কিতাব। সে-তো মানুষের ছবি!
চলে আসুন সবজি বাজারে
মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দেখেছি অনেক কিছু
যা মানুষের নয়। অ-মানুষের জন্ম-উত্তর বাঁচার
উপায় হতে পারে। পোশাকে সজ্জিত দেহ কতভাবে
হিংস্র হয়, গোপনে, অন্ধের গহনে।
প্রবেশের আগেই পেয়েছি সংকেত। কত নোংরা, পচা, আবর্জনায় ভরা একটি থালার মতো
পড়ে আছে সম্মুখে। কেউ কি দেখেছে?
হয়তো মেনে নিয়েছে সবাই, সবার আগে সে
যে ভেবেছে, কী বা আছে উপায়!
চারপাশে কত কিছুর ঘ্রাণ, চোখ যা বলে তা কি মেনে নেয় স্বাস্থ্যবার্তা
ফুটে আছে ফুলের মতো দোকানের পসরা। খেতে বা কেনায় বারণ বালাই নেই।
যা পাচ্ছে নিচ্ছে, অনেকে। কেউ গায়ে কেউ পেটে।
আহা! দেখার কেউ নেই!
এক অন্ধকারে হাঁটছে আমাদের পা।
কেউ কি আছে কোথাও, আলো নিয়ে হাতে? ভেবেছে কি কেউ
কেন আমাদের আয়োজনে সবাই নেই?
কেউ এসে শুধু একবার বলুক, এই নিন-আপনাদের জীবন টিকিট যা উত্তরণ।
চলে আসুন সবজির বাজারে, সবুজের খোঁজে।
ইতিহাস
আজ স্পষ্ট ঘোষণা, আমার চোখের সামনে কেউ নেই
নেই কেউ ভাবের অন্তিম ঘরে। এক অস্পৃশ্য অনুভব
ছুঁয়ে চলে, ভাসিয়ে দেয় অগণিত স্রোতের তুমুল আলিঙ্গনে।
আজ কিছু ভেবে বলছি না, সরাসরি জবাব---
আমি নই কারও!
সব বাতাসের সাথে মিশে থাকা চোখের প্রেম
ভাবনার বিলাসে জড়িয়ে পড়ার বাসনা----সকলের অগোচরে
অথবা সকলের মাঝে। জীবনের অর্থে হৃদয়ের গুড়গুড় আলাপ
ঘুটঘুটে অন্ধকারে হৃদয়ে খোলা আকাশ, শুধু
এক মুখচ্ছবি।
আজ কোনো ক্ষমা নেই---নিজের প্রতি! নিজের পাপে
হাঁটি আমি, সবার মাঝে একলা হয়ে। বেদনার
কালো রং নিয়ে। শুধু দেখে যাই, শুধু দেখতে যাই।
কত রং বিরাজ করে ভাবনার গরমিলে, স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রই।
দাঁড়িয়ে থেকেও হেঁটে যাই!
আজকের না বলা কথা, কোনো দিন বলা হবে না
হবে না দাঁড়িয়ে আবার ভাবা আর একটু বসলে
ভালো হতো। যে বসিয়ে রাখে যে আশায় বসে থাকে
সবকিছুর-ই সময় থাকে---
এরপর---ইতিহাস!

নিদানের কালে পূর্বসূরিদের পদাঙ্ক তালাশ করতে হয়, তাতে কখনো কখনো সঠিক পথের দিশা পাওয়া যায়। কিন্তু আমরা এমনই এক নিদানকালের নাদান বাচ্চা যে, কত অনায়াসে প্রিয় পূর্বসূরিদের দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে রেখেছি। একজন আবুল মনসুর আহমদ, আমাদের সেরকমই এক প্রিয় পূর্বসুরি, যাঁকে আমরা স্রেফ বিসিএস পরীক্ষার্থীদের ঠোঁটের আগা
১৮ মার্চ ২০২৩
হুমায়ূন আহমেদ তখন ক্যানসার আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রে কেমোথেরাপি নিচ্ছেন। হঠাৎ চিকিৎসকের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে চলে এলেন নুহাশপল্লীতে। নাটক বানাবেন। অভিনেতা ফারুক আহমেদকে ডাকলেন। নুহাশপল্লীতে নাটকের শুটিংয়ের ফাঁকে গল্প করছিলেন হুমায়ূন ও ফারুক। হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘কী আশ্চর্য, তাই না ফারুক!’
২২ দিন আগে
প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
০৮ নভেম্বর ২০২৫
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
২০ অক্টোবর ২০২৫জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

হুমায়ূন আহমেদ তখন ক্যানসার আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রে কেমোথেরাপি নিচ্ছেন। হঠাৎ চিকিৎসকের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে চলে এলেন নুহাশপল্লীতে। নাটক বানাবেন। অভিনেতা ফারুক আহমেদকে ডাকলেন। নুহাশপল্লীতে নাটকের শুটিংয়ের ফাঁকে গল্প করছিলেন হুমায়ূন ও ফারুক। হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘কী আশ্চর্য, তাই না ফারুক!’ জবাবে ফারুক বললেন, ‘কী আশ্চর্য ভাই?’ হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘এই যে প্রকৃতি, জোছনা, বৃষ্টি, নদী— কী সুন্দর! একদিন হয়তো আমি এসব আর দেখতে পারব না। একুশের বইমেলা হবে। লোকেদের ভিড়, আড্ডা; আমি সেখানে থাকব না। এটা কি মেনে নেওয়া যায়! হায় রে জীবন!’
‘আমার না বলা কথা’ বইয়ে ফারুক আহমেদ এই স্মৃতিচারণ করেছেন। লিখেছেন, ‘আমি কিছু না বলে মূর্তির মতো বসে রইলাম। একসময় তাকিয়ে দেখলাম, হুমায়ূন ভাইয়ের দুচোখের কোনায় পানি।’
হুমায়ূন আহমেদ নেই। তবে তিনি রয়েছেন দেশের তরুণদের মনে। যে বইমেলায় তিনি থাকবেন না বলে আক্ষেপ, সেই বইমেলায় তাঁর বইয়ের স্টলে তরুণদের ঢলের মধ্যে আছেন।
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে হুমায়ূন আহমেদের জন্ম এই দিনে (১৩ নভেম্বর); ভারত ভাগের এক বছর পরে ১৯৪৮ সালে। ছোট সময়ে তাঁর নাম ছিল শামসুর রহমান। তাঁর বাবা ছেলেমেয়েদের নাম পাল্টে ফেলতেন। তাঁর নাম পাল্টে রাখেন হুমায়ূন আহমেদ। হিমু, মিসির আলি, শুভ্রর মতো চরিত্রের স্রষ্টা তিনি। শুধু কথাসাহিত্যেই নয়; ‘বহুব্রীহি’, ‘অয়োময়’, ‘কোথাও কেউ নেই’,
‘আজ রবিবার’-এর মতো নাটক বানিয়েছেন, তৈরি করেছেন ‘আগুনের পরশমণি’, ‘শ্যামল ছায়া’র মতো চলচ্চিত্র।
হুমায়ূন আহমেদ বৃষ্টি, জোছনা ভালোবাসতেন। তাঁর লেখায় সেসব উঠে এসেছে বারবার। ২০১২ সালের জুলাইয়ে বর্ষাতেই তিনি পাড়ি জমিয়েছিলেন ওপারে।
তিনি নেই। কিন্তু তাঁর লেখায় উঠে আসা চান্নিপসর, বৃষ্টি বিলাস আজও আছে তরুণদের মনে। ফারুক আহমেদ তাঁর ওই বইয়ে হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে আরেকটি স্মৃতিচারণ করেছিলেন এভাবে—‘এক বিকেলে শুটিং শেষে তাঁর প্রিয় লিচুগাছের দিকে তাকিয়ে আছেন হুমায়ূন। সেখানে ঝুলছে পাকা লিচু। তিনি তাঁর কেয়ারটেকার মুশাররফকে ডেকে গ্রামের ছোট ছেলেমেয়েদের ডেকে নিয়ে এলেন। তাদের বললেন, গাছে উঠে যে যত পারে লিচু খেতে। বাচ্চারা কেউ গাছে উঠে লিচু খাচ্ছে, হইচই করছে। কেউ পকেটে ভরছে। হুমায়ূন আহমেদ অবাক হয়ে সেই লিচু খাওয়া দেখতে লাগলেন।’
ফারুক আহমেদ লিখেছেন, ‘হুমায়ূন ভাই একসময় আমাকে বললেন, এমন সুন্দর দৃশ্য তুমি কখনো দেখেছো? এমন ভালো লাগার অনুভূতি কি অন্য কোনোভাবে পাওয়া যায়? আমি কী বলব বুঝতে পারছিলাম না। হঠাৎ বললাম, না ভাই এমন ভালো লাগার অনুভূতি কোনোভাবেই পাওয়া যায় না।’
হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন ঘিরে রাজধানীসহ জন্মস্থান নেত্রকোনাতে রয়েছে নানা আয়োজন। নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ি ইউনিয়নের কুতুবপুরে হুমায়ূন আহমেদ প্রতিষ্ঠিত শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ এবং এলাকাবাসীর উদ্যোগে এসব কর্মসূচি পালন করা হবে। সকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোরআন খতম করবেন। এরপর শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ প্রাঙ্গণ থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, এলাকাবাসী এবং হুমায়ূনভক্তদের আনন্দ শোভাযাত্রা বের হবে। পরে লেখকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, জন্মদিনের কেক কাটা, বৃক্ষরোপণ, কুইজ, হুমায়ূন আহমেদের রচিত নাটক ও সিনেমার অংশবিশেষ নিয়ে অভিনয়, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, পুরস্কার বিতরণ এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া রাজধানীতে হুমায়ূন আহমেদের চলচ্চিত্র নিয়ে চলচ্চিত্র সপ্তাহ, হুমায়ূন প্রতিযোগিতা, হুমায়ূন জন্মোৎসব, টেলিভিশন চ্যানেলে নাটক ও অনুষ্ঠান প্রচারসহ নানা আয়োজনে মুখর থাকছে দিনটি।

হুমায়ূন আহমেদ তখন ক্যানসার আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রে কেমোথেরাপি নিচ্ছেন। হঠাৎ চিকিৎসকের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে চলে এলেন নুহাশপল্লীতে। নাটক বানাবেন। অভিনেতা ফারুক আহমেদকে ডাকলেন। নুহাশপল্লীতে নাটকের শুটিংয়ের ফাঁকে গল্প করছিলেন হুমায়ূন ও ফারুক। হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘কী আশ্চর্য, তাই না ফারুক!’ জবাবে ফারুক বললেন, ‘কী আশ্চর্য ভাই?’ হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘এই যে প্রকৃতি, জোছনা, বৃষ্টি, নদী— কী সুন্দর! একদিন হয়তো আমি এসব আর দেখতে পারব না। একুশের বইমেলা হবে। লোকেদের ভিড়, আড্ডা; আমি সেখানে থাকব না। এটা কি মেনে নেওয়া যায়! হায় রে জীবন!’
‘আমার না বলা কথা’ বইয়ে ফারুক আহমেদ এই স্মৃতিচারণ করেছেন। লিখেছেন, ‘আমি কিছু না বলে মূর্তির মতো বসে রইলাম। একসময় তাকিয়ে দেখলাম, হুমায়ূন ভাইয়ের দুচোখের কোনায় পানি।’
হুমায়ূন আহমেদ নেই। তবে তিনি রয়েছেন দেশের তরুণদের মনে। যে বইমেলায় তিনি থাকবেন না বলে আক্ষেপ, সেই বইমেলায় তাঁর বইয়ের স্টলে তরুণদের ঢলের মধ্যে আছেন।
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে হুমায়ূন আহমেদের জন্ম এই দিনে (১৩ নভেম্বর); ভারত ভাগের এক বছর পরে ১৯৪৮ সালে। ছোট সময়ে তাঁর নাম ছিল শামসুর রহমান। তাঁর বাবা ছেলেমেয়েদের নাম পাল্টে ফেলতেন। তাঁর নাম পাল্টে রাখেন হুমায়ূন আহমেদ। হিমু, মিসির আলি, শুভ্রর মতো চরিত্রের স্রষ্টা তিনি। শুধু কথাসাহিত্যেই নয়; ‘বহুব্রীহি’, ‘অয়োময়’, ‘কোথাও কেউ নেই’,
‘আজ রবিবার’-এর মতো নাটক বানিয়েছেন, তৈরি করেছেন ‘আগুনের পরশমণি’, ‘শ্যামল ছায়া’র মতো চলচ্চিত্র।
হুমায়ূন আহমেদ বৃষ্টি, জোছনা ভালোবাসতেন। তাঁর লেখায় সেসব উঠে এসেছে বারবার। ২০১২ সালের জুলাইয়ে বর্ষাতেই তিনি পাড়ি জমিয়েছিলেন ওপারে।
তিনি নেই। কিন্তু তাঁর লেখায় উঠে আসা চান্নিপসর, বৃষ্টি বিলাস আজও আছে তরুণদের মনে। ফারুক আহমেদ তাঁর ওই বইয়ে হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে আরেকটি স্মৃতিচারণ করেছিলেন এভাবে—‘এক বিকেলে শুটিং শেষে তাঁর প্রিয় লিচুগাছের দিকে তাকিয়ে আছেন হুমায়ূন। সেখানে ঝুলছে পাকা লিচু। তিনি তাঁর কেয়ারটেকার মুশাররফকে ডেকে গ্রামের ছোট ছেলেমেয়েদের ডেকে নিয়ে এলেন। তাদের বললেন, গাছে উঠে যে যত পারে লিচু খেতে। বাচ্চারা কেউ গাছে উঠে লিচু খাচ্ছে, হইচই করছে। কেউ পকেটে ভরছে। হুমায়ূন আহমেদ অবাক হয়ে সেই লিচু খাওয়া দেখতে লাগলেন।’
ফারুক আহমেদ লিখেছেন, ‘হুমায়ূন ভাই একসময় আমাকে বললেন, এমন সুন্দর দৃশ্য তুমি কখনো দেখেছো? এমন ভালো লাগার অনুভূতি কি অন্য কোনোভাবে পাওয়া যায়? আমি কী বলব বুঝতে পারছিলাম না। হঠাৎ বললাম, না ভাই এমন ভালো লাগার অনুভূতি কোনোভাবেই পাওয়া যায় না।’
হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন ঘিরে রাজধানীসহ জন্মস্থান নেত্রকোনাতে রয়েছে নানা আয়োজন। নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ি ইউনিয়নের কুতুবপুরে হুমায়ূন আহমেদ প্রতিষ্ঠিত শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ এবং এলাকাবাসীর উদ্যোগে এসব কর্মসূচি পালন করা হবে। সকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোরআন খতম করবেন। এরপর শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ প্রাঙ্গণ থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, এলাকাবাসী এবং হুমায়ূনভক্তদের আনন্দ শোভাযাত্রা বের হবে। পরে লেখকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, জন্মদিনের কেক কাটা, বৃক্ষরোপণ, কুইজ, হুমায়ূন আহমেদের রচিত নাটক ও সিনেমার অংশবিশেষ নিয়ে অভিনয়, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, পুরস্কার বিতরণ এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া রাজধানীতে হুমায়ূন আহমেদের চলচ্চিত্র নিয়ে চলচ্চিত্র সপ্তাহ, হুমায়ূন প্রতিযোগিতা, হুমায়ূন জন্মোৎসব, টেলিভিশন চ্যানেলে নাটক ও অনুষ্ঠান প্রচারসহ নানা আয়োজনে মুখর থাকছে দিনটি।

নিদানের কালে পূর্বসূরিদের পদাঙ্ক তালাশ করতে হয়, তাতে কখনো কখনো সঠিক পথের দিশা পাওয়া যায়। কিন্তু আমরা এমনই এক নিদানকালের নাদান বাচ্চা যে, কত অনায়াসে প্রিয় পূর্বসূরিদের দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে রেখেছি। একজন আবুল মনসুর আহমদ, আমাদের সেরকমই এক প্রিয় পূর্বসুরি, যাঁকে আমরা স্রেফ বিসিএস পরীক্ষার্থীদের ঠোঁটের আগা
১৮ মার্চ ২০২৩
আলসেমি শরীরে এদিক-ওদিক চেয়ে আটকে গেল চোখ পশ্চিমান্তে। রক্তিম সূর্যের বিদায় ধীর গতিতে। খুব লাল হয়েছে, সারা দিনের জ্বলন্ত প্রহরে পেয়েছে এক অপূর্ব রূপ।
১২ দিন আগে
প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
০৮ নভেম্বর ২০২৫
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
২০ অক্টোবর ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
মঞ্চনাট্যটি স্কলাস্টিকার প্রতিষ্ঠাতা ইয়াসমিন মুরশেদকে উৎসর্গ করা হয়।

স্কুলের এসটিএম মিলনায়তন প্রতিষ্ঠার রজতজয়ন্তী উদ্যাপনকে সামনে রেখে আয়োজিত এ নাট্যানুষ্ঠানের সমাপনী দিনে বিশেষ অতিথি ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব আবুল হায়াত, দিলারা জামান ও আফজাল হোসেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার অধ্যক্ষ ফারাহ্ সোফিয়া আহমেদ।
হীরক রাজার দেশে নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন। প্রোডাকশন ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন শৈলী পারমিতা নীলপদ্ম। সংগীত পরিচালনা করেন গাজী মুন্নোফ, ইলিয়াস খান ও পলাশ নাথ লোচন। নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন শাম্মী ইয়াসমিন ঝিনুক ও ফরহাদ আহমেদ শামিম।
নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন নাজিফা ওয়াযিহা আহমেদ, আরিয়াদ রহমান, আজিয়াদ রহমান, বাজনীন রহমান, মোহম্মদ সফির চৌধুরী, ফাহিম আহম্মেদ, সৈয়দ কাফশাত তাইয়ুশ হামদ ও তাজরীবা নওফাত প্রমুখ।
শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকেরা অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পরিবেশিত অভিনয়, গান ও নাচ উপভোগ করেন।

প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
মঞ্চনাট্যটি স্কলাস্টিকার প্রতিষ্ঠাতা ইয়াসমিন মুরশেদকে উৎসর্গ করা হয়।

স্কুলের এসটিএম মিলনায়তন প্রতিষ্ঠার রজতজয়ন্তী উদ্যাপনকে সামনে রেখে আয়োজিত এ নাট্যানুষ্ঠানের সমাপনী দিনে বিশেষ অতিথি ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব আবুল হায়াত, দিলারা জামান ও আফজাল হোসেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার অধ্যক্ষ ফারাহ্ সোফিয়া আহমেদ।
হীরক রাজার দেশে নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন। প্রোডাকশন ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন শৈলী পারমিতা নীলপদ্ম। সংগীত পরিচালনা করেন গাজী মুন্নোফ, ইলিয়াস খান ও পলাশ নাথ লোচন। নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন শাম্মী ইয়াসমিন ঝিনুক ও ফরহাদ আহমেদ শামিম।
নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন নাজিফা ওয়াযিহা আহমেদ, আরিয়াদ রহমান, আজিয়াদ রহমান, বাজনীন রহমান, মোহম্মদ সফির চৌধুরী, ফাহিম আহম্মেদ, সৈয়দ কাফশাত তাইয়ুশ হামদ ও তাজরীবা নওফাত প্রমুখ।
শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকেরা অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পরিবেশিত অভিনয়, গান ও নাচ উপভোগ করেন।

নিদানের কালে পূর্বসূরিদের পদাঙ্ক তালাশ করতে হয়, তাতে কখনো কখনো সঠিক পথের দিশা পাওয়া যায়। কিন্তু আমরা এমনই এক নিদানকালের নাদান বাচ্চা যে, কত অনায়াসে প্রিয় পূর্বসূরিদের দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে রেখেছি। একজন আবুল মনসুর আহমদ, আমাদের সেরকমই এক প্রিয় পূর্বসুরি, যাঁকে আমরা স্রেফ বিসিএস পরীক্ষার্থীদের ঠোঁটের আগা
১৮ মার্চ ২০২৩
আলসেমি শরীরে এদিক-ওদিক চেয়ে আটকে গেল চোখ পশ্চিমান্তে। রক্তিম সূর্যের বিদায় ধীর গতিতে। খুব লাল হয়েছে, সারা দিনের জ্বলন্ত প্রহরে পেয়েছে এক অপূর্ব রূপ।
১২ দিন আগে
হুমায়ূন আহমেদ তখন ক্যানসার আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রে কেমোথেরাপি নিচ্ছেন। হঠাৎ চিকিৎসকের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে চলে এলেন নুহাশপল্লীতে। নাটক বানাবেন। অভিনেতা ফারুক আহমেদকে ডাকলেন। নুহাশপল্লীতে নাটকের শুটিংয়ের ফাঁকে গল্প করছিলেন হুমায়ূন ও ফারুক। হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘কী আশ্চর্য, তাই না ফারুক!’
২২ দিন আগে
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
২০ অক্টোবর ২০২৫আজকের পত্রিকা ডেস্ক

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।
কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’
গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।
ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’
মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’
মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।
কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’
গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।
ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’
মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’
মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

নিদানের কালে পূর্বসূরিদের পদাঙ্ক তালাশ করতে হয়, তাতে কখনো কখনো সঠিক পথের দিশা পাওয়া যায়। কিন্তু আমরা এমনই এক নিদানকালের নাদান বাচ্চা যে, কত অনায়াসে প্রিয় পূর্বসূরিদের দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে রেখেছি। একজন আবুল মনসুর আহমদ, আমাদের সেরকমই এক প্রিয় পূর্বসুরি, যাঁকে আমরা স্রেফ বিসিএস পরীক্ষার্থীদের ঠোঁটের আগা
১৮ মার্চ ২০২৩
আলসেমি শরীরে এদিক-ওদিক চেয়ে আটকে গেল চোখ পশ্চিমান্তে। রক্তিম সূর্যের বিদায় ধীর গতিতে। খুব লাল হয়েছে, সারা দিনের জ্বলন্ত প্রহরে পেয়েছে এক অপূর্ব রূপ।
১২ দিন আগে
হুমায়ূন আহমেদ তখন ক্যানসার আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রে কেমোথেরাপি নিচ্ছেন। হঠাৎ চিকিৎসকের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে চলে এলেন নুহাশপল্লীতে। নাটক বানাবেন। অভিনেতা ফারুক আহমেদকে ডাকলেন। নুহাশপল্লীতে নাটকের শুটিংয়ের ফাঁকে গল্প করছিলেন হুমায়ূন ও ফারুক। হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘কী আশ্চর্য, তাই না ফারুক!’
২২ দিন আগে
প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
০৮ নভেম্বর ২০২৫