দ্য ওয়্যারের নিবন্ধ
বাংলাদেশে পরিবর্তনশীল পরিস্থিতি ইঙ্গিত দেয়, নয়াদিল্লির জন্য ক্ষমতার সঙ্গে নীতির ভারসাম্য রক্ষা করা এবং দক্ষিণ এশিয়ায় তার গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব পুনরুদ্ধার অত্যন্ত জরুরি।

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত জুলাইয়ে চীন সফরে যান। এক সপ্তাহের জন্য নির্ধারিত থাকলেও তিনি সফর সংক্ষিপ্ত করে ১০ জুলাই হঠাৎ ঢাকায় ফেরেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চীনে এটি তাঁর পঞ্চম রাষ্ট্রীয় সফর ছিল। যেখানে আন্তর্জাতিক চাপের মুখেও চীন বারবার হাসিনাকে আর্থিক ও রাজনৈতিকভাবে সমর্থন জুগিয়েছে।
তবে যাঁরা শেখ হাসিনার প্রতিটি সফরে ‘সুনামের’ ভারী ব্যাগ নিয়ে ফেরার দৃশ্য দেখে অভ্যস্ত—তাঁদের কাছে এই সফরের ফল ছিল হতাশাজনক। দেশের ক্রমেই জটিল হতে থাকা রিজার্ভ-সংকট কাটানোর জন্য শেখ হাসিনা চীন সফরে ৫ বিলিয়ন ডলার পাওয়ার প্রত্যাশা করলেও মাত্র ১৩৭ মিলিয়ন ডলারের ছোট প্রতিশ্রুতি নিয়েই তাঁকে ফিরতে হয়।
এ ছাড়া এই সফরে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ স্থায়ী হয় মাত্র ৩০ মিনিট। এমনকি চীন সফরকারী বিভিন্ন রাষ্ট্রের নেতাদের জন্য যে প্রটোকল দেওয়া হয়, সেটি থেকেও বঞ্চিত হন শেখ হাসিনা। চীনের অসন্তোষ স্পষ্ট হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে শেখ হাসিনার সুচারুভাবে নির্মিত তাসের ঘরের ভিত নড়ে ওঠে! এর ঠিক এক মাসের কম সময় পর ৫ আগস্ট তাঁর সেই তাসের ঘর ভেঙে পড়ে।
এরপর, শেখ হাসিনা, যিনি নিজে তাঁর বাহিনীর হাতে হাজার হাজার প্রতিবাদকারীকে হতাহত করার ঘটনা তদারক করেছেন—ভারতে চলে যান। বিষয়টি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তথা দক্ষিণ ব্লককে গভীরভাবে নাড়া দেয়।
অনেক দূরদর্শী বিশ্লেষকের মতে, এই মুহূর্ত দীর্ঘদিন আগেই অনুমেয় ছিল। ভারত দশকের পর দশক ধরে বাংলাদেশে ‘হাই–রিস্ক গেম’ বা উচ্চ-ঝুঁকির খেলা খেলেছে—যেকোনো মূল্যে কেবল শেখ হাসিনাকেই সমর্থন করার মধ্য দিয়ে। এই কৌশল গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পুনরুদ্ধারের আশায় থাকা অন্য সব রাজনৈতিক দল এবং কোটি কোটি বাংলাদেশি নাগরিকের কাছ থেকে ভারতকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
প্রাথমিকভাবে, ভারতের এই ‘সংকীর্ণ’ অবস্থানকে যথার্থ মনে হয়েছিল। কারণ, শেখ হাসিনা ভারতের সবচেয়ে শক্তিশালী কৌশলগত মিত্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। তিনি কার্যকরভাবে চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোকে নিষ্ক্রিয় করেছেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সন্ত্রাস দমনের উদ্বেগ নিরসনে সহায়তা করেন এবং দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের এক নজিরবিহীন ঘনিষ্ঠতার সূচনা করেন।
এই চাকচিক্যের বাইরে ভারতের অবিচল সমর্থন শেখ হাসিনাকে নিজ দেশের জনগণের বিরুদ্ধে ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন, ভোট কারচুপি ও তিনটি বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচন আয়োজন এবং সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংসের সুযোগ করে দিয়েছিল। এর ফলে সৃষ্টি হয় এক অত্যন্ত অজনপ্রিয়, অলিগার্কি শাসনব্যবস্থা, যা ক্ষমতায় টিকে থাকতে নজিরবিহীন মাত্রার দুর্নীতি ও নিপীড়নের পথ বেছে নেয়।
যদিও রাশিয়া ও চীন হাসিনার সমর্থক ছিল, তবে বাংলাদেশিরা ভারত সরকারকে সবচেয়ে বেশি দায়ী মনে করে। অন্যদের তুলনায় ভারতকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সবচেয়ে সক্রিয় হস্তক্ষেপকারী এবং শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনের নির্লজ্জ রক্ষাকর্তা হিসেবে দেখা হয়।
এর চেয়েও খারাপ বিষয় হলো, ভারতকে এক নব্য উপনিবেশবাদী শক্তি হিসেবে দেখা হয়; যারা বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণের চেয়ে দেশটিকে শোষণে বেশি আগ্রহী। ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে হাসিনা সরকারের সম্পাদিত একটি অসম বিদ্যুৎ চুক্তি, ফলে বাংলাদেশকে তিন গুণ বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনতে বাধ্য করা হয় এবং আদানি নজিরবিহীন মুনাফা অর্জন করে—তেমনই অসংখ্য উদাহরণের মধ্যে মাত্র একটি।
সাধারণ বাংলাদেশিদের কাছে বিষয়টি ছিল পরিষ্কার—ভারত শেখ হাসিনার ক্ষমতার মসনদ রক্ষা করবে, আর শেখ হাসিনা ভারতের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেবেন। এমনকি বাংলাদেশের জনগণের করের টাকায় ভারতের বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের অন্যায়ভাবে লাভবান করার মাধ্যমে হলেও। ফল কী হয়েছে? বাংলাদেশে এখন ভারতবিরোধী মনোভাব তুঙ্গে এবং ভারতের জন্য ১৮ কোটি মানুষের একটি দেশের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশের জুলাই বিপ্লবের ঘটনাবলি ভারত সরকারের জন্য একটি অত্যন্ত দরকারি সতর্কসংকেত হিসেবে কাজ করবে বলে অনুমান করা হয়েছিল। এটি ভারতের জন্য একটি সুযোগ এনে দিয়েছিল, তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পুনর্মূল্যায়ন করার এবং বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে নিজেদের অবস্থান সামঞ্জস্যপূর্ণ করার। কিন্তু ৫ আগস্ট থেকে ভারতের কর্মকাণ্ডকে বিপ্লবের চেতনাকে অপমান করার মতো বলেই দেখা হচ্ছে। সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডে হাসিনার জড়িত থাকার সুস্পষ্ট প্রমাণ এবং তাঁকে জবাবদিহির আওতায় আনার ব্যাপারে জনগণের ব্যাপক দাবির পরও ভারত তাঁকে আশ্রয় দেওয়ার পথ বেছে নিয়েছে।
এই সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনাকে জনসমক্ষে বিকৃত ও উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে অস্থিরতা সৃষ্টি করার সুযোগ দিয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভারতীয় মূলধারার গণমাধ্যমের প্রচারিত সমন্বিত প্রোপাগান্ডা, যা ভারতের রাষ্ট্রীয় নজরদারির অধীনে চলতে দেওয়া হয়েছে। এসব প্রচারণায় বাংলাদেশের হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর তথাকথিত সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অতিরঞ্জিত ও ভ্রান্ত বিবরণ দেওয়া হয়েছে এবং হচ্ছে। এই বিবরণগুলো সরকারিভাবে এবং শাসক দলের নেতাদের উসকানিমূলক মন্তব্যে প্রতিধ্বনিত হয়েছে।
এদিকে, এই অতিরঞ্জিত দাবির ওপর ভারতের মনোযোগ এবং হাসিনা সরকারের জুলাই মাসে ও তার আগে সংঘটিত রক্তপাত নিয়ে ভারতের নীরবতা—এই দ্বিচারিতা সাধারণ বাংলাদেশিদের চোখ এড়ায়নি। তারা এটিকে তাদের ন্যায়বিচার এবং গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামের প্রতি একধরনের বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবেই দেখছে। যেমন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে হিন্দু জনগোষ্ঠীর ওপর তথাকথিত ‘গণহত্যা’ বা শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে দেশের ‘তালেবানি’ হওয়ার দাবি—এ ধরনের মিথ্যা বর্ণনা প্রচার এবং শেখ হাসিনার উসকানিমূলক রাজনীতির প্রতি ভারতের প্রকাশ্য সমর্থন—একটি সুস্পষ্ট ষড়যন্ত্রের সন্দেহ জাগিয়েছে।
অনেকে বিশ্বাস করেন, ভারত সরকার বাংলাদেশের সংস্কার ও গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষাকে নস্যাৎ করার জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছে এবং তাদের পছন্দের নেত্রীকে পুনঃস্থাপন করতে চাইছে। এই ধরনের ধারণাগুলো কেবল দীর্ঘস্থায়ী কূটনৈতিক সম্পর্কের জন্যই নয়, বরং উভয় দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার জন্যও গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করছে। সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পুনরুত্থান সম্ভব এবং এর উদাহরণ হিসেবে ত্রিপুরায় হিন্দু সংঘর্ষ সমিতির (আরএসএস) সম্পৃক্ত নতুন গঠিত একটি সংগঠন—বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনে সাম্প্রতিক হামলা ঘটনার উল্লেখ করা যেতে পারে।
এই হামলার পর ভারত সরকারের দ্রুত দুঃখপ্রকাশ, শাস্তিমূলক ব্যবস্থা এবং ঢাকায় ‘সমস্যা সমাধানে গঠনমূলক পন্থা’ নিয়ে আলোচনার জন্য উচ্চপর্যায়ের বৈঠক আয়োজন প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। তবে একটি সত্যিকারের শক্তিশালী ও পারস্পরিক লাভের সম্পর্ক গড়ে তুলতে ভারতের নেতাদের রক্তে দাগ লাগা ‘হাসিনা লেন্স’ থেকে বের হয়ে খোলা চোখে দেখতে হবে। এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তাদের বুঝতে হবে যে একটি অস্থিতিশীল বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত একটি অস্থিতিশীল ভারতই ডেকে আনবে। অন্তর্বর্তী সরকারের সফলতাকে সমর্থন করা ভারতের দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, আর তাদের বিরুদ্ধে শত্রুভাবাপন্ন প্রচারণা চালিয়ে যাওয়া ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান ক্ষোভের জন্ম দেবে; যা ভারত কখনোই সামলাতে পারবে না।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার প্রতি ভারতের উদাসীনতার এবং কিছুটা বৈরিতার ফলে ভারতীয় পররাষ্ট্রনীতিতে ধীরে ধীরে কিন্তু গভীর পরিবর্তন ঘটেছে। এই পরিবর্তনের মধ্য থেকে যে কিছু প্রধান বিষয় উঠে এসেছে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো—ভারতীয় কূটনীতির গেরুয়াকরণ। এ ছাড়া বহুপক্ষীয় অবস্থানের কারণে বর্তমান ভারতীয় নীতিনির্ধারকেরা বৈশ্বিক সম্পর্ককে ক্রমশ বেশি করে ‘লেনদেনের বাজার’ হিসেবে দেখছেন, যেখানে নিজস্ব স্বার্থের নগ্ন অনুসরণে নৈতিকতার কোনো ভান ধরার প্রয়োজন নেই।
মূলত, ভারত এখন সম্পূর্ণরূপে বাস্তববাদী (রিয়েলপলিটিক) পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করেছে এবং পুরোনো নেহরুবাদী ও গান্ধীবাদী শান্তিবাদ এবং ‘নৈতিক নীতি’ পরিত্যাগ করেছে। তাই ভারত আর বিশ্বে ‘ভারতীয় ব্র্যান্ডের নৈতিক নেতৃত্ব’ দেওয়ার প্রতি আগ্রহী নয়।
একটি বহুমুখী এবং অস্থির বিশ্বে—যেখানে ক্ষমতার মানদণ্ড ও মাত্রাগুলো দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে—একটি সম্পূর্ণ বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি অযৌক্তিক নয়। এ ছাড়া অতীতে ভারতের শান্তিবাদের প্রচারণা প্রায়শই অগ্রাহ্য হয়েছে। তবে ভারতীয় নীতিনির্ধারকেরা যে ভুল করছেন, তা হলো—‘হার্ড পাওয়ার’ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ‘সফট পাওয়ারের’ প্রয়োজনীয় ভিত্তি ছাড়া স্থায়ী সাফল্য অর্জন করতে পারে না।
শেখ হাসিনা যদি ক্ষমতা থেকে সরে যান, তবে বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতা অন্যদের জন্য উন্মুক্ত হয়ে যাবে, আর দিল্লি পিছিয়ে পড়বে। নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ এবং এখন বাংলাদেশে ভারতের আঞ্চলিক প্রভাবের পতন এরই ইঙ্গিত দেয়। যেহেতু এই ক্রমবর্ধমান মেরুকৃত ও অনিশ্চিত বিশ্বে প্রতিবেশী দেশগুলোর জনগণ আর দিল্লিকে একটি নির্ভরযোগ্য পথপ্রদর্শক হিসেবে দেখছে না। এই বিষয় ভারতের বাস্তববাদী ‘প্রতিবেশী প্রথম’—নীতির ফল এবং এটি মোটেও অপ্রত্যাশিত নয়।
তবে এটি এমন হওয়ার প্রয়োজন খুব একটা ছিল না। নেহরুবাদী ‘নৈতিক নীতির’ আঞ্চলিক সাফল্যের দৃষ্টান্তও আছে। নথিপত্রে দেখা যায়, ভারত ঐতিহাসিকভাবে এমন একটি পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করেছে, যা অন্তর্ভুক্তিমূলক ও প্রতিনিধিত্বশীল গণতন্ত্রের গুণাবলিকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এই দৃষ্টিভঙ্গি—যা ভারতের উদার গণতান্ত্রিক পরিচয়ে নিহিত—অতীতে আঞ্চলিক সংকটের প্রতি ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি এবং সেগুলো সমাধানের প্রচেষ্টাকে রূপ দিয়েছিল। এর একটি উদাহরণ হলো—২০ বছর আগে নেপালের গণ-আন্দোলনের সময় যখন ভারত বহুত্ববাদকে একমাত্র টেকসই কৌশল হিসেবে সমর্থন করেছিল। স্বল্পমেয়াদি লাভের জন্য স্বৈরতন্ত্রকে সমর্থন করার প্রলোভনকে বাদ দিয়ে ভারত তার প্রভাব কাজে লাগিয়ে নেপালে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেছিল এবং এর মাধ্যমে নেপালিদের আস্থা অর্জন করেছিল।
প্রতিবেশী দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা ভারতবিরোধী বা ‘অন্যদের’ প্রতি অনুগত সরকার গঠনের স্বল্পমেয়াদি ঝুঁকি ভারতীয় নেতৃত্ব বুঝতে পারেন। তবে বিপরীতে, স্বল্প মেয়াদে যতই লাভজনক বা ‘ভারতপন্থী’ হোক না কেন, স্বৈরাচারী বা অসহিষ্ণু সরকারগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ ও অস্থিতিশীলতার শিকার হয়, যা দীর্ঘ মেয়াদে ভারতীয় স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর। বাংলাদেশের পরিস্থিতি, যা আরও গভীরভাবে বিকশিত হচ্ছে, এর একটি স্পষ্ট উদাহরণ।
লেখক:
ক্রিস্তোফ জাফ্রেলো সেরি: ‘সায়েন্স পো’–এর গবেষণা পরিচালক, কিংস কলেজ লন্ডনের রাজনীতি ও সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক এবং ‘কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস’-এর নন-রেসিডেন্ট ফেলো।
মানুচেহের শাফি: বাংলাদেশি রাজনৈতিক বিশ্লেষক। যিনি দক্ষিণ এশিয়ায় একটি জবাবদিহিমূলক, গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক পরিবেশ গড়ে তুলতে গভীরভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি আগে জাতিসংঘে কাজ করেছেন এবং প্যারিসের সায়েন্স পোর প্রাক্তন শিক্ষার্থী।
অনুবাদ: আব্দুর রহমান

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত জুলাইয়ে চীন সফরে যান। এক সপ্তাহের জন্য নির্ধারিত থাকলেও তিনি সফর সংক্ষিপ্ত করে ১০ জুলাই হঠাৎ ঢাকায় ফেরেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চীনে এটি তাঁর পঞ্চম রাষ্ট্রীয় সফর ছিল। যেখানে আন্তর্জাতিক চাপের মুখেও চীন বারবার হাসিনাকে আর্থিক ও রাজনৈতিকভাবে সমর্থন জুগিয়েছে।
তবে যাঁরা শেখ হাসিনার প্রতিটি সফরে ‘সুনামের’ ভারী ব্যাগ নিয়ে ফেরার দৃশ্য দেখে অভ্যস্ত—তাঁদের কাছে এই সফরের ফল ছিল হতাশাজনক। দেশের ক্রমেই জটিল হতে থাকা রিজার্ভ-সংকট কাটানোর জন্য শেখ হাসিনা চীন সফরে ৫ বিলিয়ন ডলার পাওয়ার প্রত্যাশা করলেও মাত্র ১৩৭ মিলিয়ন ডলারের ছোট প্রতিশ্রুতি নিয়েই তাঁকে ফিরতে হয়।
এ ছাড়া এই সফরে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ স্থায়ী হয় মাত্র ৩০ মিনিট। এমনকি চীন সফরকারী বিভিন্ন রাষ্ট্রের নেতাদের জন্য যে প্রটোকল দেওয়া হয়, সেটি থেকেও বঞ্চিত হন শেখ হাসিনা। চীনের অসন্তোষ স্পষ্ট হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে শেখ হাসিনার সুচারুভাবে নির্মিত তাসের ঘরের ভিত নড়ে ওঠে! এর ঠিক এক মাসের কম সময় পর ৫ আগস্ট তাঁর সেই তাসের ঘর ভেঙে পড়ে।
এরপর, শেখ হাসিনা, যিনি নিজে তাঁর বাহিনীর হাতে হাজার হাজার প্রতিবাদকারীকে হতাহত করার ঘটনা তদারক করেছেন—ভারতে চলে যান। বিষয়টি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তথা দক্ষিণ ব্লককে গভীরভাবে নাড়া দেয়।
অনেক দূরদর্শী বিশ্লেষকের মতে, এই মুহূর্ত দীর্ঘদিন আগেই অনুমেয় ছিল। ভারত দশকের পর দশক ধরে বাংলাদেশে ‘হাই–রিস্ক গেম’ বা উচ্চ-ঝুঁকির খেলা খেলেছে—যেকোনো মূল্যে কেবল শেখ হাসিনাকেই সমর্থন করার মধ্য দিয়ে। এই কৌশল গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পুনরুদ্ধারের আশায় থাকা অন্য সব রাজনৈতিক দল এবং কোটি কোটি বাংলাদেশি নাগরিকের কাছ থেকে ভারতকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
প্রাথমিকভাবে, ভারতের এই ‘সংকীর্ণ’ অবস্থানকে যথার্থ মনে হয়েছিল। কারণ, শেখ হাসিনা ভারতের সবচেয়ে শক্তিশালী কৌশলগত মিত্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। তিনি কার্যকরভাবে চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোকে নিষ্ক্রিয় করেছেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সন্ত্রাস দমনের উদ্বেগ নিরসনে সহায়তা করেন এবং দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের এক নজিরবিহীন ঘনিষ্ঠতার সূচনা করেন।
এই চাকচিক্যের বাইরে ভারতের অবিচল সমর্থন শেখ হাসিনাকে নিজ দেশের জনগণের বিরুদ্ধে ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন, ভোট কারচুপি ও তিনটি বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচন আয়োজন এবং সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংসের সুযোগ করে দিয়েছিল। এর ফলে সৃষ্টি হয় এক অত্যন্ত অজনপ্রিয়, অলিগার্কি শাসনব্যবস্থা, যা ক্ষমতায় টিকে থাকতে নজিরবিহীন মাত্রার দুর্নীতি ও নিপীড়নের পথ বেছে নেয়।
যদিও রাশিয়া ও চীন হাসিনার সমর্থক ছিল, তবে বাংলাদেশিরা ভারত সরকারকে সবচেয়ে বেশি দায়ী মনে করে। অন্যদের তুলনায় ভারতকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সবচেয়ে সক্রিয় হস্তক্ষেপকারী এবং শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনের নির্লজ্জ রক্ষাকর্তা হিসেবে দেখা হয়।
এর চেয়েও খারাপ বিষয় হলো, ভারতকে এক নব্য উপনিবেশবাদী শক্তি হিসেবে দেখা হয়; যারা বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণের চেয়ে দেশটিকে শোষণে বেশি আগ্রহী। ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে হাসিনা সরকারের সম্পাদিত একটি অসম বিদ্যুৎ চুক্তি, ফলে বাংলাদেশকে তিন গুণ বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনতে বাধ্য করা হয় এবং আদানি নজিরবিহীন মুনাফা অর্জন করে—তেমনই অসংখ্য উদাহরণের মধ্যে মাত্র একটি।
সাধারণ বাংলাদেশিদের কাছে বিষয়টি ছিল পরিষ্কার—ভারত শেখ হাসিনার ক্ষমতার মসনদ রক্ষা করবে, আর শেখ হাসিনা ভারতের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেবেন। এমনকি বাংলাদেশের জনগণের করের টাকায় ভারতের বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের অন্যায়ভাবে লাভবান করার মাধ্যমে হলেও। ফল কী হয়েছে? বাংলাদেশে এখন ভারতবিরোধী মনোভাব তুঙ্গে এবং ভারতের জন্য ১৮ কোটি মানুষের একটি দেশের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশের জুলাই বিপ্লবের ঘটনাবলি ভারত সরকারের জন্য একটি অত্যন্ত দরকারি সতর্কসংকেত হিসেবে কাজ করবে বলে অনুমান করা হয়েছিল। এটি ভারতের জন্য একটি সুযোগ এনে দিয়েছিল, তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পুনর্মূল্যায়ন করার এবং বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে নিজেদের অবস্থান সামঞ্জস্যপূর্ণ করার। কিন্তু ৫ আগস্ট থেকে ভারতের কর্মকাণ্ডকে বিপ্লবের চেতনাকে অপমান করার মতো বলেই দেখা হচ্ছে। সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডে হাসিনার জড়িত থাকার সুস্পষ্ট প্রমাণ এবং তাঁকে জবাবদিহির আওতায় আনার ব্যাপারে জনগণের ব্যাপক দাবির পরও ভারত তাঁকে আশ্রয় দেওয়ার পথ বেছে নিয়েছে।
এই সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনাকে জনসমক্ষে বিকৃত ও উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে অস্থিরতা সৃষ্টি করার সুযোগ দিয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভারতীয় মূলধারার গণমাধ্যমের প্রচারিত সমন্বিত প্রোপাগান্ডা, যা ভারতের রাষ্ট্রীয় নজরদারির অধীনে চলতে দেওয়া হয়েছে। এসব প্রচারণায় বাংলাদেশের হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর তথাকথিত সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অতিরঞ্জিত ও ভ্রান্ত বিবরণ দেওয়া হয়েছে এবং হচ্ছে। এই বিবরণগুলো সরকারিভাবে এবং শাসক দলের নেতাদের উসকানিমূলক মন্তব্যে প্রতিধ্বনিত হয়েছে।
এদিকে, এই অতিরঞ্জিত দাবির ওপর ভারতের মনোযোগ এবং হাসিনা সরকারের জুলাই মাসে ও তার আগে সংঘটিত রক্তপাত নিয়ে ভারতের নীরবতা—এই দ্বিচারিতা সাধারণ বাংলাদেশিদের চোখ এড়ায়নি। তারা এটিকে তাদের ন্যায়বিচার এবং গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামের প্রতি একধরনের বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবেই দেখছে। যেমন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে হিন্দু জনগোষ্ঠীর ওপর তথাকথিত ‘গণহত্যা’ বা শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে দেশের ‘তালেবানি’ হওয়ার দাবি—এ ধরনের মিথ্যা বর্ণনা প্রচার এবং শেখ হাসিনার উসকানিমূলক রাজনীতির প্রতি ভারতের প্রকাশ্য সমর্থন—একটি সুস্পষ্ট ষড়যন্ত্রের সন্দেহ জাগিয়েছে।
অনেকে বিশ্বাস করেন, ভারত সরকার বাংলাদেশের সংস্কার ও গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষাকে নস্যাৎ করার জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছে এবং তাদের পছন্দের নেত্রীকে পুনঃস্থাপন করতে চাইছে। এই ধরনের ধারণাগুলো কেবল দীর্ঘস্থায়ী কূটনৈতিক সম্পর্কের জন্যই নয়, বরং উভয় দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার জন্যও গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করছে। সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পুনরুত্থান সম্ভব এবং এর উদাহরণ হিসেবে ত্রিপুরায় হিন্দু সংঘর্ষ সমিতির (আরএসএস) সম্পৃক্ত নতুন গঠিত একটি সংগঠন—বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনে সাম্প্রতিক হামলা ঘটনার উল্লেখ করা যেতে পারে।
এই হামলার পর ভারত সরকারের দ্রুত দুঃখপ্রকাশ, শাস্তিমূলক ব্যবস্থা এবং ঢাকায় ‘সমস্যা সমাধানে গঠনমূলক পন্থা’ নিয়ে আলোচনার জন্য উচ্চপর্যায়ের বৈঠক আয়োজন প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। তবে একটি সত্যিকারের শক্তিশালী ও পারস্পরিক লাভের সম্পর্ক গড়ে তুলতে ভারতের নেতাদের রক্তে দাগ লাগা ‘হাসিনা লেন্স’ থেকে বের হয়ে খোলা চোখে দেখতে হবে। এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তাদের বুঝতে হবে যে একটি অস্থিতিশীল বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত একটি অস্থিতিশীল ভারতই ডেকে আনবে। অন্তর্বর্তী সরকারের সফলতাকে সমর্থন করা ভারতের দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, আর তাদের বিরুদ্ধে শত্রুভাবাপন্ন প্রচারণা চালিয়ে যাওয়া ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান ক্ষোভের জন্ম দেবে; যা ভারত কখনোই সামলাতে পারবে না।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার প্রতি ভারতের উদাসীনতার এবং কিছুটা বৈরিতার ফলে ভারতীয় পররাষ্ট্রনীতিতে ধীরে ধীরে কিন্তু গভীর পরিবর্তন ঘটেছে। এই পরিবর্তনের মধ্য থেকে যে কিছু প্রধান বিষয় উঠে এসেছে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো—ভারতীয় কূটনীতির গেরুয়াকরণ। এ ছাড়া বহুপক্ষীয় অবস্থানের কারণে বর্তমান ভারতীয় নীতিনির্ধারকেরা বৈশ্বিক সম্পর্ককে ক্রমশ বেশি করে ‘লেনদেনের বাজার’ হিসেবে দেখছেন, যেখানে নিজস্ব স্বার্থের নগ্ন অনুসরণে নৈতিকতার কোনো ভান ধরার প্রয়োজন নেই।
মূলত, ভারত এখন সম্পূর্ণরূপে বাস্তববাদী (রিয়েলপলিটিক) পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করেছে এবং পুরোনো নেহরুবাদী ও গান্ধীবাদী শান্তিবাদ এবং ‘নৈতিক নীতি’ পরিত্যাগ করেছে। তাই ভারত আর বিশ্বে ‘ভারতীয় ব্র্যান্ডের নৈতিক নেতৃত্ব’ দেওয়ার প্রতি আগ্রহী নয়।
একটি বহুমুখী এবং অস্থির বিশ্বে—যেখানে ক্ষমতার মানদণ্ড ও মাত্রাগুলো দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে—একটি সম্পূর্ণ বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি অযৌক্তিক নয়। এ ছাড়া অতীতে ভারতের শান্তিবাদের প্রচারণা প্রায়শই অগ্রাহ্য হয়েছে। তবে ভারতীয় নীতিনির্ধারকেরা যে ভুল করছেন, তা হলো—‘হার্ড পাওয়ার’ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ‘সফট পাওয়ারের’ প্রয়োজনীয় ভিত্তি ছাড়া স্থায়ী সাফল্য অর্জন করতে পারে না।
শেখ হাসিনা যদি ক্ষমতা থেকে সরে যান, তবে বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতা অন্যদের জন্য উন্মুক্ত হয়ে যাবে, আর দিল্লি পিছিয়ে পড়বে। নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ এবং এখন বাংলাদেশে ভারতের আঞ্চলিক প্রভাবের পতন এরই ইঙ্গিত দেয়। যেহেতু এই ক্রমবর্ধমান মেরুকৃত ও অনিশ্চিত বিশ্বে প্রতিবেশী দেশগুলোর জনগণ আর দিল্লিকে একটি নির্ভরযোগ্য পথপ্রদর্শক হিসেবে দেখছে না। এই বিষয় ভারতের বাস্তববাদী ‘প্রতিবেশী প্রথম’—নীতির ফল এবং এটি মোটেও অপ্রত্যাশিত নয়।
তবে এটি এমন হওয়ার প্রয়োজন খুব একটা ছিল না। নেহরুবাদী ‘নৈতিক নীতির’ আঞ্চলিক সাফল্যের দৃষ্টান্তও আছে। নথিপত্রে দেখা যায়, ভারত ঐতিহাসিকভাবে এমন একটি পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করেছে, যা অন্তর্ভুক্তিমূলক ও প্রতিনিধিত্বশীল গণতন্ত্রের গুণাবলিকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এই দৃষ্টিভঙ্গি—যা ভারতের উদার গণতান্ত্রিক পরিচয়ে নিহিত—অতীতে আঞ্চলিক সংকটের প্রতি ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি এবং সেগুলো সমাধানের প্রচেষ্টাকে রূপ দিয়েছিল। এর একটি উদাহরণ হলো—২০ বছর আগে নেপালের গণ-আন্দোলনের সময় যখন ভারত বহুত্ববাদকে একমাত্র টেকসই কৌশল হিসেবে সমর্থন করেছিল। স্বল্পমেয়াদি লাভের জন্য স্বৈরতন্ত্রকে সমর্থন করার প্রলোভনকে বাদ দিয়ে ভারত তার প্রভাব কাজে লাগিয়ে নেপালে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেছিল এবং এর মাধ্যমে নেপালিদের আস্থা অর্জন করেছিল।
প্রতিবেশী দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা ভারতবিরোধী বা ‘অন্যদের’ প্রতি অনুগত সরকার গঠনের স্বল্পমেয়াদি ঝুঁকি ভারতীয় নেতৃত্ব বুঝতে পারেন। তবে বিপরীতে, স্বল্প মেয়াদে যতই লাভজনক বা ‘ভারতপন্থী’ হোক না কেন, স্বৈরাচারী বা অসহিষ্ণু সরকারগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ ও অস্থিতিশীলতার শিকার হয়, যা দীর্ঘ মেয়াদে ভারতীয় স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর। বাংলাদেশের পরিস্থিতি, যা আরও গভীরভাবে বিকশিত হচ্ছে, এর একটি স্পষ্ট উদাহরণ।
লেখক:
ক্রিস্তোফ জাফ্রেলো সেরি: ‘সায়েন্স পো’–এর গবেষণা পরিচালক, কিংস কলেজ লন্ডনের রাজনীতি ও সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক এবং ‘কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস’-এর নন-রেসিডেন্ট ফেলো।
মানুচেহের শাফি: বাংলাদেশি রাজনৈতিক বিশ্লেষক। যিনি দক্ষিণ এশিয়ায় একটি জবাবদিহিমূলক, গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক পরিবেশ গড়ে তুলতে গভীরভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি আগে জাতিসংঘে কাজ করেছেন এবং প্যারিসের সায়েন্স পোর প্রাক্তন শিক্ষার্থী।
অনুবাদ: আব্দুর রহমান

গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
১ দিন আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
২ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
২ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৭ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।
সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।
২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।
ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।
এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।
সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।
তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।
সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।
সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।
২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।
ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।
এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।
সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।
তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।
সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

যদিও রাশিয়া ও চীন শেখ হাসিনার সমর্থক ছিল, তবে বাংলাদেশিরা ভারত সরকারকে সবচেয়ে বেশি দায়ী মনে করে। অন্যদের তুলনায় ভারতকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সবচেয়ে সক্রিয় হস্তক্ষেপকারী এবং শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনের নির্লজ্জ রক্ষাকর্তা হিসেবে দেখা হয়...
১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
২ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
২ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৭ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট কী
ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।
পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল
আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।
আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা
কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট কী
ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।
পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল
আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।
আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা
কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

যদিও রাশিয়া ও চীন শেখ হাসিনার সমর্থক ছিল, তবে বাংলাদেশিরা ভারত সরকারকে সবচেয়ে বেশি দায়ী মনে করে। অন্যদের তুলনায় ভারতকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সবচেয়ে সক্রিয় হস্তক্ষেপকারী এবং শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনের নির্লজ্জ রক্ষাকর্তা হিসেবে দেখা হয়...
১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
১ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
২ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৭ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’
গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।
কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন
অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।
তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।
নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান
ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।
নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।
এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’
এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’
গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।
কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন
অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।
তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।
নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান
ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।
নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।
এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’
এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

যদিও রাশিয়া ও চীন শেখ হাসিনার সমর্থক ছিল, তবে বাংলাদেশিরা ভারত সরকারকে সবচেয়ে বেশি দায়ী মনে করে। অন্যদের তুলনায় ভারতকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সবচেয়ে সক্রিয় হস্তক্ষেপকারী এবং শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনের নির্লজ্জ রক্ষাকর্তা হিসেবে দেখা হয়...
১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
১ দিন আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
২ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৭ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।
ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।
ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।
‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।
সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।
ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।
ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।
‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।
সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

যদিও রাশিয়া ও চীন শেখ হাসিনার সমর্থক ছিল, তবে বাংলাদেশিরা ভারত সরকারকে সবচেয়ে বেশি দায়ী মনে করে। অন্যদের তুলনায় ভারতকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সবচেয়ে সক্রিয় হস্তক্ষেপকারী এবং শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনের নির্লজ্জ রক্ষাকর্তা হিসেবে দেখা হয়...
১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
১ দিন আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
২ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
২ দিন আগে