Ajker Patrika

দুধ–কলা দিয়ে পোষা ওয়াগনার কেন পুতিনকেই ছোবল দিতে চায়? 

আপডেট : ২৫ জুন ২০২৩, ০১: ২৪
দুধ–কলা দিয়ে পোষা ওয়াগনার কেন পুতিনকেই ছোবল দিতে চায়? 

ভাড়াটে যোদ্ধা ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোশিন হঠাৎ করেই রাশিয়ার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন। এরই মধ্যে ইউক্রেন সীমান্তবর্তী রোস্তভ-অন-দন শহরের নিয়ন্ত্রণ দখলের দাবি করেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্ব যুদ্ধক্ষেত্রে যথেষ্ট আগ্রাসী পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তাঁরা তাঁর বাহিনীর সদস্যদের মরতে বাধ্য করছেন। সামরিক নেতৃত্বের সাক্ষাৎ চেয়ে মস্কো অভিমুখে অগ্রসর হচ্ছেন বলেও ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরে অবশ্য সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন। 

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রিগোশিনের এমন কর্মকাণ্ডকে হঠকারিতা ও রাষ্ট্রদ্রোহ বলে অভিহিত করেছেন। ওয়াগনারের বিদ্রোহ নস্যাৎ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন তিনি। পুতিন বলেছেন, ওয়াগনারের প্রিগোশিন দেশ ও জনগণের পিঠে ছুরি মেরেছেন। 

কে এই ইয়েভজেনি প্রিগোশিন? 
ওয়াগনার গ্রুপ সারা বিশ্বে ভাড়াটে যোদ্ধা হিসেবেই পরিচিত। মধ্যপ্রাচ্য থেকে আফ্রিকা সবখানেই এই গ্রুপের তৎপরতা রয়েছে। পুতিনের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় এই গ্রুপের উত্থান ঘটেছে বলে মনে করা হয়। 

এই ওয়াগনারের প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভজেনি প্রিগোশিন। তিনি সাবেক দাগি আসামি। এক সময় হটডগ বিক্রি করতেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত গ্রুপটি নির্মমতা, সহিংসতা এবং নিষ্ঠুরতার জন্য কুখ্যাত। 

প্রিগোশিনের জন্ম ১৯৬১ সালে, সেন্ট পিটার্সবার্গে। একটি স্পোর্টিং একাডেমিতে গিয়ে ছিঁচকে অপরাধীদের পাল্লায় পড়েন। ১৯৮০ সালে বেশ কয়েকটি সহিংস ডাকাতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন। তরুণ বয়সের বেশির ভাগ সময়ই জেলে কাটিয়েছেন। 

১৯৯০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন যখন পতনের মুখে তখন মুক্তি পান প্রিগোশিন। একটি ফাস্ট ফুডের দোকান দিয়ে ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে শুরু করেন। শিগগিরই একটি সুপারমার্কেট চেইনের অংশীদারত্ব অর্জন করেন। সেটি ছিল শহরের সেরা রেস্টুরেন্টগুলোর একটি। এরপর ক্রমেই ভ্লাদিমির পুতিনের আস্থাভাজন ক্ষমতাবান ব্যক্তিতে পরিণত হন। 

প্রিগোশিন এক দশকেরও বেশি সময় পুতিন সরকারের হাই-প্রোফাইল অনুষ্ঠানগুলোতে ক্যাটারিং সার্ভিস দিয়ে এসেছেন। সেই সময় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়—বিদেশি অতিথিদের মধ্যে প্রিন্স চার্লস (বর্তমানে ব্রিটেনের রাজা) এবং জর্জ বুশের জন্য খাবার পরিবেশন করছেন। সরকারি ক্যাটারিং সার্ভিসের চুক্তি এবং অন্য অনেক চুক্তির মাধ্যমে রাশিয়ার অলিগার্ক পর্যায়ের ধনীদের সমান সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলেন প্রিগোশিন। 

বর্তমান বিদ্রোহের বীজ বোপিত হয়েছে বলতে গেলে প্রায় এক দশক আগে। যখন রাশিয়া ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে জবরদখল করে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করে এবং পূর্ব ইউক্রেনে প্রক্সি বাহিনী পাঠায়। প্রিগোশিন এরপরে ভাড়াটে যোদ্ধা গোষ্ঠী ওয়াগনার প্রতিষ্ঠা করেন। এই গ্রুপ পুতিনের হাতকে আরও শক্তিশালী করে। পুতিন আরও সক্রিয় সামরিক হস্তক্ষেপে উৎসাহিত হয়ে ওঠেন এবং সরাসরি রাষ্ট্রীয় সম্পৃক্ততা এড়িয়ে অনেক বেআইনি হস্তক্ষেপ অস্বীকার করার একটি হাতিয়ার পেয়ে যান। 

প্রিগোশিন একটি সাইবার বাহিনীও গঠন করেছিলেন। ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ক্ষমতায় আনতে তাঁর ডিজিটাল যোদ্ধাদের মাঠে নামিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে এভাবেই। 

গত বছর অবধি প্রিগোশিন সেসব সাংবাদিকের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা করেছেন, যারা তাঁর কার্যকলাপের বিষয়ে কথা বলেছেন এবং কেবল ক্যাটারিং সার্ভিস এবং অতিথি সেবার কাজ করে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বে পরিণত হওয়ার বিষয়ে বারবার ইঙ্গিত করেছেন। 

কীভাবে ব্যক্তিগত বাহিনী বানালেন প্রিগোশিন?
বেশ কয়েক বছর ধরে আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং অতি সম্প্রতি ইউক্রেনে হস্তক্ষেপের মধ্য দিয়ে প্রিগোশিন ওয়াগনার গ্রুপকে একটি শক্তিশালী বাহিনীতে পরিণত করেছেন। সিরিয়া ছিল প্রথম কোনো যুদ্ধক্ষেত্র, যেখানে প্রিগোশিনের বাহিনী নিজেকে শক্তিশালী যোদ্ধা বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের প্রতি মস্কোর সমর্থন এখানে বড় ভূমিকা রেখেছিল বলে মনে করা হয়। 

এই ওয়াগনার গ্রুপ তাদের কাজের একটি ধরন অনুসরণ করে। তাদের যুদ্ধক্ষেত্রে যে কোনো কর্মকাণ্ডের জন্য দায়মুক্তি দেওয়া হয়। এটিই ওয়াগনারের কাজের শর্ত। ইউক্রেনেও সেটি হতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হয়। অসংখ্য যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির জন্য এই গ্রুপটি অভিযুক্ত হয়েছে। ওয়াগনার গ্রুপ তাদের কমান্ডারদের অধীনে বাহিনীর সদস্যদের বলি দিতেও কোনো কসুর করে না। 

ওয়াগনারের সেনারা আফ্রিকাজুড়ে যুদ্ধ করেছে এবং করছে। রাশিয়ার স্বার্থের পক্ষে প্রায় সব মিশনেই অগ্রভাগে ছিল ওয়াগনার। এর মধ্যে মালি, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র এবং সর্বশেষ সুদান অন্যতম। পশ্চিমা গোয়েন্দা বিশ্লেষকদের মতে, গত বছর কয়েদিদের বাহিনীতে নিতে প্রিগোশিনকে অনুমতি দেওয়া হয়। এতে তাঁর সৈন্য সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজারে পৌঁছেছে। 

এ ছাড়া অর্থ সংস্থান হয় নানাভাবে। ইয়েভজেনি প্রিগোশিন নিশ্চিত করেছেন, রাশিয়ার এফএসবি সিকিউরিটি সার্ভিস তাঁর অফিসে অভিযান চালিয়ে প্রচুর পরিমাণে নগদ অর্থ জব্দ করেছে। তাঁর টেলিগ্রাম চ্যানেলে একটি অডিও বার্তায় তিনি টাকা বোঝাই একটি ভ্যান এবং দুটি বাসের কথা উল্লেখ করেছেন। এই তহবিলগুলো নিহত ওয়াগনার যোদ্ধাদের ক্ষতিপূরণ ও অন্যান্য ব্যয় বহনের জন্য রাখা হয়েছিল বলে তাঁর দাবি। 

প্রিগোশিন বলেন, ওয়াগনার ১০ বছর ধরে শুধু নগদ অর্থের বিনিময়ে কাজ করছে। এই পদ্ধতি তিনি সব সময় মেনে চলেন। 

তবে উদ্ধারকৃত অর্থের সঠিক পরিমাণ সম্পর্কে কোনো বিশদ বিবরণ দেননি প্রিগোশিন। যদিও রাশিয়ার মিডিয়া আউটলেটগুলো বলেছে, সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরে প্রিগোশিনের অফিসে এফএসবি অভিযান চালিয়ে ৪০০ কোটি রুবল বা ৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার উদ্ধার করেছে। 

এখন কোন ধরনের রসদ এবং সমর্থন পাচ্ছেন প্রিগোশিন? 
প্রিগোশিনের আচার আচরণ এবং বাহিনী পরিচালনার পদ্ধতি নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরেই আপত্তি জানিয়ে আসছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। চাপা উত্তেজনা বহুদিন ধরেই ছিল। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিরোধ আরও গভীর হয়েছে। 

কয়েক মাস আগে থেকে ওয়াগনার প্রধান প্রিগোশিন বারবার বলে আসছেন, তাঁর সৈন্যরা গোলাবারুদ এবং অন্যান্য রসদ সরবরাহের সংকটে ভুগছে। অস্ত্র–শস্ত্রের অভাবে তারা যুদ্ধক্ষেত্রে মারা পড়ছে। ওয়াগনার যোদ্ধাদের কয়েক ডজন মৃতদেহের একটি ভিডিও রেকর্ডও পাওয়া যাচ্ছে। এর জন্য রুশ সেনাবাহিনীর শীর্ষ জেনারেলদের দায়ী করে আসছেন প্রিগোশিন। 

ইউক্রেনে ওয়াগনারের যোদ্ধাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা, বিশেষ করে বাখমুতের ভয়াবহ যুদ্ধ প্রমাণ করে এই গ্রুপের কাছে ভারী অস্ত্র এবং সাঁজোয়া যান রয়েছে। 

গ্রুপের কেউ কেউ ছোট ছোট গ্রুপে মস্কোর দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। যদিও তারা বিমান হামলায় বিধ্বস্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়ত। অবশ্য ভূমি থেকে ধারণ করা একাধিক ভিডিওতে তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করতে দেখা গেছে। 

তা ছাড়া ওয়াগনারের যোদ্ধাদের যে অভিজ্ঞতা এবং শৃঙ্খলা, তাতে তারা রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর পূর্ণ শক্তির সামনে বেশি সময় টিকে থাকতে পারার কথা না। এরই মধ্যে অবশ্য মস্কো অভিযানের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছে ওয়াগনার। 

জানা যাচ্ছে, সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে পুতিনের মিত্র ও বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান প্রিগোশিনের সঙ্গে কথা বলেছেন। পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সৈন্যদের থামিয়ে দিতে প্রিগোশিনকে রাজি করান লুকাশেঙ্কো। 

বিদ্রোহের শুরুর দিকে প্রিগোশিন রুশ সামরিক বাহিনীর কিছু জেনারেল বিদ্রোহী হয়ে তাঁর সঙ্গে যোগ দেবে এমনটি আশা করেছিলেন হয়তো। যাদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভালো, যারা দুর্নীতিগ্রস্ত এবং অন্যান্য ব্যর্থতার কারণে কোণঠাসা হয়ে আছেন তাঁদের কাছ থেকে সমর্থন পাওয়ার অপেক্ষায় হয়তো ছিলেন তিনি। 

ইউক্রেন যুদ্ধে এর প্রভাব কী? 
ওয়াগনারের এই আকস্মিক শোডাউন কীভাবে শেষ হবে তা হয়তো জানা সম্ভব হবে না। তবে প্রিগোশিন জয়ী হোন বা ব্যর্থ হোন—বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ব্যর্থতার সম্ভাবনাই বেশি। তবে এই ঘটনায় লড়াইয়ের ময়দানে উপকৃত হবে ইউক্রেন। 

রাশিয়ার দৃষ্টি, অস্ত্র এবং সৈন্য সবই ফ্রন্টলাইন থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। কিয়েভ পাল্টা আক্রমণ জোরদার করছে। প্রিগোশিন বলেছেন, তিনি যুদ্ধে এগিয়ে থাকার প্রচেষ্টাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চান না। তবে ওয়াগনারের বিদ্রোহ আপাতত ইউক্রেন অভিযান সীমিত করে রাশিয়ার জেনারেলদের ঘরের সমস্যা মেটাতে বেশি মনোযোগী হওয়ার জন্য বাধ্য করবে তাতে সন্দেহ নেই। 

এদিকে অসমর্থিত সূত্রে জানা যাচ্ছে, চেচেন যোদ্ধারা এরই মধ্যে রোস্তভ শহরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এখানেই ওয়াগনারের লোকেরা সামরিক সদর দপ্তর দখল করেছে। এই অঞ্চলে যুদ্ধ লেগে গেলে জীবন, অস্ত্র এবং সময়ের অপচয় হবে। 

বিদ্রোহের শেষটা যা–ই হোক না কেন, ইউক্রেন যুদ্ধের পাশাপাশি মস্কোকে নিজের ঘরে কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা বাড়ানোর দিকে নজর দিতেই হবে। 

ইউক্রেনের জন্য বার্তা
ওয়াগনার প্রধান অবশ্যই ইউক্রেনের যুদ্ধে রুশ জেনারেলদের ভূমিকা নিয়ে অসন্তুষ্ট। তাঁদের অবস্থানকে তাঁর প্রতি ‘অসম্মান’ বলে অভিহিত করেছেন প্রিগোশিন। তবে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ইউক্রেনের শহরগুলোকে নিশ্চিহ্ন করছে বা যুদ্ধাপরাধ করছে বলে প্রিগোশিন তাঁদের সমালোচনা করছেন এমনটা নয়। 

প্রিগোশিন সেনাবাহিনী এবং নেতৃত্বের সমালোচনা করেছেন এই কারণে যে, তাঁরা যথেষ্ট ‘ভালোভাবে’ যুদ্ধ করছেন না! 

রাশিয়ার বাহিনীকে দখলিকৃত অঞ্চলগুলো থেকে পিছু হটতে হয়েছে। প্রিগোশিন বলেছেন, রুশ সেনা কর্মকর্তারা দুর্বল। কারণ তাঁরা কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে ইচ্ছুক নন। 

তবে ইউক্রেন আক্রমণের ন্যায্যতা প্রমাণের জন্য মস্কোর প্রচারণার সঙ্গে সব সময়ই সুর মিলিয়েছেন প্রিগোশিন। তিনি বলেছেন, পূর্ব ইউক্রেনের অধিবাসীরা ‘জিনগতভাবে রুশ’। সাম্প্রতিক এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘রাশিয়ার জনগণকে যারা বিরক্ত করে এটি তাদের বিরুদ্ধে পবিত্র যুদ্ধ।’ 

সুতরাং প্রিগোশিনকে অবশ্যই যুদ্ধবাজ হিসেবে দেখতে হবে। তিনি ইউক্রেনকে পরাজিত করতে আরও কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়ে আসছেন। তাঁর দৃষ্টিতে বর্তমান নেতৃত্ব সেটি করতে পারছেন না। 

ইউক্রেনের বাইরে এর প্রভাব কী? 
ওয়াগনার গ্রুপ রাশিয়ার বৈদেশিক নীতি এবং শক্তি প্রদর্শন ও প্রয়োগের একটি দরকারি হাতিয়ার। এর সৈন্যরা মিত্রদের সমর্থন করে এবং যারা মস্কোর বার্তায় কান দেয় না তাদের সতর্ক বার্তা দেয়। 

এটি প্রায় অসম্ভব যে, পুতিন দ্রুতই এই ভাড়াটে বাহিনীকে প্রতিস্থাপন করতে পারবেন। এমনকি এই বিদ্রোহের বার্তাগুলোকেও তিনি উপেক্ষা করতে পারবেন না। তবে যে নেতারা ওয়াগনারের সমর্থনের ওপর নির্ভর করেছিলেন তাঁরা সম্ভবত তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবিত থাকবেন। 

দ্য গার্ডিয়ান ও বিবিসি অবলম্বনে জাহাঙ্গীর আলম

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৩০
হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূ-রাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। ছবি: সংগৃহীত
হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূ-রাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। ছবি: সংগৃহীত

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।

সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।

২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।

ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।

হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।

এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।

অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।

সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।

ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।

তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।

সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।

পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।

সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।

তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নাইজেরিয়ায় কোন আইএসকে আঘাত করল মার্কিন বাহিনী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে আইএস আস্তানা লক্ষ্য করে মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে আইএস আস্তানা লক্ষ্য করে মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।

ইসলামিক স্টেট কী

ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।

পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।

বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়

মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।

এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।

লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল

আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।

মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।

আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা

কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।

নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নাইজেরিয়ায় কেন হামলা চালাল মার্কিন বাহিনী, খ্রিষ্টান নিপীড়নের সঙ্গে এর সম্পর্ক কী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।

ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।

ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’

গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।

মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।

কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন

অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।

তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।

নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে

নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।

উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।

নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান

ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।

এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।

নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।

উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।

এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।

গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’

এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।

দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘ভেনেজুয়েলা সংকট’ কীভাবে আন্তর্জাতিক সংঘাতের রূপ নিচ্ছে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।

ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।

ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।

ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।

এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।

‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।

সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত