ফরিদপুর জিলা স্কুলের ১৮৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বহিরাগতদের হামলায় পণ্ড হয়ে গেছে। বহিরাগত ব্যক্তিদের ছোড়া ইটপাটকেলের আঘাতে অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। একপর্যায়ে কর্তৃপক্ষ অনুষ্ঠান স্থগিত ঘোষণা করে। অনুষ্ঠানটিতে জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী নগরবাউল জেমসের গান পরিবেশনের কথা ছিল।
গতকাল শুক্রবার রাত ৯টার দিকে সাংস্কৃতিক পর্ব চলাকালে এই ঘটনা ঘটে এবং রাত সাড়ে ১০টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে শুরু থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভূমিকা নেয়নি বলে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন।
জানা যায়, স্কুলটির ১৮৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুই দিনব্যাপী জমকালো আয়োজন করা হয়। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। রাত ১০টার দিকে মঞ্চে এসে গান পরিবেশনের কথা ছিল জেমসের। এমন খবরে দূরদূরান্ত থেকে মাইক্রোবাস যোগে অনুষ্ঠানস্থলে আসেন অনেকে। তবে অনুষ্ঠানটি উন্মুক্ত না থাকায় বহিরাগতরা বাইরে থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
বহিরাগত ব্যক্তিদের ছোড়া ইটপাটকেলে অনেকে আহত হন। একপর্যায়ে বহিরাগত কয়েকজন সীমানাপ্রচীর ডিঙিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলে শিক্ষার্থীরা তাদের বেধড়ক মারধর করেন। এরপর থেকে অনবরত ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে বহিরাগতরা। অনুষ্ঠানস্থলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে তা সহিংসতায় রূপ নেয় এবং শিক্ষার্থীদের জোটবদ্ধ ধাওয়ায় পালিয়ে যায় হামলাকারীরা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, রাত ৯টায় র্যাফল ড্র চলাকালে বাইরে থেকে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। এতে অনেকে আহত হয়েছে। তবে এই ঘটনায় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকেও দায়ী করেন অনেকে।
আনিসুর রহমান সজল নামের সাবেক এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘প্রায় সাড়ে ৪ হাজার প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে এই আয়োজনে এবং আমরা আনন্দঘন পরিবেশেই ছিলাম। জেমস আসার কথা শুনে বহিরাগত ব্যক্তিরা এসে এই হামলা চালায়। অন্ততপক্ষে ১৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে, মনিটর ভেঙে ফেলা হয়েছে। আমরা দীর্ঘ সময় ধৈর্য ধারণ করে থাকি, কিন্তু হামলাকারীরা থামেনি। একের পর এক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। পুলিশ নীরব ভূমিকায় ছিল।’
এদিকে পরিস্থিতি উত্তপ্তের মধ্যে অনুষ্ঠানটি বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। ১৮৫ বছর পূর্তি ও পুনর্মিলনী উদ্যাপন পরিষদের আহ্বায়ক ডা. মোস্তাফিজুর রহমান শামীম এই ঘোষণা দেন।
এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শামছুল আজমের ব্যবহৃত মোবাইলে কল দেওয়া হলে তিনি ধরেননি।