
আমাদের দেশে যেমন বিয়ের কনে দেখার একটা রীতি আছে, তেমনি কোরবানির গরু দেখারও চল আছে। কম-বেশি সবার শৈশব-কৈশোর কাটে এর-ওর বাড়ি গিয়ে কোরবানির গরু, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি পশু দেখে। অনেকে আবার শৈশব-কৈশোরের এই দুরন্তপনা বুড়ো বয়সেও বজায় রাখেন। যেমন, আমাদের পরিবারের সদস্যরা। প্রতিবছর কোরবানির গরু কেনা এবং গরু দেখার একটা হাঙ্গামা লাগে। এবারের হাঙ্গামাটা একটু ব্যতিক্রম। কারণ, এবার গরু সরাসরি বাসায় আসেনি। আচ্ছা, তাহলে ঘটনাটা খুলেই বলি।
ভুবন তাঁর খালাতো ভাইকে নিয়ে গেছে হাটে। হাতে আরও দু-তিন দিন সময় আছে ঈদের। তাই সেদিনই যে গরু কেনা হয়ে যাবে, এ রকম কোনো ভাবনা ছিল না কারও। তাঁরা গেছেন রহমতগঞ্জের হাটে। একই সঙ্গে ছোট মামাও তাঁর ছেলে জাওয়াদকে নিয়ে গেছেন ওই হাটেই। অর্থাৎ, বাসায় দুইটা গরু আসবে—একটা মামা আনবেন, আরেকটা আনবে তাঁর ভাগনে ভুবন।
এদিকে আমি, শাশুড়ি মা আর জাওয়াদের ৯ বছরের ছোট্ট বোন জারা বসে নানা বিষয় নিয়ে ব্যাপক আলাপ-আলোচনা আর হাহা-হিহি করছি। হঠাৎ রাত ১০টার দিকে মাকে তাঁর ছেলে ফোন করে বলল, গরু কেনা হয়ে গেছে। তবে গরু বাসায় আসছে না!
‘বাসায় আসছে না মানে?’ অবাক হলাম।
মা বললেন, রহমতগঞ্জ থেকে লালবাগ কাছে। তাই আপাতত লালবাগে খালার বাসায় রাখা হবে গরু। পরে আমাদের কায়েৎটুলীর বাসায় আনা হবে ঈদের আগের দিন। সেখানে খালাদের গরুর সঙ্গে দোস্তি পাতানো হবে আমাদের গরুর। তারা একজন আরেকজনের দেখাদেখি খাবে—এই হচ্ছে বাড়ির বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
যাই হোক, গরু কেনা হয়েছে শুনে মায়ের খুশির অন্ত নেই। তিনি আমাকে বললেন, ‘কোরবানি, কোরবানি গানটা লাগাও।’ আমি ইউটিউব থেকে মায়ের পছন্দের গানটা বাজিয়ে দিলাম—কোরবানি, কোরবানি, কোরবানি/আল্লাহ কো প্যায়ারি হ্যায় কোরবানি। তারপর বললেন, ‘এবার দেশিটা লাগাও। শাকিব খানের নতুন সিনেমা প্রিয়তমার একটা গান আছে কোরবানি নিয়ে, ওইটা ছাড়ো।’ সেটার কথা তো আমার জানা ছিল না! তবুও সেটা খুঁজে বাজিয়ে দিলাম। এই বয়সেও এভাবেই মা সব উৎসবে আমাদের সবাইকে নিয়ে মজা করতে পছন্দ করেন।
এবার মা ইচ্ছা প্রকাশ করলেন, যত রাতই হোক, খালার বাসায় যাবেন গরু দেখতে। কিন্তু কীভাবে যাবেন? মা রিকশায় উঠতে পারেন না, আমাদের গাড়ি নেই। সিএনজিচালিত অটোরিকশা আনতে হলে কাউকে মেইন রোডে যেতে হবে, সে রকম কেউ বাসায় নেই। মা ফোন দিলেন খালাকে। ঠিক হলো খালার ছোট ছেলে হোসাইন আসবে ব্যাটারিচালিত একটা বড় রিকশা নিয়ে, যেটায় সবাই মিলে যেতে পারব। কিন্তু সময় লাগবে, রাস্তায় প্রচুর জ্যাম।
রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ হোসাইন রিকশা নিয়ে এল। কিন্তু হায়, বড় রিকশা কোথায়? হোসাইন বলল, ‘বড় রিকশা পাই নাই। যেটা আছে, সেটাতেই ওঠেন।’ মা উঠলেন, আমি উঠলাম, আমার কোলে জারা, আর হোসাইন রিকশাওয়ালা মামার সঙ্গে সামনে। এর মধ্যে ঝড়ের গতিতে ছোট মামি এসে হাজির, উনিও যাবেন, এই রিকশাতেই যাবেন। মা-ও নাছোড়বান্দা, মামিকে নিয়েই যাবেন। ওই মুহূর্তে জাওয়াদ ফোন দিল, ‘ভাবি একটু দাঁড়ান, আমাদের গরু আনতেসি বাসায়, দশ-পনেরো মিনিট লাগবে। আমাকে আপনাদের সঙ্গে লালবাগে নিয়ে যান।’ এ কি মুশকিল! এই ব্যাটারির রিকশাটায় চালক ছাড়া তিনজনের বেশি বসা যায় না।
একদিকে আমি জাওয়াদকে ফোনে বোঝাচ্ছিলাম— রিকশায় জায়গা হচ্ছে না, আরেক দিকে মামি রিকশায় উঠে বসার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। মা বলছেন মামিকে, ‘তুমি আমার কোলে বস।’ মামিও সে অনুযায়ী খুব চেষ্টা করছেন। কিন্তু রিকশায় এক পায়ের বেশি ওঠাতে পারছেন না। আমি ফোন রেখে মামিকে বললাম, ‘মামি আপনি জাওয়াদের সঙ্গে আসেন। ও যাবে।’ কিন্তু মামি তাঁর সিদ্ধান্তে অনড়, তিনি এই রিকশাতেই যাবেন। তারপর মনে হলো, মামি যে বাড়ি-ঘর তালা দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছেন, তাহলে মামা এসে বাসায় ঢুকবেন কী করে? মামিকে সে কথাও মনে করিয়ে দিলাম। মামি তাও বললেন, ‘আমি কিছু জানি না, আমি যাব।’ বললাম, ‘চাবিটা অন্তত দোকানে দিয়ে আসেন।’ কিন্তু ততক্ষণে বাসার নিচের দোকানের শাটার নেমে গেছে। ঠিক ওই সময় ভুবনও বাসায় এসেছে ওর মোটরসাইকেল উঠান থেকে সরাবে বলে, মামার নির্দেশ—সেখানে গরু রাখা হবে। তখন মামিকে বললাম, ‘তাহলে চাবিটা ভুবনকে দিয়ে দেন।’ মামি সেটাই করলেন। এ যাত্রায় চাবির একটা মীমাংসা করা গেল।
তারপর আবার শুরু হলো মামির রিকশায় চড়ার কসরত—সোজা বসবেন নাকি উল্টো ঘুরে। এসব দেখে রিকশাওয়ালা মামাও তাঁর লাউয়ের বিচির মতো দাঁতগুলো বের করে বেশ আনন্দ পাচ্ছিলেন। শেষে আমার মনে হলো, আমি তো অন্য রিকশাতেও যেতে পারি! হাঙ্গামার মধ্যে এই কথাটা খুব দেরি করে মাথায় এল। হোসাইনকে বললাম, ‘চলো, আমরা দুইজন অন্য একটা রিকশা নিয়ে যাই।’ সঙ্গে সঙ্গে হোসাইন এক লাফে রিকশা থেকে নেমে গেল। আমরা আলাদা রিকশা নিয়ে রওনা হলাম। ভাগ্যিস মা তাঁর দুই সহকারীকে আগেই অন্য একটা রিকশায় পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। নয়তো আরও কুস্তাকুস্তি চলত ওই ব্যাটারির রিকশায় ওঠার জন্য।
আমাদের দুটো রিকশা খালার বাসায় পৌঁছে গেল প্রায় একই সময়ে। ‘এই রাতে যত ভাড়া লাগে আমি দিব’ সংলাপ দেওয়া মা ভাড়া দিতে গিয়ে খেয়াল করলেন তিনি তাঁর প্রিয় হাতব্যাগটা সঙ্গে আনেননি, যেটায় শত শত টাকা আছে। ভীষণ লজ্জা পেয়ে মামির কাছ থেকে ধার করলেন। আমি দিতে চাইলাম ভাড়া, কিন্তু মামির কাছ থেকেই ধার নেবেন মা! আমি শুধু একটা রিকশার ভাড়া দিলাম।
উঠানে দুই বাড়ির দুটো গরু দেখে সবার চোখ আরাম পেল। এবার ঠান্ডা মাথায় সবাই বসে আড্ডা দেওয়ার পালা। এর মধ্যে ভুবন আর জাওয়াদও খালার বাসায় চলে এসেছে। ওদের পুরো ঘটনা বিস্তারিত বলার সময় মায়ের হঠাৎ মনে পড়ল, মামির ওজন যে পরিমাণ তাতে মায়ের কোলে মামি বসলে তিনি হয়তো তিন দিন বিছানা ছেড়ে উঠতে পারতেন না! ঈদটাই মাটি হয়ে যেত।
আবার ভুবনও শোনাল তাঁর হাটের অভিজ্ঞতা। আমাদের যে গরুটা কেনা হয়েছে সে নাকি খুব সুচারুভাবে পেছনের দুই পা তুলে লাথি দিতে পারে। সেই লাথি খেয়েই ভুবন গরুটা কিনেছে!
এই নিয়ে বিস্তর হাসাহাসির পর জারা হঠাৎ আমাকে বলে উঠল, ‘সবাই একসঙ্গে থাকলে কত মজা হয়, তাই না ভাবি?’
আমি বললাম, ‘হ্যাঁ, একদম ঠিক।’
লেখক: সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা

আমাদের দেশে যেমন বিয়ের কনে দেখার একটা রীতি আছে, তেমনি কোরবানির গরু দেখারও চল আছে। কম-বেশি সবার শৈশব-কৈশোর কাটে এর-ওর বাড়ি গিয়ে কোরবানির গরু, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি পশু দেখে। অনেকে আবার শৈশব-কৈশোরের এই দুরন্তপনা বুড়ো বয়সেও বজায় রাখেন। যেমন, আমাদের পরিবারের সদস্যরা। প্রতিবছর কোরবানির গরু কেনা এবং গরু দেখার একটা হাঙ্গামা লাগে। এবারের হাঙ্গামাটা একটু ব্যতিক্রম। কারণ, এবার গরু সরাসরি বাসায় আসেনি। আচ্ছা, তাহলে ঘটনাটা খুলেই বলি।
ভুবন তাঁর খালাতো ভাইকে নিয়ে গেছে হাটে। হাতে আরও দু-তিন দিন সময় আছে ঈদের। তাই সেদিনই যে গরু কেনা হয়ে যাবে, এ রকম কোনো ভাবনা ছিল না কারও। তাঁরা গেছেন রহমতগঞ্জের হাটে। একই সঙ্গে ছোট মামাও তাঁর ছেলে জাওয়াদকে নিয়ে গেছেন ওই হাটেই। অর্থাৎ, বাসায় দুইটা গরু আসবে—একটা মামা আনবেন, আরেকটা আনবে তাঁর ভাগনে ভুবন।
এদিকে আমি, শাশুড়ি মা আর জাওয়াদের ৯ বছরের ছোট্ট বোন জারা বসে নানা বিষয় নিয়ে ব্যাপক আলাপ-আলোচনা আর হাহা-হিহি করছি। হঠাৎ রাত ১০টার দিকে মাকে তাঁর ছেলে ফোন করে বলল, গরু কেনা হয়ে গেছে। তবে গরু বাসায় আসছে না!
‘বাসায় আসছে না মানে?’ অবাক হলাম।
মা বললেন, রহমতগঞ্জ থেকে লালবাগ কাছে। তাই আপাতত লালবাগে খালার বাসায় রাখা হবে গরু। পরে আমাদের কায়েৎটুলীর বাসায় আনা হবে ঈদের আগের দিন। সেখানে খালাদের গরুর সঙ্গে দোস্তি পাতানো হবে আমাদের গরুর। তারা একজন আরেকজনের দেখাদেখি খাবে—এই হচ্ছে বাড়ির বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
যাই হোক, গরু কেনা হয়েছে শুনে মায়ের খুশির অন্ত নেই। তিনি আমাকে বললেন, ‘কোরবানি, কোরবানি গানটা লাগাও।’ আমি ইউটিউব থেকে মায়ের পছন্দের গানটা বাজিয়ে দিলাম—কোরবানি, কোরবানি, কোরবানি/আল্লাহ কো প্যায়ারি হ্যায় কোরবানি। তারপর বললেন, ‘এবার দেশিটা লাগাও। শাকিব খানের নতুন সিনেমা প্রিয়তমার একটা গান আছে কোরবানি নিয়ে, ওইটা ছাড়ো।’ সেটার কথা তো আমার জানা ছিল না! তবুও সেটা খুঁজে বাজিয়ে দিলাম। এই বয়সেও এভাবেই মা সব উৎসবে আমাদের সবাইকে নিয়ে মজা করতে পছন্দ করেন।
এবার মা ইচ্ছা প্রকাশ করলেন, যত রাতই হোক, খালার বাসায় যাবেন গরু দেখতে। কিন্তু কীভাবে যাবেন? মা রিকশায় উঠতে পারেন না, আমাদের গাড়ি নেই। সিএনজিচালিত অটোরিকশা আনতে হলে কাউকে মেইন রোডে যেতে হবে, সে রকম কেউ বাসায় নেই। মা ফোন দিলেন খালাকে। ঠিক হলো খালার ছোট ছেলে হোসাইন আসবে ব্যাটারিচালিত একটা বড় রিকশা নিয়ে, যেটায় সবাই মিলে যেতে পারব। কিন্তু সময় লাগবে, রাস্তায় প্রচুর জ্যাম।
রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ হোসাইন রিকশা নিয়ে এল। কিন্তু হায়, বড় রিকশা কোথায়? হোসাইন বলল, ‘বড় রিকশা পাই নাই। যেটা আছে, সেটাতেই ওঠেন।’ মা উঠলেন, আমি উঠলাম, আমার কোলে জারা, আর হোসাইন রিকশাওয়ালা মামার সঙ্গে সামনে। এর মধ্যে ঝড়ের গতিতে ছোট মামি এসে হাজির, উনিও যাবেন, এই রিকশাতেই যাবেন। মা-ও নাছোড়বান্দা, মামিকে নিয়েই যাবেন। ওই মুহূর্তে জাওয়াদ ফোন দিল, ‘ভাবি একটু দাঁড়ান, আমাদের গরু আনতেসি বাসায়, দশ-পনেরো মিনিট লাগবে। আমাকে আপনাদের সঙ্গে লালবাগে নিয়ে যান।’ এ কি মুশকিল! এই ব্যাটারির রিকশাটায় চালক ছাড়া তিনজনের বেশি বসা যায় না।
একদিকে আমি জাওয়াদকে ফোনে বোঝাচ্ছিলাম— রিকশায় জায়গা হচ্ছে না, আরেক দিকে মামি রিকশায় উঠে বসার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। মা বলছেন মামিকে, ‘তুমি আমার কোলে বস।’ মামিও সে অনুযায়ী খুব চেষ্টা করছেন। কিন্তু রিকশায় এক পায়ের বেশি ওঠাতে পারছেন না। আমি ফোন রেখে মামিকে বললাম, ‘মামি আপনি জাওয়াদের সঙ্গে আসেন। ও যাবে।’ কিন্তু মামি তাঁর সিদ্ধান্তে অনড়, তিনি এই রিকশাতেই যাবেন। তারপর মনে হলো, মামি যে বাড়ি-ঘর তালা দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছেন, তাহলে মামা এসে বাসায় ঢুকবেন কী করে? মামিকে সে কথাও মনে করিয়ে দিলাম। মামি তাও বললেন, ‘আমি কিছু জানি না, আমি যাব।’ বললাম, ‘চাবিটা অন্তত দোকানে দিয়ে আসেন।’ কিন্তু ততক্ষণে বাসার নিচের দোকানের শাটার নেমে গেছে। ঠিক ওই সময় ভুবনও বাসায় এসেছে ওর মোটরসাইকেল উঠান থেকে সরাবে বলে, মামার নির্দেশ—সেখানে গরু রাখা হবে। তখন মামিকে বললাম, ‘তাহলে চাবিটা ভুবনকে দিয়ে দেন।’ মামি সেটাই করলেন। এ যাত্রায় চাবির একটা মীমাংসা করা গেল।
তারপর আবার শুরু হলো মামির রিকশায় চড়ার কসরত—সোজা বসবেন নাকি উল্টো ঘুরে। এসব দেখে রিকশাওয়ালা মামাও তাঁর লাউয়ের বিচির মতো দাঁতগুলো বের করে বেশ আনন্দ পাচ্ছিলেন। শেষে আমার মনে হলো, আমি তো অন্য রিকশাতেও যেতে পারি! হাঙ্গামার মধ্যে এই কথাটা খুব দেরি করে মাথায় এল। হোসাইনকে বললাম, ‘চলো, আমরা দুইজন অন্য একটা রিকশা নিয়ে যাই।’ সঙ্গে সঙ্গে হোসাইন এক লাফে রিকশা থেকে নেমে গেল। আমরা আলাদা রিকশা নিয়ে রওনা হলাম। ভাগ্যিস মা তাঁর দুই সহকারীকে আগেই অন্য একটা রিকশায় পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। নয়তো আরও কুস্তাকুস্তি চলত ওই ব্যাটারির রিকশায় ওঠার জন্য।
আমাদের দুটো রিকশা খালার বাসায় পৌঁছে গেল প্রায় একই সময়ে। ‘এই রাতে যত ভাড়া লাগে আমি দিব’ সংলাপ দেওয়া মা ভাড়া দিতে গিয়ে খেয়াল করলেন তিনি তাঁর প্রিয় হাতব্যাগটা সঙ্গে আনেননি, যেটায় শত শত টাকা আছে। ভীষণ লজ্জা পেয়ে মামির কাছ থেকে ধার করলেন। আমি দিতে চাইলাম ভাড়া, কিন্তু মামির কাছ থেকেই ধার নেবেন মা! আমি শুধু একটা রিকশার ভাড়া দিলাম।
উঠানে দুই বাড়ির দুটো গরু দেখে সবার চোখ আরাম পেল। এবার ঠান্ডা মাথায় সবাই বসে আড্ডা দেওয়ার পালা। এর মধ্যে ভুবন আর জাওয়াদও খালার বাসায় চলে এসেছে। ওদের পুরো ঘটনা বিস্তারিত বলার সময় মায়ের হঠাৎ মনে পড়ল, মামির ওজন যে পরিমাণ তাতে মায়ের কোলে মামি বসলে তিনি হয়তো তিন দিন বিছানা ছেড়ে উঠতে পারতেন না! ঈদটাই মাটি হয়ে যেত।
আবার ভুবনও শোনাল তাঁর হাটের অভিজ্ঞতা। আমাদের যে গরুটা কেনা হয়েছে সে নাকি খুব সুচারুভাবে পেছনের দুই পা তুলে লাথি দিতে পারে। সেই লাথি খেয়েই ভুবন গরুটা কিনেছে!
এই নিয়ে বিস্তর হাসাহাসির পর জারা হঠাৎ আমাকে বলে উঠল, ‘সবাই একসঙ্গে থাকলে কত মজা হয়, তাই না ভাবি?’
আমি বললাম, ‘হ্যাঁ, একদম ঠিক।’
লেখক: সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স-সংলগ্ন ভুরভুরিয়াছড়ার পাশেই বধ্যভূমি ৭১ পার্ক অবস্থিত। সেখানে প্রাচীন একটি বটগাছ রয়েছে, যা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করে। পাকিস্তান আমলে গাছটির নিচে ছিল এক সাধুর আস্তানা।
১ দিন আগে
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর রেলস্টেশনের কাছেই রয়েছে একটি বধ্যভূমি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে সহযোগীদের সহায়তায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী রহনপুর ও আশপাশের এলাকার মুক্তিযোদ্ধা এবং অনেক সাধারণ বাঙালিকে এই বধ্যভূমিতে বিভিন্ন সময় ধরে এনে হত্যা করে।
৫ দিন আগে
আমার সৌভাগ্য হয়েছিল আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ঘনিষ্ঠ হওয়ার। হাসান আজিজুল হকের সূত্রেই পরিচয় হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। পরে তাঁর সঙ্গে প্রচুর আড্ডা দেওয়ার সুযোগ হয়েছিল। তিনি ছিলেন তুমুল আড্ডাবাজ মানুষ। আর তাঁর সঙ্গে জগৎ সংসারের যেকোনো বিষয়ে আলাপ করা যেত। এমন কোনো বিষয় নেই যাতে তাঁর আগ্রহ নেই।
৬ দিন আগে
১৯৭১ সালে পুরো বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন হয়েছিল ১৬ ডিসেম্বর। কিন্তু রাজধানীর মিরপুর তখনো শত্রুদের দখলে। পরের বছর জানুয়ারিতে শত্রুমুক্ত হলে একে একে সন্ধান পাওয়া যেতে থাকে বধ্যভূমিগুলোর। ঢাকায় সবচেয়ে বেশি বধ্যভূমি মিরপুর অঞ্চলে। আর মিরপুরের বধ্যভূমিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লাশ পাওয়া যায়...
৭ দিন আগেসম্পাদকীয়

মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স-সংলগ্ন ভুরভুরিয়াছড়ার পাশেই বধ্যভূমি ৭১ পার্ক অবস্থিত। সেখানে প্রাচীন একটি বটগাছ রয়েছে, যা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করে। পাকিস্তান আমলে গাছটির নিচে ছিল এক সাধুর আস্তানা। চা-শ্রমিক ও বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এখানে এসে পূজা দিত, মনোবাসনা পূরণে মানত করত। সবাই জায়গাটিকে চিনত ‘সাধু বাবার থলি’ নামে। যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এখানে এনে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। হত্যার আগে বটগাছের ডালে ঝুলিয়ে তাঁদের ওপর অমানবিক অত্যাচার চালানো হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজন ও মুক্তিকামী সাধারণ মানুষও বাদ যাননি। গাছের ডালে উল্টো করে বেঁধে রাখা হতো তাঁদের। নির্যাতনের যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে তাঁরা শহীদ হন। সেই সব শহীদের ত্যাগকে অমর করে রাখতে এখানে নির্মিত হয় ‘বধ্যভূমি ৭১’ নামের স্মৃতিস্তম্ভটি। একাত্তরের স্মৃতিবিজড়িত বধ্যভূমিটিতে আরও রয়েছে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী ৭১’ নামে একটি ভাস্কর্য।
ছবি: সংগৃহীত

মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স-সংলগ্ন ভুরভুরিয়াছড়ার পাশেই বধ্যভূমি ৭১ পার্ক অবস্থিত। সেখানে প্রাচীন একটি বটগাছ রয়েছে, যা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করে। পাকিস্তান আমলে গাছটির নিচে ছিল এক সাধুর আস্তানা। চা-শ্রমিক ও বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এখানে এসে পূজা দিত, মনোবাসনা পূরণে মানত করত। সবাই জায়গাটিকে চিনত ‘সাধু বাবার থলি’ নামে। যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এখানে এনে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। হত্যার আগে বটগাছের ডালে ঝুলিয়ে তাঁদের ওপর অমানবিক অত্যাচার চালানো হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজন ও মুক্তিকামী সাধারণ মানুষও বাদ যাননি। গাছের ডালে উল্টো করে বেঁধে রাখা হতো তাঁদের। নির্যাতনের যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে তাঁরা শহীদ হন। সেই সব শহীদের ত্যাগকে অমর করে রাখতে এখানে নির্মিত হয় ‘বধ্যভূমি ৭১’ নামের স্মৃতিস্তম্ভটি। একাত্তরের স্মৃতিবিজড়িত বধ্যভূমিটিতে আরও রয়েছে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী ৭১’ নামে একটি ভাস্কর্য।
ছবি: সংগৃহীত

আমাদের দেশে যেমন বিয়ের কনে দেখার একটা রীতি আছে, তেমনি কোরবানির গরু দেখারও চল আছে। কম-বেশি সবার শৈশব-কৈশোর কাটে এর-ওর বাড়ি গিয়ে কোরবানির গরু, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি পশু দেখে। অনেকে আবার শৈশব-কৈশোরের এই দুরন্তপনা বুড়ো বয়সেও বজায় রাখেন।
২৭ জুন ২০২৩
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর রেলস্টেশনের কাছেই রয়েছে একটি বধ্যভূমি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে সহযোগীদের সহায়তায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী রহনপুর ও আশপাশের এলাকার মুক্তিযোদ্ধা এবং অনেক সাধারণ বাঙালিকে এই বধ্যভূমিতে বিভিন্ন সময় ধরে এনে হত্যা করে।
৫ দিন আগে
আমার সৌভাগ্য হয়েছিল আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ঘনিষ্ঠ হওয়ার। হাসান আজিজুল হকের সূত্রেই পরিচয় হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। পরে তাঁর সঙ্গে প্রচুর আড্ডা দেওয়ার সুযোগ হয়েছিল। তিনি ছিলেন তুমুল আড্ডাবাজ মানুষ। আর তাঁর সঙ্গে জগৎ সংসারের যেকোনো বিষয়ে আলাপ করা যেত। এমন কোনো বিষয় নেই যাতে তাঁর আগ্রহ নেই।
৬ দিন আগে
১৯৭১ সালে পুরো বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন হয়েছিল ১৬ ডিসেম্বর। কিন্তু রাজধানীর মিরপুর তখনো শত্রুদের দখলে। পরের বছর জানুয়ারিতে শত্রুমুক্ত হলে একে একে সন্ধান পাওয়া যেতে থাকে বধ্যভূমিগুলোর। ঢাকায় সবচেয়ে বেশি বধ্যভূমি মিরপুর অঞ্চলে। আর মিরপুরের বধ্যভূমিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লাশ পাওয়া যায়...
৭ দিন আগেসম্পাদকীয়

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর রেলস্টেশনের কাছেই রয়েছে একটি বধ্যভূমি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে সহযোগীদের সহায়তায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী রহনপুর ও আশপাশের এলাকার মুক্তিযোদ্ধা এবং অনেক সাধারণ বাঙালিকে এই বধ্যভূমিতে বিভিন্ন সময় ধরে এনে হত্যা করে। শহীদদের সংখ্যাটা প্রায় ১০ হাজার! রহনপুর সরকারি এ বি উচ্চবিদ্যালয়ে ছিল পাকিস্তানিদের ক্যাম্প। এখানেও শত শত মানুষকে ধরে এনে হত্যা করা হয়। বধ্যভূমির যে স্থানে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, সেখানেই শহীদদের সম্মানে নির্মিত হয়েছে একটি স্মৃতিস্তম্ভ। এই বধ্যভূমিটি রহনপুর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবর নামে পরিচিত।
ছবি: সংগৃহীত

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর রেলস্টেশনের কাছেই রয়েছে একটি বধ্যভূমি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে সহযোগীদের সহায়তায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী রহনপুর ও আশপাশের এলাকার মুক্তিযোদ্ধা এবং অনেক সাধারণ বাঙালিকে এই বধ্যভূমিতে বিভিন্ন সময় ধরে এনে হত্যা করে। শহীদদের সংখ্যাটা প্রায় ১০ হাজার! রহনপুর সরকারি এ বি উচ্চবিদ্যালয়ে ছিল পাকিস্তানিদের ক্যাম্প। এখানেও শত শত মানুষকে ধরে এনে হত্যা করা হয়। বধ্যভূমির যে স্থানে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, সেখানেই শহীদদের সম্মানে নির্মিত হয়েছে একটি স্মৃতিস্তম্ভ। এই বধ্যভূমিটি রহনপুর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবর নামে পরিচিত।
ছবি: সংগৃহীত

আমাদের দেশে যেমন বিয়ের কনে দেখার একটা রীতি আছে, তেমনি কোরবানির গরু দেখারও চল আছে। কম-বেশি সবার শৈশব-কৈশোর কাটে এর-ওর বাড়ি গিয়ে কোরবানির গরু, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি পশু দেখে। অনেকে আবার শৈশব-কৈশোরের এই দুরন্তপনা বুড়ো বয়সেও বজায় রাখেন।
২৭ জুন ২০২৩
মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স-সংলগ্ন ভুরভুরিয়াছড়ার পাশেই বধ্যভূমি ৭১ পার্ক অবস্থিত। সেখানে প্রাচীন একটি বটগাছ রয়েছে, যা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করে। পাকিস্তান আমলে গাছটির নিচে ছিল এক সাধুর আস্তানা।
১ দিন আগে
আমার সৌভাগ্য হয়েছিল আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ঘনিষ্ঠ হওয়ার। হাসান আজিজুল হকের সূত্রেই পরিচয় হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। পরে তাঁর সঙ্গে প্রচুর আড্ডা দেওয়ার সুযোগ হয়েছিল। তিনি ছিলেন তুমুল আড্ডাবাজ মানুষ। আর তাঁর সঙ্গে জগৎ সংসারের যেকোনো বিষয়ে আলাপ করা যেত। এমন কোনো বিষয় নেই যাতে তাঁর আগ্রহ নেই।
৬ দিন আগে
১৯৭১ সালে পুরো বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন হয়েছিল ১৬ ডিসেম্বর। কিন্তু রাজধানীর মিরপুর তখনো শত্রুদের দখলে। পরের বছর জানুয়ারিতে শত্রুমুক্ত হলে একে একে সন্ধান পাওয়া যেতে থাকে বধ্যভূমিগুলোর। ঢাকায় সবচেয়ে বেশি বধ্যভূমি মিরপুর অঞ্চলে। আর মিরপুরের বধ্যভূমিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লাশ পাওয়া যায়...
৭ দিন আগেসম্পাদকীয়

আমার সৌভাগ্য হয়েছিল আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ঘনিষ্ঠ হওয়ার। হাসান আজিজুল হকের সূত্রেই পরিচয় হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। পরে তাঁর সঙ্গে প্রচুর আড্ডা দেওয়ার সুযোগ হয়েছিল। তিনি ছিলেন তুমুল আড্ডাবাজ মানুষ। আর তাঁর সঙ্গে জগৎ সংসারের যেকোনো বিষয়ে আলাপ করা যেত। এমন কোনো বিষয় নেই যাতে তাঁর আগ্রহ নেই। তাঁর সাক্ষাৎকারে এমন কিছু প্রসঙ্গে আলাপ করেছি, যা হয়তো অত স্বচ্ছন্দে হাসান আজিজুল হকের সঙ্গে করতে পারতাম না। যেমন ধরেন যৌনতা-সংক্রান্ত প্রশ্নগুলো। তবে আড্ডাবাজ ব্যক্তিত্বের জন্যও তাঁর সাক্ষাৎকারটি হয়েছে অনেক প্রাণবন্ত। তাঁকে তো বাম ঘরানার লেখকই ধরা হয়, মার্ক্সবাদে তাঁর বিশ্বাস ছিল। তবে তিনি কিন্তু গোঁড়া মার্ক্সবাদী ছিলেন না।
আমি এ ব্যাপারটিও তাঁর সঙ্গে খোলাসা করার জন্য আলাপ করেছি। সোশ্যালিস্ট রিয়েলিজমের নামে একসময় একধরনের যান্ত্রিক মার্ক্সবাদ চর্চা হয়েছে সাহিত্যে। তিনি এর ঘোর বিরোধী ছিলেন। তিনি এ সাক্ষাৎকারেই বলেছেন, এ দেশের মার্ক্সবাদীদের অনেক জ্ঞান থাকলেও কাণ্ডজ্ঞান নেই। তিনি তাঁর লেখায় জীবনকে একেবারে ভেতর থেকে ধরার চেষ্টা করেছেন। অহেতুক শ্রমিকশ্রেণির জয়গান গাননি, লাল পতাকা ওঠাননি। আমার সাক্ষাৎকারে সেক্সের সঙ্গে ক্লাস পজিশনের সম্পর্ক নিয়ে কথা আছে। তিনি এও বলছেন, তাঁর চিলেকোঠার সেপাইয়ের রিকশাশ্রমিক হাড্ডি খিজির যে চরিত্র, তাকে তিনি মহান করে দেখাননি, শুধু শ্রমিকশ্রেণির বিজয়গাথা তিনি দেখাননি।
বরং হাড্ডি খিজির যে একটি লুম্পেন চরিত্র, তার ভেতর যে নানা জোচ্চুরি আছে, সেটাকেও দেখিয়েছেন। এই যে মানুষকে টোটালিটিতে দেখতে এবং দেখাতে পারা, এটাই আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের শক্তি।
তো এগুলো নিয়ে বিভিন্ন সময় কথা হতো তাঁর সঙ্গে, সেটাকেই আমি সাক্ষাৎকারে ধরতে চেষ্টা করেছি।
সূত্র: মঞ্জুরুল আজিম পলাশ কর্তৃক কথাসাহিত্যিক শাহাদুজ্জামানের সাক্ষাৎকার গ্রহণ, ‘দূরগামী কথার ভেতর’, পৃষ্ঠা: ২৭-২৮।

আমার সৌভাগ্য হয়েছিল আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ঘনিষ্ঠ হওয়ার। হাসান আজিজুল হকের সূত্রেই পরিচয় হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। পরে তাঁর সঙ্গে প্রচুর আড্ডা দেওয়ার সুযোগ হয়েছিল। তিনি ছিলেন তুমুল আড্ডাবাজ মানুষ। আর তাঁর সঙ্গে জগৎ সংসারের যেকোনো বিষয়ে আলাপ করা যেত। এমন কোনো বিষয় নেই যাতে তাঁর আগ্রহ নেই। তাঁর সাক্ষাৎকারে এমন কিছু প্রসঙ্গে আলাপ করেছি, যা হয়তো অত স্বচ্ছন্দে হাসান আজিজুল হকের সঙ্গে করতে পারতাম না। যেমন ধরেন যৌনতা-সংক্রান্ত প্রশ্নগুলো। তবে আড্ডাবাজ ব্যক্তিত্বের জন্যও তাঁর সাক্ষাৎকারটি হয়েছে অনেক প্রাণবন্ত। তাঁকে তো বাম ঘরানার লেখকই ধরা হয়, মার্ক্সবাদে তাঁর বিশ্বাস ছিল। তবে তিনি কিন্তু গোঁড়া মার্ক্সবাদী ছিলেন না।
আমি এ ব্যাপারটিও তাঁর সঙ্গে খোলাসা করার জন্য আলাপ করেছি। সোশ্যালিস্ট রিয়েলিজমের নামে একসময় একধরনের যান্ত্রিক মার্ক্সবাদ চর্চা হয়েছে সাহিত্যে। তিনি এর ঘোর বিরোধী ছিলেন। তিনি এ সাক্ষাৎকারেই বলেছেন, এ দেশের মার্ক্সবাদীদের অনেক জ্ঞান থাকলেও কাণ্ডজ্ঞান নেই। তিনি তাঁর লেখায় জীবনকে একেবারে ভেতর থেকে ধরার চেষ্টা করেছেন। অহেতুক শ্রমিকশ্রেণির জয়গান গাননি, লাল পতাকা ওঠাননি। আমার সাক্ষাৎকারে সেক্সের সঙ্গে ক্লাস পজিশনের সম্পর্ক নিয়ে কথা আছে। তিনি এও বলছেন, তাঁর চিলেকোঠার সেপাইয়ের রিকশাশ্রমিক হাড্ডি খিজির যে চরিত্র, তাকে তিনি মহান করে দেখাননি, শুধু শ্রমিকশ্রেণির বিজয়গাথা তিনি দেখাননি।
বরং হাড্ডি খিজির যে একটি লুম্পেন চরিত্র, তার ভেতর যে নানা জোচ্চুরি আছে, সেটাকেও দেখিয়েছেন। এই যে মানুষকে টোটালিটিতে দেখতে এবং দেখাতে পারা, এটাই আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের শক্তি।
তো এগুলো নিয়ে বিভিন্ন সময় কথা হতো তাঁর সঙ্গে, সেটাকেই আমি সাক্ষাৎকারে ধরতে চেষ্টা করেছি।
সূত্র: মঞ্জুরুল আজিম পলাশ কর্তৃক কথাসাহিত্যিক শাহাদুজ্জামানের সাক্ষাৎকার গ্রহণ, ‘দূরগামী কথার ভেতর’, পৃষ্ঠা: ২৭-২৮।

আমাদের দেশে যেমন বিয়ের কনে দেখার একটা রীতি আছে, তেমনি কোরবানির গরু দেখারও চল আছে। কম-বেশি সবার শৈশব-কৈশোর কাটে এর-ওর বাড়ি গিয়ে কোরবানির গরু, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি পশু দেখে। অনেকে আবার শৈশব-কৈশোরের এই দুরন্তপনা বুড়ো বয়সেও বজায় রাখেন।
২৭ জুন ২০২৩
মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স-সংলগ্ন ভুরভুরিয়াছড়ার পাশেই বধ্যভূমি ৭১ পার্ক অবস্থিত। সেখানে প্রাচীন একটি বটগাছ রয়েছে, যা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করে। পাকিস্তান আমলে গাছটির নিচে ছিল এক সাধুর আস্তানা।
১ দিন আগে
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর রেলস্টেশনের কাছেই রয়েছে একটি বধ্যভূমি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে সহযোগীদের সহায়তায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী রহনপুর ও আশপাশের এলাকার মুক্তিযোদ্ধা এবং অনেক সাধারণ বাঙালিকে এই বধ্যভূমিতে বিভিন্ন সময় ধরে এনে হত্যা করে।
৫ দিন আগে
১৯৭১ সালে পুরো বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন হয়েছিল ১৬ ডিসেম্বর। কিন্তু রাজধানীর মিরপুর তখনো শত্রুদের দখলে। পরের বছর জানুয়ারিতে শত্রুমুক্ত হলে একে একে সন্ধান পাওয়া যেতে থাকে বধ্যভূমিগুলোর। ঢাকায় সবচেয়ে বেশি বধ্যভূমি মিরপুর অঞ্চলে। আর মিরপুরের বধ্যভূমিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লাশ পাওয়া যায়...
৭ দিন আগেসম্পাদকীয়

১৯৭১ সালে পুরো বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন হয়েছিল ১৬ ডিসেম্বর। কিন্তু রাজধানীর মিরপুর তখনো শত্রুদের দখলে। পরের বছর জানুয়ারিতে শত্রুমুক্ত হলে একে একে সন্ধান পাওয়া যেতে থাকে বধ্যভূমিগুলোর। ঢাকায় সবচেয়ে বেশি বধ্যভূমি মিরপুর অঞ্চলে। আর মিরপুরের বধ্যভূমিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লাশ পাওয়া যায় শিয়ালবাড়ি এলাকায়। মিরপুরের প্রশিকা ভবন থেকে কমার্স কলেজের দিকে যেতে একটি কালভার্ট ছিল। এখন যদিও রাস্তার মাঝে ঢাকা পড়েছে। সেখানেই ৬০টি বস্তায় প্রায় ৩৫০টি মাথার খুলি পাওয়া গিয়েছিল। সৈয়দ আলী জামে মসজিদের পাশের কুয়ায় পাওয়া গিয়েছিল অসংখ্য লাশ। ৬ নম্বর লেনের শেষ প্রান্তের মাঠে স্তূপাকারে পড়ে থাকা দুই শতাধিক লাশ শিয়ালবাড়ি গণকবরে কবর দেওয়া হয়। এটি ছিল ১০ কাঠা জমির ওপর। বেশির ভাগই দখল হয়ে গেছে। যেটুকু অংশ বাকি আছে, তা বর্তমানে মাতবরবাড়ি পারিবারিক কবরস্থান। শিয়ালবাড়ির যেসব কুয়ায় শহীদদের লাশ পাওয়া গিয়েছিল, সেখানে এখন বহুতল ভবন, কারখানা, শপিং মল।
তথ্য ও ছবি: মিরপুরের ১০টি বধ্যভূমি, মিরাজ মিজু

১৯৭১ সালে পুরো বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন হয়েছিল ১৬ ডিসেম্বর। কিন্তু রাজধানীর মিরপুর তখনো শত্রুদের দখলে। পরের বছর জানুয়ারিতে শত্রুমুক্ত হলে একে একে সন্ধান পাওয়া যেতে থাকে বধ্যভূমিগুলোর। ঢাকায় সবচেয়ে বেশি বধ্যভূমি মিরপুর অঞ্চলে। আর মিরপুরের বধ্যভূমিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লাশ পাওয়া যায় শিয়ালবাড়ি এলাকায়। মিরপুরের প্রশিকা ভবন থেকে কমার্স কলেজের দিকে যেতে একটি কালভার্ট ছিল। এখন যদিও রাস্তার মাঝে ঢাকা পড়েছে। সেখানেই ৬০টি বস্তায় প্রায় ৩৫০টি মাথার খুলি পাওয়া গিয়েছিল। সৈয়দ আলী জামে মসজিদের পাশের কুয়ায় পাওয়া গিয়েছিল অসংখ্য লাশ। ৬ নম্বর লেনের শেষ প্রান্তের মাঠে স্তূপাকারে পড়ে থাকা দুই শতাধিক লাশ শিয়ালবাড়ি গণকবরে কবর দেওয়া হয়। এটি ছিল ১০ কাঠা জমির ওপর। বেশির ভাগই দখল হয়ে গেছে। যেটুকু অংশ বাকি আছে, তা বর্তমানে মাতবরবাড়ি পারিবারিক কবরস্থান। শিয়ালবাড়ির যেসব কুয়ায় শহীদদের লাশ পাওয়া গিয়েছিল, সেখানে এখন বহুতল ভবন, কারখানা, শপিং মল।
তথ্য ও ছবি: মিরপুরের ১০টি বধ্যভূমি, মিরাজ মিজু

আমাদের দেশে যেমন বিয়ের কনে দেখার একটা রীতি আছে, তেমনি কোরবানির গরু দেখারও চল আছে। কম-বেশি সবার শৈশব-কৈশোর কাটে এর-ওর বাড়ি গিয়ে কোরবানির গরু, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি পশু দেখে। অনেকে আবার শৈশব-কৈশোরের এই দুরন্তপনা বুড়ো বয়সেও বজায় রাখেন।
২৭ জুন ২০২৩
মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স-সংলগ্ন ভুরভুরিয়াছড়ার পাশেই বধ্যভূমি ৭১ পার্ক অবস্থিত। সেখানে প্রাচীন একটি বটগাছ রয়েছে, যা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করে। পাকিস্তান আমলে গাছটির নিচে ছিল এক সাধুর আস্তানা।
১ দিন আগে
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর রেলস্টেশনের কাছেই রয়েছে একটি বধ্যভূমি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে সহযোগীদের সহায়তায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী রহনপুর ও আশপাশের এলাকার মুক্তিযোদ্ধা এবং অনেক সাধারণ বাঙালিকে এই বধ্যভূমিতে বিভিন্ন সময় ধরে এনে হত্যা করে।
৫ দিন আগে
আমার সৌভাগ্য হয়েছিল আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ঘনিষ্ঠ হওয়ার। হাসান আজিজুল হকের সূত্রেই পরিচয় হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। পরে তাঁর সঙ্গে প্রচুর আড্ডা দেওয়ার সুযোগ হয়েছিল। তিনি ছিলেন তুমুল আড্ডাবাজ মানুষ। আর তাঁর সঙ্গে জগৎ সংসারের যেকোনো বিষয়ে আলাপ করা যেত। এমন কোনো বিষয় নেই যাতে তাঁর আগ্রহ নেই।
৬ দিন আগে