Ajker Patrika

কার্ল মার্ক্স

সম্পাদকীয়
আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২৪, ০৮: ১৪
কার্ল মার্ক্স

মানবসভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে প্রভাবশালী চিন্তাবিদ ছিলেন কার্ল মার্ক্স। একই সঙ্গে তিনি ছিলেন সমাজবিজ্ঞানী, অর্থনীতিবিদ, দার্শনিক ও রাজনীতিবিদ।

অপার নিষ্ঠা, অধ্যবসায় ও একাগ্রতা নিয়ে তিনি সারা জীবন জ্ঞানের চর্চা করেছেন শুধু মানুষের মুক্তির পথ অন্বেষণের জন্য। এ জন্য তিনি অনুসরণ করেছেন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। প্রশ্ন করতে বাকি রাখেননি কোনো কিছুকেই, সবকিছুই বিচার করেছেন যুক্তি, তথ্য আর প্রমাণের নিপুণ নিক্তিতে। আর মার্ক্সের বিরোধটা বরাবরই শাসকশ্রেণির বিরুদ্ধে ছিল।

তাঁর জ্ঞানচর্চার ব্যাপ্তি সুবৃহৎ পরিসরে ছিল। একজীবনে এই মানুষটি এত লিখেছেন এবং আরও কিছু লেখার জন্য এত বেশি প্রস্তুতি নিয়ে নোট করে রেখেছিলেন যে সবকিছু শেষ করে যেতে পারেননি। এখনো তিনি বিতর্ক তৈরি করেন পণ্ডিতদের মধ্যে।

অর্থনীতিতে মার্ক্সের সবচেয়ে বড় অবদান পুঁজির পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ। জার্মান অর্থনীতিবিদ ডেভিড রিকার্ডো ও অ্যাডাম স্মিথের সীমাবদ্ধতাকে তিনি অতিক্রম করেছেন তাঁর বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি ও কর্মপদ্ধতির মাধ্যমে। তিনি তাঁর বিখ্যাত ‘পুঁজি’ গ্রন্থটিতে অর্থনীতির যুগান্তকারী সব প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন।

তাঁর স্বকীয়তা শুধু জ্ঞানের সাধনায় ছিল না। অন্যান্য দার্শনিকের মতো মার্ক্স নিজেকে শুধু জ্ঞানচর্চায় সীমাবদ্ধ রাখেননি; বরং শাসকশ্রেণির কঠোর সমালোচনার পাশাপাশি তিনি ছিলেন রাজনৈতিক সংগঠকও।

রাজনৈতিক দর্শন ও কার্যক্রমের জন্যই মার্ক্সের জীবন কেটেছে ইউরোপের এক দেশ থেকে আরেক দেশে, রাজতন্ত্র বা কর্তৃত্ববাদী সরকারের তাড়া খেয়ে। নিপাট, নির্ঝঞ্ঝাট বুদ্ধিজীবীর জীবন ছেড়ে ইউরোপের শ্রমিকশ্রেণির মধ্যে বিপ্লবের মন্ত্র ফেরি করে বেড়িয়েছেন মার্ক্স। আর্থিক সংকট, স্বাস্থ্যসমস্যা, রাষ্ট্রের তাড়া ও মামলা—কোনো কিছুই থামাতে পারেনি তাঁকে তাঁর সক্রিয়তা থেকে। তাই তিনি হয়ে উঠেছিলেন তাঁর বিপ্লবী তত্ত্বের জীবন্ত প্রতিমূর্তি।

এই মহান বিপ্লবী ১৮৮৩ সালের ১৪ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর সময় তাঁর কোনো জাতীয়তা বা কোনো দেশের নাগরিকত্বের পরিচয় ছিল না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তাসনিম জারাকে দেওয়া টাকা ফেরত চান? উপায় বলে দিলেন জারা নিজেই

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর সামান্তা শারমিনের রহস্যময় পোস্ট

এনসিপি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা তাসনিম জারার

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর তিন এনসিপি নেত্রীর রহস্যময় পোস্ট

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজবাড়ী বধ্যভূমি

সম্পাদকীয়
রাজবাড়ী বধ্যভূমি

রাজবাড়ী শহরেই অবস্থিত বিনোদপুর লোকোশেড। বলা হয় রাজবাড়ী জেলার সবচেয়ে বড় বধ্যভূমি এটি—রাজবাড়ী বধ্যভূমি বা বিনোদপুর লোকোশেড বধ্যভূমি নামে পরিচিত। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বিনোদপুরের লোকোশেড এলাকায় ক্যাম্প বসিয়েছিল। তারা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে অসংখ্য মানুষকে ধরে এনে হত্যা করে লোকোশেডের পুকুরে ফেলে দিত। এমনকি রাজবাড়ী রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীবাহী ট্রেন থামলে সেই ট্রেন থেকেও সন্দেহভাজন মুক্তিকামী বাঙালিদের ধরে নিয়ে আসত লোকোশেড ক্যাম্পে। তাদের সহায়তা করতে দোসররা তো ছিলই। আর ক্যাম্পে আনা বাঙালিদের ভাগ্যে জুটত নির্মম নির্যাতন। এরপর হত্যা। এবং মৃতদেহগুলোর জায়গা হতো সেই পুকুরেই। দুই দশক আগে সরকারি অর্থায়নে সেই শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য বধ্যভূমি এলাকায় নির্মিত হয়েছে একটি স্মৃতিশৌধ।

ছবি: মো. সাকিবুল হাসান, উইকিপিডিয়া

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তাসনিম জারাকে দেওয়া টাকা ফেরত চান? উপায় বলে দিলেন জারা নিজেই

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর সামান্তা শারমিনের রহস্যময় পোস্ট

এনসিপি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা তাসনিম জারার

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর তিন এনসিপি নেত্রীর রহস্যময় পোস্ট

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লেখা ছেড়ে দেওয়া বিষয়ে

সম্পাদকীয়
লেখা ছেড়ে দেওয়া বিষয়ে

ভালো-মন্দ সব জায়গাতেই আছে। সাহিত্য জগতেও যে ভালো মানুষ পাইনি, তা তো নয়। একজন লেখক অসম্ভব স্পর্শকাতর এবং সংবেদনশীল মানুষ। লেখালেখি বিষয়টাই তো সাংঘাতিক স্পর্শকাতর—লেখক এবং লেখা উভয়েই সামান্য কারণে আহত হয়!

...লেখালেখি বিষয়টি একজন লেখকের কাছে সবচেয়ে কোমল আর সূক্ষ্ম অনুভূতি দাবি করে, সবচেয়ে গভীর মনোযোগ দাবি করে, আমার তো এ-ও মনে হয় যে ধ্যানমগ্নতা ছাড়া একজনের পক্ষে লেখকই হওয়া সম্ভব নয়। তো সতীর্থদের নোংরামি দেখে, ভণ্ডামি দেখে, বদমায়েশি দেখে কি একজন প্রকৃত লেখকের আহত হওয়ার কথা নয়?

...আমি তো সব সময় বিশ্বাস করে এসেছি—শিল্পীদের লোভ থাকতে নেই। লোভ থাকলে শিল্প হয় না, যেমন হয় না অসৎ মানুষেরও। শিল্পীর সততা থাকাটা খুব জরুরি, আমি বলব অপরিহার্য। যাই হোক, আমি শুধু সাহিত্য জগতের ভণ্ডামি দেখে লেখালেখি থেকে দূরে সরে এসেছি, সেটা বলা ঠিক হবে না। এটা একটা কারণ ছিল বটে, তবে আরও কারণ নিশ্চয়ই আছে।

আগেই তো তোমাকে বলেছি, আমি শেষের দিকে এসে একঘেয়েমিতে ভুগছিলাম। তা ছাড়া একটা সময় এসব কিছুকেই ভীষণ অর্থহীন মনে হলো আমার কাছে। কী করছি, কেন করছি, এসবের ফলাফল কী, আদৌ এসব করার কোনো অর্থ হয় কি না—এই সব আরকি! সব মিলিয়ে লেখালেখিটা আর ভালো লাগেনি। অবশ্য একবারে পরিকল্পনা করে, সিদ্ধান্ত নিয়ে লেখালেখি বন্ধ করেছিলাম, তা নয়। এ রকম তো সব লেখকেরই হয় যে মাঝে মাঝে ক্লান্তি আসে, মাঝে মাঝে বিশ্রাম নিতে ইচ্ছে করে, মাঝে মাঝে বন্ধ্যত্বও দেখা দেয়। আমার সেটাই হয়েছিল। কিন্তু সব লেখকই সেই সময়টি পেরিয়ে আবার লেখালেখিতে আসেন। আমার আর ফিরে আসা সম্ভব হয়নি। আর এখন তো শারীরিক কারণেই অনেক কিছু করা সম্ভব হয় না। যে উদ্দাম জীবন আমি যাপন করেছি, সেটা শুনলে তোমরা অবাক হয়ে যাবে, আর এখন তো দিনের পর দিন ঘরে বন্দী হয়ে থাকি, বেরুতেই পারি না...

সূত্র: আহমাদ মোস্তফা কামাল কর্তৃক মাহমুদুল হকের সাক্ষাৎকার গ্রহণ, ‘হিরণ্ময় কথকতা’, পৃষ্ঠা ৯০-৯১

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তাসনিম জারাকে দেওয়া টাকা ফেরত চান? উপায় বলে দিলেন জারা নিজেই

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর সামান্তা শারমিনের রহস্যময় পোস্ট

এনসিপি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা তাসনিম জারার

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর তিন এনসিপি নেত্রীর রহস্যময় পোস্ট

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ন্যাশনাল জুট মিলস বধ্যভূমি

সম্পাদকীয়
ন্যাশনাল জুট মিলস বধ্যভূমি

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের শেষ প্রহর। গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় ১ ডিসেম্বর চলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর গণহত্যা। শীতলক্ষ্যার পশ্চিম পারে খলাপাড়া গ্রামে ‘ন্যাশনাল জুট মিলস লি.’ নামে যে কারখানাটি অবস্থিত, সেখানেই নারকীয়ভাবে হত্যা করা হয় মুক্তিযোদ্ধাসহ মিলের মুক্তিকামী শ্রমিক-কর্মচারীদের। শতাধিক বাঙালিকে লাইনে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করে পাকিস্তানি সেনারা। তাঁদের অপরাধ ছিল একটাই—মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণের পরিকল্পনা করা। গণহত্যার পর হানাদার বাহিনী মিলের দক্ষিণ দিকের দেয়াল ভেঙে চলে যায়। মরদেহগুলো তিন-চার দিন মিলের সুপারিবাগানে পড়ে থাকে। শিয়াল-শকুন খুবলে খায় সেগুলো। দেশ স্বাধীন হলে গ্রামবাসী মিলের ভেতরে গিয়ে ১৩৬ জনের লাশ পান। মিলের দক্ষিণ পাশে ১০৬ জনের মৃতদেহকে গণকবরে শায়িত করা হয়। বাকিদের মরদেহ নিয়ে যান স্বজনেরা। ১৯৯৬ সালে শহীদদের সম্মানে মিল কর্তৃপক্ষ ‘শহীদ স্মরণে’ স্মৃতিফলকটি নির্মাণ করে গণকবরের জায়গাটিতে।

ছবি: সংগৃহীত

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তাসনিম জারাকে দেওয়া টাকা ফেরত চান? উপায় বলে দিলেন জারা নিজেই

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর সামান্তা শারমিনের রহস্যময় পোস্ট

এনসিপি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা তাসনিম জারার

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর তিন এনসিপি নেত্রীর রহস্যময় পোস্ট

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বধ্যভূমি ৭১

সম্পাদকীয়
বধ্যভূমি ৭১

মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স-সংলগ্ন ভুরভুরিয়াছড়ার পাশেই বধ্যভূমি ৭১ পার্ক অবস্থিত। সেখানে প্রাচীন একটি বটগাছ রয়েছে, যা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করে। পাকিস্তান আমলে গাছটির নিচে ছিল এক সাধুর আস্তানা। চা-শ্রমিক ও বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এখানে এসে পূজা দিত, মনোবাসনা পূরণে মানত করত। সবাই জায়গাটিকে চিনত ‘সাধু বাবার থলি’ নামে। যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এখানে এনে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। হত্যার আগে বটগাছের ডালে ঝুলিয়ে তাঁদের ওপর অমানবিক অত্যাচার চালানো হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজন ও মুক্তিকামী সাধারণ মানুষও বাদ যাননি। গাছের ডালে উল্টো করে বেঁধে রাখা হতো তাঁদের। নির্যাতনের যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে তাঁরা শহীদ হন। সেই সব শহীদের ত্যাগকে অমর করে রাখতে এখানে নির্মিত হয় ‘বধ্যভূমি ৭১’ নামের স্মৃতিস্তম্ভটি। একাত্তরের স্মৃতিবিজড়িত বধ্যভূমিটিতে আরও রয়েছে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী ৭১’ নামে একটি ভাস্কর্য।

ছবি: সংগৃহীত

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তাসনিম জারাকে দেওয়া টাকা ফেরত চান? উপায় বলে দিলেন জারা নিজেই

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর সামান্তা শারমিনের রহস্যময় পোস্ট

এনসিপি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা তাসনিম জারার

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর তিন এনসিপি নেত্রীর রহস্যময় পোস্ট

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত