তুষার মিয়া

ইদানীং ক্লান্ত লাগছে ভীষণ। দপ্তর পাল্টাচ্ছে না, অবসর নেওয়া যাচ্ছে না। জীবন মূলত সাদাকালো, আপনি ঠিক কখন এক অন্তহীন দৌড়ে শামিল হয়েছেন, তা বুঝতেই পারবেন না। হিসাব করে নির্ণয় করা কঠিন হলেও আপনি নিশ্চিত থাকুন, এই দৌড়েই আছেন।
আপনার অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার কথা মনে আছে? সামনে বৃত্তি পরীক্ষা। পাটিগণিত বীজগণিতের অঙ্ক প্যাঁচ লাগাচ্ছে, বিজ্ঞানের সব সূত্র ভোরে উঠে গলাধঃকরণ করতে হচ্ছে। ছুটতে হচ্ছে প্রাইভেট টিউটরের বাসায়। রাত জেগে পড়াশোনার ওই সময়টা নিশ্চয়ই কাটিয়েছেন?
তখন আমরা সবাই সেই ব্যস্ত সময় কাটিয়েছি। নিশ্চয়ই অভিভাবকেরা বলেছেন, ‘এই তো আর কটা দিনের বৃত্তি পরীক্ষা। শেষ হলেই শান্তি আর শান্তি!’ জীবনের নানা আয়োজনে আপনি এমন কথা অবশ্যই শুনেছেন।
এরপর শোনা গেছে, ‘এসএসসি পরীক্ষাটা দাও, কলেজে উঠলেই তো স্বাধীন জীবন’ বা ‘একবার ভার্সিটিতে উঠতে পারলেই হবে জীবন আনন্দের।’ পড়াশোনার শেষ দিকে এসে নিশ্চয়ই মনে হয়েছে, ‘আহা, একবার পেশাজীবনে ঢুকলেই আরাম-আয়েশ!’
এসব ভাবনা এখন মেলাতে পারবেন কি? কখনো কি মনে হয়, ‘মিথ্যা’ এক মরীচিকার আশায় আমরা ছুটেছি বা আমাদের ছোটানো হয়েছে?
ডেবিট-ক্রেডিট মেলাতে গেলে কখনো কখনো মনে হবে হিসাব মেলেনি। হিসাব না মিললে বুঝবেন, আপনি আছেন ইঁদুরদৌড়ে! মানুষের জীবনে এই শব্দের অর্থ কিন্তু সুদূরপ্রসারী। মাঝে মাঝে কি বোধ হয় না যে আমরা নেশাগ্রস্তের মতো অন্ধ হয়ে ছুটেছি সফলতার পেছনে?
এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিখ্যাত পপগায়ক মাইকেল জ্যাকসনের একটি ঘটনা মনে পড়ে যায়। ২০০৯ সালে অপ্রত্যাশিতভাবে মারা যান তিনি। তখন তাঁর ঋণ ছিল কয়েক শ মিলিয়ন ডলার। ঋণ মেটাতে তাঁর বিখ্যাত বাসস্থান বিক্রির কথাও উঠেছিল তখন। বিপুল পরিমাণ খরচের জন্য জ্যাকসনের প্রচুর ঋণ নেওয়ার দরকার হতো। অথচ মাইকেল জীবনে দুহাত ভরে অর্থ রোজগার করেছেন। তুমুল জনপ্রিয়তায় ভেসেছেন। কিন্তু সেই মানুষটিরই কিনা ছিল কয়েক শ মিলিয়ন ডলারের ঋণের বোঝা! অবাক লাগছে?
মাইকেল ছিলেন মহাতারকা। তিনি দুই হাতে টাকা কামিয়েছেন, কিন্তু পাল্লা দিয়ে লম্বা হয়েছে তাঁর খরচের তালিকা। মাইকেল উদয়াস্ত পরিশ্রম করে টাকা কামিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু সেই টাকা রাখতে পারেননি; পকেটের ছিদ্র দিয়ে সেটা চলে গেছে বাহারি খরচের নোনা জলে ভেসে। আপনি-আমি কেউই মাইকেলের মতো টাকার সাগরে শুয়ে থাকা মানুষ নই। আমরা নিতান্তই ছা-পোষা; সংগ্রাম করে টাকা কামাই, জীবন যাপন করি।
এই যে আমরা মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আয় করছি। ২০ হাজার, ৩০ হাজার কিংবা ৫০ হাজার; অঙ্কটা য-ই হোক না, কতটুকু নিজের কাছে রাখতে পারছি আমরা? চাকরিজীবী হিসেবে প্রতি মাসের বেতন যখন অ্যাকাউন্টে ঢোকে; মোবাইলের মেসেজটি পেয়ে স্বস্তির নিশ্বাস কি পড়ে? নাকি আসছে মাস এই টাকায় কীভাবে চলবেন, সেই দুশ্চিন্তায় কপালে ভাঁজ পড়ে? প্রশ্নটার উত্তর ভাবা যেতে পারে। তা যে উত্তরই আসুক না কেন!
টানাটানির সংসারের কথা বাদ দিই। তাদের কথা কে আর জানতে চায়! একটু ভালো অঙ্কের টাকা আয় করেন বা চড়া বেতনে যাঁরা চাকরি করেন, তাঁদেরই উদাহরণ হিসেবে ধরি। কারও বেতন ৩০ হাজার টাকা হলে সে অনুযায়ী নিজের জীবন সাজান। দৈনন্দিন মাসের বাজার বা শখের কেনাকাটা—সবকিছুই ৩০ হাজার টাকার মধ্যে সেরে ফেলার আপ্রাণ চেষ্টা চলে। এখন হুট করে আয় যদি মাসে ৫০ হাজার টাকা হয়ে যায়, ৩০ হাজার টাকার সেই জীবনমানে কিন্তু কেউ আর থাকতে চায় না। হয়তো ১২০ সিসির বাইক তখন আপনার পোষাবে না। একটি ব্র্যান্ড নিউ মোটরসাইকেল বা রিকন্ডিশন্ড গাড়ির দিকে ঝুঁকতে চাইবে মন। গাড়ি কেনা হলে ফ্ল্যাট-বাড়ির দিকেও নজর যাবে। এসব করতে করতে একদিন টুপ করে হয়তো চলে যাওয়া হবে চিরতরে। আর তার ঠিক আগে আবিষ্কার হবে, টাকা কামাই আর খরচ করা ছাড়া অন্য কিছুই করা হলো না জীবনে! তখন কি দুঃখবোধক প্রশ্ন জাগবে এই ভেবে যে, এমন জীবনই কি চাওয়া-পাওয়ার মধ্যে আকাঙ্ক্ষিত ছিল?
এই প্রশ্নের উত্তরে মিলবে শুধু টাকা আয় ও ব্যয়ের হিসাব। যেকোনো ধরনের সঞ্চয় (টাকা বা অন্য কিছুর) সেখানে অনুপস্থিত। বোধ হয়, স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে পুরো জীবনটাই আমরা শুধু দৌড়াতেই শিখে গেছি। কেউ বলেনি, তিষ্ঠ ক্ষণকাল! থামতে কেউ শেখায়নি আসলে। তাই দিনের শেষে ক্লান্ত অবয়বে হিসাব কষতে বসে আমরা আয়নায় দেখতে পাচ্ছি ইঁদুরের অবয়বে অবিরাম ছুটে চলার দৃশ্য। তাতে ত্রস্ততা আছে, ব্যস্ততা আছে। কিন্তু হাঁফ ছেড়ে দম নেওয়া নেই।
এমন দমবন্ধ বোধ হলে বুঝবেন বন্ধু, আপনি পড়ে গেছেন অসুস্থ এক গোলকধাঁধায়। এখান থেকে বের হওয়ার পথ দুর্গম বটে। তবে বের হতে না পারলে কথিত ‘সুখ’ হয়তো মরুর মরীচিকাই থেকে যাবে চিরকাল!

ইদানীং ক্লান্ত লাগছে ভীষণ। দপ্তর পাল্টাচ্ছে না, অবসর নেওয়া যাচ্ছে না। জীবন মূলত সাদাকালো, আপনি ঠিক কখন এক অন্তহীন দৌড়ে শামিল হয়েছেন, তা বুঝতেই পারবেন না। হিসাব করে নির্ণয় করা কঠিন হলেও আপনি নিশ্চিত থাকুন, এই দৌড়েই আছেন।
আপনার অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার কথা মনে আছে? সামনে বৃত্তি পরীক্ষা। পাটিগণিত বীজগণিতের অঙ্ক প্যাঁচ লাগাচ্ছে, বিজ্ঞানের সব সূত্র ভোরে উঠে গলাধঃকরণ করতে হচ্ছে। ছুটতে হচ্ছে প্রাইভেট টিউটরের বাসায়। রাত জেগে পড়াশোনার ওই সময়টা নিশ্চয়ই কাটিয়েছেন?
তখন আমরা সবাই সেই ব্যস্ত সময় কাটিয়েছি। নিশ্চয়ই অভিভাবকেরা বলেছেন, ‘এই তো আর কটা দিনের বৃত্তি পরীক্ষা। শেষ হলেই শান্তি আর শান্তি!’ জীবনের নানা আয়োজনে আপনি এমন কথা অবশ্যই শুনেছেন।
এরপর শোনা গেছে, ‘এসএসসি পরীক্ষাটা দাও, কলেজে উঠলেই তো স্বাধীন জীবন’ বা ‘একবার ভার্সিটিতে উঠতে পারলেই হবে জীবন আনন্দের।’ পড়াশোনার শেষ দিকে এসে নিশ্চয়ই মনে হয়েছে, ‘আহা, একবার পেশাজীবনে ঢুকলেই আরাম-আয়েশ!’
এসব ভাবনা এখন মেলাতে পারবেন কি? কখনো কি মনে হয়, ‘মিথ্যা’ এক মরীচিকার আশায় আমরা ছুটেছি বা আমাদের ছোটানো হয়েছে?
ডেবিট-ক্রেডিট মেলাতে গেলে কখনো কখনো মনে হবে হিসাব মেলেনি। হিসাব না মিললে বুঝবেন, আপনি আছেন ইঁদুরদৌড়ে! মানুষের জীবনে এই শব্দের অর্থ কিন্তু সুদূরপ্রসারী। মাঝে মাঝে কি বোধ হয় না যে আমরা নেশাগ্রস্তের মতো অন্ধ হয়ে ছুটেছি সফলতার পেছনে?
এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিখ্যাত পপগায়ক মাইকেল জ্যাকসনের একটি ঘটনা মনে পড়ে যায়। ২০০৯ সালে অপ্রত্যাশিতভাবে মারা যান তিনি। তখন তাঁর ঋণ ছিল কয়েক শ মিলিয়ন ডলার। ঋণ মেটাতে তাঁর বিখ্যাত বাসস্থান বিক্রির কথাও উঠেছিল তখন। বিপুল পরিমাণ খরচের জন্য জ্যাকসনের প্রচুর ঋণ নেওয়ার দরকার হতো। অথচ মাইকেল জীবনে দুহাত ভরে অর্থ রোজগার করেছেন। তুমুল জনপ্রিয়তায় ভেসেছেন। কিন্তু সেই মানুষটিরই কিনা ছিল কয়েক শ মিলিয়ন ডলারের ঋণের বোঝা! অবাক লাগছে?
মাইকেল ছিলেন মহাতারকা। তিনি দুই হাতে টাকা কামিয়েছেন, কিন্তু পাল্লা দিয়ে লম্বা হয়েছে তাঁর খরচের তালিকা। মাইকেল উদয়াস্ত পরিশ্রম করে টাকা কামিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু সেই টাকা রাখতে পারেননি; পকেটের ছিদ্র দিয়ে সেটা চলে গেছে বাহারি খরচের নোনা জলে ভেসে। আপনি-আমি কেউই মাইকেলের মতো টাকার সাগরে শুয়ে থাকা মানুষ নই। আমরা নিতান্তই ছা-পোষা; সংগ্রাম করে টাকা কামাই, জীবন যাপন করি।
এই যে আমরা মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আয় করছি। ২০ হাজার, ৩০ হাজার কিংবা ৫০ হাজার; অঙ্কটা য-ই হোক না, কতটুকু নিজের কাছে রাখতে পারছি আমরা? চাকরিজীবী হিসেবে প্রতি মাসের বেতন যখন অ্যাকাউন্টে ঢোকে; মোবাইলের মেসেজটি পেয়ে স্বস্তির নিশ্বাস কি পড়ে? নাকি আসছে মাস এই টাকায় কীভাবে চলবেন, সেই দুশ্চিন্তায় কপালে ভাঁজ পড়ে? প্রশ্নটার উত্তর ভাবা যেতে পারে। তা যে উত্তরই আসুক না কেন!
টানাটানির সংসারের কথা বাদ দিই। তাদের কথা কে আর জানতে চায়! একটু ভালো অঙ্কের টাকা আয় করেন বা চড়া বেতনে যাঁরা চাকরি করেন, তাঁদেরই উদাহরণ হিসেবে ধরি। কারও বেতন ৩০ হাজার টাকা হলে সে অনুযায়ী নিজের জীবন সাজান। দৈনন্দিন মাসের বাজার বা শখের কেনাকাটা—সবকিছুই ৩০ হাজার টাকার মধ্যে সেরে ফেলার আপ্রাণ চেষ্টা চলে। এখন হুট করে আয় যদি মাসে ৫০ হাজার টাকা হয়ে যায়, ৩০ হাজার টাকার সেই জীবনমানে কিন্তু কেউ আর থাকতে চায় না। হয়তো ১২০ সিসির বাইক তখন আপনার পোষাবে না। একটি ব্র্যান্ড নিউ মোটরসাইকেল বা রিকন্ডিশন্ড গাড়ির দিকে ঝুঁকতে চাইবে মন। গাড়ি কেনা হলে ফ্ল্যাট-বাড়ির দিকেও নজর যাবে। এসব করতে করতে একদিন টুপ করে হয়তো চলে যাওয়া হবে চিরতরে। আর তার ঠিক আগে আবিষ্কার হবে, টাকা কামাই আর খরচ করা ছাড়া অন্য কিছুই করা হলো না জীবনে! তখন কি দুঃখবোধক প্রশ্ন জাগবে এই ভেবে যে, এমন জীবনই কি চাওয়া-পাওয়ার মধ্যে আকাঙ্ক্ষিত ছিল?
এই প্রশ্নের উত্তরে মিলবে শুধু টাকা আয় ও ব্যয়ের হিসাব। যেকোনো ধরনের সঞ্চয় (টাকা বা অন্য কিছুর) সেখানে অনুপস্থিত। বোধ হয়, স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে পুরো জীবনটাই আমরা শুধু দৌড়াতেই শিখে গেছি। কেউ বলেনি, তিষ্ঠ ক্ষণকাল! থামতে কেউ শেখায়নি আসলে। তাই দিনের শেষে ক্লান্ত অবয়বে হিসাব কষতে বসে আমরা আয়নায় দেখতে পাচ্ছি ইঁদুরের অবয়বে অবিরাম ছুটে চলার দৃশ্য। তাতে ত্রস্ততা আছে, ব্যস্ততা আছে। কিন্তু হাঁফ ছেড়ে দম নেওয়া নেই।
এমন দমবন্ধ বোধ হলে বুঝবেন বন্ধু, আপনি পড়ে গেছেন অসুস্থ এক গোলকধাঁধায়। এখান থেকে বের হওয়ার পথ দুর্গম বটে। তবে বের হতে না পারলে কথিত ‘সুখ’ হয়তো মরুর মরীচিকাই থেকে যাবে চিরকাল!
তুষার মিয়া

ইদানীং ক্লান্ত লাগছে ভীষণ। দপ্তর পাল্টাচ্ছে না, অবসর নেওয়া যাচ্ছে না। জীবন মূলত সাদাকালো, আপনি ঠিক কখন এক অন্তহীন দৌড়ে শামিল হয়েছেন, তা বুঝতেই পারবেন না। হিসাব করে নির্ণয় করা কঠিন হলেও আপনি নিশ্চিত থাকুন, এই দৌড়েই আছেন।
আপনার অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার কথা মনে আছে? সামনে বৃত্তি পরীক্ষা। পাটিগণিত বীজগণিতের অঙ্ক প্যাঁচ লাগাচ্ছে, বিজ্ঞানের সব সূত্র ভোরে উঠে গলাধঃকরণ করতে হচ্ছে। ছুটতে হচ্ছে প্রাইভেট টিউটরের বাসায়। রাত জেগে পড়াশোনার ওই সময়টা নিশ্চয়ই কাটিয়েছেন?
তখন আমরা সবাই সেই ব্যস্ত সময় কাটিয়েছি। নিশ্চয়ই অভিভাবকেরা বলেছেন, ‘এই তো আর কটা দিনের বৃত্তি পরীক্ষা। শেষ হলেই শান্তি আর শান্তি!’ জীবনের নানা আয়োজনে আপনি এমন কথা অবশ্যই শুনেছেন।
এরপর শোনা গেছে, ‘এসএসসি পরীক্ষাটা দাও, কলেজে উঠলেই তো স্বাধীন জীবন’ বা ‘একবার ভার্সিটিতে উঠতে পারলেই হবে জীবন আনন্দের।’ পড়াশোনার শেষ দিকে এসে নিশ্চয়ই মনে হয়েছে, ‘আহা, একবার পেশাজীবনে ঢুকলেই আরাম-আয়েশ!’
এসব ভাবনা এখন মেলাতে পারবেন কি? কখনো কি মনে হয়, ‘মিথ্যা’ এক মরীচিকার আশায় আমরা ছুটেছি বা আমাদের ছোটানো হয়েছে?
ডেবিট-ক্রেডিট মেলাতে গেলে কখনো কখনো মনে হবে হিসাব মেলেনি। হিসাব না মিললে বুঝবেন, আপনি আছেন ইঁদুরদৌড়ে! মানুষের জীবনে এই শব্দের অর্থ কিন্তু সুদূরপ্রসারী। মাঝে মাঝে কি বোধ হয় না যে আমরা নেশাগ্রস্তের মতো অন্ধ হয়ে ছুটেছি সফলতার পেছনে?
এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিখ্যাত পপগায়ক মাইকেল জ্যাকসনের একটি ঘটনা মনে পড়ে যায়। ২০০৯ সালে অপ্রত্যাশিতভাবে মারা যান তিনি। তখন তাঁর ঋণ ছিল কয়েক শ মিলিয়ন ডলার। ঋণ মেটাতে তাঁর বিখ্যাত বাসস্থান বিক্রির কথাও উঠেছিল তখন। বিপুল পরিমাণ খরচের জন্য জ্যাকসনের প্রচুর ঋণ নেওয়ার দরকার হতো। অথচ মাইকেল জীবনে দুহাত ভরে অর্থ রোজগার করেছেন। তুমুল জনপ্রিয়তায় ভেসেছেন। কিন্তু সেই মানুষটিরই কিনা ছিল কয়েক শ মিলিয়ন ডলারের ঋণের বোঝা! অবাক লাগছে?
মাইকেল ছিলেন মহাতারকা। তিনি দুই হাতে টাকা কামিয়েছেন, কিন্তু পাল্লা দিয়ে লম্বা হয়েছে তাঁর খরচের তালিকা। মাইকেল উদয়াস্ত পরিশ্রম করে টাকা কামিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু সেই টাকা রাখতে পারেননি; পকেটের ছিদ্র দিয়ে সেটা চলে গেছে বাহারি খরচের নোনা জলে ভেসে। আপনি-আমি কেউই মাইকেলের মতো টাকার সাগরে শুয়ে থাকা মানুষ নই। আমরা নিতান্তই ছা-পোষা; সংগ্রাম করে টাকা কামাই, জীবন যাপন করি।
এই যে আমরা মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আয় করছি। ২০ হাজার, ৩০ হাজার কিংবা ৫০ হাজার; অঙ্কটা য-ই হোক না, কতটুকু নিজের কাছে রাখতে পারছি আমরা? চাকরিজীবী হিসেবে প্রতি মাসের বেতন যখন অ্যাকাউন্টে ঢোকে; মোবাইলের মেসেজটি পেয়ে স্বস্তির নিশ্বাস কি পড়ে? নাকি আসছে মাস এই টাকায় কীভাবে চলবেন, সেই দুশ্চিন্তায় কপালে ভাঁজ পড়ে? প্রশ্নটার উত্তর ভাবা যেতে পারে। তা যে উত্তরই আসুক না কেন!
টানাটানির সংসারের কথা বাদ দিই। তাদের কথা কে আর জানতে চায়! একটু ভালো অঙ্কের টাকা আয় করেন বা চড়া বেতনে যাঁরা চাকরি করেন, তাঁদেরই উদাহরণ হিসেবে ধরি। কারও বেতন ৩০ হাজার টাকা হলে সে অনুযায়ী নিজের জীবন সাজান। দৈনন্দিন মাসের বাজার বা শখের কেনাকাটা—সবকিছুই ৩০ হাজার টাকার মধ্যে সেরে ফেলার আপ্রাণ চেষ্টা চলে। এখন হুট করে আয় যদি মাসে ৫০ হাজার টাকা হয়ে যায়, ৩০ হাজার টাকার সেই জীবনমানে কিন্তু কেউ আর থাকতে চায় না। হয়তো ১২০ সিসির বাইক তখন আপনার পোষাবে না। একটি ব্র্যান্ড নিউ মোটরসাইকেল বা রিকন্ডিশন্ড গাড়ির দিকে ঝুঁকতে চাইবে মন। গাড়ি কেনা হলে ফ্ল্যাট-বাড়ির দিকেও নজর যাবে। এসব করতে করতে একদিন টুপ করে হয়তো চলে যাওয়া হবে চিরতরে। আর তার ঠিক আগে আবিষ্কার হবে, টাকা কামাই আর খরচ করা ছাড়া অন্য কিছুই করা হলো না জীবনে! তখন কি দুঃখবোধক প্রশ্ন জাগবে এই ভেবে যে, এমন জীবনই কি চাওয়া-পাওয়ার মধ্যে আকাঙ্ক্ষিত ছিল?
এই প্রশ্নের উত্তরে মিলবে শুধু টাকা আয় ও ব্যয়ের হিসাব। যেকোনো ধরনের সঞ্চয় (টাকা বা অন্য কিছুর) সেখানে অনুপস্থিত। বোধ হয়, স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে পুরো জীবনটাই আমরা শুধু দৌড়াতেই শিখে গেছি। কেউ বলেনি, তিষ্ঠ ক্ষণকাল! থামতে কেউ শেখায়নি আসলে। তাই দিনের শেষে ক্লান্ত অবয়বে হিসাব কষতে বসে আমরা আয়নায় দেখতে পাচ্ছি ইঁদুরের অবয়বে অবিরাম ছুটে চলার দৃশ্য। তাতে ত্রস্ততা আছে, ব্যস্ততা আছে। কিন্তু হাঁফ ছেড়ে দম নেওয়া নেই।
এমন দমবন্ধ বোধ হলে বুঝবেন বন্ধু, আপনি পড়ে গেছেন অসুস্থ এক গোলকধাঁধায়। এখান থেকে বের হওয়ার পথ দুর্গম বটে। তবে বের হতে না পারলে কথিত ‘সুখ’ হয়তো মরুর মরীচিকাই থেকে যাবে চিরকাল!

ইদানীং ক্লান্ত লাগছে ভীষণ। দপ্তর পাল্টাচ্ছে না, অবসর নেওয়া যাচ্ছে না। জীবন মূলত সাদাকালো, আপনি ঠিক কখন এক অন্তহীন দৌড়ে শামিল হয়েছেন, তা বুঝতেই পারবেন না। হিসাব করে নির্ণয় করা কঠিন হলেও আপনি নিশ্চিত থাকুন, এই দৌড়েই আছেন।
আপনার অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার কথা মনে আছে? সামনে বৃত্তি পরীক্ষা। পাটিগণিত বীজগণিতের অঙ্ক প্যাঁচ লাগাচ্ছে, বিজ্ঞানের সব সূত্র ভোরে উঠে গলাধঃকরণ করতে হচ্ছে। ছুটতে হচ্ছে প্রাইভেট টিউটরের বাসায়। রাত জেগে পড়াশোনার ওই সময়টা নিশ্চয়ই কাটিয়েছেন?
তখন আমরা সবাই সেই ব্যস্ত সময় কাটিয়েছি। নিশ্চয়ই অভিভাবকেরা বলেছেন, ‘এই তো আর কটা দিনের বৃত্তি পরীক্ষা। শেষ হলেই শান্তি আর শান্তি!’ জীবনের নানা আয়োজনে আপনি এমন কথা অবশ্যই শুনেছেন।
এরপর শোনা গেছে, ‘এসএসসি পরীক্ষাটা দাও, কলেজে উঠলেই তো স্বাধীন জীবন’ বা ‘একবার ভার্সিটিতে উঠতে পারলেই হবে জীবন আনন্দের।’ পড়াশোনার শেষ দিকে এসে নিশ্চয়ই মনে হয়েছে, ‘আহা, একবার পেশাজীবনে ঢুকলেই আরাম-আয়েশ!’
এসব ভাবনা এখন মেলাতে পারবেন কি? কখনো কি মনে হয়, ‘মিথ্যা’ এক মরীচিকার আশায় আমরা ছুটেছি বা আমাদের ছোটানো হয়েছে?
ডেবিট-ক্রেডিট মেলাতে গেলে কখনো কখনো মনে হবে হিসাব মেলেনি। হিসাব না মিললে বুঝবেন, আপনি আছেন ইঁদুরদৌড়ে! মানুষের জীবনে এই শব্দের অর্থ কিন্তু সুদূরপ্রসারী। মাঝে মাঝে কি বোধ হয় না যে আমরা নেশাগ্রস্তের মতো অন্ধ হয়ে ছুটেছি সফলতার পেছনে?
এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিখ্যাত পপগায়ক মাইকেল জ্যাকসনের একটি ঘটনা মনে পড়ে যায়। ২০০৯ সালে অপ্রত্যাশিতভাবে মারা যান তিনি। তখন তাঁর ঋণ ছিল কয়েক শ মিলিয়ন ডলার। ঋণ মেটাতে তাঁর বিখ্যাত বাসস্থান বিক্রির কথাও উঠেছিল তখন। বিপুল পরিমাণ খরচের জন্য জ্যাকসনের প্রচুর ঋণ নেওয়ার দরকার হতো। অথচ মাইকেল জীবনে দুহাত ভরে অর্থ রোজগার করেছেন। তুমুল জনপ্রিয়তায় ভেসেছেন। কিন্তু সেই মানুষটিরই কিনা ছিল কয়েক শ মিলিয়ন ডলারের ঋণের বোঝা! অবাক লাগছে?
মাইকেল ছিলেন মহাতারকা। তিনি দুই হাতে টাকা কামিয়েছেন, কিন্তু পাল্লা দিয়ে লম্বা হয়েছে তাঁর খরচের তালিকা। মাইকেল উদয়াস্ত পরিশ্রম করে টাকা কামিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু সেই টাকা রাখতে পারেননি; পকেটের ছিদ্র দিয়ে সেটা চলে গেছে বাহারি খরচের নোনা জলে ভেসে। আপনি-আমি কেউই মাইকেলের মতো টাকার সাগরে শুয়ে থাকা মানুষ নই। আমরা নিতান্তই ছা-পোষা; সংগ্রাম করে টাকা কামাই, জীবন যাপন করি।
এই যে আমরা মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আয় করছি। ২০ হাজার, ৩০ হাজার কিংবা ৫০ হাজার; অঙ্কটা য-ই হোক না, কতটুকু নিজের কাছে রাখতে পারছি আমরা? চাকরিজীবী হিসেবে প্রতি মাসের বেতন যখন অ্যাকাউন্টে ঢোকে; মোবাইলের মেসেজটি পেয়ে স্বস্তির নিশ্বাস কি পড়ে? নাকি আসছে মাস এই টাকায় কীভাবে চলবেন, সেই দুশ্চিন্তায় কপালে ভাঁজ পড়ে? প্রশ্নটার উত্তর ভাবা যেতে পারে। তা যে উত্তরই আসুক না কেন!
টানাটানির সংসারের কথা বাদ দিই। তাদের কথা কে আর জানতে চায়! একটু ভালো অঙ্কের টাকা আয় করেন বা চড়া বেতনে যাঁরা চাকরি করেন, তাঁদেরই উদাহরণ হিসেবে ধরি। কারও বেতন ৩০ হাজার টাকা হলে সে অনুযায়ী নিজের জীবন সাজান। দৈনন্দিন মাসের বাজার বা শখের কেনাকাটা—সবকিছুই ৩০ হাজার টাকার মধ্যে সেরে ফেলার আপ্রাণ চেষ্টা চলে। এখন হুট করে আয় যদি মাসে ৫০ হাজার টাকা হয়ে যায়, ৩০ হাজার টাকার সেই জীবনমানে কিন্তু কেউ আর থাকতে চায় না। হয়তো ১২০ সিসির বাইক তখন আপনার পোষাবে না। একটি ব্র্যান্ড নিউ মোটরসাইকেল বা রিকন্ডিশন্ড গাড়ির দিকে ঝুঁকতে চাইবে মন। গাড়ি কেনা হলে ফ্ল্যাট-বাড়ির দিকেও নজর যাবে। এসব করতে করতে একদিন টুপ করে হয়তো চলে যাওয়া হবে চিরতরে। আর তার ঠিক আগে আবিষ্কার হবে, টাকা কামাই আর খরচ করা ছাড়া অন্য কিছুই করা হলো না জীবনে! তখন কি দুঃখবোধক প্রশ্ন জাগবে এই ভেবে যে, এমন জীবনই কি চাওয়া-পাওয়ার মধ্যে আকাঙ্ক্ষিত ছিল?
এই প্রশ্নের উত্তরে মিলবে শুধু টাকা আয় ও ব্যয়ের হিসাব। যেকোনো ধরনের সঞ্চয় (টাকা বা অন্য কিছুর) সেখানে অনুপস্থিত। বোধ হয়, স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে পুরো জীবনটাই আমরা শুধু দৌড়াতেই শিখে গেছি। কেউ বলেনি, তিষ্ঠ ক্ষণকাল! থামতে কেউ শেখায়নি আসলে। তাই দিনের শেষে ক্লান্ত অবয়বে হিসাব কষতে বসে আমরা আয়নায় দেখতে পাচ্ছি ইঁদুরের অবয়বে অবিরাম ছুটে চলার দৃশ্য। তাতে ত্রস্ততা আছে, ব্যস্ততা আছে। কিন্তু হাঁফ ছেড়ে দম নেওয়া নেই।
এমন দমবন্ধ বোধ হলে বুঝবেন বন্ধু, আপনি পড়ে গেছেন অসুস্থ এক গোলকধাঁধায়। এখান থেকে বের হওয়ার পথ দুর্গম বটে। তবে বের হতে না পারলে কথিত ‘সুখ’ হয়তো মরুর মরীচিকাই থেকে যাবে চিরকাল!

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
২১ ঘণ্টা আগে
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
২ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৮ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল পাশবিক হত্যাযজ্ঞ। ঢাকার গাবতলীর পাশের তুরাগ নদের উত্তর পারেই সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ইসাকাবাদ গ্রাম অবস্থিত। গ্রামটি থেকে স্পষ্ট দেখা যেত গাবতলী সেতু। সেই গ্রামেরই বয়স্ক এক ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা করেছেন এভাবে, প্রতিদিন রাতের বেলা মিলিটারি আর বিহারিরা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে করে এই সেতুতে মানুষদের নিয়ে আসত। রাত গভীর হলে সেতুর দুই পাশের বাতি নিভিয়ে গুলি চালানো হতো। পুরো যুদ্ধের সময় এখানে এমন রাত ছিল না, যে রাতের বেলা সেখানে লাশ ফেলানো হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকের বেশি সময় পার হলেও এখনো এ জায়গাকে বধ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল পাশবিক হত্যাযজ্ঞ। ঢাকার গাবতলীর পাশের তুরাগ নদের উত্তর পারেই সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ইসাকাবাদ গ্রাম অবস্থিত। গ্রামটি থেকে স্পষ্ট দেখা যেত গাবতলী সেতু। সেই গ্রামেরই বয়স্ক এক ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা করেছেন এভাবে, প্রতিদিন রাতের বেলা মিলিটারি আর বিহারিরা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে করে এই সেতুতে মানুষদের নিয়ে আসত। রাত গভীর হলে সেতুর দুই পাশের বাতি নিভিয়ে গুলি চালানো হতো। পুরো যুদ্ধের সময় এখানে এমন রাত ছিল না, যে রাতের বেলা সেখানে লাশ ফেলানো হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকের বেশি সময় পার হলেও এখনো এ জায়গাকে বধ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

ইদানীং ক্লান্ত লাগছে ভীষণ। দপ্তর পাল্টাচ্ছে না, অবসর নেওয়া যাচ্ছে না। জীবন মূলত সাদাকালো, আপনি ঠিক কখন এক অন্তহীন দৌড়ে শামিল হয়েছেন, তা বুঝতেই পারবেন না। হিসাব করে নির্ণয় করা কঠিন হলেও আপনি নিশ্চিত থাকুন, এই দৌড়েই আছেন।
১৩ জানুয়ারি ২০২২
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
২ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৮ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
অনেক লেখকই আছেন যাঁরা খুব ধর্মপ্রাণ, কেউবা আবার কমিউনিস্ট ৷ হিউম্যানিস্ট লেখক যেমন আছেন, তেমনই আছেন অথোরিটারিয়ান লেখক।
তবে সে যা-ই হোক, ভালো সাহিত্যিকের মধ্যে দুটো কমিটমেন্ট থাকতেই হবে—সততা আর স্টাইলের দক্ষতা। নিজের কাছেই যে-লেখক অসৎ, যা লেখেন তা যদি তিনি নিজেই না বিশ্বাস করেন, তাহলে সেই লেখকের পতন অনিবার্য।
কোনো লেখক আবার যদি নিজের ভাষার ঐশ্বর্যকে ছেঁকে তুলতে ব্যর্থ হন, একজন সংগীতশিল্পীকে ঠিক যেভাবে তাঁর যন্ত্রটিকে নিজের বশে আনতে হয়, ভাষার ক্ষেত্রেও তেমনটা যদি কোনো লেখক করতে না পারেন, তাহলে একজন সাংবাদিক ছাড়া আর কিছুই হতে পারবেন না তিনি। সত্য এবং স্টাইল—একজন সাহিত্যিকের বেসিক কমিটমেন্ট হলো শুধু এই দুটো।
সূত্র: সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ টুডে’ পত্রিকার মার্চ, ১৯৮৪ সংখ্যায়, সাক্ষাৎকার গ্রহীতা সেরাজুল ইসলাম কাদির, অনুবাদক নীলাজ্জ দাস, শিবনারায়ণ রায়ের সাক্ষাৎকার সংগ্রহ, পৃষ্ঠা-২৭।

সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
অনেক লেখকই আছেন যাঁরা খুব ধর্মপ্রাণ, কেউবা আবার কমিউনিস্ট ৷ হিউম্যানিস্ট লেখক যেমন আছেন, তেমনই আছেন অথোরিটারিয়ান লেখক।
তবে সে যা-ই হোক, ভালো সাহিত্যিকের মধ্যে দুটো কমিটমেন্ট থাকতেই হবে—সততা আর স্টাইলের দক্ষতা। নিজের কাছেই যে-লেখক অসৎ, যা লেখেন তা যদি তিনি নিজেই না বিশ্বাস করেন, তাহলে সেই লেখকের পতন অনিবার্য।
কোনো লেখক আবার যদি নিজের ভাষার ঐশ্বর্যকে ছেঁকে তুলতে ব্যর্থ হন, একজন সংগীতশিল্পীকে ঠিক যেভাবে তাঁর যন্ত্রটিকে নিজের বশে আনতে হয়, ভাষার ক্ষেত্রেও তেমনটা যদি কোনো লেখক করতে না পারেন, তাহলে একজন সাংবাদিক ছাড়া আর কিছুই হতে পারবেন না তিনি। সত্য এবং স্টাইল—একজন সাহিত্যিকের বেসিক কমিটমেন্ট হলো শুধু এই দুটো।
সূত্র: সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ টুডে’ পত্রিকার মার্চ, ১৯৮৪ সংখ্যায়, সাক্ষাৎকার গ্রহীতা সেরাজুল ইসলাম কাদির, অনুবাদক নীলাজ্জ দাস, শিবনারায়ণ রায়ের সাক্ষাৎকার সংগ্রহ, পৃষ্ঠা-২৭।

ইদানীং ক্লান্ত লাগছে ভীষণ। দপ্তর পাল্টাচ্ছে না, অবসর নেওয়া যাচ্ছে না। জীবন মূলত সাদাকালো, আপনি ঠিক কখন এক অন্তহীন দৌড়ে শামিল হয়েছেন, তা বুঝতেই পারবেন না। হিসাব করে নির্ণয় করা কঠিন হলেও আপনি নিশ্চিত থাকুন, এই দৌড়েই আছেন।
১৩ জানুয়ারি ২০২২
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
২১ ঘণ্টা আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৮ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় ৫০০ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেন। তখন এ আখড়াটি কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।
পরে সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে এ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় ১০০ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ নিহত হন। যদিও এখন বধ্যভূমির কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেটাকে বধ্যভূমি হিসেবে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় ৫০০ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেন। তখন এ আখড়াটি কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।
পরে সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে এ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় ১০০ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ নিহত হন। যদিও এখন বধ্যভূমির কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেটাকে বধ্যভূমি হিসেবে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ছবি: সংগৃহীত

ইদানীং ক্লান্ত লাগছে ভীষণ। দপ্তর পাল্টাচ্ছে না, অবসর নেওয়া যাচ্ছে না। জীবন মূলত সাদাকালো, আপনি ঠিক কখন এক অন্তহীন দৌড়ে শামিল হয়েছেন, তা বুঝতেই পারবেন না। হিসাব করে নির্ণয় করা কঠিন হলেও আপনি নিশ্চিত থাকুন, এই দৌড়েই আছেন।
১৩ জানুয়ারি ২০২২
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
২১ ঘণ্টা আগে
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
২ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।
সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।
সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

ইদানীং ক্লান্ত লাগছে ভীষণ। দপ্তর পাল্টাচ্ছে না, অবসর নেওয়া যাচ্ছে না। জীবন মূলত সাদাকালো, আপনি ঠিক কখন এক অন্তহীন দৌড়ে শামিল হয়েছেন, তা বুঝতেই পারবেন না। হিসাব করে নির্ণয় করা কঠিন হলেও আপনি নিশ্চিত থাকুন, এই দৌড়েই আছেন।
১৩ জানুয়ারি ২০২২
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
২১ ঘণ্টা আগে
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
২ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৮ দিন আগে