সম্পাদকীয়

সুরেশচন্দ্র মজুমদারকে অনেকেই চেনেন। জাতীয়তাবাদী পত্রিকা প্রকাশের উদ্দেশ্যে আবাল্য বন্ধু প্রফুল্লকুমার সরকারের সাহায্য ও সম্পাদনায় ১৯২২ সালের ১৩ মার্চ তিনি আনন্দবাজার পত্রিকা প্রকাশ করেন। তাঁরই উদ্যোগে দেশ এবং দ্য স্টেটসম্যানের প্রতিপক্ষ হিসেবে হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড প্রকাশিত হয়।
১৯৪৪ সালে সৈয়দ মুজতবা আলী ‘সত্যপীর’ নাম নিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকায় সম্পাদকীয়-পরবর্তী স্তম্ভে প্রবন্ধ লিখতে শুরু করেন। দুটো লেখা প্রকাশিত হওয়ার পর তিনি বুঝতে পারেন যে লেখাগুলো পছন্দ করছেন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।
সুরেশচন্দ্র মজুমদারের সঙ্গে বন্ধুবান্ধবদের মাধ্যমে সৈয়দ মুজতবা আলীর পরিচয় হয়। সুরেশচন্দ্র মজুমদার লেখা চেনার ব্যাপারে ছিলেন একেবারে জহুরি। খুব ভালোভাবে লেখা বুঝতে পারতেন তিনি। কড়া সমালোচনা যেমন করতে পারতেন, তেমনি তিনি ছিলেন সহৃদয় ব্যক্তি। এই দুইয়ের দ্বন্দ্বে কখনো কখনো খারাপেরাও তাঁর প্রশ্রয় পেত।
সৈয়দ মুজতবা আলী সুরেশচন্দ্র মজুমদারকে বাঘের মতো ভয় পেতেন, যদিও জানতেন তাঁকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। মজার ব্যাপার, তখন পর্যন্ত একদিনও সুরেশচন্দ্র মজুমদার সৈয়দ মুজতবা আলীর কোনো লেখার কোনো সমালোচনা করেননি, কোনো কিছু নতুন করে লিখতে বলেননি বা কোনো ধরনের উপদেশও দেননি।
১৯৪৪-৪৫ সালের দিকে কলকাতায় একটা অশান্তির সৃষ্টি হলে সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর জন্য নির্দিষ্ট লেখা না লিখে লিখে ফেললেন একটি কবিতা। এখন কী করবেন! কবিতা কি এখানে ছাপা যেতে পারে! সে বিষয়ে কোনো দিকনির্দেশনা ছিল না। অগত্যা তিনি সেই লেখা নিয়ে গেলেন সুরেশবাবুর কাছে। দুটো ছত্র পড়েই সুরেশবাবু লেখাটা পাঠিয়ে দিলেন প্রেসে।
এবং বললেন, ‘ওরে...একে চা দে আর কী দিবি দে...আর...’, কথা অসমাপ্ত রেখেই তিনি ফের কাজে মন দিলেন।
আজ সৈয়দ মুজতবা আলীর জন্মদিনে দেশ পত্রিকায় আফটার এডিট না লিখে কবিতা লেখার গল্পটি বলা হলো।
সূত্র: সৈয়দ মুজতবা আলী রচনাবলী, চতুর্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৮-৩৯

সুরেশচন্দ্র মজুমদারকে অনেকেই চেনেন। জাতীয়তাবাদী পত্রিকা প্রকাশের উদ্দেশ্যে আবাল্য বন্ধু প্রফুল্লকুমার সরকারের সাহায্য ও সম্পাদনায় ১৯২২ সালের ১৩ মার্চ তিনি আনন্দবাজার পত্রিকা প্রকাশ করেন। তাঁরই উদ্যোগে দেশ এবং দ্য স্টেটসম্যানের প্রতিপক্ষ হিসেবে হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড প্রকাশিত হয়।
১৯৪৪ সালে সৈয়দ মুজতবা আলী ‘সত্যপীর’ নাম নিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকায় সম্পাদকীয়-পরবর্তী স্তম্ভে প্রবন্ধ লিখতে শুরু করেন। দুটো লেখা প্রকাশিত হওয়ার পর তিনি বুঝতে পারেন যে লেখাগুলো পছন্দ করছেন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।
সুরেশচন্দ্র মজুমদারের সঙ্গে বন্ধুবান্ধবদের মাধ্যমে সৈয়দ মুজতবা আলীর পরিচয় হয়। সুরেশচন্দ্র মজুমদার লেখা চেনার ব্যাপারে ছিলেন একেবারে জহুরি। খুব ভালোভাবে লেখা বুঝতে পারতেন তিনি। কড়া সমালোচনা যেমন করতে পারতেন, তেমনি তিনি ছিলেন সহৃদয় ব্যক্তি। এই দুইয়ের দ্বন্দ্বে কখনো কখনো খারাপেরাও তাঁর প্রশ্রয় পেত।
সৈয়দ মুজতবা আলী সুরেশচন্দ্র মজুমদারকে বাঘের মতো ভয় পেতেন, যদিও জানতেন তাঁকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। মজার ব্যাপার, তখন পর্যন্ত একদিনও সুরেশচন্দ্র মজুমদার সৈয়দ মুজতবা আলীর কোনো লেখার কোনো সমালোচনা করেননি, কোনো কিছু নতুন করে লিখতে বলেননি বা কোনো ধরনের উপদেশও দেননি।
১৯৪৪-৪৫ সালের দিকে কলকাতায় একটা অশান্তির সৃষ্টি হলে সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর জন্য নির্দিষ্ট লেখা না লিখে লিখে ফেললেন একটি কবিতা। এখন কী করবেন! কবিতা কি এখানে ছাপা যেতে পারে! সে বিষয়ে কোনো দিকনির্দেশনা ছিল না। অগত্যা তিনি সেই লেখা নিয়ে গেলেন সুরেশবাবুর কাছে। দুটো ছত্র পড়েই সুরেশবাবু লেখাটা পাঠিয়ে দিলেন প্রেসে।
এবং বললেন, ‘ওরে...একে চা দে আর কী দিবি দে...আর...’, কথা অসমাপ্ত রেখেই তিনি ফের কাজে মন দিলেন।
আজ সৈয়দ মুজতবা আলীর জন্মদিনে দেশ পত্রিকায় আফটার এডিট না লিখে কবিতা লেখার গল্পটি বলা হলো।
সূত্র: সৈয়দ মুজতবা আলী রচনাবলী, চতুর্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৮-৩৯
সম্পাদকীয়

সুরেশচন্দ্র মজুমদারকে অনেকেই চেনেন। জাতীয়তাবাদী পত্রিকা প্রকাশের উদ্দেশ্যে আবাল্য বন্ধু প্রফুল্লকুমার সরকারের সাহায্য ও সম্পাদনায় ১৯২২ সালের ১৩ মার্চ তিনি আনন্দবাজার পত্রিকা প্রকাশ করেন। তাঁরই উদ্যোগে দেশ এবং দ্য স্টেটসম্যানের প্রতিপক্ষ হিসেবে হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড প্রকাশিত হয়।
১৯৪৪ সালে সৈয়দ মুজতবা আলী ‘সত্যপীর’ নাম নিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকায় সম্পাদকীয়-পরবর্তী স্তম্ভে প্রবন্ধ লিখতে শুরু করেন। দুটো লেখা প্রকাশিত হওয়ার পর তিনি বুঝতে পারেন যে লেখাগুলো পছন্দ করছেন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।
সুরেশচন্দ্র মজুমদারের সঙ্গে বন্ধুবান্ধবদের মাধ্যমে সৈয়দ মুজতবা আলীর পরিচয় হয়। সুরেশচন্দ্র মজুমদার লেখা চেনার ব্যাপারে ছিলেন একেবারে জহুরি। খুব ভালোভাবে লেখা বুঝতে পারতেন তিনি। কড়া সমালোচনা যেমন করতে পারতেন, তেমনি তিনি ছিলেন সহৃদয় ব্যক্তি। এই দুইয়ের দ্বন্দ্বে কখনো কখনো খারাপেরাও তাঁর প্রশ্রয় পেত।
সৈয়দ মুজতবা আলী সুরেশচন্দ্র মজুমদারকে বাঘের মতো ভয় পেতেন, যদিও জানতেন তাঁকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। মজার ব্যাপার, তখন পর্যন্ত একদিনও সুরেশচন্দ্র মজুমদার সৈয়দ মুজতবা আলীর কোনো লেখার কোনো সমালোচনা করেননি, কোনো কিছু নতুন করে লিখতে বলেননি বা কোনো ধরনের উপদেশও দেননি।
১৯৪৪-৪৫ সালের দিকে কলকাতায় একটা অশান্তির সৃষ্টি হলে সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর জন্য নির্দিষ্ট লেখা না লিখে লিখে ফেললেন একটি কবিতা। এখন কী করবেন! কবিতা কি এখানে ছাপা যেতে পারে! সে বিষয়ে কোনো দিকনির্দেশনা ছিল না। অগত্যা তিনি সেই লেখা নিয়ে গেলেন সুরেশবাবুর কাছে। দুটো ছত্র পড়েই সুরেশবাবু লেখাটা পাঠিয়ে দিলেন প্রেসে।
এবং বললেন, ‘ওরে...একে চা দে আর কী দিবি দে...আর...’, কথা অসমাপ্ত রেখেই তিনি ফের কাজে মন দিলেন।
আজ সৈয়দ মুজতবা আলীর জন্মদিনে দেশ পত্রিকায় আফটার এডিট না লিখে কবিতা লেখার গল্পটি বলা হলো।
সূত্র: সৈয়দ মুজতবা আলী রচনাবলী, চতুর্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৮-৩৯

সুরেশচন্দ্র মজুমদারকে অনেকেই চেনেন। জাতীয়তাবাদী পত্রিকা প্রকাশের উদ্দেশ্যে আবাল্য বন্ধু প্রফুল্লকুমার সরকারের সাহায্য ও সম্পাদনায় ১৯২২ সালের ১৩ মার্চ তিনি আনন্দবাজার পত্রিকা প্রকাশ করেন। তাঁরই উদ্যোগে দেশ এবং দ্য স্টেটসম্যানের প্রতিপক্ষ হিসেবে হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড প্রকাশিত হয়।
১৯৪৪ সালে সৈয়দ মুজতবা আলী ‘সত্যপীর’ নাম নিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকায় সম্পাদকীয়-পরবর্তী স্তম্ভে প্রবন্ধ লিখতে শুরু করেন। দুটো লেখা প্রকাশিত হওয়ার পর তিনি বুঝতে পারেন যে লেখাগুলো পছন্দ করছেন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।
সুরেশচন্দ্র মজুমদারের সঙ্গে বন্ধুবান্ধবদের মাধ্যমে সৈয়দ মুজতবা আলীর পরিচয় হয়। সুরেশচন্দ্র মজুমদার লেখা চেনার ব্যাপারে ছিলেন একেবারে জহুরি। খুব ভালোভাবে লেখা বুঝতে পারতেন তিনি। কড়া সমালোচনা যেমন করতে পারতেন, তেমনি তিনি ছিলেন সহৃদয় ব্যক্তি। এই দুইয়ের দ্বন্দ্বে কখনো কখনো খারাপেরাও তাঁর প্রশ্রয় পেত।
সৈয়দ মুজতবা আলী সুরেশচন্দ্র মজুমদারকে বাঘের মতো ভয় পেতেন, যদিও জানতেন তাঁকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। মজার ব্যাপার, তখন পর্যন্ত একদিনও সুরেশচন্দ্র মজুমদার সৈয়দ মুজতবা আলীর কোনো লেখার কোনো সমালোচনা করেননি, কোনো কিছু নতুন করে লিখতে বলেননি বা কোনো ধরনের উপদেশও দেননি।
১৯৪৪-৪৫ সালের দিকে কলকাতায় একটা অশান্তির সৃষ্টি হলে সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর জন্য নির্দিষ্ট লেখা না লিখে লিখে ফেললেন একটি কবিতা। এখন কী করবেন! কবিতা কি এখানে ছাপা যেতে পারে! সে বিষয়ে কোনো দিকনির্দেশনা ছিল না। অগত্যা তিনি সেই লেখা নিয়ে গেলেন সুরেশবাবুর কাছে। দুটো ছত্র পড়েই সুরেশবাবু লেখাটা পাঠিয়ে দিলেন প্রেসে।
এবং বললেন, ‘ওরে...একে চা দে আর কী দিবি দে...আর...’, কথা অসমাপ্ত রেখেই তিনি ফের কাজে মন দিলেন।
আজ সৈয়দ মুজতবা আলীর জন্মদিনে দেশ পত্রিকায় আফটার এডিট না লিখে কবিতা লেখার গল্পটি বলা হলো।
সূত্র: সৈয়দ মুজতবা আলী রচনাবলী, চতুর্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৮-৩৯

আমার সৌভাগ্য হয়েছিল আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ঘনিষ্ঠ হওয়ার। হাসান আজিজুল হকের সূত্রেই পরিচয় হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। পরে তাঁর সঙ্গে প্রচুর আড্ডা দেওয়ার সুযোগ হয়েছিল। তিনি ছিলেন তুমুল আড্ডাবাজ মানুষ। আর তাঁর সঙ্গে জগৎ সংসারের যেকোনো বিষয়ে আলাপ করা যেত। এমন কোনো বিষয় নেই যাতে তাঁর আগ্রহ নেই।
১৬ ঘণ্টা আগে
১৯৭১ সালে পুরো বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন হয়েছিল ১৬ ডিসেম্বর। কিন্তু রাজধানীর মিরপুর তখনো শত্রুদের দখলে। পরের বছর জানুয়ারিতে শত্রুমুক্ত হলে একে একে সন্ধান পাওয়া যেতে থাকে বধ্যভূমিগুলোর। ঢাকায় সবচেয়ে বেশি বধ্যভূমি মিরপুর অঞ্চলে। আর মিরপুরের বধ্যভূমিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লাশ পাওয়া যায়...
২ দিন আগে
আরব সাগরের রানি নামে পরিচিত কোচি একসময় ছিল বন্দর আর মসলার আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। কয়েক শতাব্দী আগে এখানেই গড়ে উঠেছিল ইহুদিদের একটি নিবিড় জনগোষ্ঠী। সেই জনগোষ্ঠীর একজন ছিলেন সারা কোহেন। ২০০০ সাল থেকে এই দোকান চালাচ্ছেন থাহা। সারা জীবিত থাকাকালে তাঁর পক্ষ থেকে, আর ২০১৯ সালে সারা ৯৬
৫ দিন আগে
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
৭ দিন আগেসম্পাদকীয়

আমার সৌভাগ্য হয়েছিল আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ঘনিষ্ঠ হওয়ার। হাসান আজিজুল হকের সূত্রেই পরিচয় হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। পরে তাঁর সঙ্গে প্রচুর আড্ডা দেওয়ার সুযোগ হয়েছিল। তিনি ছিলেন তুমুল আড্ডাবাজ মানুষ। আর তাঁর সঙ্গে জগৎ সংসারের যেকোনো বিষয়ে আলাপ করা যেত। এমন কোনো বিষয় নেই যাতে তাঁর আগ্রহ নেই। তাঁর সাক্ষাৎকারে এমন কিছু প্রসঙ্গে আলাপ করেছি, যা হয়তো অত স্বচ্ছন্দে হাসান আজিজুল হকের সঙ্গে করতে পারতাম না। যেমন ধরেন যৌনতা-সংক্রান্ত প্রশ্নগুলো। তবে আড্ডাবাজ ব্যক্তিত্বের জন্যও তাঁর সাক্ষাৎকারটি হয়েছে অনেক প্রাণবন্ত। তাঁকে তো বাম ঘরানার লেখকই ধরা হয়, মার্ক্সবাদে তাঁর বিশ্বাস ছিল। তবে তিনি কিন্তু গোঁড়া মার্ক্সবাদী ছিলেন না।
আমি এ ব্যাপারটিও তাঁর সঙ্গে খোলাসা করার জন্য আলাপ করেছি। সোশ্যালিস্ট রিয়েলিজমের নামে একসময় একধরনের যান্ত্রিক মার্ক্সবাদ চর্চা হয়েছে সাহিত্যে। তিনি এর ঘোর বিরোধী ছিলেন। তিনি এ সাক্ষাৎকারেই বলেছেন, এ দেশের মার্ক্সবাদীদের অনেক জ্ঞান থাকলেও কাণ্ডজ্ঞান নেই। তিনি তাঁর লেখায় জীবনকে একেবারে ভেতর থেকে ধরার চেষ্টা করেছেন। অহেতুক শ্রমিকশ্রেণির জয়গান গাননি, লাল পতাকা ওঠাননি। আমার সাক্ষাৎকারে সেক্সের সঙ্গে ক্লাস পজিশনের সম্পর্ক নিয়ে কথা আছে। তিনি এও বলছেন, তাঁর চিলেকোঠার সেপাইয়ের রিকশাশ্রমিক হাড্ডি খিজির যে চরিত্র, তাকে তিনি মহান করে দেখাননি, শুধু শ্রমিকশ্রেণির বিজয়গাথা তিনি দেখাননি।
বরং হাড্ডি খিজির যে একটি লুম্পেন চরিত্র, তার ভেতর যে নানা জোচ্চুরি আছে, সেটাকেও দেখিয়েছেন। এই যে মানুষকে টোটালিটিতে দেখতে এবং দেখাতে পারা, এটাই আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের শক্তি।
তো এগুলো নিয়ে বিভিন্ন সময় কথা হতো তাঁর সঙ্গে, সেটাকেই আমি সাক্ষাৎকারে ধরতে চেষ্টা করেছি।
সূত্র: মঞ্জুরুল আজিম পলাশ কর্তৃক কথাসাহিত্যিক শাহাদুজ্জামানের সাক্ষাৎকার গ্রহণ, ‘দূরগামী কথার ভেতর’, পৃষ্ঠা: ২৭-২৮।

আমার সৌভাগ্য হয়েছিল আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ঘনিষ্ঠ হওয়ার। হাসান আজিজুল হকের সূত্রেই পরিচয় হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। পরে তাঁর সঙ্গে প্রচুর আড্ডা দেওয়ার সুযোগ হয়েছিল। তিনি ছিলেন তুমুল আড্ডাবাজ মানুষ। আর তাঁর সঙ্গে জগৎ সংসারের যেকোনো বিষয়ে আলাপ করা যেত। এমন কোনো বিষয় নেই যাতে তাঁর আগ্রহ নেই। তাঁর সাক্ষাৎকারে এমন কিছু প্রসঙ্গে আলাপ করেছি, যা হয়তো অত স্বচ্ছন্দে হাসান আজিজুল হকের সঙ্গে করতে পারতাম না। যেমন ধরেন যৌনতা-সংক্রান্ত প্রশ্নগুলো। তবে আড্ডাবাজ ব্যক্তিত্বের জন্যও তাঁর সাক্ষাৎকারটি হয়েছে অনেক প্রাণবন্ত। তাঁকে তো বাম ঘরানার লেখকই ধরা হয়, মার্ক্সবাদে তাঁর বিশ্বাস ছিল। তবে তিনি কিন্তু গোঁড়া মার্ক্সবাদী ছিলেন না।
আমি এ ব্যাপারটিও তাঁর সঙ্গে খোলাসা করার জন্য আলাপ করেছি। সোশ্যালিস্ট রিয়েলিজমের নামে একসময় একধরনের যান্ত্রিক মার্ক্সবাদ চর্চা হয়েছে সাহিত্যে। তিনি এর ঘোর বিরোধী ছিলেন। তিনি এ সাক্ষাৎকারেই বলেছেন, এ দেশের মার্ক্সবাদীদের অনেক জ্ঞান থাকলেও কাণ্ডজ্ঞান নেই। তিনি তাঁর লেখায় জীবনকে একেবারে ভেতর থেকে ধরার চেষ্টা করেছেন। অহেতুক শ্রমিকশ্রেণির জয়গান গাননি, লাল পতাকা ওঠাননি। আমার সাক্ষাৎকারে সেক্সের সঙ্গে ক্লাস পজিশনের সম্পর্ক নিয়ে কথা আছে। তিনি এও বলছেন, তাঁর চিলেকোঠার সেপাইয়ের রিকশাশ্রমিক হাড্ডি খিজির যে চরিত্র, তাকে তিনি মহান করে দেখাননি, শুধু শ্রমিকশ্রেণির বিজয়গাথা তিনি দেখাননি।
বরং হাড্ডি খিজির যে একটি লুম্পেন চরিত্র, তার ভেতর যে নানা জোচ্চুরি আছে, সেটাকেও দেখিয়েছেন। এই যে মানুষকে টোটালিটিতে দেখতে এবং দেখাতে পারা, এটাই আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের শক্তি।
তো এগুলো নিয়ে বিভিন্ন সময় কথা হতো তাঁর সঙ্গে, সেটাকেই আমি সাক্ষাৎকারে ধরতে চেষ্টা করেছি।
সূত্র: মঞ্জুরুল আজিম পলাশ কর্তৃক কথাসাহিত্যিক শাহাদুজ্জামানের সাক্ষাৎকার গ্রহণ, ‘দূরগামী কথার ভেতর’, পৃষ্ঠা: ২৭-২৮।

সুরেশচন্দ্র মজুমদারকে অনেকেই চেনেন। জাতীয়তাবাদী পত্রিকা প্রকাশের উদ্দেশ্যে আবাল্য বন্ধু প্রফুল্লকুমার সরকারের সাহায্য ও সম্পাদনায় ১৯২২ সালের ১৩ মার্চ তিনি আনন্দবাজার পত্রিকা প্রকাশ করেন। তাঁরই উদ্যোগে দেশ এবং দ্য স্টেটসম্যানের প্রতিপক্ষ হিসেবে হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড প্রকাশিত হয়।
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
১৯৭১ সালে পুরো বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন হয়েছিল ১৬ ডিসেম্বর। কিন্তু রাজধানীর মিরপুর তখনো শত্রুদের দখলে। পরের বছর জানুয়ারিতে শত্রুমুক্ত হলে একে একে সন্ধান পাওয়া যেতে থাকে বধ্যভূমিগুলোর। ঢাকায় সবচেয়ে বেশি বধ্যভূমি মিরপুর অঞ্চলে। আর মিরপুরের বধ্যভূমিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লাশ পাওয়া যায়...
২ দিন আগে
আরব সাগরের রানি নামে পরিচিত কোচি একসময় ছিল বন্দর আর মসলার আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। কয়েক শতাব্দী আগে এখানেই গড়ে উঠেছিল ইহুদিদের একটি নিবিড় জনগোষ্ঠী। সেই জনগোষ্ঠীর একজন ছিলেন সারা কোহেন। ২০০০ সাল থেকে এই দোকান চালাচ্ছেন থাহা। সারা জীবিত থাকাকালে তাঁর পক্ষ থেকে, আর ২০১৯ সালে সারা ৯৬
৫ দিন আগে
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
৭ দিন আগেসম্পাদকীয়

১৯৭১ সালে পুরো বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন হয়েছিল ১৬ ডিসেম্বর। কিন্তু রাজধানীর মিরপুর তখনো শত্রুদের দখলে। পরের বছর জানুয়ারিতে শত্রুমুক্ত হলে একে একে সন্ধান পাওয়া যেতে থাকে বধ্যভূমিগুলোর। ঢাকায় সবচেয়ে বেশি বধ্যভূমি মিরপুর অঞ্চলে। আর মিরপুরের বধ্যভূমিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লাশ পাওয়া যায় শিয়ালবাড়ি এলাকায়। মিরপুরের প্রশিকা ভবন থেকে কমার্স কলেজের দিকে যেতে একটি কালভার্ট ছিল। এখন যদিও রাস্তার মাঝে ঢাকা পড়েছে। সেখানেই ৬০টি বস্তায় প্রায় ৩৫০টি মাথার খুলি পাওয়া গিয়েছিল। সৈয়দ আলী জামে মসজিদের পাশের কুয়ায় পাওয়া গিয়েছিল অসংখ্য লাশ। ৬ নম্বর লেনের শেষ প্রান্তের মাঠে স্তূপাকারে পড়ে থাকা দুই শতাধিক লাশ শিয়ালবাড়ি গণকবরে কবর দেওয়া হয়। এটি ছিল ১০ কাঠা জমির ওপর। বেশির ভাগই দখল হয়ে গেছে। যেটুকু অংশ বাকি আছে, তা বর্তমানে মাতবরবাড়ি পারিবারিক কবরস্থান। শিয়ালবাড়ির যেসব কুয়ায় শহীদদের লাশ পাওয়া গিয়েছিল, সেখানে এখন বহুতল ভবন, কারখানা, শপিং মল।
তথ্য ও ছবি: মিরপুরের ১০টি বধ্যভূমি, মিরাজ মিজু

১৯৭১ সালে পুরো বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন হয়েছিল ১৬ ডিসেম্বর। কিন্তু রাজধানীর মিরপুর তখনো শত্রুদের দখলে। পরের বছর জানুয়ারিতে শত্রুমুক্ত হলে একে একে সন্ধান পাওয়া যেতে থাকে বধ্যভূমিগুলোর। ঢাকায় সবচেয়ে বেশি বধ্যভূমি মিরপুর অঞ্চলে। আর মিরপুরের বধ্যভূমিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লাশ পাওয়া যায় শিয়ালবাড়ি এলাকায়। মিরপুরের প্রশিকা ভবন থেকে কমার্স কলেজের দিকে যেতে একটি কালভার্ট ছিল। এখন যদিও রাস্তার মাঝে ঢাকা পড়েছে। সেখানেই ৬০টি বস্তায় প্রায় ৩৫০টি মাথার খুলি পাওয়া গিয়েছিল। সৈয়দ আলী জামে মসজিদের পাশের কুয়ায় পাওয়া গিয়েছিল অসংখ্য লাশ। ৬ নম্বর লেনের শেষ প্রান্তের মাঠে স্তূপাকারে পড়ে থাকা দুই শতাধিক লাশ শিয়ালবাড়ি গণকবরে কবর দেওয়া হয়। এটি ছিল ১০ কাঠা জমির ওপর। বেশির ভাগই দখল হয়ে গেছে। যেটুকু অংশ বাকি আছে, তা বর্তমানে মাতবরবাড়ি পারিবারিক কবরস্থান। শিয়ালবাড়ির যেসব কুয়ায় শহীদদের লাশ পাওয়া গিয়েছিল, সেখানে এখন বহুতল ভবন, কারখানা, শপিং মল।
তথ্য ও ছবি: মিরপুরের ১০টি বধ্যভূমি, মিরাজ মিজু

সুরেশচন্দ্র মজুমদারকে অনেকেই চেনেন। জাতীয়তাবাদী পত্রিকা প্রকাশের উদ্দেশ্যে আবাল্য বন্ধু প্রফুল্লকুমার সরকারের সাহায্য ও সম্পাদনায় ১৯২২ সালের ১৩ মার্চ তিনি আনন্দবাজার পত্রিকা প্রকাশ করেন। তাঁরই উদ্যোগে দেশ এবং দ্য স্টেটসম্যানের প্রতিপক্ষ হিসেবে হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড প্রকাশিত হয়।
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
আমার সৌভাগ্য হয়েছিল আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ঘনিষ্ঠ হওয়ার। হাসান আজিজুল হকের সূত্রেই পরিচয় হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। পরে তাঁর সঙ্গে প্রচুর আড্ডা দেওয়ার সুযোগ হয়েছিল। তিনি ছিলেন তুমুল আড্ডাবাজ মানুষ। আর তাঁর সঙ্গে জগৎ সংসারের যেকোনো বিষয়ে আলাপ করা যেত। এমন কোনো বিষয় নেই যাতে তাঁর আগ্রহ নেই।
১৬ ঘণ্টা আগে
আরব সাগরের রানি নামে পরিচিত কোচি একসময় ছিল বন্দর আর মসলার আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। কয়েক শতাব্দী আগে এখানেই গড়ে উঠেছিল ইহুদিদের একটি নিবিড় জনগোষ্ঠী। সেই জনগোষ্ঠীর একজন ছিলেন সারা কোহেন। ২০০০ সাল থেকে এই দোকান চালাচ্ছেন থাহা। সারা জীবিত থাকাকালে তাঁর পক্ষ থেকে, আর ২০১৯ সালে সারা ৯৬
৫ দিন আগে
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
৭ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দক্ষিণ ভারতের কোচি শহরের সরু, নুড়ি-পাথর বিছানো রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ চোখে পড়ে ছোট্ট একটি ফলক। তাতে লেখা, ‘সারা কোহেনের বাড়ি।’ জনাকীর্ণ এই রাস্তাটির নাম জু টাউন। কয়েক দশক আগেও এখানকার প্রায় প্রতিটি বাড়িতে বসবাস করত ইহুদি পরিবার। প্রাচীন সামগ্রী, পারস্যের কার্পেট আর মসলার দোকানে ঠাসা এই এলাকাই একসময় পরিচিত ছিল কোচির ইহুদি পাড়া হিসেবে।
এই রাস্তাতেই রয়েছে থাহা ইব্রাহিমের দোকান। কোচির শেষ ইহুদি নকশার দোকান। এক তপ্ত দুপুরে কয়েকজন মার্কিন পর্যটক দোকানে ঢুকতেই দেখা গেল, ৫৫ বছর বয়সী থাহা মনোযোগ দিয়ে একটি কিপ্পা (ইহুদি পুরুষদের ঐতিহ্যবাহী ছোট, বৃত্তাকার টুপি যা তারা ঈশ্বরকে সম্মান জানাতে এবং নিজেদের ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশ করতে পরে থাকে) সেলাই করছেন। দোকানের দেয়ালে ঝোলানো একটি ছবির সামনে পর্যটকেরা ভিড় জমালেন। ছবিটি ২০১৩ সালের। তৎকালীন ব্রিটিশ যুবরাজ (বর্তমানে রাজা) চার্লস জু টাউনের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলছেন।
ছবির দিকে আঙুল তুলে থাহা বললেন, ‘ওই ইনিই সারা আন্টি।’ এরপর যোগ করলেন, ‘এটা ছিল সারা কোহেনের বাড়ি ও তাঁর সেলাইয়ের দোকান।’
আরব সাগরের রানি নামে পরিচিত কোচি একসময় ছিল বন্দর আর মসলার আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। কয়েক শতাব্দী আগে এখানেই গড়ে উঠেছিল ইহুদিদের একটি নিবিড় জনগোষ্ঠী। সেই জনগোষ্ঠীর একজন ছিলেন সারা কোহেন। ২০০০ সাল থেকে এই দোকান চালাচ্ছেন থাহা। সারা জীবিত থাকাকালে তাঁর পক্ষ থেকে, আর ২০১৯ সালে সারা ৯৬ বছর বয়সে মারা যাওয়ার পর পুরোপুরি দায়িত্ব নেন তিনি।
থাহা বলেন, ‘আমি ছিলাম তাঁর ছেলের মতো। নিজের মায়ের চেয়েও বেশি সময় তাঁর দেখাশোনা করেছি। আমি তাঁর জন্য কোশার (ইহুদিদের এক ধরনের খাবার) আর মাছ কিনে আনতাম। সময় কাটাতাম আর দোকান বন্ধ করার পরই কেবল ফিরতাম।’
এক ইহুদি নারী আর ভিন্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক পটভূমির এক মুসলমান পুরুষের এই বন্ধুত্ব প্রায় চার দশক ধরে টিকে ছিল। মৃত্যুর আগে সারা তাঁর দোকানটি থাহার নামে উইল করে যান। থাহা প্রতিজ্ঞা করেন, জু টাউনে তিনি সারার স্মৃতি আর ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রাখবেন। যেখানে আঠারো শতকে প্রায় আড়াই হাজার ইহুদি বাস করতেন, সেখানে এখন কেবল একজন অবশিষ্ট। থাহা বলেন, ‘এক দিক থেকে, এখানকার ইহুদি সম্প্রদায় যাতে বিস্মৃত না হয়, আমিও সেই চেষ্টাই করছি।’
কেরালায় ইহুদিদের আগমনের সবচেয়ে প্রচলিত কাহিনি বাইবেলের ওল্ড টেস্টামেন্টে উল্লিখিত রাজা সোলোমনের সময়ের, প্রায় দুই হাজার বছর আগেকার। প্রথমে তাঁরা মালাবার উপকূলে ক্রাঙ্গানোরে, বর্তমান কোডুঙ্গাল্লুরের কাছে প্রাচীন বন্দরের আশপাশে বণিক হিসেবে বসতি গড়েন। পরে তাঁরা কোচিতে চলে আসেন। এই প্রাচীন বসতির কারণে তাঁরা পরিচিত হন মালাবারি ইহুদি নামে।
এর বহু পরে, ১৫৯২ সালে, স্প্যানিশ নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসা সেফার্ডিক ইহুদিরা কেরালায় পৌঁছান। পর্তুগাল, তুরস্ক আর বাগদাদ হয়ে তাঁরা কোচিতে বসতি গড়ে তোলেন এবং পরিচিত হন পারাদেসি বা বিদেশি ইহুদি নামে। মালাবারি ও পারাদেসি—এই দুই ধারার মানুষ মিলেই পরিচিত হন কোচিন ইহুদি নামে।

পর্তুগিজ, আরব, ব্রিটিশ আর ওলন্দাজদের দীর্ঘদিনের বাণিজ্যকেন্দ্র কোচিতে তাঁরা রাজাদের সুরক্ষায় নিরাপদে বসবাস করতেন। বিশ শতকের গোড়ায় সারা কোহেনের জন্ম। তখন জু টাউন ছিল প্রাণবন্ত। সারা আর তাঁর স্বামী জ্যাকব—যাঁর জন্মও এখানেই—১৯৪৪ সালে বিয়ে করেন।
আশির দশকের গোড়ায় আচমকাই থাহার সঙ্গে কোহেন দম্পতির পরিচয় হয়। তেরো বছর বয়সে স্কুল ছেড়ে দেওয়া থাহা তখন পর্যটকদের কাছে পোস্টকার্ড বিক্রি করে জীবিকা চালাতেন। জু টাউনে আসা পর্যটকেরা নিয়মিতই যেতেন পারাদেসি সিনাগগে, যা ১৫৬৮ সালে কোচিনের রাজার দেওয়া জমিতে নির্মিত।
থাহা বলেন, ‘তখন প্রচুর পর্যটক আসত আর আমি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পোস্টকার্ড বেচতাম।’ এক রোববার, যে গুদামঘরে থাহা পোস্টকার্ড রাখতেন, তার মালিক না আসায় জ্যাকব তাঁকে তাঁদের বাড়িতে জায়গা দেন। সারা এতে খুশি ছিলেন না। থাহার মনে আছে, প্রায় তিন বছর তিনি তাঁর সঙ্গে তেমন কথা বলেননি।
ইব্রাহিম থাহা বলেন, ‘মাঝে মাঝে আমি তাঁর স্বামীর ছোটখাটো কাজ করে দিতাম। অথবা যখন তাঁদের জানালার বাইরে থেকে টিভিতে ক্রিকেট দেখতাম, তিনি আমাকে ভেতরে আসতে বলতেন।’ একদিন সারা তাঁকে সিনাগগের জন্য একটি কুশন কভার সেলাই করতে সাহায্য করতে বলেন। তখনই বোঝা যায়, থাহার মধ্যে সেলাই ও নকশার সহজাত দক্ষতা আছে। সম্ভবত দরজি বাবাকে ছোটবেলা থেকে সাহায্য করার ফলেই। তিনি বলেন, ‘আমি যে নকশা আঁকতে আর সেলাই করতে পারি, তা জানতামই না।’
উনিশ বছর বয়সে থাহা সারাকে সাহায্য করেন তাঁদের বৈঠকখানা থেকে ‘সারার হস্ত-সেলাই’ নামে একটি দোকান খুলতে। দোকানটি আজও সেই নামেই পরিচিত। সেখানে বিক্রি হতো কিপ্পাহ, চাল্লাহ কভার আর মেনোরাহ। তিনি বলেন, ‘তিনিই আমাকে সব শিখিয়েছেন।’
এই বন্ধুত্ব নিয়ে থাহা বেশ দার্শনিক। তিনি বলেন, ‘জু টাউনে ইহুদি আর মুসলমানেরা একে অপরের সঙ্গে তেমন মিশতেন না। তাঁরা একে অপরের প্রতি সন্দিহান ছিলেন। কিন্তু সারা আন্টি আর জ্যাকব আংকেল কখনোই আমাকে বহিরাগত মনে করতে দেননি, যদিও আমাদের পটভূমি আলাদা ছিল।’

থাহার বাবা-মা এই সম্পর্কে আপত্তি করেননি। তাঁরা দেখেছিলেন, কোহেন পরিবার তাঁদের ছেলেকে জীবনের একটি উদ্দেশ্য খুঁজে পেতে সাহায্য করছে। কিন্তু এই ঘনিষ্ঠতার সময়েই কোচির ইহুদি জনসংখ্যা দ্রুত কমতে থাকে। চল্লিশের দশকে যেখানে ছিল প্রায় ২৫০ জন, নব্বইয়ের দশকে তা নেমে আসে ২০ জনে। এখন মাত্র একজন আছেন—৬৭ বছর বয়সী কিথ হ্যালেগুয়া।
১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর অনেক পরিবার সেখানে চলে যায়। কেরালার ইহুদিদের ওপর ডক্টরেট থিসিস করা আনা জাখারিয়াস বলেন, ‘কোচিন ইহুদিরা হয়তো স্বদেশে ফিরে যাওয়ার ধারণায় ইসরায়েলে গিয়েছিলেন। তবে উন্নত জীবনের আকর্ষণের মতো অর্থনৈতিক কারণও ছিল। তাঁরা এটাও অনুভব করেছিলেন যে কেরালায় উপযুক্ত জীবনসঙ্গীর অভাব ছিল।’
ধর্মীয় নিপীড়ন কখনোই তাঁদের কোচি ছাড়ার কারণ ছিল না। শহরটি শত শত বছর ধরে তাঁদের স্বাগত জানিয়েছে। কিছু বয়স্ক ইহুদি থেকে গিয়েছিলেন, যাঁদের মধ্যে নিঃসন্তান কোহেন দম্পতিও ছিলেন। ১৯৯৯ সালে জ্যাকব মারা যাওয়ার আগে থাহাকে সারার দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়ে যান। তখন থাহা বিবাহিত, তিন সন্তানের জনক।
থাহা বলেন, ‘আমি জ্যাকব আংকেলকে বলেছিলাম, সারা আন্টি যদি আমাকে সুযোগ দেন, তবে আমি তাঁর দেখাশোনা করব। আমি তাঁকে সুযোগ দিতে বলেছিলাম, কারণ ইসলামে মৃতপ্রায় ব্যক্তির শেষ ইচ্ছা পূরণ করা গুরুত্বপূর্ণ। না করলে পাপ হয়।’
সারার স্বাস্থ্যের অবনতি হলে থাহা তাঁর পরিবারকে জু টাউনের কাছাকাছি নিয়ে আসেন। সারা মারা গেলে তিনি তাঁর কফিনের জন্য স্টার অব ডেভিড (ইসরায়েলি পতাকায় অঙ্কিত তারকা) আঁকা একটি কফিন কভার তৈরি করান। আজও তিনি নিয়মিত ইহুদি কবরস্থানে তাঁর সমাধিতে যান। প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক কোচি ঘুরতে আসেন। তাঁদের মধ্যে অনেক ইহুদিও থাকেন। আনা জাখারিয়াস বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে ইহুদিরা জু টাউনে আসেন এক ধরনের আপন অনুভব করার জন্য।’
তিনি বলেন, এখানকার ইহুদিরা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু সমাজের মধ্যেও নিজেদের পরিচয় বজায় রেখেছিলেন। একই সঙ্গে সমাজের সঙ্গে মিশে গিয়েছিলেন। স্থানীয় ভাষা মালয়ালমই ছিল তাঁদের দৈনন্দিন ভাষা। থাহা যেভাবে সারা কোহেনের ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন, তা তাঁকে মুগ্ধ করে। তিনি বলেন, ‘একজন মুসলমান কীভাবে এক ইহুদি নারীর যত্ন নিয়েছেন, তা দৃষ্টান্তস্বরূপ। তিনি এখনো সারা-র ধর্মীয় ঐতিহ্যগুলো বজায় রেখেছেন।’
থাহা দোকানটিকে ঠিক সেভাবেই রেখেছেন, যেমনটি সারা চালাতেন। ইহুদিদের সাব্বাথ উপলক্ষে তিনি শনিবার দোকান বন্ধ রাখেন। ইব্রাহিম থাহা আরও বলেন, ‘আমি ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা মুসলমান, কিন্তু সারা আন্টির জন্য এটা খুব জরুরি ছিল বলে আমি শুক্রবার সন্ধ্যায় একটি প্রদীপ জ্বালাই। কারণ, এই ক্ষণ সাব্বাথের শুরু হওয়াকে চিহ্নিত করে। এই বিষয়টি আমার কাছে এটা ধর্ম সংক্রান্ত নয়, পুরোটাই মানবিক।’
বিবিসি থেকে অনূদিত

দক্ষিণ ভারতের কোচি শহরের সরু, নুড়ি-পাথর বিছানো রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ চোখে পড়ে ছোট্ট একটি ফলক। তাতে লেখা, ‘সারা কোহেনের বাড়ি।’ জনাকীর্ণ এই রাস্তাটির নাম জু টাউন। কয়েক দশক আগেও এখানকার প্রায় প্রতিটি বাড়িতে বসবাস করত ইহুদি পরিবার। প্রাচীন সামগ্রী, পারস্যের কার্পেট আর মসলার দোকানে ঠাসা এই এলাকাই একসময় পরিচিত ছিল কোচির ইহুদি পাড়া হিসেবে।
এই রাস্তাতেই রয়েছে থাহা ইব্রাহিমের দোকান। কোচির শেষ ইহুদি নকশার দোকান। এক তপ্ত দুপুরে কয়েকজন মার্কিন পর্যটক দোকানে ঢুকতেই দেখা গেল, ৫৫ বছর বয়সী থাহা মনোযোগ দিয়ে একটি কিপ্পা (ইহুদি পুরুষদের ঐতিহ্যবাহী ছোট, বৃত্তাকার টুপি যা তারা ঈশ্বরকে সম্মান জানাতে এবং নিজেদের ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশ করতে পরে থাকে) সেলাই করছেন। দোকানের দেয়ালে ঝোলানো একটি ছবির সামনে পর্যটকেরা ভিড় জমালেন। ছবিটি ২০১৩ সালের। তৎকালীন ব্রিটিশ যুবরাজ (বর্তমানে রাজা) চার্লস জু টাউনের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলছেন।
ছবির দিকে আঙুল তুলে থাহা বললেন, ‘ওই ইনিই সারা আন্টি।’ এরপর যোগ করলেন, ‘এটা ছিল সারা কোহেনের বাড়ি ও তাঁর সেলাইয়ের দোকান।’
আরব সাগরের রানি নামে পরিচিত কোচি একসময় ছিল বন্দর আর মসলার আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। কয়েক শতাব্দী আগে এখানেই গড়ে উঠেছিল ইহুদিদের একটি নিবিড় জনগোষ্ঠী। সেই জনগোষ্ঠীর একজন ছিলেন সারা কোহেন। ২০০০ সাল থেকে এই দোকান চালাচ্ছেন থাহা। সারা জীবিত থাকাকালে তাঁর পক্ষ থেকে, আর ২০১৯ সালে সারা ৯৬ বছর বয়সে মারা যাওয়ার পর পুরোপুরি দায়িত্ব নেন তিনি।
থাহা বলেন, ‘আমি ছিলাম তাঁর ছেলের মতো। নিজের মায়ের চেয়েও বেশি সময় তাঁর দেখাশোনা করেছি। আমি তাঁর জন্য কোশার (ইহুদিদের এক ধরনের খাবার) আর মাছ কিনে আনতাম। সময় কাটাতাম আর দোকান বন্ধ করার পরই কেবল ফিরতাম।’
এক ইহুদি নারী আর ভিন্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক পটভূমির এক মুসলমান পুরুষের এই বন্ধুত্ব প্রায় চার দশক ধরে টিকে ছিল। মৃত্যুর আগে সারা তাঁর দোকানটি থাহার নামে উইল করে যান। থাহা প্রতিজ্ঞা করেন, জু টাউনে তিনি সারার স্মৃতি আর ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রাখবেন। যেখানে আঠারো শতকে প্রায় আড়াই হাজার ইহুদি বাস করতেন, সেখানে এখন কেবল একজন অবশিষ্ট। থাহা বলেন, ‘এক দিক থেকে, এখানকার ইহুদি সম্প্রদায় যাতে বিস্মৃত না হয়, আমিও সেই চেষ্টাই করছি।’
কেরালায় ইহুদিদের আগমনের সবচেয়ে প্রচলিত কাহিনি বাইবেলের ওল্ড টেস্টামেন্টে উল্লিখিত রাজা সোলোমনের সময়ের, প্রায় দুই হাজার বছর আগেকার। প্রথমে তাঁরা মালাবার উপকূলে ক্রাঙ্গানোরে, বর্তমান কোডুঙ্গাল্লুরের কাছে প্রাচীন বন্দরের আশপাশে বণিক হিসেবে বসতি গড়েন। পরে তাঁরা কোচিতে চলে আসেন। এই প্রাচীন বসতির কারণে তাঁরা পরিচিত হন মালাবারি ইহুদি নামে।
এর বহু পরে, ১৫৯২ সালে, স্প্যানিশ নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসা সেফার্ডিক ইহুদিরা কেরালায় পৌঁছান। পর্তুগাল, তুরস্ক আর বাগদাদ হয়ে তাঁরা কোচিতে বসতি গড়ে তোলেন এবং পরিচিত হন পারাদেসি বা বিদেশি ইহুদি নামে। মালাবারি ও পারাদেসি—এই দুই ধারার মানুষ মিলেই পরিচিত হন কোচিন ইহুদি নামে।

পর্তুগিজ, আরব, ব্রিটিশ আর ওলন্দাজদের দীর্ঘদিনের বাণিজ্যকেন্দ্র কোচিতে তাঁরা রাজাদের সুরক্ষায় নিরাপদে বসবাস করতেন। বিশ শতকের গোড়ায় সারা কোহেনের জন্ম। তখন জু টাউন ছিল প্রাণবন্ত। সারা আর তাঁর স্বামী জ্যাকব—যাঁর জন্মও এখানেই—১৯৪৪ সালে বিয়ে করেন।
আশির দশকের গোড়ায় আচমকাই থাহার সঙ্গে কোহেন দম্পতির পরিচয় হয়। তেরো বছর বয়সে স্কুল ছেড়ে দেওয়া থাহা তখন পর্যটকদের কাছে পোস্টকার্ড বিক্রি করে জীবিকা চালাতেন। জু টাউনে আসা পর্যটকেরা নিয়মিতই যেতেন পারাদেসি সিনাগগে, যা ১৫৬৮ সালে কোচিনের রাজার দেওয়া জমিতে নির্মিত।
থাহা বলেন, ‘তখন প্রচুর পর্যটক আসত আর আমি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পোস্টকার্ড বেচতাম।’ এক রোববার, যে গুদামঘরে থাহা পোস্টকার্ড রাখতেন, তার মালিক না আসায় জ্যাকব তাঁকে তাঁদের বাড়িতে জায়গা দেন। সারা এতে খুশি ছিলেন না। থাহার মনে আছে, প্রায় তিন বছর তিনি তাঁর সঙ্গে তেমন কথা বলেননি।
ইব্রাহিম থাহা বলেন, ‘মাঝে মাঝে আমি তাঁর স্বামীর ছোটখাটো কাজ করে দিতাম। অথবা যখন তাঁদের জানালার বাইরে থেকে টিভিতে ক্রিকেট দেখতাম, তিনি আমাকে ভেতরে আসতে বলতেন।’ একদিন সারা তাঁকে সিনাগগের জন্য একটি কুশন কভার সেলাই করতে সাহায্য করতে বলেন। তখনই বোঝা যায়, থাহার মধ্যে সেলাই ও নকশার সহজাত দক্ষতা আছে। সম্ভবত দরজি বাবাকে ছোটবেলা থেকে সাহায্য করার ফলেই। তিনি বলেন, ‘আমি যে নকশা আঁকতে আর সেলাই করতে পারি, তা জানতামই না।’
উনিশ বছর বয়সে থাহা সারাকে সাহায্য করেন তাঁদের বৈঠকখানা থেকে ‘সারার হস্ত-সেলাই’ নামে একটি দোকান খুলতে। দোকানটি আজও সেই নামেই পরিচিত। সেখানে বিক্রি হতো কিপ্পাহ, চাল্লাহ কভার আর মেনোরাহ। তিনি বলেন, ‘তিনিই আমাকে সব শিখিয়েছেন।’
এই বন্ধুত্ব নিয়ে থাহা বেশ দার্শনিক। তিনি বলেন, ‘জু টাউনে ইহুদি আর মুসলমানেরা একে অপরের সঙ্গে তেমন মিশতেন না। তাঁরা একে অপরের প্রতি সন্দিহান ছিলেন। কিন্তু সারা আন্টি আর জ্যাকব আংকেল কখনোই আমাকে বহিরাগত মনে করতে দেননি, যদিও আমাদের পটভূমি আলাদা ছিল।’

থাহার বাবা-মা এই সম্পর্কে আপত্তি করেননি। তাঁরা দেখেছিলেন, কোহেন পরিবার তাঁদের ছেলেকে জীবনের একটি উদ্দেশ্য খুঁজে পেতে সাহায্য করছে। কিন্তু এই ঘনিষ্ঠতার সময়েই কোচির ইহুদি জনসংখ্যা দ্রুত কমতে থাকে। চল্লিশের দশকে যেখানে ছিল প্রায় ২৫০ জন, নব্বইয়ের দশকে তা নেমে আসে ২০ জনে। এখন মাত্র একজন আছেন—৬৭ বছর বয়সী কিথ হ্যালেগুয়া।
১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর অনেক পরিবার সেখানে চলে যায়। কেরালার ইহুদিদের ওপর ডক্টরেট থিসিস করা আনা জাখারিয়াস বলেন, ‘কোচিন ইহুদিরা হয়তো স্বদেশে ফিরে যাওয়ার ধারণায় ইসরায়েলে গিয়েছিলেন। তবে উন্নত জীবনের আকর্ষণের মতো অর্থনৈতিক কারণও ছিল। তাঁরা এটাও অনুভব করেছিলেন যে কেরালায় উপযুক্ত জীবনসঙ্গীর অভাব ছিল।’
ধর্মীয় নিপীড়ন কখনোই তাঁদের কোচি ছাড়ার কারণ ছিল না। শহরটি শত শত বছর ধরে তাঁদের স্বাগত জানিয়েছে। কিছু বয়স্ক ইহুদি থেকে গিয়েছিলেন, যাঁদের মধ্যে নিঃসন্তান কোহেন দম্পতিও ছিলেন। ১৯৯৯ সালে জ্যাকব মারা যাওয়ার আগে থাহাকে সারার দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়ে যান। তখন থাহা বিবাহিত, তিন সন্তানের জনক।
থাহা বলেন, ‘আমি জ্যাকব আংকেলকে বলেছিলাম, সারা আন্টি যদি আমাকে সুযোগ দেন, তবে আমি তাঁর দেখাশোনা করব। আমি তাঁকে সুযোগ দিতে বলেছিলাম, কারণ ইসলামে মৃতপ্রায় ব্যক্তির শেষ ইচ্ছা পূরণ করা গুরুত্বপূর্ণ। না করলে পাপ হয়।’
সারার স্বাস্থ্যের অবনতি হলে থাহা তাঁর পরিবারকে জু টাউনের কাছাকাছি নিয়ে আসেন। সারা মারা গেলে তিনি তাঁর কফিনের জন্য স্টার অব ডেভিড (ইসরায়েলি পতাকায় অঙ্কিত তারকা) আঁকা একটি কফিন কভার তৈরি করান। আজও তিনি নিয়মিত ইহুদি কবরস্থানে তাঁর সমাধিতে যান। প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক কোচি ঘুরতে আসেন। তাঁদের মধ্যে অনেক ইহুদিও থাকেন। আনা জাখারিয়াস বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে ইহুদিরা জু টাউনে আসেন এক ধরনের আপন অনুভব করার জন্য।’
তিনি বলেন, এখানকার ইহুদিরা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু সমাজের মধ্যেও নিজেদের পরিচয় বজায় রেখেছিলেন। একই সঙ্গে সমাজের সঙ্গে মিশে গিয়েছিলেন। স্থানীয় ভাষা মালয়ালমই ছিল তাঁদের দৈনন্দিন ভাষা। থাহা যেভাবে সারা কোহেনের ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন, তা তাঁকে মুগ্ধ করে। তিনি বলেন, ‘একজন মুসলমান কীভাবে এক ইহুদি নারীর যত্ন নিয়েছেন, তা দৃষ্টান্তস্বরূপ। তিনি এখনো সারা-র ধর্মীয় ঐতিহ্যগুলো বজায় রেখেছেন।’
থাহা দোকানটিকে ঠিক সেভাবেই রেখেছেন, যেমনটি সারা চালাতেন। ইহুদিদের সাব্বাথ উপলক্ষে তিনি শনিবার দোকান বন্ধ রাখেন। ইব্রাহিম থাহা আরও বলেন, ‘আমি ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা মুসলমান, কিন্তু সারা আন্টির জন্য এটা খুব জরুরি ছিল বলে আমি শুক্রবার সন্ধ্যায় একটি প্রদীপ জ্বালাই। কারণ, এই ক্ষণ সাব্বাথের শুরু হওয়াকে চিহ্নিত করে। এই বিষয়টি আমার কাছে এটা ধর্ম সংক্রান্ত নয়, পুরোটাই মানবিক।’
বিবিসি থেকে অনূদিত

সুরেশচন্দ্র মজুমদারকে অনেকেই চেনেন। জাতীয়তাবাদী পত্রিকা প্রকাশের উদ্দেশ্যে আবাল্য বন্ধু প্রফুল্লকুমার সরকারের সাহায্য ও সম্পাদনায় ১৯২২ সালের ১৩ মার্চ তিনি আনন্দবাজার পত্রিকা প্রকাশ করেন। তাঁরই উদ্যোগে দেশ এবং দ্য স্টেটসম্যানের প্রতিপক্ষ হিসেবে হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড প্রকাশিত হয়।
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
আমার সৌভাগ্য হয়েছিল আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ঘনিষ্ঠ হওয়ার। হাসান আজিজুল হকের সূত্রেই পরিচয় হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। পরে তাঁর সঙ্গে প্রচুর আড্ডা দেওয়ার সুযোগ হয়েছিল। তিনি ছিলেন তুমুল আড্ডাবাজ মানুষ। আর তাঁর সঙ্গে জগৎ সংসারের যেকোনো বিষয়ে আলাপ করা যেত। এমন কোনো বিষয় নেই যাতে তাঁর আগ্রহ নেই।
১৬ ঘণ্টা আগে
১৯৭১ সালে পুরো বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন হয়েছিল ১৬ ডিসেম্বর। কিন্তু রাজধানীর মিরপুর তখনো শত্রুদের দখলে। পরের বছর জানুয়ারিতে শত্রুমুক্ত হলে একে একে সন্ধান পাওয়া যেতে থাকে বধ্যভূমিগুলোর। ঢাকায় সবচেয়ে বেশি বধ্যভূমি মিরপুর অঞ্চলে। আর মিরপুরের বধ্যভূমিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লাশ পাওয়া যায়...
২ দিন আগে
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
৭ দিন আগেসম্পাদকীয়

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল পাশবিক হত্যাযজ্ঞ। ঢাকার গাবতলীর পাশের তুরাগ নদের উত্তর পারেই সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ইসাকাবাদ গ্রাম অবস্থিত। গ্রামটি থেকে স্পষ্ট দেখা যেত গাবতলী সেতু। সেই গ্রামেরই বয়স্ক এক ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা করেছেন এভাবে, প্রতিদিন রাতের বেলা মিলিটারি আর বিহারিরা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে করে এই সেতুতে মানুষদের নিয়ে আসত। রাত গভীর হলে সেতুর দুই পাশের বাতি নিভিয়ে গুলি চালানো হতো। পুরো যুদ্ধের সময় এখানে এমন রাত ছিল না, যে রাতের বেলা সেখানে লাশ ফেলানো হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকের বেশি সময় পার হলেও এখনো এ জায়গাকে বধ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল পাশবিক হত্যাযজ্ঞ। ঢাকার গাবতলীর পাশের তুরাগ নদের উত্তর পারেই সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ইসাকাবাদ গ্রাম অবস্থিত। গ্রামটি থেকে স্পষ্ট দেখা যেত গাবতলী সেতু। সেই গ্রামেরই বয়স্ক এক ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা করেছেন এভাবে, প্রতিদিন রাতের বেলা মিলিটারি আর বিহারিরা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে করে এই সেতুতে মানুষদের নিয়ে আসত। রাত গভীর হলে সেতুর দুই পাশের বাতি নিভিয়ে গুলি চালানো হতো। পুরো যুদ্ধের সময় এখানে এমন রাত ছিল না, যে রাতের বেলা সেখানে লাশ ফেলানো হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকের বেশি সময় পার হলেও এখনো এ জায়গাকে বধ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

সুরেশচন্দ্র মজুমদারকে অনেকেই চেনেন। জাতীয়তাবাদী পত্রিকা প্রকাশের উদ্দেশ্যে আবাল্য বন্ধু প্রফুল্লকুমার সরকারের সাহায্য ও সম্পাদনায় ১৯২২ সালের ১৩ মার্চ তিনি আনন্দবাজার পত্রিকা প্রকাশ করেন। তাঁরই উদ্যোগে দেশ এবং দ্য স্টেটসম্যানের প্রতিপক্ষ হিসেবে হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড প্রকাশিত হয়।
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
আমার সৌভাগ্য হয়েছিল আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ঘনিষ্ঠ হওয়ার। হাসান আজিজুল হকের সূত্রেই পরিচয় হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। পরে তাঁর সঙ্গে প্রচুর আড্ডা দেওয়ার সুযোগ হয়েছিল। তিনি ছিলেন তুমুল আড্ডাবাজ মানুষ। আর তাঁর সঙ্গে জগৎ সংসারের যেকোনো বিষয়ে আলাপ করা যেত। এমন কোনো বিষয় নেই যাতে তাঁর আগ্রহ নেই।
১৬ ঘণ্টা আগে
১৯৭১ সালে পুরো বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন হয়েছিল ১৬ ডিসেম্বর। কিন্তু রাজধানীর মিরপুর তখনো শত্রুদের দখলে। পরের বছর জানুয়ারিতে শত্রুমুক্ত হলে একে একে সন্ধান পাওয়া যেতে থাকে বধ্যভূমিগুলোর। ঢাকায় সবচেয়ে বেশি বধ্যভূমি মিরপুর অঞ্চলে। আর মিরপুরের বধ্যভূমিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লাশ পাওয়া যায়...
২ দিন আগে
আরব সাগরের রানি নামে পরিচিত কোচি একসময় ছিল বন্দর আর মসলার আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। কয়েক শতাব্দী আগে এখানেই গড়ে উঠেছিল ইহুদিদের একটি নিবিড় জনগোষ্ঠী। সেই জনগোষ্ঠীর একজন ছিলেন সারা কোহেন। ২০০০ সাল থেকে এই দোকান চালাচ্ছেন থাহা। সারা জীবিত থাকাকালে তাঁর পক্ষ থেকে, আর ২০১৯ সালে সারা ৯৬
৫ দিন আগে