Ajker Patrika

জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়

সম্পাদকীয়
জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত
জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত

জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায় একই সঙ্গে গান লিখতেন, সুর করতেন এবং গাইতেন। তবে যতটা গান লিখেছেন বা সুর করেছেন, সে তুলনায় গেয়েছেন অনেক কম। আবার যেটুকু গেয়েছেন, তার বেশির ভাগই কালজয়ী হয়েছে। আজীবন পেশা ছিল গানের শিক্ষকতা করা। বাংলা ভাষার ঐশ্বর্য, শব্দের কারুকাজ কীভাবে বাংলা গানকে সমৃদ্ধ করে তুলতে পারে, তা তিনি হাতেকলমে করে দেখিয়েছেন।

১৯৩৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গের চুঁচুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। সতীনাথ মুখোপাধ্যায়ের কাছে তিনি প্রায় এক দশক গানের তালিম নিয়েছেন। পরে তালিম নিয়েছেন চিন্ময় লাহিড়ী ও সুধীন দাশগুপ্তের কাছেও। ১৯৫৫ সালে প্রথম আকাশবাণীতে গান গাওয়ার সুযোগ পান তিনি। ১৯৬৩ সালে মেগাফোন থেকে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম গানের রেকর্ড। ১৯৬৪ সালে সলিল চৌধুরীর কথা ও সুরে মেগাফোন থেকেই বের হয় তাঁর দ্বিতীয় রেকর্ড, সেই বিখ্যাত গান ‘পাগল হাওয়া’। বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল অ্যালবামটি। এরপর মেগাফোন, এইচএমভি থেকে নিয়মিত প্রকাশ পেতে শুরু করে তাঁর গাওয়া গান। ১৯৭৪ সালে তাঁর রেকর্ড করা

‘এ কোন সকাল’ গানটি আজও বিভিন্ন ক্ষেত্রে নানা দুরবস্থার কথা তুলে ধরতে ব্যবহৃত হয়।

বাংলা আধুনিক গানের স্বর্ণযুগে অন্য মাত্রা যোগ করে তাঁর কণ্ঠ ও সংগীতারোপের কুশলতা। ফলে ‘কেউ বলে ফাল্গুন, কেউ বলে পলাশের মাস’। কিন্তু তিনি জানতেন, এ আসলে তাঁর সর্বনাশ। এই অভিব্যক্তি বাংলা গানের নিজস্ব ও নতুন সম্পদ। তিনিই বলেছিলেন, ‘তোমার সঙ্গে দেখা না হলে ভালবাসার দেশটি দেখা হত না’। তাঁর গাওয়া জনপ্রিয় অন্য গানগুলো হলো ‘আমার স্বপন কিনতে পারে’, ‘আহা ভালোবেসে এই বুঝেছি’, ‘এ কোন সকাল রাতের চেয়েও অন্ধকার’, ‘কাঁদে গো শচীমাতা নিমাই নিমাই’, ‘যদি সত্যিই আমি গান ভালোবেসে থাকি’ প্রভৃতি। তিনি গানকে ভালোবেসেছিলেন, ভালোবাসতেও শিখিয়েছিলেন।

২০১৭ সালের ২১ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত