Ajker Patrika

স্বপ্নের পেছনে ছোটা যখন ছেড়ে দিতে হয়

স্বপ্নের পেছনে ছোটা যখন ছেড়ে দিতে হয়

বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়’। আর স্বপ্ন পূরণে হতে হয় নাছোড়বান্দা! কঠোর শ্রম, অধ্যবসায় আর সঠিক সময় ব্যবস্থাপনা একটি মানুষকে স্বপ্নের মঞ্জিলে পৌঁছে দিতে পারে। এপিজে আব্দুল কালামের কথায়, ‘সেটিই প্রকৃত স্বপ্ন যা মানুষকে ঘুমাতে দেয় না।’

কিন্তু স্বপ্নই যদি হয় অশান্তির কারণ! স্বপ্নের পেছনে ছুটতে গিয়ে দুশ্চিন্তা এবং নিদ্রাহীনতা যদি অস্বাস্থ্যের কারণ হয়ে দাঁড়ায় তখন কী করা উচিত? 

এ প্রশ্নেরই উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি। 

বিবিসি রেডিওর দৈনিক আয়োজন উইমেন্স আওয়ারের লিসেনার উইকে এক শ্রোতা মণিকা ই–মেইল বার্তায় স্বপ্ন নিয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। তিনি বলেন, ঔপন্যাসিক হওয়া তাঁর আজীবনের স্বপ্ন। তিনি সত্তর বছর বয়সে এসে সে আশা ছেড়ে দিয়েছেন। 

স্বপ্ন পূরণে হাল ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে তিনি বেদনাদায়ক বা দুঃখজনক বলার বদলে ‘মুক্তি’ হিসেবেই দেখছেন। এমনকি ‘আমি লেখক নই’–এখন তাঁর পছন্দের বুলি হয়ে উঠেছে। 

ওই শ্রোতা বলেন, ‘আমি কল্পনাবিলাসী ছিলাম, কল্পনার রাজ্যেই থাকতাম। খুব ছোটকালে এক শিক্ষক যখন আমাকে বলেন যে, আমি লেখক হতে পারি, কথাটি আমার মনে ধরে। আমি অবশ্যই লেখক হতে চেয়েছি—এ বিষয়ে সবকিছুই আমি খুব ভালো লাগত।’ 

লেখক হওয়ার স্বপ্ন যে একেবারে অধরা রয়ে গেছে তা নয়। ওই শ্রোতা মেনোপজের ওপর একটি নন–ফিকশন বই প্রকাশ করেছে। তবে একটা উপন্যাস লেখার তীব্র ইচ্ছা তাঁকে আজীবন তাড়িয়ে বেড়িয়েছে। 

মণিকা বলেন, ‘শুরুতে স্বপ্ন বেশ বড় ছিল, এ নিয়ে আমার বেশ কয়েকটি পরিকল্পনাও ছিল।’ 

তিনি বলেন, ‘আমি বেশ কয়েকটি এজেন্টের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। একবার এক এজেন্সির সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ করার সময় তাঁরা বলেন, এক মিনিটে আপনার উপন্যাস সম্পর্কে বলুন। ১৫ মিনিট পর তাঁরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন, কিন্তু আমি তাও কথা বলছিলাম! আমি থামতে পারছিলাম না। আমার কাছে এ অভিজ্ঞতা অত্যন্ত লজ্জাজনক মনে হয়।’ 

এবিসিকে মণিকা বলেন, ‘আমি পেশায় শিক্ষিকা ছিলাম। প্রত্যেক ছুটির দিনে আমার মনে হতো, আমার লেখা উচিত। উপন্যাস লেখার চিন্তা আমার জীবন শেষ করে দিচ্ছিল, অসুস্থ লাগছিল।’ 

বয়স যখন সত্তরের কোটায়, তখন হাল ছেড়ে দেন মণিকা। ‘আমি জানি আমি ঔপন্যাসিক নই। আমি শুরু আর শেষটা জানি, তবে মধ্যভাগটাই হলো এমন এক অংশ যেটি আমি মেলাতে পারি না।’ যোগ করেন মণিকা। 

ঔপন্যাসিক হওয়ার আশা ছেড়ে দিয়ে মণিকা এখন একটি স্কুলে চাকরি নেন। তিনি বলেন, ‘এটা দারুণ অভিজ্ঞতা, কারণ আমি এখন শিশুদের কল্পনার সঙ্গী হতে পারি।’ 

মণিকা জীবনের শেষ প্রান্তে এসে বুঝতে পেরেছেন তাঁর এখন স্বপ্ন পূরণের জেদ ছেড়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া উচিত। 

তবে আজীবন লালিত স্বপ্নের পেছনে ছোটা কখন ছেড়ে দেওয়া উচিত তা কি বুঝতে পারা আদৌ সম্ভব? 

চার্টার্ড মনোবিজ্ঞানী ক্যাথরিন হ্যালিসি বলেন, ‘এ প্রশ্নটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সব সময় শুনি: সবার একটা লক্ষ্য স্থির থাকা উচিত। তবে কেউ আপনাদের বলে না যে, এ লক্ষ্যগুলোকে সময়ে সময়ে পর্যালোচনাও করা দরকার। এ ক্ষেত্রে নিজেকে কিছু প্রশ্ন করতে হবে—এ লক্ষ্য কি এখনো আপনার জন্য ঠিক?’ 

ক্যাথরিন বলেন, ‘আপনার লক্ষ্য এখনো আপনার জীবন এবং আপনার জন্য উপযুক্ত কি না ভেবে দেখুন। আপনি কি এখনো এটাই অর্জন করতে চান?’ 

স্বপ্নের পেছনে ছোটা কি এখনো আপনাকে আনন্দ দেয়—সেটিও ভেবে দেখার পরামর্শ দিয়েছেন ক্যাথরিন। শুরুর আবেগ আর উদ্যম এখনো পুরোদমে আছে কি না সেটিও মাঝেমধ্যে পরখ করে নেওয়া দরকার। 

একই সঙ্গে লক্ষ্যটি এখনো বাস্তবসম্মত কি না সেটিও ভেবে দেখতে হবে। লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে প্রত্যেক ধাপের জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনাও নিশ্চিত করতে হবে। 

ক্যাথরিন বলেন, ‘আপনার বিনিয়োগ ও লাভের বিশ্লেষণ করাও প্রয়োজন। নিজেকে প্রশ্ন করুন এ লক্ষ্যের পেছনে দৌড়ানো ঠিক হচ্ছে কি না। এ প্রশ্নের উত্তর দিতে হলে, আপনাকে এ লক্ষ্যের জন্য প্রকৃত মূল্য যাচাই করতে হবে। যেমন—এ লক্ষ্যের কারণে কি জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে? আর এ লক্ষ্য ছেড়ে দিলে কী হতে পারে?’ 

আশার ভ্রান্তি মানুষকে মাঝপথে লক্ষ্য ত্যাগের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। একে বলা হয় ‘সাংক কস্ট ফ্যালাসি’। এর মানে হলো, কোনো একটা লক্ষ্যের জন্য সময় ও শক্তি ক্ষয়ের কথা চিন্তা করে সেটি ত্যাগ করার যৌক্তিকতা স্পষ্ট হওয়ার পরও সেই লক্ষ্য পূরণে লেগে থাকা। অবশ্য এ ধরনের বিনিয়োগকে সম্পূর্ণ অপচয় বলা যায় না। কারণ সময় ও শ্রমের বিনিময়ে পাওয়া অভিজ্ঞতাই আপনাকে আজকের মানুষ হতে সাহায্য করেছে। 

ক্যাথরিনের মতে, ‘লক্ষ্য সমন্বয় সক্ষমতা’ নিয়েও চিন্তা করতে হবে। এর মানে হলো নতুন কোনো তথ্য গ্রহণ করার মানসিকতা এবং সে তথ্য অনুসারে নিজের লক্ষ্য সমন্বয় করা। অলভ্য লক্ষ্য ছেড়ে দেওয়া এবং নতুন লক্ষ্যে মনযোগ দিতে পারা মানসিক সুস্থতার জন্য জরুরি। 

ক্যাথরিন বলেন, ‘নিয়মিত লক্ষ্য পর্যালোচনা করা এবং এর উন্নতি মূল্যায়ন করা জরুরি। এ ছাড়া লক্ষ্যটি আপনার জন্য এখনো উপযুক্ত কি না তা মূল্যায়ন করাও গুরুত্বপূর্ণ। প্রয়োজন হলে কিছু কিছু কাজ ছেঁটে ফেলতে হবে। লক্ষ্যের প্রতি নমনীয় হতে হবে।’ 

সময়ের সঙ্গে আমরা বেড়ে উঠি, আমাদের মানসিক উন্নতি হয় এবং আমাদের পরিবর্তনও হয়—এটা মেনে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। সাফল্য মানে এ নয় যে, যেকোনো মূল্য লক্ষ্য আঁকড়ে থাকতে হবে। সাফল্য হলো সে লক্ষ্য অর্জনে প্রকৃত মূল্য নির্ধারণ করতে পারা। 

লক্ষ্যের পেছনে ছুটতে গিয়ে একটা দমবন্ধ অবস্থার মধ্যে না থেকে বরং নিজেকে নতুন সম্ভাবনার পথে মেলে ধরার মধ্যেই থাকে মুক্ত ও প্রশস্ত হৃদয় আর সৃজনশীলতা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

হাদিকে গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল ওরফে দাউদ কে, মাস্ক পরা ব্যক্তিটিই কি তিনি

৫ ফুট উচ্চতার সুড়ঙ্গ খুঁড়ে বেলারুশ থেকে পোল্যান্ডে ১৮০ অভিবাসী, চাঞ্চল্যকর ভিডিও প্রকাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাবতলী সেতু বধ্যভূমি

সম্পাদকীয়
গাবতলী সেতু বধ্যভূমি

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল পাশবিক হত্যাযজ্ঞ। ঢাকার গাবতলীর পাশের তুরাগ নদের উত্তর পারেই সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ইসাকাবাদ গ্রাম অবস্থিত। গ্রামটি থেকে স্পষ্ট দেখা যেত গাবতলী সেতু। সেই গ্রামেরই বয়স্ক এক ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা করেছেন এভাবে, প্রতিদিন রাতের বেলা মিলিটারি আর বিহারিরা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে করে এই সেতুতে মানুষদের নিয়ে আসত। রাত গভীর হলে সেতুর দুই পাশের বাতি নিভিয়ে গুলি চালানো হতো। পুরো যুদ্ধের সময় এখানে এমন রাত ছিল না, যে রাতের বেলা সেখানে লাশ ফেলানো হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকের বেশি সময় পার হলেও এখনো এ জায়গাকে বধ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

হাদিকে গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল ওরফে দাউদ কে, মাস্ক পরা ব্যক্তিটিই কি তিনি

৫ ফুট উচ্চতার সুড়ঙ্গ খুঁড়ে বেলারুশ থেকে পোল্যান্ডে ১৮০ অভিবাসী, চাঞ্চল্যকর ভিডিও প্রকাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাহিত্যচর্চা এবং মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট

সম্পাদকীয়
সাহিত্যচর্চা এবং মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট

সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।

অনেক লেখকই আছেন যাঁরা খুব ধর্মপ্রাণ, কেউবা আবার কমিউনিস্ট ৷ হিউম্যানিস্ট লেখক যেমন আছেন, তেমনই আছেন অথোরিটারিয়ান লেখক।

তবে সে যা-ই হোক, ভালো সাহিত্যিকের মধ্যে দুটো কমিটমেন্ট থাকতেই হবে—সততা আর স্টাইলের দক্ষতা। নিজের কাছেই যে-লেখক অসৎ, যা লেখেন তা যদি তিনি নিজেই না বিশ্বাস করেন, তাহলে সেই লেখকের পতন অনিবার্য।

কোনো লেখক আবার যদি নিজের ভাষার ঐশ্বর্যকে ছেঁকে তুলতে ব্যর্থ হন, একজন সংগীতশিল্পীকে ঠিক যেভাবে তাঁর যন্ত্রটিকে নিজের বশে আনতে হয়, ভাষার ক্ষেত্রেও তেমনটা যদি কোনো লেখক করতে না পারেন, তাহলে একজন সাংবাদিক ছাড়া আর কিছুই হতে পারবেন না তিনি। সত্য এবং স্টাইল—একজন সাহিত্যিকের বেসিক কমিটমেন্ট হলো শুধু এই দুটো।

সূত্র: সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ টুডে’ পত্রিকার মার্চ, ১৯৮৪ সংখ্যায়, সাক্ষাৎকার গ্রহীতা সেরাজুল ইসলাম কাদির, অনুবাদক নীলাজ্জ দাস, শিবনারায়ণ রায়ের সাক্ষাৎকার সংগ্রহ, পৃষ্ঠা-২৭।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

হাদিকে গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল ওরফে দাউদ কে, মাস্ক পরা ব্যক্তিটিই কি তিনি

৫ ফুট উচ্চতার সুড়ঙ্গ খুঁড়ে বেলারুশ থেকে পোল্যান্ডে ১৮০ অভিবাসী, চাঞ্চল্যকর ভিডিও প্রকাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রমনা কালীবাড়ি বধ্যভূমি

সম্পাদকীয়
রমনা কালীবাড়ি বধ্যভূমি

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় ৫০০ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেন। তখন এ আখড়াটি কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।

পরে সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে এ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় ১০০ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ নিহত হন। যদিও এখন বধ্যভূমির কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেটাকে বধ্যভূমি হিসেবে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ছবি: সংগৃহীত

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

হাদিকে গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল ওরফে দাউদ কে, মাস্ক পরা ব্যক্তিটিই কি তিনি

৫ ফুট উচ্চতার সুড়ঙ্গ খুঁড়ে বেলারুশ থেকে পোল্যান্ডে ১৮০ অভিবাসী, চাঞ্চল্যকর ভিডিও প্রকাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমাদের অর্জন অনেক

সম্পাদকীয়
আমাদের অর্জন অনেক

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।

এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।

... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।

সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

হাদিকে গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল ওরফে দাউদ কে, মাস্ক পরা ব্যক্তিটিই কি তিনি

৫ ফুট উচ্চতার সুড়ঙ্গ খুঁড়ে বেলারুশ থেকে পোল্যান্ডে ১৮০ অভিবাসী, চাঞ্চল্যকর ভিডিও প্রকাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত