জাহাঙ্গীর আলম

বন্ধু এনকিদুর মৃত্যুর পর মানবজীবনের অর্থহীনতার এক অতল নৈরাশ্য গ্রাস করে বসে তাঁর মন। রাজকাজ ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন তিনি। উদ্দেশ্য—মৃত্যুকে পরাজিত করে চিরঞ্জীব হওয়া। সুমেরীয় বিশ্বাস অনুযায়ী তিনি উপকথার দেবতা উতনাপিশতিমকে খুঁজতে বের হয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত অবশ্য কাঙ্ক্ষিত অগাধ জীবনের দেখা পাননি। মৃত্যুর কাছেই তাঁকে আত্মসমর্পণ করতে হয়।
প্রাচীনতম মহাকাব্য গিলগামেশের গল্পটি মোটামুটি এ রকমই। এই মহাকাব্যের নায়ক সুমেরীয় উরুক রাজের রাজা গিলগামেশ। সুমেরীয় ভাষায় উচ্চারণ বিলগামেস। সুমেরীয় বা ব্যাবিলনীয় এই মহাকাব্য রচিত হয় ২১৫০ থেকে ১৪০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে। অর্থাৎ, আজ থেকে ৪ হাজার বছর আগে লেখা হয়েছিল এই মহাকাব্য। কিউনিফর্ম (কিলক) লিপিতে লেখা সেই মহাকাব্যের ফলক উদ্ধার হয়েছে আধুনিককালে।
এই মহাকাব্যেই উঠে এসেছে মৃত্যুর সঙ্গে মানুষের আড়ির গল্প। সভ্যতার উষালগ্ন থেকেই এ প্রজাতি যেভাবে অনন্ত জীবনের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে কত কিছু যে করেছে! মৃত্যু নিয়ে গিলগামেশের ভয় মূলত জীবনের অর্থহীনতা নিয়েই তাঁর ভীতির প্রকাশ। তিনি মৃত্যুকে জয় করতে চেয়েছিলেন। সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলেও এই ব্যর্থতাই তাঁকে শিখিয়েছে জীবনের মানে। আর এ কারণেই লেখক, কবি, দার্শনিকদের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল প্রাচীনতম এ মহাকাব্য।
এই মহাকাব্যের মধ্যে এমন একটি সজ্জা এবং কাহিনি বর্ণনার অস্পষ্ট ও হেঁয়ালি আছে, যা হোমারের মহাকাব্য এবং এমনকি বাইবেলের (গিলগামেশের বন্যার বিবরণটি বাইবেলের আদি পুস্তকে বর্ণিত নূহের বন্যার অনুরূপ) ভিত্তি হয়ে ওঠার সব যোগ্যতাই ধারণ করে। সভ্যতার প্রতিনিধিত্বকারী গিলগামেশ আর বন্যতার প্রতিনিধিত্বকারী এনকিদুর মাধ্যমে যে বৈপরীত্য উঠে এসেছে, সেটিকে এক বিন্দুতে এনে মিলিয়ে দেওয়াই এ মহাকাব্যের মূল সুর, আর সেটি হলো মৃত্যু।
গিলগামেশ মূলত মেসোপটেমীয় পুরাণ। এটি লেখা হয়েছে আক্কাদীয় ভাষায়। পরে অবশ্য উপকথাটির নতুন নতুন বর্ণনা ও বয়ান তৈরি হয়েছে সুমেরীয়, আসিরীয় ও ব্যাবিলনীয় যুগে। মেসোপটেমিয়া সভ্যতা ইরাকের টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস (দজলা ও ফোরাত) নদীর মাঝে অবস্থিত। সুমেরীয়রা ছিল বহু ঈশ্বরবাদী ধর্মের অনুসারী। তাঁরা প্রাণী বা বস্তুতে নরত্ব আরোপ করে দেব-দেবির প্রতিরূপ বলে ভাবত। একেক দেব-দেবি একেক ধরনের শক্তি ধারণ করে বলে তাদের বিশ্বাস ছিল। এই বিশ্বাসের ধরনটি পরবর্তীকালের গ্রিক পুরাণে অহরহ দেখা মেলে।
গিলগামেশ মহাকাব্যটি ১৮৪৯ সালে ব্যাবিলনীয় রাজা আশুরবানিপালের লাইব্রেরিতে আবিষ্কার করা হয়। এটির মোট চরণ সংখ্যা ৩ হাজার। ১৮৭০-এর দশকেই এটি অনুবাদ করা হয়। ওই সময় হিব্রু বাইবেলের অনেক অংশের সঙ্গে এর কিছু গল্প মিলে যাওয়ায় ব্যাপক তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। বিশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত গিলগামেশ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ধোঁয়াশা ছিল। বিশ শতকের গোড়ার দিকে আধুনিক সংস্কৃতিতে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যকর্ম এবং ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায় এ মহাকাব্য।

অনেকে মনে করেন, এই মহাকাব্যের পুরো গল্পটি আবর্তিত হয়েছে মৃত্যুকে ঘিরে। মৃত্যু একটি নিশ্চিত ও ধ্রুব বিষয় হওয়া সত্ত্বেও, মানব সভ্যতার শুরুর দিক থেকে মৃত্যু সম্পর্কে ধারণা ক্রমেই বিবর্তিত হয়েছে। একটি শিকারি ও সংগ্রাহক সমাজ থেকে কৃষি সভ্যতায় মানবজাতির উত্তরণের সময় মৃত্যুর ধারণা পরিবর্তিত হয়েছে। মহাকাব্যের বর্ণনা অনুযায়ী, এনকিদু এই ভেবে আক্ষেপ করতে থাকেন যে, তিনি তাঁর বন্য স্বভাব হারিয়ে ফলেছেন। গিলগামেশের পীড়াপীড়িতে তিনি ভয়ংকর বনদেবতা হাম্বাবাকে হত্যার গৌরব অর্জনের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ছুটে বেড়ান। এখানেই হয়তো একজন বন্য ‘মানব পশুর’ মৃত্যু আর সভ্য মানুষের মৃত্যুর মধ্যে পার্থক্যের ইঙ্গিত রয়েছে। পার্থক্যটি হলো, বন্য প্রাণীর মৃত্যুর ধারণা নেই; কিন্তু সভ্য মানুষ এ ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন এবং সন্ত্রস্ত। এনকিদু, তাঁর জীবনের শেষ মুহূর্তগুলোতে, পশু থেকে মানুষে উত্তরণ নিয়ে আক্ষেপ করতে থাকেন। তিনি জীবনের ধারণা সম্পর্কে অজ্ঞতা থেকে ‘বিচ্যুত’ হয়ে মৃত্যু সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠা নিয়ে শোক করেন। যদিও এই জ্ঞানই তাঁকে গৌরব অর্জনের মতো আনন্দগুলো উপভোগের ক্ষমতা দেয়। একই সঙ্গে এটি তাঁকে নিয়তি সম্পর্কে সন্ত্রস্তও করে তোলে।
সেই সময় রাজাদের রাজা গিলগামেশ। ক্ষমতা, ধন, জন—সবকিছুতে সমসাময়িকদের ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন তিনি। জীবন নিয়ে অতৃপ্ত। একদিন মরতে হবে এই ভাবনা তাঁকে অস্থির করে তোলে। এ নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধও ছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর অনন্ত জীবন লাভের যে সাধনা সেটিও ছিল অকারণ। এমনকি তারুণ্যের বিশল্যকরণী শেষ মুহূর্তে একটি সাপ তার কাছ থেকে যে চুরি করে নিয়ে যায়, সেটিরও কি কোনো কারণ ছিল? সব শেষে ‘জীবনের সব আয়োজনই অপচয়’ এই হতাশাই গ্রাস করে বসে মানুষকে।
এই মহাকাব্যের আকর্ষণীয় (সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ) অংশটি হলো: পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত দাপিয়ে বেড়িয়ে যখন উরুকের পথে গিলগামেশ, শূন্য হাত, ক্লান্ত, শ্রান্ত, দুঃখ ভারাক্রান্ত, শোক স্তব্ধ। তিনি বিমর্ষ বদনে বসে আছেন উরশানাবির ফেরিতে। তিনি শহরের বিশাল দেয়ালগুলো দেখছেন, আর প্রশস্তি গাইছেন। এটি মহাকাব্যটির সর্বার্থক মুহূর্ত। মহাকাব্যটির আসল সমাপ্তি হলো—একজন পরাক্রমশালী রাজার এমন দশা, যিনি অনন্ত জীবন পাওয়ার জন্য তাঁর যৌবন ব্যয় করে পরাজিত হয়ে রাজ্যে ফিরছেন। আর শূন্য হস্ত, বিধ্বস্ত রাজা বিস্মিত হয়ে তাঁর মহান উরুক শহরের দেয়াল দেখছেন।
গিলগামেশের এই উপলব্ধি হয়েছিল যে, সভ্য মানুষ হিসেবে মৃত্যুর অসহনীয় জ্ঞানের বোঝা আমাদের বইতে হয়, কিন্তু কাজের মাহাত্ম্যই আমাদের একমাত্র সান্ত্বনা। সত্য যে, আমাদের সভ্যতা এবং এর অন্য অংশগুলো আমাদের জীবনকে ছাড়িয়ে যায়। এটি অতি তুচ্ছ ও তিক্ত হলেও রাজাদের রাজার জন্যও এটি অবধারিত। জীবনের শেষ অঙ্কে সবই শূন্য—এটাই ধ্রুব সত্য হয়ে প্রতিভাত হয়।
চার হাজার বছর আগে মানব সভ্যতার উষালগ্নে রচিত একটি মহাকাব্য এভাবেই একটি প্রজাতির অনন্ত উদ্বেগের সাক্ষী। যে প্রজাতি তাদের বুদ্ধিমত্তা এবং ইচ্ছাশক্তির দ্বারা পাশবিক অজ্ঞতা থেকে নিজেকে একটি মহাজাগতিক জ্ঞানে উত্তরণের দিকে নিয়ে যায়। এরা তারকার গতিপথ দেখে তাদের পথ নির্ধারণ করতে পারে এবং সমস্ত ধরনের যন্ত্রকৌশল আয়ত্ত করতে পারে, যা তাদের নতুন জীবন দেয়, জীবনের হেফাজত করে আবার সময়ে-অসময়ে কেড়েও নেয়। যে উদ্বেগ থেকে এই উত্তরণের পথ সৃষ্টি হয়েছে জীবিত থাকতে, সেই উদ্বেগ থেকে পালিয়ে বাঁচার কোনো পথ নেই!

বন্ধু এনকিদুর মৃত্যুর পর মানবজীবনের অর্থহীনতার এক অতল নৈরাশ্য গ্রাস করে বসে তাঁর মন। রাজকাজ ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন তিনি। উদ্দেশ্য—মৃত্যুকে পরাজিত করে চিরঞ্জীব হওয়া। সুমেরীয় বিশ্বাস অনুযায়ী তিনি উপকথার দেবতা উতনাপিশতিমকে খুঁজতে বের হয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত অবশ্য কাঙ্ক্ষিত অগাধ জীবনের দেখা পাননি। মৃত্যুর কাছেই তাঁকে আত্মসমর্পণ করতে হয়।
প্রাচীনতম মহাকাব্য গিলগামেশের গল্পটি মোটামুটি এ রকমই। এই মহাকাব্যের নায়ক সুমেরীয় উরুক রাজের রাজা গিলগামেশ। সুমেরীয় ভাষায় উচ্চারণ বিলগামেস। সুমেরীয় বা ব্যাবিলনীয় এই মহাকাব্য রচিত হয় ২১৫০ থেকে ১৪০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে। অর্থাৎ, আজ থেকে ৪ হাজার বছর আগে লেখা হয়েছিল এই মহাকাব্য। কিউনিফর্ম (কিলক) লিপিতে লেখা সেই মহাকাব্যের ফলক উদ্ধার হয়েছে আধুনিককালে।
এই মহাকাব্যেই উঠে এসেছে মৃত্যুর সঙ্গে মানুষের আড়ির গল্প। সভ্যতার উষালগ্ন থেকেই এ প্রজাতি যেভাবে অনন্ত জীবনের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে কত কিছু যে করেছে! মৃত্যু নিয়ে গিলগামেশের ভয় মূলত জীবনের অর্থহীনতা নিয়েই তাঁর ভীতির প্রকাশ। তিনি মৃত্যুকে জয় করতে চেয়েছিলেন। সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলেও এই ব্যর্থতাই তাঁকে শিখিয়েছে জীবনের মানে। আর এ কারণেই লেখক, কবি, দার্শনিকদের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল প্রাচীনতম এ মহাকাব্য।
এই মহাকাব্যের মধ্যে এমন একটি সজ্জা এবং কাহিনি বর্ণনার অস্পষ্ট ও হেঁয়ালি আছে, যা হোমারের মহাকাব্য এবং এমনকি বাইবেলের (গিলগামেশের বন্যার বিবরণটি বাইবেলের আদি পুস্তকে বর্ণিত নূহের বন্যার অনুরূপ) ভিত্তি হয়ে ওঠার সব যোগ্যতাই ধারণ করে। সভ্যতার প্রতিনিধিত্বকারী গিলগামেশ আর বন্যতার প্রতিনিধিত্বকারী এনকিদুর মাধ্যমে যে বৈপরীত্য উঠে এসেছে, সেটিকে এক বিন্দুতে এনে মিলিয়ে দেওয়াই এ মহাকাব্যের মূল সুর, আর সেটি হলো মৃত্যু।
গিলগামেশ মূলত মেসোপটেমীয় পুরাণ। এটি লেখা হয়েছে আক্কাদীয় ভাষায়। পরে অবশ্য উপকথাটির নতুন নতুন বর্ণনা ও বয়ান তৈরি হয়েছে সুমেরীয়, আসিরীয় ও ব্যাবিলনীয় যুগে। মেসোপটেমিয়া সভ্যতা ইরাকের টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস (দজলা ও ফোরাত) নদীর মাঝে অবস্থিত। সুমেরীয়রা ছিল বহু ঈশ্বরবাদী ধর্মের অনুসারী। তাঁরা প্রাণী বা বস্তুতে নরত্ব আরোপ করে দেব-দেবির প্রতিরূপ বলে ভাবত। একেক দেব-দেবি একেক ধরনের শক্তি ধারণ করে বলে তাদের বিশ্বাস ছিল। এই বিশ্বাসের ধরনটি পরবর্তীকালের গ্রিক পুরাণে অহরহ দেখা মেলে।
গিলগামেশ মহাকাব্যটি ১৮৪৯ সালে ব্যাবিলনীয় রাজা আশুরবানিপালের লাইব্রেরিতে আবিষ্কার করা হয়। এটির মোট চরণ সংখ্যা ৩ হাজার। ১৮৭০-এর দশকেই এটি অনুবাদ করা হয়। ওই সময় হিব্রু বাইবেলের অনেক অংশের সঙ্গে এর কিছু গল্প মিলে যাওয়ায় ব্যাপক তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। বিশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত গিলগামেশ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ধোঁয়াশা ছিল। বিশ শতকের গোড়ার দিকে আধুনিক সংস্কৃতিতে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যকর্ম এবং ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায় এ মহাকাব্য।

অনেকে মনে করেন, এই মহাকাব্যের পুরো গল্পটি আবর্তিত হয়েছে মৃত্যুকে ঘিরে। মৃত্যু একটি নিশ্চিত ও ধ্রুব বিষয় হওয়া সত্ত্বেও, মানব সভ্যতার শুরুর দিক থেকে মৃত্যু সম্পর্কে ধারণা ক্রমেই বিবর্তিত হয়েছে। একটি শিকারি ও সংগ্রাহক সমাজ থেকে কৃষি সভ্যতায় মানবজাতির উত্তরণের সময় মৃত্যুর ধারণা পরিবর্তিত হয়েছে। মহাকাব্যের বর্ণনা অনুযায়ী, এনকিদু এই ভেবে আক্ষেপ করতে থাকেন যে, তিনি তাঁর বন্য স্বভাব হারিয়ে ফলেছেন। গিলগামেশের পীড়াপীড়িতে তিনি ভয়ংকর বনদেবতা হাম্বাবাকে হত্যার গৌরব অর্জনের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ছুটে বেড়ান। এখানেই হয়তো একজন বন্য ‘মানব পশুর’ মৃত্যু আর সভ্য মানুষের মৃত্যুর মধ্যে পার্থক্যের ইঙ্গিত রয়েছে। পার্থক্যটি হলো, বন্য প্রাণীর মৃত্যুর ধারণা নেই; কিন্তু সভ্য মানুষ এ ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন এবং সন্ত্রস্ত। এনকিদু, তাঁর জীবনের শেষ মুহূর্তগুলোতে, পশু থেকে মানুষে উত্তরণ নিয়ে আক্ষেপ করতে থাকেন। তিনি জীবনের ধারণা সম্পর্কে অজ্ঞতা থেকে ‘বিচ্যুত’ হয়ে মৃত্যু সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠা নিয়ে শোক করেন। যদিও এই জ্ঞানই তাঁকে গৌরব অর্জনের মতো আনন্দগুলো উপভোগের ক্ষমতা দেয়। একই সঙ্গে এটি তাঁকে নিয়তি সম্পর্কে সন্ত্রস্তও করে তোলে।
সেই সময় রাজাদের রাজা গিলগামেশ। ক্ষমতা, ধন, জন—সবকিছুতে সমসাময়িকদের ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন তিনি। জীবন নিয়ে অতৃপ্ত। একদিন মরতে হবে এই ভাবনা তাঁকে অস্থির করে তোলে। এ নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধও ছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর অনন্ত জীবন লাভের যে সাধনা সেটিও ছিল অকারণ। এমনকি তারুণ্যের বিশল্যকরণী শেষ মুহূর্তে একটি সাপ তার কাছ থেকে যে চুরি করে নিয়ে যায়, সেটিরও কি কোনো কারণ ছিল? সব শেষে ‘জীবনের সব আয়োজনই অপচয়’ এই হতাশাই গ্রাস করে বসে মানুষকে।
এই মহাকাব্যের আকর্ষণীয় (সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ) অংশটি হলো: পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত দাপিয়ে বেড়িয়ে যখন উরুকের পথে গিলগামেশ, শূন্য হাত, ক্লান্ত, শ্রান্ত, দুঃখ ভারাক্রান্ত, শোক স্তব্ধ। তিনি বিমর্ষ বদনে বসে আছেন উরশানাবির ফেরিতে। তিনি শহরের বিশাল দেয়ালগুলো দেখছেন, আর প্রশস্তি গাইছেন। এটি মহাকাব্যটির সর্বার্থক মুহূর্ত। মহাকাব্যটির আসল সমাপ্তি হলো—একজন পরাক্রমশালী রাজার এমন দশা, যিনি অনন্ত জীবন পাওয়ার জন্য তাঁর যৌবন ব্যয় করে পরাজিত হয়ে রাজ্যে ফিরছেন। আর শূন্য হস্ত, বিধ্বস্ত রাজা বিস্মিত হয়ে তাঁর মহান উরুক শহরের দেয়াল দেখছেন।
গিলগামেশের এই উপলব্ধি হয়েছিল যে, সভ্য মানুষ হিসেবে মৃত্যুর অসহনীয় জ্ঞানের বোঝা আমাদের বইতে হয়, কিন্তু কাজের মাহাত্ম্যই আমাদের একমাত্র সান্ত্বনা। সত্য যে, আমাদের সভ্যতা এবং এর অন্য অংশগুলো আমাদের জীবনকে ছাড়িয়ে যায়। এটি অতি তুচ্ছ ও তিক্ত হলেও রাজাদের রাজার জন্যও এটি অবধারিত। জীবনের শেষ অঙ্কে সবই শূন্য—এটাই ধ্রুব সত্য হয়ে প্রতিভাত হয়।
চার হাজার বছর আগে মানব সভ্যতার উষালগ্নে রচিত একটি মহাকাব্য এভাবেই একটি প্রজাতির অনন্ত উদ্বেগের সাক্ষী। যে প্রজাতি তাদের বুদ্ধিমত্তা এবং ইচ্ছাশক্তির দ্বারা পাশবিক অজ্ঞতা থেকে নিজেকে একটি মহাজাগতিক জ্ঞানে উত্তরণের দিকে নিয়ে যায়। এরা তারকার গতিপথ দেখে তাদের পথ নির্ধারণ করতে পারে এবং সমস্ত ধরনের যন্ত্রকৌশল আয়ত্ত করতে পারে, যা তাদের নতুন জীবন দেয়, জীবনের হেফাজত করে আবার সময়ে-অসময়ে কেড়েও নেয়। যে উদ্বেগ থেকে এই উত্তরণের পথ সৃষ্টি হয়েছে জীবিত থাকতে, সেই উদ্বেগ থেকে পালিয়ে বাঁচার কোনো পথ নেই!

মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স-সংলগ্ন ভুরভুরিয়াছড়ার পাশেই বধ্যভূমি ৭১ পার্ক অবস্থিত। সেখানে প্রাচীন একটি বটগাছ রয়েছে, যা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করে। পাকিস্তান আমলে গাছটির নিচে ছিল এক সাধুর আস্তানা।
৯ ঘণ্টা আগে
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর রেলস্টেশনের কাছেই রয়েছে একটি বধ্যভূমি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে সহযোগীদের সহায়তায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী রহনপুর ও আশপাশের এলাকার মুক্তিযোদ্ধা এবং অনেক সাধারণ বাঙালিকে এই বধ্যভূমিতে বিভিন্ন সময় ধরে এনে হত্যা করে।
৪ দিন আগে
আমার সৌভাগ্য হয়েছিল আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ঘনিষ্ঠ হওয়ার। হাসান আজিজুল হকের সূত্রেই পরিচয় হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। পরে তাঁর সঙ্গে প্রচুর আড্ডা দেওয়ার সুযোগ হয়েছিল। তিনি ছিলেন তুমুল আড্ডাবাজ মানুষ। আর তাঁর সঙ্গে জগৎ সংসারের যেকোনো বিষয়ে আলাপ করা যেত। এমন কোনো বিষয় নেই যাতে তাঁর আগ্রহ নেই।
৫ দিন আগে
১৯৭১ সালে পুরো বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন হয়েছিল ১৬ ডিসেম্বর। কিন্তু রাজধানীর মিরপুর তখনো শত্রুদের দখলে। পরের বছর জানুয়ারিতে শত্রুমুক্ত হলে একে একে সন্ধান পাওয়া যেতে থাকে বধ্যভূমিগুলোর। ঢাকায় সবচেয়ে বেশি বধ্যভূমি মিরপুর অঞ্চলে। আর মিরপুরের বধ্যভূমিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লাশ পাওয়া যায়...
৬ দিন আগেসম্পাদকীয়

মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স-সংলগ্ন ভুরভুরিয়াছড়ার পাশেই বধ্যভূমি ৭১ পার্ক অবস্থিত। সেখানে প্রাচীন একটি বটগাছ রয়েছে, যা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করে। পাকিস্তান আমলে গাছটির নিচে ছিল এক সাধুর আস্তানা। চা-শ্রমিক ও বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এখানে এসে পূজা দিত, মনোবাসনা পূরণে মানত করত। সবাই জায়গাটিকে চিনত ‘সাধু বাবার থলি’ নামে। যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এখানে এনে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। হত্যার আগে বটগাছের ডালে ঝুলিয়ে তাঁদের ওপর অমানবিক অত্যাচার চালানো হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজন ও মুক্তিকামী সাধারণ মানুষও বাদ যাননি। গাছের ডালে উল্টো করে বেঁধে রাখা হতো তাঁদের। নির্যাতনের যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে তাঁরা শহীদ হন। সেই সব শহীদের ত্যাগকে অমর করে রাখতে এখানে নির্মিত হয় ‘বধ্যভূমি ৭১’ নামের স্মৃতিস্তম্ভটি। একাত্তরের স্মৃতিবিজড়িত বধ্যভূমিটিতে আরও রয়েছে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী ৭১’ নামে একটি ভাস্কর্য।
ছবি: সংগৃহীত

মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স-সংলগ্ন ভুরভুরিয়াছড়ার পাশেই বধ্যভূমি ৭১ পার্ক অবস্থিত। সেখানে প্রাচীন একটি বটগাছ রয়েছে, যা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করে। পাকিস্তান আমলে গাছটির নিচে ছিল এক সাধুর আস্তানা। চা-শ্রমিক ও বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এখানে এসে পূজা দিত, মনোবাসনা পূরণে মানত করত। সবাই জায়গাটিকে চিনত ‘সাধু বাবার থলি’ নামে। যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এখানে এনে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। হত্যার আগে বটগাছের ডালে ঝুলিয়ে তাঁদের ওপর অমানবিক অত্যাচার চালানো হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজন ও মুক্তিকামী সাধারণ মানুষও বাদ যাননি। গাছের ডালে উল্টো করে বেঁধে রাখা হতো তাঁদের। নির্যাতনের যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে তাঁরা শহীদ হন। সেই সব শহীদের ত্যাগকে অমর করে রাখতে এখানে নির্মিত হয় ‘বধ্যভূমি ৭১’ নামের স্মৃতিস্তম্ভটি। একাত্তরের স্মৃতিবিজড়িত বধ্যভূমিটিতে আরও রয়েছে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী ৭১’ নামে একটি ভাস্কর্য।
ছবি: সংগৃহীত

গিলগামেশ মূলত মেসোপটেমীয় পুরাণ। এটি লেখা হয়েছে আক্কাদীয় ভাষায়। পরে অবশ্য উপকথাটির নতুন নতুন বর্ণনা ও বয়ান তৈরি হয়েছে সুমেরীয়, আসিরীয় ও ব্যাবিলনীয় যুগে। মেসোপটেমিয়া সভ্যতা ইরাকের টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস (দজলা ও ফোরাত) নদীর মাঝে অবস্থিত। সুমেরীয়রা ছিল বহু ঈশ্বরবাদী ধর্মের অনুসারী।
২২ আগস্ট ২০২১
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর রেলস্টেশনের কাছেই রয়েছে একটি বধ্যভূমি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে সহযোগীদের সহায়তায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী রহনপুর ও আশপাশের এলাকার মুক্তিযোদ্ধা এবং অনেক সাধারণ বাঙালিকে এই বধ্যভূমিতে বিভিন্ন সময় ধরে এনে হত্যা করে।
৪ দিন আগে
আমার সৌভাগ্য হয়েছিল আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ঘনিষ্ঠ হওয়ার। হাসান আজিজুল হকের সূত্রেই পরিচয় হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। পরে তাঁর সঙ্গে প্রচুর আড্ডা দেওয়ার সুযোগ হয়েছিল। তিনি ছিলেন তুমুল আড্ডাবাজ মানুষ। আর তাঁর সঙ্গে জগৎ সংসারের যেকোনো বিষয়ে আলাপ করা যেত। এমন কোনো বিষয় নেই যাতে তাঁর আগ্রহ নেই।
৫ দিন আগে
১৯৭১ সালে পুরো বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন হয়েছিল ১৬ ডিসেম্বর। কিন্তু রাজধানীর মিরপুর তখনো শত্রুদের দখলে। পরের বছর জানুয়ারিতে শত্রুমুক্ত হলে একে একে সন্ধান পাওয়া যেতে থাকে বধ্যভূমিগুলোর। ঢাকায় সবচেয়ে বেশি বধ্যভূমি মিরপুর অঞ্চলে। আর মিরপুরের বধ্যভূমিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লাশ পাওয়া যায়...
৬ দিন আগেসম্পাদকীয়

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর রেলস্টেশনের কাছেই রয়েছে একটি বধ্যভূমি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে সহযোগীদের সহায়তায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী রহনপুর ও আশপাশের এলাকার মুক্তিযোদ্ধা এবং অনেক সাধারণ বাঙালিকে এই বধ্যভূমিতে বিভিন্ন সময় ধরে এনে হত্যা করে। শহীদদের সংখ্যাটা প্রায় ১০ হাজার! রহনপুর সরকারি এ বি উচ্চবিদ্যালয়ে ছিল পাকিস্তানিদের ক্যাম্প। এখানেও শত শত মানুষকে ধরে এনে হত্যা করা হয়। বধ্যভূমির যে স্থানে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, সেখানেই শহীদদের সম্মানে নির্মিত হয়েছে একটি স্মৃতিস্তম্ভ। এই বধ্যভূমিটি রহনপুর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবর নামে পরিচিত।
ছবি: সংগৃহীত

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর রেলস্টেশনের কাছেই রয়েছে একটি বধ্যভূমি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে সহযোগীদের সহায়তায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী রহনপুর ও আশপাশের এলাকার মুক্তিযোদ্ধা এবং অনেক সাধারণ বাঙালিকে এই বধ্যভূমিতে বিভিন্ন সময় ধরে এনে হত্যা করে। শহীদদের সংখ্যাটা প্রায় ১০ হাজার! রহনপুর সরকারি এ বি উচ্চবিদ্যালয়ে ছিল পাকিস্তানিদের ক্যাম্প। এখানেও শত শত মানুষকে ধরে এনে হত্যা করা হয়। বধ্যভূমির যে স্থানে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, সেখানেই শহীদদের সম্মানে নির্মিত হয়েছে একটি স্মৃতিস্তম্ভ। এই বধ্যভূমিটি রহনপুর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবর নামে পরিচিত।
ছবি: সংগৃহীত

গিলগামেশ মূলত মেসোপটেমীয় পুরাণ। এটি লেখা হয়েছে আক্কাদীয় ভাষায়। পরে অবশ্য উপকথাটির নতুন নতুন বর্ণনা ও বয়ান তৈরি হয়েছে সুমেরীয়, আসিরীয় ও ব্যাবিলনীয় যুগে। মেসোপটেমিয়া সভ্যতা ইরাকের টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস (দজলা ও ফোরাত) নদীর মাঝে অবস্থিত। সুমেরীয়রা ছিল বহু ঈশ্বরবাদী ধর্মের অনুসারী।
২২ আগস্ট ২০২১
মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স-সংলগ্ন ভুরভুরিয়াছড়ার পাশেই বধ্যভূমি ৭১ পার্ক অবস্থিত। সেখানে প্রাচীন একটি বটগাছ রয়েছে, যা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করে। পাকিস্তান আমলে গাছটির নিচে ছিল এক সাধুর আস্তানা।
৯ ঘণ্টা আগে
আমার সৌভাগ্য হয়েছিল আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ঘনিষ্ঠ হওয়ার। হাসান আজিজুল হকের সূত্রেই পরিচয় হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। পরে তাঁর সঙ্গে প্রচুর আড্ডা দেওয়ার সুযোগ হয়েছিল। তিনি ছিলেন তুমুল আড্ডাবাজ মানুষ। আর তাঁর সঙ্গে জগৎ সংসারের যেকোনো বিষয়ে আলাপ করা যেত। এমন কোনো বিষয় নেই যাতে তাঁর আগ্রহ নেই।
৫ দিন আগে
১৯৭১ সালে পুরো বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন হয়েছিল ১৬ ডিসেম্বর। কিন্তু রাজধানীর মিরপুর তখনো শত্রুদের দখলে। পরের বছর জানুয়ারিতে শত্রুমুক্ত হলে একে একে সন্ধান পাওয়া যেতে থাকে বধ্যভূমিগুলোর। ঢাকায় সবচেয়ে বেশি বধ্যভূমি মিরপুর অঞ্চলে। আর মিরপুরের বধ্যভূমিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লাশ পাওয়া যায়...
৬ দিন আগেসম্পাদকীয়

আমার সৌভাগ্য হয়েছিল আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ঘনিষ্ঠ হওয়ার। হাসান আজিজুল হকের সূত্রেই পরিচয় হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। পরে তাঁর সঙ্গে প্রচুর আড্ডা দেওয়ার সুযোগ হয়েছিল। তিনি ছিলেন তুমুল আড্ডাবাজ মানুষ। আর তাঁর সঙ্গে জগৎ সংসারের যেকোনো বিষয়ে আলাপ করা যেত। এমন কোনো বিষয় নেই যাতে তাঁর আগ্রহ নেই। তাঁর সাক্ষাৎকারে এমন কিছু প্রসঙ্গে আলাপ করেছি, যা হয়তো অত স্বচ্ছন্দে হাসান আজিজুল হকের সঙ্গে করতে পারতাম না। যেমন ধরেন যৌনতা-সংক্রান্ত প্রশ্নগুলো। তবে আড্ডাবাজ ব্যক্তিত্বের জন্যও তাঁর সাক্ষাৎকারটি হয়েছে অনেক প্রাণবন্ত। তাঁকে তো বাম ঘরানার লেখকই ধরা হয়, মার্ক্সবাদে তাঁর বিশ্বাস ছিল। তবে তিনি কিন্তু গোঁড়া মার্ক্সবাদী ছিলেন না।
আমি এ ব্যাপারটিও তাঁর সঙ্গে খোলাসা করার জন্য আলাপ করেছি। সোশ্যালিস্ট রিয়েলিজমের নামে একসময় একধরনের যান্ত্রিক মার্ক্সবাদ চর্চা হয়েছে সাহিত্যে। তিনি এর ঘোর বিরোধী ছিলেন। তিনি এ সাক্ষাৎকারেই বলেছেন, এ দেশের মার্ক্সবাদীদের অনেক জ্ঞান থাকলেও কাণ্ডজ্ঞান নেই। তিনি তাঁর লেখায় জীবনকে একেবারে ভেতর থেকে ধরার চেষ্টা করেছেন। অহেতুক শ্রমিকশ্রেণির জয়গান গাননি, লাল পতাকা ওঠাননি। আমার সাক্ষাৎকারে সেক্সের সঙ্গে ক্লাস পজিশনের সম্পর্ক নিয়ে কথা আছে। তিনি এও বলছেন, তাঁর চিলেকোঠার সেপাইয়ের রিকশাশ্রমিক হাড্ডি খিজির যে চরিত্র, তাকে তিনি মহান করে দেখাননি, শুধু শ্রমিকশ্রেণির বিজয়গাথা তিনি দেখাননি।
বরং হাড্ডি খিজির যে একটি লুম্পেন চরিত্র, তার ভেতর যে নানা জোচ্চুরি আছে, সেটাকেও দেখিয়েছেন। এই যে মানুষকে টোটালিটিতে দেখতে এবং দেখাতে পারা, এটাই আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের শক্তি।
তো এগুলো নিয়ে বিভিন্ন সময় কথা হতো তাঁর সঙ্গে, সেটাকেই আমি সাক্ষাৎকারে ধরতে চেষ্টা করেছি।
সূত্র: মঞ্জুরুল আজিম পলাশ কর্তৃক কথাসাহিত্যিক শাহাদুজ্জামানের সাক্ষাৎকার গ্রহণ, ‘দূরগামী কথার ভেতর’, পৃষ্ঠা: ২৭-২৮।

আমার সৌভাগ্য হয়েছিল আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ঘনিষ্ঠ হওয়ার। হাসান আজিজুল হকের সূত্রেই পরিচয় হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। পরে তাঁর সঙ্গে প্রচুর আড্ডা দেওয়ার সুযোগ হয়েছিল। তিনি ছিলেন তুমুল আড্ডাবাজ মানুষ। আর তাঁর সঙ্গে জগৎ সংসারের যেকোনো বিষয়ে আলাপ করা যেত। এমন কোনো বিষয় নেই যাতে তাঁর আগ্রহ নেই। তাঁর সাক্ষাৎকারে এমন কিছু প্রসঙ্গে আলাপ করেছি, যা হয়তো অত স্বচ্ছন্দে হাসান আজিজুল হকের সঙ্গে করতে পারতাম না। যেমন ধরেন যৌনতা-সংক্রান্ত প্রশ্নগুলো। তবে আড্ডাবাজ ব্যক্তিত্বের জন্যও তাঁর সাক্ষাৎকারটি হয়েছে অনেক প্রাণবন্ত। তাঁকে তো বাম ঘরানার লেখকই ধরা হয়, মার্ক্সবাদে তাঁর বিশ্বাস ছিল। তবে তিনি কিন্তু গোঁড়া মার্ক্সবাদী ছিলেন না।
আমি এ ব্যাপারটিও তাঁর সঙ্গে খোলাসা করার জন্য আলাপ করেছি। সোশ্যালিস্ট রিয়েলিজমের নামে একসময় একধরনের যান্ত্রিক মার্ক্সবাদ চর্চা হয়েছে সাহিত্যে। তিনি এর ঘোর বিরোধী ছিলেন। তিনি এ সাক্ষাৎকারেই বলেছেন, এ দেশের মার্ক্সবাদীদের অনেক জ্ঞান থাকলেও কাণ্ডজ্ঞান নেই। তিনি তাঁর লেখায় জীবনকে একেবারে ভেতর থেকে ধরার চেষ্টা করেছেন। অহেতুক শ্রমিকশ্রেণির জয়গান গাননি, লাল পতাকা ওঠাননি। আমার সাক্ষাৎকারে সেক্সের সঙ্গে ক্লাস পজিশনের সম্পর্ক নিয়ে কথা আছে। তিনি এও বলছেন, তাঁর চিলেকোঠার সেপাইয়ের রিকশাশ্রমিক হাড্ডি খিজির যে চরিত্র, তাকে তিনি মহান করে দেখাননি, শুধু শ্রমিকশ্রেণির বিজয়গাথা তিনি দেখাননি।
বরং হাড্ডি খিজির যে একটি লুম্পেন চরিত্র, তার ভেতর যে নানা জোচ্চুরি আছে, সেটাকেও দেখিয়েছেন। এই যে মানুষকে টোটালিটিতে দেখতে এবং দেখাতে পারা, এটাই আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের শক্তি।
তো এগুলো নিয়ে বিভিন্ন সময় কথা হতো তাঁর সঙ্গে, সেটাকেই আমি সাক্ষাৎকারে ধরতে চেষ্টা করেছি।
সূত্র: মঞ্জুরুল আজিম পলাশ কর্তৃক কথাসাহিত্যিক শাহাদুজ্জামানের সাক্ষাৎকার গ্রহণ, ‘দূরগামী কথার ভেতর’, পৃষ্ঠা: ২৭-২৮।

গিলগামেশ মূলত মেসোপটেমীয় পুরাণ। এটি লেখা হয়েছে আক্কাদীয় ভাষায়। পরে অবশ্য উপকথাটির নতুন নতুন বর্ণনা ও বয়ান তৈরি হয়েছে সুমেরীয়, আসিরীয় ও ব্যাবিলনীয় যুগে। মেসোপটেমিয়া সভ্যতা ইরাকের টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস (দজলা ও ফোরাত) নদীর মাঝে অবস্থিত। সুমেরীয়রা ছিল বহু ঈশ্বরবাদী ধর্মের অনুসারী।
২২ আগস্ট ২০২১
মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স-সংলগ্ন ভুরভুরিয়াছড়ার পাশেই বধ্যভূমি ৭১ পার্ক অবস্থিত। সেখানে প্রাচীন একটি বটগাছ রয়েছে, যা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করে। পাকিস্তান আমলে গাছটির নিচে ছিল এক সাধুর আস্তানা।
৯ ঘণ্টা আগে
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর রেলস্টেশনের কাছেই রয়েছে একটি বধ্যভূমি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে সহযোগীদের সহায়তায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী রহনপুর ও আশপাশের এলাকার মুক্তিযোদ্ধা এবং অনেক সাধারণ বাঙালিকে এই বধ্যভূমিতে বিভিন্ন সময় ধরে এনে হত্যা করে।
৪ দিন আগে
১৯৭১ সালে পুরো বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন হয়েছিল ১৬ ডিসেম্বর। কিন্তু রাজধানীর মিরপুর তখনো শত্রুদের দখলে। পরের বছর জানুয়ারিতে শত্রুমুক্ত হলে একে একে সন্ধান পাওয়া যেতে থাকে বধ্যভূমিগুলোর। ঢাকায় সবচেয়ে বেশি বধ্যভূমি মিরপুর অঞ্চলে। আর মিরপুরের বধ্যভূমিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লাশ পাওয়া যায়...
৬ দিন আগেসম্পাদকীয়

১৯৭১ সালে পুরো বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন হয়েছিল ১৬ ডিসেম্বর। কিন্তু রাজধানীর মিরপুর তখনো শত্রুদের দখলে। পরের বছর জানুয়ারিতে শত্রুমুক্ত হলে একে একে সন্ধান পাওয়া যেতে থাকে বধ্যভূমিগুলোর। ঢাকায় সবচেয়ে বেশি বধ্যভূমি মিরপুর অঞ্চলে। আর মিরপুরের বধ্যভূমিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লাশ পাওয়া যায় শিয়ালবাড়ি এলাকায়। মিরপুরের প্রশিকা ভবন থেকে কমার্স কলেজের দিকে যেতে একটি কালভার্ট ছিল। এখন যদিও রাস্তার মাঝে ঢাকা পড়েছে। সেখানেই ৬০টি বস্তায় প্রায় ৩৫০টি মাথার খুলি পাওয়া গিয়েছিল। সৈয়দ আলী জামে মসজিদের পাশের কুয়ায় পাওয়া গিয়েছিল অসংখ্য লাশ। ৬ নম্বর লেনের শেষ প্রান্তের মাঠে স্তূপাকারে পড়ে থাকা দুই শতাধিক লাশ শিয়ালবাড়ি গণকবরে কবর দেওয়া হয়। এটি ছিল ১০ কাঠা জমির ওপর। বেশির ভাগই দখল হয়ে গেছে। যেটুকু অংশ বাকি আছে, তা বর্তমানে মাতবরবাড়ি পারিবারিক কবরস্থান। শিয়ালবাড়ির যেসব কুয়ায় শহীদদের লাশ পাওয়া গিয়েছিল, সেখানে এখন বহুতল ভবন, কারখানা, শপিং মল।
তথ্য ও ছবি: মিরপুরের ১০টি বধ্যভূমি, মিরাজ মিজু

১৯৭১ সালে পুরো বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন হয়েছিল ১৬ ডিসেম্বর। কিন্তু রাজধানীর মিরপুর তখনো শত্রুদের দখলে। পরের বছর জানুয়ারিতে শত্রুমুক্ত হলে একে একে সন্ধান পাওয়া যেতে থাকে বধ্যভূমিগুলোর। ঢাকায় সবচেয়ে বেশি বধ্যভূমি মিরপুর অঞ্চলে। আর মিরপুরের বধ্যভূমিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লাশ পাওয়া যায় শিয়ালবাড়ি এলাকায়। মিরপুরের প্রশিকা ভবন থেকে কমার্স কলেজের দিকে যেতে একটি কালভার্ট ছিল। এখন যদিও রাস্তার মাঝে ঢাকা পড়েছে। সেখানেই ৬০টি বস্তায় প্রায় ৩৫০টি মাথার খুলি পাওয়া গিয়েছিল। সৈয়দ আলী জামে মসজিদের পাশের কুয়ায় পাওয়া গিয়েছিল অসংখ্য লাশ। ৬ নম্বর লেনের শেষ প্রান্তের মাঠে স্তূপাকারে পড়ে থাকা দুই শতাধিক লাশ শিয়ালবাড়ি গণকবরে কবর দেওয়া হয়। এটি ছিল ১০ কাঠা জমির ওপর। বেশির ভাগই দখল হয়ে গেছে। যেটুকু অংশ বাকি আছে, তা বর্তমানে মাতবরবাড়ি পারিবারিক কবরস্থান। শিয়ালবাড়ির যেসব কুয়ায় শহীদদের লাশ পাওয়া গিয়েছিল, সেখানে এখন বহুতল ভবন, কারখানা, শপিং মল।
তথ্য ও ছবি: মিরপুরের ১০টি বধ্যভূমি, মিরাজ মিজু

গিলগামেশ মূলত মেসোপটেমীয় পুরাণ। এটি লেখা হয়েছে আক্কাদীয় ভাষায়। পরে অবশ্য উপকথাটির নতুন নতুন বর্ণনা ও বয়ান তৈরি হয়েছে সুমেরীয়, আসিরীয় ও ব্যাবিলনীয় যুগে। মেসোপটেমিয়া সভ্যতা ইরাকের টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস (দজলা ও ফোরাত) নদীর মাঝে অবস্থিত। সুমেরীয়রা ছিল বহু ঈশ্বরবাদী ধর্মের অনুসারী।
২২ আগস্ট ২০২১
মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স-সংলগ্ন ভুরভুরিয়াছড়ার পাশেই বধ্যভূমি ৭১ পার্ক অবস্থিত। সেখানে প্রাচীন একটি বটগাছ রয়েছে, যা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করে। পাকিস্তান আমলে গাছটির নিচে ছিল এক সাধুর আস্তানা।
৯ ঘণ্টা আগে
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর রেলস্টেশনের কাছেই রয়েছে একটি বধ্যভূমি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে সহযোগীদের সহায়তায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী রহনপুর ও আশপাশের এলাকার মুক্তিযোদ্ধা এবং অনেক সাধারণ বাঙালিকে এই বধ্যভূমিতে বিভিন্ন সময় ধরে এনে হত্যা করে।
৪ দিন আগে
আমার সৌভাগ্য হয়েছিল আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ঘনিষ্ঠ হওয়ার। হাসান আজিজুল হকের সূত্রেই পরিচয় হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। পরে তাঁর সঙ্গে প্রচুর আড্ডা দেওয়ার সুযোগ হয়েছিল। তিনি ছিলেন তুমুল আড্ডাবাজ মানুষ। আর তাঁর সঙ্গে জগৎ সংসারের যেকোনো বিষয়ে আলাপ করা যেত। এমন কোনো বিষয় নেই যাতে তাঁর আগ্রহ নেই।
৫ দিন আগে