Ajker Patrika

কিংবদন্তি মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীর জন্মদিন আজ

কিংবদন্তি মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীর জন্মদিন আজ

পেশাদার খেলোয়াড়ি জীবনের প্রথম দিককার গল্প। প্রথম বিশ্ব হেভিওয়েট শিরোপার লড়াইয়ে নামার আগে অন্য এক যুদ্ধে নামলেন মোহাম্মদ আলী। প্রতিপক্ষ সনি লিস্টনকে খেপিয়ে তোলার লড়াই। আর এ জন্য আস্ত একটি বাস কিনে ফেললেন আলী। তারপর ওটা চালিয়ে চলে এলেন জন্ম শহর লুইসভিলে। কমলা, নীল, সবুজ, হলুদ, লাল রঙে বাসটিকে রাঙিয়ে তুললেন আলীর সাইনবোর্ড শিল্পী বাবা। বাসের এক পাশে লেখা হলো ‘সবচেয়ে বর্ণাঢ্য যোদ্ধা: ক্যাসিয়াস ক্লে’ (তখন তাঁর নাম ছিল ক্যাসিয়াস ক্লে), অপর পাশে ‘সনি লিস্টন ইজ গ্রেট বাট হি উইল ফল ইন এইট’। 

বিগ রেড নামের সেই গাড়িতে চেপে আলী ঘুরে বেড়াতে লাগলেন দেশের নানা প্রান্তে। লিস্টনের পতনের ভবিষ্যৎবাণী করে পাঠ করে বেড়ালেন একের পর এক কবিতা। এরপর পদে পদে লিস্টনকে উত্ত্যক্ত করতে লাগলেন। এমনই আত্মবিশ্বাসী, সাহসী আর একগুঁয়ে ছিলেন আলী। রিংয়ের লড়াইয়ে নামার আগেই প্রতিপক্ষের সঙ্গে নামতেন মনস্তাত্ত্বিক এক লড়াইয়ে। বক্সিং রিংয়ে প্রজাপতির মতো ভেসে বেড়াতেন, প্রতিপক্ষের শরীরে মৌমাছির হুলের মতো জ্বালা ধরিয়ে দিত তাঁর ঘুষি। প্রতিপক্ষকে সব সময় ব্যস্ত রাখত তাঁর হাত আর চঞ্চল পা দুটি। তাই মোহাম্মদ আলী অনন্য। 

তিনবার বিশ্ব হেভিওয়েট শিরোপাজয়ী তিনি। ১৯৯৯ সালে বিবিসি তাঁকে স্পোর্টস পারসোনালিটি অব দ্য সেঞ্চুরি বা শত বছরের সেরা ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব হিসেবে ঘোষণা করে। বক্সিং রিংয়ের ভেতরে ও বাইরে দুর্দমনীয় সাহস তাঁকে মানুষের মনে অমর করে রেখেছে। কিংবদন্তি মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী ১৯৪২ সালের এই দিনে অর্থাৎ ১৭ জানুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকির লুইসভিলে জন্ম নেন। 

এভাবেই প্রতিপক্ষকে কুপোকাত করতেন আলী। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগ্রহমোহাম্মদ আলীর বাবার নাম ক্যাসিয়াস মার্সেলাস ক্লে সিনিয়র। তাঁর নামেই তখন আলীর নাম রাখা হয় ক্যাসিয়াস মার্সেলাস ক্লে জুনিয়র। মায়ের নাম ওডেসা গ্রেডি ক্লে। 

প্রথম তাঁকে মুষ্টিযুদ্ধে নিয়ে আসেন পুলিশ ও মুষ্টিযুদ্ধ প্রশিক্ষক জো ই মার্টিন। সাইকেল চুরি যাওয়ায় রাগে ফুঁসতে থাকা ১২ বছরে বালক আলীর মুখোমুখি হন তিনি। তখনই তাঁর নজর কাড়েন আলী। 

মোহাম্মদ আলী ১৯৫৪ সালে প্রথম অপেশাদার বক্সিং প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। পরে ছয়বার কেনটাকি গোল্ডেন গ্লাভস, দুবার জাতীয় গোল্ডেন গ্লাভস জেতেন। ১৯৬০ সালে রোমের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে মুষ্টিযুদ্ধ প্রতিযোগিতায় লাইট হেভিওয়েট বিভাগে স্বর্ণপদক জেতেন। 

১৯৬০ সালের ২৯ অক্টোবর পেশাদার বক্সিং প্রতিযোগিতায় আলী প্রথমবারের মতো অংশ নেন। ৬ রাউন্ডে পরাজিত করেন টানি হানসাকারকে। ১৯৬০ সাল থেকে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত ১৯-০ জয়ের রেকর্ড করেন আলী। 

১৯৬০ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে আলী। ছবি: উইকিপিডিয়া১৯৬৪ সালে ছয় রাউন্ডের মাথায় সনি লিস্টনকে পরাজিত করে বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে সবাইকে চমকে দেন ২২ বছরের আলী। ওই বছরই ন্যাশনস অব ইসলামে যোগ দেন, নিজের নাম রাখেন মোহাম্মদ আলী। ১৯৭৫ সালে তিনি সুন্নি ইসলামের অনুসারীতে পরিণত হন। পরের তিনটি বছর একের পর এক জয়ে বক্সিং জগতে নিজের জায়গা পাকাপোক্ত করে নিলেন আলী। ১৯৬৫ সালের ২৫ মে আবার লিস্টনের সঙ্গে লড়েন আলী, এবার প্রথম রাউন্ডেই নকআউট করেন। 

১৯৬৭ সালের ২৮ এপ্রিল মোহাম্মদ আলীকে আমেরিকার সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্তির জন্য ডাকা হয়। তখন ভিয়েতনাম যুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য ডাকা হচ্ছিল জনসাধারণকে। আলী ভিয়েতনাম যুদ্ধে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানালেন। এতে তাঁর বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন খেতাব কেড়ে নেওয়া হয়। মুষ্টিযুদ্ধ করার সনদ বাতিল হয় আলীর। জীবনের সেরা সময়ে চার বছর কোনো ধরনের বক্সিং প্রতিযোগিতায় নামতে পারেননি। তবে ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিষয়ে নিজের মতামতে সব সময় অটল ছিলেন আলী। 

বক্সিং জগতে ফিরে ১৯৭১ সালে জো ফ্রেজিয়ারকে চ্যালেঞ্জ জানান আলী। তাঁর অবর্তমানে নতুন হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন ফ্রেজিয়ার। ‘ফাইট অব দ্য সেঞ্চুরি’ নামে ওই লড়াইয়ে পরাজিত হন আলী। 

১৯৭৪ সালের অক্টোবরে জর্জ ফোরম্যানকে চ্যালেঞ্জ জানান আলী । তখন ফোরম্যান বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন। প্রতিযোগিতাটি পরিচিতি পায় রাম্বল ইন দ্য জাঙ্গল নামে, এটি হয় আফ্রিকার জায়ারে (বর্তমান রিপাবলিক অব কঙ্গো)। অষ্টম রাউন্ডে ফোরম্যানকে নকআউট করে বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপ পুনরুদ্ধার করলেন আলী। 

পরের আড়াই বছরে খ্যাতির চূড়ায় ছিলেন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আলী। একের এক প্রতিপক্ষকে কুপোকাত করছিলেন। ১৯৭৫ সালের অক্টোবরে স্মরণীয় আরেক লড়াইয়ে নামেন আলী। ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলার ৯ মাইল দূরে মুখোমুখি হন জো ফ্রেজিয়ারের। ‘থ্রিলা ইন ম্যানিলা’ নামে পরিচিত লড়াইটিতে ১৪ রাউন্ডের মাথায় জেতেন আলী। 

১৯৭৮ সালে লিয়ন স্পিংকস নামে তুলনামূলক অনভিজ্ঞ এক মুষ্টিযোদ্ধার কাছে হেভিওয়েট বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের খেতাব হারান। অবশ্য সাত মাস পরে ওই বছরই স্পিংকসকে হারিয়ে প্রথম মুষ্টিযোদ্ধা হিসেবে তৃতীয়বার বিশ্ব হেভিওয়েট শিরোপা জিতলেন। ১৯৮১ সালের পেশাদার মুষ্টিযোদ্ধা হিসেবে শেষ লড়াইয়ে ট্রেভর বারবিকের কাছে পরাজিত হন। 

১৯৯৭ সালে ৫৫ বছর বয়স্ক মোহাম্মদ আলী। ছবি: উইকিপিডিয়াপেশাদার মুষ্টিযুদ্ধে আলী ৬১টি লড়াইয়ে অংশ নিয়ে ৫৬ টিতে জেতেন। এটি তাঁকে মুষ্টিযোদ্ধার ইতিহাসে সেরাদের কাতারে রাখবে অনায়াসে। তবে এ ধরনের রেকর্ড নামকরা আরও কোনো কোনো মুষ্টিযোদ্ধারও ছিল। তবে যাঁদের বিরুদ্ধে লড়েছেন তাঁদের যোগ্যতা এবং নিজের সেরা সময়ে যেভাবে প্রতিপক্ষের ওপর প্রভাব বিস্তার করেছেন তা তাঁকে মানুষের মনে অমর করে রেখেছে। তবে ভক্তরা এর চেয়েও বেশি মনে রাখবেন বক্সিং রিং এবং এর বাইরে তাঁর দুর্দমনীয় সাহসের জন্য। 

পরের দিকে আলীর ক্ষিপ্ততা কমে আসছিল। জড়ানো কণ্ঠস্বর, নড়াচড়ায় ধীরগতিসহ পারকিনসনের বিভিন্ন লক্ষণ দেখা যেতে থাকে। তাঁকে যখন বলা হয় তিনি রোগটির জন্য বক্সিংকে দায়ী করেন, তখন বলেন বক্সিং না করলে এত বিখ্যাত হতেন না। অবসরের পর পারকিনসন নিয়েই মানুষের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করেন। 

আলী বাংলাদেশেও এসেছিলেন। ১৯৭৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে পাঁচ দিনের সফরে ঢাকায় এসেছিলেন কিংবদন্তি এই মুষ্টিযোদ্ধা। 

১৯৯৯ সালে বিবিসি পাঠকদের ভোটে ১০০ বছরের সেরা ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব হিসেবে ঘোষণা করে তাঁকে। মোহাম্মদ আলীর মুষ্টিযোদ্ধা হিসেবে সেরা সময়টি (১৯৬৪-১৯৭৪) নিয়ে ২০০১ সালে মুক্তি পায় চলচ্চিত্র ‘আলী’। তাঁর জীবনের গল্প উঠে আসে ২০১৪ সালের তথ্যচিত্র ‘আই এম আলী’তে। পরে ধারাবাহিক তথ্যচিত্র ‘হোয়াট’স মাই নেম’ (২০১৯) ও ‘মোহাম্মদ আলী’ (২০২১) নির্মিত হয় তাঁকে নিয়ে। 

 ২০১৬ সালের ৩ জুন ৭৪ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনার স্কটসডেলের মারা যান কিংবদন্তি এই মুষ্টিযোদ্ধা। 

সূত্র. দ্য গ্রেটেস্ট, মাই অওন স্টোরি: মোহাম্মদ আলী, ব্রিটানিকা, উইকিপিডিয়া

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

অস্ট্রেলিয়ায় সমুদ্রসৈকতে ইহুদিদের হানুক্কা উৎসবে গুলি, নিহত অন্তত ১০

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কোচির ইহুদি পরিবারের ঐতিহ্য যেভাবে বাঁচিয়ে রাখছেন এক মুসলিম

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
কোচির ইহুদি পাড়ায় সারা আন্টির রেখে যাওয়া দোকানের সামনে ইব্রাহিম থাহা। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
কোচির ইহুদি পাড়ায় সারা আন্টির রেখে যাওয়া দোকানের সামনে ইব্রাহিম থাহা। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

দক্ষিণ ভারতের কোচি শহরের সরু, নুড়ি-পাথর বিছানো রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ চোখে পড়ে ছোট্ট একটি ফলক। তাতে লেখা, ‘সারা কোহেনের বাড়ি।’ জনাকীর্ণ এই রাস্তাটির নাম জু টাউন। কয়েক দশক আগেও এখানকার প্রায় প্রতিটি বাড়িতে বসবাস করত ইহুদি পরিবার। প্রাচীন সামগ্রী, পারস্যের কার্পেট আর মসলার দোকানে ঠাসা এই এলাকাই একসময় পরিচিত ছিল কোচির ইহুদি পাড়া হিসেবে।

এই রাস্তাতেই রয়েছে থাহা ইব্রাহিমের দোকান। কোচির শেষ ইহুদি নকশার দোকান। এক তপ্ত দুপুরে কয়েকজন মার্কিন পর্যটক দোকানে ঢুকতেই দেখা গেল, ৫৫ বছর বয়সী থাহা মনোযোগ দিয়ে একটি কিপ্পা (ইহুদি পুরুষদের ঐতিহ্যবাহী ছোট, বৃত্তাকার টুপি যা তারা ঈশ্বরকে সম্মান জানাতে এবং নিজেদের ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশ করতে পরে থাকে) সেলাই করছেন। দোকানের দেয়ালে ঝোলানো একটি ছবির সামনে পর্যটকেরা ভিড় জমালেন। ছবিটি ২০১৩ সালের। তৎকালীন ব্রিটিশ যুবরাজ (বর্তমানে রাজা) চার্লস জু টাউনের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলছেন।

ছবির দিকে আঙুল তুলে থাহা বললেন, ‘ওই ইনিই সারা আন্টি।’ এরপর যোগ করলেন, ‘এটা ছিল সারা কোহেনের বাড়ি ও তাঁর সেলাইয়ের দোকান।’

আরব সাগরের রানি নামে পরিচিত কোচি একসময় ছিল বন্দর আর মসলার আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। কয়েক শতাব্দী আগে এখানেই গড়ে উঠেছিল ইহুদিদের একটি নিবিড় জনগোষ্ঠী। সেই জনগোষ্ঠীর একজন ছিলেন সারা কোহেন। ২০০০ সাল থেকে এই দোকান চালাচ্ছেন থাহা। সারা জীবিত থাকাকালে তাঁর পক্ষ থেকে, আর ২০১৯ সালে সারা ৯৬ বছর বয়সে মারা যাওয়ার পর পুরোপুরি দায়িত্ব নেন তিনি।

থাহা বলেন, ‘আমি ছিলাম তাঁর ছেলের মতো। নিজের মায়ের চেয়েও বেশি সময় তাঁর দেখাশোনা করেছি। আমি তাঁর জন্য কোশার (ইহুদিদের এক ধরনের খাবার) আর মাছ কিনে আনতাম। সময় কাটাতাম আর দোকান বন্ধ করার পরই কেবল ফিরতাম।’

এক ইহুদি নারী আর ভিন্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক পটভূমির এক মুসলমান পুরুষের এই বন্ধুত্ব প্রায় চার দশক ধরে টিকে ছিল। মৃত্যুর আগে সারা তাঁর দোকানটি থাহার নামে উইল করে যান। থাহা প্রতিজ্ঞা করেন, জু টাউনে তিনি সারার স্মৃতি আর ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রাখবেন। যেখানে আঠারো শতকে প্রায় আড়াই হাজার ইহুদি বাস করতেন, সেখানে এখন কেবল একজন অবশিষ্ট। থাহা বলেন, ‘এক দিক থেকে, এখানকার ইহুদি সম্প্রদায় যাতে বিস্মৃত না হয়, আমিও সেই চেষ্টাই করছি।’

কেরালায় ইহুদিদের আগমনের সবচেয়ে প্রচলিত কাহিনি বাইবেলের ওল্ড টেস্টামেন্টে উল্লিখিত রাজা সোলোমনের সময়ের, প্রায় দুই হাজার বছর আগেকার। প্রথমে তাঁরা মালাবার উপকূলে ক্রাঙ্গানোরে, বর্তমান কোডুঙ্গাল্লুরের কাছে প্রাচীন বন্দরের আশপাশে বণিক হিসেবে বসতি গড়েন। পরে তাঁরা কোচিতে চলে আসেন। এই প্রাচীন বসতির কারণে তাঁরা পরিচিত হন মালাবারি ইহুদি নামে।

এর বহু পরে, ১৫৯২ সালে, স্প্যানিশ নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসা সেফার্ডিক ইহুদিরা কেরালায় পৌঁছান। পর্তুগাল, তুরস্ক আর বাগদাদ হয়ে তাঁরা কোচিতে বসতি গড়ে তোলেন এবং পরিচিত হন পারাদেসি বা বিদেশি ইহুদি নামে। মালাবারি ও পারাদেসি—এই দুই ধারার মানুষ মিলেই পরিচিত হন কোচিন ইহুদি নামে।

ইব্রাহিম থাহার সারা আন্টি তাঁর পরিণত বয়সে। ছবি: ইব্রাহিম থাহার সৌজন্যে
ইব্রাহিম থাহার সারা আন্টি তাঁর পরিণত বয়সে। ছবি: ইব্রাহিম থাহার সৌজন্যে

পর্তুগিজ, আরব, ব্রিটিশ আর ওলন্দাজদের দীর্ঘদিনের বাণিজ্যকেন্দ্র কোচিতে তাঁরা রাজাদের সুরক্ষায় নিরাপদে বসবাস করতেন। বিশ শতকের গোড়ায় সারা কোহেনের জন্ম। তখন জু টাউন ছিল প্রাণবন্ত। সারা আর তাঁর স্বামী জ্যাকব—যাঁর জন্মও এখানেই—১৯৪৪ সালে বিয়ে করেন।

আশির দশকের গোড়ায় আচমকাই থাহার সঙ্গে কোহেন দম্পতির পরিচয় হয়। তেরো বছর বয়সে স্কুল ছেড়ে দেওয়া থাহা তখন পর্যটকদের কাছে পোস্টকার্ড বিক্রি করে জীবিকা চালাতেন। জু টাউনে আসা পর্যটকেরা নিয়মিতই যেতেন পারাদেসি সিনাগগে, যা ১৫৬৮ সালে কোচিনের রাজার দেওয়া জমিতে নির্মিত।

থাহা বলেন, ‘তখন প্রচুর পর্যটক আসত আর আমি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পোস্টকার্ড বেচতাম।’ এক রোববার, যে গুদামঘরে থাহা পোস্টকার্ড রাখতেন, তার মালিক না আসায় জ্যাকব তাঁকে তাঁদের বাড়িতে জায়গা দেন। সারা এতে খুশি ছিলেন না। থাহার মনে আছে, প্রায় তিন বছর তিনি তাঁর সঙ্গে তেমন কথা বলেননি।

ইব্রাহিম থাহা বলেন, ‘মাঝে মাঝে আমি তাঁর স্বামীর ছোটখাটো কাজ করে দিতাম। অথবা যখন তাঁদের জানালার বাইরে থেকে টিভিতে ক্রিকেট দেখতাম, তিনি আমাকে ভেতরে আসতে বলতেন।’ একদিন সারা তাঁকে সিনাগগের জন্য একটি কুশন কভার সেলাই করতে সাহায্য করতে বলেন। তখনই বোঝা যায়, থাহার মধ্যে সেলাই ও নকশার সহজাত দক্ষতা আছে। সম্ভবত দরজি বাবাকে ছোটবেলা থেকে সাহায্য করার ফলেই। তিনি বলেন, ‘আমি যে নকশা আঁকতে আর সেলাই করতে পারি, তা জানতামই না।’

উনিশ বছর বয়সে থাহা সারাকে সাহায্য করেন তাঁদের বৈঠকখানা থেকে ‘সারার হস্ত-সেলাই’ নামে একটি দোকান খুলতে। দোকানটি আজও সেই নামেই পরিচিত। সেখানে বিক্রি হতো কিপ্পাহ, চাল্লাহ কভার আর মেনোরাহ। তিনি বলেন, ‘তিনিই আমাকে সব শিখিয়েছেন।’

এই বন্ধুত্ব নিয়ে থাহা বেশ দার্শনিক। তিনি বলেন, ‘জু টাউনে ইহুদি আর মুসলমানেরা একে অপরের সঙ্গে তেমন মিশতেন না। তাঁরা একে অপরের প্রতি সন্দিহান ছিলেন। কিন্তু সারা আন্টি আর জ্যাকব আংকেল কখনোই আমাকে বহিরাগত মনে করতে দেননি, যদিও আমাদের পটভূমি আলাদা ছিল।’

সারা আন্টির দোকানে কিপ্পা সেলাই করছেন ইব্রাহিম থাহা। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
সারা আন্টির দোকানে কিপ্পা সেলাই করছেন ইব্রাহিম থাহা। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

থাহার বাবা-মা এই সম্পর্কে আপত্তি করেননি। তাঁরা দেখেছিলেন, কোহেন পরিবার তাঁদের ছেলেকে জীবনের একটি উদ্দেশ্য খুঁজে পেতে সাহায্য করছে। কিন্তু এই ঘনিষ্ঠতার সময়েই কোচির ইহুদি জনসংখ্যা দ্রুত কমতে থাকে। চল্লিশের দশকে যেখানে ছিল প্রায় ২৫০ জন, নব্বইয়ের দশকে তা নেমে আসে ২০ জনে। এখন মাত্র একজন আছেন—৬৭ বছর বয়সী কিথ হ্যালেগুয়া।

১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর অনেক পরিবার সেখানে চলে যায়। কেরালার ইহুদিদের ওপর ডক্টরেট থিসিস করা আনা জাখারিয়াস বলেন, ‘কোচিন ইহুদিরা হয়তো স্বদেশে ফিরে যাওয়ার ধারণায় ইসরায়েলে গিয়েছিলেন। তবে উন্নত জীবনের আকর্ষণের মতো অর্থনৈতিক কারণও ছিল। তাঁরা এটাও অনুভব করেছিলেন যে কেরালায় উপযুক্ত জীবনসঙ্গীর অভাব ছিল।’

ধর্মীয় নিপীড়ন কখনোই তাঁদের কোচি ছাড়ার কারণ ছিল না। শহরটি শত শত বছর ধরে তাঁদের স্বাগত জানিয়েছে। কিছু বয়স্ক ইহুদি থেকে গিয়েছিলেন, যাঁদের মধ্যে নিঃসন্তান কোহেন দম্পতিও ছিলেন। ১৯৯৯ সালে জ্যাকব মারা যাওয়ার আগে থাহাকে সারার দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়ে যান। তখন থাহা বিবাহিত, তিন সন্তানের জনক।

থাহা বলেন, ‘আমি জ্যাকব আংকেলকে বলেছিলাম, সারা আন্টি যদি আমাকে সুযোগ দেন, তবে আমি তাঁর দেখাশোনা করব। আমি তাঁকে সুযোগ দিতে বলেছিলাম, কারণ ইসলামে মৃতপ্রায় ব্যক্তির শেষ ইচ্ছা পূরণ করা গুরুত্বপূর্ণ। না করলে পাপ হয়।’

সারার স্বাস্থ্যের অবনতি হলে থাহা তাঁর পরিবারকে জু টাউনের কাছাকাছি নিয়ে আসেন। সারা মারা গেলে তিনি তাঁর কফিনের জন্য স্টার অব ডেভিড (ইসরায়েলি পতাকায় অঙ্কিত তারকা) আঁকা একটি কফিন কভার তৈরি করান। আজও তিনি নিয়মিত ইহুদি কবরস্থানে তাঁর সমাধিতে যান। প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক কোচি ঘুরতে আসেন। তাঁদের মধ্যে অনেক ইহুদিও থাকেন। আনা জাখারিয়াস বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে ইহুদিরা জু টাউনে আসেন এক ধরনের আপন অনুভব করার জন্য।’

তিনি বলেন, এখানকার ইহুদিরা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু সমাজের মধ্যেও নিজেদের পরিচয় বজায় রেখেছিলেন। একই সঙ্গে সমাজের সঙ্গে মিশে গিয়েছিলেন। স্থানীয় ভাষা মালয়ালমই ছিল তাঁদের দৈনন্দিন ভাষা। থাহা যেভাবে সারা কোহেনের ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন, তা তাঁকে মুগ্ধ করে। তিনি বলেন, ‘একজন মুসলমান কীভাবে এক ইহুদি নারীর যত্ন নিয়েছেন, তা দৃষ্টান্তস্বরূপ। তিনি এখনো সারা-র ধর্মীয় ঐতিহ্যগুলো বজায় রেখেছেন।’

থাহা দোকানটিকে ঠিক সেভাবেই রেখেছেন, যেমনটি সারা চালাতেন। ইহুদিদের সাব্বাথ উপলক্ষে তিনি শনিবার দোকান বন্ধ রাখেন। ইব্রাহিম থাহা আরও বলেন, ‘আমি ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা মুসলমান, কিন্তু সারা আন্টির জন্য এটা খুব জরুরি ছিল বলে আমি শুক্রবার সন্ধ্যায় একটি প্রদীপ জ্বালাই। কারণ, এই ক্ষণ সাব্বাথের শুরু হওয়াকে চিহ্নিত করে। এই বিষয়টি আমার কাছে এটা ধর্ম সংক্রান্ত নয়, পুরোটাই মানবিক।’

বিবিসি থেকে অনূদিত

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

অস্ট্রেলিয়ায় সমুদ্রসৈকতে ইহুদিদের হানুক্কা উৎসবে গুলি, নিহত অন্তত ১০

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাবতলী সেতু বধ্যভূমি

সম্পাদকীয়
গাবতলী সেতু বধ্যভূমি

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল পাশবিক হত্যাযজ্ঞ। ঢাকার গাবতলীর পাশের তুরাগ নদের উত্তর পারেই সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ইসাকাবাদ গ্রাম অবস্থিত। গ্রামটি থেকে স্পষ্ট দেখা যেত গাবতলী সেতু। সেই গ্রামেরই বয়স্ক এক ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা করেছেন এভাবে, প্রতিদিন রাতের বেলা মিলিটারি আর বিহারিরা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে করে এই সেতুতে মানুষদের নিয়ে আসত। রাত গভীর হলে সেতুর দুই পাশের বাতি নিভিয়ে গুলি চালানো হতো। পুরো যুদ্ধের সময় এখানে এমন রাত ছিল না, যে রাতের বেলা সেখানে লাশ ফেলানো হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকের বেশি সময় পার হলেও এখনো এ জায়গাকে বধ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

অস্ট্রেলিয়ায় সমুদ্রসৈকতে ইহুদিদের হানুক্কা উৎসবে গুলি, নিহত অন্তত ১০

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাহিত্যচর্চা এবং মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট

সম্পাদকীয়
সাহিত্যচর্চা এবং মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট

সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।

অনেক লেখকই আছেন যাঁরা খুব ধর্মপ্রাণ, কেউবা আবার কমিউনিস্ট ৷ হিউম্যানিস্ট লেখক যেমন আছেন, তেমনই আছেন অথোরিটারিয়ান লেখক।

তবে সে যা-ই হোক, ভালো সাহিত্যিকের মধ্যে দুটো কমিটমেন্ট থাকতেই হবে—সততা আর স্টাইলের দক্ষতা। নিজের কাছেই যে-লেখক অসৎ, যা লেখেন তা যদি তিনি নিজেই না বিশ্বাস করেন, তাহলে সেই লেখকের পতন অনিবার্য।

কোনো লেখক আবার যদি নিজের ভাষার ঐশ্বর্যকে ছেঁকে তুলতে ব্যর্থ হন, একজন সংগীতশিল্পীকে ঠিক যেভাবে তাঁর যন্ত্রটিকে নিজের বশে আনতে হয়, ভাষার ক্ষেত্রেও তেমনটা যদি কোনো লেখক করতে না পারেন, তাহলে একজন সাংবাদিক ছাড়া আর কিছুই হতে পারবেন না তিনি। সত্য এবং স্টাইল—একজন সাহিত্যিকের বেসিক কমিটমেন্ট হলো শুধু এই দুটো।

সূত্র: সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ টুডে’ পত্রিকার মার্চ, ১৯৮৪ সংখ্যায়, সাক্ষাৎকার গ্রহীতা সেরাজুল ইসলাম কাদির, অনুবাদক নীলাজ্জ দাস, শিবনারায়ণ রায়ের সাক্ষাৎকার সংগ্রহ, পৃষ্ঠা-২৭।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

অস্ট্রেলিয়ায় সমুদ্রসৈকতে ইহুদিদের হানুক্কা উৎসবে গুলি, নিহত অন্তত ১০

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রমনা কালীবাড়ি বধ্যভূমি

সম্পাদকীয়
রমনা কালীবাড়ি বধ্যভূমি

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় ৫০০ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেন। তখন এ আখড়াটি কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।

পরে সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে এ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় ১০০ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ নিহত হন। যদিও এখন বধ্যভূমির কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেটাকে বধ্যভূমি হিসেবে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ছবি: সংগৃহীত

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

অস্ট্রেলিয়ায় সমুদ্রসৈকতে ইহুদিদের হানুক্কা উৎসবে গুলি, নিহত অন্তত ১০

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত