আশিকুর রিমেল, ঢাকা

‘খুব বাড়ি যেতে ইচ্ছা করলেও যাই না। বাড়ি গেলে এলাকার লোকজন, আত্মীয়-স্বজনেরা জিজ্ঞেস করে, কী করি এখন? উত্তর দিতে পারি না। এলাকার দু-একজনের চাকরি হলে, সেটা আবার বাড়ির লোকজনই শোনায়। পরিবারটাকে অপরিচিত লাগে তখন, হতাশ লাগে!’
কথাগুলো রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে বিবিএ-এমবিএ শেষ করা শিক্ষার্থী বিপ্লবের (ছদ্মনাম)। শিক্ষাগত যোগ্যতাই যেন তাঁর জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিবার আর সমাজের প্রত্যাশা পূরণে দায় যেন কাঁধে তুলে নিয়েছে একা! এই মানসিক যন্ত্রণা জীবন থেকে সব শখ আহ্লাদ কেড়ে নিয়েছে। ঈদেও বাড়ি যেতে ইচ্ছে করে না!
বিপ্লবের বলেন, ‘কয়েক বছর থেকে ঈদের আগের দিন যাই, পারলে ঈদের পরের দিন চলে আসার কথা চিন্তা করি। কিন্তু তখনো খাবারের জন্য হোটেলগুলা খোলে না। মেসে খালাও কয়েক দিন পরে কাজে আসে, সে জন্য যাইতে পারি না। যে কয়দিন বাড়িতে থাকি, খুব কম বের হই।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক-স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন পারভেজ (ছদ্মনাম)। তাঁর অবস্থাও বিপ্লবের মতোই। তিনটি প্রাইভেট টিউশনি করে ঢাকায় কোনো রকমে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করছেন। বাকি সময় সরকারি চাকরির প্রস্তুতি নেন। চাকরির বয়সও দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। এ বছরের শেষ পর্যন্ত চাকরির আবেদন করার যোগ্যতা থাকবে। এ পর্যন্ত ৬-৭টা চাকরির ভাইভা দিয়েছেন। কিন্তু চাকরি হয় না। বেকারত্বের বোঝা আর সইতে পারছেন না। এখন চতুর্থ শ্রেণির আবেদনও মিস করেন না। পারভেজও বাধ্য না হলে বাড়িতে যান না। দুইটা ছোট ভাই-বোন, বাবা-মার জন্য কিছু নিয়ে যেতে পারেন না—এই ব্যর্থ তাঁকে কুঁড়ে কুঁড়ে খায়। খুবই হীনম্মন্যতায় ভোগেন।
চলতি বছর এপ্রিলের শেষ দিকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, দেশে কর্মহীন মানুষের সংখ্যা ২৬ লাখ ৩০ হাজার। সংস্থাটির ২০১৬-১৭ সালের জরিপে এই সংখ্যাটা ছিল ২৭ লাখ। সেই তুলনায় কর্মহীন মানুষ সংখ্যায় কমেছে। কিন্তু বর্তমান সময় ও বাস্তবতায় পাবলিক ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে কর্মসংস্থান না পাওয়া শিক্ষার্থীদের হতাশাব্যঞ্জক অবস্থাটা প্রায় একই রয়ে গেছে।
তাঁদের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়, এর অন্যতম কারণ সরকারি চাকরির পেছনে লেগে থাকা। তাঁদের সঙ্গে আলাপচারিতায় সেটি স্পষ্ট।
ভূতত্ত্ব খনিবিদ্যার ছাত্র পারভেজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ হতেই চাকরির পড়াশোনায় উঠেপড়ে লাগেন। প্রথম দিকে বেছে বেছে চাকরির আবেদন করতে থাকেন। একটুর জন্য প্রিলিমিনারি পরীক্ষাগুলোতে উত্তীর্ণ হতে পারেন না। নিজের থাকা–খাওয়ার খরচ চালানোর পাশাপাশি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া কঠিন। সময় যত বাড়তে থাকে, পরীক্ষা দেওয়ার অভিজ্ঞতা বাড়তে থাকে। দু’বছর পর থেকে প্রিলিমিনারি পরীক্ষাগুলোতে উত্তীর্ণ হতে থাকেন। কিন্তু এবার বিপত্তি বাঁধে লিখিত পরীক্ষাগুলোতে গিয়ে। একপর্যায়ে লিখিত পরীক্ষাতেও ভালো করতে থাকেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চাকরি হয় না।
পারভেজ বলেন, ‘কয়েকটা পরীক্ষায় ভাইভা পর্যন্ত দিয়েছি, হয়নি। ভাবি আমার থেকেও যোগ্য লোক আছে। তারাই হয়তো টেকে!’
কিন্তু বেসরকারি চাকরি বা অন্য কোনো কর্মসংস্থানের দিকে কখনোই ঝোঁকেননি পারভেজ। তিনি বলেন, ‘বিডি জবস ও অন্যান্য বেশ কিছু সাইটে আবেদনের খবর পাওয়ার সোর্স আছে। প্রাইভেট জবগুলাতে অভিজ্ঞতা চায়, সেই সঙ্গে নির্দিষ্ট কাজের দক্ষতাও চায়। আমার তো সেসব কিছু নাই। বিভাগে ভালো ফলের জন্য পড়াশোনা করছি। খেলাধুলায় একটা ঝোঁক ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ে খেলতাম। কিন্তু সে দিয়ে তো আর চাকরি হয় না।’
এ দিকে বিপ্লব বলছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় আলাদা করে কোনো কাজের সঙ্গে ছিলাম না। আমি প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠে আসা। পরিবারের কাছে সরকারি চাকরি মানেই সবচেয়ে নিরাপদ কর্মসংস্থান। আমার নিজেরও মনে হয়েছে, যেহেতু সুযোগ আছে চেষ্টা করে দেখি। কিন্তু এখন মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়ছি।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান (২০১৪-২০১৫) শিক্ষাবর্ষের ছাত্র তাশরিফ (ছদ্মনাম)। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা চলাকালীন একটু একটু করে চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। স্নাতকোত্তর শেষ করার পরের দুই বছর পর থেকে বিভিন্ন সরকারি চাকরিতে প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় টিকছেন। এখনো তিন বছর সরকারি চাকরিতে আবেদন করতে পারবেন।
তাঁর সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমি নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসছি। ছোটবেলা থেকে এলাকায় ভালো ছাত্র ছিলাম। সমাজের মানুষেরও একটা প্রত্যাশা যে ভালো একটা সরকারি চাকরি করব। তা ছাড়া পরিবার এখনো প্রয়োজনীয় টাকা-পয়সা পাঠায়। পরিবার থেকে বলে, ভালো করে পরীক্ষা দিতে থাকো। আমি তো জানি পরিবারের দায়িত্বটা আমাকে নিতে হবে। সে কারণে পড়াশোনা শেষ করেই পরীক্ষা দেওয়া শুরু করছি।’
জামালপুরের তাশরিফও জানালেন পরিবার অপেক্ষা করলেও পারিপার্শ্বিকতা যেন সেই অপেক্ষা মানছে না!
তাশরিফ বলেন, ‘বাড়িতে গেলে শুভাকাঙ্ক্ষীদের ঘুরে ফিরে একটাই প্রশ্ন—কী করছ এখন? আর কত দিন লাগবে? কয়েক বছরে এই প্রশ্ন এতবার শুনেছি যে, মাঝে মাঝে হতাশ হয়ে পড়ি, নিজেকে অযোগ্য মনে হয়। আবার এও ঠিক যে, তাদের ওই প্রশ্নই আমাকে আরও গতিশীল করে তোলে।’
নানামুখী বাস্তবতার মাঝেও শিক্ষার্থীরা তাঁদের কর্মসংস্থানের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শূন্যপদের চেয়ে চাকরিপ্রত্যাশী রয়েছে বহুগুণ বেশি। তীব্র প্রতিযোগিতার মধ্যেও তাঁরা অর্থনৈতিক নিরাপত্তা হিসেবে সরকারি চাকরিকেই বেছে নিচ্ছেন, যেখানে যোগ্যতা বা দক্ষতার প্রমাণ দিতে হয় না! এই যে নিরাপদ কর্মসংস্থান হিসেবে সরকারি চাকরির প্রতি অতিনির্ভরতা, এটি অর্থনীতির দুর্বল সূচকের দিকেই ইঙ্গিত করে কি না ভেবে দেখা দরকার!
লেখক: সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা

‘খুব বাড়ি যেতে ইচ্ছা করলেও যাই না। বাড়ি গেলে এলাকার লোকজন, আত্মীয়-স্বজনেরা জিজ্ঞেস করে, কী করি এখন? উত্তর দিতে পারি না। এলাকার দু-একজনের চাকরি হলে, সেটা আবার বাড়ির লোকজনই শোনায়। পরিবারটাকে অপরিচিত লাগে তখন, হতাশ লাগে!’
কথাগুলো রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে বিবিএ-এমবিএ শেষ করা শিক্ষার্থী বিপ্লবের (ছদ্মনাম)। শিক্ষাগত যোগ্যতাই যেন তাঁর জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিবার আর সমাজের প্রত্যাশা পূরণে দায় যেন কাঁধে তুলে নিয়েছে একা! এই মানসিক যন্ত্রণা জীবন থেকে সব শখ আহ্লাদ কেড়ে নিয়েছে। ঈদেও বাড়ি যেতে ইচ্ছে করে না!
বিপ্লবের বলেন, ‘কয়েক বছর থেকে ঈদের আগের দিন যাই, পারলে ঈদের পরের দিন চলে আসার কথা চিন্তা করি। কিন্তু তখনো খাবারের জন্য হোটেলগুলা খোলে না। মেসে খালাও কয়েক দিন পরে কাজে আসে, সে জন্য যাইতে পারি না। যে কয়দিন বাড়িতে থাকি, খুব কম বের হই।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক-স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন পারভেজ (ছদ্মনাম)। তাঁর অবস্থাও বিপ্লবের মতোই। তিনটি প্রাইভেট টিউশনি করে ঢাকায় কোনো রকমে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করছেন। বাকি সময় সরকারি চাকরির প্রস্তুতি নেন। চাকরির বয়সও দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। এ বছরের শেষ পর্যন্ত চাকরির আবেদন করার যোগ্যতা থাকবে। এ পর্যন্ত ৬-৭টা চাকরির ভাইভা দিয়েছেন। কিন্তু চাকরি হয় না। বেকারত্বের বোঝা আর সইতে পারছেন না। এখন চতুর্থ শ্রেণির আবেদনও মিস করেন না। পারভেজও বাধ্য না হলে বাড়িতে যান না। দুইটা ছোট ভাই-বোন, বাবা-মার জন্য কিছু নিয়ে যেতে পারেন না—এই ব্যর্থ তাঁকে কুঁড়ে কুঁড়ে খায়। খুবই হীনম্মন্যতায় ভোগেন।
চলতি বছর এপ্রিলের শেষ দিকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, দেশে কর্মহীন মানুষের সংখ্যা ২৬ লাখ ৩০ হাজার। সংস্থাটির ২০১৬-১৭ সালের জরিপে এই সংখ্যাটা ছিল ২৭ লাখ। সেই তুলনায় কর্মহীন মানুষ সংখ্যায় কমেছে। কিন্তু বর্তমান সময় ও বাস্তবতায় পাবলিক ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে কর্মসংস্থান না পাওয়া শিক্ষার্থীদের হতাশাব্যঞ্জক অবস্থাটা প্রায় একই রয়ে গেছে।
তাঁদের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়, এর অন্যতম কারণ সরকারি চাকরির পেছনে লেগে থাকা। তাঁদের সঙ্গে আলাপচারিতায় সেটি স্পষ্ট।
ভূতত্ত্ব খনিবিদ্যার ছাত্র পারভেজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ হতেই চাকরির পড়াশোনায় উঠেপড়ে লাগেন। প্রথম দিকে বেছে বেছে চাকরির আবেদন করতে থাকেন। একটুর জন্য প্রিলিমিনারি পরীক্ষাগুলোতে উত্তীর্ণ হতে পারেন না। নিজের থাকা–খাওয়ার খরচ চালানোর পাশাপাশি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া কঠিন। সময় যত বাড়তে থাকে, পরীক্ষা দেওয়ার অভিজ্ঞতা বাড়তে থাকে। দু’বছর পর থেকে প্রিলিমিনারি পরীক্ষাগুলোতে উত্তীর্ণ হতে থাকেন। কিন্তু এবার বিপত্তি বাঁধে লিখিত পরীক্ষাগুলোতে গিয়ে। একপর্যায়ে লিখিত পরীক্ষাতেও ভালো করতে থাকেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চাকরি হয় না।
পারভেজ বলেন, ‘কয়েকটা পরীক্ষায় ভাইভা পর্যন্ত দিয়েছি, হয়নি। ভাবি আমার থেকেও যোগ্য লোক আছে। তারাই হয়তো টেকে!’
কিন্তু বেসরকারি চাকরি বা অন্য কোনো কর্মসংস্থানের দিকে কখনোই ঝোঁকেননি পারভেজ। তিনি বলেন, ‘বিডি জবস ও অন্যান্য বেশ কিছু সাইটে আবেদনের খবর পাওয়ার সোর্স আছে। প্রাইভেট জবগুলাতে অভিজ্ঞতা চায়, সেই সঙ্গে নির্দিষ্ট কাজের দক্ষতাও চায়। আমার তো সেসব কিছু নাই। বিভাগে ভালো ফলের জন্য পড়াশোনা করছি। খেলাধুলায় একটা ঝোঁক ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ে খেলতাম। কিন্তু সে দিয়ে তো আর চাকরি হয় না।’
এ দিকে বিপ্লব বলছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় আলাদা করে কোনো কাজের সঙ্গে ছিলাম না। আমি প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠে আসা। পরিবারের কাছে সরকারি চাকরি মানেই সবচেয়ে নিরাপদ কর্মসংস্থান। আমার নিজেরও মনে হয়েছে, যেহেতু সুযোগ আছে চেষ্টা করে দেখি। কিন্তু এখন মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়ছি।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান (২০১৪-২০১৫) শিক্ষাবর্ষের ছাত্র তাশরিফ (ছদ্মনাম)। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা চলাকালীন একটু একটু করে চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। স্নাতকোত্তর শেষ করার পরের দুই বছর পর থেকে বিভিন্ন সরকারি চাকরিতে প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় টিকছেন। এখনো তিন বছর সরকারি চাকরিতে আবেদন করতে পারবেন।
তাঁর সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমি নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসছি। ছোটবেলা থেকে এলাকায় ভালো ছাত্র ছিলাম। সমাজের মানুষেরও একটা প্রত্যাশা যে ভালো একটা সরকারি চাকরি করব। তা ছাড়া পরিবার এখনো প্রয়োজনীয় টাকা-পয়সা পাঠায়। পরিবার থেকে বলে, ভালো করে পরীক্ষা দিতে থাকো। আমি তো জানি পরিবারের দায়িত্বটা আমাকে নিতে হবে। সে কারণে পড়াশোনা শেষ করেই পরীক্ষা দেওয়া শুরু করছি।’
জামালপুরের তাশরিফও জানালেন পরিবার অপেক্ষা করলেও পারিপার্শ্বিকতা যেন সেই অপেক্ষা মানছে না!
তাশরিফ বলেন, ‘বাড়িতে গেলে শুভাকাঙ্ক্ষীদের ঘুরে ফিরে একটাই প্রশ্ন—কী করছ এখন? আর কত দিন লাগবে? কয়েক বছরে এই প্রশ্ন এতবার শুনেছি যে, মাঝে মাঝে হতাশ হয়ে পড়ি, নিজেকে অযোগ্য মনে হয়। আবার এও ঠিক যে, তাদের ওই প্রশ্নই আমাকে আরও গতিশীল করে তোলে।’
নানামুখী বাস্তবতার মাঝেও শিক্ষার্থীরা তাঁদের কর্মসংস্থানের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শূন্যপদের চেয়ে চাকরিপ্রত্যাশী রয়েছে বহুগুণ বেশি। তীব্র প্রতিযোগিতার মধ্যেও তাঁরা অর্থনৈতিক নিরাপত্তা হিসেবে সরকারি চাকরিকেই বেছে নিচ্ছেন, যেখানে যোগ্যতা বা দক্ষতার প্রমাণ দিতে হয় না! এই যে নিরাপদ কর্মসংস্থান হিসেবে সরকারি চাকরির প্রতি অতিনির্ভরতা, এটি অর্থনীতির দুর্বল সূচকের দিকেই ইঙ্গিত করে কি না ভেবে দেখা দরকার!
লেখক: সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা

রাজবাড়ী শহরেই অবস্থিত বিনোদপুর লোকোশেড। বলা হয় রাজবাড়ী জেলার সবচেয়ে বড় বধ্যভূমি এটি—রাজবাড়ী বধ্যভূমি বা বিনোদপুর লোকোশেড বধ্যভূমি নামে পরিচিত। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বিনোদপুরের লোকোশেড এলাকায় ক্যাম্প বসিয়েছিল। তারা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে অসংখ্য মানুষকে...
৩ দিন আগে
ভালো-মন্দ সব জায়গাতেই আছে। সাহিত্য জগতেও যে ভালো মানুষ পাইনি, তা তো নয়। একজন লেখক অসম্ভব স্পর্শকাতর এবং সংবেদনশীল মানুষ। লেখালেখি বিষয়টাই তো সাংঘাতিক স্পর্শকাতর—লেখক এবং লেখা উভয়েই সামান্য কারণে আহত হয়!
৪ দিন আগে
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের শেষ প্রহর। গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় ১ ডিসেম্বর চলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর গণহত্যা। শীতলক্ষ্যার পশ্চিম পারে খলাপাড়া গ্রামে ‘ন্যাশনাল জুট মিলস লি.’ নামে যে কারখানাটি অবস্থিত, সেখানেই নারকীয়ভাবে হত্যা করা হয় মুক্তিযোদ্ধাসহ মিলের মুক্তিকামী শ্রমিক-কর্মচারীদের।
৫ দিন আগে
মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স-সংলগ্ন ভুরভুরিয়াছড়ার পাশেই বধ্যভূমি ৭১ পার্ক অবস্থিত। সেখানে প্রাচীন একটি বটগাছ রয়েছে, যা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করে। পাকিস্তান আমলে গাছটির নিচে ছিল এক সাধুর আস্তানা।
৬ দিন আগেসম্পাদকীয়

রাজবাড়ী শহরেই অবস্থিত বিনোদপুর লোকোশেড। বলা হয় রাজবাড়ী জেলার সবচেয়ে বড় বধ্যভূমি এটি—রাজবাড়ী বধ্যভূমি বা বিনোদপুর লোকোশেড বধ্যভূমি নামে পরিচিত। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বিনোদপুরের লোকোশেড এলাকায় ক্যাম্প বসিয়েছিল। তারা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে অসংখ্য মানুষকে ধরে এনে হত্যা করে লোকোশেডের পুকুরে ফেলে দিত। এমনকি রাজবাড়ী রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীবাহী ট্রেন থামলে সেই ট্রেন থেকেও সন্দেহভাজন মুক্তিকামী বাঙালিদের ধরে নিয়ে আসত লোকোশেড ক্যাম্পে। তাদের সহায়তা করতে দোসররা তো ছিলই। আর ক্যাম্পে আনা বাঙালিদের ভাগ্যে জুটত নির্মম নির্যাতন। এরপর হত্যা। এবং মৃতদেহগুলোর জায়গা হতো সেই পুকুরেই। দুই দশক আগে সরকারি অর্থায়নে সেই শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য বধ্যভূমি এলাকায় নির্মিত হয়েছে একটি স্মৃতিশৌধ।
ছবি: মো. সাকিবুল হাসান, উইকিপিডিয়া

রাজবাড়ী শহরেই অবস্থিত বিনোদপুর লোকোশেড। বলা হয় রাজবাড়ী জেলার সবচেয়ে বড় বধ্যভূমি এটি—রাজবাড়ী বধ্যভূমি বা বিনোদপুর লোকোশেড বধ্যভূমি নামে পরিচিত। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বিনোদপুরের লোকোশেড এলাকায় ক্যাম্প বসিয়েছিল। তারা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে অসংখ্য মানুষকে ধরে এনে হত্যা করে লোকোশেডের পুকুরে ফেলে দিত। এমনকি রাজবাড়ী রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীবাহী ট্রেন থামলে সেই ট্রেন থেকেও সন্দেহভাজন মুক্তিকামী বাঙালিদের ধরে নিয়ে আসত লোকোশেড ক্যাম্পে। তাদের সহায়তা করতে দোসররা তো ছিলই। আর ক্যাম্পে আনা বাঙালিদের ভাগ্যে জুটত নির্মম নির্যাতন। এরপর হত্যা। এবং মৃতদেহগুলোর জায়গা হতো সেই পুকুরেই। দুই দশক আগে সরকারি অর্থায়নে সেই শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য বধ্যভূমি এলাকায় নির্মিত হয়েছে একটি স্মৃতিশৌধ।
ছবি: মো. সাকিবুল হাসান, উইকিপিডিয়া

‘খুব বাড়ি যেতে ইচ্ছা করলেও যাই না। বাড়ি গেলে এলাকার লোকজন, আত্মীয়-স্বজনেরা জিজ্ঞেস করে, কী করি এখন? উত্তর দিতে পারি না। এলাকার দু-একজনের চাকরি হলে, সেটা আবার বাড়ির লোকজনই শোনায়। পরিবারটাকে অপরিচিত লাগে তখন, হতাশ লাগে!’
০৭ আগস্ট ২০২৩
ভালো-মন্দ সব জায়গাতেই আছে। সাহিত্য জগতেও যে ভালো মানুষ পাইনি, তা তো নয়। একজন লেখক অসম্ভব স্পর্শকাতর এবং সংবেদনশীল মানুষ। লেখালেখি বিষয়টাই তো সাংঘাতিক স্পর্শকাতর—লেখক এবং লেখা উভয়েই সামান্য কারণে আহত হয়!
৪ দিন আগে
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের শেষ প্রহর। গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় ১ ডিসেম্বর চলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর গণহত্যা। শীতলক্ষ্যার পশ্চিম পারে খলাপাড়া গ্রামে ‘ন্যাশনাল জুট মিলস লি.’ নামে যে কারখানাটি অবস্থিত, সেখানেই নারকীয়ভাবে হত্যা করা হয় মুক্তিযোদ্ধাসহ মিলের মুক্তিকামী শ্রমিক-কর্মচারীদের।
৫ দিন আগে
মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স-সংলগ্ন ভুরভুরিয়াছড়ার পাশেই বধ্যভূমি ৭১ পার্ক অবস্থিত। সেখানে প্রাচীন একটি বটগাছ রয়েছে, যা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করে। পাকিস্তান আমলে গাছটির নিচে ছিল এক সাধুর আস্তানা।
৬ দিন আগেসম্পাদকীয়

ভালো-মন্দ সব জায়গাতেই আছে। সাহিত্য জগতেও যে ভালো মানুষ পাইনি, তা তো নয়। একজন লেখক অসম্ভব স্পর্শকাতর এবং সংবেদনশীল মানুষ। লেখালেখি বিষয়টাই তো সাংঘাতিক স্পর্শকাতর—লেখক এবং লেখা উভয়েই সামান্য কারণে আহত হয়!
...লেখালেখি বিষয়টি একজন লেখকের কাছে সবচেয়ে কোমল আর সূক্ষ্ম অনুভূতি দাবি করে, সবচেয়ে গভীর মনোযোগ দাবি করে, আমার তো এ-ও মনে হয় যে ধ্যানমগ্নতা ছাড়া একজনের পক্ষে লেখকই হওয়া সম্ভব নয়। তো সতীর্থদের নোংরামি দেখে, ভণ্ডামি দেখে, বদমায়েশি দেখে কি একজন প্রকৃত লেখকের আহত হওয়ার কথা নয়?
...আমি তো সব সময় বিশ্বাস করে এসেছি—শিল্পীদের লোভ থাকতে নেই। লোভ থাকলে শিল্প হয় না, যেমন হয় না অসৎ মানুষেরও। শিল্পীর সততা থাকাটা খুব জরুরি, আমি বলব অপরিহার্য। যাই হোক, আমি শুধু সাহিত্য জগতের ভণ্ডামি দেখে লেখালেখি থেকে দূরে সরে এসেছি, সেটা বলা ঠিক হবে না। এটা একটা কারণ ছিল বটে, তবে আরও কারণ নিশ্চয়ই আছে।
আগেই তো তোমাকে বলেছি, আমি শেষের দিকে এসে একঘেয়েমিতে ভুগছিলাম। তা ছাড়া একটা সময় এসব কিছুকেই ভীষণ অর্থহীন মনে হলো আমার কাছে। কী করছি, কেন করছি, এসবের ফলাফল কী, আদৌ এসব করার কোনো অর্থ হয় কি না—এই সব আরকি! সব মিলিয়ে লেখালেখিটা আর ভালো লাগেনি। অবশ্য একবারে পরিকল্পনা করে, সিদ্ধান্ত নিয়ে লেখালেখি বন্ধ করেছিলাম, তা নয়। এ রকম তো সব লেখকেরই হয় যে মাঝে মাঝে ক্লান্তি আসে, মাঝে মাঝে বিশ্রাম নিতে ইচ্ছে করে, মাঝে মাঝে বন্ধ্যত্বও দেখা দেয়। আমার সেটাই হয়েছিল। কিন্তু সব লেখকই সেই সময়টি পেরিয়ে আবার লেখালেখিতে আসেন। আমার আর ফিরে আসা সম্ভব হয়নি। আর এখন তো শারীরিক কারণেই অনেক কিছু করা সম্ভব হয় না। যে উদ্দাম জীবন আমি যাপন করেছি, সেটা শুনলে তোমরা অবাক হয়ে যাবে, আর এখন তো দিনের পর দিন ঘরে বন্দী হয়ে থাকি, বেরুতেই পারি না...
সূত্র: আহমাদ মোস্তফা কামাল কর্তৃক মাহমুদুল হকের সাক্ষাৎকার গ্রহণ, ‘হিরণ্ময় কথকতা’, পৃষ্ঠা ৯০-৯১

ভালো-মন্দ সব জায়গাতেই আছে। সাহিত্য জগতেও যে ভালো মানুষ পাইনি, তা তো নয়। একজন লেখক অসম্ভব স্পর্শকাতর এবং সংবেদনশীল মানুষ। লেখালেখি বিষয়টাই তো সাংঘাতিক স্পর্শকাতর—লেখক এবং লেখা উভয়েই সামান্য কারণে আহত হয়!
...লেখালেখি বিষয়টি একজন লেখকের কাছে সবচেয়ে কোমল আর সূক্ষ্ম অনুভূতি দাবি করে, সবচেয়ে গভীর মনোযোগ দাবি করে, আমার তো এ-ও মনে হয় যে ধ্যানমগ্নতা ছাড়া একজনের পক্ষে লেখকই হওয়া সম্ভব নয়। তো সতীর্থদের নোংরামি দেখে, ভণ্ডামি দেখে, বদমায়েশি দেখে কি একজন প্রকৃত লেখকের আহত হওয়ার কথা নয়?
...আমি তো সব সময় বিশ্বাস করে এসেছি—শিল্পীদের লোভ থাকতে নেই। লোভ থাকলে শিল্প হয় না, যেমন হয় না অসৎ মানুষেরও। শিল্পীর সততা থাকাটা খুব জরুরি, আমি বলব অপরিহার্য। যাই হোক, আমি শুধু সাহিত্য জগতের ভণ্ডামি দেখে লেখালেখি থেকে দূরে সরে এসেছি, সেটা বলা ঠিক হবে না। এটা একটা কারণ ছিল বটে, তবে আরও কারণ নিশ্চয়ই আছে।
আগেই তো তোমাকে বলেছি, আমি শেষের দিকে এসে একঘেয়েমিতে ভুগছিলাম। তা ছাড়া একটা সময় এসব কিছুকেই ভীষণ অর্থহীন মনে হলো আমার কাছে। কী করছি, কেন করছি, এসবের ফলাফল কী, আদৌ এসব করার কোনো অর্থ হয় কি না—এই সব আরকি! সব মিলিয়ে লেখালেখিটা আর ভালো লাগেনি। অবশ্য একবারে পরিকল্পনা করে, সিদ্ধান্ত নিয়ে লেখালেখি বন্ধ করেছিলাম, তা নয়। এ রকম তো সব লেখকেরই হয় যে মাঝে মাঝে ক্লান্তি আসে, মাঝে মাঝে বিশ্রাম নিতে ইচ্ছে করে, মাঝে মাঝে বন্ধ্যত্বও দেখা দেয়। আমার সেটাই হয়েছিল। কিন্তু সব লেখকই সেই সময়টি পেরিয়ে আবার লেখালেখিতে আসেন। আমার আর ফিরে আসা সম্ভব হয়নি। আর এখন তো শারীরিক কারণেই অনেক কিছু করা সম্ভব হয় না। যে উদ্দাম জীবন আমি যাপন করেছি, সেটা শুনলে তোমরা অবাক হয়ে যাবে, আর এখন তো দিনের পর দিন ঘরে বন্দী হয়ে থাকি, বেরুতেই পারি না...
সূত্র: আহমাদ মোস্তফা কামাল কর্তৃক মাহমুদুল হকের সাক্ষাৎকার গ্রহণ, ‘হিরণ্ময় কথকতা’, পৃষ্ঠা ৯০-৯১

‘খুব বাড়ি যেতে ইচ্ছা করলেও যাই না। বাড়ি গেলে এলাকার লোকজন, আত্মীয়-স্বজনেরা জিজ্ঞেস করে, কী করি এখন? উত্তর দিতে পারি না। এলাকার দু-একজনের চাকরি হলে, সেটা আবার বাড়ির লোকজনই শোনায়। পরিবারটাকে অপরিচিত লাগে তখন, হতাশ লাগে!’
০৭ আগস্ট ২০২৩
রাজবাড়ী শহরেই অবস্থিত বিনোদপুর লোকোশেড। বলা হয় রাজবাড়ী জেলার সবচেয়ে বড় বধ্যভূমি এটি—রাজবাড়ী বধ্যভূমি বা বিনোদপুর লোকোশেড বধ্যভূমি নামে পরিচিত। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বিনোদপুরের লোকোশেড এলাকায় ক্যাম্প বসিয়েছিল। তারা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে অসংখ্য মানুষকে...
৩ দিন আগে
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের শেষ প্রহর। গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় ১ ডিসেম্বর চলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর গণহত্যা। শীতলক্ষ্যার পশ্চিম পারে খলাপাড়া গ্রামে ‘ন্যাশনাল জুট মিলস লি.’ নামে যে কারখানাটি অবস্থিত, সেখানেই নারকীয়ভাবে হত্যা করা হয় মুক্তিযোদ্ধাসহ মিলের মুক্তিকামী শ্রমিক-কর্মচারীদের।
৫ দিন আগে
মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স-সংলগ্ন ভুরভুরিয়াছড়ার পাশেই বধ্যভূমি ৭১ পার্ক অবস্থিত। সেখানে প্রাচীন একটি বটগাছ রয়েছে, যা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করে। পাকিস্তান আমলে গাছটির নিচে ছিল এক সাধুর আস্তানা।
৬ দিন আগেসম্পাদকীয়

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের শেষ প্রহর। গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় ১ ডিসেম্বর চলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর গণহত্যা। শীতলক্ষ্যার পশ্চিম পারে খলাপাড়া গ্রামে ‘ন্যাশনাল জুট মিলস লি.’ নামে যে কারখানাটি অবস্থিত, সেখানেই নারকীয়ভাবে হত্যা করা হয় মুক্তিযোদ্ধাসহ মিলের মুক্তিকামী শ্রমিক-কর্মচারীদের। শতাধিক বাঙালিকে লাইনে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করে পাকিস্তানি সেনারা। তাঁদের অপরাধ ছিল একটাই—মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণের পরিকল্পনা করা। গণহত্যার পর হানাদার বাহিনী মিলের দক্ষিণ দিকের দেয়াল ভেঙে চলে যায়। মরদেহগুলো তিন-চার দিন মিলের সুপারিবাগানে পড়ে থাকে। শিয়াল-শকুন খুবলে খায় সেগুলো। দেশ স্বাধীন হলে গ্রামবাসী মিলের ভেতরে গিয়ে ১৩৬ জনের লাশ পান। মিলের দক্ষিণ পাশে ১০৬ জনের মৃতদেহকে গণকবরে শায়িত করা হয়। বাকিদের মরদেহ নিয়ে যান স্বজনেরা। ১৯৯৬ সালে শহীদদের সম্মানে মিল কর্তৃপক্ষ ‘শহীদ স্মরণে’ স্মৃতিফলকটি নির্মাণ করে গণকবরের জায়গাটিতে।
ছবি: সংগৃহীত

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের শেষ প্রহর। গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় ১ ডিসেম্বর চলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর গণহত্যা। শীতলক্ষ্যার পশ্চিম পারে খলাপাড়া গ্রামে ‘ন্যাশনাল জুট মিলস লি.’ নামে যে কারখানাটি অবস্থিত, সেখানেই নারকীয়ভাবে হত্যা করা হয় মুক্তিযোদ্ধাসহ মিলের মুক্তিকামী শ্রমিক-কর্মচারীদের। শতাধিক বাঙালিকে লাইনে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করে পাকিস্তানি সেনারা। তাঁদের অপরাধ ছিল একটাই—মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণের পরিকল্পনা করা। গণহত্যার পর হানাদার বাহিনী মিলের দক্ষিণ দিকের দেয়াল ভেঙে চলে যায়। মরদেহগুলো তিন-চার দিন মিলের সুপারিবাগানে পড়ে থাকে। শিয়াল-শকুন খুবলে খায় সেগুলো। দেশ স্বাধীন হলে গ্রামবাসী মিলের ভেতরে গিয়ে ১৩৬ জনের লাশ পান। মিলের দক্ষিণ পাশে ১০৬ জনের মৃতদেহকে গণকবরে শায়িত করা হয়। বাকিদের মরদেহ নিয়ে যান স্বজনেরা। ১৯৯৬ সালে শহীদদের সম্মানে মিল কর্তৃপক্ষ ‘শহীদ স্মরণে’ স্মৃতিফলকটি নির্মাণ করে গণকবরের জায়গাটিতে।
ছবি: সংগৃহীত

‘খুব বাড়ি যেতে ইচ্ছা করলেও যাই না। বাড়ি গেলে এলাকার লোকজন, আত্মীয়-স্বজনেরা জিজ্ঞেস করে, কী করি এখন? উত্তর দিতে পারি না। এলাকার দু-একজনের চাকরি হলে, সেটা আবার বাড়ির লোকজনই শোনায়। পরিবারটাকে অপরিচিত লাগে তখন, হতাশ লাগে!’
০৭ আগস্ট ২০২৩
রাজবাড়ী শহরেই অবস্থিত বিনোদপুর লোকোশেড। বলা হয় রাজবাড়ী জেলার সবচেয়ে বড় বধ্যভূমি এটি—রাজবাড়ী বধ্যভূমি বা বিনোদপুর লোকোশেড বধ্যভূমি নামে পরিচিত। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বিনোদপুরের লোকোশেড এলাকায় ক্যাম্প বসিয়েছিল। তারা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে অসংখ্য মানুষকে...
৩ দিন আগে
ভালো-মন্দ সব জায়গাতেই আছে। সাহিত্য জগতেও যে ভালো মানুষ পাইনি, তা তো নয়। একজন লেখক অসম্ভব স্পর্শকাতর এবং সংবেদনশীল মানুষ। লেখালেখি বিষয়টাই তো সাংঘাতিক স্পর্শকাতর—লেখক এবং লেখা উভয়েই সামান্য কারণে আহত হয়!
৪ দিন আগে
মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স-সংলগ্ন ভুরভুরিয়াছড়ার পাশেই বধ্যভূমি ৭১ পার্ক অবস্থিত। সেখানে প্রাচীন একটি বটগাছ রয়েছে, যা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করে। পাকিস্তান আমলে গাছটির নিচে ছিল এক সাধুর আস্তানা।
৬ দিন আগেসম্পাদকীয়

মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স-সংলগ্ন ভুরভুরিয়াছড়ার পাশেই বধ্যভূমি ৭১ পার্ক অবস্থিত। সেখানে প্রাচীন একটি বটগাছ রয়েছে, যা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করে। পাকিস্তান আমলে গাছটির নিচে ছিল এক সাধুর আস্তানা। চা-শ্রমিক ও বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এখানে এসে পূজা দিত, মনোবাসনা পূরণে মানত করত। সবাই জায়গাটিকে চিনত ‘সাধু বাবার থলি’ নামে। যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এখানে এনে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। হত্যার আগে বটগাছের ডালে ঝুলিয়ে তাঁদের ওপর অমানবিক অত্যাচার চালানো হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজন ও মুক্তিকামী সাধারণ মানুষও বাদ যাননি। গাছের ডালে উল্টো করে বেঁধে রাখা হতো তাঁদের। নির্যাতনের যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে তাঁরা শহীদ হন। সেই সব শহীদের ত্যাগকে অমর করে রাখতে এখানে নির্মিত হয় ‘বধ্যভূমি ৭১’ নামের স্মৃতিস্তম্ভটি। একাত্তরের স্মৃতিবিজড়িত বধ্যভূমিটিতে আরও রয়েছে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী ৭১’ নামে একটি ভাস্কর্য।
ছবি: সংগৃহীত

মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স-সংলগ্ন ভুরভুরিয়াছড়ার পাশেই বধ্যভূমি ৭১ পার্ক অবস্থিত। সেখানে প্রাচীন একটি বটগাছ রয়েছে, যা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করে। পাকিস্তান আমলে গাছটির নিচে ছিল এক সাধুর আস্তানা। চা-শ্রমিক ও বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এখানে এসে পূজা দিত, মনোবাসনা পূরণে মানত করত। সবাই জায়গাটিকে চিনত ‘সাধু বাবার থলি’ নামে। যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এখানে এনে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। হত্যার আগে বটগাছের ডালে ঝুলিয়ে তাঁদের ওপর অমানবিক অত্যাচার চালানো হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজন ও মুক্তিকামী সাধারণ মানুষও বাদ যাননি। গাছের ডালে উল্টো করে বেঁধে রাখা হতো তাঁদের। নির্যাতনের যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে তাঁরা শহীদ হন। সেই সব শহীদের ত্যাগকে অমর করে রাখতে এখানে নির্মিত হয় ‘বধ্যভূমি ৭১’ নামের স্মৃতিস্তম্ভটি। একাত্তরের স্মৃতিবিজড়িত বধ্যভূমিটিতে আরও রয়েছে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী ৭১’ নামে একটি ভাস্কর্য।
ছবি: সংগৃহীত

‘খুব বাড়ি যেতে ইচ্ছা করলেও যাই না। বাড়ি গেলে এলাকার লোকজন, আত্মীয়-স্বজনেরা জিজ্ঞেস করে, কী করি এখন? উত্তর দিতে পারি না। এলাকার দু-একজনের চাকরি হলে, সেটা আবার বাড়ির লোকজনই শোনায়। পরিবারটাকে অপরিচিত লাগে তখন, হতাশ লাগে!’
০৭ আগস্ট ২০২৩
রাজবাড়ী শহরেই অবস্থিত বিনোদপুর লোকোশেড। বলা হয় রাজবাড়ী জেলার সবচেয়ে বড় বধ্যভূমি এটি—রাজবাড়ী বধ্যভূমি বা বিনোদপুর লোকোশেড বধ্যভূমি নামে পরিচিত। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বিনোদপুরের লোকোশেড এলাকায় ক্যাম্প বসিয়েছিল। তারা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে অসংখ্য মানুষকে...
৩ দিন আগে
ভালো-মন্দ সব জায়গাতেই আছে। সাহিত্য জগতেও যে ভালো মানুষ পাইনি, তা তো নয়। একজন লেখক অসম্ভব স্পর্শকাতর এবং সংবেদনশীল মানুষ। লেখালেখি বিষয়টাই তো সাংঘাতিক স্পর্শকাতর—লেখক এবং লেখা উভয়েই সামান্য কারণে আহত হয়!
৪ দিন আগে
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের শেষ প্রহর। গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় ১ ডিসেম্বর চলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর গণহত্যা। শীতলক্ষ্যার পশ্চিম পারে খলাপাড়া গ্রামে ‘ন্যাশনাল জুট মিলস লি.’ নামে যে কারখানাটি অবস্থিত, সেখানেই নারকীয়ভাবে হত্যা করা হয় মুক্তিযোদ্ধাসহ মিলের মুক্তিকামী শ্রমিক-কর্মচারীদের।
৫ দিন আগে