Ajker Patrika

আমার দিলীপ কুমার

জাহীদ রেজা নূর
আপডেট : ০৯ জুলাই ২০২১, ২০: ৪৩
আমার দিলীপ কুমার

আশির দশকে ‘ক্রান্তি’ বা ‘শক্তি’ নামে নির্মিত সিনেমার মাধ্যমে দিলীপ কুমারের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হতে পারত। আমাদের বলতে আশির দশকের তরুণদের কথা বলছি। আশির দশকের শুরুতে যখন একটু একটু করে ভিসিআর এসে হাজির হচ্ছে ঢাকা শহরে, সিনেমা হলের মতো টিকিট কেটে হিন্দি ছবি দেখা হচ্ছে বেগমবাজারসহ পুরান ঢাকার বিভিন্ন মহল্লায়, সে সময় নির্ঘাত মাঝবয়সী দিলীপ কুমারকে ছোট্ট টিভি স্ক্রিনে দেখার সৌভাগ্য হতো। একসময় এই ভদ্রলোক ‘ট্র্যাজেডি কিং’ উপাধি পেয়েছিলেন, সে কথা পত্র–পত্রিকার লেখালেখির মাধ্যমে রসিয়ে রসিয়ে উপভোগ করা যেত। 

ট্র্যাজেডি শব্দটির সঙ্গে উপভোগ শব্দটিকে কি খুবই বিসদৃশ লাগছে? একটু ভেবে দেখলেই পরিষ্কার হবে, আসলে দিলীপ কুমারের ট্র্যাজেডি মানেই বক্স অফিসে 'কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা'। হলভর্তি দর্শক হাপুস নয়নে কাঁদছে, আর প্রযোজকের মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠছে—এ এক অন্য খেলা! সেই যখন পেশোয়ারে থাকতেন ইউসুফ খান (পরে দিলীপ কুমার), যখন তাঁর প্রতিবেশী ছিলেন আরেক কিংবদন্তি কাপুর পরিবার, তখনো আর্থিক অবস্থা একেবারেই ভালো ছিল না দিলীপ কুমারদের। কত খাটাখাটনি, বাবার সঙ্গে ঝগড়া, পালিয়ে গিয়ে আর্মি ক্লাবে চাকরি, ফেরার সময় ৫ হাজার রুপি নিয়ে ঘরে ফেরা—নাহ! দিলীপ কুমারের জীবনী এখানে বলার কোনো প্রয়োজন নেই, যারা এ লেখা পড়ছেন, তাঁরা সবাই জানেন দিলীপের জীবনেতিহাস। এখানে শুধু সে কথাই বলার চেষ্টা করছি, আশির দশকে আসলে আমরা কী করে দিলীপ কুমারকে খুঁজে পেলাম। এবং সেটা পেলাম আস্ত রোমান্টিক এবং ট্র্যাজিক কুমারকেই! মাঝবয়সী চরিত্রাভিনেতাকে নয়। 

দুই. 
এরশাদ ক্ষমতায় আসার পর বঙ্গবন্ধুর দেওয়া নিউ ইস্কাটনের বাড়ি থেকে আমাদের নামিয়ে দিল পুলিশ। বাড়ির আসবাবপত্র ছুড়ে ছুড়ে ফেলতে লাগল রাস্তায়। আমরা অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পুলিশের এই কাণ্ডকীর্তি দেখতে লাগলাম। এ সময় আমার কোনো এক ভাই বুঝতে পারল, এভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে রাত কাটাতে হবে ফুটপাতে। তাই তখনই বাড়ি খুঁজতে বের হলেন তিনি। একটা ভাড়া বাড়ির খুব প্রয়োজন তখন। 

সে সময় জিগাতলা পোস্ট অফিসের কাছে একটি বাড়ি পাওয়া গেল। সে এক আকস্মিক ব্যাপার। শুধু তাই নয়, মালপত্র নিয়ে সে বাড়ির একতলায় ওঠার পর দোতলায় বসবাসরত বাড়িওয়ালারা আমাদের মুরগি আর ডাল দিয়ে ভাত খাওয়ালেন রাতে। এ রকম ট্র্যাজেডির মধ্যে এ যেন স্বর্গীয় আদর–যত্ন। 

এই জিগাতলায় এলাম বলেই তরুণ দিলীপ কুমারকে খুঁজে পেলাম। কী করে তা সম্ভব হলো, সেটাই বলি। নতুন জায়গা। শহরের কেন্দ্র থেকে বেশ খানিকটা দূরে। ধানমন্ডি, রায়ের বাজার, হাজারিবাগ খুব কাছে। ট্যানারির বীভৎস গন্ধ প্রায় সব সময় নাকে এসে লাগে। তারই মধ্যে নতুন জীবন। হেঁটে হেঁটে জায়গাটার সঙ্গে পরিচিত হচ্ছি। হাজারীবাগ গিয়ে বাঁ দিকে মোড় নিয়ে কিছু দূর এগোলেই সুইপার কলোনি। সেটা পার হয়ে আরও কিছুটা এগোলে বিডিআর মিলনায়তন। সেখানে গিয়ে দেখি ছবি চলছে। সাধারণ সিনেমা হলের চেয়ে টিকিটের দাম কম। ছবির নাম ‘বাবুল’। অভিনয় করেছেন দিলীপ কুমার আর নার্গিস। দিলীপ কুমার বড়লোকের ছেলে। পোস্টমাস্টার হয়ে এসেছেন এই ছোট্ট শহরে। গরিব বাবার মেয়ে নার্গিস। ছবিতে যার নাম বেলা। বেলা আর অশোকের মধ্যে খুব ভাব। বেলার বাবা ভাবেন, অশোক নিশ্চয়ই বেলাকে বিয়ে করবে। এ সময় উষা নামে একটি ধনী বাবার কন্যার সঙ্গে পরিচয় হয় অশোকের। অশোক হয় তার গৃহশিক্ষক। উষা প্রেমে 'পড়ে' অশোকের। 

এর পর এগিয়ে চলে কাহিনি। যারা দেখেননি, তাদের কাছে ছবিটি দেখার আহ্বান থাকল। এর বেশি কাহিনি বলে দিলে দেখার আগ্রহ নষ্ট হতে পারে। তবে এটুকু বলে রাখি, ছবিজুড়ে শামসাদ বেগম আর তালাত মাহমুদের গাওয়া গান মন ভরে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। 

ঢাকা শহরের একটি সিনেমা হলে ভারতীয় হিন্দি ছবি! আমাদের জানা ছিল, ১৯৬৫ সালের পাকিস্তান–ভারতের মধ্যে যুদ্ধ হওয়ার পর ভারতীয় ছবির আগমন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। যে প্রিন্টগুলো ছিল এখানে, সেগুলোই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখানো হতো। ফলে বিডিআর মিলনায়তনে বাবুল, বৈজু বাওরা, লুকোচুরির মতো ছবিগুলো চলত। খুবই খারাপ প্রিন্ট। কিন্তু বারবার তা দেখতাম। লুকোচুরি মনে হয় কুড়িবারের বেশি দেখেছিলাম, বাবুল দেখেছিলাম দশবারের বেশি। 

তিন. 
দুঃসংবাদগুলো দিয়ে রাখি। 

দিলীপ কুমারের ছোট ভাই নাসির খান মারা গিয়েছিলেন সেই ১৯৭৪ সালে। তিনিও ছিলেন নামকরা চলচ্চিত্র অভিনেতা। বৈজয়ন্তী মালা আর দিলীপ কুমারের সঙ্গে তিনি ‘গঙ্গা যমুনা’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। 

দিলীপ কুমার তাঁর আরও দুই ভাইকে হারিয়েছেন গত বছর। দুজনেই মারা গেছেন কোভিডে। আসলাম খান মারা গেছেন গত বছর আগস্ট মাসে। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। এহসান খান মারা গেছেন ৯০ বছর বয়সে, গত বছরেরই সেপ্টেম্বরে। 

চার. 
অমিতাভ বচ্চন বহু আগেই বলেছিলেন, দিলীপ কুমার ভারতের সেরা অভিনেতাদের একজন এবং শুধু ভারত নয়, পৃথিবীর সেরা অভিনেতাদের অন্যতম। 

কথাটা অমিতাভ বাড়িয়ে বলেননি। আমাদের অনেকেরই মনে পড়ে যাবে, দিলীপ কুমার ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড দেওয়া শুরু হলে সেরা অভিনেতার পুরস্কারটা পেয়েছিলেন ১৯৫৪ সালে। ‘দাগ’ ছিল ছবিটার নাম। এর পর আরও সাতবার সেই পুরস্কার জুটেছে তাঁর কপালে। সে সময়কার সেরা অভিনেত্রীরা তাঁর সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন। এদের মধ্যে ছিলেন মধুবালা, বৈজয়ন্তী মালা, নার্গিস, নিম্মি, মিনা কুমারী, কামিনী কৌশল। 

এখন তো শিল্পকেও নিয়ন্ত্রণ করে বাণিজ্য। সে কারণেই একটি তথ্য এখানে জানিয়ে রাখতে চাই। 

পঞ্চাশের দশকের ৩০টি ব্যবসাসফল ছবির মধ্যে দিলীপ কুমার অভিনীত ছবির সংখ্যা ছিল নয়টি। তাহলে না বোঝার কোনো কারণ নেই, এ সময় গরিব মানুষটা টাকা–পয়সার মুখ দেখেছিলেন। তাঁর জনপ্রিয়তা হয়েছিল আকাশসমান। 

এর পর যদি ষাটের দশকের মুঘল–ই–আজম ছবিটির কথা বলি, তাহলে বলতে হবে, ভারতের সর্বাধিক ব্যবসাসফল ছবি হিসেবে ১১ বছর টিকে ছিল সেটা। ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৬০ সালে। ১৯৭১ সালে নির্মিত ‘হাতি মেরা সাথি’ ছবিটি এই রেকর্ড ভঙ্গ করে। এর পর সে রেকর্ডও ভেঙে যায় ১৯৭৫ সালে ‘শোলে’ মুক্তি পাওয়ার পর। তবে অনেকেই বলে থাকেন, যদি মুদ্রাস্ফীতির কথা মাথায় রাখা হয়, তাহলে ২০১০ সাল পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আয় করা ছবি হিসেবে মুঘল–ই আজমকেই সামনে রাখতে হবে। ২০১১ সালের হিসেবে ১০০০ কোটি টাকা আয়ের কথা বলা হচ্ছে! 

মুঘল–ই–আজম ছবিটি রাজপুত্র সেলিমকে নিয়ে। আমরা যাকে জাহাঙ্গীর বলে জানি। সেলিম বিদ্রোহ করেছিলেন তাঁর বাবা আকবরের বিরুদ্ধে। এই ছবিতে দিলীপ কুমার অভিনয় করেছিলেন সেলিমের ভূমিকায়। বাবা আকবর হয়েছিলেন রাজ কাপুরের বাবা পৃত্থীরাজ কাপুর। মধুবালা অভিনয় করেছিলেন আনারকলি চরিত্রে। ছবিটি ছিল সাদা–কালো। শুধু দ্বিতীয় ভাগে কিঞ্চিৎ রঙিন ছিল। ২০০৪ সালে পুরো ছবিটি রঙিন করে আবার সিনেমা হলে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। 

পাঁচ. 
যদিও এই তথ্য অনেকেই জানেন, পত্র–পত্রিকায়ও প্রকাশিত হয়েছে, তারপরও মনে হয়, এখানে উল্লেখ করা দরকার। ব্রিটিশ পরিচালক ডেভিড লিনকে আমরা চিনি লরেন্স অব অ্যারাবিয়া ছবির মাধ্যমে। এই ছবিটি নির্মাণ করা হয়েছিল ১৯৬২ সালে। তিনি সেখানে শেরিফ আলী চরিত্রে দিলীপ কুমারকে চেয়েছিলেন। দিলীপ রাজি হননি। তখন মিসরীয় অভিনেতা ওমর শরিফ ওই চরিত্রে অভিনয় করেন। ওমর শরীফের জীবনে এই ছবি একটি মাইলফলক হয়ে আছে। 

যে তথ্য অনেকেই জানেন না, সেটা এখানে বলি। দিলীপ কুমার ‘লরেন্স অব অ্যারাবিয়া’ ছবিটি দেখার পর নির্দ্বিধায় বলেছেন, ‘আমি যদি এই ছবিতে অভিনয় করতাম, তাহলে ওমর শরিফের মতো এত ভালো করতে পারতাম না। তিনি খুব ভালো অভিনয় করেছেন।’ 

ডেভিড লিন ‘তাজমহল’ নামে একটি ছবি তৈরি করতে চেয়েছিলেন। সে ছবির নায়িকা হিসেবে নিয়েছিলেন এলিজাবেথ টেইলরকে। আর নায়ক হিসেবে ভেবেছিলেন দিলীপ কুমারকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ছবিটি আর হয়নি। 

ছয়. 
সত্তরের দশকে দিলীপ কুমারের ক্যারিয়ারে ধস নেমেছিল। ছবিগুলো সেভাবে দর্শক টানতে পারছিল না। তবে ১৯৭০ সালটি আমাদের জন্য খুব আনন্দদায়ক। এ বছর তিনি ‘সাগিনা মাহাতো’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। দিলীপ কুমার অভিনীত একমাত্র বাংলা ছবি এটি। ১৯৭৪ সালে এই ছবি হিন্দি ভাষায় আবার করেন তিনি। উত্তর–পূর্ব ভারতের একজন চা শ্রমিক চা বাগানের ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন, তারই বর্ণনা রয়েছে এই ছবিতে। সায়রা বানু, অনিল চ্যাটার্জি, ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় অভিনয় করেছিলেন এই ছবিতে। ১৯৭৬ সালে তিনি ছুটি নেন চলচ্চিত্র থেকে। ফিরে আসেন আশির দশকের শুরুতে। 

সাত. 
লেখাটা এখান থেকেই শুরু করেছিলাম। এ সময় ভিসিআরের মাধ্যমে ছোট পর্দায় দিলীপ কুমারের সঙ্গে মোলাকাত হতে পারত। কিন্তু বিডিআর অডিটোরিয়ামের বড় পর্দায়ই ট্র্যাজেডির রাজাকে আমরা দেখে ফেলেছিলাম। ‘ক্রান্তি’ ছবিতে দিলীপের সঙ্গে ছিলেন মনোজ কুমার, শশী কাপুর, হেমা মালিনী, শত্রুঘ্ন সিনহা। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের একজন নেতা ছিলেন তিনি এই ছবিতে। ভারতের স্বাধীনতার সৈনিক। তারকাবহুল এই ছবি দর্শক লুফে নিয়েছিল। এর পর সুভাষ ঘাইয়ের ‘বিধাতা’। তারপর একই পরিচালকের ‘কর্ম।’ কর্ম নিয়ে একটা কথা বলতে ভালো লাগবে। এই ছবিতে দিলীপ অভিনয় করেছিলেন তাঁরই সমসাময়িক আরেক বড় শিল্পী নুতনের সঙ্গে। মজার ব্যাপার হলো, ‘শিকওয়া’ নামের একটি ছবিতে তাঁরা জুটি বেঁধেছিলেন আরও তিন দশক আগে। কিন্তু ছবিটি শেষ করা হয়নি। ১৯৮৯ সালেও দিলীপ–নুতন অভিনয় করেন ‘কানুন আপনা আপনা’ নামে ছবিতে। 

শেষ ছবিটি ছিল ‘কিলা’। মুক্তি পেয়েছিল ১৯৯৮ সালে। এর পর আর অভিনয়ের জন্য ক্যামেরার সামনে দাঁড়াননি। 

আট. 
এরপরও অনেকগুলো বছর বেঁচেছেন দিলীপ কুমার। বেশ কয়েকবার তাঁর মৃত্যু সংবাদ শুনতে হয়েছে আমাদের। পরে তা মিথ্যে বলে প্রমাণিত হয়েছে। এবার কিন্তু মৃত্যু সংবাদটা মিথ্যে ছিল না। 

 ৭ জুলাই চলেই গেলেন ভারতীয় চলচ্চিত্রের শৃঙ্গ স্পর্শ করা এই প্রতিভাবান মানুষটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাক্ষস সিনেমায় অভিনয়ের গুঞ্জন নাকচ করলেন ইধিকা

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪২
ইধিকা পাল ছবি : সংগৃহীত
ইধিকা পাল ছবি : সংগৃহীত

শাকিব খানের বিপরীতে ' প্রিয়তমা ' সিনেমা দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক হয় পশ্চিমবঙ্গের ইধিকা পালের । প্রথম সিনেমাতেই নজর কাড়েন অভিনেত্রী । এ বছর রোজার ঈদে মুক্তি পাওয়া মেহেদী হাসান হৃদয় পরিচালিত ‘ বরবাদ ' সিনেমায়ও দেখা গেছে তাঁকে । খবর ছড়িয়েছে , মেহেদী হাসান হৃদয়ের নতুন সিনেমায়ও অভিনয় করবেন ইধিকা । এবার তাঁর নায়ক সিয়াম আহমেদ । ‘ রাক্ষস ’ নামের সিনেমায় জুটি হচ্ছেন তাঁরা । অথচ অভিনেত্রী জানালেন ভিন্ন কথা । এমন নামের কোনো সিনেমা নিয়ে তাঁর সঙ্গে নাকি কোনো কথাই হয়নি । রাক্ষস সিনেমায় ইধিকার অভিনয়ের এই গুঞ্জন কয়েক দিন ধরে । ইতিমধ্যে নাকি আলাপও হয়েছে নির্মাতাদের সঙ্গে , এমন খবরও প্রকাশিত হয়েছে সংবাদমাধ্যমে । কিন্তু , নতুন এই সিনেমা নিয়ে কথা বলতে যোগাযোগ করলে ইধিকা জানালেন ভিন্ন কথা । খুদে বার্তায় আজকের পত্রিকাকে ইধিকা লেখেন , “ এখন অবধি এ রকম ( রাক্ষস ) নামের কোনো সিনেমা নিয়ে আমার কোনো কথা হয়নি । ' একই কথা পশ্চিমবঙ্গের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারকেও জানিয়েছেন ইধিকা । অভিনেত্রী জানান , সিয়াম আহমেদের সঙ্গে অভিনয় নিয়ে কোনো কথা হয়নি ।

আনন্দবাজার জানাচ্ছে , ইধিকা না থাকলেও রাক্ষসে সিয়ামের সঙ্গে থাকবেন টালিউড নায়িকা সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায় । এর আগে এ সিনেমায় সাবিলা নূরের অভিনয়ের খবর ছড়িয়েছিল । রাক্ষস সিনেমায় দেশ - বিদেশের একাধিক অভিনেত্রীর নাম শোনা গেলেও এখন পর্যন্ত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান কিংবা নির্মাতার কাছ থেকে আসেনি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা । বরং প্রযোজক শাহরিনা সুলতানা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন , এই সিনেমা নিয়ে বেশ কয়েকজন নায়িকার সঙ্গে কথা হয়েছে । শেষ পর্যন্ত কে থাকছে , সেটা সময় বলে দেবে । রাক্ষসের আগে আবু হায়াত মাহমুদের ‘ প্রিন্স ' সিনেমার নায়িকা হিসেবেও শোনা গেছে ইধিকার নাম । সেই দৃশ্যপটও বদলে গেছে ।

এখন শোনা যাচ্ছে , ইধিকা নয় , টালিউডের আরেক নায়িকা জ্যোতির্ময়ী কুণ্ডুর নাম । তবে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তাসনিয়া ফারিণের থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও অন্য কারও নাম ঘোষণা হয়নি এখন পর্যন্ত । জানা গেছে , এ মাসেই শুরু হবে প্রিন্স ও রাক্ষস সিনেমার শুটিং । দুটি সিনেমার বেশির ভাগ শুটিং হবে দেশের বাইরে । সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছর রোজার ঈদে মুক্তি পাবে সিনেমা দুটি ।

এ ধরনের গুঞ্জনে অবাক হয়েছেন তিনি । গত বছরও শোনা গিয়েছিল ‘ সিকান্দার ' নামের একটি সিনেমায় জুটি হচ্ছেন সিয়াম - ইধিকা । সেই খবরও শেষ পর্যন্ত গুঞ্জনই থেকে গেছে । এদিকে

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রকাশিত হলো শিরোনামহীনের ‘এই অবেলায় ২’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘এই অবেলায় ২’ ও ‘রিমেম্বার মি’ গানের পোস্টার
‘এই অবেলায় ২’ ও ‘রিমেম্বার মি’ গানের পোস্টার

গত বছরের অক্টোবরে প্রকাশ পেয়েছিল শিরোনামহীন ব্যান্ডের ‘এই অবেলায় ২’ গানের টিজার। তবে স্পনসর জটিলতায় আটকে ছিল গানটি। অবশেষে গতকাল প্রকাশ পেল শিরোনামহীনের বহুল প্রতীক্ষিত এই অবেলায় গানের দ্বিতীয় পর্ব। এটি শিরোনামহীনের পঞ্চম অ্যালবাম বাতিঘরের শেষ গান।

‘যদি কোথাও/ কোনো দিন দূরে সরে যাই/ নিসর্গের আঁধারে হারাই/ সমুদ্রের ঢেউ দেখে আমায় রেখো মনে’—এমন কথার গানটি লিখেছেন শিরোনামহীনের দলনেতা জিয়াউর রহমান, সুর করেছেন ব্যান্ডের ড্রামার কাজী আহমাদ শাফিন। ভিডিও নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি। গেয়েছেন শেখ ইশতিয়াক। শুটিং হয়েছে থাইল্যান্ডের কো খাম, কো মাখ ও কো চ্যাং আইল্যান্ডে। মডেল হয়েছেন নীল হুরেজাহান।

২০১৯ সালের মে মাসে ‘এই অবেলায়’ দিয়ে নতুন করে জেগে উঠেছিল ব্যান্ড শিরোনামহীন। নতুন ভোকাল নিয়ে ভক্তদের প্রত্যাশা পূরণ করতে যখন হিমশিম খাচ্ছিল দলটি, তখন এই অবেলায় গানটি ছিল শিরোনামহীনের জন্য অক্সিজেনের মতো। ছয় বছর পর প্রকাশ পেল এ গানের সিকুয়েল এই অবেলায় ২।

শিরোনামহীনের ইউটিউব চ্যানেলে বাংলার পাশাপাশি এই অবেলায় প্রকাশ পেয়েছে ইংরেজি ভাষায়। এই ভার্সনের শিরোনাম দেওয়া হয়েছে ‘রিমেম্বার মি’। ইংরেজি ভার্সন নিয়ে শিরোনামহীনের দলনেতা জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, ‘এই অবেলায় গানটি বিদেশি ভাষার মানুষও পছন্দ করেছে। ইউটিউব চ্যানেলে অনেক মন্তব্য দেখেছি ইংরেজি, স্প্যানিশসহ বিভিন্ন ভাষায় লেখা, “আমি গানের ভাষা বুঝতে পারছি না। কিন্তু গানটির সুর খুব ভালো লাগছে।” তাই এই অবেলায় ২-এর ইংরেজি ভার্সন করা। আশা করছি, বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি ভার্সনটাও দেশ-বিদেশের শ্রোতাদের মন জয় করতে পারবে। সেটা হলে ভবিষ্যতে এ ধরনের উদ্যোগ আরও হতে পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হারমোনি অব ফ্রেন্ডশিপে সোনার বাংলা সার্কাস

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ান জনকূটনীতির ১০০তম বার্ষিকী এবং বাংলাদেশের বিজয় দিবস উদ্‌যাপন উপলক্ষে রাজধানীর রবীন্দ্রসরোবরে আয়োজন করা হয়েছে ‘হারমোনি অব ফ্রেন্ডশিপ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের। রাশিয়ান হাউস ঢাকা আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে থাকছে রাশিয়ার ঐতিহ্যবাহী লোকনৃত্য এবং বাংলাদেশের ব্যান্ড সোনার বাংলা সার্কাসের কনসার্ট।

সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে এই আয়োজন। শুরুতে থাকবে রাশিয়ার ঐতিহ্যবাহী লোকনৃত্য পরিবেশনা, যেখানে শিল্পীরা রাশিয়ান সংস্কৃতির সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্য তুলে ধরবেন। এরপর গান শোনাবে সোনার বাংলা সার্কাস। এ ছাড়া থাকবে আরও বেশ কিছু সাংস্কৃতিক আয়োজন।

এই বিশেষ আয়োজন উৎসর্গ করা হয়েছে রাশিয়ার জনকূটনৈতিক কর্মকাণ্ডের শতবর্ষ পূর্তি এবং বাংলাদেশের বিজয় দিবস—দুটি ঐতিহাসিক মাইলফলককে, যা বাংলাদেশ ও রাশিয়ার জনগণের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং সাংস্কৃতিক সম্প্রীতির প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

আয়োজকেরা বলছেন, এ অনুষ্ঠান শুধুই একটি কনসার্ট নয়, এটি সংস্কৃতি, বন্ধুত্ব ও একতার উৎসব, যা বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মানুষের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর করবে।

রাশিয়ান হাউস, ঢাকার সহযোগিতায় ওই অনুষ্ঠানটি আয়োজন করছে জাম্পস্টার্ট ইনক, যা দুই দেশের জনগণের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং বন্ধুত্ব দৃঢ় করার ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ। সবার জন্য উন্মুক্ত অনুষ্ঠানটি শুরু হবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘মিশন: ইম্পসিবল’সহ এসেছে যেসব সিনেমা-সিরিজ

বিনোদন ডেস্ক
‘মিশন: ইম্পসিবল—দ্য ফাইনাল রেকনিং’ সিনেমার দৃশ্য ছবি: সংগৃহীত
‘মিশন: ইম্পসিবল—দ্য ফাইনাল রেকনিং’ সিনেমার দৃশ্য ছবি: সংগৃহীত

অন্তরাত্মা (বাংলা সিনেমা)

  • অভিনয়: শাকিব খান, দর্শনা বণিক
  • মুক্তি: আইস্ক্রিন (৪ ডিসেম্বর)
  • গল্পসংক্ষেপ: ছোটবেলায় প্রথমের (শাকিব) মা-বাবা খুন হয় সন্ত্রাসীদের হাতে। বড় হয়ে প্রথম হয়ে ওঠে সন্ত্রাসীদের আতঙ্ক। কিছুরই অভাব নেই তার। তবে সে খুব একা। তার সঙ্গে দেখা হয় রূপকথার (দর্শনা)। তার প্রেমে পড়ে প্রথম। বিয়েও করে। তবু তার জীবনে স্থিরতা আসে না।

বিহান (রাজবংশী ভাষার সিনেমা)

  • অভিনয়: তুষার চৌধুরী, মিরান্দা দাস, সুধির রায়
  • মুক্তি: বঙ্গ (৪ ডিসেম্বর)
  • গল্পসংক্ষেপ: উত্তরবঙ্গের এক নিভৃত গ্রামে কানাই আর কোয়েলের নিষ্পাপ প্রেমের গল্প বিহান। ক্রাউড ফান্ডে সিনেমাটি বানিয়েছেন সৌরভ সাহা।

মিশন: ইম্পসিবল—দ্য ফাইনাল রেকনিং (ইংরেজি সিনেমা)

  • অভিনয়: টম ক্রুজ, হেইলি অ্যাটওয়েল, ভিং র‍্যামস
  • মুক্তি: প্রাইম ভিডিও (৪ ডিসেম্বর)
  • গল্পসংক্ষেপ: মিশন: ইম্পসিবল—দ্য ফাইনাল রেকনিং দিয়ে শেষ হলো ইথান হান্টের যাত্রা। এ পর্বের পর আর এই চরিত্রে দেখা যাবে না টম ক্রুজকে। ১৯৯৬ সালে মিশন ইম্পসিবলের সঙ্গে যে জার্নি শুরু হয়েছিল টমের, ২০২৫ সালে দ্য ফাইনাল রেকনিং দিয়ে শেষ হলো সেই সফর। এ সিনেমায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার হাত থেকে মানবজাতিকে রক্ষার জন্য লড়াই করে ইথান হান্ট ও তার টিম।

জে কেলি (ইংরেজি সিনেমা)

  • অভিনয়: জর্জ ক্লুনি, অ্যাডাম স্যান্ডলার
  • মুক্তি: নেটফ্লিক্স (৫ ডিসেম্বর)
  • গল্পসংক্ষেপ: এক জনপ্রিয় অভিনেতা (ক্লুনি) এবং তার ম্যানেজারের (স্যান্ডলার) মধ্যকার বন্ধুত্বের গল্প। কয়েক দশক ধরে ক্যারিয়ারকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার পর জীবন নিয়ে নতুন উপলব্ধি হয় অভিনেতার। মেয়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য ইউরোপের উদ্দেশে রওনা হয়। সঙ্গী হয় ম্যানেজার। এই যাত্রা অভিনেতাকে যেন নতুন জীবন দেয়।

দ্য বিলিভারস ২ (থাই সিরিজ)

  • অভিনয়: তিরাদন সুপাপুনপিনিও, পাচারা চিরাথিভাত, আচিয়ারা
  • মুক্তি: নেটফ্লিক্স (৪ ডিসেম্বর)
  • গল্পসংক্ষেপ: থাইল্যান্ডের এই ক্রাইম সিরিজের দ্বিতীয় পর্বেও তিন উদ্যোক্তার ব্যবসায়িক উদ্যোগের গল্প দেখা যাবে। একটি বৌদ্ধ মন্দির পুনর্নির্মাণের পরিকল্পনা করে তারা। দুর্নীতিগ্রস্ত স্থানীয় রাজনীতি তাদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তৈরি হয় দ্বন্দ্ব, বিশৃঙ্খলা।
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত