Ajker Patrika

ইউরোপের বাজারে রপ্তানি নির্বিঘ্ন রাখতে বাংলাদেশের প্রস্তুতি কোন পর্যায়ে

রেজাউর রহিম
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২১, ১৬: ৪৪
ইউরোপের বাজারে রপ্তানি নির্বিঘ্ন রাখতে বাংলাদেশের প্রস্তুতি কোন পর্যায়ে

বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে। অনেক দর-কষাকষির পর শুল্ক ও কোটামুক্ত বাণিজ্যসুবিধা (জিএসপি) ২০২৯ সাল পর্যন্ত বহাল রাখতে রাজি হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এরপর ইইউভুক্ত দেশগুলো ও যুক্তরাজ্যে পণ্য রপ্তানি নির্বিঘ্ন রাখতে তাদের ‘জিএসপি প্লাস’ নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে। কিন্তু এ নিয়ে বাংলাদেশের প্রস্তুতি এখনো দৃশ্যমান নয়। ব্যবসায়ী ও সরকারের মধ্যে সমন্বিত কোনো পরিকল্পনার কথাও জানা যাচ্ছে না।

স্বল্প ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য ২০১৫ সালে ‘স্পেশাল ইনসেনটিভ অ্যারেঞ্জমেন্ট ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য-সুবিধা চালু করে ইইউ। এটিই জিএসপি প্লাস হিসেবে পরিচিত। এটির আওতায় ইউরোপের বাজারে ট্যারিফ লাইনের ৬৬ শতাংশ শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়া যায়। বর্তমানে মাত্র আটটি দেশ এই সুবিধা পায়। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শুধু পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা এই সুবিধা পাচ্ছে। 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য ইইউ এবং যুক্তরাজ্য। এসব বাজারে জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে ২৭টি মানবাধিকার ও শ্রম অধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক নীতিমালা মানতে হবে। এসব নীতিমালার মধ্যে ১৫টি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) শ্রমমানের সঙ্গে সম্পর্কিত। এ ছাড়া শ্রম আইন ও মানবাধিকার, সুশাসনের মতো কিছু জটিল বিষয়ও এর সঙ্গে জড়িত। যার সঙ্গে আবার আছে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতাও। 

বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের প্রধান বাজার ইইউভুক্ত দেশ, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা। দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৪ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে। ইইউতে বাংলাদেশ ‘এভরিথিং বাট নট আর্মস’ (ইবিএ) স্কিমের আওতায় ২০২৯ সাল পর্যন্ত শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পাবে। কিন্তু ইইউ ২০২৩ সালের মধ্যে নতুন জিএসপি প্লাস নীতি প্রণয়নের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের জন্য ইবিএ সুবিধা অব্যাহত না থাকারও আশঙ্কা রয়েছে। 

জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে অনেকগুলো শর্ত পূরণ করতে হবে। এর মধ্যে একটি হলো অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক। অর্থাৎ দেশের শীর্ষ সাতটি পণ্যের মোট রপ্তানিমূল্য জিএসপির আওতায় রপ্তানিকৃত পণ্যের মোট মূল্যের ৭৫ শতাংশ হতে হবে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে জিএসপির আওতায় রপ্তানিকৃত পণ্যের মূল্য রপ্তানিকৃত পণ্যের মোট মূল্যের ৯৫ শতাংশ। জিএসপি প্লাস পাওয়ার ক্ষেত্রে এই একটি সূচকেই ইতিবাচক অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। 

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো, পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ সক্ষমতা বাড়াতে হবে। বিশেষ করে সুতা ও স্থানীয় উৎস থেকে প্রস্তুত বস্ত্র, বোতাম, জিপারের মতো এক্সেসরিজ এর সঙ্গে জড়িত। আমদানিকারক দেশের শর্ত অনুযায়ী, মোট পোশাক রপ্তানির ৮০ শতাংশ স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সুতা দিয়ে তৈরি হতে হবে। জিএসপি প্লাসের ক্ষেত্রে ‘রুলস অব অরিজিনের’ ডাবল ট্রান্সফরমেশন শর্ত এটি। নিটওয়্যারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অবশ্য এ শর্ত পূরণ করছে। তবে ওভেন পোশাকের ক্ষেত্রে এই হার এখনো ৫০ শতাংশ। 

অন্যান্য শর্তের মধ্যে অন্যতম, ইইউ থেকে এলডিসির যেসব দেশ জিএসপি সুবিধা পায়, তার মধ্যে ৭ দশমিক ৪ শতাংশের বেশি হিস্যা হলে ওই দেশ জিএসপি প্লাসের জন্য যোগ্য হবে না। বাংলাদেশের অন্যতম রপ্তানি বাজার ইউরোপ। ফলে সেখানে বাংলাদেশের হিস্যা বর্তমানে প্রায় ২৬ শতাংশ। তবে বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউয়ের রাষ্ট্রদূতেরা এ বিষয়ে বাংলাদেশকে ছাড় দিতে রাজি হয়েছেন। 

দেশের তৈরি পোশাকশিল্প মালিক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের মোট রপ্তানিকৃত পোশাকের প্রায় ৬২ শতাংশ ও মোট রপ্তানির প্রায় ৫৬ শতাংশের গন্তব্য ইইউভুক্ত দেশ ও যুক্তরাজ্য। ফলে ইউরোপের দেশগুলোতে চলমান শুল্ক ও কোটামুক্ত বাণিজ্যিক সুবিধা বন্ধ হলে তা দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের ওপর বড় ধরনের ধাক্কা হয়ে দেখা দিতে পারে। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে বাংলাদেশের উত্তরণ পরবর্তী সময়ে ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে পণ্য আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে ‘রুলস অব অরিজিন’-এর ডাবল ট্রান্সফরমেশনের মতো কঠিন শর্তের মুখোমুখি হতে হবে এবং তা মোকাবিলায় ইইউয়ের দেশগুলোর পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) এবং অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তির দিকেও যেতে হবে। 

এ বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ইউরোপের বাজারে জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে প্রস্তাবিত নতুন নীতিমালায় ‘ইমপোর্ট-শেয়ার ক্রাইটেরিয়া’ বাদ দেওয়া হয়েছে। যার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরাসরি উপকৃত হতে পারে। তিনি বলেন, জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে প্রয়োজনীয় কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে কাজ চলছে। রপ্তানি বাজার ধরে রাখার জন্য এবং জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের প্রস্তুতি ২০২৯ সালের মধ্যেই সম্পন্ন করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী মন্ত্রী। 

শর্ত অনুযায়ী ওভেন পোশাকে ফ্যাব্রিক, এক্সেসরিজ আমদানিতে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ কিংবা আরও বেশি ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজের সক্ষমতার বিষয়ে বিজিএমইএর সহসভাপতি মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ আজিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিটওয়্যারের ক্ষেত্রে আমরা প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। অন্য ক্ষেত্রে তুলা থেকে উৎপাদিত সুতার পরিবর্তে সিনথেটিক ব্যবহারের ওপর জোর দিতে হবে বলে মনে করেন তিনি। 

জিএসপি প্লাসের অন্যান্য শর্ত পূরণে উদ্যোগের বিষয়ে মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, বিজিএমইএর পক্ষ থেকে সম্প্রতি সংগঠনের ‘অ্যাপারেলস ডিপ্লোমেসির’ অংশ হিসেবে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের বৈঠক হয়েছে। তাঁরা এলডিসিভুক্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বর্তমানে জিএসপি সুবিধার ক্ষেত্রে ৭ দশমিক ৪ শতাংশের বেশি রপ্তানি হিস্যা হলে জিএসপি প্লাসের জন্য যোগ্য হবে না-এ শর্ত শিথিল করতে সম্মত হয়েছেন। শিগগির ইউরোপীয় পার্লামেন্টে এ সংক্রান্ত বিল পাস হবে বলে রাষ্ট্রদূতেরা জানিয়েছেন। 

সেই সঙ্গে শ্রম অধিকার এবং কারখানাগুলোর কর্ম পরিবেশ নিয়ে সরকার ও উদ্যোক্তাদের সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে উল্লেখ করে এ ব্যবসায়ী নেতা বলেন, মানবাধিকার ও সুশাসনের মতো বিষয়গুলো সম্পূর্ণরূপে সরকারের এখতিয়ারভুক্ত। এ বিষয়ে আমাদের করার কিছু নেই। 

চার দশকের পোশাক খাত কেন এখনো স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সুতা, কাপড় ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় এক্সেসরিজের ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারেনি? এ ক্ষেত্রে কেন বিদেশ নির্ভর, বিশেষ করে রপ্তানি বাজারে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের ওপর নির্ভরশীল-এ প্রশ্নের জবাবে বিজিএমইএ সহসভাপতি বলেন, অনেক সময় বিদেশি ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করতে এসব আমদানি করতে হয়। তবে এসব ক্ষেত্রে অন্য দেশের ওপর নির্ভরশীল থেকে এলডিসি দেশে উত্তরণ অর্থহীন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। 

জিএসপি প্লাসের শর্ত পূরণে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের ওপরেই জোর দিয়েছেন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ড. রুবানা হকও। 

‘জিএসপি প্লাস’-এর শর্তাবলি পূরণ করতে সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান (আমদানি)। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, এরই মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে ছয়টি পৃথক কমিটি গঠন করা হয়েছে। 

তবে বিষয়টিকে বেশ চ্যালেঞ্জিং বলেই মনে করছেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান। যেখানে দেশের প্রায় ৮৯ শতাংশ শ্রমিক অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন। তাঁদের অধিকার নিশ্চিত করতে এবং নিরাপত্তার জন্য শ্রম মন্ত্রণালয়কে বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে বলে মনে করেন তিনি। 

অবশ্য তৈরি পোশাক কারখানাসহ দেশের শিল্প কারখানায় শ্রম পরিবেশের উন্নতি ও শ্রম অধিকার নিশ্চিত করা শুধু আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের চাপে নয়, এটা নিজেদের দেশের মানুষের স্বার্থেই করা প্রয়োজন। আর এ জন্য সরকারের নীতিমালা গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। 

বিশ্লেষকেরা বলছেন, ঝুঁকি এড়াতে রপ্তানিপণ্যে বৈচিত্র্য আনাটা জরুরি। পোশাক শিল্পে নির্ভরশীলতা কমিয়ে পাট, চামড়া, মাছ এবং অপ্রচলিত পণ্য রপ্তানির দিকে নজর দিতে হবে। বাজার সম্প্রসারণ, বিশেষ করে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল, মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, চিলির পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের বাজারের দিকে মনোযোগ দেওয়ার সময় হয়েছে। ইউরোপের আরক বড় বাজার রাশিয়ার দিকেও নজর দিতে হবে। শ্রম পরিবেশ ও শ্রমিক অধিকার নিশ্চিতে ট্রেড ইউনিয়নগুলোকে সক্রিয় করাও প্রয়োজন বলে মনে করছেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

হাদিকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের পথে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সোনার দাম ভরিতে ১৪৭০ টাকা বাড়ল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা হয়েছে।

স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠক করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে ১৪ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ৩ হাজার ৪৪২ টাকা এবং ১২ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ১ হাজার ৫০ টাকা। এই দাম বাড়ানোর ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে এখন আবার দাম বাড়ানো হলো।

এখন সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৪৭০ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ৪১১ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ৭ হাজার ২১১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ২৪৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৭৭ হাজার ৬৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৬৩ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯০০ টাকা।

বিষয়:

দামসোনা
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

হাদিকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের পথে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শেভরনের সহায়তায় সিলেটে ৬০ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির স্বাভাবিক জীবনে ফেরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
শেভরন-এসএমআইএল প্রকল্পে ৬০ প্রতিবন্ধীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
শেভরন-এসএমআইএল প্রকল্পে ৬০ প্রতিবন্ধীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

শেভরন বাংলাদেশের সহায়তায় বাস্তবায়িত এসএমআইএল (SMILE) প্রকল্পের আওতায় ‘রিস্টোরিং মোবিলিটি: আর্টিফিশিয়াল লিম্ব সাপোর্ট’ উদ্যোগের সমাপনী অনুষ্ঠান সম্প্রতি গ্র্যান্ড সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সিলেট ও নবীগঞ্জ উপজেলার ৬০ শারীরিক প্রতিবন্ধী উপকারভোগীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ (প্রোস্থেটিক) ও অর্থোটিক ডিভাইস বিতরণ করা হয়।

দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে পুনর্বাসন ও চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত থাকা এই উপকারভোগীরা কৃত্রিম অঙ্গ পেয়ে নতুন জীবন ফিরে পেলেন। জালালাবাদ ডিজেবল্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালের (জেডিআরসিএইচ) সহযোগিতায় এই উদ্যোগ পরিচালিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সমন্বয় ও মনিটরিং উইংয়ের সচিব মো. আবদুল মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন শেভরন বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও প্রেসিডেন্ট এরিক এম ওয়াকার, করপোরেট অ্যাফেয়ার্স পরিচালক মুহাম্মদ ইমরুল কবির, সোশ্যাল ইনভেস্টমেন্ট প্রধান এ কে এম আরিফ আক্তার, সুইসকন্টাক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর হেলাল হোসেন এবং জেডিআরসিএইচ বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান রোটারিয়ান পিপি ইঞ্জিনিয়ার শোয়াইব আহমেদ মতিন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘কৃত্রিম অঙ্গ সহায়তা শুধু চিকিৎসা নয়, এটি প্রতিবন্ধী মানুষের জীবনযাত্রায় মৌলিক পরিবর্তন আনে। শেভরন বাংলাদেশ, সুইসকন্টাক্ট ও জেডিআরসিএইচের যৌথ উদ্যোগ চলাচল সক্ষমতা ফিরিয়ে এনে উপকারভোগীদের জীবনে নতুন আশার দ্বার খুলে দিয়েছে।’

শেভরন বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও প্রেসিডেন্ট এরিক এম ওয়াকার বলেন, ‘বিশ্বের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ এ ধরনের বিশেষায়িত পুনর্বাসন সেবার পর্যাপ্ত সুযোগ পায় না। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ব্যক্তিকেন্দ্রিক সেবা পৌঁছে দিতে পারা আমাদের জন্য গর্বের। উপকারভোগীদের প্রতিটি অগ্রযাত্রাই একটি সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের দিকে দৃঢ় পদক্ষেপ।’

সুইসকন্টাক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর হেলাল হোসেন বলেন, ‘এই প্রকল্প কেবল চলাচল সক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়নি; এটি উপকারভোগীদের কর্মজীবনে ফেরা, শিক্ষা চালিয়ে যাওয়া এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করেছে—যা সমাজে অন্তর্ভুক্তি আরও সুদৃঢ় করেছে।’

করপোরেট অ্যাফেয়ার্স পরিচালক মুহাম্মদ ইমরুল কবির বলেন, ‘শেভরন তিন দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের বিশ্বস্ত জ্বালানি অংশীদার। আমাদের অঙ্গীকার কেবল জ্বালানি সরবরাহেই সীমাবদ্ধ নয়। এসএমআইএল প্রকল্পের মতো উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা চলাচল সক্ষমতা ও মানবিক মর্যাদা পুনরুদ্ধারে কাজ করছি। বাংলাদেশে আমাদের সামাজিক বিনিয়োগ কার্যক্রম জাতিসংঘ ঘোষিত ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের মধ্যে ৯টির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’

অনুষ্ঠানে উপকারভোগীরা তাঁদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, কৃত্রিম অঙ্গ পাওয়ার ফলে তাঁরা আবার স্বাভাবিক চলাচল, আত্মনির্ভরতা ও আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছেন। এই ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রভাব পরিবার ও সমাজেও ছড়িয়ে পড়ছে।

গৃহস্থালি আয় স্থিতিশীল হওয়া ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির ফলে এর ইতিবাচক প্রভাব পরিবার ও সমাজে ছড়িয়ে পড়ছে—যা কমিউনিটির স্থিতিশীলতা ও সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছে। এ সাফল্যের ধারাবাহিকতায় শেভরন বাংলাদেশ ও সুইসকন্টাক্ট এসএমআইএল প্রকল্পের মাধ্যমে টেকসই ও প্রভাবশালী উন্নয়ন উদ্যোগ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে তারা অর্থোটিক ও প্রোস্থেটিক সহায়তা প্রয়োজন, এমন মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বাস্তব ও পরিমাপযোগ্য পরিবর্তন নিশ্চিত করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

হাদিকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের পথে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আরও ১৪ কোটি ১৫ লাখ ডলার কিনল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলো থেকে অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করেছে। আজ সোমবার ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার (১৪১.৫ মিলিয়ন) কেনা হয়েছে। ডলারের বিনিময়হার ছিল ১২২ দশমিক ২৯ থেকে ১২২ দশমিক ৩০ টাকা আর কাট-অফ রেট ছিল ১২২ দশমিক ৩০ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে, ১১ ডিসেম্বর ১৬টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৫ কোটি ডলার (১৪৯ মিলিয়ন) কেনা হয়েছিল। এ সময় প্রতি ডলারের বিনিময়হার ছিল ১২২ টাকা ২৫ পয়সা থেকে ১২২ টাকা ২৯ পয়সা। আর কাট-অফ রেট ছিল ১২২ টাকা ৯ পয়সা। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত নিলামপদ্ধতিতে মোট ২৮০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার (২.৮০ বিলিয়ন) সংগ্রহ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র জানান, আজ ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার কেনা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

হাদিকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের পথে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দিনে ১৭২৫০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিল সরকার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বাজার সহনীয় করতে পেঁয়াজের আমদানি আরও বাড়িয়েছে সরকার। আজ সোমবার থেকে দৈনিক ১৭ হাজার ২৫০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে; যা আগে ছিল ৬ হাজার টন করে।

আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে কৃষি মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

জানা যায়, চলতি মাসের শুরু থেকে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে। তিন দিনের ব্যবধানে ১২০ টাকার পেঁয়াজের দাম বেড়ে ১৫০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৭ ডিসেম্বর থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া শুরু করে কৃষি মন্ত্রণালয়। শুরুতে প্রতিদিন ৫০ জন আমদানিকারককে ৩০ টন করে মোট ১ হাজার ৫০০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। দীর্ঘ তিন মাস পর এই অনুমোদন দেওয়া হয়।

তবে এরপরও বাজারে দাম না কমলে আমদানির অনুমতির পরিমাণ বাড়ানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমদানি আরও বাড়ানো হয়। ১৩ ডিসেম্বর থেকে প্রতিদিন ২০০ জনকে ৩০ টন করে ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়, যা আজ থেকে আরও বাড়িয়ে ১৭ হাজার ২৫০ টন করা হয়।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আজ বলা হয়, পেঁয়াজের বাজার সহনীয় রাখতে ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর দুই দিনের জন্য প্রতিদিন ৫৭৫টি করে আইপি (আমদানি অনুমতি) ইস্যু করা হবে। প্রতিটি আইপিতে আগের ন্যায় সর্বোচ্চ ৩০ টন পেঁয়াজের অনুমোদন দেওয়া হবে। আবেদনের বিষয় আগের ন্যায় বলবৎ থাকবে। অর্থাৎ গত ১ আগস্ট থেকে যেসব আমদানিকারক আমদানি অনুমতির জন্য আবেদন করেছেন, তাঁরাই কেবল এই দুই দিন আবেদন পুনরায় দাখিল করতে পারবেন। একজন আমদানিকারক একবারের জন্য আবেদনের সুযোগ পাবেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ উইংয়ের অতিরিক্ত উপপরিচালক (আমদানি) বনি আমিন খান বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের পর আজ আমরা ৫৭৫ জনকে আমদানির অনুমোদন দিয়েছি। অনুমোদন নিয়ে এ দিন আমদানিকারকেরা ঋণপত্র খুলতে পেরেছেন। যদিও দুই দিনের কথা বলা হয়েছে, তবে সরকার প্রয়োজন মনে করলে সময় আরও বাড়বে। এর আগে গত শনিবার থেকে প্রতিদিন ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দিয়ে আসছিলাম আমরা।’

দেশে সাধারণত প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেন ব্যবসায়ীরা। সে হিসাবে যেদিন ঋণপত্র খোলেন, সেদিনই আমদানি করতে পারেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

হাদিকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের পথে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত