
লোনলি প্ল্যানেট নামটির সঙ্গে অন্তত ভ্রমণপ্রিয় পাঠকেরা বেশ পরিচিত। ভ্রমণগাইড প্রকাশের পাশাপাশি পর্যটকদের ঘুরে বেড়াবার নানা তথ্য দিয়ে পর্যটকদের সাহায্য করে তারা। আর এ বিষয়ের লোনলি প্ল্যানেটের অভিজ্ঞতাই বলে দিচ্ছে অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন জায়গা, শহর বা দেশের যে তালিকা তারা করবে সেটি মোটেই হেলাফেলা করার মতো কিছু হবে না। আজ আমরা পরিচিত হবে লোনলি প্ল্যানেটের বিবেচনায় অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন ১০টি শহরের সঙ্গে।
তুলুজ, ফ্রান্স
লোনলি প্ল্যানেটের অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন শহরের তালিকায় সবার ওপরে আছে ফ্রান্সের তুলুজ। গেহনে নদীর তীরে গড়ে ওঠা পুরোনো এই শহরটি প্রচুর সংখ্যায় জাদুঘর এবং ঐতিহাসিক সব দালান-কোঠার জন্য বিখ্যাত। এখনকার খাবারেরও আলাদা নাম আছে।
লোনলি প্ল্যানেটের কনটেন্ট ও নির্বাহী সম্পাদক নিতিয়া চেম্বারস সিএনএনকে বলেন, ‘ছুটি কাটানোর জন্য এটি দারুণ একটি জায়গা। শিল্পসামগ্রীর গ্যালারি, পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা, রেস্তোরাঁ মিলিয়ে দারুণ ও বৈচিত্র্যময় এক শহর এটি।’
জনসংখ্যার দিক থেকে প্যারিস, মার্সেই এবং লিওর পরে ফ্রান্সের চতুর্থ বৃহত্তম শহর এটি। এর বিভিন্ন দালানকোঠায় গোলাপি রংয়ের ছটার কারণে কেউ কেউ একে পিংক সিটি নামেও ডাকে। ১২২৯ সালে প্রতিষ্ঠিত দ্য ইউনিভার্সিটি অব তুলুজ ইউরোপের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়গুলির একটি। এখানকার সেতুগুলো মুগ্ধ করবে আপনাকে। আর বার, ক্লাব ও লাইভ মিউজিক মিলিয়ে রাতে জীবন্ত এক শহর তুলুজ।
পদুচেরি, ভারত
অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন শহরের তালিকায় দুইয়ে থাকা শহরটি আপনাকে চমকে দিতে পারে। এটি ভারতের পদুচেরি, যেটি একটা সময় পরিচিত ছিল পন্ডিচেরি নামে।
নিতিয়া চেম্বার বলেন, ‘পদুচেরি তালিকায় দুইয়ে থাকার কারণ এখানকার সৈকত এবং তীরে আছড়ে পড়া একের পর এক ঢেউ। এদিকে সাগরের ঢেউয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সৈকতগুলোকেও পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে এখানে।’ চেন্নাই থেকে সহজেই ট্রেনে চেপে পৌঁছে যেতে পারবেন জায়গাটিকে।
১৯৫৪ সাল পর্যন্ত ফরাসি কলোনিয়াল শাসন চলে জায়গাটিতে। এখানকার পথ-ঘাট, স্থাপত্য, খাবার-দাবার সবকিছুতে এখনো ফরাসিদের প্রভাব চোখে পড়ে। এখানকার কিছু মানুষ এখনো ফরাসি ভাষায় কথা বলেন। অনেকেই জায়গাটিতে ভারতের ‘লিটল ফ্রান্স’ নামে ডাকেন আদর করে। আন্তর্জাতিকভাবে প্রসিদ্ধ শ্রী অরবিন্দ আশ্রম শহরের উত্তরে অবস্থিত।
বাঁচকো, বুলগেরিয়া
বুলগেরিয়ার ছোট্ট এই পার্বত্য শহরটি বছরজুড়েই টানে পর্যটকদের। লোনলি প্ল্যানেটের তালিকায় তিনে থাকা শহরটি সবচেয়ে বেশি নাম কাটিয়েছেন বরফে ঢাকা পর্বতে স্কিইংয়ের জন্য।
রোমাঞ্চপ্রিয় কিংবা প্রকৃতির কোলে শান্ত একটি শহরের প্রত্যাশা করা পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্য এটি। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে এটি ডিজিটাল নোমাডদের পছন্দের জায়গায় পরিণত হয়েছে। অর্থাৎ সুন্দর এ শহরটিতে থেকে অনলাইনে চাকরি করেন কোনো ব্যস্ত শহরের প্রতিষ্ঠানে।
পুরোনো জাদুঘর, গির্জাসহ নানা স্থাপনাও আকৃষ্ট করবে। এখানকার মুখোরোচক খাওয়া-দাওয়াও আকৃষ্ট করবে আপনাকে। গন্ডোলা বা ক্যাবল কারে চলা, মাউন্টেন বাইকিং, পাহাড়ে ট্র্যাকিং এমন রোমাঞ্চকর আরও নানা কিছু করার সুযোগ মেলে এখানে স্কিইংয়ের পাশাপাশি।
চিয়াং মাই
থাইল্যান্ডের শীতল শহরগুলির একটি চিয়াং মাই। লোনলি প্ল্যানেটের তালিকায় এর অবস্থান চার। ‘আপনি যদি একজন ভোজনবিলাসী ভ্রমণপ্রেমী হন কিংবা নতুন স্বাদ নিতে আগ্রহী থাকেন তবে এটি আপনার পছন্দের তালিকায় ওপরের দিকে থাকবে। এখানকার প্রকৃতি, পরিবেশ খাবার-দাবারের সঙ্গে দারুণ মানানসই।’ বলেন চেম্বারস।
ব্যস্ত শহর এবং জমকালো সমুদ্র সৈকতগুলি এমনিতে থাইল্যান্ডকে পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্যে পরিণত করেছে। তবে চিয়াং মাইয়ের শান্ত পাহাড়ি প্রকৃতি সম্পূর্ণ বিপরীত একটি পরিস্থিতি নিয়ে হাজির হয় পর্যটকদের সামনে। শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্য, ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প এবং পাকা সব রাঁধুনির জন্য আলাদা নাম আছে শহরটির। বুঝতেই পারছেন এখানে দেখার এবং করার মতো অনেক কিছু রয়েছে।
প্রাচীর ঘেরা পুরোনো শহর ছাড়িয়ে, রোমাঞ্চপ্রেমীরা পছন্দ অনুযায়ী জায়গা বেছে নেওয়াতেও বাধা নেই। জঙ্গল, নদী, গুহা, পাহাড় এবং জলপ্রপাত সবই পাবেন আশপাশে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে খাবার এবং অরণ্য চিয়াং মাই-এর বড় আকর্ষণ। আপনি যতবারই যান না কেন সেখানে সব সময় নতুন কিছু আবিষ্কার করা যায়।
জেনোয়া, ইতালি
অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন শহরের তালিকায় পাঁচে জেনোয়া। ইতালির বৃহত্তম সমুদ্র বন্দরটিতে পরস্পরবিরোধী কিছু বিষয় চোখে পড়বে। কোথাও জমকালো, ঝলমলে আলো এবং কোথাও গভীর ছায়ায় পূর্ণ। এটি অনেক ভ্রমণকারীর জন্য নৌভ্রমণে বেরিয়ে পড়ার একটি প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ সকরে। তবে এর স্থাপত্য ঐতিহ্য তার পুরোনো গৌরবের কথা মনে করিয়ে দেয়। রিপাবলিক অব জেনোয়া বারো এবং তেরো শতকে ভূমধ্যসাগর শাসন করে। জেনোয়াতে এলে পুরোনো সেই ইতিহাস জীবন্ত হয়ে যেন আপনার সামনে ধরা দেবে। পুরোনো সেই শহরের অনেক কিছুই এখনো অক্ষত এখানে।
এখনকার স্থানীয় নানা খাবার মুগ্ধ করবে আপনাকে। শহরের বাসিন্দারাও খুব বন্ধুভাবাপন্ন। তেমনি সমুদ্রবিষয়ক জাদুঘর, থিয়েটার ও সংগীত পরিবেশনার নানা জায়গা মুগ্ধ করে পর্যটকদের।
পিটার্সবার্গ, যুক্তরাষ্ট্র
অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন শহরের তালিকায় পিটসবার্গের অবস্থান ছয়ে। ফিলাডেলফিয়ার পর পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের দ্বিতীয় জনবহুল শহর এটি। অ্যালিঘেনি এবং মনোনগাহেলা নদীর সংযোগস্থলে অবস্থান শহরটির। এ দুটি নদী মিলে জন্ম দিয়েছে ওহাইও নদীর।
যুক্তরাষ্ট্রের ইস্পাত শিল্পে বড় অবদানের জন্য একসময় স্টিল সিটি নামেই বেশি পরিচিত ছিল। তবে এখনকার নতুন কিছু পরিচয় যোগ হয়েছে শহরটির। বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে।
শহর জুড়ে গড়ে উঠেছে মুখরোচক খাবারের সব রেস্তোরাঁ, জাদুঘরগুলো বিশ্বমানের শিল্প ও আঞ্চলিক ইতিহাসে ভরপুর; শহরের তিনটি নদী বরাবর সারা বছর প্রচুর কার্যকলাপের সুযোগ আছে।
ওসাকা, জাপান
বিশ্বে জনবহুল শহরের তালিকায় সেরা দশে থাকা জাপানের এ শহরটিতে এক কোটি ৮৯ লাখ ৬৭ হাজারের বেশি মানুষের বাস। আর লোনলি প্ল্যানেটের বিবেচনায় অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন সপ্তম শহর এটি।
বাণিজ্য ও শিল্পের কেন্দ্র হিসাবে ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহরটিতে এখনো অনেক বড় জাপানি কোম্পানির সদর দপ্তর অবস্থিত।
ওসাকা তার নানা পদের খাবার এবং আধুনিক স্থাপত্যের জন্য পর্যটকদের কাছে প্রিয় গন্তব্য। শহরের মেট্রো বছরে ৯০ কোটির বেশি যাত্রী পরিবহন করে। এখানকার অন্যতম দ্রষ্টব্য স্থান ওসাকা ক্যাসল। চৌদ্দ শ বছর আগে স্থাপিত বৌদ্ধ মন্দির শিতেনো-জি ছাড়াও বিখ্যাত ওসাকা অ্যাকোরিয়াম কাইয়ুকান এবং তেমপোজান নাগরদোলা এখানকার অন্যতম দ্রষ্টব্য জায়গা।
কুরিতিবা, ব্রাজিল
ব্রাজিলের পারানা রাজ্যের রাজধানী শহর কুরিতিবা তার উদ্ভাবনী নগর-পরিকল্পনা এবং টেকসই উন্নয়ন উদ্যোগের জন্য বিখ্যাত। কীভাবে একটি শহর সফলভাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং পরিবেশ সংরক্ষণে ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে তার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।
সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য, বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির জন্য পরিচিত শহরটি। এখানকার উদ্ভিদ উদ্যানটি একটি জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। শহরটিতে অসংখ্য আর্ট গ্যালারি, থিয়েটার রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী ব্রাজিলিয়ান খাবার থেকে শুরু করে নানা দেশের বিভিন্ন পদের খাবারের জন্য আলাদা নাম আছে। কুরিতিবায় ৩০টির বেশি পার্ক এবং সবুজ আচ্ছাদনযুক্ত জায়গা রয়েছে।
পালমা দে মালোরকা, স্পেন
মালোরকা দ্বীপের রাজধানীটি একই নামের একটি উপসাগরের তীরে অবস্থিত। এখানকার চমৎকার জলবায়ু পর্যটকদের ভারি পছন্দ। বার্ষিক গড় তাপমাত্রা আঠারো ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। চমৎকার সব সৈকত এবং ঐতিহ্যবাহী ইমারতে ভরপুর পুরোনো শহর পালমা দে মালোরকাকে পর্যটকদের কাছে এক আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত করেছে।
এখানে বেড়াতে আসা মানুষদের দ্য ক্যাথেড্রাল, দা আলদমাদাইনা প্যালেস, প্লাজা মেয়র স্কয়ারের জন্য হাতে আলাদা করে কিছুটা সময় রাখতে হয়। পাইনের জঙ্গল এবং পাম গাছের সারি শহরের বড় বৈশিষ্ট্য।
দ্বীপের উপকূল বরাবর সৈকত এবং পাহাড়ের দেখা মেলে। ভেতরের দিকে গ্রাম এবং এক হাজার ৫০০ মিটার পর্যন্ত উচ্চতার পর্বতশ্রেণী রয়েছে।
এডমন্টন, কানাডা
কানাডার আলবার্টা শহরের রাজধানী এডমন্টন। ঝাঁ চকচকে আকাশচুম্বী ভবন, বিভিন্ন বিনোদনের সুবিধা এবং নানা ধরনের উৎসব মিলিয়ে আলবার্টার মতো শহর পাবেন কমই । ব্যাপক বিনিয়োগের মাধ্যমে কানাডার পঞ্চম বৃহত্তম শহরটি গত এক দশকে পরিবর্তিত হয়েছে।
নর্থ সাসকাচোয়ান নদীর তীরের এর অবস্থান। বছরে ২২০০ ঘণ্টার বেশি উজ্জ্বল সূর্যালোক পায় শহরটি। গ্রীষ্মে ১৭ ঘণ্টা পর্যন্ত সূর্যালোক পায় এটি। শীতে নিয়মিতই দেখা মেলে নর্দান লাইটের। বছরজুড়ে অন্তত ৩০টি ফেস্টিভ্যাল বা উৎসব হয় এখানে। শহরের কেন্দ্র থেকে কেবল এক ঘণ্টায় গাড়িতে পৌঁছে যেতে পারবেন বিখ্যাত এল্ক আইল্যান্ড ন্যাশনাল পার্কে।
সূত্র: লোনলি প্ল্যানেট, সিএনএন, ফ্যাক্টস ডট নেট, ওয়ার্ল্ড সিটি ট্রেইল ডট কম
আরও পড়ুন:

লোনলি প্ল্যানেট নামটির সঙ্গে অন্তত ভ্রমণপ্রিয় পাঠকেরা বেশ পরিচিত। ভ্রমণগাইড প্রকাশের পাশাপাশি পর্যটকদের ঘুরে বেড়াবার নানা তথ্য দিয়ে পর্যটকদের সাহায্য করে তারা। আর এ বিষয়ের লোনলি প্ল্যানেটের অভিজ্ঞতাই বলে দিচ্ছে অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন জায়গা, শহর বা দেশের যে তালিকা তারা করবে সেটি মোটেই হেলাফেলা করার মতো কিছু হবে না। আজ আমরা পরিচিত হবে লোনলি প্ল্যানেটের বিবেচনায় অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন ১০টি শহরের সঙ্গে।
তুলুজ, ফ্রান্স
লোনলি প্ল্যানেটের অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন শহরের তালিকায় সবার ওপরে আছে ফ্রান্সের তুলুজ। গেহনে নদীর তীরে গড়ে ওঠা পুরোনো এই শহরটি প্রচুর সংখ্যায় জাদুঘর এবং ঐতিহাসিক সব দালান-কোঠার জন্য বিখ্যাত। এখনকার খাবারেরও আলাদা নাম আছে।
লোনলি প্ল্যানেটের কনটেন্ট ও নির্বাহী সম্পাদক নিতিয়া চেম্বারস সিএনএনকে বলেন, ‘ছুটি কাটানোর জন্য এটি দারুণ একটি জায়গা। শিল্পসামগ্রীর গ্যালারি, পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা, রেস্তোরাঁ মিলিয়ে দারুণ ও বৈচিত্র্যময় এক শহর এটি।’
জনসংখ্যার দিক থেকে প্যারিস, মার্সেই এবং লিওর পরে ফ্রান্সের চতুর্থ বৃহত্তম শহর এটি। এর বিভিন্ন দালানকোঠায় গোলাপি রংয়ের ছটার কারণে কেউ কেউ একে পিংক সিটি নামেও ডাকে। ১২২৯ সালে প্রতিষ্ঠিত দ্য ইউনিভার্সিটি অব তুলুজ ইউরোপের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়গুলির একটি। এখানকার সেতুগুলো মুগ্ধ করবে আপনাকে। আর বার, ক্লাব ও লাইভ মিউজিক মিলিয়ে রাতে জীবন্ত এক শহর তুলুজ।
পদুচেরি, ভারত
অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন শহরের তালিকায় দুইয়ে থাকা শহরটি আপনাকে চমকে দিতে পারে। এটি ভারতের পদুচেরি, যেটি একটা সময় পরিচিত ছিল পন্ডিচেরি নামে।
নিতিয়া চেম্বার বলেন, ‘পদুচেরি তালিকায় দুইয়ে থাকার কারণ এখানকার সৈকত এবং তীরে আছড়ে পড়া একের পর এক ঢেউ। এদিকে সাগরের ঢেউয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সৈকতগুলোকেও পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে এখানে।’ চেন্নাই থেকে সহজেই ট্রেনে চেপে পৌঁছে যেতে পারবেন জায়গাটিকে।
১৯৫৪ সাল পর্যন্ত ফরাসি কলোনিয়াল শাসন চলে জায়গাটিতে। এখানকার পথ-ঘাট, স্থাপত্য, খাবার-দাবার সবকিছুতে এখনো ফরাসিদের প্রভাব চোখে পড়ে। এখানকার কিছু মানুষ এখনো ফরাসি ভাষায় কথা বলেন। অনেকেই জায়গাটিতে ভারতের ‘লিটল ফ্রান্স’ নামে ডাকেন আদর করে। আন্তর্জাতিকভাবে প্রসিদ্ধ শ্রী অরবিন্দ আশ্রম শহরের উত্তরে অবস্থিত।
বাঁচকো, বুলগেরিয়া
বুলগেরিয়ার ছোট্ট এই পার্বত্য শহরটি বছরজুড়েই টানে পর্যটকদের। লোনলি প্ল্যানেটের তালিকায় তিনে থাকা শহরটি সবচেয়ে বেশি নাম কাটিয়েছেন বরফে ঢাকা পর্বতে স্কিইংয়ের জন্য।
রোমাঞ্চপ্রিয় কিংবা প্রকৃতির কোলে শান্ত একটি শহরের প্রত্যাশা করা পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্য এটি। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে এটি ডিজিটাল নোমাডদের পছন্দের জায়গায় পরিণত হয়েছে। অর্থাৎ সুন্দর এ শহরটিতে থেকে অনলাইনে চাকরি করেন কোনো ব্যস্ত শহরের প্রতিষ্ঠানে।
পুরোনো জাদুঘর, গির্জাসহ নানা স্থাপনাও আকৃষ্ট করবে। এখানকার মুখোরোচক খাওয়া-দাওয়াও আকৃষ্ট করবে আপনাকে। গন্ডোলা বা ক্যাবল কারে চলা, মাউন্টেন বাইকিং, পাহাড়ে ট্র্যাকিং এমন রোমাঞ্চকর আরও নানা কিছু করার সুযোগ মেলে এখানে স্কিইংয়ের পাশাপাশি।
চিয়াং মাই
থাইল্যান্ডের শীতল শহরগুলির একটি চিয়াং মাই। লোনলি প্ল্যানেটের তালিকায় এর অবস্থান চার। ‘আপনি যদি একজন ভোজনবিলাসী ভ্রমণপ্রেমী হন কিংবা নতুন স্বাদ নিতে আগ্রহী থাকেন তবে এটি আপনার পছন্দের তালিকায় ওপরের দিকে থাকবে। এখানকার প্রকৃতি, পরিবেশ খাবার-দাবারের সঙ্গে দারুণ মানানসই।’ বলেন চেম্বারস।
ব্যস্ত শহর এবং জমকালো সমুদ্র সৈকতগুলি এমনিতে থাইল্যান্ডকে পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্যে পরিণত করেছে। তবে চিয়াং মাইয়ের শান্ত পাহাড়ি প্রকৃতি সম্পূর্ণ বিপরীত একটি পরিস্থিতি নিয়ে হাজির হয় পর্যটকদের সামনে। শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্য, ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প এবং পাকা সব রাঁধুনির জন্য আলাদা নাম আছে শহরটির। বুঝতেই পারছেন এখানে দেখার এবং করার মতো অনেক কিছু রয়েছে।
প্রাচীর ঘেরা পুরোনো শহর ছাড়িয়ে, রোমাঞ্চপ্রেমীরা পছন্দ অনুযায়ী জায়গা বেছে নেওয়াতেও বাধা নেই। জঙ্গল, নদী, গুহা, পাহাড় এবং জলপ্রপাত সবই পাবেন আশপাশে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে খাবার এবং অরণ্য চিয়াং মাই-এর বড় আকর্ষণ। আপনি যতবারই যান না কেন সেখানে সব সময় নতুন কিছু আবিষ্কার করা যায়।
জেনোয়া, ইতালি
অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন শহরের তালিকায় পাঁচে জেনোয়া। ইতালির বৃহত্তম সমুদ্র বন্দরটিতে পরস্পরবিরোধী কিছু বিষয় চোখে পড়বে। কোথাও জমকালো, ঝলমলে আলো এবং কোথাও গভীর ছায়ায় পূর্ণ। এটি অনেক ভ্রমণকারীর জন্য নৌভ্রমণে বেরিয়ে পড়ার একটি প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ সকরে। তবে এর স্থাপত্য ঐতিহ্য তার পুরোনো গৌরবের কথা মনে করিয়ে দেয়। রিপাবলিক অব জেনোয়া বারো এবং তেরো শতকে ভূমধ্যসাগর শাসন করে। জেনোয়াতে এলে পুরোনো সেই ইতিহাস জীবন্ত হয়ে যেন আপনার সামনে ধরা দেবে। পুরোনো সেই শহরের অনেক কিছুই এখনো অক্ষত এখানে।
এখনকার স্থানীয় নানা খাবার মুগ্ধ করবে আপনাকে। শহরের বাসিন্দারাও খুব বন্ধুভাবাপন্ন। তেমনি সমুদ্রবিষয়ক জাদুঘর, থিয়েটার ও সংগীত পরিবেশনার নানা জায়গা মুগ্ধ করে পর্যটকদের।
পিটার্সবার্গ, যুক্তরাষ্ট্র
অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন শহরের তালিকায় পিটসবার্গের অবস্থান ছয়ে। ফিলাডেলফিয়ার পর পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের দ্বিতীয় জনবহুল শহর এটি। অ্যালিঘেনি এবং মনোনগাহেলা নদীর সংযোগস্থলে অবস্থান শহরটির। এ দুটি নদী মিলে জন্ম দিয়েছে ওহাইও নদীর।
যুক্তরাষ্ট্রের ইস্পাত শিল্পে বড় অবদানের জন্য একসময় স্টিল সিটি নামেই বেশি পরিচিত ছিল। তবে এখনকার নতুন কিছু পরিচয় যোগ হয়েছে শহরটির। বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে।
শহর জুড়ে গড়ে উঠেছে মুখরোচক খাবারের সব রেস্তোরাঁ, জাদুঘরগুলো বিশ্বমানের শিল্প ও আঞ্চলিক ইতিহাসে ভরপুর; শহরের তিনটি নদী বরাবর সারা বছর প্রচুর কার্যকলাপের সুযোগ আছে।
ওসাকা, জাপান
বিশ্বে জনবহুল শহরের তালিকায় সেরা দশে থাকা জাপানের এ শহরটিতে এক কোটি ৮৯ লাখ ৬৭ হাজারের বেশি মানুষের বাস। আর লোনলি প্ল্যানেটের বিবেচনায় অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন সপ্তম শহর এটি।
বাণিজ্য ও শিল্পের কেন্দ্র হিসাবে ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহরটিতে এখনো অনেক বড় জাপানি কোম্পানির সদর দপ্তর অবস্থিত।
ওসাকা তার নানা পদের খাবার এবং আধুনিক স্থাপত্যের জন্য পর্যটকদের কাছে প্রিয় গন্তব্য। শহরের মেট্রো বছরে ৯০ কোটির বেশি যাত্রী পরিবহন করে। এখানকার অন্যতম দ্রষ্টব্য স্থান ওসাকা ক্যাসল। চৌদ্দ শ বছর আগে স্থাপিত বৌদ্ধ মন্দির শিতেনো-জি ছাড়াও বিখ্যাত ওসাকা অ্যাকোরিয়াম কাইয়ুকান এবং তেমপোজান নাগরদোলা এখানকার অন্যতম দ্রষ্টব্য জায়গা।
কুরিতিবা, ব্রাজিল
ব্রাজিলের পারানা রাজ্যের রাজধানী শহর কুরিতিবা তার উদ্ভাবনী নগর-পরিকল্পনা এবং টেকসই উন্নয়ন উদ্যোগের জন্য বিখ্যাত। কীভাবে একটি শহর সফলভাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং পরিবেশ সংরক্ষণে ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে তার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।
সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য, বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির জন্য পরিচিত শহরটি। এখানকার উদ্ভিদ উদ্যানটি একটি জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। শহরটিতে অসংখ্য আর্ট গ্যালারি, থিয়েটার রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী ব্রাজিলিয়ান খাবার থেকে শুরু করে নানা দেশের বিভিন্ন পদের খাবারের জন্য আলাদা নাম আছে। কুরিতিবায় ৩০টির বেশি পার্ক এবং সবুজ আচ্ছাদনযুক্ত জায়গা রয়েছে।
পালমা দে মালোরকা, স্পেন
মালোরকা দ্বীপের রাজধানীটি একই নামের একটি উপসাগরের তীরে অবস্থিত। এখানকার চমৎকার জলবায়ু পর্যটকদের ভারি পছন্দ। বার্ষিক গড় তাপমাত্রা আঠারো ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। চমৎকার সব সৈকত এবং ঐতিহ্যবাহী ইমারতে ভরপুর পুরোনো শহর পালমা দে মালোরকাকে পর্যটকদের কাছে এক আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত করেছে।
এখানে বেড়াতে আসা মানুষদের দ্য ক্যাথেড্রাল, দা আলদমাদাইনা প্যালেস, প্লাজা মেয়র স্কয়ারের জন্য হাতে আলাদা করে কিছুটা সময় রাখতে হয়। পাইনের জঙ্গল এবং পাম গাছের সারি শহরের বড় বৈশিষ্ট্য।
দ্বীপের উপকূল বরাবর সৈকত এবং পাহাড়ের দেখা মেলে। ভেতরের দিকে গ্রাম এবং এক হাজার ৫০০ মিটার পর্যন্ত উচ্চতার পর্বতশ্রেণী রয়েছে।
এডমন্টন, কানাডা
কানাডার আলবার্টা শহরের রাজধানী এডমন্টন। ঝাঁ চকচকে আকাশচুম্বী ভবন, বিভিন্ন বিনোদনের সুবিধা এবং নানা ধরনের উৎসব মিলিয়ে আলবার্টার মতো শহর পাবেন কমই । ব্যাপক বিনিয়োগের মাধ্যমে কানাডার পঞ্চম বৃহত্তম শহরটি গত এক দশকে পরিবর্তিত হয়েছে।
নর্থ সাসকাচোয়ান নদীর তীরের এর অবস্থান। বছরে ২২০০ ঘণ্টার বেশি উজ্জ্বল সূর্যালোক পায় শহরটি। গ্রীষ্মে ১৭ ঘণ্টা পর্যন্ত সূর্যালোক পায় এটি। শীতে নিয়মিতই দেখা মেলে নর্দান লাইটের। বছরজুড়ে অন্তত ৩০টি ফেস্টিভ্যাল বা উৎসব হয় এখানে। শহরের কেন্দ্র থেকে কেবল এক ঘণ্টায় গাড়িতে পৌঁছে যেতে পারবেন বিখ্যাত এল্ক আইল্যান্ড ন্যাশনাল পার্কে।
সূত্র: লোনলি প্ল্যানেট, সিএনএন, ফ্যাক্টস ডট নেট, ওয়ার্ল্ড সিটি ট্রেইল ডট কম
আরও পড়ুন:

লোনলি প্ল্যানেট নামটির সঙ্গে অন্তত ভ্রমণপ্রিয় পাঠকেরা বেশ পরিচিত। ভ্রমণগাইড প্রকাশের পাশাপাশি পর্যটকদের ঘুরে বেড়াবার নানা তথ্য দিয়ে পর্যটকদের সাহায্য করে তারা। আর এ বিষয়ের লোনলি প্ল্যানেটের অভিজ্ঞতাই বলে দিচ্ছে অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন জায়গা, শহর বা দেশের যে তালিকা তারা করবে সেটি মোটেই হেলাফেলা করার মতো কিছু হবে না। আজ আমরা পরিচিত হবে লোনলি প্ল্যানেটের বিবেচনায় অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন ১০টি শহরের সঙ্গে।
তুলুজ, ফ্রান্স
লোনলি প্ল্যানেটের অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন শহরের তালিকায় সবার ওপরে আছে ফ্রান্সের তুলুজ। গেহনে নদীর তীরে গড়ে ওঠা পুরোনো এই শহরটি প্রচুর সংখ্যায় জাদুঘর এবং ঐতিহাসিক সব দালান-কোঠার জন্য বিখ্যাত। এখনকার খাবারেরও আলাদা নাম আছে।
লোনলি প্ল্যানেটের কনটেন্ট ও নির্বাহী সম্পাদক নিতিয়া চেম্বারস সিএনএনকে বলেন, ‘ছুটি কাটানোর জন্য এটি দারুণ একটি জায়গা। শিল্পসামগ্রীর গ্যালারি, পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা, রেস্তোরাঁ মিলিয়ে দারুণ ও বৈচিত্র্যময় এক শহর এটি।’
জনসংখ্যার দিক থেকে প্যারিস, মার্সেই এবং লিওর পরে ফ্রান্সের চতুর্থ বৃহত্তম শহর এটি। এর বিভিন্ন দালানকোঠায় গোলাপি রংয়ের ছটার কারণে কেউ কেউ একে পিংক সিটি নামেও ডাকে। ১২২৯ সালে প্রতিষ্ঠিত দ্য ইউনিভার্সিটি অব তুলুজ ইউরোপের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়গুলির একটি। এখানকার সেতুগুলো মুগ্ধ করবে আপনাকে। আর বার, ক্লাব ও লাইভ মিউজিক মিলিয়ে রাতে জীবন্ত এক শহর তুলুজ।
পদুচেরি, ভারত
অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন শহরের তালিকায় দুইয়ে থাকা শহরটি আপনাকে চমকে দিতে পারে। এটি ভারতের পদুচেরি, যেটি একটা সময় পরিচিত ছিল পন্ডিচেরি নামে।
নিতিয়া চেম্বার বলেন, ‘পদুচেরি তালিকায় দুইয়ে থাকার কারণ এখানকার সৈকত এবং তীরে আছড়ে পড়া একের পর এক ঢেউ। এদিকে সাগরের ঢেউয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সৈকতগুলোকেও পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে এখানে।’ চেন্নাই থেকে সহজেই ট্রেনে চেপে পৌঁছে যেতে পারবেন জায়গাটিকে।
১৯৫৪ সাল পর্যন্ত ফরাসি কলোনিয়াল শাসন চলে জায়গাটিতে। এখানকার পথ-ঘাট, স্থাপত্য, খাবার-দাবার সবকিছুতে এখনো ফরাসিদের প্রভাব চোখে পড়ে। এখানকার কিছু মানুষ এখনো ফরাসি ভাষায় কথা বলেন। অনেকেই জায়গাটিতে ভারতের ‘লিটল ফ্রান্স’ নামে ডাকেন আদর করে। আন্তর্জাতিকভাবে প্রসিদ্ধ শ্রী অরবিন্দ আশ্রম শহরের উত্তরে অবস্থিত।
বাঁচকো, বুলগেরিয়া
বুলগেরিয়ার ছোট্ট এই পার্বত্য শহরটি বছরজুড়েই টানে পর্যটকদের। লোনলি প্ল্যানেটের তালিকায় তিনে থাকা শহরটি সবচেয়ে বেশি নাম কাটিয়েছেন বরফে ঢাকা পর্বতে স্কিইংয়ের জন্য।
রোমাঞ্চপ্রিয় কিংবা প্রকৃতির কোলে শান্ত একটি শহরের প্রত্যাশা করা পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্য এটি। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে এটি ডিজিটাল নোমাডদের পছন্দের জায়গায় পরিণত হয়েছে। অর্থাৎ সুন্দর এ শহরটিতে থেকে অনলাইনে চাকরি করেন কোনো ব্যস্ত শহরের প্রতিষ্ঠানে।
পুরোনো জাদুঘর, গির্জাসহ নানা স্থাপনাও আকৃষ্ট করবে। এখানকার মুখোরোচক খাওয়া-দাওয়াও আকৃষ্ট করবে আপনাকে। গন্ডোলা বা ক্যাবল কারে চলা, মাউন্টেন বাইকিং, পাহাড়ে ট্র্যাকিং এমন রোমাঞ্চকর আরও নানা কিছু করার সুযোগ মেলে এখানে স্কিইংয়ের পাশাপাশি।
চিয়াং মাই
থাইল্যান্ডের শীতল শহরগুলির একটি চিয়াং মাই। লোনলি প্ল্যানেটের তালিকায় এর অবস্থান চার। ‘আপনি যদি একজন ভোজনবিলাসী ভ্রমণপ্রেমী হন কিংবা নতুন স্বাদ নিতে আগ্রহী থাকেন তবে এটি আপনার পছন্দের তালিকায় ওপরের দিকে থাকবে। এখানকার প্রকৃতি, পরিবেশ খাবার-দাবারের সঙ্গে দারুণ মানানসই।’ বলেন চেম্বারস।
ব্যস্ত শহর এবং জমকালো সমুদ্র সৈকতগুলি এমনিতে থাইল্যান্ডকে পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্যে পরিণত করেছে। তবে চিয়াং মাইয়ের শান্ত পাহাড়ি প্রকৃতি সম্পূর্ণ বিপরীত একটি পরিস্থিতি নিয়ে হাজির হয় পর্যটকদের সামনে। শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্য, ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প এবং পাকা সব রাঁধুনির জন্য আলাদা নাম আছে শহরটির। বুঝতেই পারছেন এখানে দেখার এবং করার মতো অনেক কিছু রয়েছে।
প্রাচীর ঘেরা পুরোনো শহর ছাড়িয়ে, রোমাঞ্চপ্রেমীরা পছন্দ অনুযায়ী জায়গা বেছে নেওয়াতেও বাধা নেই। জঙ্গল, নদী, গুহা, পাহাড় এবং জলপ্রপাত সবই পাবেন আশপাশে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে খাবার এবং অরণ্য চিয়াং মাই-এর বড় আকর্ষণ। আপনি যতবারই যান না কেন সেখানে সব সময় নতুন কিছু আবিষ্কার করা যায়।
জেনোয়া, ইতালি
অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন শহরের তালিকায় পাঁচে জেনোয়া। ইতালির বৃহত্তম সমুদ্র বন্দরটিতে পরস্পরবিরোধী কিছু বিষয় চোখে পড়বে। কোথাও জমকালো, ঝলমলে আলো এবং কোথাও গভীর ছায়ায় পূর্ণ। এটি অনেক ভ্রমণকারীর জন্য নৌভ্রমণে বেরিয়ে পড়ার একটি প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ সকরে। তবে এর স্থাপত্য ঐতিহ্য তার পুরোনো গৌরবের কথা মনে করিয়ে দেয়। রিপাবলিক অব জেনোয়া বারো এবং তেরো শতকে ভূমধ্যসাগর শাসন করে। জেনোয়াতে এলে পুরোনো সেই ইতিহাস জীবন্ত হয়ে যেন আপনার সামনে ধরা দেবে। পুরোনো সেই শহরের অনেক কিছুই এখনো অক্ষত এখানে।
এখনকার স্থানীয় নানা খাবার মুগ্ধ করবে আপনাকে। শহরের বাসিন্দারাও খুব বন্ধুভাবাপন্ন। তেমনি সমুদ্রবিষয়ক জাদুঘর, থিয়েটার ও সংগীত পরিবেশনার নানা জায়গা মুগ্ধ করে পর্যটকদের।
পিটার্সবার্গ, যুক্তরাষ্ট্র
অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন শহরের তালিকায় পিটসবার্গের অবস্থান ছয়ে। ফিলাডেলফিয়ার পর পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের দ্বিতীয় জনবহুল শহর এটি। অ্যালিঘেনি এবং মনোনগাহেলা নদীর সংযোগস্থলে অবস্থান শহরটির। এ দুটি নদী মিলে জন্ম দিয়েছে ওহাইও নদীর।
যুক্তরাষ্ট্রের ইস্পাত শিল্পে বড় অবদানের জন্য একসময় স্টিল সিটি নামেই বেশি পরিচিত ছিল। তবে এখনকার নতুন কিছু পরিচয় যোগ হয়েছে শহরটির। বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে।
শহর জুড়ে গড়ে উঠেছে মুখরোচক খাবারের সব রেস্তোরাঁ, জাদুঘরগুলো বিশ্বমানের শিল্প ও আঞ্চলিক ইতিহাসে ভরপুর; শহরের তিনটি নদী বরাবর সারা বছর প্রচুর কার্যকলাপের সুযোগ আছে।
ওসাকা, জাপান
বিশ্বে জনবহুল শহরের তালিকায় সেরা দশে থাকা জাপানের এ শহরটিতে এক কোটি ৮৯ লাখ ৬৭ হাজারের বেশি মানুষের বাস। আর লোনলি প্ল্যানেটের বিবেচনায় অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন সপ্তম শহর এটি।
বাণিজ্য ও শিল্পের কেন্দ্র হিসাবে ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহরটিতে এখনো অনেক বড় জাপানি কোম্পানির সদর দপ্তর অবস্থিত।
ওসাকা তার নানা পদের খাবার এবং আধুনিক স্থাপত্যের জন্য পর্যটকদের কাছে প্রিয় গন্তব্য। শহরের মেট্রো বছরে ৯০ কোটির বেশি যাত্রী পরিবহন করে। এখানকার অন্যতম দ্রষ্টব্য স্থান ওসাকা ক্যাসল। চৌদ্দ শ বছর আগে স্থাপিত বৌদ্ধ মন্দির শিতেনো-জি ছাড়াও বিখ্যাত ওসাকা অ্যাকোরিয়াম কাইয়ুকান এবং তেমপোজান নাগরদোলা এখানকার অন্যতম দ্রষ্টব্য জায়গা।
কুরিতিবা, ব্রাজিল
ব্রাজিলের পারানা রাজ্যের রাজধানী শহর কুরিতিবা তার উদ্ভাবনী নগর-পরিকল্পনা এবং টেকসই উন্নয়ন উদ্যোগের জন্য বিখ্যাত। কীভাবে একটি শহর সফলভাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং পরিবেশ সংরক্ষণে ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে তার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।
সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য, বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির জন্য পরিচিত শহরটি। এখানকার উদ্ভিদ উদ্যানটি একটি জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। শহরটিতে অসংখ্য আর্ট গ্যালারি, থিয়েটার রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী ব্রাজিলিয়ান খাবার থেকে শুরু করে নানা দেশের বিভিন্ন পদের খাবারের জন্য আলাদা নাম আছে। কুরিতিবায় ৩০টির বেশি পার্ক এবং সবুজ আচ্ছাদনযুক্ত জায়গা রয়েছে।
পালমা দে মালোরকা, স্পেন
মালোরকা দ্বীপের রাজধানীটি একই নামের একটি উপসাগরের তীরে অবস্থিত। এখানকার চমৎকার জলবায়ু পর্যটকদের ভারি পছন্দ। বার্ষিক গড় তাপমাত্রা আঠারো ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। চমৎকার সব সৈকত এবং ঐতিহ্যবাহী ইমারতে ভরপুর পুরোনো শহর পালমা দে মালোরকাকে পর্যটকদের কাছে এক আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত করেছে।
এখানে বেড়াতে আসা মানুষদের দ্য ক্যাথেড্রাল, দা আলদমাদাইনা প্যালেস, প্লাজা মেয়র স্কয়ারের জন্য হাতে আলাদা করে কিছুটা সময় রাখতে হয়। পাইনের জঙ্গল এবং পাম গাছের সারি শহরের বড় বৈশিষ্ট্য।
দ্বীপের উপকূল বরাবর সৈকত এবং পাহাড়ের দেখা মেলে। ভেতরের দিকে গ্রাম এবং এক হাজার ৫০০ মিটার পর্যন্ত উচ্চতার পর্বতশ্রেণী রয়েছে।
এডমন্টন, কানাডা
কানাডার আলবার্টা শহরের রাজধানী এডমন্টন। ঝাঁ চকচকে আকাশচুম্বী ভবন, বিভিন্ন বিনোদনের সুবিধা এবং নানা ধরনের উৎসব মিলিয়ে আলবার্টার মতো শহর পাবেন কমই । ব্যাপক বিনিয়োগের মাধ্যমে কানাডার পঞ্চম বৃহত্তম শহরটি গত এক দশকে পরিবর্তিত হয়েছে।
নর্থ সাসকাচোয়ান নদীর তীরের এর অবস্থান। বছরে ২২০০ ঘণ্টার বেশি উজ্জ্বল সূর্যালোক পায় শহরটি। গ্রীষ্মে ১৭ ঘণ্টা পর্যন্ত সূর্যালোক পায় এটি। শীতে নিয়মিতই দেখা মেলে নর্দান লাইটের। বছরজুড়ে অন্তত ৩০টি ফেস্টিভ্যাল বা উৎসব হয় এখানে। শহরের কেন্দ্র থেকে কেবল এক ঘণ্টায় গাড়িতে পৌঁছে যেতে পারবেন বিখ্যাত এল্ক আইল্যান্ড ন্যাশনাল পার্কে।
সূত্র: লোনলি প্ল্যানেট, সিএনএন, ফ্যাক্টস ডট নেট, ওয়ার্ল্ড সিটি ট্রেইল ডট কম
আরও পড়ুন:

লোনলি প্ল্যানেট নামটির সঙ্গে অন্তত ভ্রমণপ্রিয় পাঠকেরা বেশ পরিচিত। ভ্রমণগাইড প্রকাশের পাশাপাশি পর্যটকদের ঘুরে বেড়াবার নানা তথ্য দিয়ে পর্যটকদের সাহায্য করে তারা। আর এ বিষয়ের লোনলি প্ল্যানেটের অভিজ্ঞতাই বলে দিচ্ছে অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন জায়গা, শহর বা দেশের যে তালিকা তারা করবে সেটি মোটেই হেলাফেলা করার মতো কিছু হবে না। আজ আমরা পরিচিত হবে লোনলি প্ল্যানেটের বিবেচনায় অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন ১০টি শহরের সঙ্গে।
তুলুজ, ফ্রান্স
লোনলি প্ল্যানেটের অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন শহরের তালিকায় সবার ওপরে আছে ফ্রান্সের তুলুজ। গেহনে নদীর তীরে গড়ে ওঠা পুরোনো এই শহরটি প্রচুর সংখ্যায় জাদুঘর এবং ঐতিহাসিক সব দালান-কোঠার জন্য বিখ্যাত। এখনকার খাবারেরও আলাদা নাম আছে।
লোনলি প্ল্যানেটের কনটেন্ট ও নির্বাহী সম্পাদক নিতিয়া চেম্বারস সিএনএনকে বলেন, ‘ছুটি কাটানোর জন্য এটি দারুণ একটি জায়গা। শিল্পসামগ্রীর গ্যালারি, পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা, রেস্তোরাঁ মিলিয়ে দারুণ ও বৈচিত্র্যময় এক শহর এটি।’
জনসংখ্যার দিক থেকে প্যারিস, মার্সেই এবং লিওর পরে ফ্রান্সের চতুর্থ বৃহত্তম শহর এটি। এর বিভিন্ন দালানকোঠায় গোলাপি রংয়ের ছটার কারণে কেউ কেউ একে পিংক সিটি নামেও ডাকে। ১২২৯ সালে প্রতিষ্ঠিত দ্য ইউনিভার্সিটি অব তুলুজ ইউরোপের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়গুলির একটি। এখানকার সেতুগুলো মুগ্ধ করবে আপনাকে। আর বার, ক্লাব ও লাইভ মিউজিক মিলিয়ে রাতে জীবন্ত এক শহর তুলুজ।
পদুচেরি, ভারত
অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন শহরের তালিকায় দুইয়ে থাকা শহরটি আপনাকে চমকে দিতে পারে। এটি ভারতের পদুচেরি, যেটি একটা সময় পরিচিত ছিল পন্ডিচেরি নামে।
নিতিয়া চেম্বার বলেন, ‘পদুচেরি তালিকায় দুইয়ে থাকার কারণ এখানকার সৈকত এবং তীরে আছড়ে পড়া একের পর এক ঢেউ। এদিকে সাগরের ঢেউয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সৈকতগুলোকেও পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে এখানে।’ চেন্নাই থেকে সহজেই ট্রেনে চেপে পৌঁছে যেতে পারবেন জায়গাটিকে।
১৯৫৪ সাল পর্যন্ত ফরাসি কলোনিয়াল শাসন চলে জায়গাটিতে। এখানকার পথ-ঘাট, স্থাপত্য, খাবার-দাবার সবকিছুতে এখনো ফরাসিদের প্রভাব চোখে পড়ে। এখানকার কিছু মানুষ এখনো ফরাসি ভাষায় কথা বলেন। অনেকেই জায়গাটিতে ভারতের ‘লিটল ফ্রান্স’ নামে ডাকেন আদর করে। আন্তর্জাতিকভাবে প্রসিদ্ধ শ্রী অরবিন্দ আশ্রম শহরের উত্তরে অবস্থিত।
বাঁচকো, বুলগেরিয়া
বুলগেরিয়ার ছোট্ট এই পার্বত্য শহরটি বছরজুড়েই টানে পর্যটকদের। লোনলি প্ল্যানেটের তালিকায় তিনে থাকা শহরটি সবচেয়ে বেশি নাম কাটিয়েছেন বরফে ঢাকা পর্বতে স্কিইংয়ের জন্য।
রোমাঞ্চপ্রিয় কিংবা প্রকৃতির কোলে শান্ত একটি শহরের প্রত্যাশা করা পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্য এটি। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে এটি ডিজিটাল নোমাডদের পছন্দের জায়গায় পরিণত হয়েছে। অর্থাৎ সুন্দর এ শহরটিতে থেকে অনলাইনে চাকরি করেন কোনো ব্যস্ত শহরের প্রতিষ্ঠানে।
পুরোনো জাদুঘর, গির্জাসহ নানা স্থাপনাও আকৃষ্ট করবে। এখানকার মুখোরোচক খাওয়া-দাওয়াও আকৃষ্ট করবে আপনাকে। গন্ডোলা বা ক্যাবল কারে চলা, মাউন্টেন বাইকিং, পাহাড়ে ট্র্যাকিং এমন রোমাঞ্চকর আরও নানা কিছু করার সুযোগ মেলে এখানে স্কিইংয়ের পাশাপাশি।
চিয়াং মাই
থাইল্যান্ডের শীতল শহরগুলির একটি চিয়াং মাই। লোনলি প্ল্যানেটের তালিকায় এর অবস্থান চার। ‘আপনি যদি একজন ভোজনবিলাসী ভ্রমণপ্রেমী হন কিংবা নতুন স্বাদ নিতে আগ্রহী থাকেন তবে এটি আপনার পছন্দের তালিকায় ওপরের দিকে থাকবে। এখানকার প্রকৃতি, পরিবেশ খাবার-দাবারের সঙ্গে দারুণ মানানসই।’ বলেন চেম্বারস।
ব্যস্ত শহর এবং জমকালো সমুদ্র সৈকতগুলি এমনিতে থাইল্যান্ডকে পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্যে পরিণত করেছে। তবে চিয়াং মাইয়ের শান্ত পাহাড়ি প্রকৃতি সম্পূর্ণ বিপরীত একটি পরিস্থিতি নিয়ে হাজির হয় পর্যটকদের সামনে। শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্য, ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প এবং পাকা সব রাঁধুনির জন্য আলাদা নাম আছে শহরটির। বুঝতেই পারছেন এখানে দেখার এবং করার মতো অনেক কিছু রয়েছে।
প্রাচীর ঘেরা পুরোনো শহর ছাড়িয়ে, রোমাঞ্চপ্রেমীরা পছন্দ অনুযায়ী জায়গা বেছে নেওয়াতেও বাধা নেই। জঙ্গল, নদী, গুহা, পাহাড় এবং জলপ্রপাত সবই পাবেন আশপাশে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে খাবার এবং অরণ্য চিয়াং মাই-এর বড় আকর্ষণ। আপনি যতবারই যান না কেন সেখানে সব সময় নতুন কিছু আবিষ্কার করা যায়।
জেনোয়া, ইতালি
অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন শহরের তালিকায় পাঁচে জেনোয়া। ইতালির বৃহত্তম সমুদ্র বন্দরটিতে পরস্পরবিরোধী কিছু বিষয় চোখে পড়বে। কোথাও জমকালো, ঝলমলে আলো এবং কোথাও গভীর ছায়ায় পূর্ণ। এটি অনেক ভ্রমণকারীর জন্য নৌভ্রমণে বেরিয়ে পড়ার একটি প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ সকরে। তবে এর স্থাপত্য ঐতিহ্য তার পুরোনো গৌরবের কথা মনে করিয়ে দেয়। রিপাবলিক অব জেনোয়া বারো এবং তেরো শতকে ভূমধ্যসাগর শাসন করে। জেনোয়াতে এলে পুরোনো সেই ইতিহাস জীবন্ত হয়ে যেন আপনার সামনে ধরা দেবে। পুরোনো সেই শহরের অনেক কিছুই এখনো অক্ষত এখানে।
এখনকার স্থানীয় নানা খাবার মুগ্ধ করবে আপনাকে। শহরের বাসিন্দারাও খুব বন্ধুভাবাপন্ন। তেমনি সমুদ্রবিষয়ক জাদুঘর, থিয়েটার ও সংগীত পরিবেশনার নানা জায়গা মুগ্ধ করে পর্যটকদের।
পিটার্সবার্গ, যুক্তরাষ্ট্র
অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন শহরের তালিকায় পিটসবার্গের অবস্থান ছয়ে। ফিলাডেলফিয়ার পর পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের দ্বিতীয় জনবহুল শহর এটি। অ্যালিঘেনি এবং মনোনগাহেলা নদীর সংযোগস্থলে অবস্থান শহরটির। এ দুটি নদী মিলে জন্ম দিয়েছে ওহাইও নদীর।
যুক্তরাষ্ট্রের ইস্পাত শিল্পে বড় অবদানের জন্য একসময় স্টিল সিটি নামেই বেশি পরিচিত ছিল। তবে এখনকার নতুন কিছু পরিচয় যোগ হয়েছে শহরটির। বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে।
শহর জুড়ে গড়ে উঠেছে মুখরোচক খাবারের সব রেস্তোরাঁ, জাদুঘরগুলো বিশ্বমানের শিল্প ও আঞ্চলিক ইতিহাসে ভরপুর; শহরের তিনটি নদী বরাবর সারা বছর প্রচুর কার্যকলাপের সুযোগ আছে।
ওসাকা, জাপান
বিশ্বে জনবহুল শহরের তালিকায় সেরা দশে থাকা জাপানের এ শহরটিতে এক কোটি ৮৯ লাখ ৬৭ হাজারের বেশি মানুষের বাস। আর লোনলি প্ল্যানেটের বিবেচনায় অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন সপ্তম শহর এটি।
বাণিজ্য ও শিল্পের কেন্দ্র হিসাবে ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহরটিতে এখনো অনেক বড় জাপানি কোম্পানির সদর দপ্তর অবস্থিত।
ওসাকা তার নানা পদের খাবার এবং আধুনিক স্থাপত্যের জন্য পর্যটকদের কাছে প্রিয় গন্তব্য। শহরের মেট্রো বছরে ৯০ কোটির বেশি যাত্রী পরিবহন করে। এখানকার অন্যতম দ্রষ্টব্য স্থান ওসাকা ক্যাসল। চৌদ্দ শ বছর আগে স্থাপিত বৌদ্ধ মন্দির শিতেনো-জি ছাড়াও বিখ্যাত ওসাকা অ্যাকোরিয়াম কাইয়ুকান এবং তেমপোজান নাগরদোলা এখানকার অন্যতম দ্রষ্টব্য জায়গা।
কুরিতিবা, ব্রাজিল
ব্রাজিলের পারানা রাজ্যের রাজধানী শহর কুরিতিবা তার উদ্ভাবনী নগর-পরিকল্পনা এবং টেকসই উন্নয়ন উদ্যোগের জন্য বিখ্যাত। কীভাবে একটি শহর সফলভাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং পরিবেশ সংরক্ষণে ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে তার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।
সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য, বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির জন্য পরিচিত শহরটি। এখানকার উদ্ভিদ উদ্যানটি একটি জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। শহরটিতে অসংখ্য আর্ট গ্যালারি, থিয়েটার রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী ব্রাজিলিয়ান খাবার থেকে শুরু করে নানা দেশের বিভিন্ন পদের খাবারের জন্য আলাদা নাম আছে। কুরিতিবায় ৩০টির বেশি পার্ক এবং সবুজ আচ্ছাদনযুক্ত জায়গা রয়েছে।
পালমা দে মালোরকা, স্পেন
মালোরকা দ্বীপের রাজধানীটি একই নামের একটি উপসাগরের তীরে অবস্থিত। এখানকার চমৎকার জলবায়ু পর্যটকদের ভারি পছন্দ। বার্ষিক গড় তাপমাত্রা আঠারো ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। চমৎকার সব সৈকত এবং ঐতিহ্যবাহী ইমারতে ভরপুর পুরোনো শহর পালমা দে মালোরকাকে পর্যটকদের কাছে এক আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত করেছে।
এখানে বেড়াতে আসা মানুষদের দ্য ক্যাথেড্রাল, দা আলদমাদাইনা প্যালেস, প্লাজা মেয়র স্কয়ারের জন্য হাতে আলাদা করে কিছুটা সময় রাখতে হয়। পাইনের জঙ্গল এবং পাম গাছের সারি শহরের বড় বৈশিষ্ট্য।
দ্বীপের উপকূল বরাবর সৈকত এবং পাহাড়ের দেখা মেলে। ভেতরের দিকে গ্রাম এবং এক হাজার ৫০০ মিটার পর্যন্ত উচ্চতার পর্বতশ্রেণী রয়েছে।
এডমন্টন, কানাডা
কানাডার আলবার্টা শহরের রাজধানী এডমন্টন। ঝাঁ চকচকে আকাশচুম্বী ভবন, বিভিন্ন বিনোদনের সুবিধা এবং নানা ধরনের উৎসব মিলিয়ে আলবার্টার মতো শহর পাবেন কমই । ব্যাপক বিনিয়োগের মাধ্যমে কানাডার পঞ্চম বৃহত্তম শহরটি গত এক দশকে পরিবর্তিত হয়েছে।
নর্থ সাসকাচোয়ান নদীর তীরের এর অবস্থান। বছরে ২২০০ ঘণ্টার বেশি উজ্জ্বল সূর্যালোক পায় শহরটি। গ্রীষ্মে ১৭ ঘণ্টা পর্যন্ত সূর্যালোক পায় এটি। শীতে নিয়মিতই দেখা মেলে নর্দান লাইটের। বছরজুড়ে অন্তত ৩০টি ফেস্টিভ্যাল বা উৎসব হয় এখানে। শহরের কেন্দ্র থেকে কেবল এক ঘণ্টায় গাড়িতে পৌঁছে যেতে পারবেন বিখ্যাত এল্ক আইল্যান্ড ন্যাশনাল পার্কে।
সূত্র: লোনলি প্ল্যানেট, সিএনএন, ফ্যাক্টস ডট নেট, ওয়ার্ল্ড সিটি ট্রেইল ডট কম
আরও পড়ুন:

ডায়াবেটিসে রক্তে শর্করার মাত্রা খুব বেশি বা খুব কম—দুটোই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। রক্তে শর্করাকে নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখতে পারলে জটিলতা প্রতিরোধ করা সম্ভব। বেশির ভাগ মানুষ জানেন, কোন খাবার রক্তে শর্করার ওপর প্রভাব ফেলে। কিন্তু অনেকে হয়তো জানেন না, খাবার খাওয়ার সময়ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ...
১১ ঘণ্টা আগে
জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা পেরিয়ে এগিয়ে চলেছি আমরা। স্নিগ্ধ সকাল। মহাসড়কে সূর্যের আভা পড়েছে তির্যকভাবে। আমরা যাচ্ছি সুনামগঞ্জ জেলার উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে ভারত সীমান্ত গোয়া ধর্মপাশা উপজেলায় মহিষখোলা গ্রামে। সেখানে ঘুমিয়ে আছেন একাত্তরের বীর শহীদেরা।
১৭ ঘণ্টা আগে
ঝরনাপাখি। নামে যার সঙ্গে ঝরনা জড়িয়ে, তার সঙ্গে ঝরনার সম্পর্ক যে নিবিড় হবে, সেটা না বললেও চলে। এই অপার্থিব সুন্দর পাখির বাহারি বাংলা নামের তালিকাও বেশ সমৃদ্ধ—নীলাম্বর জলখঞ্জরী, নীল পানগির্দি, ঝরনাপাখি, নীল কপালিগির্দি, নীলচে লালগির্দি ইত্যাদি।
১৮ ঘণ্টা আগে
বছরের শেষের দিকে এসে পর্যটন খাতে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে ভারত। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে দেখা গেছে, ভারতের পর্যটন প্রসার বাজেট সীমাবদ্ধতার মধ্যে পড়েছে। দেশটির এই অবস্থায় লাভবান হচ্ছে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রতিযোগীরা।
১৮ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

ডায়াবেটিসে রক্তে শর্করার মাত্রা খুব বেশি বা খুব কম—দুটোই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। রক্তে শর্করাকে নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখতে পারলে জটিলতা প্রতিরোধ করা সম্ভব। বেশির ভাগ মানুষ জানেন, কোন খাবার রক্তে শর্করার ওপর প্রভাব ফেলে। কিন্তু অনেকে হয়তো জানেন না, খাবার খাওয়ার সময়ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ, যেখানে শর্করাজাতীয় খাবার বিপাকের জন্য শরীরে যতটুকু ইনসুলিন প্রয়োজন হয়, ততটুকু থাকে না। আপনারা জেনে থাকবেন, ডায়াবেটিস দুই ধরনের হয়—টাইপ-১ ও টাইপ-২। টাইপ-১ ডায়াবেটিসে ইনসুলিন একেবারেই থাকে না। তাই রোগ ধরা পড়ার সময় থেকে ইনসুলিন নিতে হয়। আর টাইপ-২ ডায়াবেটিসে শরীরে ইনসুলিন থাকে, কিন্তু ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের জন্য তা কাজ করতে পারে না। যেহেতু ডায়াবেটিস রোগে শর্করাজাতীয় খাবারের বিপাকে সমস্যা হয়, তাই আমরা চিকিৎসকেরা এ ধরনের খাবার; যেমন চিনি, মিষ্টি, ভাত, মিষ্টি ফল, মধু ইত্যাদি পরিমাণমতো খেতে বলি। ডা. মাজহারুল হক তানিম, হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ, ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ
কেন খাবারের সময় মেনে চলা জরুরি
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন একই সময়ে নিয়মিত খাবার ও প্রয়োজন অনুযায়ী হালকা নাশতা খেলে রক্তে শর্করা তুলনামূলক স্থিতিশীল থাকে এবং শরীরের শক্তির মাত্রাও বজায় থাকে। বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ টাইপ-১ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এবং সেই সব টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য, যারা ইনসুলিন বা কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ গ্রহণ করেন।
খাবার বাদ দিলে কী সমস্যা হয়
খাবার না খেলে অনেক সময় পরে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়। এতে রক্তে শর্করা হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে। আবার নিয়মিত খাবার না খেলে রাতে ঘুমের মধ্যেও রক্তে শর্করা কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে, যাকে বলা হয় রাতের হাইপোগ্লাইসেমিয়া। এটি বিপজ্জনক হতে পারে; কারণ, ঘুমের মধ্যে অনেক সময় বোঝা যায় না কী হচ্ছে। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে রক্তে শর্করা কমে গেলেও কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। একে বলা হয় হাইপোগ্লাইসেমিয়া আন অ্যাওয়ারনেস। এটি গাড়ি চালানো বা ব্যায়ামের সময় ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
সকালের নাশতা গুরুত্বপূর্ণ
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য সকালের নাশতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর নাশতা দিনের শুরুতে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং সারা দিন শক্তি ধরে রাখে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, সকালে ভালোভাবে খেয়ে দুপুর ও রাতের খাবার তুলনামূলক হালকা রাখলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের ওজন ও রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ইনসুলিনের প্রয়োজনও কমে। অন্যদিকে, নাশতা বাদ দিলে বিকেল ও রাতে রক্তে শর্করা বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। অনেক ক্ষেত্রে মানুষ পরে সেই ঘাটতি পুষিয়ে নিতে অতিরিক্ত খাবার খেয়ে ফেলেন।
দুপুর ও রাতের খাবার
দুপুর ও রাতের খাবারে প্রতিদিন প্রায় একই পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট রাখা ভালো। এতে রক্তে শর্করার ওঠানামা কম হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, খুব দেরিতে রাতের খাবার খাওয়া উচিত নয়। ঘুমানোর খুব কাছাকাছি সময়ে রাতের খাবার খেলে ওজন এবং রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
নাশতার প্রয়োজন
সব ডায়াবেটিস রোগীর নিয়মিত নাশতার প্রয়োজন হয় না। রক্তে শর্করার মাত্রা ও ক্ষুধার ওপর বিষয়টি নির্ভর করে। তবে ইনসুলিন গ্রহণকারী বা যাঁদের রক্তে শর্করা কমে যাওয়ার ঝুঁকি আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে হালকা নাশতা উপকারী হতে পারে। রাতে রক্তে শর্করা কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকলে ঘুমের আগে অল্প নাশতা উপকারী হতে পারে।
ব্যায়াম ও খাবারের সময়
খাবার খাওয়ার ৩০ মিনিট পর হালকা ব্যায়াম করলে রক্তে শর্করা কমাতে সাহায্য করে; বিশেষ করে টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে। তবে যারা ইনসুলিন বা কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ নেন, তাঁদের ব্যায়ামের আগে বা পরে সামান্য খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। ব্যায়ামের সময় পেশি বেশি গ্লুকোজ ব্যবহার করে, ফলে রক্তে শর্করা কমে যেতে পারে। তাই ব্যায়ামের সময় খাবার ও ইনসুলিনের সমন্বয় চিকিৎসকের পরামর্শে করা উচিত।
নিজের জন্য সঠিক পরিকল্পনা কীভাবে করবেন
ডায়াবেটিসে খাবারের সময় ও ধরন ব্যক্তিভেদে আলাদা হতে পারে। তাই নিজের শরীরের প্রতিক্রিয়া বুঝে পরিকল্পনা করা জরুরি। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো—
চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের সঙ্গে আলোচনা করে খাবারের সময়সূচি ঠিক করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়।
সূত্র: হেলথ

ডায়াবেটিসে রক্তে শর্করার মাত্রা খুব বেশি বা খুব কম—দুটোই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। রক্তে শর্করাকে নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখতে পারলে জটিলতা প্রতিরোধ করা সম্ভব। বেশির ভাগ মানুষ জানেন, কোন খাবার রক্তে শর্করার ওপর প্রভাব ফেলে। কিন্তু অনেকে হয়তো জানেন না, খাবার খাওয়ার সময়ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ, যেখানে শর্করাজাতীয় খাবার বিপাকের জন্য শরীরে যতটুকু ইনসুলিন প্রয়োজন হয়, ততটুকু থাকে না। আপনারা জেনে থাকবেন, ডায়াবেটিস দুই ধরনের হয়—টাইপ-১ ও টাইপ-২। টাইপ-১ ডায়াবেটিসে ইনসুলিন একেবারেই থাকে না। তাই রোগ ধরা পড়ার সময় থেকে ইনসুলিন নিতে হয়। আর টাইপ-২ ডায়াবেটিসে শরীরে ইনসুলিন থাকে, কিন্তু ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের জন্য তা কাজ করতে পারে না। যেহেতু ডায়াবেটিস রোগে শর্করাজাতীয় খাবারের বিপাকে সমস্যা হয়, তাই আমরা চিকিৎসকেরা এ ধরনের খাবার; যেমন চিনি, মিষ্টি, ভাত, মিষ্টি ফল, মধু ইত্যাদি পরিমাণমতো খেতে বলি। ডা. মাজহারুল হক তানিম, হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ, ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ
কেন খাবারের সময় মেনে চলা জরুরি
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন একই সময়ে নিয়মিত খাবার ও প্রয়োজন অনুযায়ী হালকা নাশতা খেলে রক্তে শর্করা তুলনামূলক স্থিতিশীল থাকে এবং শরীরের শক্তির মাত্রাও বজায় থাকে। বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ টাইপ-১ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এবং সেই সব টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য, যারা ইনসুলিন বা কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ গ্রহণ করেন।
খাবার বাদ দিলে কী সমস্যা হয়
খাবার না খেলে অনেক সময় পরে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়। এতে রক্তে শর্করা হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে। আবার নিয়মিত খাবার না খেলে রাতে ঘুমের মধ্যেও রক্তে শর্করা কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে, যাকে বলা হয় রাতের হাইপোগ্লাইসেমিয়া। এটি বিপজ্জনক হতে পারে; কারণ, ঘুমের মধ্যে অনেক সময় বোঝা যায় না কী হচ্ছে। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে রক্তে শর্করা কমে গেলেও কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। একে বলা হয় হাইপোগ্লাইসেমিয়া আন অ্যাওয়ারনেস। এটি গাড়ি চালানো বা ব্যায়ামের সময় ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
সকালের নাশতা গুরুত্বপূর্ণ
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য সকালের নাশতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর নাশতা দিনের শুরুতে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং সারা দিন শক্তি ধরে রাখে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, সকালে ভালোভাবে খেয়ে দুপুর ও রাতের খাবার তুলনামূলক হালকা রাখলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের ওজন ও রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ইনসুলিনের প্রয়োজনও কমে। অন্যদিকে, নাশতা বাদ দিলে বিকেল ও রাতে রক্তে শর্করা বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। অনেক ক্ষেত্রে মানুষ পরে সেই ঘাটতি পুষিয়ে নিতে অতিরিক্ত খাবার খেয়ে ফেলেন।
দুপুর ও রাতের খাবার
দুপুর ও রাতের খাবারে প্রতিদিন প্রায় একই পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট রাখা ভালো। এতে রক্তে শর্করার ওঠানামা কম হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, খুব দেরিতে রাতের খাবার খাওয়া উচিত নয়। ঘুমানোর খুব কাছাকাছি সময়ে রাতের খাবার খেলে ওজন এবং রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
নাশতার প্রয়োজন
সব ডায়াবেটিস রোগীর নিয়মিত নাশতার প্রয়োজন হয় না। রক্তে শর্করার মাত্রা ও ক্ষুধার ওপর বিষয়টি নির্ভর করে। তবে ইনসুলিন গ্রহণকারী বা যাঁদের রক্তে শর্করা কমে যাওয়ার ঝুঁকি আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে হালকা নাশতা উপকারী হতে পারে। রাতে রক্তে শর্করা কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকলে ঘুমের আগে অল্প নাশতা উপকারী হতে পারে।
ব্যায়াম ও খাবারের সময়
খাবার খাওয়ার ৩০ মিনিট পর হালকা ব্যায়াম করলে রক্তে শর্করা কমাতে সাহায্য করে; বিশেষ করে টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে। তবে যারা ইনসুলিন বা কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ নেন, তাঁদের ব্যায়ামের আগে বা পরে সামান্য খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। ব্যায়ামের সময় পেশি বেশি গ্লুকোজ ব্যবহার করে, ফলে রক্তে শর্করা কমে যেতে পারে। তাই ব্যায়ামের সময় খাবার ও ইনসুলিনের সমন্বয় চিকিৎসকের পরামর্শে করা উচিত।
নিজের জন্য সঠিক পরিকল্পনা কীভাবে করবেন
ডায়াবেটিসে খাবারের সময় ও ধরন ব্যক্তিভেদে আলাদা হতে পারে। তাই নিজের শরীরের প্রতিক্রিয়া বুঝে পরিকল্পনা করা জরুরি। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো—
চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের সঙ্গে আলোচনা করে খাবারের সময়সূচি ঠিক করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়।
সূত্র: হেলথ

লোনলি প্ল্যানেট নামটির সঙ্গে অন্তত ভ্রমণপ্রিয় পাঠকেরা বেশ পরিচিত। ভ্রমণগাইড প্রকাশের পাশাপাশি পর্যটকদের ঘুরে বেড়াবার নানা তথ্য দিয়ে পর্যটকদের সাহায্য করে তারা। আর এ বিষয়ের লোনলি প্ল্যানেটের অভিজ্ঞতাই বলে দিচ্ছে অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন জায়গা, শহর বা দেশের যে তালিকা তারা করবে সেটি মোটেই হেলাফেলা করার মত
২৪ অক্টোবর ২০২৪
জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা পেরিয়ে এগিয়ে চলেছি আমরা। স্নিগ্ধ সকাল। মহাসড়কে সূর্যের আভা পড়েছে তির্যকভাবে। আমরা যাচ্ছি সুনামগঞ্জ জেলার উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে ভারত সীমান্ত গোয়া ধর্মপাশা উপজেলায় মহিষখোলা গ্রামে। সেখানে ঘুমিয়ে আছেন একাত্তরের বীর শহীদেরা।
১৭ ঘণ্টা আগে
ঝরনাপাখি। নামে যার সঙ্গে ঝরনা জড়িয়ে, তার সঙ্গে ঝরনার সম্পর্ক যে নিবিড় হবে, সেটা না বললেও চলে। এই অপার্থিব সুন্দর পাখির বাহারি বাংলা নামের তালিকাও বেশ সমৃদ্ধ—নীলাম্বর জলখঞ্জরী, নীল পানগির্দি, ঝরনাপাখি, নীল কপালিগির্দি, নীলচে লালগির্দি ইত্যাদি।
১৮ ঘণ্টা আগে
বছরের শেষের দিকে এসে পর্যটন খাতে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে ভারত। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে দেখা গেছে, ভারতের পর্যটন প্রসার বাজেট সীমাবদ্ধতার মধ্যে পড়েছে। দেশটির এই অবস্থায় লাভবান হচ্ছে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রতিযোগীরা।
১৮ ঘণ্টা আগেসুমন্ত গুপ্ত

জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা পেরিয়ে এগিয়ে চলেছি আমরা। স্নিগ্ধ সকাল। মহাসড়কে সূর্যের আভা পড়েছে তির্যকভাবে। আমরা যাচ্ছি সুনামগঞ্জ জেলার উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে ভারত সীমান্ত গোয়া ধর্মপাশা উপজেলায় মহিষখোলা গ্রামে। সেখানে ঘুমিয়ে আছেন একাত্তরের বীর শহীদেরা।
প্রকৃতির পালাবদলে শীতকাল এসেছে। তাই প্রকৃতির মাঝে চলেছে ঋতুবরণের পালা। আমরা চলেছি নতুন গন্তব্যে। পাগলা বাজারে এসে নামলাম। ঢুকে পড়লাম দয়াল মিষ্টান্ন ভান্ডারে। গরম-গরম পরোটা আর ভাজি দেওয়া হলো। পেটপূজা শেষ করে আমরা এগিয়ে চললাম গন্তব্যের পানে। ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এসে পৌঁছালাম সুনামগঞ্জ শহরে। সেখান থেকে যেতে হবে তাহিরপুর। প্রায় আড়াই ঘণ্টা যাত্রা শেষে হাজির হলাম সুনামগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের রোজ গার্ডেনে। এখানে দুপুরের খাওয়া শেষে আবারও রওনা দিলাম তাহিরপুরের দিকে।
গ্রামীণ পথে চলার মজাই আলাদা। দুই পাশে ধানখেত। মাঝ দিয়ে আমরা এগিয়ে চলছি। প্রায়
দুই ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে এসে আমরা পৌঁছালাম তাহিরপুর বাজারে। এবার আমাদের পাড়ি দিতে
হবে টাঙ্গুয়ার হাওর। সময় লাগবে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। মনে মনে সবাই খুশিই হলাম টাঙ্গুয়ার হাওর দেখা যাবে বলে। বাহন রয়েছে দুই ধরনের—ইঞ্জিনচালিত নৌকা আর স্পিডবোট। আমরা চেপে বসলাম ইঞ্জিন নৌকায়।
টাঙ্গুয়ার ঢেউয়ের তালে তালে এগিয়ে চলছি। নদীকেন্দ্রিক মানুষের জীবনধারা আমাদের মোহিত করছে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পেরিয়ে পৌঁছালাম ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যনগর গ্রামে। সেখানে জন্য অপেক্ষা করছিলেন সোহাগ আর মুনিম নামে দুজন। আমরা চেপে বসলাম দুই চাকার বাহনে। এখান থেকে মহিষখোলা গ্রামের দূরত্ব ১০ মিনিট। এই বাইকে করেই সেখানে যেতে হবে। সময়মতো পৌঁছানো গেল মহিষখোলা গ্রামে।
শান্ত নীরব পরিবেশ। ঘাসফড়িং মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছে এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্তে। এগিয়ে চললাম মহিষখোলা নদীর পূর্বপাড় ঘেঁষে একখানা প্রায় নিশ্চিহ্ন টিনের ঘরের উদ্দেশে। এর অস্তিত্ব সরেজমিনে দেখেও কল্পনায় তার পূর্ণ রূপ দেখা কল্পনাবিলাসীদের জন্যও হয়তো দুরূহ হবে। তার আশপাশে ৪২ বছর ধরে মানুষের ছোঁয়া পড়েনি, তাই জঙ্গলাকীর্ণ। সেই ঘরে ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধের ফাঁকে ফাঁকে বিশ্রাম নিতেন। পাকিস্তানি হানাদারদের মাঝেমধ্যে ধরে বন্দী করেও রাখতেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় এই অঞ্চল ছিল ১১ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর সাব-সেক্টর। এর পশ্চিমে গা ঘেঁষে মহিষখোলা নদী, উত্তরে ২০০ গজের মধ্যে ভারত সীমান্তে মেঘালয় পর্বতমালা, পূর্বে সংখ্যাহীন খালবিল এবং বিশাল টাঙ্গুয়ার হাওর। এর সঙ্গে রাগে-অনুরাগে জড়িয়ে আছে আরেকটি স্নিগ্ধ নদী—জাদুকাটা। শ্রীচৈতন্যের জ্যেষ্ঠ পার্ষদ অদ্বৈতাচার্য এই নদীপারের সন্তান ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধের মাঝামাঝি পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের এক ভয়াল সংঘর্ষ হয়। এতে অনেক যোদ্ধা মারা যান। মহিষখোলা নদীর পাড়ঘেঁষা সেই বাড়ি ধ্বংস হয়ে যায় তখনই, শহীদ যোদ্ধাদের গণকবর রচিত হয় তারই এদিক-সেদিক। তারপর ৪২ বছর লতা-গুল্ম-বৃক্ষের চাদরে ঢাকা ছিল এই ইতিহাস। বলছিলেন আমাদের সঙ্গী স্থপতি রাজন দাস। তিনি এখানে তৈরি করেছেন মুক্তিযুদ্ধের একটি স্মারক। এখানে শায়িত আছেন একাত্তরের শহীদ হওয়া বীর প্রাণেরা।
পূর্ব-পশ্চিম অক্ষ বরাবর সমান্তরাল দুটি সুউচ্চ দেয়াল ৯ ফুট বেদির ওপর এসে দাঁড়ায়, তার ওপর ছায়া হয়ে ছাদ এসে বসে। সিঁড়ি ভেঙে পূর্ব দিকের প্রবেশবিন্দুতে চোখ রাখলে পশ্চিমের নদী আর তার গায়ে এসে পড়া আকাশ দেখা যায়। পূর্ব-পশ্চিম উন্মুক্ত হওয়ায় দুই দেয়ালের ঘর রচিত হয়ে যায়। উত্তর-দক্ষিণের ২৭ ফুট উঁচু দেয়ালে ব্যাকরণ ভেঙে অনেক ছোট-বড় জানালা আড়াল খুলে আলোর উৎস হয়ে ওঠে। ঠিক চোখ মেলে তাকানোর মতো। ‘যারা এই দেশটাকে ভালোবেসে দিয়ে গেছে প্রাণ’ তারা তো বদ্ধ ঘরে থাকে না, যে ঘরে দোর-জানালায় অর্গল টানা, যে ঘরে আলোর ঝলক নেই, দোলা নেই, সে ঘরে স্বাধীনতা প্রবেশ করে না! তাই ‘সব কয়টা জানালা’ই খুলে রাখা হয়েছে। জানালা একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্যাংশ, যার ব্যবহারিক ও মনস্তাত্ত্বিক মূল্য অতুলনীয়। এটি আমাদের দর্শনেন্দ্রিয়ের মতো।
চোখ দিয়ে যেমন আমাদের দেহ-ঘরে আলো প্রবেশ করে, আমাদের প্রথম অভিজ্ঞতা চোখ দিয়ে হয়, তেমনই দেয়ালকে মুক্তি দেয় জানালা। তবেই দেয়ালের চোখ ফুটে আলো-বাতাস প্রবেশ করে গৃহে প্রাণের সঞ্চার হয়। এ জন্যই ‘খোলা জানালা’ আর ‘স্বাধীনতার চেতনা’ সমার্থক হয়ে উঠেছে। বেদির তিন দিক ঘিরে রয়েছে পানির আধার, যা পশ্চিমে নদীর সঙ্গে সংযুক্ত। প্রতি বর্ষাতেই মেঘালয়ের পাহাড়ি ঢল নামলে নদী উপচে বেদির তলায় কিছুক্ষণের জন্য হাঁটুপানি জমে। এটা হাওরাঞ্চলের চেনা দৃশ্য। এভাবে হাঁটুপানিতে দাঁড়িয়ে ‘সব কটা জানালা’ খুলে আমাদের ডাকছে ওরা, ‘যারা এই দেশটাকে ভালোবেসে দিয়ে গেছে প্রাণ’।
যাবেন কীভাবে
ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ সরাসরি এনা, হানিফ, শ্যামলী, ইউনিকসহ অনেক কোম্পানির বাস এই পথে চলাচল করে। তবে অবশ্যই অগ্রিম টিকিট কেটে রাখুন। তাহলে ঝামেলায় পড়তে হবে না। সুনামগঞ্জ শহরে এসে এম এ খান সেতুর কাছে পাবেন মোটরবাইক অথবা গাড়ি। সেগুলোতে যেতে হবে তাহিরপুর বাজার। সেখান থেকে নৌকায় করে যেতে হবে মধ্যনগর গ্রামে। মধ্যনগর থেকে মহিষখোলা গ্রাম ১০ মিনিটের রাস্তা। দল বেঁধে ঘুরতে গেলেই বেশি আনন্দ করতে পারবেন।

জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা পেরিয়ে এগিয়ে চলেছি আমরা। স্নিগ্ধ সকাল। মহাসড়কে সূর্যের আভা পড়েছে তির্যকভাবে। আমরা যাচ্ছি সুনামগঞ্জ জেলার উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে ভারত সীমান্ত গোয়া ধর্মপাশা উপজেলায় মহিষখোলা গ্রামে। সেখানে ঘুমিয়ে আছেন একাত্তরের বীর শহীদেরা।
প্রকৃতির পালাবদলে শীতকাল এসেছে। তাই প্রকৃতির মাঝে চলেছে ঋতুবরণের পালা। আমরা চলেছি নতুন গন্তব্যে। পাগলা বাজারে এসে নামলাম। ঢুকে পড়লাম দয়াল মিষ্টান্ন ভান্ডারে। গরম-গরম পরোটা আর ভাজি দেওয়া হলো। পেটপূজা শেষ করে আমরা এগিয়ে চললাম গন্তব্যের পানে। ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এসে পৌঁছালাম সুনামগঞ্জ শহরে। সেখান থেকে যেতে হবে তাহিরপুর। প্রায় আড়াই ঘণ্টা যাত্রা শেষে হাজির হলাম সুনামগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের রোজ গার্ডেনে। এখানে দুপুরের খাওয়া শেষে আবারও রওনা দিলাম তাহিরপুরের দিকে।
গ্রামীণ পথে চলার মজাই আলাদা। দুই পাশে ধানখেত। মাঝ দিয়ে আমরা এগিয়ে চলছি। প্রায়
দুই ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে এসে আমরা পৌঁছালাম তাহিরপুর বাজারে। এবার আমাদের পাড়ি দিতে
হবে টাঙ্গুয়ার হাওর। সময় লাগবে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। মনে মনে সবাই খুশিই হলাম টাঙ্গুয়ার হাওর দেখা যাবে বলে। বাহন রয়েছে দুই ধরনের—ইঞ্জিনচালিত নৌকা আর স্পিডবোট। আমরা চেপে বসলাম ইঞ্জিন নৌকায়।
টাঙ্গুয়ার ঢেউয়ের তালে তালে এগিয়ে চলছি। নদীকেন্দ্রিক মানুষের জীবনধারা আমাদের মোহিত করছে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পেরিয়ে পৌঁছালাম ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যনগর গ্রামে। সেখানে জন্য অপেক্ষা করছিলেন সোহাগ আর মুনিম নামে দুজন। আমরা চেপে বসলাম দুই চাকার বাহনে। এখান থেকে মহিষখোলা গ্রামের দূরত্ব ১০ মিনিট। এই বাইকে করেই সেখানে যেতে হবে। সময়মতো পৌঁছানো গেল মহিষখোলা গ্রামে।
শান্ত নীরব পরিবেশ। ঘাসফড়িং মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছে এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্তে। এগিয়ে চললাম মহিষখোলা নদীর পূর্বপাড় ঘেঁষে একখানা প্রায় নিশ্চিহ্ন টিনের ঘরের উদ্দেশে। এর অস্তিত্ব সরেজমিনে দেখেও কল্পনায় তার পূর্ণ রূপ দেখা কল্পনাবিলাসীদের জন্যও হয়তো দুরূহ হবে। তার আশপাশে ৪২ বছর ধরে মানুষের ছোঁয়া পড়েনি, তাই জঙ্গলাকীর্ণ। সেই ঘরে ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধের ফাঁকে ফাঁকে বিশ্রাম নিতেন। পাকিস্তানি হানাদারদের মাঝেমধ্যে ধরে বন্দী করেও রাখতেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় এই অঞ্চল ছিল ১১ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর সাব-সেক্টর। এর পশ্চিমে গা ঘেঁষে মহিষখোলা নদী, উত্তরে ২০০ গজের মধ্যে ভারত সীমান্তে মেঘালয় পর্বতমালা, পূর্বে সংখ্যাহীন খালবিল এবং বিশাল টাঙ্গুয়ার হাওর। এর সঙ্গে রাগে-অনুরাগে জড়িয়ে আছে আরেকটি স্নিগ্ধ নদী—জাদুকাটা। শ্রীচৈতন্যের জ্যেষ্ঠ পার্ষদ অদ্বৈতাচার্য এই নদীপারের সন্তান ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধের মাঝামাঝি পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের এক ভয়াল সংঘর্ষ হয়। এতে অনেক যোদ্ধা মারা যান। মহিষখোলা নদীর পাড়ঘেঁষা সেই বাড়ি ধ্বংস হয়ে যায় তখনই, শহীদ যোদ্ধাদের গণকবর রচিত হয় তারই এদিক-সেদিক। তারপর ৪২ বছর লতা-গুল্ম-বৃক্ষের চাদরে ঢাকা ছিল এই ইতিহাস। বলছিলেন আমাদের সঙ্গী স্থপতি রাজন দাস। তিনি এখানে তৈরি করেছেন মুক্তিযুদ্ধের একটি স্মারক। এখানে শায়িত আছেন একাত্তরের শহীদ হওয়া বীর প্রাণেরা।
পূর্ব-পশ্চিম অক্ষ বরাবর সমান্তরাল দুটি সুউচ্চ দেয়াল ৯ ফুট বেদির ওপর এসে দাঁড়ায়, তার ওপর ছায়া হয়ে ছাদ এসে বসে। সিঁড়ি ভেঙে পূর্ব দিকের প্রবেশবিন্দুতে চোখ রাখলে পশ্চিমের নদী আর তার গায়ে এসে পড়া আকাশ দেখা যায়। পূর্ব-পশ্চিম উন্মুক্ত হওয়ায় দুই দেয়ালের ঘর রচিত হয়ে যায়। উত্তর-দক্ষিণের ২৭ ফুট উঁচু দেয়ালে ব্যাকরণ ভেঙে অনেক ছোট-বড় জানালা আড়াল খুলে আলোর উৎস হয়ে ওঠে। ঠিক চোখ মেলে তাকানোর মতো। ‘যারা এই দেশটাকে ভালোবেসে দিয়ে গেছে প্রাণ’ তারা তো বদ্ধ ঘরে থাকে না, যে ঘরে দোর-জানালায় অর্গল টানা, যে ঘরে আলোর ঝলক নেই, দোলা নেই, সে ঘরে স্বাধীনতা প্রবেশ করে না! তাই ‘সব কয়টা জানালা’ই খুলে রাখা হয়েছে। জানালা একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্যাংশ, যার ব্যবহারিক ও মনস্তাত্ত্বিক মূল্য অতুলনীয়। এটি আমাদের দর্শনেন্দ্রিয়ের মতো।
চোখ দিয়ে যেমন আমাদের দেহ-ঘরে আলো প্রবেশ করে, আমাদের প্রথম অভিজ্ঞতা চোখ দিয়ে হয়, তেমনই দেয়ালকে মুক্তি দেয় জানালা। তবেই দেয়ালের চোখ ফুটে আলো-বাতাস প্রবেশ করে গৃহে প্রাণের সঞ্চার হয়। এ জন্যই ‘খোলা জানালা’ আর ‘স্বাধীনতার চেতনা’ সমার্থক হয়ে উঠেছে। বেদির তিন দিক ঘিরে রয়েছে পানির আধার, যা পশ্চিমে নদীর সঙ্গে সংযুক্ত। প্রতি বর্ষাতেই মেঘালয়ের পাহাড়ি ঢল নামলে নদী উপচে বেদির তলায় কিছুক্ষণের জন্য হাঁটুপানি জমে। এটা হাওরাঞ্চলের চেনা দৃশ্য। এভাবে হাঁটুপানিতে দাঁড়িয়ে ‘সব কটা জানালা’ খুলে আমাদের ডাকছে ওরা, ‘যারা এই দেশটাকে ভালোবেসে দিয়ে গেছে প্রাণ’।
যাবেন কীভাবে
ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ সরাসরি এনা, হানিফ, শ্যামলী, ইউনিকসহ অনেক কোম্পানির বাস এই পথে চলাচল করে। তবে অবশ্যই অগ্রিম টিকিট কেটে রাখুন। তাহলে ঝামেলায় পড়তে হবে না। সুনামগঞ্জ শহরে এসে এম এ খান সেতুর কাছে পাবেন মোটরবাইক অথবা গাড়ি। সেগুলোতে যেতে হবে তাহিরপুর বাজার। সেখান থেকে নৌকায় করে যেতে হবে মধ্যনগর গ্রামে। মধ্যনগর থেকে মহিষখোলা গ্রাম ১০ মিনিটের রাস্তা। দল বেঁধে ঘুরতে গেলেই বেশি আনন্দ করতে পারবেন।

লোনলি প্ল্যানেট নামটির সঙ্গে অন্তত ভ্রমণপ্রিয় পাঠকেরা বেশ পরিচিত। ভ্রমণগাইড প্রকাশের পাশাপাশি পর্যটকদের ঘুরে বেড়াবার নানা তথ্য দিয়ে পর্যটকদের সাহায্য করে তারা। আর এ বিষয়ের লোনলি প্ল্যানেটের অভিজ্ঞতাই বলে দিচ্ছে অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন জায়গা, শহর বা দেশের যে তালিকা তারা করবে সেটি মোটেই হেলাফেলা করার মত
২৪ অক্টোবর ২০২৪
ডায়াবেটিসে রক্তে শর্করার মাত্রা খুব বেশি বা খুব কম—দুটোই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। রক্তে শর্করাকে নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখতে পারলে জটিলতা প্রতিরোধ করা সম্ভব। বেশির ভাগ মানুষ জানেন, কোন খাবার রক্তে শর্করার ওপর প্রভাব ফেলে। কিন্তু অনেকে হয়তো জানেন না, খাবার খাওয়ার সময়ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ...
১১ ঘণ্টা আগে
ঝরনাপাখি। নামে যার সঙ্গে ঝরনা জড়িয়ে, তার সঙ্গে ঝরনার সম্পর্ক যে নিবিড় হবে, সেটা না বললেও চলে। এই অপার্থিব সুন্দর পাখির বাহারি বাংলা নামের তালিকাও বেশ সমৃদ্ধ—নীলাম্বর জলখঞ্জরী, নীল পানগির্দি, ঝরনাপাখি, নীল কপালিগির্দি, নীলচে লালগির্দি ইত্যাদি।
১৮ ঘণ্টা আগে
বছরের শেষের দিকে এসে পর্যটন খাতে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে ভারত। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে দেখা গেছে, ভারতের পর্যটন প্রসার বাজেট সীমাবদ্ধতার মধ্যে পড়েছে। দেশটির এই অবস্থায় লাভবান হচ্ছে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রতিযোগীরা।
১৮ ঘণ্টা আগেনাকিব বাপ্পি

ঝরনাপাখি। নামে যার সঙ্গে ঝরনা জড়িয়ে, তার সঙ্গে ঝরনার সম্পর্ক যে নিবিড় হবে, সেটা না বললেও চলে। এই অপার্থিব সুন্দর পাখির বাহারি বাংলা নামের তালিকাও বেশ সমৃদ্ধ—নীলাম্বর জলখঞ্জরী, নীল পানগির্দি, ঝরনাপাখি, নীল কপালিগির্দি, নীলচে লালগির্দি ইত্যাদি।
ইংরেজিতে এর নাম প্লাম্বিয়াস ওয়াটার রেডস্টার্ট; আর দাঁতভাঙা বৈজ্ঞানিক নাম ফিনিকিউরাস ফুলিগিনোসাস।
ডিসেম্বরের শুরুর দিকের ঘটনা। মৌলভীবাজারের মাধবকুণ্ডে এই পাখির আগমন ঘটেছে—খবরটি পেয়েই মন অস্থির হয়ে উঠল। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বেশ কয়েকজন আলোকচিত্রী এর ছবি পোস্ট করে যেন সেই অস্থিরতার আগুনে ঘি ঢেলে দিলেন। ভাবছি কী করা যায়! ঠিক তখন কাকতালীয়ভাবে সিলেট থেকে অতি প্রিয় এক আলোকচিত্রীর কল পেলাম। আমি কল রিসিভ করতেই তিনি বললেন, ‘চলে আসো।’ তারপর জানালেন কারা কারা থাকবেন, কখন উপস্থিত হবেন ইত্যাদি তথ্য।
পরদিন রাতের বাসে কয়েকজন মিলে রওনা দিলাম কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে।
ভোরে পৌঁছে দেখি, ফটোগ্রাফার শামীম ভাই আর তাঁর সঙ্গী-সাথিরা ছবি তোলা শুরু করে দিয়েছেন। ফলে ‘মহাশয়কে’ খুঁজে পেতে বিশেষ বেগ পেতে হলো না। দীর্ঘ সময় নিয়ে মন-প্রাণ ভরে ছবি তুললাম। মাঝেমধ্যে ক্যামেরার শাটার চাপা থামিয়ে চর্মচক্ষু দিয়েও তার সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভুলিনি।
আকারে অত্যন্ত ছোট এই পাখির পুরুষ প্রজাতির গড় ওজন প্রায় ২২ গ্রাম আর স্ত্রী পাখির ১৮ গ্রাম। এত হালকা শরীরে কী পাহাড়সম সৌন্দর্যই না বয়ে বেড়ায় এরা!
শীতকালে পাহাড়ি নদীর ধারে এই ঝরনাপাখি অস্থায়ী নীড় বানায়। শীত বিদায় নিতেই চলে যায় গ্রীষ্মের গন্তব্যে। সেখানে পৌঁছেই সংসার গড়ায় মনোযোগী হয়। মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত এদের প্রজননকাল। স্ত্রী নীল পানগির্দি সাধারণত তিন অথবা চারটি হালকা গোলাপি-ধূসর কিংবা হালকা হলদে রঙের ডিম পাড়ে। ডিমে তা দেওয়ার ক্ষেত্রে সে একাই দায়িত্ব পালন করে। তবে ছানা লালন-পালনের দায়িত্ব পুরুষটির কাঁধেও সমানভাবে বর্তায়।
বাংলাদেশ ছাড়াও আফগানিস্তান, ভুটান, চীন, ভারত, লাওস, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামে এদের দেখা মেলে।
সবশেষে সেখান থেকে বিদায় নিয়ে সাগরনালে নীলপরীর সন্ধানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হলো, যা প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তির ভিন্ন এক গল্প। সেটি অন্য সময়ের জন্য তোলা থাক।
ক্যামেরা ব্যাগে নেওয়ার আগমুহূর্তে পাখিটি পানি আর মাটির সীমানাস্থলে এমনভাবে এসে বসল, দৃশ্যটা যেন এক ইলিউশন। মনে হলো, একটি পাখি হুট করে দুটো পাখি হয়ে গেছে। মনে মনে ‘ঝরনার জলে কার ছায়া গো’ বলতে বলতে সেদিনের মতো ক্লিক করলাম ঝরনাপাখির শেষ ছবিটি।
ছবি ও লেখা: নাকিব বাপ্পি

ঝরনাপাখি। নামে যার সঙ্গে ঝরনা জড়িয়ে, তার সঙ্গে ঝরনার সম্পর্ক যে নিবিড় হবে, সেটা না বললেও চলে। এই অপার্থিব সুন্দর পাখির বাহারি বাংলা নামের তালিকাও বেশ সমৃদ্ধ—নীলাম্বর জলখঞ্জরী, নীল পানগির্দি, ঝরনাপাখি, নীল কপালিগির্দি, নীলচে লালগির্দি ইত্যাদি।
ইংরেজিতে এর নাম প্লাম্বিয়াস ওয়াটার রেডস্টার্ট; আর দাঁতভাঙা বৈজ্ঞানিক নাম ফিনিকিউরাস ফুলিগিনোসাস।
ডিসেম্বরের শুরুর দিকের ঘটনা। মৌলভীবাজারের মাধবকুণ্ডে এই পাখির আগমন ঘটেছে—খবরটি পেয়েই মন অস্থির হয়ে উঠল। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বেশ কয়েকজন আলোকচিত্রী এর ছবি পোস্ট করে যেন সেই অস্থিরতার আগুনে ঘি ঢেলে দিলেন। ভাবছি কী করা যায়! ঠিক তখন কাকতালীয়ভাবে সিলেট থেকে অতি প্রিয় এক আলোকচিত্রীর কল পেলাম। আমি কল রিসিভ করতেই তিনি বললেন, ‘চলে আসো।’ তারপর জানালেন কারা কারা থাকবেন, কখন উপস্থিত হবেন ইত্যাদি তথ্য।
পরদিন রাতের বাসে কয়েকজন মিলে রওনা দিলাম কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে।
ভোরে পৌঁছে দেখি, ফটোগ্রাফার শামীম ভাই আর তাঁর সঙ্গী-সাথিরা ছবি তোলা শুরু করে দিয়েছেন। ফলে ‘মহাশয়কে’ খুঁজে পেতে বিশেষ বেগ পেতে হলো না। দীর্ঘ সময় নিয়ে মন-প্রাণ ভরে ছবি তুললাম। মাঝেমধ্যে ক্যামেরার শাটার চাপা থামিয়ে চর্মচক্ষু দিয়েও তার সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভুলিনি।
আকারে অত্যন্ত ছোট এই পাখির পুরুষ প্রজাতির গড় ওজন প্রায় ২২ গ্রাম আর স্ত্রী পাখির ১৮ গ্রাম। এত হালকা শরীরে কী পাহাড়সম সৌন্দর্যই না বয়ে বেড়ায় এরা!
শীতকালে পাহাড়ি নদীর ধারে এই ঝরনাপাখি অস্থায়ী নীড় বানায়। শীত বিদায় নিতেই চলে যায় গ্রীষ্মের গন্তব্যে। সেখানে পৌঁছেই সংসার গড়ায় মনোযোগী হয়। মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত এদের প্রজননকাল। স্ত্রী নীল পানগির্দি সাধারণত তিন অথবা চারটি হালকা গোলাপি-ধূসর কিংবা হালকা হলদে রঙের ডিম পাড়ে। ডিমে তা দেওয়ার ক্ষেত্রে সে একাই দায়িত্ব পালন করে। তবে ছানা লালন-পালনের দায়িত্ব পুরুষটির কাঁধেও সমানভাবে বর্তায়।
বাংলাদেশ ছাড়াও আফগানিস্তান, ভুটান, চীন, ভারত, লাওস, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামে এদের দেখা মেলে।
সবশেষে সেখান থেকে বিদায় নিয়ে সাগরনালে নীলপরীর সন্ধানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হলো, যা প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তির ভিন্ন এক গল্প। সেটি অন্য সময়ের জন্য তোলা থাক।
ক্যামেরা ব্যাগে নেওয়ার আগমুহূর্তে পাখিটি পানি আর মাটির সীমানাস্থলে এমনভাবে এসে বসল, দৃশ্যটা যেন এক ইলিউশন। মনে হলো, একটি পাখি হুট করে দুটো পাখি হয়ে গেছে। মনে মনে ‘ঝরনার জলে কার ছায়া গো’ বলতে বলতে সেদিনের মতো ক্লিক করলাম ঝরনাপাখির শেষ ছবিটি।
ছবি ও লেখা: নাকিব বাপ্পি

লোনলি প্ল্যানেট নামটির সঙ্গে অন্তত ভ্রমণপ্রিয় পাঠকেরা বেশ পরিচিত। ভ্রমণগাইড প্রকাশের পাশাপাশি পর্যটকদের ঘুরে বেড়াবার নানা তথ্য দিয়ে পর্যটকদের সাহায্য করে তারা। আর এ বিষয়ের লোনলি প্ল্যানেটের অভিজ্ঞতাই বলে দিচ্ছে অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন জায়গা, শহর বা দেশের যে তালিকা তারা করবে সেটি মোটেই হেলাফেলা করার মত
২৪ অক্টোবর ২০২৪
ডায়াবেটিসে রক্তে শর্করার মাত্রা খুব বেশি বা খুব কম—দুটোই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। রক্তে শর্করাকে নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখতে পারলে জটিলতা প্রতিরোধ করা সম্ভব। বেশির ভাগ মানুষ জানেন, কোন খাবার রক্তে শর্করার ওপর প্রভাব ফেলে। কিন্তু অনেকে হয়তো জানেন না, খাবার খাওয়ার সময়ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ...
১১ ঘণ্টা আগে
জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা পেরিয়ে এগিয়ে চলেছি আমরা। স্নিগ্ধ সকাল। মহাসড়কে সূর্যের আভা পড়েছে তির্যকভাবে। আমরা যাচ্ছি সুনামগঞ্জ জেলার উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে ভারত সীমান্ত গোয়া ধর্মপাশা উপজেলায় মহিষখোলা গ্রামে। সেখানে ঘুমিয়ে আছেন একাত্তরের বীর শহীদেরা।
১৭ ঘণ্টা আগে
বছরের শেষের দিকে এসে পর্যটন খাতে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে ভারত। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে দেখা গেছে, ভারতের পর্যটন প্রসার বাজেট সীমাবদ্ধতার মধ্যে পড়েছে। দেশটির এই অবস্থায় লাভবান হচ্ছে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রতিযোগীরা।
১৮ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

বছরের শেষের দিকে এসে পর্যটন খাতে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে ভারত। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে দেখা গেছে, ভারতের পর্যটন প্রসার বাজেট সীমাবদ্ধতার মধ্যে পড়েছে। দেশটির এই অবস্থায় লাভবান হচ্ছে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রতিযোগীরা।
ভ্রমণবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘স্কিফট’ তাদের প্রতিবেদনে সরকারি মালিকানাধীন এক্সিম ব্যাংকের একটি সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, বৈশ্বিক ভ্রমণ দ্রুতগতিতে পুনরুদ্ধার করা সত্ত্বেও ভারত পর্যটনের সম্পূর্ণ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছে।
২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন আন্তর্জাতিক পর্যটক ভ্রমণ করেছে। এ সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় ১০ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। মহামারি-পরবর্তী ভ্রমণ প্রবণতার হার বাড়া, উন্নত বিমান সংযোগ এবং শিথিল ভিসা নীতির কারণে বিশ্বব্যাপী পর্যটকদের সংখ্যা বেড়েছে।
‘স্কিফট’ জানিয়েছে, ভারত এই প্রবৃদ্ধির সামান্য অংশ ধরে রাখতে পেরেছে মাত্র।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ট্যাক্স টিএমআই জানিয়েছে, জানুয়ারি থেকে মার্চে ২৬ দশমিক ১৫ লাখ পর্যটকের তুলনায় এপ্রিল থেকে জুনে ভারতে বিদেশি পর্যটকের আগমন (এফটিএ) কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৪৮ লাখে। তবে তৃতীয় প্রান্তিকে কিছুটা বেড়েছে। ১৫ ডিসেম্বর সংসদে একটি প্রশ্নের লিখিত জবাবে ভারতের কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত বলেন, এ বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে মোট বিদেশি পর্যটক আগমন দাঁড়িয়েছে ৬১ দশমিক ৮৩ লাখ।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রান্তিক ভিত্তিতে ভারতে বিদেশি পর্যটকের আগমনের তথ্য পেশ করেন। সেই সংখ্যাগুলো হলো জানুয়ারি-মার্চ বা প্রথম প্রান্তিক: ২৬ দশমিক ১৫ লাখ, এপ্রিল-জুন বা দ্বিতীয় প্রান্তিক: ১৬ দশমিক ৪৮ লাখ এবং জুলাই-সেপ্টেম্বর বা তৃতীয় প্রান্তিক: ১৯ দশমিক ২০ লাখ।
শেখাওয়াত সংসদে তাঁর লিখিত জবাবে আরও জানান, বিদেশি পর্যটকের আগমন কমে যাওয়ার মূল কারণ বাংলাদেশ থেকে আসার সংখ্যা নিম্নমুখী হওয়া। এ ছাড়া তিনি আরও কিছু কারণের কথা উল্লেখ করেন। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ভ্রমণের ধরনে মৌসুমি তারতম্য, চলমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বিভিন্ন দেশ-নির্দিষ্ট গতিশীলতা।
শেখাওয়াত বলেন, পর্যটনমন্ত্রী ভারতকে একটি নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও আকর্ষণীয় বৈশ্বিক পর্যটন গন্তব্য হিসেবে প্রচারের জন্য বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে।
এদিকে ভ্রমণ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ভারতের পর্যটনশিল্পের জন্য আরও একটি কঠিন বছর পার হতে চলেছে।
সূত্র: স্কিফট, ট্যাক্স টিএমআই, মিন্ট

বছরের শেষের দিকে এসে পর্যটন খাতে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে ভারত। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে দেখা গেছে, ভারতের পর্যটন প্রসার বাজেট সীমাবদ্ধতার মধ্যে পড়েছে। দেশটির এই অবস্থায় লাভবান হচ্ছে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রতিযোগীরা।
ভ্রমণবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘স্কিফট’ তাদের প্রতিবেদনে সরকারি মালিকানাধীন এক্সিম ব্যাংকের একটি সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, বৈশ্বিক ভ্রমণ দ্রুতগতিতে পুনরুদ্ধার করা সত্ত্বেও ভারত পর্যটনের সম্পূর্ণ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছে।
২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন আন্তর্জাতিক পর্যটক ভ্রমণ করেছে। এ সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় ১০ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। মহামারি-পরবর্তী ভ্রমণ প্রবণতার হার বাড়া, উন্নত বিমান সংযোগ এবং শিথিল ভিসা নীতির কারণে বিশ্বব্যাপী পর্যটকদের সংখ্যা বেড়েছে।
‘স্কিফট’ জানিয়েছে, ভারত এই প্রবৃদ্ধির সামান্য অংশ ধরে রাখতে পেরেছে মাত্র।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ট্যাক্স টিএমআই জানিয়েছে, জানুয়ারি থেকে মার্চে ২৬ দশমিক ১৫ লাখ পর্যটকের তুলনায় এপ্রিল থেকে জুনে ভারতে বিদেশি পর্যটকের আগমন (এফটিএ) কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৪৮ লাখে। তবে তৃতীয় প্রান্তিকে কিছুটা বেড়েছে। ১৫ ডিসেম্বর সংসদে একটি প্রশ্নের লিখিত জবাবে ভারতের কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত বলেন, এ বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে মোট বিদেশি পর্যটক আগমন দাঁড়িয়েছে ৬১ দশমিক ৮৩ লাখ।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রান্তিক ভিত্তিতে ভারতে বিদেশি পর্যটকের আগমনের তথ্য পেশ করেন। সেই সংখ্যাগুলো হলো জানুয়ারি-মার্চ বা প্রথম প্রান্তিক: ২৬ দশমিক ১৫ লাখ, এপ্রিল-জুন বা দ্বিতীয় প্রান্তিক: ১৬ দশমিক ৪৮ লাখ এবং জুলাই-সেপ্টেম্বর বা তৃতীয় প্রান্তিক: ১৯ দশমিক ২০ লাখ।
শেখাওয়াত সংসদে তাঁর লিখিত জবাবে আরও জানান, বিদেশি পর্যটকের আগমন কমে যাওয়ার মূল কারণ বাংলাদেশ থেকে আসার সংখ্যা নিম্নমুখী হওয়া। এ ছাড়া তিনি আরও কিছু কারণের কথা উল্লেখ করেন। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ভ্রমণের ধরনে মৌসুমি তারতম্য, চলমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বিভিন্ন দেশ-নির্দিষ্ট গতিশীলতা।
শেখাওয়াত বলেন, পর্যটনমন্ত্রী ভারতকে একটি নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও আকর্ষণীয় বৈশ্বিক পর্যটন গন্তব্য হিসেবে প্রচারের জন্য বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে।
এদিকে ভ্রমণ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ভারতের পর্যটনশিল্পের জন্য আরও একটি কঠিন বছর পার হতে চলেছে।
সূত্র: স্কিফট, ট্যাক্স টিএমআই, মিন্ট

লোনলি প্ল্যানেট নামটির সঙ্গে অন্তত ভ্রমণপ্রিয় পাঠকেরা বেশ পরিচিত। ভ্রমণগাইড প্রকাশের পাশাপাশি পর্যটকদের ঘুরে বেড়াবার নানা তথ্য দিয়ে পর্যটকদের সাহায্য করে তারা। আর এ বিষয়ের লোনলি প্ল্যানেটের অভিজ্ঞতাই বলে দিচ্ছে অবশ্যই যাওয়া উচিত এমন জায়গা, শহর বা দেশের যে তালিকা তারা করবে সেটি মোটেই হেলাফেলা করার মত
২৪ অক্টোবর ২০২৪
ডায়াবেটিসে রক্তে শর্করার মাত্রা খুব বেশি বা খুব কম—দুটোই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। রক্তে শর্করাকে নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখতে পারলে জটিলতা প্রতিরোধ করা সম্ভব। বেশির ভাগ মানুষ জানেন, কোন খাবার রক্তে শর্করার ওপর প্রভাব ফেলে। কিন্তু অনেকে হয়তো জানেন না, খাবার খাওয়ার সময়ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ...
১১ ঘণ্টা আগে
জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা পেরিয়ে এগিয়ে চলেছি আমরা। স্নিগ্ধ সকাল। মহাসড়কে সূর্যের আভা পড়েছে তির্যকভাবে। আমরা যাচ্ছি সুনামগঞ্জ জেলার উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে ভারত সীমান্ত গোয়া ধর্মপাশা উপজেলায় মহিষখোলা গ্রামে। সেখানে ঘুমিয়ে আছেন একাত্তরের বীর শহীদেরা।
১৭ ঘণ্টা আগে
ঝরনাপাখি। নামে যার সঙ্গে ঝরনা জড়িয়ে, তার সঙ্গে ঝরনার সম্পর্ক যে নিবিড় হবে, সেটা না বললেও চলে। এই অপার্থিব সুন্দর পাখির বাহারি বাংলা নামের তালিকাও বেশ সমৃদ্ধ—নীলাম্বর জলখঞ্জরী, নীল পানগির্দি, ঝরনাপাখি, নীল কপালিগির্দি, নীলচে লালগির্দি ইত্যাদি।
১৮ ঘণ্টা আগে