Ajker Patrika

বিশ্বের বিপজ্জনক ১০টি সড়ক

ইশতিয়াক হাসান
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯: ২৫
বিশ্বের বিপজ্জনক ১০টি সড়ক

চান্দের গাড়িতে রাঙামাটির সাজেক যাওয়ার পথে কিংবা বগা লেকের ঠিক আগের চড়াইটা পেরোনোর সময় আপনার হয়তো মনে হতে পারে এমন বিপজ্জনক রাস্তা মনে হয় পৃথিবীতে আর নেই! কিন্তু বাস্তবে এগুলোর চেয়ে ঢের কঠিন রাস্তা পাবেন। কাজেই পাঠক সিটবেল্টটি ভালোভাবে বেঁধে নিন, বিশ্বের বিপজ্জনক ১০টি রাস্তার ভ্রমণে চলেছি আমরা। আগেই বলে রাখছি এই তালিকায় আমাদের প্রতিবেশী ভারত কিংবা পাকিস্তানের রাস্তা থাকলেও বাংলাদেশের কোনো সড়ক নেই।

1.-kellong-travel-himalayaকেলং কিশতওয়ার রোড, ভারত
যদি প্রচণ্ড রোমাঞ্চপ্রেমী হোন তবে খাঁড়া পর্বত কেটে যাওয়া ২৩৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ পথটি আপনার জন্য আদর্শ। হিমাচল প্রদেশের কেলং থেকে জম্মু-কাশ্মীরের কিশতওয়ার পর্যন্ত চলে যাওয়া এই সড়কের এক পাশে পাহাড়ের খাঁড়া দেয়াল, আরেক পাশে গভীর খাদ। নেই কোনো নিরাপত্তা দেয়াল।

পাহাড় ধ্বাসের ঝুঁকি এবং আবহাওয়ার নিত্য বদলে যাওয়া পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক করে তুলেছে একে। বিশেষ করে ‘ক্লিফ হেঙ্গার’ নামে পরিচিত রাস্তার একটি অংশ ভীষণ সরু এবং এর কাছাকাছি গেলে আপনিসহ অতল গহ্বরে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।

2সিচুয়ান-তিব্বত হাইওয়ে, চীন
বিশ্বের উচ্চতম সড়কগুলির একটি এটি। তুষারপাত এবং ভূমিধস এড়ানোর পাশাপাশি অনেক উচ্চতায় চলা মিলিয়ে এই রাস্তাটি যে কোনো চালককে কঠিন পরীক্ষায় ফেলবে। তবে এত কিছুর পরও এটি অত্যন্ত ব্যস্ত এক সড়ক। ক্রমাগত ট্রাফিক জ্যাম এবং পথের নানা বাধা-বিঘ্নের কারণে পুরো হাইওয়ে ভ্রমণ করতে কখনো কখনো ১৫ দিন সময় লাগতে পারে।

আপনি যদি এই রাস্তায় ভ্রমণ করার জন্য যথেষ্ট সাহসী হন, তবে পুরস্কার হিসেবে মিলবে তুষার-ঢাকা পর্বত এবং গভীর গিরিসঙ্কটের অত্যাশ্চর্য দৃশ্য দেখার সুযোগ ।

3. ibarska State-Road-22-1024x683ইবাসকা মাগ্রিসত্রালা, সার্বিয়া
স্টেট রোড ২২ বা ‘ইবার হাইওয়ে’ স্থানীয়ভাবে কালো মহাসড়ক নামেও পরিচিত। সার্বিয়ার অন্যতম ব্যস্ত মহাসড়কটি ইউরোপের সবচেয়ে বিপজ্জনক সড়কগুলোর একটি। গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি রাজধানী শহর বেলগ্রেডকে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরের পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশ মন্টেনেগ্রোর সঙ্গেও যুক্ত করেছে। 

লম্বা সোজা রাস্তায় হঠাৎ বিপজ্জনক কোণ বিশেষ করে রাতে দুর্ঘটনার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে। তবে বেশির ভাগ দুর্ঘটনার জন্য অবশ্য মদ পান করে গাড়ি চালানো বা গাড়ির উচ্চগতিকে দায়ী করা হয়।

4-transfagarasan-road-into-wallachia_47_34485ট্রান্সফগেরাসান, রোমানিয়া
এটি ইউরোপের সবচেয়ে সুন্দর মহাসড়কগুলোর একটি। একই সঙ্গে প্রচণ্ড বিপজ্জনক এক রাস্তাও এটি। ঘোরানো পাহাড়ি সড়কটি কোথাও কোথাও দুই হাজার মিটারের বেশি উচ্চতা দিয়ে গিয়েছে। ১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রাস্তাটিতে ভ্রমণের সময় প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে নয়ন জুড়াবে আপনার।

চুলের কাটার মতো বাঁক, বেশ কয়েকটি সুড়ঙ্গ এবং হঠাৎ উচ্চতার পরিবর্তন এই রাস্তা ধরে গাড়ি চালানো পর্যটকদের কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে। এই মহাসড়কে আপনি অন্য যে ঝামেলার সম্মুখীন হতে পারেন, তা হলো ভেড়ার বিশাল পাল। মেষপালকেরা তাদের ভেড়াগুলিকে চারণভূমিতে নিয়ে যাওয়ার জন্য এই পথটি ব্যবহার করে। তাই আপনার যদি তাড়াহুড়ো থাকে তবে এই রাস্তাটি এড়িয়ে চলাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

5.-Skippers_Canyon_Queenstown-1024x683-wikiস্কিপারস ক্যানিয়ন রোড, নিউজিল্যান্ড
স্কিপারস ক্যানিয়ন নিউজিল্যান্ডের একটি গিরিখাত। শটওভার নদী এ পথে গিয়েছে। ১৮৬২ সালে এই এলাকায় সোনা আবিষ্কৃত হলে গিরিখাতের মধ্য দিয়ে একটি রাস্তা নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়ে। খনি শ্রমিকেরা পাথুরে পাহাড়ের মধ্যে শুধুমাত্র সাধারণ সরঞ্জাম এবং বিস্ফোরক ব্যবহার করে এটি তৈরি করে। গিরিখাতের নরম পাথরের কারণে, বৃষ্টি হলে পথটি বিপজ্জনকরকম পিচ্ছিল হয়ে উঠে। 

হঠাৎ খাড়াভাবে নামা কিংবা ওঠে যাওয়া, অগণিত চুলের কাটাসদৃশ বাঁক ২২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটিকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। শুধুমাত্র একমুখী যাতায়াতের মতো প্রশস্ত এটি। এর কুখ্যাতি ও বিপজ্জনক প্রকৃতির কারণে, এই রাস্তাটিতে ভাড়ায় চলাচল করা গাড়ির বিমা কার্যকর হয় না।

রাস্তাটি সম্পূর্ণ হতে হতে খনির সোনার মজুত তলানিতে গিয়ে ঠেকে। কিন্তু ঐতিহাসিক মূল্য এবং অত্যাশ্চর্য দৃশ্যের কারণে এটি আজও একটি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য।

6জেমস ডালটন হাইওয়ে, যুক্তরাষ্ট্র
টিভি শো ‘আইস রোড ট্রাকারস’ এই সড়কটিকে জনপ্রিয় করে তুলতে ভূমিকা রাখে। জেমস ডাল্টন হাইওয়ে নামের এই দীর্ঘ রাস্তাটি ফেয়ারব্যাঙ্কস শহরকে আর্কটিক সার্কেলের ওপরে অবস্থিত উত্তরের জনপদ ডেডহর্সের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে।

আলাস্কার এক প্রকৌশলীর নামে নামকরণ করা ৬৬৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটি ব্যবহার করে মূলত তেলক্ষেত্রের কর্মীদের জন্য বিভিন্ন সরঞ্জাম ও জ্বালানি বহনকারী ট্রাকগুলি। রাস্তার মাত্র এক-তৃতীয়াংশ পাকা, বাকি অংশে আলগা নুড়ি ও পাথর ফেলা।

প্রতিকূল আবহাওয়া যেমন তুষার এবং বরফ—এই রাস্তায় ভ্রমণকারীদের জন্য বড় হুমকি। একেবারে নির্জন এলাকা দিয়ে যাওয়ায় এবং মেরু ভালুকের মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা আরও বিপজ্জনক করে তুলেছে রাস্তাটিকে।

7-জজিলা পাস, ভারত
লাদাখকে কাশ্মীর উপত্যকার সঙ্গে সংযুক্ত করেছে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি। হিমালয়ের পর্বতমালার বেশ উচ্চতায় অবস্থানের কারণে তুষারপাত এবং বরফ জমে কঠিন হয়ে যাওয়া এখানে অতি স্বাভাবিক ঘটনা। এতে প্রায়ই এটি কয়েক মাস বন্ধ থাকে।

কেবল একটি গাড়ির যাতায়াতের মতো চওড়া পথটি। কোনো নিরাপত্তা দেয়াল নেই এতে। রাস্তার এমন অনেক অংশ পাবেন যেখানে আপনার একপাশে পাহাড়, অন্য পাশে রাস্তার পরেই অতল খাদ। সংক্ষেপে এটি দুর্বলচিত্তদের কোনোভাবেই ভ্রমণ করা উচিত নয় এমন এক রাস্তা।

শীতকালীন আবহাওয়ায় নিরাপত্তা দিতে একটি বড় অংশ বরাবর একটি নতুন সুড়ঙ্গ তৈরি করা হচ্ছে। যা সারা বছর রাস্তাটি খোলা রাখতে সাহায্য করবে। তবে এটি রাস্তাটিকে আরও নিরাপদ করে কিনা তা দেখার বিষয়।

9.-meadow-roadফেয়ারি মিডোজ রোড, পাকিস্তান
মূর্তিমান এক দুঃস্বপ্নের মতো রাস্তাটি পাকিস্তানের উঁচু সব পর্বতের মধ্য দিয়ে চলে গেছে। কিছু পয়েন্টে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে তিন হাজার মিটার উচ্চতা অতিক্রম করেছে এটি। রাস্তাটা এতটাই সরু যে একবারে একটি গাড়ির জন্য যথেষ্ট প্রশস্ত। আর কোনো নিরাপত্তা দেয়াল না থাকায় চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে একেবারে নিচের উপত্যকায় গিয়ে তবেই থামবে গাড়ির পতন। আর এমন দুর্ঘটনা এখানে ঘটেও।

১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রাস্তাটি কারাকোরাম হাইওয়েকে ফেয়ারি মিডোজ জাতীয় উদ্যানের ছোট্ট গ্রামের তাতোর সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। অতিমাত্রায় বিপজ্জনক হওয়ায়, রাস্তাটিতে শুধুমাত্র স্থানীয়দের গাড়ি চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়।

8.-yangus-baliviaউত্তর ইয়াংগাস সড়ক, বলিভিয়া
অনেকের কাছেই বলিভিয়ার উত্তর ইয়াংগাস সড়ক পৃথিবীর সবচেয়ে বিপজ্জনক রাস্তা। এখানে ঘটা বিভিন্ন দুর্ঘটনা, রাস্তার নানা বাঁক আর ঢালের কারণে এটি পরিচিতি পেয়েছে ‘ডেথ রোড’ বা মৃত্যুসড়ক নামে।  অবশ্য সাম্প্রতিক সময়ে সড়কটির নিরাপত্তার ব্যাপারে কিছু উদ্যোগ নেওয়ায় পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে বলে জানা গেছে।

সড়কটি বলিভিয়ার রাজধানী লা পাজের সঙ্গে যুক্ত করেছে আমাজনের জঙ্গলের মধ্যকার এলাকা ইয়াংগাসকে। আর এটি করতে গিয়ে বিশাল, দুরারোহ করডিলেরা ওরিয়েন্টাল পর্বতমালা অতিক্রম করতে হয়েছে রাস্তাটিকে। হঠাৎ খাঁড়া নেমে যাওয়া, ওঠা কিংবা কড়া মোচড়—সব মিলিয়ে ভয়ানক এক রাস্তায় পরিণত হয়েছে এটি।

পথের শুরু লা পাজ থেকে, ৩ হাজার ৬৬০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত শহরটি পৃথিবীর উচ্চতম রাজধানী। এখান থেকে শুরুতে ওপর দিকে উঠে রাস্তাটি পৌঁছে ৪ হাজার ৬৫০ মিটার উচ্চতায় লা কুমবরে পাসে। তারপর একেবারে খাঁড়া নামতে শুরু করে করোইকো শহরে, এর উচ্চতা ১ হাজার ২০০ মিটার। আর এই সাড়ে তিন হাজার মিটারের বেশি পতন একে পৃথিবীর বিপজ্জনক রাস্তাগুলোর একটিতে পরিণত করতে সহায়তা করেছে। একটা সময় পর্যন্ত ফি বছর এ রাস্তায় অনেক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটত।

১৯৩০-এর দশকে চাকো যুদ্ধের সময় প্যারাগুয়ের কয়েদিদের দিয়ে বানানো হয় সড়কটি। কোথাও কোথাও পর্বতের খাঁড়া ঢাল কেটে তৈরি করা হয়েছে পথটি। রাস্তার এক পাশে কঠিন পাথুরে তাক, আরেক পাশে ৬০০ মিটার খাঁড়া গিরিখাদ। রাস্তাটির বেশির ভাগ অংশ সাড়ে তিন মিটার বা প্রায় ১১ ফুট চওড়া। অনেক জায়গায় নেই রেলিং।

আমাজনের দিক থেকে আসা উষ্ণ, ভেজা বাতাস আন্দিজের পুবের ঢালে বাধা পেয়ে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়, সেই সঙ্গে জন্ম দেয় কুয়াশার। এতে আরও বিপজ্জনক রূপ নেয় রাস্তাটি। গোদের ওপর বিষফোড়া হিসেবে মাঝেমধ্যেই পাহাড় থেকে কাদা বা পাথর ঝরতে শুরু করে, কোথাও কোথাও ওপরের কোনো জলপ্রপাতের পানিতেও সিক্ত হয় রাস্তাটি।

পৃথিবীর রোমাঞ্চপ্রেমীদের কাছে এ পথ পাড়ি দেওয়া সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে বিগত বছরগুলোতে সড়কটির আধুনিকায়ন করা হয়। এখন কারও কারও মতে, রাস্তাটি এখন আগের চেয়ে নিরাপদ। সত্যি কি তাই?

10বাইবুর্ত ডি ৯১৫, তুরস্ক
প্যাঁচানো এই পথটিকে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর রাস্তাগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচনা করার মূল কারণ চুলের কাটাসদৃশ বাঁক এবং একপাশের গভীর খাদ। এটি উত্তর উপকূলে কৃষ্ণ সাগরকে বাইবুর্ত শহরের সঙ্গে সংযুক্ত করে। প্রাচীন সিল্ক রোডের অংশ ছিল শহরটি প্রাচীনকালে।

রাস্তাটি স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ রুট। রাস্তার আলগা পাথর, প্রায়ই প্রতিকূল আবহাওয়ার মুখে পড়াসহ বিভিন্ন কারণে এ পথে চলতে হলে চালকদের ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হয়। 

সূত্র: বিবিসি সায়েন্স ফোকাস ম্যাগাজিন, ডিসকভারি ডট কম, উইকিপিডিয়া

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

উৎসবের এ মাসে লাল রঙের পোশাকের সঙ্গে যেমন হবে সাজ

ফারিয়া রহমান খান 
লাল রং উৎসব, সাহস ও ভালোবাসার প্রতীক। ছবি: পেক্সেলস
লাল রং উৎসব, সাহস ও ভালোবাসার প্রতীক। ছবি: পেক্সেলস

ডিসেম্বরের শুরু থেকে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান লেগেই থাকে। বিয়ে, বড়দিন, বছর শেষের আয়োজন, বারবিকিউ পার্টিসহ যেকোনো অনুষ্ঠানে পরে যাওয়ার জন্য লাল রঙের পোশাক অনেকের কাছেই সেরা পছন্দ। লাল রং উৎসব, সাহস ও ভালোবাসার প্রতীক। এই রঙের পোশাক পরলে এমনিতেই উজ্জ্বল দেখায়। তাই এই রঙের পোশাকের সঙ্গে মেকআপ এমন হওয়া জরুরি, যাতে পুরো লুকটা বিগড়ে না যায়।

লাল রঙের পোশাকের সঙ্গে যেভাবে মেকআপ করা যেতে পারে–

লাল পোশাকে ত্বকের খুঁত খুব সহজেই চোখে পড়ে, তাই নিখুঁত বেস তৈরি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনার ত্বকের রং ফরসা হলে ফাউন্ডেশনের বদলে টিন্টেড ময়েশ্চারাইজারই যথেষ্ট। তা না হলে ভালো ব্র্যান্ডের কালার কারেক্টর ও মানসম্মত ফাউন্ডেশন ব্যবহার করে ত্বকের দাগ ও অন্যান্য খুঁত ঢেকে ফেলুন। শোভন সাহা, কসমেটোলজিস্ট, স্বত্বাধিকারী, শোভন মেকওভার

ন্যুড গ্লো লুক

লাল পোশাক যেহেতু নিজেই উজ্জ্বল ও আকর্ষণীয়, তাই এর সঙ্গে একটি ভারসাম্যপূর্ণ লুকের জন্য খুব হালকা মেকআপই ভালো মানায়। ভারী ফাউন্ডেশনের বদলে টিন্টেড ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে ত্বকের সতেজ ও প্রাকৃতিক আভা বজায় থাকে। গালে হালকা ব্রোঞ্জিং পাউডার ও চোখে ন্যাচারাল আইশ্যাডো ও মাসকারা ব্যবহার করুন। লুকটি সম্পূর্ণ করতে ঠোঁটে দিন শিয়ার লিপজেল বা ন্যুড শেডের লিপস্টিক।

ক্ল্যাসিক রেড-অন-রেড

লাল পোশাকের সঙ্গে একই শেডের লাল লিপস্টিক একটি ক্ল্যাসিক কম্বিনেশন। দিনের সাজে হালকা মেকআপ, ব্রাউন পেনসিল লাইনার ও রোজি রেড ব্লাসন ব্যবহার করুন। রাতের সাজে ফাউন্ডেশন বেস, উইংড আইলাইনার ও ফলস ল্যাশ ব্যবহার করে লুকে আনুন আভিজাত্য।

ওল্ড-স্কুল-গ্ল্যামার লুক

এই লুকের জন্য কন্সিলার ও ফাউন্ডেশন দিয়ে বেস তৈরি করুন। চোখের মেকআপে ন্যাচারাল টোনের আইশ্যাডো দিন, উইং-টিপড লাইনার তৈরি করে মাসকারা ব্যবহার করুন। ঠোঁটে দিন বোল্ড লাল লিপস্টিক বা শিয়ার রেড লিপ গ্লস।

স্মোকি আই

রাতের মেকআপে চোখকে প্রাধান্য দিতে মুখ ও ঠোঁটের সাজে ব্যবহার করুন ন্যুড শেড। বিবি ক্রিম বা টিন্টেড ময়েশ্চারাইজার দিয়ে বেস তৈরি করুন। চোখের সাজে কন্সিলার, পেনসিল ও জেল লাইনারের পরে পাউডার শ্যাডো দিয়ে মেটালিক-স্মোকি একটা লুক তৈরি করুন।

ফান অ্যান্ড ফ্লার্টি লুক

ক্যাজুয়াল ও ফান লুক পেতে বেস হিসেবে টিন্টেড ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। চোখে ন্যুড শ্যাডো ও পেনসিল লাইনার দিন। চোখের মেকআপ ন্যূনতম রেখে ভল্যুমিনাস আইল্যাশ ব্যবহার করুন। গালে হালকা ব্লাসন দিন, তবে হাইলাইট করবেন না। ঠোঁটের জন্য টিন্টেড লিপ গ্লস বা শিয়ার পিংক লিপস্টিকই যথেষ্ট।

ঠোঁট ও নখ

খুব গ্ল্যামারাস লুক না চাইলে বা লুকে ভারসাম্য রাখতে ঠোঁটে সব সময় ন্যুড শেডের লিপস্টিক বা টিন্টেড লিপ গ্লস ব্যবহার করাই ভালো। সাজের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখতে নখের সাজে লাল রঙের নেইল পলিশ এড়িয়ে ন্যুড শেড বা ফ্রেঞ্চ মেনিকিউর বেছে নিতে পারেন, যা একটি ক্ল্যাসিক ও মার্জিত লুক দেবে।

চুল

লাল পোশাকের সঙ্গে চুলের সাজ একেবারেই সাধারণ রাখুন। খুব বেশি জাঁকজমকপূর্ণ খোঁপা বা টাইট কার্ল না করে হালকা কার্ল করা চুল বা খোলা চুল বেছে নিতে পারেন, যা আপনার মুখকে সুন্দরভাবে ফ্রেম করবে। খেয়াল রাখবেন, চুলের সাজ যেন আপনার সাজের মূল আকর্ষণ না হয় বা আপনার মুখমণ্ডল থেকে মনোযোগ সরিয়ে না দেয়। সাধারণ চুলের স্টাইলই আপনার পুরো সাজকে মার্জিত করে মেকআপকে হাইলাইট করবে।

চোখ বা ঠোঁট; যেকোনো একটিকে ফোকাল পয়েন্টে রাখুন

আকর্ষণীয় দেখাতে খুব ভারী মেকআপ বা গাঢ় রং ব্যবহার করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকুন। সাধারণ নিয়ম হিসেবে মুখের সব ফোকাল পয়েন্ট না বেছে, শুধু একটি অংশ হাইলাইট করার কৌশল বেছে নিন। এই একটি ফোকাল পয়েন্ট হতে পারে আপনার চোখ অথবা ঠোঁট; কিন্তু কখনই দুটি একসঙ্গে নয়। এভাবে মেকআপ করলে সহজেই একটি ক্ল্যাসিক ও মার্জিত লুক পাবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রজনন স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পুরুষদের যে ৭টি অভ্যাস বদলানো উচিত

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
প্রজনন বিশেষজ্ঞদের মতে, ৭টি অভ্যাস পুরুষের উর্বরতা কমিয়ে দিতে পারে। জীবন থেকে এ অভ্যাসগুল বাদ দিতে পারলে প্রজনন স্বাস্থ্য উন্নত হবে। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।
প্রজনন বিশেষজ্ঞদের মতে, ৭টি অভ্যাস পুরুষের উর্বরতা কমিয়ে দিতে পারে। জীবন থেকে এ অভ্যাসগুল বাদ দিতে পারলে প্রজনন স্বাস্থ্য উন্নত হবে। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

দাম্পত্য জীবনে সন্তানের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হলে বেশির ভাগ সময় নজর যায় নারীর দিকে। অথচ চিকিৎসাবিজ্ঞানের মতে, সন্তান ধারণের ক্ষেত্রে পুরুষের ভূমিকা সমান গুরুত্বপূর্ণ। সাম্প্রতিক একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বজুড়ে পুরুষদের শুক্রাণুর সংখ্যা কমে আসছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দৈনন্দিন জীবনযাপন, দূষণ, মানসিক চাপ ও অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস এ সমস্যার বড় কারণ।

ভারতের ইয়েলো ফার্টিলিটির প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ঈশা নান্দাল জানিয়েছেন, পুরুষের খাবার, ঘুম, কাজের ধরন, শরীরচর্চা ও বিশ্রামের অভ্যাস সরাসরি প্রভাব ফেলে হরমোনের ভারসাম্য ও শুক্রাণু উৎপাদনে। তাঁর মতে, অনেক সময় ছোট ভুলগুলোই শুক্রাণুর গুণগত মান নষ্ট করে দেয়। সুখবর হচ্ছে, এ ভুলগুলোর বেশির ভাগই পরিবর্তনযোগ্য।

প্রজনন বিশেষজ্ঞদের মতে, ৭টি অভ্যাস পুরুষের উর্বরতা কমিয়ে দিতে পারে।

দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ

মানসিক চাপ বা স্ট্রেস শরীরে কর্টিসল হরমোনের পরিমাণ বাড়ায়। এই হরমোনটি টেস্টোস্টেরন কমিয়ে দেয় এবং শুক্রাণু উৎপাদন ব্যাহত করে। যেহেতু একটি শুক্রাণু তৈরি হতে ৭০-৯০ দিন সময় লাগে, তাই কয়েক মাসের কাজের চাপ বা মানসিক অস্থিরতাও এটি তৈরির প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এ থেকে রক্ষা পেতে বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত ধ্যান, গভীর শ্বাসপ্রশ্বাস, পর্যাপ্ত ঘুম এবং শান্ত পরিবেশে সময় কাটানোর পরামর্শ দেন।

অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস

অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার শরীরের কোষের সুরক্ষা দেয় এবং পুরুষের প্রজননক্ষমতা উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে বাদাম, আঙুর, শস্যদানা, সবুজ শাকসবজি, বিভিন্ন ধরনের বীজ ও ফল শুক্রাণুর গুণগত মান, ঘনত্ব ও গতিশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে। এসব খাবারে থাকা ভিটামিন সি, ই, জিংক, সেলেনিয়াম এবং পলিফেনল শরীরের ফ্রি র‍্যাডিক্যাল কমিয়ে শুক্রাণুকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। অন্যদিকে অতিরিক্ত কফি খাওয়া, নিয়মিত জাংকফুড, মিষ্টি নাশতা বা অত্যধিক চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া শরীরে প্রদাহ বাড়ায় এবং হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। এসব খাবার শুক্রাণুর গতিশীলতা কমিয়ে দেয়, শক্তি কেড়ে নেয় এবং কখনো কখনো শুক্রাণুর সংখ্যা কমিয়ে দিতে পারে।

অতিরিক্ত তাপ ও অতিরিক্ত ব্যায়াম

শুক্রাণু তাপ সংবেদনশীল। কোলে ল্যাপটপ রাখা, খুব আঁটসাঁট পোশাক, গাড়ির গরম সিট, স্টিম বাথ টেস্টিকলের তাপমাত্রা বাড়িয়ে শুক্রাণু উৎপাদনে বাধা দেয়। আবার হালকা থেকে মাঝারি মাত্রার ব্যায়াম উপকারী হলেও অতিরিক্ত ব্যায়াম শরীরের স্বাভাবিক টেস্টোস্টেরন কমিয়ে দেয়, ফলে শুক্রাণু উৎপাদন বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

ধূমপান, অ্যালকোহল ও নেশাজাতীয় দ্রব্য

ডা. নান্দাল জানান, তামাক, অ্যালকোহল ও মাদকদ্রব্য শুক্রাণুর আকার, সংখ্যা ও গতিশীলতা নষ্ট করে। এমনকি মাঝেমধ্যে ব্যবহারেরও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব অভ্যাস কমানো বা সম্পূর্ণ বাদ দিলে কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাসের মধ্যেই শুক্রাণু তৈরির অবস্থা উন্নত হয়।

স্বাস্থ্য সমস্যা উপেক্ষা করা

ভ্যারিকোসিল, ডায়াবেটিস, স্থূলতা, দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণ ও থাইরয়েড সমস্যা থাকলে অনেক সময় লক্ষণ দেখা দেওয়া ছাড়াই পুরুষের শুক্রাণু কমে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। অনেক পুরুষ প্রকৃতিগত কারণেই এসব শারীরিক সমস্যাকে ছোট মনে করে বা দেরিতে চিকিৎসা নেয়। কিন্তু এসব সমস্যার শুরুতে পরীক্ষা, দ্রুত নির্ণয় ও চিকিৎসা সন্তান গ্রহণের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।

পরিবেশগত দূষণ ও রাসায়নিকের প্রভাব

কীটনাশক, ভারী ধাতু, প্লাস্টিকের রাসায়নিক, বায়ুদূষণ ও শিল্পকারখানার রাসায়নিক শুক্রাণুর গুণগত মান নষ্ট করে। যদিও পুরোপুরি এড়ানো যায় না, তবে বিপিএ মুক্ত বোতল, জৈব খাবার বা কম রাসায়নিকযুক্ত বিকল্প ব্যবহার করলে এ ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।

আগে থেকেই বীর্য পরীক্ষা না করানো

আগে বীর্য পরীক্ষা সাধারণত শেষ ধাপ হিসেবে ধরা হতো। এখন চিকিৎসকেরা পরিবার গঠনের পরিকল্পনা থাকলে পুরুষদের আগেই পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন। সহজ ও ব্যথামুক্ত এই পরীক্ষায় পুরুষের প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায় এবং সমস্যা থাকলে দ্রুত শনাক্ত করা সম্ভব হয়।

সুষম খাদ্য, পর্যাপ্ত ঘুম, মানসিক চাপ কমানো, ধূমপান ও অ্যালকোহল ত্যাগ, পরিবেশগত বিষাক্ততা কমানো এবং সময়মতো স্বাস্থ্য পরীক্ষা এসবই পুরুষদের উর্বরতা ভালো রাখতে বড় ভূমিকা রাখে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সন্তান নেওয়ার আগে পুরুষের স্বাস্থ্যকে সমান গুরুত্ব দিলে দীর্ঘমেয়াদি প্রজনন স্বাস্থ্য আরও শক্তিশালী হয়।

সূত্র: হেলথশট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: বহু যত্নে লালিত স্বপ্ন সত্যি হবে, সাবধানে মুখ খুলুন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৯
আজকের রাশিফল: বহু যত্নে লালিত স্বপ্ন সত্যি হবে, সাবধানে মুখ খুলুন

মেষ

আজ আপনার শরীরে এত বেশি এনার্জি থাকবে যে ভুলবশত বাড়ির সব ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র চার্জ করার চেষ্টা করতে পারেন। সকালে ঘুম থেকে উঠেই মনে হবে, আপনি একজন সুপারহিরো, যার হাতে এখনো কোনো মিশন নেই। এই এনার্জি দিয়ে হয়তো অফিসের বসের দেওয়া এক মাসের কাজ মাত্র দুই ঘণ্টায় শেষ করে ফেলবেন, কিন্তু তারপরে কী করবেন? বাকি ছয় ঘণ্টা সহকর্মীদের বিরক্ত করে কাটাবেন। মনে রাখবেন, অতিরিক্ত উৎসাহে আজ এমন কিছু করার চেষ্টা করবেন না, যাতে প্রতিবেশী আপনাকে দেখে দরজা বন্ধ করে দেয়। প্রেমের ক্ষেত্রে প্রিয়জনকে ইমপ্রেস করতে গিয়ে এমন কিছু বলে ফেলবেন, যা গুগলেও খুঁজে পাওয়া যায় না। অতিরিক্ত শক্তি কাজে লাগিয়ে আজ অন্তত একটা পুরোনো বাক্স গুছিয়ে ফেলুন। বাকিটা ওপরওয়ালার হাতে!

বৃষ

আপনার জীবনের ‘স্বযত্নলালিত স্বপ্ন’ আজ সত্যি হতে পারে! আর সেই স্বপ্নটি হলো, সারা দিন সোফায় শুয়ে থাকা এবং প্রিয় খাবার ডেলিভারি নেওয়া। আজ এমন এক গভীর আলস্যের জালে জড়িয়ে পড়বেন যে, রিমোট কন্ট্রোলটা হাত থেকে পড়ে গেলে সেটা তোলার জন্য কাউকে ফোন করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। কর্মক্ষেত্রে কাজের গতি হবে কচ্ছপের থেকেও ধীর। সহকর্মীরা ভাববে, আপনি হয়তো ধ্যানের নতুন কোনো উচ্চস্তরে পৌঁছে গেছেন। অর্থের দিক থেকে আজ এমন কিছু ডিসকাউন্ট খুঁজতে গিয়ে মূল্যবান সময় নষ্ট করবেন, যা আসলে অস্তিত্বহীন। আজ যদি কেউ আপনাকে তাড়াহুড়ো করতে বলে, মনে মনে বলুন: ‘আমি বৃষ, তাড়াহুড়ো আমার ডিকশনারিতে নেই। ওটা অন্য কোনো রাশির জন্য।’

মিথুন

আপনার ভেতরের দুটি মানুষ আজ সকাল থেকে প্রচণ্ড তর্কে লিপ্ত থাকবে। একজন বলবে, ‘আজ আমি পৃথিবীকে জয় করব!’ অন্যজন বলবে, ‘আরে বাবা, আগে ঠিক করো কোন রঙের মোজাটা পরবে!’ আপনি কোনো একটি বিষয়ে স্থির হতে পারবেন না। কফি না চা? লাল শার্ট না নীল? এই দ্বিধায় পুরো দিন কেটে যাবে। এমন কারও অভাব অনুভব করবেন, যে আপনার সব দ্বিমুখী সিদ্ধান্তকে একমুখী করে দিতে পারে। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপনি আজ চূড়ান্ত জনপ্রিয়। এত বেশি মেসেজ আসবে যে ফোন চার্জে দিয়েই আপনি হয়তো চার্জার খুঁজে পাবেন না। আজ একটি মাত্র কাজ করুন: স্থির থাকুন। যদি না পারেন, তাহলে একটি কয়েন টস করুন এবং টস হওয়ার আগেই সেই সিদ্ধান্তকে মেনে নিন।

কর্কট

আজ আপনার মন অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ। যেকোনো তুচ্ছ ঘটনাতেই চোখে পানি চলে আসতে পারে। হয়তো দেখবেন, ফ্রিজে শেষ রুটিটা দেখে অতীতের সব দুঃখ মনে পড়ে যাচ্ছে। মনে হবে, পৃথিবীর সবচেয়ে আরামদায়ক স্থান হলো ঘর। তাই আজ ঘর থেকে বের হতে চাইবেন না। যদি বের হতে হয়, তাহলে একটা বালিশ আর কম্বল সঙ্গে নিয়ে নিন—কে জানে কখন কোথায় একটু আবেগ নিয়ে বসা দরকার হয়! পরিবারকে নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করবেন। বিশেষত, বাড়ির পোষা প্রাণীটি ঠিকমতো খাচ্ছে কিনা, সেটা নিয়ে আজ গবেষণা করতে পারেন। আজ অতীতের স্মৃতি রোমন্থন করতে পারেন। তবে পুরোনো বিল বা ফাইনাল পরীক্ষার খাতা দেখলে চোখ মুছতে টিস্যু পেপার হাতের কাছে রাখুন।

সিংহ

আজ যা কিছু করবেন, তাতেই আপনার লাইমলাইট চাই। ধরুন, অফিসে এক গ্লাস পানি খেলেন, আপনার মনে হবে সেটা একটা প্রেস কনফারেন্সের যোগ্য ইভেন্ট। যদি কেউ আপনার দিকে না তাকায়, তাহলে নিজেই জোরে জোরে নিজের প্রশংসা শুরু করে দেবেন। আপনার মনে হবে, আপনার প্রতিটি পদক্ষেপই বুঝি ইতিহাস তৈরি করছে। প্রেমের ক্ষেত্রে, পার্টনার আপনার প্রশংসা না করলে আপনি হয়তো সাময়িক ধর্মঘট শুরু করে দিতে পারেন। সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে গেলে বিল দেওয়ার সময় এমন নাটকীয় ভঙ্গিতে মানিব্যাগ বের করবেন, যাতে মনে হয় আপনি পুরো গ্যালাক্সির দেনা মেটাচ্ছেন। সবার মনোযোগ পেতে আজ আপনি যা-ই করুন না কেন, শেষমেশ দেখবেন বাড়ির কুকুরটাই সবচেয়ে বেশি করতালি পাচ্ছে। সেটা মেনে নিন।

কন্যা

আজ আপনার মস্তিষ্ক একটি হাইপার-অ্যাকটিভ স্প্রেডশিটের মতো চলবে। আপনার প্রধান চিন্তা হবে, বালিশের কভারটি আর টেবিলের কোণটা একই সমান্তরালে আছে কি না। কাজের জায়গায় সহকর্মীর কফির মগে কতটুকু চিনি বেশি আছে, সেটা বের করে ফেলবেন। আর সেই খুঁত নিয়েই আপনি আজ একটি বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করে ফেলবেন। যদি দেখেন কোনো কিছু নিখুঁত নয়, তাহলে মেজাজ সপ্তমে উঠবে। দুশ্চিন্তা করবেন না, আজকের দিনের সবচেয়ে বড় ভুলটি হয়তো আপনিই করবেন, সঠিকটা করতে গিয়ে ভুলটা করে ফেলবেন! আজ দয়া করে নিজের চুল গুনতে শুরু করবেন না। আজ অন্তত একবার একটা ভুল করুন। স্বাধীনতা উপভোগ করুন!

তুলা

ন্যায়, ভারসাম্য এবং সৌন্দর্যের পূজারি আপনি আজ একটি কঠিন পরীক্ষায় পড়বেন। আপনাকে হয়তো ঠিক করতে হবে, দুপুরে ভাত খাবেন নাকি রুটি! এই নিয়েই অন্তত এক ঘণ্টা ভাববেন এবং শেষমেশ দুটোই খেয়ে ফেলবেন। কর্মক্ষেত্রে দুটি সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী মতের সঙ্গে সহমত হবেন, আর এতে সহকর্মীরা আপনাকে ‘ডাবল এজেন্ট’ ভাবতে পারে। প্রেমের ক্ষেত্রে পার্টনারের সামান্যতম অভিযোগ শুনেই এত বেশি ভারসাম্য আনতে চাইবেন যে সম্পর্কটা দড়ির ওপর হাঁটা সার্কাসের মতো মনে হবে। কোনো জটিল সিদ্ধান্ত এলে আজ শুধু একটা জিনিস ভাবুন: যেটাতে আপনার সবচেয়ে কম কষ্ট হবে। ব্যস! ব্যালেন্স নিজের থেকেই চলে আসবে।

বৃশ্চিক

আজ মন গভীর ষড়যন্ত্রে ব্যস্ত থাকবে। হয়তো ভাববেন, পাশের ডেস্কের সহকর্মী কেন আজ আপনার দিকে একটু বেশি হেসেছেন? এর পেছনে নিশ্চয়ই কোনো গভীর রহস্য আছে! সারা দিন ধরে সেই রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা করবেন, যা আসলে সামান্য দাঁত ব্রাশ করার পরের হাসি। তীব্র মনোযোগ আজ আপনাকে অনেক জটিল সমস্যার সমাধান দেবে, কিন্তু সেটা কাউকে বুঝতে দেবেন না। মনে রাখবেন, আপনার নীরবতা আজ একটি পারমাণবিক বোমার চেয়েও শক্তিশালী। লোকে ভাববে আপনি ধ্যান করছেন, কিন্তু আসলে ভাবছেন, কীভাবে প্রতিদ্বন্দ্বীর চায়ে লবণ মিশিয়ে দেবেন। কাউকে কিছু বলবেন না। নীরবতা আজ স্বর্ণময়। সেটা জমিয়ে রাখুন।

ধনু

আজ মন চঞ্চল, আজ বাড়ি ছেড়ে পালানোর পরিকল্পনা করতে পারেন। হয়তো অফিস থেকে সোজা হিমালয় বা চাঁদে চলে যাওয়ার টিকিট খুঁজতে থাকবেন। আপনার ফিলোসফিক্যাল রগ আজ এত বেশি চড়ে থাকবে যে, ট্রাফিক জ্যাম নিয়ে মহাজাগতিক সত্য আবিষ্কার করতে পারেন। আপনার অতি-সৎ কথাগুলো আজ কারও না কারও মন খারাপ করবে। হয়তো বলবেন, ‘তোমাকে এই শাড়িতে এত মোটা লাগছে না, যতটা গত সপ্তাহে লাগছিল।’ এই রাশিফল পড়ার সময়ও আপনি ভাবছেন, এটার কোথাও কোনো বানান ভুল আছে কি না। আজ মুখটা সাবধানে ব্যবহার করুন। বিশেষত যদি কোনো গুরুত্বপূর্ণ মিটিং থাকে, তাহলে কথা বলার আগে তিনবার কফি খান।

মকর

আজ আপনি বিশ্বের সবচেয়ে সফল এবং গম্ভীর মানুষ। মনে করবেন, পৃথিবীর সব দায়িত্ব আপনার কাঁধেই। আপনার প্রধান শখ হবে অন্যদের হাসতে দেখে বিরক্ত হওয়া। ভাববেন, ‘এরা এত হাসছে কেন? কাজের ডেডলাইন তো এখনো বাকি!’ আপনার মনে হবে, আপনি যদি এক ঘণ্টা ঘুমিয়ে নেন, তাহলে দেশের অর্থনীতিতে তার প্রভাব পড়বে। প্রেমের ক্ষেত্রে, পার্টনারকে ইমপ্রেস করতে কোনো রোমান্টিক ডিনার বা উপহার না দিয়ে, বরং একটি সুন্দর এক্সেল শিট তৈরি করে দেবেন, যেখানে আপনাদের সম্পর্কের আগামী ১০ বছরের লক্ষ্য লেখা থাকবে। আজকের দিনটি একটু আরাম করুন। না করলে মস্তিষ্ক আপনাকে মনে করিয়ে দেবে যে আপনার দাঁত ব্রাশ করা বাকি এবং এই ভুলটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

কুম্ভ

আজ এমন একটি অদ্ভুত আইডিয়া নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন, যা পৃথিবীর বাকি ১১টা রাশি কখনোই বুঝবে না। হয়তো ঠিক করবেন, প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে কীভাবে বিশ্বশান্তি আনা যায়, অথবা কেন সব শার্টে তিনটি করে কলার থাকা উচিত। আপনার সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টগুলো আজ খুবই বৈপ্লবিক হবে, কিন্তু বন্ধুরা হয়তো ভাববে আপনার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। কেউ আপনার কথা বুঝতে না পারলে আরও খুশি হবেন—কারণ জানেন আপনি কতটা এগিয়ে! প্রেম নিয়ে ভাবনা হবে, কেন এই ‘সামাজিক বন্ধন’-এর প্রয়োজন, যেখানে দুজন মানুষ শুধু নিজেদের মধ্যে একটি ইমোজি বিনিময় করেও দিব্যি থাকতে পারে। পরামর্শ: আপনার আইডিয়াগুলো খুব ভালো। কিন্তু আজ দয়া করে আপনার আইডিয়াগুলো দিয়ে পোষা প্রাণীটির ওপর কোনো পরীক্ষা করবেন না।

মীন

আজ বাস্তবের ধারেকাছেও থাকবেন না। দিনের বেশির ভাগ সময় এমন এক কল্পনার জগতে ভেসে বেড়াবেন, যেখানে আপনার সব বিল পরিশোধ হয়ে গেছে এবং পোষা মাছটা কথা বলতে পারে। কাজের জায়গায় ভুলবশত সহকর্মীকে ‘আমার স্বপ্নে দেখা রাজকুমার/রাজকুমারী’ বলে ডাকতে পারেন। মনে হবে, জীবন একটি হিন্দি সিনেমা, আর আপনি তার হিরো/হিরোইন। যদি কিছু ভুলে যান, যেমন চাবি বা মানিব্যাগ, তার জন্য গ্রহদের দোষ দেবেন। সন্ধ্যায়, হয়তো এত বেশি সহানুভূতিশীল হয়ে উঠবেন যে টিভির সিরিয়ালের ভিলেনের দুঃখেও চোখে পানি চলে আসবে। আজ চোখ খুলে হাঁটুন। আর যদি চারপাশের মানুষ আপনাকে কিছু জিজ্ঞেস করে, তাহলে চোখ বন্ধ করে শুধু ‘হুম’ বলে দিন। নিরাপদ থাকবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কাজুবাদাম দিয়ে গরুর মাংসের ঝাল রসা

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
কাজুবাদাম দিয়ে গরুর মাংসের ঝাল রসা।
কাজুবাদাম দিয়ে গরুর মাংসের ঝাল রসা।

ডিসেম্বরের ছুটির দিন খানিকটা আলাদা তো বটেই। এমন শীতের দুপুরে জমিয়ে খাওয়াদাওয়া না হলে চলে? শিশুদের স্কুল ছুটি বলে দিনগুলোও থাকে চাপমুক্ত। তাই ছুটির দিনে একটু বেশি সময় নিয়ে মজাদার খাবার তৈরিতে মেতে উঠতে মায়েদের কোনো বাধা নেই। পোলাওয়ের সঙ্গে গরুর মাংসের আলু ঝোল না করে একটু ভিন্নভাবে মাংসটা রেঁধে ফেলুন না! আপনাদের জন্য কাজুবাদাম দিয়ে গরুর মাংসের ঝাল রসার রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা

উপকরণ

গরুর মাংস ১ কেজি, আদা ও রসুন বাটা ২ টেবিল চামচ, টক দই আধা কাপ, পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ, গরম মসলা গুঁড়া ১ চা-চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, তেজপাতা ২ পিস, কাজুবাদাম বাটা ১ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচ ফালি ৮ থেকে ১০টি, বেরেস্তা আধা কাপ, লবণ স্বাদমতো, সয়াবিন তেল আধা কাপ।

প্রণালি

গরুর মাংস টক দই এবং সব বাটা ও গুঁড়া মসলা দিয়ে মাখিয়ে ঢেকে রাখুন ২ থেকে ৩ ঘণ্টা। কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি হালকা বাদামি করে ভেজে তাতে মাখানো মাংস দিয়ে দিন। তারপর ভালোভাবে নেড়ে অল্প আঁচে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রান্না করে ঢাকনা দিয়ে দিন। এবার ঢাকনা খুলে মাংস ভালোভাবে কষান। যদি মাংস সেদ্ধ না হয়, তবে সামান্য পানি দিন। মাংসের ওপর তেল ভেসে উঠলে কাঁচা মরিচ ফালি ও পেঁয়াজ বেরেস্তা দিয়ে দমে রাখুন ১০ থেকে ১৫ মিনিট। ব্যস, রান্না হয়ে গেল কাজুবাদাম দিয়ে গরুর মাংসের ঝাল রসা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত