Ajker Patrika

নিরাপদ সড়ক: ধীরগতিতে চলছে ৪ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকার প্রকল্প

সৌগত বসু, ঢাকা
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৪, ১২: ৫৩
নিরাপদ সড়ক: ধীরগতিতে চলছে ৪ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকার প্রকল্প

দেশের সড়কগুলো নিরাপদ করতে নেওয়া নিরাপদ সড়ক প্রকল্পের কাজ চলছে ধীরগতিতে। গত বছরের মে মাসে শুরু হওয়া ৪ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকার এই প্রকল্পে এখনো সব পরামর্শকই নিয়োগ হয়নি। প্রেষণে সব কর্মকর্তা দেওয়ার কথা থাকলেও এমন আছেন মাত্র সাতজন। বাকিরা অতিরিক্ত দায়িত্বে। 

এই প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক ৩ হাজার ৭০৭ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে। বাকি টাকার জোগান দিচ্ছে সরকার। পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে সরে যাওয়ার পর বিশ্বব্যাংক বিগত আওয়ামী লীগের ১৫ বছরে এই একটিমাত্র প্রকল্পে অর্থায়ন করছে। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৮ সালের জুন। প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব জানা গেছে। 

প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ), বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ পুলিশ—এই চার সংস্থা আলাদাভাবে সড়ক নিরাপদ করার লক্ষ্যে কাজ করবে। প্রকল্পের শুরুতে পাইলট প্রকল্প হিসেবে জয়দেবপুর-এলেঙ্গা মহাসড়ক ও নাটোর-রাজশাহী মহাসড়ক নিয়ে সংস্থাগুলো কাজ করছে। 

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. শামছুল হক বলেন, এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে মূলত বিদেশি দাতাগোষ্ঠীর আগ্রহে। তাদের নানা রকম অর্থনৈতিক স্বার্থ থাকে। বাস্তবায়নকারী বিভিন্ন সংস্থারও নানা স্বার্থ থাকে। তিনি বলেন, এর আগে বাংলাদেশ পুলিশ সড়ক নিরাপত্তার জন্য তিনটি প্রকল্প নিয়েছে। সেগুলো মুখ থুবড়ে পড়েছে। বিপুল ব্যয়ে কিছু অবকাঠামোগত উন্নয়ন করলেই সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় না। পুলিশ, বিআরটিএ, সওজ—সব পক্ষকে সড়ক আইন বাস্তবায়নে আরও সক্রিয় ও সমন্বিত উপায়ে কাজ করতে হবে।

সূত্র বলেছে, প্রকল্পে ব্যয়ের ১ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা দিচ্ছে সরকার। প্রকল্পের অধীনে সড়ক নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদারের লক্ষ্যে উন্নত প্রকৌশল নকশা, পথচারীর জন্য সুবিধা, সংকেত ও চিহ্ন স্থাপন, গতিসীমা নির্ধারণ এবং জরুরি সেবা বাস্তবায়ন করা হবে। এসব ব্যবস্থায় পাইলট প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত দুটি মহাসড়কে দুর্ঘটনায় মৃত্যুহার কমপক্ষে ৩০ শতাংশ কমাতে সহায়ক হবে বলে আশা প্রকল্পসংশ্লিষ্টদের।

বিপুল ব্যয়ে কিছু অবকাঠামোগত উন্নয়ন করলেই সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় না। সড়ক আইন বাস্তবায়নে আরও সক্রিয় ও সমন্বিত উপায়ে কাজ করতে হবে। ড. শামছুল হক অধ্যাপক, বুয়েট

প্রকল্পের অংশ হিসেবে বিআরটিএ জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম বাড়ানোর পাশাপাশি ৬০ হাজার দক্ষ চালক তৈরি করবে। পুলিশ সমন্বিত ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও দুর্ঘটনা চিহ্নিত করার ব্যবস্থা চালু করবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সংস্কার করবে এবং দুর্ঘটনায় গুরুতর আহতদের চিকিৎসায় নার্সদের আধুনিক প্রশিক্ষণ ও একটি জরুরি কল সেন্টার স্থাপন করবে।

প্রকল্প সূত্র বলছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা; বিভিন্ন মালপত্র কেনাকাটায় প্রাক্কলিত ব্যয় ২০৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। ভূমি অধিগ্রহণ খাতে ৪০১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ ও তাঁদের নানা কার্যক্রমে ১২৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, প্রকল্পের প্রচার খাতে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২ কোটি ৬২ লাখ টাকা। পরামর্শক খাতে ব্যয় ২১৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। এতে সওজ ছাড়াও বিআরটিএ, বাংলাদেশ পুলিশ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শকদের ব্যয়ও অন্তর্ভুক্ত। মার্কিন ডলারের মূল্যবৃদ্ধি বা বিশ্ববাজারে পণ্যের দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে ৩৪০ কোটি ১০ লাখ টাকা আলাদাভাবে বরাদ্দ করা হয়েছে। 

প্রকল্প পরিচালক মো. আমান-উল্লাহ জানান, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রকল্পটিতে সরকার ১ কোটি ৫২ লাখ টাকা বরাদ্দ করে। অটোমেশন খাত থেকে এসেছে ৭৩ লাখ টাকা। বিগত অর্থবছরে প্রকল্পের অগ্রগতি শূন্য দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রকল্পে এডিপি বরাদ্দ ৬৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এই অর্থবছরে সরকার ছাড় করেছে ২৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। অটোমেশন থেকে এসেছে ৪০ কোটি টাকা। অগ্রিম অর্থছাড় হয়েছে ২০৯ কোটি টাকা, যা গত জুনে একটি ব্যাংকে রাখা হয়েছে। 

প্রকল্প সূত্র জানায়, পাইলট প্রকল্পের দুটি মহাসড়কের পরিকল্পনাগত বিষয় নিয়ে কাজ করবে সওজ; যানবাহনের লাইসেন্স, ফিটনেস নিয়ে কাজ করবে বিআরটিএ; দুর্ঘটনার পর যাত্রীর সেবা নিয়ে কাজ করবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং সড়কে নিরাপত্তা ও নজরদারি নিয়ে কাজ করবে পুলিশ। এই চার সংস্থার জন্য নিয়োগ দিতে হবে ১২ পরামর্শক। তবে এ পর্যন্ত নিয়োগ হয়েছে পাঁচ পরামর্শক। এর মধ্যে ওই দুই মহাসড়কের জরিপ নিয়ে কাজ করছে একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। তাদের জরিপ শেষে সেটি নিয়ে আলাদা ডিজাইন করবে আরেকটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। তবে ওই পরামর্শক এখনো নিয়োগ হয়নি। এ ছাড়া ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর বিভাগের ৫ হাজার ২০০ কিলোমিটার সড়ক জরিপ করা হবে। পরে সেগুলোর মান কমপক্ষে থ্রি স্টার করা হবে।

প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) ওই চার সংস্থার কর্মকর্তাদের প্রকল্পে প্রেষণে দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে প্রকল্প পরিচালকসহ সওজের শুধু ৭ জন কর্মকর্তা প্রেষণে এসেছেন। বাকি ৪২ কর্মকর্তা অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে প্রকল্পে আছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সওজের ১৬ জন, পুলিশের ১৩, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৬ ও বিআরটিএর ৭ কর্মকর্তা। অধিকাংশ কর্মকর্তা অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে প্রকল্পে আসায় সমন্বয়ে সমস্যা হচ্ছে। অতিরিক্ত দায়িত্ব পাওয়া কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক প্রকল্পের কাজে সম্পৃক্ত নন, শুধু ডাকলেই আসেন। তবে ডাকলেও কেবল সংস্থাগুলোর একজনকে পাঠানো হয়। 

জানতে চাইলে প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. আমান-উল্লাহ বলেন, পরামর্শক নিয়োগ ও জরিপ পর্যায়ে কাজ চলছে। অন্যান্য সংস্থার কর্মকর্তারা অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে কাজ করছেন। ২৮ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে তাঁকে প্রকল্প নিয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদি হত্যা: ফয়সালসহ সংশিষ্টদের অ্যাকাউন্টে ১২৭ কোটি টাকার লেনদেন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৩৬
হাদি হত্যা মামলায় প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত
হাদি হত্যা মামলায় প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যা মামলায় প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে ১২৭ কোটি টাকার বেশি অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। প্রাথমিকভাবে এসব লেনদেন সন্দেহজনক হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অর্থ পাচার সংক্রান্ত অনুসন্ধান শুরু করেছে সিআইডি।

আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আবু তালেব এসব তথ্য জানান।

সিআইডি জানায়, বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা থেকে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে এই অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়। এসব অর্থ মানিলন্ডারিং, সংঘবদ্ধ অপরাধ এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রমে অর্থায়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে ওসমান হাদি মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনার পরপরই সিআইডি এই হত্যাকাণ্ডের ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তের ধারাবাহিকতায় গ্রেপ্তার অভিযানের সময় উদ্ধার করা বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই সিআইডি গুরুত্বসহকারে বিশ্লেষণ করে। এতে দেখা যায়, প্রধান আসামি ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা একাধিক চেক বইয়ে বিভিন্ন অঙ্কের অর্থের উল্লেখ রয়েছে। যদিও এসব লেনদেন চূড়ান্তভাবে সম্পন্ন হয়নি, তবুও এসব রেকর্ডের সমষ্টিগত মূল্য প্রায় ২১৮ কোটি টাকা।

সিআইডির প্রাথমিক বিশ্লেষণে আরও উঠে এসেছে, ফয়সাল ও তাঁর সংশ্লিষ্টদের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ১২৭ কোটি টাকার বেশি অস্বাভাবিক লেনদেন সংঘটিত হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে মানিলন্ডারিং বিষয়ে পৃথক অনুসন্ধান শুরু করা হয়েছে। একই সঙ্গে ফয়সাল ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে থাকা প্রায় ৬৫ লাখ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে দ্রুত বাজেয়াপ্ত করার লক্ষ্যে আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হচ্ছে।

সিআইডি জানিয়েছে, এসব অর্থের মূল সরবরাহকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করার পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডের পেছনে পরিকল্পনা, অর্থায়ন ও অস্ত্র সরবরাহে কোনো সংঘবদ্ধ ও শক্তিশালী নেটওয়ার্ক জড়িত ছিল কি না, সে বিষয়েও একাধিক তদন্ত দল কাজ করছে। অন্যান্য সংস্থার সমন্বয়ে মূল হোতাকে গ্রেপ্তার এবং পুরো অপরাধচক্র উন্মোচনে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎হাদি হত্যা মামলার প্রধান আসামি ফয়সালের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফয়সাল করিম মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত
ফয়সাল করিম মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যা মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আজ রোববার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মোহাম্মদ জুনায়েদ এ আদেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ নির্দেশ দেন। আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের দপ্তর থেকে ফয়সালের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়টি জানা যায়। এর পাশাপাশি পুলিশের বিশেষ শাখাকে (এসবি) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনে বলা হয়েছে, ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে বিজয়নগর এলাকায় শরিফ ওসমান বিন হাদি একটি রিকশায় যাওয়ার সময় মোটরসাইকেল আসা দুই ব্যক্তির একজনের গুলিতে আহত হন।

ঘটনার পরপর তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেওয়ার পর সেখানকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার মারা যান হাদি।

এ ঘটনায় ১৪ ডিসেম্বর পল্টন থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন ইনকিলাব মঞ্চের যুগ্ম সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের। হাদির মৃত্যুর পর মামলাটি হত্যা মামলায় রূপ নেয়।

ঘটনার পর থেকেই মামলার প্রধান আসামি ফয়সালকে গ্রেপ্তারের সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্তু তাঁকে এখনো গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। প্রধান আসামি ফয়সাল দেশে থাকলে যাতে বিদেশ গমন করতে না পারে সে জন্য আদালতের নিষেধাজ্ঞা জারি করা প্রয়োজন।

এদিকে অতিরিক্ত আইজিপি খন্দকার রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, হাদি হত্যা মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের অবস্থান সম্পর্কে তাঁদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। ফয়সাল দেশের বাইরে চলে গেছেন, এমন নির্ভরযোগ্য তথ্যও পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আগামী পাঁচ দিন শীতের অনুভূতি বাড়বে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢাকা ছিল রংপুরের মিঠাপুকুর। ছবি: প্রদীপ কুমার গোসামী
আজ সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢাকা ছিল রংপুরের মিঠাপুকুর। ছবি: প্রদীপ কুমার গোসামী

পৌষের শুরুতেই ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে সড়ক, মাঠ ও জনপদ। গতকাল থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করেছে। হিমেল হাওয়ার সঙ্গে ঘন কুয়াশা মিশে সাধারণ মানুষের জীবনে শীতের প্রভাব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী পাঁচ দিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। বিশেষ করে দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে শীতের প্রকোপ বেশি থাকবে।

শীতের কারণে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে মহাসড়ক ও নদীপথে সতর্কতার সঙ্গে চলাচল করতে হচ্ছে চালক ও নৌযান সংশ্লিষ্টদের। শীতের কারণে ফুটপাতে থাকা নিম্ন আয়ের মানুষ ও ছিন্নমূলদের কষ্টও বেড়েছে।

আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, পরবর্তী ১২০ ঘণ্টা অর্থাৎ পাঁচ দিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। একই সঙ্গে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমে শীতের অনুভূতি আরও বাড়বে।

আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চলতি সপ্তাহে শৈত্যপ্রবাহের কোনো সম্ভাবনা নেই। শীত তীব্রতা প্রকট না হলেও চলতি সপ্তাহে শীত কিছুটা বাড়বে।’

আবহাওয়া অধিদপ্তরে পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করলেও এর বর্ধিতাংশ উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এই পরিস্থিতির কারণে দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে এবং কুয়াশার প্রবণতা বাড়বে।

আবহাওয়া অফিস বলছে, ২২ ও ২৩ ডিসেম্বর দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে কুয়াশা আরও ঘন হতে পারে। এ সময় রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমার সম্ভাবনা রয়েছে। ২৪ ও ২৫ ডিসেম্বরেও শীতের দাপট অব্যাহত থাকবে। তবে বড় কোনো আবহাওয়াগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অবশেষে প্রজাপতি প্রতীকে নিবন্ধন পেল আমজনতার দল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ০৯
নিবন্ধন সনদ হাতে তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
নিবন্ধন সনদ হাতে তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে অবশেষে আমজনতার দলকে নিবন্ধন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নিবন্ধনসংক্রান্ত দাবি আপত্তি নিষ্পত্তির পর প্রজাপতি প্রতীকে দলটিকে নিবন্ধন সনদ দেওয়া হয়েছে।

আজ রোববার সন্ধ্যায় ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত সনদটি আমজনতার দলের সাধারণ সম্পাদক তারেক রহমানকে হস্তান্তর করা হয়।

এর আগে দুটি দাবি আপত্তির বিষয়ে ১৫ ডিসেম্বর শুনানি করে নির্বাচন কমিশন।

নিবন্ধন পাওয়ার পর তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা কোনো জোটে যাব না। এককভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেব।’

রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন না পাওয়ায় গত নভেম্বরের শুরুতে আগারগাঁওয়ে ইসি ভবনের প্রধান ফটকের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেন তারেক রহমান।

তারেক তখন সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, নিবন্ধনের সব যোগ্যতা পূরণ করা হলেও তাঁর দলকে নিবন্ধন দিচ্ছে না ইসি। বিভিন্ন সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করায় আমজনতার দল নিবন্ধন পাচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

বিএনপি, গণঅধিকার পরিষদসহ কয়েকটি দল সে সময় তারেক রহমানের প্রতি সংহতি জানিয়ে তাঁর দলকে নিবন্ধন দিতে ইসির প্রতি আহ্বান জানায়।

একপর্যায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের অনুরোধে প্রায় ১৩৩ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙেন তারেক রহমান।

এ পরিস্থিতিতে গত ১৮ নভেম্বর রিভিউয়ের জন্য আবেদন করার পর আমজনতার দলকে পর্যালোচনায় রাখে ইসি। একই সঙ্গে আরও ছয়টি দলকে পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত হয়।

দলগুলো হলো—বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদ (শাজাহান সিরাজ), জাতীয় জনতা পার্টি, বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি ও জনতার দল।

এর মধ্যে আমজনতার দল আজ নিবন্ধন সনদ পেল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত