এ কে এম শামসুদ্দিন

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর দেশব্যাপী যে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে, তা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য হলেও অপ্রত্যাশিত ছিল না। ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলন দমনের নামে পুলিশ যে নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, তার প্রতিক্রিয়ায় বিভিন্ন জেলার থানাগুলো আক্রমণের শিকার হয়েছে। একই সঙ্গে পুলিশকে হত্যা করে অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুটপাট করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। অগ্নিসংযোগ করে পুলিশের গাড়ি এবং থানা ভবন পুড়িয়ে দিয়েছে। তবে, এর মধ্যে যে স্পর্শকাতর বিষয়টি ঘটেছে তা হলো, দেশের কোনো কোনো স্থানে হিন্দু জনগণ ও তাদের বাড়িঘর আক্রমণের শিকার হয়েছে। তাদের বাড়ি-ঘর লুটপাট-অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে। এই অনৈতিক আক্রমণের হাত থেকে মন্দিরও রেহাই পায়নি। এসব ছাড়াও আরও দুটো বিশেষ ঘটনা আমার কাছে সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত মনে হয়েছে। সংসদ ভবনে প্রবেশ করে পবিত্রতা নষ্ট করা এবং বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত, বিশেষ করে মুক্তিসংগ্রামের অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এ কাজটি সম্পূর্ণ অন্যায্য মনে হয়েছে। এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা, আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে অর্জিত বিজয়কে কিছুটা হলেও ম্লান করে দিয়েছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ঢাকাসহ সারা দেশে প্রায় দেড় হাজার ভাস্কর্য, সিরামিক অথবা টেরাকোটা দিয়ে দেয়ালে খোদাই করে ফুটিয়ে তোলা ভাস্কর্য, ম্যুরাল ও স্মৃতিস্তম্ভ ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও উপড়ে ফেলা হয়েছে। এসব ভাস্কর্য ও ম্যুরাল বেশির ভাগই ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। সঙ্গে স্বাধীনতাসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক ভাস্কর্যও ছিল। রাজধানীর সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য মৃণাল হকের ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ঘোড়াগাড়ি ও রিকশার ভাস্কর্যও রেহাই পায়নি। দুর্বৃত্তরা ময়মনসিংহের শশীলজের ভেনাসের মূর্তি, সুপ্রিম কোর্টের থেমিস ও শিশু একাডেমির দুরন্ত ভাস্কর্যটিও ধ্বংস করে দিয়েছে। ময়মনসিংহের জয়নুল সংগ্রহশালার সামনে থাকা শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের আবক্ষ মূর্তিটিও দুর্বৃত্তদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি।
খারাপ লেগেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর মুক্তিযোদ্ধা শিল্পী শামীম সিকদারের ‘স্বাধীনতাসংগ্রাম’ ভাস্কর্যটির ধ্বংসাবশেষ দেখে। সেখানে ছোট-বড় শতাধিক পৃথক ভাস্কর্য ছিল। এর মধ্যে অক্ষত ছিল পাঁচটি। বাকিগুলো উপড়ে ফেলা হয়েছে। দেশ-বিদেশের কবি, সাহিত্যিক, বিপ্লবী, রাজনীতিবিদ, বিজ্ঞানীদের আবক্ষ ভাস্কর্য কিছুই রক্ষা পায়নি। দুর্বৃত্তদের হাতে লালন শাহ, ইয়াসির আরাফাত, জগদীশচন্দ্র বসু ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভাস্কর্যও ধ্বংস হয়েছে। শেখ হাসিনার অপরিণামদর্শিতা এবং অন্য অনেক কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ধ্বংস করা হয়েছে বুঝলাম; কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, স্বাধীনতাসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ওপর ভিত্তি করে গড়ে তোলা ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ধ্বংস করা হলো কেন? শেখ হাসিনা সরকার পতনের পরপর চারদিকে যখন বিজয় উৎসবে দেশ ব্যস্ত, ঠিক তখনই একদল মানুষ এত দিনের পুঞ্জীভূত দুঃখ-কষ্ট ও ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে দেশব্যাপী ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ধ্বংস শুরু করে। এই সুযোগে ইসলাম ধর্মকে পুঁজি করে রাজনৈতিক ফায়দা লুণ্ঠনকারী ধর্মান্ধ দুর্বৃত্তরা মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাসংগ্রামের ওপর গড়ে ওঠা ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ধ্বংস করেছে। এসব লক্ষণ ভালো নয়। শত শত মানুষের জীবনের বিনিময়ে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যে বিজয় অর্জিত হয়েছে, ধর্মের মুখোশধারী এসব সুযোগসন্ধানীর অপকর্মে যেন সে বিজয় হাতছাড়া না হয়, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
দেশজুড়ে এই নৈরাজ্যে আরও একটি বিশেষ ঘটনা মন খারাপ করে দিয়েছে। দুর্বৃত্তরা বিশ্ববরেণ্য চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক কুমার ঘটকের পৈতৃক বাড়িটিও সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে। ঋত্বিক ঘটক হিন্দু বলে তাঁর পৈতৃক বাড়ি ধ্বংস করতে হবে—এ কেমন কথা! ঋত্বিক ঘটক ছিলেন অবিভাজ্য বাঙালি। তাঁর শৈশবের একটা বড় সময় কেটেছে রাজশাহীর এই পৈতৃক বাড়িতেই। ১৯২৫ সালের ৪ নভেম্বর তিনি ঢাকার জিন্দাবাহার লেনে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁরা নাটোরের মহারানির বংশধর। বাবা সুরেশ চন্দ্র ঘটক তৎকালীন ব্রিটিশ আমলে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। বদলির চাকরির কারণে সুরেশ চন্দ্র ঘটক পরিবার নিয়ে দেশের নানা প্রান্তে বসবাস করেছেন। চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি রাজশাহীর ঘোড়ামারা মহল্লার মিয়াপাড়ায় গিয়ে বাড়ি করেন। ঋত্বিক ঘটক রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯৪৬ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর তাঁর পরিবার কলকাতায় গিয়ে আশ্রয় নেয়। নিজের জন্মভূমি ত্যাগ করে শরণার্থী হওয়ার মর্মবেদনা তিনি কোনো দিনও ভুলতে পারেননি। দেশভাগ ঋত্বিক ঘটকের বুকে একটি স্থায়ী ক্ষতচিহ্ন এঁকে দিয়েছিল। কলকাতার উদ্বাস্তু জীবন তিনি মেনে নিতে পারেননি। তাঁর জীবন-দর্শন নির্মাণে এ ঘটনা ছিল সবচেয়ে বড় প্রভাবক, যা পরবর্তীকালে তাঁর সৃষ্টির মধ্যে বারবার ফুটে উঠেছে। এর প্রতিফলন দেখি তাঁর নির্মিত ‘মেঘে ঢাকা তারা’, ‘কোমল গান্ধার’ ও ‘সুবর্ণরেখা’ চলচ্চিত্রে। তৎকালীন কলকাতার অবস্থা ও উদ্বাস্তু জীবনের রূঢ় বাস্তবতা চিত্রিত হয়েছে এসব চলচ্চিত্রে। কলকাতায় চলে গেলেও ১৯৪৮ সালের পর থেকে শুরু হওয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিষয়ে তিনি খোঁজ নিয়েছেন নিয়মিত। বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধও তাঁকে তাড়িত করেছে প্রবলভাবে। সেই তাড়নাতেই তিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে কলকাতার জ্বলন্ত ফুটপাতে দাঁড়িয়ে শরণার্থীদের জন্য হাত পেতে অর্থ সংগ্রহ করেছেন নির্দ্বিধায়। তিনি নিজের জীবনকালে যেহেতু কখনো দেশভাগ মেনে নিতে পারেননি, এ জন্য গঙ্গা ও পদ্মা তাঁর কাছে একই স্রোতোধারার দুটো নাম ছিল মাত্র। মুক্তিযুদ্ধের সময়ই যুদ্ধের ওপর তিনি তৈরি করেছিলেন ‘দুর্বার গতি পদ্মা’ নামের একটি বিশেষ তথ্যচিত্র, যা ১৯৭১ সালেই কলকাতায় মুক্তি পেয়েছিল। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের পটভূমিকায় ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন, যা ১৯৭৩ সালে মুক্তি পায়। এরও আগে স্বাধীনতার পরপর তিনি এতটুকু সময় নষ্ট না করে পিতৃভূমি দেখার জন্য কলকাতা থেকে ঢাকায় ছুটে এসেছিলেন। সে সময়, দেশের সর্বত্র মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প তৈরি হয়েছিল। ঋত্বিক ঘটক ১৯৭২ সালে ঢাকার নিউ ইস্কাটন এলাকায় স্থাপিত একটি মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধা ও প্রখ্যাত গীতিকার কাওসার আহমেদ চৌধুরীর সঙ্গে এক মাস কাটিয়ে সড়কপথে রাজশাহীর শৈশব-কৈশোরের স্মৃতিবিজড়িত পৈতৃক বাড়ি হয়ে কলকাতা ফিরে গিয়েছিলেন।
অসম্ভব সৃজনশীল চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটক ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের এক ধ্রুবতারা। তাঁর নির্মাণ করা চলচ্চিত্র হয়ে উঠেছে কিংবদন্তি। বাংলা চলচ্চিত্র পরিচালকদের মধ্যে সত্যজিৎ রায় এবং মৃণাল সেনের সঙ্গে তিনি তুলনীয়। প্রখ্যাত এই তিন চলচ্চিত্র পরিচালকের আদিবাস এই বাংলাদেশেই। ঋত্বিক ঘটক জীবদ্দশায় পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে পেরেছিলেন মাত্র ৮টি। স্বল্পদৈর্ঘ্য, তথ্যচিত্র এবং প্রামাণ্যচিত্র সব মিলিয়ে নির্মাণ করেছিলেন ১০টি। হাতে গোনা কয়েকটি চলচ্চিত্র দিয়েই বিশ্বের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রকারদের কাতারে নিজের স্থান করে নিয়েছিলেন তিনি। ঋত্বিক ঘটকের সৃষ্টিশীল কাজের হাতেখড়ি রাজশাহীর মিয়াপাড়ার ওই বাড়িতেই। ‘অভিধারা’ নামে একটি সাহিত্যের কাগজ সম্পাদনা করতেন ঋত্বিক ঘটক। ওই সময় রাজশাহীর সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক পরিবেশ ছিল অত্যন্ত উঁচুমানের। প্রতিবছর শীতকালে রাজশাহীতে সাহিত্য-সংগীত সম্মেলন হতো। সেই সময়ের স্থানীয় রাজা ও জমিদারেরা এই সম্মেলনের পৃষ্ঠপোষকতা করতেন। ঋত্বিক ঘটকের বড় ভাই মনীশ ঘটক এ কাজের মূল উদ্যোক্তা ছিলেন। এসব কাজে তাঁর সার্বক্ষণিক ছায়াসঙ্গী ছিলেন ঋত্বিক ঘটক। এ উপলক্ষে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, সৈয়দ মুজতবা আলী, হুমায়ুন কবীরের মতো বড় বড় মনীষীর পদার্পণ ঘটত ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক বাড়িতে। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন ও ভারতীয় কিংবদন্তি নৃত্যশিল্পী উদয় শংকরের আগমনও ঘটেছে ওই বাড়িতে। এ বাড়িতেই থেকেছেন ঋত্বিক ঘটকের ভাইয়ের মেয়ে বরেণ্য কথাসাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী। বলা হয়ে থাকে, সে সময়ের রাজশাহীর সাহিত্য ও নাট্যচর্চার সূতিকাগার ছিল ঋত্বিক ঘটকের এই পৈতৃক বাড়ি। বাংলা শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক জগতের বহু গুণীজনের পদধূলি পড়েছে এই বাড়িতে। এই অসামান্য প্রতিভাধর ব্যক্তিদের অনেক স্মৃতি ছিল ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক বাড়িটিকে ঘিরে।
বাড়িটি ছিল বিশাল। এত দিন রাজশাহীর সাংস্কৃতিক অঙ্গনের নেতা-কর্মী ও চলচ্চিত্রকর্মীরা বাড়িটি দেখাশোনা করে আসছিলেন। ১৯৮৯ সালে তৎকালীন সামরিক শাসক এরশাদ এই বাড়ির ৩৪ শতাংশ জমি রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নামে ইজারা দিয়ে দেন। তারপর থেকেই কলেজ কর্তৃপক্ষের শনৈঃ নজর পড়ে পুরো বাড়ির ওপর। এর আগে তারা বাড়ির মূল আকৃতি পরিবর্তন করে কলেজের সুবিধা বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করেছে। ২০১৯ সালে অনুমতি ছাড়াই এই বাড়ির একাংশ ভেঙে সাইকেলের গ্যারেজ করতে গিয়েও বাধার মুখে তা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ আছে, ৫ আগস্ট একদল দুর্বৃত্ত বাড়ির সামনের দেয়াল ভেঙে ফেললে কলেজ কর্তৃপক্ষ এর সুযোগ নেয়। কলেজের অধ্যক্ষ একজন ঠিকাদারকে ডেকে পুরো বাড়িই গুঁড়িয়ে দিতে নির্দেশ দেন। এখন কলেজ কর্তৃপক্ষ অস্বীকার করলেও শামীম মিয়া নামের একজন ঠিকাদার জানিয়েছেন, কলেজের শিক্ষকেরাই তাঁকে বাড়িটি ভেঙে ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। ঘটনা যদি সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে কলেজ কর্তৃপক্ষ গুরুতর অপরাধ করেছে সন্দেহ নেই। রাজশাহীর ডেপুটি কালেক্টর ঘটনার তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছেন জেনে ভালো লেগেছে। শোনা যায়, ডেপুটি কালেক্টর অফিস এই বাড়ির সংরক্ষণের উদ্যোগও নিয়েছিল। এই বাড়িটি ইজারা থেকে অবমুক্ত করে ঋত্বিক ঘটকের নামে দেওয়ার জন্যও নাকি তাঁরা ভূমি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। আমরা আশা করি, তদন্ত করে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। সবচেয়ে ভালো হবে, ইজারা বাতিল করে মূল নকশা অনুযায়ী বাড়িটি যদি পুনর্নির্মাণ করা হয়। এরই সঙ্গে আমাদের প্রত্যাশা, পাবনায় বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি নায়িকা ‘সুচিত্রা সেন জাদুঘর’-এর মতো ঋত্বিক ঘটকের স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য এই বাড়িটিকেও ‘ঋত্বিক ঘটক স্মৃতি জাদুঘর’ করা হোক।

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর দেশব্যাপী যে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে, তা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য হলেও অপ্রত্যাশিত ছিল না। ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলন দমনের নামে পুলিশ যে নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, তার প্রতিক্রিয়ায় বিভিন্ন জেলার থানাগুলো আক্রমণের শিকার হয়েছে। একই সঙ্গে পুলিশকে হত্যা করে অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুটপাট করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। অগ্নিসংযোগ করে পুলিশের গাড়ি এবং থানা ভবন পুড়িয়ে দিয়েছে। তবে, এর মধ্যে যে স্পর্শকাতর বিষয়টি ঘটেছে তা হলো, দেশের কোনো কোনো স্থানে হিন্দু জনগণ ও তাদের বাড়িঘর আক্রমণের শিকার হয়েছে। তাদের বাড়ি-ঘর লুটপাট-অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে। এই অনৈতিক আক্রমণের হাত থেকে মন্দিরও রেহাই পায়নি। এসব ছাড়াও আরও দুটো বিশেষ ঘটনা আমার কাছে সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত মনে হয়েছে। সংসদ ভবনে প্রবেশ করে পবিত্রতা নষ্ট করা এবং বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত, বিশেষ করে মুক্তিসংগ্রামের অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এ কাজটি সম্পূর্ণ অন্যায্য মনে হয়েছে। এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা, আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে অর্জিত বিজয়কে কিছুটা হলেও ম্লান করে দিয়েছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ঢাকাসহ সারা দেশে প্রায় দেড় হাজার ভাস্কর্য, সিরামিক অথবা টেরাকোটা দিয়ে দেয়ালে খোদাই করে ফুটিয়ে তোলা ভাস্কর্য, ম্যুরাল ও স্মৃতিস্তম্ভ ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও উপড়ে ফেলা হয়েছে। এসব ভাস্কর্য ও ম্যুরাল বেশির ভাগই ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। সঙ্গে স্বাধীনতাসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক ভাস্কর্যও ছিল। রাজধানীর সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য মৃণাল হকের ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ঘোড়াগাড়ি ও রিকশার ভাস্কর্যও রেহাই পায়নি। দুর্বৃত্তরা ময়মনসিংহের শশীলজের ভেনাসের মূর্তি, সুপ্রিম কোর্টের থেমিস ও শিশু একাডেমির দুরন্ত ভাস্কর্যটিও ধ্বংস করে দিয়েছে। ময়মনসিংহের জয়নুল সংগ্রহশালার সামনে থাকা শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের আবক্ষ মূর্তিটিও দুর্বৃত্তদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি।
খারাপ লেগেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর মুক্তিযোদ্ধা শিল্পী শামীম সিকদারের ‘স্বাধীনতাসংগ্রাম’ ভাস্কর্যটির ধ্বংসাবশেষ দেখে। সেখানে ছোট-বড় শতাধিক পৃথক ভাস্কর্য ছিল। এর মধ্যে অক্ষত ছিল পাঁচটি। বাকিগুলো উপড়ে ফেলা হয়েছে। দেশ-বিদেশের কবি, সাহিত্যিক, বিপ্লবী, রাজনীতিবিদ, বিজ্ঞানীদের আবক্ষ ভাস্কর্য কিছুই রক্ষা পায়নি। দুর্বৃত্তদের হাতে লালন শাহ, ইয়াসির আরাফাত, জগদীশচন্দ্র বসু ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভাস্কর্যও ধ্বংস হয়েছে। শেখ হাসিনার অপরিণামদর্শিতা এবং অন্য অনেক কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ধ্বংস করা হয়েছে বুঝলাম; কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, স্বাধীনতাসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ওপর ভিত্তি করে গড়ে তোলা ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ধ্বংস করা হলো কেন? শেখ হাসিনা সরকার পতনের পরপর চারদিকে যখন বিজয় উৎসবে দেশ ব্যস্ত, ঠিক তখনই একদল মানুষ এত দিনের পুঞ্জীভূত দুঃখ-কষ্ট ও ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে দেশব্যাপী ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ধ্বংস শুরু করে। এই সুযোগে ইসলাম ধর্মকে পুঁজি করে রাজনৈতিক ফায়দা লুণ্ঠনকারী ধর্মান্ধ দুর্বৃত্তরা মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাসংগ্রামের ওপর গড়ে ওঠা ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ধ্বংস করেছে। এসব লক্ষণ ভালো নয়। শত শত মানুষের জীবনের বিনিময়ে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যে বিজয় অর্জিত হয়েছে, ধর্মের মুখোশধারী এসব সুযোগসন্ধানীর অপকর্মে যেন সে বিজয় হাতছাড়া না হয়, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
দেশজুড়ে এই নৈরাজ্যে আরও একটি বিশেষ ঘটনা মন খারাপ করে দিয়েছে। দুর্বৃত্তরা বিশ্ববরেণ্য চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক কুমার ঘটকের পৈতৃক বাড়িটিও সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে। ঋত্বিক ঘটক হিন্দু বলে তাঁর পৈতৃক বাড়ি ধ্বংস করতে হবে—এ কেমন কথা! ঋত্বিক ঘটক ছিলেন অবিভাজ্য বাঙালি। তাঁর শৈশবের একটা বড় সময় কেটেছে রাজশাহীর এই পৈতৃক বাড়িতেই। ১৯২৫ সালের ৪ নভেম্বর তিনি ঢাকার জিন্দাবাহার লেনে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁরা নাটোরের মহারানির বংশধর। বাবা সুরেশ চন্দ্র ঘটক তৎকালীন ব্রিটিশ আমলে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। বদলির চাকরির কারণে সুরেশ চন্দ্র ঘটক পরিবার নিয়ে দেশের নানা প্রান্তে বসবাস করেছেন। চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি রাজশাহীর ঘোড়ামারা মহল্লার মিয়াপাড়ায় গিয়ে বাড়ি করেন। ঋত্বিক ঘটক রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯৪৬ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর তাঁর পরিবার কলকাতায় গিয়ে আশ্রয় নেয়। নিজের জন্মভূমি ত্যাগ করে শরণার্থী হওয়ার মর্মবেদনা তিনি কোনো দিনও ভুলতে পারেননি। দেশভাগ ঋত্বিক ঘটকের বুকে একটি স্থায়ী ক্ষতচিহ্ন এঁকে দিয়েছিল। কলকাতার উদ্বাস্তু জীবন তিনি মেনে নিতে পারেননি। তাঁর জীবন-দর্শন নির্মাণে এ ঘটনা ছিল সবচেয়ে বড় প্রভাবক, যা পরবর্তীকালে তাঁর সৃষ্টির মধ্যে বারবার ফুটে উঠেছে। এর প্রতিফলন দেখি তাঁর নির্মিত ‘মেঘে ঢাকা তারা’, ‘কোমল গান্ধার’ ও ‘সুবর্ণরেখা’ চলচ্চিত্রে। তৎকালীন কলকাতার অবস্থা ও উদ্বাস্তু জীবনের রূঢ় বাস্তবতা চিত্রিত হয়েছে এসব চলচ্চিত্রে। কলকাতায় চলে গেলেও ১৯৪৮ সালের পর থেকে শুরু হওয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিষয়ে তিনি খোঁজ নিয়েছেন নিয়মিত। বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধও তাঁকে তাড়িত করেছে প্রবলভাবে। সেই তাড়নাতেই তিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে কলকাতার জ্বলন্ত ফুটপাতে দাঁড়িয়ে শরণার্থীদের জন্য হাত পেতে অর্থ সংগ্রহ করেছেন নির্দ্বিধায়। তিনি নিজের জীবনকালে যেহেতু কখনো দেশভাগ মেনে নিতে পারেননি, এ জন্য গঙ্গা ও পদ্মা তাঁর কাছে একই স্রোতোধারার দুটো নাম ছিল মাত্র। মুক্তিযুদ্ধের সময়ই যুদ্ধের ওপর তিনি তৈরি করেছিলেন ‘দুর্বার গতি পদ্মা’ নামের একটি বিশেষ তথ্যচিত্র, যা ১৯৭১ সালেই কলকাতায় মুক্তি পেয়েছিল। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের পটভূমিকায় ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন, যা ১৯৭৩ সালে মুক্তি পায়। এরও আগে স্বাধীনতার পরপর তিনি এতটুকু সময় নষ্ট না করে পিতৃভূমি দেখার জন্য কলকাতা থেকে ঢাকায় ছুটে এসেছিলেন। সে সময়, দেশের সর্বত্র মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প তৈরি হয়েছিল। ঋত্বিক ঘটক ১৯৭২ সালে ঢাকার নিউ ইস্কাটন এলাকায় স্থাপিত একটি মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধা ও প্রখ্যাত গীতিকার কাওসার আহমেদ চৌধুরীর সঙ্গে এক মাস কাটিয়ে সড়কপথে রাজশাহীর শৈশব-কৈশোরের স্মৃতিবিজড়িত পৈতৃক বাড়ি হয়ে কলকাতা ফিরে গিয়েছিলেন।
অসম্ভব সৃজনশীল চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটক ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের এক ধ্রুবতারা। তাঁর নির্মাণ করা চলচ্চিত্র হয়ে উঠেছে কিংবদন্তি। বাংলা চলচ্চিত্র পরিচালকদের মধ্যে সত্যজিৎ রায় এবং মৃণাল সেনের সঙ্গে তিনি তুলনীয়। প্রখ্যাত এই তিন চলচ্চিত্র পরিচালকের আদিবাস এই বাংলাদেশেই। ঋত্বিক ঘটক জীবদ্দশায় পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে পেরেছিলেন মাত্র ৮টি। স্বল্পদৈর্ঘ্য, তথ্যচিত্র এবং প্রামাণ্যচিত্র সব মিলিয়ে নির্মাণ করেছিলেন ১০টি। হাতে গোনা কয়েকটি চলচ্চিত্র দিয়েই বিশ্বের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রকারদের কাতারে নিজের স্থান করে নিয়েছিলেন তিনি। ঋত্বিক ঘটকের সৃষ্টিশীল কাজের হাতেখড়ি রাজশাহীর মিয়াপাড়ার ওই বাড়িতেই। ‘অভিধারা’ নামে একটি সাহিত্যের কাগজ সম্পাদনা করতেন ঋত্বিক ঘটক। ওই সময় রাজশাহীর সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক পরিবেশ ছিল অত্যন্ত উঁচুমানের। প্রতিবছর শীতকালে রাজশাহীতে সাহিত্য-সংগীত সম্মেলন হতো। সেই সময়ের স্থানীয় রাজা ও জমিদারেরা এই সম্মেলনের পৃষ্ঠপোষকতা করতেন। ঋত্বিক ঘটকের বড় ভাই মনীশ ঘটক এ কাজের মূল উদ্যোক্তা ছিলেন। এসব কাজে তাঁর সার্বক্ষণিক ছায়াসঙ্গী ছিলেন ঋত্বিক ঘটক। এ উপলক্ষে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, সৈয়দ মুজতবা আলী, হুমায়ুন কবীরের মতো বড় বড় মনীষীর পদার্পণ ঘটত ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক বাড়িতে। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন ও ভারতীয় কিংবদন্তি নৃত্যশিল্পী উদয় শংকরের আগমনও ঘটেছে ওই বাড়িতে। এ বাড়িতেই থেকেছেন ঋত্বিক ঘটকের ভাইয়ের মেয়ে বরেণ্য কথাসাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী। বলা হয়ে থাকে, সে সময়ের রাজশাহীর সাহিত্য ও নাট্যচর্চার সূতিকাগার ছিল ঋত্বিক ঘটকের এই পৈতৃক বাড়ি। বাংলা শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক জগতের বহু গুণীজনের পদধূলি পড়েছে এই বাড়িতে। এই অসামান্য প্রতিভাধর ব্যক্তিদের অনেক স্মৃতি ছিল ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক বাড়িটিকে ঘিরে।
বাড়িটি ছিল বিশাল। এত দিন রাজশাহীর সাংস্কৃতিক অঙ্গনের নেতা-কর্মী ও চলচ্চিত্রকর্মীরা বাড়িটি দেখাশোনা করে আসছিলেন। ১৯৮৯ সালে তৎকালীন সামরিক শাসক এরশাদ এই বাড়ির ৩৪ শতাংশ জমি রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নামে ইজারা দিয়ে দেন। তারপর থেকেই কলেজ কর্তৃপক্ষের শনৈঃ নজর পড়ে পুরো বাড়ির ওপর। এর আগে তারা বাড়ির মূল আকৃতি পরিবর্তন করে কলেজের সুবিধা বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করেছে। ২০১৯ সালে অনুমতি ছাড়াই এই বাড়ির একাংশ ভেঙে সাইকেলের গ্যারেজ করতে গিয়েও বাধার মুখে তা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ আছে, ৫ আগস্ট একদল দুর্বৃত্ত বাড়ির সামনের দেয়াল ভেঙে ফেললে কলেজ কর্তৃপক্ষ এর সুযোগ নেয়। কলেজের অধ্যক্ষ একজন ঠিকাদারকে ডেকে পুরো বাড়িই গুঁড়িয়ে দিতে নির্দেশ দেন। এখন কলেজ কর্তৃপক্ষ অস্বীকার করলেও শামীম মিয়া নামের একজন ঠিকাদার জানিয়েছেন, কলেজের শিক্ষকেরাই তাঁকে বাড়িটি ভেঙে ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। ঘটনা যদি সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে কলেজ কর্তৃপক্ষ গুরুতর অপরাধ করেছে সন্দেহ নেই। রাজশাহীর ডেপুটি কালেক্টর ঘটনার তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছেন জেনে ভালো লেগেছে। শোনা যায়, ডেপুটি কালেক্টর অফিস এই বাড়ির সংরক্ষণের উদ্যোগও নিয়েছিল। এই বাড়িটি ইজারা থেকে অবমুক্ত করে ঋত্বিক ঘটকের নামে দেওয়ার জন্যও নাকি তাঁরা ভূমি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। আমরা আশা করি, তদন্ত করে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। সবচেয়ে ভালো হবে, ইজারা বাতিল করে মূল নকশা অনুযায়ী বাড়িটি যদি পুনর্নির্মাণ করা হয়। এরই সঙ্গে আমাদের প্রত্যাশা, পাবনায় বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি নায়িকা ‘সুচিত্রা সেন জাদুঘর’-এর মতো ঋত্বিক ঘটকের স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য এই বাড়িটিকেও ‘ঋত্বিক ঘটক স্মৃতি জাদুঘর’ করা হোক।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর দেশব্যাপী যে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে, তা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য হলেও অপ্রত্যাশিত ছিল না। ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলন দমনের নামে পুলিশ যে নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, তার প্রতিক্রিয়ায় বিভিন্ন জেলার থানাগুলো আক্রমণের শিকার হয়েছে। একই সঙ্গে পুলিশকে হত্যা করে অস্
৩১ আগস্ট ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর দেশব্যাপী যে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে, তা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য হলেও অপ্রত্যাশিত ছিল না। ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলন দমনের নামে পুলিশ যে নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, তার প্রতিক্রিয়ায় বিভিন্ন জেলার থানাগুলো আক্রমণের শিকার হয়েছে। একই সঙ্গে পুলিশকে হত্যা করে অস্
৩১ আগস্ট ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর দেশব্যাপী যে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে, তা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য হলেও অপ্রত্যাশিত ছিল না। ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলন দমনের নামে পুলিশ যে নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, তার প্রতিক্রিয়ায় বিভিন্ন জেলার থানাগুলো আক্রমণের শিকার হয়েছে। একই সঙ্গে পুলিশকে হত্যা করে অস্
৩১ আগস্ট ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর দেশব্যাপী যে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে, তা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য হলেও অপ্রত্যাশিত ছিল না। ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলন দমনের নামে পুলিশ যে নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, তার প্রতিক্রিয়ায় বিভিন্ন জেলার থানাগুলো আক্রমণের শিকার হয়েছে। একই সঙ্গে পুলিশকে হত্যা করে অস্
৩১ আগস্ট ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫