Ajker Patrika

বন্যায় বেড়েছে সাপের উপদ্রব, সতর্ক থাকবেন যেভাবে

ইশতিয়াক হাসান
বন্যায় বেড়েছে সাপের উপদ্রব, সতর্ক থাকবেন যেভাবে

ফেনী, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, কুমিল্লাসহ ১১টি জেলায় ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে এবার। কিছু কিছু জায়গায় পরিস্থিতির উন্নতি হলেও এখনো পানিবন্দী বহু মানুষ। বন্যায় মানুষকে যে সমস্যাগুলোতে পড়তে হয় তার মধ্যে প্রথমেই আসে বাড়ি-ঘর ডুবে যাওয়া, খাবার সংকট, রাস্তা-ঘাট তলিয়ে যাওয়ার মতো বিষয়গুলি। তবে এর পাশাপাশি বন্যার কারণে আরও কিছু সংকটে পড়তে হয় মানুষকে। এর একটি হলো সাপের উপদ্রব। 

বন্যার সময় মানুষের ঘর-বাড়িতে আশ্রয় নেয় অনেক সাপ। তাই সতর্ক না থাকলে সাপের কামড় খাওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। যেমন সাম্প্রতিক সময়ে বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকাতে  সাপের কামড় খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অনেকেই। বন্যায় সাপের উপদ্রবের কারণ, এ সংক্রান্ত কিছু পরিসংখ্যানের পাশাপাশি এ বিষয়ে কী কী সতর্কতা নেওয়া উচিত তাই থাকছে লেখাটিতে।

কিছু পরিসংখ্যান
শুরুতে বরং দেশের বন্যা উপদ্রুত দুটি জেলায় সাপের কামড় খেয়ে হাসপাতালে আসা রোগীদের বিষয়ে সাম্প্রতিক কিছু পরিসংখ্যান দেওয়া যাক। 

দেশের অন্যান্য জেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও গত কয়েক দিন বরং অবনতি হয়েছে লক্ষ্মীপুরের বন্যা পরিস্থিতির। এখানে সাপের কামড় খাওয়া রোগীর সংখ্যাও কম নয়। গত ১৫ আগস্ট থেকে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত ১৫ দিনে সাপের কামড় খেয়ে ৭৮ জন চিকিৎসা নিয়েছেন শুধু লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে। এদের ১২ জন এখনো চিকিৎসাধীন আছেন বলে জানিয়েছেন লক্ষ্মীপুরের সিভিল সার্জন ডা. আহমদ কবির।

এদিকে নোয়াখালীতে গত কিছু দিন বন্যা পরিস্থিতি বেশ খারাপ হলেও অন্তত দুই মাস আগে থেকেই এখানকার কিছু কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।  এ মাসের অর্থাৎ আগস্টের ১ তারিখ থেকে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত শুধু নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে সাপের কামড় খেয়ে ৩৫৫ জন চিকিৎসা নিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. হেলাল উদ্দীন। এদের মধ্যে ৭ জন বিষধর সাপের কামড় খান। দুজন এখনো হাসপাতালে ভর্তি আছেন। 

কেন সাপের কামড় খাওয়ার ঝুঁকি বেশি এখন
খেত-খামারসহ নিচু জায়গায় ঝোপ-জঙ্গলে অনেক সাপ বাস করে। এসব জায়গার মাটির গর্ত, গাছের গুঁড়ির গর্তের পাশাপাশি বাড়ির পুরোনো প্রাচীরের কোনো গর্তেও থাকতে পারে সাপের আস্তানা। বন্যায় এসব সাপের বাসস্থান তলিয়ে যায়। এদিকে মানুষের বসতি তুলনামূলক উঁচু জায়গায় থাকে। আর নিজের আবাসস্থল তলিয়ে যাওয়ার কারণে সাপ অনেকটা বাধ্য হয়েই নতুন আশ্রয়ের খোঁজে মানুষের বসতঘরে ঢুকে পড়ে। তখন একটু অসতর্ক হলেই মানুষ সাপের কামড় খায়। এদিকে এ সময় পানিতে স্রোত থাকলে সাপ এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। 

আবার বন্যার পানি যখন কমতে থাকে ওই সময়টাও বেশ বিপজ্জনক। কারণ তখন সাপ নিজের মূল আবাস বা গর্তে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় সাবধান হলে বিষধর এই সরীসৃপের কামড় খাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

সাপের কামড় এড়াতে সতর্কতা
বন্যার সময় সাপের কামড়ের ব্যাপারে সাধারণ যে সব সতর্কতা থাকে তা মানা মুশকিল। তবে এর মধ্যেও অবশ্যই মশারি টাঙিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করতে হবে। শুধু তাই নয়, মশারি ভালোভাবে গুঁজে নিতে হবে। তাহলে সাপ ভেতরে ঢুকতে পারবে না। 
শুধু ঘর-বাড়ি নয় বন্যার সময় আশ্রয়কেন্দ্রেও সতর্কতা নেওয়া জরুরি। দুই তলা কিংবা তিনতলায় থাকলেও সাবধানতা মানতে হবে। কারণ সেখানেও আশ্রয় নেওয়া অসম্ভব নয় সাপের পক্ষে।
পানিতে হাঁটার সময় হাতে একটা লাঠি রাখতে পারেন।
ঘরে ব্যবহারের সব জিনিস যেমন পাতিল, জগ, পট, বালতি এসবে হাত দেওয়ার আগে অবশ্যই পরীক্ষা করে নিতে হবে।
জুতো পড়ার সময় সাবধানতা জরুরি। কারণ এর ভেতরে সাপও আশ্রয় নিতে পারে।
তেমনি শুকনো জায়গায় কাঠ বা কোনো জ্বালানি থাকলে এগুলোর বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ এগুলোর মধ্যে সাপ আশ্রয় নেওয়া খুব স্বাভাবিক ব্যাপার।
এ ছাড়া ঘরে ছোট বাচ্চা থাকলে তাকেও সতর্কভাবে রাখতে হবে।

বন্যার পানিতে হাঁটা-চলার সময়ও সতর্কতা জরুরি। ছবি: আজকের পত্রিকাবিশেষজ্ঞরা কী বলেন
দীর্ঘদিন সাপ নিয়ে গবেষণা করছেন ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ও লেখক সরওয়ার পাঠান। কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি বলেন, এখন মানুষের মতো সাপও বিপদে। এ সময় নির্বিষ ও বিষধর সব ধরনের সাপ মানুষের বাড়িতে উঠে আসতে পারে। গোখরো, কাল কেউটে, রাসেলস ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া আছে এসব বিষধর সাপের তালিকায়। আতঙ্কিত না হয়ে এখন প্রয়োজন সতর্কতা। ঘুমানোর সময় পাশে টর্চ বা আলোর ব্যবস্থা থাকতে হবে। তেমনি অন্ধকারে হাঁটার সময়ও সঙ্গে টর্চ রাখতে হবে।

পানিতে চলার সময় সতর্কতা থাকতে হবে। সাপ সাঁতার কাটলে পুরো শরীর দেখা যায়। তখন সতর্ক থাকা সহজ। স্থির থাকলেও ঘাড়-মাথা দেখা যায়। ঘরে সাপ ঢোকার সময় হালকা সাঁতার কাটে। ওই সময়ও এদের দেহের ওপরের অংশ দেখে সতর্ক হতে পারবেন।

এদিকে এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রধান মনিরুল খান বলেন, ব্লিচিং পাউডার অপছন্দ করে সাপসহ অনেক প্রাণীই। এটি ছিটিয়ে দিলে কিছুটা হলেও কাজ হতে পারে। তবে এখন সবচেয়ে বেশি যেটা প্রয়োজন সেটা হলো সতর্ক থাকা। আর সতর্ক থাকার পরও যদি কোনো কারণে সাপে কাটে তাহলে ওঝার কাছে না নিয়ে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।

এ লেখাটি তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন আজকের পত্রিকার নোয়াখালী ও  লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজ ঢাকার আবহাওয়া কেমন থাকবে জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানী ঢাকায় আজ শুক্রবার সকালে তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।

আজ সকাল ৭টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে এ কথা বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৬ শতাংশ।

পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। তবে আকাশ আংশিক মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৫ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৬ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন: দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ুদূষণে বছরে প্রাণ হারাচ্ছে ১০ লাখ মানুষ

  • ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের মধ্যে আছে বাংলাদেশও
  • অস্বাস্থ্যকর বায়ুতে শ্বাস নিচ্ছে কোটি কোটি মানুষ
  • ক্ষতি হচ্ছে জিডিপির ১০ শতাংশের সমপরিমাণ
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দক্ষিণ এশিয়ার গাঙ্গেয় সমভূমি ও হিমালয়ের পাদদেশ (আইজিপি-এইচএফ) অঞ্চলের প্রায় ১০০ কোটি মানুষ নিয়মিত অস্বাস্থ্যকর বায়ুতে শ্বাস নিচ্ছে। এতে বছরে এই অঞ্চলের প্রায় ১০ লাখ মানুষ অকালে প্রাণ হারাচ্ছে। বায়ুদূষণের ফলে অঞ্চলটির অর্থনীতিতে বছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১০ শতাংশের সমপরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে। এই দূষণের ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশও।

বিশ্বব্যাংকের ‘এ ব্রেথ অব চেঞ্জ: সলিউশনস ফর ক্লিনার এয়ার ইন দ্য ইন্দো-গেঞ্জেটিক প্লেইনস অ্যান্ড হিমালয়ান ফুটহিলস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। সংস্থাটির ঢাকা অফিস থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আইজিপি-এইচএফ অঞ্চলে বায়ুদূষণ এখনো অন্যতম বড় উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। সমন্বিত ও বাস্তবভিত্তিক কিছু পদক্ষেপ নিলে দূষণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব। এতে একই সঙ্গে জনস্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দুটোরই উন্নতি হবে।

গাঙ্গেয় সমভূমি ও হিমালয়ের পাদদেশ অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান ও ভুটানের অংশবিশেষ। প্রতিবেদনে বলা হয়, এ অঞ্চলের বায়ুদূষণের প্রধান পাঁচটি উৎস রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রান্না ও ঘর গরম করার কাজে লাকড়িজাতীয় কঠিন বস্তু ব্যবহার, শিল্পকারখানায় জীবাশ্ম জ্বালানি (তেল, গ্যাস, কয়লা) ও বায়োম্যাসের ফিল্টার ছাড়া অদক্ষ ব্যবহার, অনুন্নত প্রযুক্তির ইঞ্জিনের যানবাহন চালানো, কৃষকদের খেতের ফসলের অবশিষ্টাংশ পোড়ানো এবং রাসায়নিক সার ও গোবরের অদক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং গৃহস্থালি ও কারখানার বর্জ্য পোড়ানো।

দূষণ কমাতে কয়েকটি তুলনামূলকভাবে সহজে বাস্তবায়নযোগ্য কৌশলের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে। এগুলো হলো–বৈদ্যুতিক চুলায় রান্না, শিল্পকারখানার বয়লার, ফার্নেস ও ইটভাটার আধুনিকায়ন, নন-মোটরাইজড ও বৈদ্যুতিক পরিবহনব্যবস্থার প্রসার, কৃষিবর্জ্য ও পশুবর্জ্যের উন্নত ব্যবস্থাপনা এবং বর্জ্য পৃথক্‌করণ ও পুনর্ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া।

প্রতিবেদনে নির্মল বায়ু নিশ্চিত করার কৌশলকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ১. দূষণের উৎসেই নির্গমন কমানোর ব্যবস্থা। ২. স্বাস্থ্য ও শিক্ষাব্যবস্থা শক্তিশালী করে শিশু ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া। ৩. কার্যকর আইন, বাজারভিত্তিক প্রণোদনা ও আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তোলা।

বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ পরিবেশ অর্থনীতিবিদ মার্টিন হেগার বলেন, ‘নির্মল বায়ু নিশ্চিত করার সমাধানগুলো বাস্তবসম্মত ও কার্যকর। নীতিনির্ধারকদের জন্য এটি একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ দেয়। একই সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার পরিবার, কৃষক ও উদ্যোক্তাদের জন্য পরিচ্ছন্ন প্রযুক্তি ব্যবহারে আর্থিক ও অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক সুযোগ তৈরি করে।’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্মল বায়ু নিশ্চিত করতে ‘চারটি আই’ (ইংরেজি আদ্যক্ষর)—তথ্য, প্রণোদনা, প্রতিষ্ঠান এবং অবকাঠামোর ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। নির্ভরযোগ্য তথ্যভিত্তিক পরিকল্পনা, পরিচ্ছন্ন বিকল্পে বিনিয়োগে প্রণোদনা, কার্যকর প্রতিষ্ঠান এবং পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ও পরিবহন অবকাঠামো গড়ে তোলাই এই রূপান্তরের মূল চাবিকাঠি।

বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিবেশবিষয়ক প্র্যাকটিস ম্যানেজার অ্যান জিনেট গ্লাউবার বলেন, স্থানীয় থেকে আঞ্চলিক পর্যায় পর্যন্ত সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া নির্মল বায়ু অর্জন সম্ভব নয়। সরকারগুলো একসঙ্গে কাজ করলেই কেবল দূষণ কমানো, লাখো মানুষের জীবন রক্ষা এবং সবার জন্য নিরাপদ বায়ু নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকার বাতাস সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর, আজও দূষণে শীর্ষে দিল্লি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ০২
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বেশ কিছুদিন ধরে দিল্লির বাতাসের অবস্থা দুর্যোগপূর্ণ। আজ বৃহস্পতিবার দূষিত শহরের তালিকার শীর্ষে রয়েছে শহরটি। অন্যদিকে ঢাকার বায়ুমান আজ সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে সপ্তম স্থানে রয়েছে ঢাকা।

আইকিউএয়ারের সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী, ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ১৯০। যা নির্দেশ করে ঢাকার বাতাসের অবস্থা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর।

ঢাকার বেশ কিছু স্থানের বাতাসের অবস্থা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর থেকে খুব অস্বাস্থ্যকর। এর মধ্যে রয়েছে— কল্যাণপুর (২৬০), দক্ষিণ পল্লবী (২৫৬), বেজ এজওয়াটার আউটডোর (১৯৬), গোড়ান (১৯৬) ও বেচারাম দেউরি (১৯০)।

অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরেই দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে দিল্লি। শহরটির একিউআই স্কোর ৩১০। যা এই শহরের বাতাসকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে।

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর (২৭০, খুব অস্বাস্থ্যকর), তৃতীয় স্থানে বসনিয়া-হার্জেগোভিনার সারাজেভ (২২৭, খুব অস্বাস্থ্যকর), চতুর্থ স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের করাচি (২০১, খুব অস্বাস্থ্যকর) এবং পঞ্চম স্থানে রয়েছে মিসরের কায়রো (১৯৪, সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর)।

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশিমাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বাতাসের মূল ক্ষতিকারক উপাদান হলো ক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫। এটি এতই সূক্ষ্ম যে তা ফুসফুসে এমনকি রক্তপ্রবাহেও প্রবেশ করতে পারে।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বেড়েছে ঢাকার তাপমাত্রা, জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

পৌষ মাসের তৃতীয় দিন আজ। শীতের মৌসুম চলে এলেও রাজধানী ঢাকায় বাড়ছে তাপমাত্রা। আজ বৃহস্পতিবার সকালের আবহাওয়া বুলেটিনে দেখা যায়, গতকালের তুলনায় আজ সকালে তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল মঙ্গলবার ছিল ১৬ দশমিক ৬। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সকাল ৭টায় পরবর্তী ছয় ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। তবে আকাশ আংশিক মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৫ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৬ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত