Ajker Patrika

যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত সচিব পদেও আসছে পদোন্নতি

উবায়দুল্লাহ বাদল, ঢাকা
আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০২৪, ২০: ৪২
যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত সচিব পদেও আসছে পদোন্নতি

রাজনৈতিক কারণে প্রশাসনের বঞ্চিত কর্মকর্তাদের আরও দুই স্তরের পদোন্নতি আসছে। বিসিএস বিভিন্ন ব্যাচের উপসচিব ও যুগ্ম সচিব পদের কর্মকর্তাদের যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হবে। এরকম ১৫০ উপসচিব ও ১০০ যুগ্ম সচিবের পদোন্নতির বিষয়ে আজ বুধবার রাতেই ও কাল বৃহস্পতিবার রাতে প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এমন আভাস মিলেছে। 

ইতিমধ্যে গতকাল মঙ্গলবার রাতে বঞ্চিত ১১৭ জন সিনিয়র সহকারী সচিবকে উপসচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এসব পদোন্নতির মাধ্যমে হাসিনা সরকারের আমলে বঞ্চিত বিএনপি-জামায়াত ঘরানার কর্মকর্তাদের ক্ষোভ-অসন্তোষ কমানোর চেষ্ঠা করছে সরকার।

বিষয়টি নিয়ে দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, বঞ্চিত কর্মকর্তাদের মধ্যে বিসিএস একাদশ ব্যাচ থেকে ২৯তম ব্যাচ রয়েছে। ইতিমধ্যে উপসচিব পদে পদোন্নতি হয়েছে। আজকালের মধ্যে যুগ্মসচিব ও অতিরিক্ত সচিব পদেও পদোন্নতি হবে। এর মধ্যে গত রাতে যাঁরা উপসচিব হয়েছেন তাঁরা এবং আগের যাঁরা বঞ্চিত উপসচিব আছেন তাঁরা যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতি পাবেন। একইভাবে অতিরিক্তি সচিব পদেও পদোন্নতি হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পদোন্নতিবঞ্চিত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরামের সভাপতি বিসিএস ১৩তম ব্যাচের কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের গত ১৬ বছরে বঞ্চনা দূর করতে হবে। যাঁরা যুগ্মসচিব ও অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতিযোগ্য, তাঁদের দ্রুত পদোন্নতি দিতে হবে। আমরা দীর্ঘ ১৬ বছর বঞ্চনার শিকার। সুতরাং আমাদের আর ধৈর্য্যের পরীক্ষা নেওয়া ঠিক হবে না।’ 

শুধু রাজনৈতিক কারণে আওয়ামী শাসনামলের গত ১৬ বছরে প্রশাসনে পদোন্নতিবঞ্চিত হয়েছেন কয়েক শ কর্মকর্তা। গোয়েন্দা তদন্ত প্রতিবেদনে তাঁদের নামের সঙ্গে ‘নেগেটিভ’ উল্লেখ থাকায় বঞ্চিত করা হয়। অনেককে বছরের পর বছর ওএসডি থাকতে হয়েছে অথবা গুরুত্বহীন পদে ফেলে রাখা হয়েছে। অনেককে বাধ্যতামূলক অবসরেও পাঠানো হয়েছে।

গত ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সামনে আসেন প্রশাসনে বিএনপি-জামায়াত ঘরানার বঞ্চিত কর্মকর্তারা। পরদিন ৬ আগস্ট সচিবালয়ে বৈঠক করেন পদোন্নতিবঞ্চিত অন্তত ২০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী। সভায় জ্যেষ্ঠতাসহ ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির দাবি জানান তাঁরা। এরপর তাঁরা প্রশাসনে কর্মরত বঞ্চিত কর্মকর্তাদের ব্যাচভিত্তিক তালিকা তৈরি করে পদোন্নতির জন্য সচিবের দপ্তরে জমা দেওয়া হয়। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, ওই তালিকায় অন্তত ২৪৪ জনের নাম ছিল। এর মধ্যে বিসিএস ১১তম ব্যাচের ৪ জন, ১৩তম ব্যাচের ৮ জন, ১৫তম ব্যাচের ২১ জন, ১৭তম ব্যাচের ৮ জন, ১৮তম ব্যাচের ২২ জন, ২০তম ব্যাচের ২১ জন, ২১তম ব্যাচের ১০ জন, ২২তম ব্যাচের ৮১ জন, ২৪তম ব্যাচের ১২ জন, ২৫তম ব্যাচের ১২ জন, ২৭তম ব্যাচের ১৩ জন, ২৮তম ব্যাচের ১০ জন ও ২৯তম ব্যাচের ২২ জন রয়েছেন। এই তালিকায় থাকা কর্মকর্তাদের মধ্যে যাঁরা সিনিয়র সহকারী সচিব এবং যাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা ও দুদকের মামলা নেই, মঙ্গলবার রাতে প্রথম দফায় তাঁদের ১১৭ জনকে উপসচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়।

প্রধান উপদেষ্টার কাছে ২৫ ক্যাডারের বঞ্চিত উপসচিবদের স্মারকলিপি 
এদিকে মঙ্গলবার রাতে প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিয়েছেন প্রশাসন ছাড়া অন্য ২৫ ক্যাডারের বঞ্চিত উপসচিবরা। স্মারকলিপিতে বলা হয়, সচিবালয়ে সরকারের নীতিনির্ধারণী কার্য সম্পাদনের জন্য উপসচিব ও তদূর্ধ্ব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সিনিয়র সার্ভিস পুল গঠন করা হয়। ‘সরকারের উপসচিব, যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতি বিধিমালা ২০০২’ অনুযায়ী প্রশাসন ক্যাডার থেকে ৭৫ শতাংশ এবং অন্য ২৫টি ক্যাডার হতে ২৫ শতাংশ উপসচিব পদে পদোন্নতি দিয়ে এ পুল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়, যদিও প্রশাসন ক্যাডারের সদস্য সংখ্যা ৪ হাজার ৮৯৯ জন (৯ দশমিক ৬২ শতাংশ) এবং অন্যান্য ২৫টি ক্যাডারের সদস্য সংখ্যা ৪৬ হাজার ২৩ জন (৯০ দশমিক ৩৮ শতাংশ)। 

এতে আরও বলা হয়, পরবর্তী পদোন্নতি, অর্থাৎ যুগ্ম সচিব ও এর ওপরের পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে পিএসসির সুপারিশ পাওয়া নিজ নিজ ব্যাচের সম্মিলিত মেধাতালিকা, সরকারি চাকরি আইন, পদোন্নতি বিধিমালা, সুপ্রিম কোর্টের রায় কোনো কিছুই মানা হয় না। এক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের সব কর্মকর্তার নিয়মিত ব্যাচের সঙ্গে পদোন্নতি নিশ্চিত থাকলেও অন্য ২৫টি ক্যাডারের ক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক কোটা আরোপ করে প্রশাসন ক্যাডারের অনেক জুনিয়র ব্যাচের সঙ্গে স্বেচ্ছামূলক নামমাত্র ১০ থেকে ১২ শতাংশ পদোন্নতি দেওয়া হয়। এ কারণে ২৫ ক্যাডারের ১৩ থেকে ২২ ব্যাচের অত্যন্ত মেধাবী, দক্ষ ও যোগ্য দুই শতাধিক কর্মকর্তা জ্যেষ্ঠতা হারিয়ে পদোন্নতিবঞ্চিত হয়ে তাঁদের অনেক জুনিয়র কর্মকর্তার অধীনে কাজ করতে হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন গোটা জনপ্রশাসন মেধাহীন ও দক্ষ জনবলশূন্য হয়ে পড়েছে, অপরদিকে জনপ্রশাসনে চেইন অব কমান্ডও পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। 

এমতাবস্থায় অতি দ্রুত ক্যাডার নির্বিশেষে বৈষম্যহীন মেধাভিত্তিক জনপ্রশাসন গড়তে প্রশাসন ক্যাডার ছাড়া ২৫ ক্যাডারের বে-আইনিভাবে পদোন্নতিবঞ্চিত ১৩ থেকে ২২তম ব্যাচের উপসচিবদের পিএসসির মেধাতালিকা অনুযায়ী স্ব-স্ব ব্যাচের সঙ্গে জ্যেষ্ঠতা নিশ্চিত করে যুগ্মসচিব পদে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেওয়ার জোর দাবি জানানো হয় স্মারকলিপিতে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাংলাদেশে গণমাধ্যমের ওপর হামলায় মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশনের নিন্দা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বাংলাদেশে গণমাধ্যমের ওপর হামলায় মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশনের নিন্দা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর রাজধানীর কারওয়ান বাজারে দেশের শীর্ষস্থানীয় দুই সংবাদমাধ্যম দৈনিক প্রথম আলো এবং ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার ভবনে হামলা-অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিষয়ক বৈশ্বিক জোট মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশন (এমএফসি)।

মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘গত রাতে সাংবাদিক, সম্পাদক এবং সংবাদমাধ্যমের ওপর যে হামলা চালানো হয়েছে—মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশন তার কঠোর নিন্দা জানাচ্ছে। এ ধরনের সহিংসতা ও ভীতি প্রদর্শন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং জনগণের তথ্য জানার অধিকারে সরাসরি আঘাত।’

মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশন হামলায় জড়িতদের জবাবদিহির আওতায় আনতে দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সকল সংবাদকর্মীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ভয়ভীতি ছাড়া সাংবাদিকদের কাজ করার পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া অপরিহার্য। আইনের শাসন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং একটি উন্মুক্ত ও তথ্যসমৃদ্ধ সমাজ বিনির্মাণের জন্য সাংবাদিকদের সুরক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।’

উল্লেখ্য, গত রাতে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর উত্তেজিত একদল লোক কারওয়ান বাজারে অবস্থিত প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার ভবনের সামনে জড়ো হয়। একপর্যায়ে ভবনের ভেতরে ভাঙচুর চালানো হয় এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

এর আগে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে হাদিকে গুলি করা হয়। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিসি ক্যামেরা ফুটেজ দেখে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে: ছায়ানট পরিদর্শন শেষে ফারুকী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আজ শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে ধানমন্ডির শংকরে ছায়ানট ভবন পরিদর্শন করেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। ছবি: সংগৃহীত
আজ শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে ধানমন্ডির শংকরে ছায়ানট ভবন পরিদর্শন করেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। ছবি: সংগৃহীত

ছায়ানট ভবনে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় জড়িত প্রত্যেককে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

আজ শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে তিনি ধানমন্ডির শংকরে ছায়ানট ভবন পরিদর্শন করেন, ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া জায়গাগুলো দেখেন এবং ছায়ানটের সংগঠক পার্থ তানভীর নভেদসহ কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করেন।

পরিদর্শন শেষে সংস্কৃতি উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, ‘সিসি ক্যামেরা ফুটেজ দেখে প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনার কাজ চলছে। এই ভবনে হামলা চালানো হয়েছে, অনেক ক্ষতিসাধন হয়েছে। আমি ছায়ানট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে যাবতীয় সংস্কার কার্যক্রম শেষ করে প্রতিষ্ঠানটি যেন দ্রুত চালু করা যায়, এ ব্যাপারে আর্থিকসহ সরকার সব ধরনের সহায়তা দেবে। ছায়ানট পরিচালনা কমিটির সদস্যরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে এ বিষয়ে আমাদের জানাবেন বলে জানিয়েছেন।’

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী আরও বলেন, ‘এই ভবনের নিরাপত্তার ব্যাপারে আমরা সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিচ্ছি। ছায়ানটের বাইরে বিজিবি ও পুলিশ কঠোর নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে। আমি উপদেষ্টা পরিষদের অন্যদের সঙ্গেও এ বিষয়ে আলোচনা করেছি।’

এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘এটা অবশ্যই নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্র। আজ আমাদের কথা বলার কথা শহীদ ওসমান হাদিকে নিয়ে। আজ আমাদের শোকাতুর হওয়ার কথা। প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে দিয়েছে কারা? কারা প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, ছায়ানটে হামলা করেছে? যারা করেছে, তারা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণ চায় না।’

সংস্কৃতি উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘এই জাতীয় শোকের মুহূর্তে এক শ্রেণির হঠকারী লোক দেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটে হামলা চালিয়ে ক্ষতিসাধন করেছে। মৃত্যুঞ্জয়ী হাদির মৃত্যুতে কোনো সাংস্কৃতিক সংগঠনে হামলা কেবল একটি ফৌজদারি অপরাধই নয়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনারও পরিপন্থী।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় পৌঁছেছে ওসমান হাদির মরদেহ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ৪৩
শরিফ ওসমান বিন হাদির মরদেহ ঢাকায় পৌঁছেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
শরিফ ওসমান বিন হাদির মরদেহ ঢাকায় পৌঁছেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির মরদেহ ঢাকায় পৌঁছেছে। তাঁর মরদেহ বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট বিজি-৫৮৫ আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টা ৪৮ মিনিটের দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

হাদির মরদেহ দেশে পৌঁছানোর খবরে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা, বিএনপি ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা-কর্মীরা বিমানবন্দরে যান। বিমানবন্দরে হাদির কফিনের পাশে উপস্থিত ছিলেন শিল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ এবং ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম। এ সময় তাঁদের কয়েকজনকে কাঁদতে দেখা যায়।

এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক ফাতিমা তাসনিম জুমা ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, ‘শহিদ ওসমান হাদিকে বহনকারী গাড়ি বিমানবন্দর থেকে হিমাগার এর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে। সেখানে শহিদ ওসমান হাদিকে রেখে ইনকিলাব মঞ্চের কর্মীরা শাহবাগে এসে অবস্থান নিবে। পরিবারের দাবির ভিত্তিতে শহিদ ওসমান হাদিকে কবি নজরুলের পাশে সমাহিত করার এবং মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে বাদ জোহর জানাজার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে আজকের পরিবর্তে আগামীকাল মিছিলসহ ভাইকে সেন্ট্রাল মসজিদে আনা হবে।’

ফাতিমা তাসনিম জুমা পোস্টে আরও লেখেন, ‘ছাত্রজনতা আজ ও আগামীকাল শৃঙ্খলার সাথে আন্দোলন জারি রাখবেন যেন কোনো গোষ্ঠি অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে আন্দোলন স্তিমিত করতে না পারে একই সাথে সহিংসতা করার সুযোগও না পায়।’

পোস্টে বলা হয়, ‘মরদেহ দেখার কোনো সুযোগ থাকবে না। সকলের নিকট শৃঙ্খলা বজায় রাখার এবং শহিদ ওসমান হাদির জন্য দোয়া পৌঁছানোর অনুরোধ করা হচ্ছে।’

জুলাই অভ্যুত্থান ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পরিচিতি পাওয়া হাদি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। রাজধানীর পুরানা পল্টন এলাকায় ১২ ডিসেম্বর চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তরা রিকশায় থাকা হাদিকে গুলি করে। গুলিটি হাদির মাথায় লাগে।

গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচার শেষে রাতেই তাঁকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত সোমবার দুপুরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সহিংসতার আশঙ্কায় বাংলাদেশে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের জন্য দূতাবাসের সতর্কবার্তা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির জানাজাকে কেন্দ্র করে আগামীকাল শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাজধানী ঢাকাজুড়ে ব্যাপক জনসমাগম ও তীব্র যানজটের আশঙ্কা করছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের অতিরিক্ত সতর্ক থাকার এবং বড় ধরনের জনসমাবেশ এড়িয়ে চলার অনুরোধ জানিয়ে একটি সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে।

আজ শুক্রবার দূতাবাসের ওয়েবসাইট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ সতর্কবার্তা জারি করা হয়।

মার্কিন দূতাবাসের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ‘গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তরুণ নেতা শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। তাঁর জানাজা আগামীকাল শনিবার (২০ ডিসেম্বর) জোহরের নামাজের পর জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। জানাজা উপলক্ষে ওই এলাকা এবং সমগ্র ঢাকাজুড়ে অত্যন্ত ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হতে পারে।’

সম্ভাব্য এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য দূতাবাস কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছে—নাগরিকদের যেকোনো বড় জনসমাবেশ বা বিক্ষোভ এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে। সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে আয়োজিত সমাবেশও যেকোনো সময় সংঘাতপূর্ণ বা সহিংস হয়ে উঠতে পারে। জনসমাবেশের আশপাশে চলাচলের সময় অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে এবং স্থানীয় পরিস্থিতির ওপর নজর রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত