Ajker Patrika

ফোনে সতর্ক করছিলেন মা, গুলিতে থামল কণ্ঠ

কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি
ফোনে সতর্ক করছিলেন মা, গুলিতে থামল কণ্ঠ

১৯ জুলাই, ২০২৪। তরুণ উদ্যোক্তা জাকির হোসেন (৩৬) সকালে অফিসের উদ্দেশে বাসা থেকে বেরিয়ে যান। এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার কারণে দেশজুড়ে চলছে অস্থিরতা। তাই মনটা ছটফট করছিল জাকিরের মা মোমেনা বেগমের (৫৫)। দুপুরে আতঙ্কগ্রস্ত মোমেনা ছেলের অবস্থা জানতে ফোন দেন। মা দুশ্চিন্তা করবে ভেবে বাইরে বের হওয়ার কথা জানাননি জাকির।

মোমেনা বেগম ছেলেকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘বাবা আজ তুমি কোথাও বের হবা না।’ জাকির তাঁর মাকে ‘মিথ্যা আশ্বাস’ দিয়ে কথা বলতে বলতেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। মুহূর্তেই ফোনে কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়। মায়ের আর বুঝতে বাকি থাকে না যে, ছেলের কী বিপদ হয়েছে। 

বড় ছেলে জাকিরকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মোমেনা বেগম গত সোমবার বিলাপ করতে করতে ঘটনার বর্ণনা দেন।

গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে বারিষাব ইউনিয়নের চরদুর্লভখা গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা জাকির হোসেন। ১৯ জুলাই বেলা আড়াইটার দিকে রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর এলাকায় পুলিশের গুলিতে আহত হন বলে তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রায় ১৪ ঘণ্টা পর তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি ওই গ্রামের কৃষক মো. আ. সামাদের বড় ছেলে।

সোমবার জাকিরদের বাড়িতে গেলে দেখা যায়, মা মোমেনা বেগম বিলাপ করতে করতে বলছিলেন, ‘ও আমার বাবা, তুই আমারে ছাইড়া কোথায় গেলি? আমি যদি সে সময় থাকতাম; আমি পুলিশকে কইতাম আমারে মারো, আমার পোলারে মাইরো না। আমার পোলারে যারা মারছে তাদের বিচার আল্লাহ করব।’

নিহত জাকিরের বাবা আ. সামাদ (৬৫) জানান, ভিটেমাটিসহ সব মিলিয়ে দেড় বিঘার মতো জমি রয়েছে তাঁর। অভাবের সংসারে দুই ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটছিল। বাবার কষ্ট লাঘব করতে এসএসসি পাসের পর ২০০৩ সালে তৈরি পোশাক কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করেন জাকির। কঠোর পরিশ্রম আর মেধায় কয়েক বছর আগে সহকারী প্রোডাকশন ম্যানেজার হিসেবে পদোন্নতি পান গাজীপুর সদরের ভাওয়াল মির্জাপুর এলাকায় একটি তৈরি পোশাক কারখানায়। ছয় মাস আগে এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে ছোট পরিসরে ‘কাজী ভিআইপি গার্মেন্টস’ নামে একটি পোশাক কারখানা গড়ে তোলেন জাকির।

আ. সামাদ আরও জানান, ১৯ জুলাই দুপুরে কারখানার জন্য গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকা থেকে জরুরি কিছু মালপত্র কেনেন জাকির। পরে একজন বায়ারের ফোন পেয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে উত্তরা এলাকায় যাচ্ছিলেন। পথে আব্দুল্লাহপুর এলাকায় গিয়ে গাড়ি থেকে নেমে অন্য গাড়িতে ওঠার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। সে সময় সেখানে পুলিশ ও জনতার পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলাকালে হঠাৎ করে পরপর দুটি গুলি এসে পিঠে ও পেটে লাগলে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন জাকির। আশপাশের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে উত্তরার বাংলাদেশ আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসক তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।

খবর পেয়ে স্বজনেরা তাঁকে দ্রুত সেখানে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন ভোররাত ৪টার দিতে তাঁর মৃত্যু হয়। ২১ জুলাই তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

জাকিরের স্ত্রী জান্নাতুন নাঈম (২৯) জানান, সকালের খাবার খেয়ে বাসা থেকে বের হন অফিসের কথা বলে। সারা দিন অফিসে থাকবেন বলে জানিয়েছিলেন। বিকেল ৫টার দিকে স্বামীর অফিসের লোকজনের কাছে জানতে চাইলে তাঁরা জানান, সে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও স্বামীকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

জাকির-জান্নাতুন দম্পতির আব্দুর রহমান (৬) ও বায়জিদ (২) নামের দুটি ছেলে রয়েছে। সন্তানদের যারা এতিম করেছে, তাদের বিচার চান জান্নাতুন।

গাজীপুর সদর উপজেলার ভীমবাজার এলাকায় কাজী ভিআইপি গার্মেন্টস নামে ছোট একটি কারখানার উৎপাদন ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করতেন জাকির হোসেন। গত বুধবার সেখানে গিয়ে কারখানার মূল ফটক তালাবদ্ধ পাওয়া যায়।

পরে ওই কারখানার কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, একজন বায়ার জাকিরকে ফোন করে আগের অর্ডারের কিছু মালপত্র ডেলিভারি নিতে চান। এজন্য তিনি কোনাবাড়ী থেকে উত্তরার দিকে যাচ্ছিলেন। আব্দুল্লাহপুরে গুলিবিদ্ধ হন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কুষ্টিয়ায় কাভার্ড ভ্যানচাপায় ২ পুলিশ কর্মকর্তা নিহত

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় কাভার্ড ভ্যানের চাপায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়কের লালনশাহ সেতুর পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তারা হলেন পরিদর্শক মোজাহারুল ইসলাম (৪৫) ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) কয়েস উদ্দিন (৪০)। তাঁরা পুলিশের পাবনা জেলা বিশেষ শাখায় (ডিএসবি) কর্মরত ছিলেন।

জানা গেছে, মোজাহারুল ইসলাম রংপুরের পীরগাছা উপজেলার ইটাকুমারী গ্রামের মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে এবং কয়েস উদ্দিন রাজশাহীর তানোর উপজেলার চান্দুরিয়া রাতৈল এলাকার কাছিম উদ্দিনের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে মোজাহারুল ইসলাম ও কয়েস উদ্দিন মোটরসাইকেলে করে ভেড়ামারার লালনশাহ সেতু পার হয়ে কুষ্টিয়া শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় পেছন থেকে একটি কাভার্ড ভ্যান তাঁদের চাপা দেয়। এতে দুজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। দুর্ঘটনার পরপরই কাভার্ড ভ্যানটি নিয়ে চালক পালিয়ে যান।

ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই পুলিশ কর্মকর্তা কাভার্ড ভ্যানের চাপায় ঘটনাস্থলেই মারা যান। তাঁদের লাশ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে কাভার্ড ভ্যানটি জব্দ ও চালককে আটক করা যায়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সিঙ্গাপুরে হাদির অবস্থার অবনতির পর স্থিতিশীল: ইনকিলাব মঞ্চ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
শরিফ ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত
শরিফ ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত

সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির শারীরিক অবস্থার হালনাগাদ জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ। ওসমান হাদির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সিঙ্গাপুরে নেওয়ার পর কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এরপর হাদির অবস্থার কিছুটা অবনতি হলেও এখন স্থিতিশীল রয়েছে।

ফেসবুক পোস্টে বলা হয়েছে, ‘ওসমান হাদির সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার আপডেট— আজ মঙ্গলবার দুপুর ৩টায় সিঙ্গাপুর থেকে তাঁর ভাইয়ের তরফ থেকে জানা যায়, শরিফ ওসমান হাদির প্রাইমারি টেস্টের পর অবস্থার কিছুটা অবনতি দেখা গেলেও বর্তমানে তা স্থিতিশীল অবস্থায় এসেছে। আরেকটি অপারেশনের প্রয়োজন তবে সেটি করার মতো শারীরিক পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি।’

ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গতকাল সোমবার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর বেলা আড়াইটার দিকে পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে ব্যাটারিচালিত রিকশায় থাকা ওসমান হাদিকে গুলি করেন মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তরা। প্রথমে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়; পরে সেখান থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। গতকাল নেওয়া হয় সিঙ্গাপুরে।

এই ঘটনায় ১৪ ডিসেম্বর রাতে পল্টন থানায় করা মামলার তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ডিবির মতিঝিল বিভাগ।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মো. শফিকুল ইসলাম গতকাল বলেন, এখন পর্যন্ত এই মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চাকসু ভিপির দিকে তেড়ে গেলেন ছাত্রদল সভাপতি

চবি প্রতিনিধি 
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ০৮
বিশ্ববিদ্যালয়ের জারুলতলায় প্রশাসনের আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় হট্টগোল বাধে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের জারুলতলায় প্রশাসনের আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় হট্টগোল বাধে। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে। অভিযোগ উঠেছে, আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) ভিপি ইব্রাহিম হোসেন রনি বক্তব্য দেওয়ার সময় তাঁর দিকে তেড়ে যান শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আলাউদ্দিন মহসিন ও সংগঠনটির কয়েকজন নেতা-কর্মী। বিশ্ববিদ্যালয়ের জারুলতলায় প্রশাসনের আয়োজিত আলোচনা সভায় এই ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাকসু ভিপি ইব্রাহিম হোসেন রনি বলেন, ‘যাদের ক্যাম্পাসে বহিরাগত নিয়ে আসার সংস্কৃতি আছে, তারা হট্টগোল করবেই। তবে আমরা সকল ছাত্রসংগঠনের নেতাদের কাছ থেকে দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করি।’

এ বিষয়ে জানতে চেয়ে শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আলাউদ্দিন মহসিনকে একাধিকবার ফোন করলেও সাড়া মেলেনি।

এর আগে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খানের বক্তব্য ঘিরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর পদত্যাগের দাবিতে গতকাল সোমবার প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। এতে আটকা পড়েন উপাচার্য (ভিসি), উপ-উপাচার্যসহ (প্রোভিসি) প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এদিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে শাখা শিবিরের নেতা-কর্মীরা জড়ো হন। এ সময় ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিতে দেখা যায়। দীর্ঘ প্রায় ৮ ঘণ্টা পর রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের তালা খুলে দেওয়া হয়।

এর আগে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায় চবির উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান তাঁর বক্তব্যে ‘পাকিস্তানি বাহিনী বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করবে, এটা রীতিমতো অবান্তর’ বলে মন্তব্য করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দপ্তরে আয়োজিত আলোচনা সভায় বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড নিয়ে বলতে গিয়ে অধ্যাপক শামীম খান বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণের দিন নির্ধারিত ছিল। পাকিস্তানি বাহিনী দেশ থেকে পালানোর জন্য চেষ্টা করছিল। সে সময় তারা জীবিত থাকবে না মৃত থাকবে, সে বিষয়ে কোনো ফয়সালা হয়নি, সে সময় পাকিস্তানি যোদ্ধারা বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করবে, এটি আমি মনে করি রীতিমতো অবান্তর।’ এ সময় তিনি ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর কী হয়েছিল, তা জানতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে স্বাধীন নিরপেক্ষ কমিশন গঠন করার অনুরোধ জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিজয় দিবস পালন করতে হচ্ছে একাত্তরের ঘাতকদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের অঙ্গীকার করে: প্রিন্স

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
রুহিন হোসেন প্রিন্স। ছবি: আজকের পত্রিকা
রুহিন হোসেন প্রিন্স। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, ‘আমি ক্ষোভের সাথে লক্ষ করছি, পঁচিশের বিজয় দিবসের আগেই আমাদের একাত্তরের ঘাতক চক্র, তারা মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যে সংগ্রাম, তাদের অপতৎপরতা সূচনা করেছে। সেই কারণে আমাদের এবারের বিজয় উৎসব পালন করতে হচ্ছে এই ঘাতকদের বিরুদ্ধে আমাদের অবিরাম সংগ্রামের অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে।’

আজ মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিজয় দিবস উপলক্ষে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সিপিবি নেতা এসব কথা বলেন।

এ সময় রুহিন হোসেন প্রিন্স আরও বলেন, ‘গত ৫৪ বছরে যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা এই দেশটাকে গড়তে পারে নাই বলেই আজকে একাত্তরের ঘাতকসহ অন্যরা এখন সুযোগ পাচ্ছে। আমরা তাই মনে করি, এই ঘাতকদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম অবিরাম চলবে। একই সাথে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাম গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল শক্তির বিকল্প শক্তি সমাবেশ গড়ে তোলা ছাড়া কোনো বিকল্প থাকবে না।’

সিপিবির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এই ধরনের জাতীয় দিবসে এসে আমরা সাধারণভাবে বলি, আমরা সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হলেই সব কাজ করা যাবে। আমার বিবেচনায় এই কথাটা যথাযথ না। আমাদের মনে রাখতে হবে, আমাদের শ্রেণিবিভক্ত সমাজে আমরা যখন একসাথে হই, আমাদের যার যার লক্ষ্য-উদ্দেশ্য থাকে। প্রকৃতপক্ষে জনস্বার্থের উদ্দেশ্য যাদের আছে তারা এক না হয়ে, যারা জনবিরোধী শক্তি আছে তারাই ঐক্যবদ্ধ হয়। তখন কিন্তু জনস্বার্থবিরোধী অবস্থানই তারা ঘোষণা করতে পারে। সুতরাং আজকে সময় এসেছে জনস্বার্থের পক্ষের রাজনৈতিক দল, ব্যক্তিবর্গকে এক হওয়া। সেই কাজটি আমরা বামপন্থীরা প্রচেষ্টা নিয়ে চলেছি। সেই লক্ষ্য নিয়েই এবারে আমরা বিজয় দিবস পালন করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত