Ajker Patrika

কোটা নিয়ে বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় রায় দেবেন উচ্চ আদালত, আশা কাদেরের 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৯ জুলাই ২০২৪, ১১: ৪৬
কোটা নিয়ে বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় রায় দেবেন উচ্চ আদালত, আশা কাদেরের 

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। তাই চূড়ান্ত রায় পর্যন্ত আন্দোলনকারীদের অপেক্ষা করতে বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘আমরা মনে করি, দেশের উচ্চ আদালত বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করে রায় প্রদান করবেন।’ 

আজ সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন কাদের। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে যে সংগ্রাম শুরু করেছেন, তার মূল চালিকাশক্তি মেধাবী জনগোষ্ঠী। শিক্ষিত, দক্ষ, স্মার্ট প্রজন্ম গঠনের মধ্য দিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের সংগ্রামকে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে নিতে মেধাবী তরুণ প্রজন্ম আমাদের প্রধান প্রয়োজন।’ 

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালে পরিপত্র জারি করে সব ধরনের কোটা বিলুপ্ত করেছেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে সাতজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে রিট করেন। দেশের উচ্চ আদালত কোটা বাতিলের পরিপত্র বাতিল করেছেন। সরকারপক্ষের আইনজীবী হাইকোর্টের রায়ের বিপক্ষে আপিল করেছেন। সরকার কোটা বাতিলের দাবির প্রতি আন্তরিক বলেই অ্যাটর্নি জেনারেল আপিল দায়ের করেছেন।’ 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরউচ্চ আদালতে বিচারাধীন বলে তা নিয়ে কোনো প্রকার মন্তব্য আইনসিদ্ধ নয় বলে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আদালত উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে নিশ্চয়ই একটা চূড়ান্ত রায় প্রদান করবেন। উচ্চ আদালতের রায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে এবং কোনো প্রকার উত্তেজনা, রাস্তাঘাট বন্ধ করে মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি পরিহার করা উচিত। বিশেষত এইচএসসি পরীক্ষার্থী-অভিভাবকদের অসুবিধা হয় যে কর্মসূচিতে, সে ধরনের কর্মসূচি পরিহার করা দরকার।’ 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এর আগে যে কোটা আন্দোলন বাংলাদেশে হয়েছিল, সেখানকার প্রথম সারির ৩১ জন নেতা কিন্তু বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি। এটার হিসাব আপনারা (সাংবাদিক) নিতে পারেন।’ 

কোটাবিরোধী আন্দোলনে রাজনৈতিক উপাদান যুক্ত হয়েছে দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের বিভক্ত ও মেরুকরণের রাজনীতি এখানে যুক্ত হয়ে গেছে। কারণ বিএনপি প্রকাশ্যে ও তাদের সমমনারা এই আন্দোলনের ওপর ভর করেছে। তারা সমর্থন করেছে প্রকাশ্যেই। সমর্থন করা মানে, তারা এর মধ্যে অংশগ্রহণও করেছে। কাজেই এটা এখন মেরুকরণের রাজনীতির ধারার মধ্যেই পড়ে। এটার রাজনৈতিক রং নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।’ 

আওয়ামী লীগের এই অন্যতম নীতিনির্ধারক বলেন, ‘এখানে কারা যুক্ত আছে, কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ কি না—সেটা আন্দোলনের গতিধারার মধ্যেই বোঝা যাবে। এই গতিধারায় সময়ের পরিবর্তনে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে। কোনো কিছুই লুকানো সম্ভব হবে না। আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’ 

এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে কোন রাজনৈতিক দল পৃথিবীর কোন দেশে আন্দোলনে শামিল হয়েছে? এটা বিচারাধীন। কোনো রাজনৈতিক দল পারে না এভাবে। এটা তো আদালতের রায়। আদালত রায় দিয়েছেন, এখানে সরকারের দোষ কোথায়? এখানে যে বিষয়টা আদালতের এখতিয়ার, সে বিষয়টা নিয়ে কথা বলা বা সমালোচনা করা, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা তো আইনসিদ্ধ নয়। আমরা সেটাই বলছি।’ 

কোটাবিরোধী আন্দোলনে জনদুর্ভোগ কমাতে সরকারের কঠোর হওয়ার পরিকল্পনা আছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘আমরা তো আপিল করলাম। এখন আদালত চূড়ান্ত রায় দেননি। এর মধ্যে আমরা কীভাবে হস্তক্ষেপ করি? আমর তো বলছি, জনদুর্ভোগ হয় এমন কর্মসূচি পরিহার করা উচিত। আদালতের রায় হোক, তারপর দেখা যাবে।’ 

আপনারা আন্দোলন স্থগিত বা প্রত্যাহারের অনুরোধ করছেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘আমি যা বক্তব্য রেখেছি, এ থেকে বুঝে নেন। আমার যা বলার, বলে দিয়েছি। ভাষাটা বুঝে নিন, তাহলে হবে।’ 

সর্বজনীন পেনশন স্কিমের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘এখানে ভুল বোঝাবুঝি থাকতে পারে। তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগও আছে। আনুষ্ঠানিক বসাবসি এখনো হয়নি। সিদ্ধান্ত তো নিতে হবে বাস্তব পরিস্থিতির আলোকে। এখানে আমরা সুপিরিয়র, না শিক্ষক সুপিরিয়র—এ বিতর্কে যাব না। আমরা যাব, যার পদমর্যাদার ভিত্তিতে যেটা বাস্তবসম্মত সেটাতে করতে।’ 

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কার্যক্রম প্রভাবিত করতে মনগড়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে: গুম কমিশন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কিছু সংবাদমাধ্যমে ‘গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি’র নাম জড়িয়ে বিভ্রান্তিকর ও অসত্য তথ্য প্রচার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে কমিশন। এসব তথ্য কমিশনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে এবং কমিশনের মতে, পূর্বনির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলকে ঘিরে মনগড়া তথ্য যুক্ত করে এ ধরনের বক্তব্য ছড়ানো হচ্ছে, যার উদ্দেশ্য কমিশনের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি বা প্রভাবিত করা।

আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) গুমসংক্রান্ত কমিশনের সচিব কুদরত-এ-ইলাহী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে ‘গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি’-এর নাম জড়িয়ে কিছু বিভ্রান্তিকর ও অসত্য তথ্য প্রচারিত হচ্ছে, যা কমিশনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। কমিশনের প্রতিবেদন দাখিলের পূর্বনির্ধারিত সময়সীমার সঙ্গে সংগতি রেখে মনগড়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্য সংযুক্ত করে কমিশন সম্পর্কে যে বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে, তা মূলত কমিশনের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি বা প্রভাবিত করার হীন উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে বলে প্রতীয়মান হয়।

এতে আরও উল্লেখ করা হয়, কমিশনের বিভিন্ন জিজ্ঞাসাবাদ কার্যক্রমে খন্দকার রাকিব নামের কোনো ব্যক্তির উপস্থিতির যে দাবি প্রচার করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসত্য। ওই ব্যক্তি কখনোই গুমসংক্রান্ত কমিশনে কোনো পদে কর্মরত ছিলেন না এবং কমিশনের কোনো জিজ্ঞাসাবাদ কার্যক্রমেও তাঁর উপস্থিতি ছিল না।

কমিশনের মতে, এ ধরনের অস্পষ্ট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্যের মাধ্যমে একটি মহল কমিশনের নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গুম হওয়া ব্যক্তি ও তাঁদের পরিবারের দীর্ঘ প্রতীক্ষা এবং ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষার প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান রেখে কমিশন তার অর্পিত দায়িত্ব নিরপেক্ষভাবে ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দেশপ্রেমিক সব নাগরিকের সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য। এই অবস্থায় দেশবাসীকে বিভ্রান্তিকর, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও উসকানিমূলক তথ্যের প্রতি কর্ণপাত না করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জনসচেতনতায় ‘ভোটের গাড়ির’ প্রচারণা শুরু সোমবার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৬
জনসচেতনতায় ‘ভোটের গাড়ির’ প্রচারণা শুরু সোমবার

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট–২০২৬ সামনে রেখে ভোটারদের সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করতে ‘ভোটের গাড়ি’ শীর্ষক প্রচারণা কার্যক্রম শুরু হচ্ছে সোমবার (২২ ডিসেম্বর)।

এদিন বিকাল ৪টা ৩০ মিনিটে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা থেকে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে এই প্রচারণার উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সরকারি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে দেশের ৬৪ জেলায় ‘গণভোট ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন–২০২৬’ উপলক্ষ্যে ধারাবাহিক প্রচার-প্রচারণার অংশ হিসেবে ‘ভোটের গাড়ি’ কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে ভোটারদের ভোটাধিকার, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের গুরুত্ব তুলে ধরা হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এবং বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।

নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ‘ভোটের গাড়ি’ প্রচারণার মাধ্যমে গ্রাম থেকে শহর—সব স্তরের মানুষের কাছে নির্বাচনী বার্তা পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর ফলে ভোটারদের মধ্যে নির্বাচন ও গণভোট নিয়ে আগ্রহ ও সচেতনতা আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দেড় দশকে পুলিশ, বিচার ও প্রশাসনের ভিত দুর্বল করা হয়েছে: আসিফ নজরুল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এসইউবির সপ্তম সমাবর্তনে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত
এসইউবির সপ্তম সমাবর্তনে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত

পুলিশ, বিচার ও প্রশাসনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো একসময় অগ্রসরমাণ অবস্থায় থাকলেও গত দেড় দশকে তাদের ভিত দুর্বল করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

তিনি বলেছেন, ‘স্বাধীনতার ৫৪ বছরে ব্যক্তি পর্যায়ে অনেক অর্জন থাকলেও টেকসই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে রয়েছি। পুলিশ, বিচার ও প্রশাসনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো একসময় অগ্রসরমাণ অবস্থায় থাকলেও গত দেড় দশকে তাদের ভিত দুর্বল করা হয়েছে। ফলে সেগুলো কার্যকরভাবে পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।’

আজ রোববার পূর্বাচল নতুন শহরে অবস্থিত স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (এসইউবি) সপ্তম সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এবারের সমাবর্তন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির স্মরণে উৎসর্গ করা হয়।

আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী ইউরোপের অগ্রযাত্রা প্রমাণ করে যে দেশ গঠনে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান কতটা গুরুত্বপূর্ণ। যেসব দেশ প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পেরেছে, তারাই এগিয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের দেশে ব্যক্তি ও পরিবার প্রাধান্য পেয়েছে, প্রতিষ্ঠান নয়। ফলে অর্জন থাকলেও তা টেকসই হয়নি।’

বক্তব্যের শুরুতেই ওসমান হাদির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে এবং তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমি কখনো এত বড় জানাজা দেখিনি। মানুষের যে আহাজারি ও দোয়া প্রত্যক্ষ করেছি, তাতে আমার দৃঢ় বিশ্বাস—আল্লাহ তাঁকে জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে অধিষ্ঠিত করবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘হাদির জন্য এত মানুষের শোকের কারণ হলো—তিনি কখনো নিজের কথা ভাবতেন না; ভাবতেন ইনসাফ প্রতিষ্ঠার কথা। তিনি সৎ জীবন যাপন করতেন, সবাইকে ভালোবাসতেন। কর্মীদের জন্য তিনি যা করে গেছেন, তা অনেক নেতার জন্যই অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।’

সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ।

তিনি বলেন, ‘আজকের গ্র্যাজুয়েটরা মেধাবী ও সাহসী। কারণ, জ্ঞানার্জন এখন বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ নয়। প্রযুক্তির বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার পরিসরও বিস্তৃত হচ্ছে, তৈরি হচ্ছে নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জকে সম্ভাবনা হিসেবে কাজে লাগাতে হবে।’

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. আখতার হোসেন খান। এ ছাড়া বক্তব্য দেন স্টেট ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ডা. এ এম শামীম, ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. মো. মাহবুবুর রহমান, সহ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নওজিয়া ইয়াসমীনসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিনরা।

সমাবর্তনে এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০টি বিভাগের মোট ৬৭২ জনকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করা হয়। একই সঙ্গে তিনজন শিক্ষার্থীকে চ্যান্সেলরস গোল্ড মেডেল, চারজন শিক্ষার্থীকে ভাইস চ্যান্সেলর সিলভার মেডেল এবং ২০ জন শিক্ষার্থীকে ডিনস অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।

সমাবর্তন উপলক্ষে সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য, শিক্ষক ও গ্র্যাজুয়েটরা বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক দিয়ে প্রবেশ করে সমাবর্তন শোভাযাত্রায় অংশ নেন। দিনব্যাপী সমাবর্তন অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যায় আয়োজন করা হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অ্যালামনাই, রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যবৃন্দ, সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব এবং বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে অপারেশন শুরু করবে যৌথ বাহিনী: ইসি সানাউল্লাহ

বাসস, ঢাকা  
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ৫১
আজ সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইসির সভা শেষে ব্রিফিংয়ে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ। ছবি: বাসস
আজ সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইসির সভা শেষে ব্রিফিংয়ে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ। ছবি: বাসস

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে সাধারণ মানুষ, ভোটার, প্রার্থী ও দলগুলোর মাঝে আস্থার পরিবেশ তৈরি করার লক্ষ্যে শিগগির মাঠপর্যায়ে যৌথ বাহিনীর অপারেশন পুনরায় চালু হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।

নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, ‘আমরা নির্দেশনা দিয়েছি, এখন থেকে মাঠপর্যায়ে যৌথ বাহিনীর অপারেশন পুনরায় চালু হবে। যৌথ বাহিনীর অপারেশনের অন্যতম লক্ষ্য হবে অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা, সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় নিয়ে আসা। সার্বিকভাবে, সাধারণ মানুষ, ভোটার, প্রার্থী ও দলগুলোর মাঝে একটা আস্থার পরিবেশ তৈরি করা। এলাকাভিত্তিক চেকপয়েন্ট অপারেশনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। যেসব এলাকায় অস্ত্রের আনাগোনা আছে মর্মে জানা যায়, ওইসব এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনার ব্যাপারে বলা হয়েছে।’

আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বৈঠক এবং পরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনাসংক্রান্ত ইসির সভা শেষে এক ব্রিফিংয়ে নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ এসব কথা বলেন।

এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

দুপুর ১২টায় তিন বাহিনীর প্রধান কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন। বেলা আড়াইটায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনাসংক্রান্ত ইসির সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বিভাগ, বাহিনী ও সংস্থার প্রধান ও প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘সার্বিকভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যারা নির্বাচনকে বিঘ্নিত করতে চায়, আন্ডারমাইন করতে চায়—এগুলো সব চিহ্নিত করেছি। জনমনে যাতে স্বস্তি ফিরে আসে, মানুষ যেন আশ্বস্ত হয়—সে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’

নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, ‘যারা নির্বাচনকে বিঘ্নিত করতে চায়, তাদের টার্গেট মূলত শহর এলাকাভিত্তিক। তারা সম্ভবত খুব অর্গানাইজভাবে টার্গেটেড কর্মকাণ্ড করছে। যাতে এটার প্রভাব জনমনে শঙ্কা ছড়িয়ে পড়ে। এগুলো সব চিহ্নিত করা হয়েছে। জনমনে যাতে স্বস্তি ফেরত আসে, মানুষ যেন আশ্বস্ত হয়, দলগুলো যাতে যথাযথভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করতে পারে, নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী সব কাজ যেন নির্বিঘ্ন হতে পারে, সে নির্দেশনা দিয়েছি।’

নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘চোরাগোপ্তা হামলা হলো যারা হেরে যায়, তাদের একটা কৌশল। এগুলোকে প্রতিহত করার জন্য যা যা করা দরকার, তা-ই করতে হবে। যাতে কেউ এগুলো ঘটানোর দুঃসাহস না দেখায়, তারা যেন পালাতে না পারে—সে জন্য আমাদের সচেষ্ট হতে হবে। গোয়েন্দা সংস্থাসহ বাহিনীগুলোকে সচেতন করেছি।’

বৈঠকের বিষয় সম্পর্কে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে কমিশনের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানদের বৈঠক ছিল। আজকে প্রথমবারের মতো তিন বাহিনীর প্রধান তথা সেনাবাহিনীর প্রধান, নৌবাহিনীর প্রধান ও বিমানবাহিনীর প্রধানের সঙ্গে আলাদাভাবে মিটিং করেছি। তফসিল ঘোষণা হয়েছে ১১ ডিসেম্বর। তফসিল ঘোষণার পরে সার্বিক পরিস্থিতি মূল্যায়নে আমাদের দিকনির্দেশনা এবং অপরাপর আনুষ্ঠানিক কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’

তফসিল ঘোষণার পর দ্বিতীয় মিটিংয়ের শুরুতেই শহীদ শরিফ ওসমান হাদিসহ কয়েকজনের রুহের মাগফিরাত কামনা করা হয়েছে উল্লেখ করে সানাউল্লাহ বলেন, ‘ওসমান হাদির ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত সাত-আট দিন আমরা পুরা জাতি শোকের মধ্যে ছিলাম এবং আমাদের ফোকাসটা সেদিকেই ছিল। কিন্তু মাঠপর্যায়ে নির্বাচনী কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’

সুনির্দিষ্ট কতগুলো নির্দেশনা নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ বিঘ্নিত করে—এ ধরনের কোনো কর্মকাণ্ড সহ্য করা হবে না।

ইসি সানাউল্লাহ বলেন, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রার্থী হিসেবে যাঁদের মনোনয়ন দিচ্ছেন বা স্বতন্ত্র হিসেবে যাঁরা নির্বাচন করতে চাচ্ছেন—তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা আশ্বস্ত হয়েছি যে, পুলিশ থেকে ইতিমধ্যে একটা প্রোটোকল দাঁড় করানো হয়েছে। সেই প্রটোকল অনুযায়ী যাঁরা যাঁরা নিরাপত্তা চাচ্ছেন, তাঁদের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করা হচ্ছে।’

তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, ‘তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে আলোচনায় তাঁরা আমাদের সমন্বিতভাবে প্রস্তুতির ব্যাপারে জানিয়েছেন। একটা সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন করার জন্য যা যা প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন, তা তাঁরা নিয়ে রেখেছেন। যত ডেপ্লয়মেন্ট যেভাবে করা দরকার, সেটা তাঁরা করতে যাচ্ছেন। যেমন—সেনাবাহিনী এক লাখ সদস্য মোতায়েন করবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত