Ajker Patrika

বিএনপি-জামায়াতের ভোটের দিকে চেয়ে আ.লীগ নেতারা

বাপ্পী শাহরিয়ার, চকরিয়া (কক্সবাজার)
আপডেট : ১৯ মে ২০২৪, ১১: ২০
বিএনপি-জামায়াতের ভোটের দিকে চেয়ে আ.লীগ নেতারা

চলমান ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন কেন্দ্রীয়ভাবে বর্জন করেছে বিএনপি। এর পরও অনেক এলাকায় কিছু নেতা দলের সিদ্ধান্ত না মেনে এই নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। কেউ আবার নিজে নির্বাচন না করলেও প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন। ভোটে অংশ নেওয়া দলের নেতারাও বিএনপি-জামায়াতের এ ধরনের কর্মী-সমর্থকদের কাছে টানার চেষ্টা করছেন। কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায়ও এমন চিত্র রয়েছে।

দ্বিতীয় দফায় কক্সবাজারের তিন উপজেলায় ভোট গ্রহণ হবে ২১ মে। এর মধ্যে চকরিয়া উপজেলায় সবচেয়ে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা করছেন স্থানীয় নেতারা। চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলম এখানে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ভোটে লড়ছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা ফজলুল করিম ওরফে সাঈদী। জাফর আলম সাবেক সংসদ সদস্য ছাড়াও চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পৌরসভা মেয়র ছিলেন। সে হিসেবে এই উপজেলায় আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই নেতার মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই উপজেলায় আরও দুই প্রার্থী রয়েছেন। তাঁরা হলেন কল্যাণ পার্টির সাবেক অতিরিক্ত মহাসচিব আব্দুল্লাহ আল হাসান ও ভেওলা মানিকচর (বিএমচর) ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বদিউল আলম। যদিও বদিউল আলম সাবেক এমপি জাফর আলমের পক্ষে প্রকাশ্যে ভোট করছেন। 

এই উপজেলায় বিএনপি-জামায়াতের কোনো নেতা প্রার্থী না হলেও ভোটার হিসেবে এ দুই দলের নেতা-কর্মীদের কাছে টানার চেষ্টা করছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতারা।

জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিএনপি ও জামায়াতের কর্মী-সমর্থকদের ভোটকেন্দ্রে আনার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন জাফর আলম ও ফজলুল করিম। এমনকি একটি নির্বাচনী সভায় ফজলুল করিম বিএনপি-জামায়াতের লোকজনকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। তাঁকে ভোট দিলে প্রকাশ্যে আন্দোলন-সংগ্রাম ও মিটিং-মিছিল করতে পারবে বলে ঘোষণাও দেন।

তবে বিএনপির একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জাফর আলম ও ফজলুল করিম আওয়ামী লীগের টানা ক্ষমতায় থাকাকালে বিএনপি-জামায়াতের ওপর দমনপীড়ন চালিয়েছে। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু ভিডিও ও ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে জাফর আলমের দমন-পীড়ন ও ফজলুল করিমের বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদকে নিয়ে করা অশ্লীল মন্তব্যের ভিডিও রয়েছে। ২০০০ সালে ফজলুল করিম বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অনুষ্ঠানের মঞ্চে গুলি চালিয়েছিলেন। এসব প্রচার করা হচ্ছে। নীতিগতভাবে বিএনপির কোনো নেতা-কর্মী দুজনের কাউকেই সমর্থন দেবেন না।

উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন আহমেদ একজন বিশেষ প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন বলে প্রচার করা হচ্ছে। সালাহ উদ্দিন আহমেদ এই আসনে সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন।

তবে কোনো প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার নির্দেশনাকে অপপ্রচার উল্লেখ করে চকরিয়া পৌর বিএনপির সভাপতি ও পৌরসভার সাবেক মেয়র নুরুল ইসলাম হায়দার বলেন, ‘ভোট বর্জনের বিষয়ে আমি তারেক রহমান ও সালাহ উদ্দিন সাহেবের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা আমাদের ভোট বর্জন করতে নির্দেশনা দিতে বলেছেন। সালাহ উদ্দিন আহমেদ এমন কোনো নির্দেশনার কথা কাউকে জানাননি। এসব অপপ্রচার।’

নুরুল ইসলাম হায়দার বলেন, ‘ভোটের মাঠে যে দুজন প্রার্থী হয়েছেন, দুজনই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। তাঁরা আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছেন। মূলত আমরা কেন্দ্রীয় নিদের্শনামতে বিএনপির পক্ষ থেকে ভোট বর্জনের লিফলেট বিতরণ করছি। কোনো নেতা-কর্মী কারও প্রার্থীর পক্ষে গেলে কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

চকরিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এনামুল হক বলেন, ‘আমি সাংগঠনিক একটি মিটিংয়ে আছি, পরে বিস্তারিত বলব।’ 
জামায়াতের চকরিয়া পৌর শাখার আমির আরিফুল কবীর বলেন, ‘ভোট থেকে বিরত থাকতে আমাদের কাছে কেন্দ্রীয়ভাবে নির্দেশনা রয়েছে। আমরা সেভাবে কাজ করছি। কোনো প্রার্থীর পক্ষে আমাদের অবস্থান নেই।’

এ বিষয়ে জাফর আলম বলেন, ‘আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।’

ফজলুল করিমকে ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শহীদ করপোরাল মাসুদ রানার মরদেহের অপেক্ষায় স্বজন ও এলাকাবাসী

লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
শহীদ কর্পোরাল মাসুদ রানার মরদেহের অপেক্ষায় স্বজন ও এলাকাবাসী। ছবি: আজকের পত্রিকা
শহীদ কর্পোরাল মাসুদ রানার মরদেহের অপেক্ষায় স্বজন ও এলাকাবাসী। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করা কর্পোরাল মাসুদ রানাকে শেষবারের মতো এক নজর দেখতে অধীর অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে ড্রোন হামলায় নিহত বীর সেনানীর বাড়ি নাটোরের লালপুর উপজেলার আড়বাব ইউনিয়নের বোয়ালিয়াপাড়া গ্রামে।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মাসুদ রানার মরদেহ বহনকারী হেলিকপ্টার তাঁর গ্রামের বাড়ি-সংলগ্ন উপজেলার করিমপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অবতরণের কথা থাকলেও বৈরি আবহাওয়ার কারনে একটু দেরি হচ্ছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। পরে যথাযথ সামরিক মর্যাদায় তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ৫ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে করে মাসুদ রানাসহ শহীদ ছয় শান্তিরক্ষীর মরদেহ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। এ খবর ছড়িয়ে পড়তেই শহীদ মাসুদের গ্রামের বাড়িতে ভিড় জমাতে শুরু করেন এলাকার লোকজন।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকালে ঢাকা সেনানিবাস কেন্দ্রীয় মসজিদে শহীদদের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর হেলিকপ্টারযোগে শহীদ মাসুদ রানার মরদেহ আনা হবে তার নিজ গ্রামে। সেখানে পৌঁছানোর পর দ্বিতীয় জানাজা শেষে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় স্থানীয় কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হবে।

মরদেহ বহনকারী হেলিকপ্টার অবতরণের জন্য করিমপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠটি ইতিমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর একটি দল সেখানে অস্থায়ী হেলিপ্যাড নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় আনুষঙ্গিক কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে।

মাসুদ রানা উপজেলার আড়বাব ইউনিয়নের বোয়ালিয়াপাড়া গ্রামের মৃত সাহার উদ্দিনের বড় ছেলে। ২০০৬ সালে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। মাসুদ রানার মেজো ভাই মনিরুল ইসলাম এবং ছোট ভাই রনি আলমও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য।

স্বজনরা জানান, গত ৭ নভেম্বর স্ত্রী ও আট বছরের একমাত্র কন্যা মাগফিরাতুল মাওয়া আমিনাকে রেখে শান্তিরক্ষা মিশনে যোগ দিতে সুদানে যান মাসুদ রানা। মিশন শুরুর মাত্র এক মাস সাত দিনের মাথায় গত ১৩ ডিসেম্বর সুদানের আবেই এলাকায় ড্রোন হামলায় তিনি শহীদ হন। শান্তিরক্ষী হিসেবে দেশের মুখ উজ্জ্বল করার স্বপ্ন নিয়ে দেশ ছাড়লেও, কফিনে মুড়িয়ে ফিরছেন এই বীর।

নাটোর স্টেডিয়ামের আর্মি সেনাক্যাম্পের কমান্ডার মেজর মো. নাজমুল আলম আবীর বলেন, ‘শহীদ মাসুদের দাফন সম্পন্ন করতে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রয়োজনীয় সব কার্যক্রম সম্পন্ন করা হচ্ছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে শহীদ পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, ওই হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মোট ৬ জন শান্তিরক্ষী শহীদ হন। তাদেরই একজন নাটোরের লালপুরের কৃতী সন্তান কর্পোরাল মাসুদ রানা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাবনা-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা বিএনপির আনোয়ারুল ইসলামের

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি 
গতকাল রাতে চাটমোহর পৌর সদরের পাঠানপাড়া এলাকায় নিজ বাসভবনে মতবিনিময় সভায় কেএম আনোয়ারুল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল রাতে চাটমোহর পৌর সদরের পাঠানপাড়া এলাকায় নিজ বাসভবনে মতবিনিময় সভায় কেএম আনোয়ারুল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাবনা-৩ আসনে (চাটমোহর–ভাঙ্গুড়া–ফরিদপুর) স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আলহাজ্ব কে এম আনোয়ারুল ইসলাম। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে চাটমোহর পৌর সদরের পাঠানপাড়া এলাকায় নিজ বাসভবনে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় দলীয় নেতাকর্মীদের সামনে তিনি এ ঘোষণা দেন।

মতবিনিময় সভায় চাটমোহর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম তাইজুলের সভাপতিত্বে এবং উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল মুত্তালিব প্রামানিকের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল কুদ্দুস আলো মাস্টার, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নজির সরকার, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক গোলজার হোসেন প্রমুখ।

এ ছাড়া ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাসাদুল ইসলাম হীরা। বক্তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাবেক এমপি কে এম আনোয়ারুল ইসলামকে বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

কে এম আনোরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে দুইবার এমপি এবং দুইবার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলাম। এখন জনগণ চাইছে আমি নির্বাচনে অংশ নিই। জনগনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমি প্রার্থিতা ঘোষণা করেছি। সাধারণ জনগণ বহিরাগত কোন প্রার্থী চায় না। নির্বাচনী অনুকূল পরিবেশ থাকলে আমার জয় নিশ্চিত ইনশাআল্লাহ। আমার শেষ নি:শ্বাস পর্যন্ত আপনাদের সঙ্গে ছিলাম, আছি, থাকবো।’

চাটমোহর উপজেলা ও পৌর বিএনপির আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলার পৌর ও ইউনিয়ন বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, পাবনা-৩ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। এর আগে কেএম আনোয়ারুল ইসলাম ও হাসাদুল ইসলাম হীরার নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফরিদপুরে অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে পরীক্ষাকেন্দ্রে মহড়া দেওয়া সেই যুবক গ্রেপ্তার

ফরিদপুর প্রতিনিধি
গ্রেপ্তার করা আসামি। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার করা আসামি। ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা চলাকালে প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্র হাতে মহড়া দিয়ে শিক্ষকদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে আল-সাদ (৩০) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গ্রেপ্তার আল-সাদ আলফাডাঙ্গা পৌরসভার আনোয়ার হোসেনের ছেলে এবং স্থানীয় বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলামের ভাগনে।

আজ রোববার র‍্যাব-১০ ফরিদপুর ক্যাম্পের সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) তাপস কর্মকার বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, র‍্যাব-৬-এর সহযোগিতায় গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় খুলনা শহরের ময়লাপোতা এলাকায় যৌথ অভিযান চালিয়ে আল-সাদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে আলফাডাঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

র‍্যাব জানিয়েছে, ৯ ডিসেম্বর আলফাডাঙ্গা পৌরসভার কামারগ্রামে আলফাডাঙ্গা আদর্শ ডিগ্রি কলেজে পরীক্ষা চলাকালে ১৪৪ ধারা অমান্য করে আল-সাদ কলেজে প্রবেশ করে ত্রাস সৃষ্টি করেন। কলেজের সিসিটিভি ক্যামেরায় পুরো ঘটনা ধরা পড়ে। ফুটেজে দেখা যায়, একটি মোটরসাইকেলে দুই যুবক আসেন। পেছনে বসা আল-সাদের হাতে বড় আকৃতির দেশীয় অস্ত্র (রামদা) উঁচিয়ে নিয়ে আসেন। এ সময় উপস্থিত শিক্ষার্থীরা দৌড়ে ছড়িয়ে পড়েন। এরপর কলেজের মূল ভবনে প্রবেশ করেন এবং কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে যান।

র‍্যাব কর্মকর্তা তাপস কর্মকার জানান, আল-সাদ কর্তব্যরত শিক্ষক ও কলেজের অধ্যক্ষকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। পরে তাঁর সহযোগী সাদি খানকে (২৭) সঙ্গে নিয়ে হাতে তলোয়ারসহ কলেজ ক্যাম্পাসে পুনরায় প্রবেশ করে শিক্ষকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি দেন। এতে পরীক্ষার সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।

ঘটনার দুই দিন পর কলেজের কর্মচারী নাজমুল হোসেন বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আল-সাদ ও তাঁর সহযোগী সাদি খানকে আসামি করা হয়েছে।

আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসনাত বলেন, গ্রেপ্তার আল-সাদকে রাতেই থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। আদালতে প্রেরণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অপর যুবককে গ্রেপ্তার করতে অভিযান এখনো অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজধানীর হাতিরঝিলে দুই শিশুর মৃত্যু ও মা-বাবার অসুস্থতা ঘিরে রহস্য

ঢামেক প্রতিবেদক
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৪৫
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর হাতিরঝিল থানাধীন ওয়্যারলেস মোড় এলাকার একটি বাসা থেকে দুই সহোদর শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। দুই শিশুর নাম আফরিদা চৌধুরী (১০) ও তার ছোট ভাই এক বছর বয়সী ইলহাম চৌধুরী। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, খাবারে বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।

গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে হাতিরঝিল থানা-পুলিশ ওয়্যারলেস মোড় ৯১ নম্বর এসএইচএস টাওয়ারের নিচে গ্যারেজে ফ্রিজিং অ্যাম্বুলেন্সে রাখা দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে। আজ রোববার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়।

হাতিরঝিল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সুমন মিয়া জানান, শনিবার রাতে ওই বাসার নিচে ফ্রিজিং অ্যাম্বুলেন্সে রাখা শিশু দুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। তবে তাদের শরীরে কোনো জখমের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

এমআই সুমন মিয়া পরিবারের বরাত দিয়ে জানান, শিশুদের বাবা মোসলেহ উদ্দিন চৌধুরী একটি তৈরি পোশাক কারখানার মহাব্যবস্থাপক (জিএম) এবং মা সাইদা জাকাওয়াত আরা গৃহিণী। তাঁদের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালি থানার মুঘলটুলি এলাকায়। বর্তমানে ওয়্যারলেস মোড়ের ওই বাসায় থাকেন। প্রাথমিক তদন্তে স্থানীয় বাসিন্দাদের এবং পরিবারের কাছ থেকে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় দুই শিশুসন্তানসহ তাদের মা-বাবা খাবার খেয়ে রাতে ঘুমিয়ে পড়েন। শনিবার সকালে মেয়ে আফরিদা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে স্থানীয় রাশমনো হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁরা। সেখানে শনিবার সকাল ৭টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর পরিবার যখন তার মরদেহ বাসায় নিয়ে আসে, তখন ছেলে ইলহামও বমি করা শুরু করে। অসুস্থ হয়ে পড়া দেখে পরে তাকে মগবাজার কমিউনিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে শনিবার দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় শিশুটি।

এসআই সুমন মিয়া আরও বলেন, একই খাবার খেয়ে তাদের মা-বাবাও অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তবে তাঁরা চিকিৎসা শেষে সুস্থ আছেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, খাবারে বিষক্রিয়ার কারণে এই দুই শিশুর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তবে ওই খাবার তাঁরা বাসায় রান্না করেছিলেন নাকি বাইরে থেকে কিনে এনেছিলেন, তা এখনো জানা যায়নি। বিস্তারিত তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

এদিকে শিশুদের চাচা তৌহিদ আলম চৌধুরী বলেন, ‘আফরিদা বেইলি রোডের ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। ১৬ ডিসেম্বর আফরিদার জন্মদিন ছিল। মা-বাবা দুই সন্তানকে নিয়ে বাইরে কোনো এক রেস্টুরেন্টে খাবার খেয়েছিলেন। চার দিন পরে তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই খাবার খেয়ে, নাকি অন্য কোনো খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়েছেন, তা আমরা বুঝতে পারছি না। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে জানতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত