Ajker Patrika

‘মায়ের জীবন নিয়ে একটা সিনেমা হওয়া উচিত’

মীর রাকিব হাসান
‘মায়ের জীবন নিয়ে একটা সিনেমা হওয়া উচিত’

ঢাকা: সুজান হক, অভিনেত্রী স্পর্শিয়ার মা। বছর ৩০ আগের গল্প, প্রেম করে পালিয়ে বিয়ে করেছিলেন সুজান। কিন্তু ভালোবাসার মর্যাদা দিতে পারেননি স্বামী। স্পর্শিয়ার বয়স তখন এক বছর। সংসার-সন্তান-স্ত্রী ছেড়ে স্পর্শিয়ার বাবা পাড়ি জমালেন বিদেশে। সুজান হক যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন স্বামীর সঙ্গে। কিন্তু সাড়া মেলেনি। একটা সময় জানা গেল, সেখানেই বিয়ে করে স্থায়ী হয়েছেন সুজানের স্বামী ও স্পর্শিয়ার বাবা। তার পর থেকে শুরু মা–মেয়ের সংগ্রাম। এতটা বছর চলার পথে তেমন কাউকেই সঙ্গে পাননি। এমনকি সুজানের পরিবারের মানুষও থাকেন দেশের বাইরে। একা এক হাতে মেয়ের আজকের অবস্থান তৈরি করেছেন। নিজের সুনামও অক্ষুণ্ন রেখেছেন। কিছু আক্ষেপ তো রয়েই যায়। সেই থেকে শুরু করলেন সুজান, ‘সমাজ একজন স্বামী চায়, সেটা পরতে পরতে বুঝতে হয়েছে। স্বামী মন্দ হলেও অসুবিধা নেই। এই সমাজে স্বামী থাকতেই হবে। স্বামী না থাকা মানেই মহিলার হয়তো কোনো ত্রুটি আছে। সমাজ আমাকে এটা বুঝিয়েছে ভালো করে। অনেক কিছু ফেইস করেছি।’

উদাহরণ দিয়ে বোঝালেন তিনি, ‘একক মহিলাদের জন্য যে কতটুকু নিরাপত্তার অভাব আমাদের দেশে, সেটা বুঝেছি, অনেক কিছু বুঝেছি। কত বাসা ভাড়া নিয়েছি। কোনো বাসায় বাড়িওয়ালা, কোনো বাসায় বাড়িওয়ালার ছেলে, কোনো বাসায় বাড়িওয়ালার ভাই প্রেম করতে চেয়েছে আমার সঙ্গে। যখনই এমন পরিস্থিতিতে পড়েছি, বাসা ছেড়ে দিয়েছি। এভাবে করে করে আমি খুব ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম। নিরাপত্তার অভাব কতটা যে বোধ হতো, সেটা শুধু আমি আর আমার মেয়েই জানে। ও যে স্কুলে পড়ত সেই স্কুলের অভিভাবক, টিচাররা মিলে এমন পরিবেশ তৈরি করেছিল– ওর বাবা নেই কেন? ওর বাবা নেই–ও ভালো নয়। ওর সঙ্গে বাকি ছেলেমেয়েদের মিশতে দেওয়া যাবে না। সেটাও ফেইস করেছি। তখন এর প্রতিবাদ জানাতে হয়েছে। বলেছি, এটা নিয়ে আমি নিউজ করব। তখন তো আমি পত্রিকায় কাজ করি। তখন ওরা ক্ষমা চেয়ে নিয়েছে।’ 

স্পর্শিয়াও মায়ের কথায় সায় দিলেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সমাজ তো পুরুষতান্ত্রিক সমাজ। খোলাখুলিভাবে বললে একটা সিঙ্গেল ওমেনকে খুব খারাপ চোখে দেখা হয়। স্বামী ছেড়ে চলে গেছে, নিশ্চয়ই বউয়ের দোষ। মেয়েটারই তো দোষ। সেই জায়গা থেকে শুধু যে অর্থনৈতিক তা নয়, মানসিক স্ট্রাগলও ছিল। নিজের খাওয়া–পরা–থাকার সঙ্গে আরও একটা মেয়েকে বড় করা এই শহরে। এটা কিন্তু চাট্টিখানি কথা নয়।’

মা–মেয়ের সম্পর্ক বন্ধুর মতো। সুজান হকের মতে, ‘আমি মনে করি প্রত্যেক বাবা-মায়ের আগে বন্ধু হতে হবে। তাহলে সন্তানের কষ্ট বা দুঃখটা জানা যায়। সুখটা তো এমনিতেই চোখেই পড়ে। এতে সন্তান নিরাপদ বোধ করে। এ জন্য আমি মা না হয়ে বন্ধু হওয়ার চেষ্টা করেছি।’

স্পর্শিয়া বলেন, ‘আমার মায়ের লাইফের পার্ট নিয়ে একটা মুভি হওয়া উচিত। কারণ, তাঁর স্ট্রাগলটা ছোট করে বলা সম্ভব নয়। বলা শুরু করলে রাত পার হয়ে যাবে। কোনো বাসায় থাকলে বাড়িওয়ালা বা পাড়া–প্রতিবেশী যেমন ডিস্টার্ব করত, তেমনি অনেক সময় চাকরি পরিবর্তন করতে হয়েছে। বসরা ডিস্টার্ব করত। আমাদের সমাজে একা একটা সিঙ্গেল মেয়েকে পাবলিক প্রপার্টি হিসেবে দেখা হয়। ওইটাও একধরনের স্ট্রাগল ছিল আমার ও আমার মায়ের।’

স্পর্শিয়া কথা বলছিলেন হেসে হেসে। কিন্তু তাঁর মনের কষ্টটা চোখেমুখে স্পষ্ট। তিনি বলেন, ‘সে চাইলে বিয়েও করতে পারতেন। সেটাও সে করেননি। আমাকে আঁকড়ে রেখেছেন। একটা মানুষ এত ডেডিকেটেড হতে পারে সন্তানের প্রতি! সেটা আমাকে অবাকই করে। কারণ, আমি আরও অনেক বাবা-মা দেখেছি। পুরো লাইফটাই লিখে দিল আমাকে! এমনকি তাঁর কাছের বন্ধুবান্ধবও তেমন নেই। আমিকেন্দ্রিকই তাঁর জীবন। এটা নিয়েই আমাদের ঝগড়া হয় প্রায়ই। আমি এখনো বলি, একটা প্রেম করো বিয়ে করো। করবে না সে। আমার সঙ্গে বয়সেরও কিন্তু খুব বেশি পার্থক্য নেই তাঁর।’

 

সুজান হকের সাংবাদিকতার পরিচয় অনেকেই জানেন। দেশের একটি প্রথম সারির পত্রিকায় দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা করেছেন। শিক্ষকতাও করেছেন। তবে তিনি এখন লেখালেখি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেন। লেখালেখির পাশে আছে বুটিকস হ্যান্ডি ক্রাফটসের হাউস। বাগান আছে, পোষা প্রাণী আছে, আর মেয়ের স্ক্রিপ্ট তো তাঁরই আগে পড়া হয়। এখন একটা ছোট গল্প অনুবাদ করেছেন। গত বছর বইমেলাতে ছোটদের বই ‘হেলেনের অহংকারী ফুল’ প্রকাশ করেছেন। এ জীবনে বেশ কিছু বই লিখেছেন, কবিতার বই ‘তুমি সেই ভ্যালেন্টাইন’, বিভিন্ন ক্ষেত্রের তারকাদের যে সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন, ফিচার লিখেছেন, তার সংকলন নিয়েও বই প্রকাশ করেছেন। মাইকেল জ্যাকসন যখন প্রয়াত হন, তখন তাঁকে নিয়ে ‘শ্রদ্ধাঞ্জলি মাইকেল জ্যাকসন’ নামে একটা বই লিখেছেন। ‘অ্যা পোরট্রেট অব ফাদার রিগান’ বই তাঁর লেখা। ফটোগ্রাফি করেন। আছেন সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গেও জড়িত।

স্পর্শিয়া এখন কম কাজ করেন। আর এটাতে তৃপ্ত তাঁর মা। তিনি সাধুবাদ জানান মেয়ের এমন সিদ্ধান্তে। তাঁর মতে, এটা ভালো। যেটাতে ও স্বস্তিবোধ করবে, আমি স্বস্তিবোধ করব। সেই জায়গার কথা ভাবা লাগবে। ‘অনেকেই বলে মেয়েকে মিডিয়ায় কাজ করতে দিয়েছি। কেন! তারা তো কাছ থেকে দেখেন না মিডিয়াকে। ভালো–মন্দ তো সব সেক্টরেই আছে। একজন শিল্পীর যেভাবে স্ট্রাগল করতে হয়, সেটা তো মিডিয়ার বাইরের মানুষ বুঝবে না। মিডিয়া মানেই খারাপ নয়, আমি তো বলি তোমরা আসো, এসে দেখো ওরা কি ফেইস করে, এখানে কি ভালো–মন্দ আছে। তারপর বলো। মিডিয়ার মানুষও ভালো থাকতে পারে। খারাপ প্রস্তাব যে সব মিডিয়া থেকে আসে, তা তো নয়। তাহলে শোবিজের বাইরে এত ক্রাইম হচ্ছে কেন!’

অভিনেত্রী স্পর্শিয়ার আজকের অবস্থানের পেছনে সবটাই মায়ের অবদান বলে মনে করেন স্পর্শিয়া। তিনি বলেন, ‘আম্মুর কখনো চাওয়া ছিল না যে আমার মেয়ের ডাক্তার–ইঞ্জিনিয়ারই হতে হবে। আমি ছবি আঁকতাম। সেটাতেও তাঁর সায় ছিল। উৎসাহিত করত আমি যেন ছবি আঁকায় মন দিই। লেখালেখি করতাম, সে উৎসাহ দিত যেন আমি লেখক হই। আমি যখনই যেটা করতে ভালোবেসেছি, সেটাই সে চেয়েছে যেন আমি মন দিয়ে করি। ছোটবেলা থেকেই তো শোবিজের মানুষজন দেখে বড় হয়েছি। মা যেহেতু বহু বছর সাংবাদিকতায় ছিলেন। কিন্তু মা চাপিয়ে দেননি– তোমার অভিনেত্রী হতে হবে। সে কখনো তাঁর পরিচিত কাউকে বলেওনি যে আমার মেয়েকে কাজ দেও। কিন্তু যখন আমি নিজে শুরু করেছি, তখন সে পাশে ছিল। আমার ভালো–মন্দের সিদ্ধান্তের সঙ্গে ছিল। আমার স্ক্রিপ্ট পড়া থেকে বিদেশ ট্যুর– সবখানেই মা সঙ্গী হন। যেমনটা তাঁকে দেখেছি সেই শৈশব থেকে হাত ধরে চলা শেখাতে।’ 

খাবার খাওয়া নিয়ে দুজনার খুব ঝগড়া হয়। এক বেলার খাবার আরেক বেলা খায় স্পর্শিয়া। তখন এই নিয়ে মায়ের অনেক কথা শুনতে হয়। মেয়েকে নিয়মিত বকাঝকা করার আরও কারণ আছে,‘ও খুব সরল টাইপের। যে যা চায় সব বিলিয়ে দেয়। তখন রাগ হয়। আমারও কোনো একটা শখের জিনিস কেউ চাইল, অমনি সে দিয়ে দেয়। আমার লাইব্রেরি থেকে অর্ধেক বই দিয়ে দিয়েছে মানুষকে। আমি বাসায় না থাকলে দিয়ে দেয়। আমি এলে বলেও না। অনেকে পারিশ্রমিক ঠিকমতো দেয় না। চেনা মুখের আবদার রাখতে হয়। দেখা গেল সেই কাজটা করলে একটু মানহানি হয়। তখন রাগারাগি করি যে এটা কেন করেছ।’

স্পর্শিয়া মনে করেন, ‘তাঁর মা এই সময়ের প্রত্যেকটা নারীর জন্য উদাহরণ। প্রত্যেকটা নারীর আসলে তাঁর সঙ্গে কথা বলা উচিত, তাঁর সম্পর্কে জানা উচিত। আমি তাঁকে আইডল মানি। কারণ, সে যেভাবে কারও সাপোর্ট ছাড়া নিজেকে এগিয়ে নিয়েছেন, আমাকেও বড় করেছেন। আমি যে বদের হাড্ডি, আমাকেও সামলিয়েছেন। এটা আমি সব সময় সব জায়গাতেই বলি।’ তিনি বলেন, ‘অনেক সময় অনেক মেয়ের কথা শুনলে আমি বলি আমার মায়ের সঙ্গে কথা বলা উচিত। তাহলে কিছুটা হলেও উত্তরণের পথ খুঁজে পাবে। আমি নিজে যখন অনেক আপসেট হয়ে যাই, অনেক কিছু নিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি, তখন আমার চোখের সামনে তিনি চলে আসেন। তাঁর কথা চিন্তা করি। তখন ভাবি এই মহিলাটা কীভাবে আসলে এত স্ট্রাগল করেছে। এত বড় করেছে আমাকে। ওই জায়গায় তো আমি কিছুই না।’

স্পর্শিয়ার জীবনেও ঘটেছে বিয়ে এবং ডিভোর্সের মতো ঘটনা। বিয়ের সিদ্ধান্তটা স্পর্শিয়া নিজেই নিয়েছিলেন। স্পর্শিয়ার মায়ের কথা, ‘এত অল্প বয়সে তো আমি বিয়ের সিদ্ধান্ত দেব না। ও আবেগে পড়ে সিদ্ধান্তটা নিয়েছিল। আমি বলেছিলাম, এটা তোমার সঙ্গে যায় না। তোমার বয়স এখনো অনেক পড়ে আছে। আমি পাশে আছি। এখন আর আবেগকে প্রশ্রয় দেবে না হয়তো। শিক্ষা হয়েছে। আমি আছি, ওকে আর এমন সিদ্ধান্ত নিতেও দেব না। লম্বা জীবন আছে। সেখানে আমিই ওর সাথি খুঁজে দেব। আমার পছন্দের বাইরে গিয়ে তো একবার শিক্ষা হলো।’

স্পর্শিয়াও হাসিমুখে তাঁর মায়ের কথা মেনে নিলেন, ‘যখন ভুল করেছি, সে বলেছে এটা কোরো না, এটা ভুল। সে আমার চেয়ে অবশ্যই ম্যাচিউরড। সেই জায়গা থেকে আমি শুনিনি। তাঁর যেটা শুনেছি সেটা তো ভালো। যেটা শুনিনি বাঁশ খেয়েছি এই আর কি।’

 

 

 

 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অবশেষে জাস্টিন ট্রুডো-কেটি পেরির প্রেমের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এল, ইন্টারনেটে তোলপাড়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা ও তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে জাস্টিন ট্রুডো ও কেটি পেরি। ছবি:  এক্স
জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা ও তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে জাস্টিন ট্রুডো ও কেটি পেরি। ছবি: এক্স

দীর্ঘদিন ধরে চলা প্রেমের গুঞ্জনে অবশেষে সিলমোহর পড়ল। আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মঞ্চে নিজেদের সম্পর্কের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিলেন পপ গায়িকা কেটি পেরি এবং কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা ও তাঁর স্ত্রী ইউকোর সঙ্গে এক মধ্যাহ্নভোজে যোগ দিয়ে এই জুটি তাঁদের সম্পর্কের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, কেটি পেরি তাঁর চলমান ‘দ্য লাইফটাইমস ওয়ার্ল্ড ট্যুর’ স্থগিত রেখে ট্রুডোর সঙ্গে টোকিওতে এই কূটনৈতিক মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন।

জাস্টিন ট্রুডো কিশিদার সঙ্গে বৈঠকের একটি ছবি এক্স-এ শেয়ার করে লিখেছেন, ‘আপনাকে দেখে দারুণ লাগলো@kishida 230। ক্যাটি এবং আমি আপনার ও ইউকোর সঙ্গে বসে কথা বলার সুযোগ পেয়ে অত্যন্ত আনন্দিত। ফুমিও, আপনার বন্ধুত্বের জন্য এবং আন্তর্জাতিক নিয়মতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি এবং সবার জন্য একটি উন্নত ভবিষ্যতের প্রতি আপনার অব্যাহত প্রতিশ্রুতির জন্য ধন্যবাদ।’

পোস্ট করা ছবিতে দেখা যায়, ট্রুডো একটি ধূসর স্যুট পরে সম্পূর্ণ রাষ্ট্রনায়কোচিত রূপে ফিরে এসেছেন। অন্যদিকে, কেটি পেরি সেজেছিলেন সবুজ রঙের দু’টুকরো পোশাক, কালো টাইটস, একটি টার্টলনেক এবং বুট পরে। কিশিদা দম্পতির সঙ্গে ছবি তোলার সময় কেটি পেরিকে ট্রুডোর পেছনে হাত রেখে দাঁড়াতে দেখা যায়। কিশিদা ট্রুডোর পোস্টে মন্তব্য করেন, ‘ধন্যবাদ, জাস্টিন। আপনি এবং কেটি, দু’জনকেই অবকাশের শুভেচ্ছা!’

জাস্টিন ট্রুডো এই পোস্টটি শেয়ার করার সঙ্গে সঙ্গেই ইন্টারনেট জুড়ে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি হয়। একজন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী লেখেন, ‘মুক্ত বিশ্বের ইতিহাসে এটি সম্ভবত সবচেয়ে উন্মাদনার একটি ঘোষণা।’ আরেকজন এক্স ব্যবহারকারী মন্তব্য করেন, ‘কেটি পেরি আন্তর্জাতিক কূটনীতি সামলাচ্ছেন। আমার টপ রিস্কস ২০২৫ তালিকায় এটা ছিল না!’

অনেক ভক্তও মজার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। একজন লেখেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, কিন্তু সঙ্গে ছুটির কার্ডের আমেজ।’ অন্য একজন মন্তব্য করেন, ‘খোদার কসম, এটা আমার বিঙ্গো কার্ডে ছিল না।’ এই কূটনৈতিক ঘোষণার মাধ্যমে পেরি ও ট্রুডো জুটি এখন আন্তর্জাতিক সেলিব্রিটি মহলে নতুন আলোচনার কেন্দ্র হয়ে উঠেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লন্ডনে উন্মোচিত হলো শাহরুখ-কাজলের ভাস্কর্য

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৪৩
গত বৃহস্পতিবার লন্ডনে উন্মোচিত হয় ডিডিএলজের ভাস্কর্য। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
গত বৃহস্পতিবার লন্ডনে উন্মোচিত হয় ডিডিএলজের ভাস্কর্য। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

বলিউডের ‘রোমান্স কিং’ হিসেবে পরিচিত শাহরুখ খান এবং তাঁর সহ-অভিনেত্রী কাজলের একটি নতুন ভাস্কর্য উন্মোচিত হলো লন্ডনের লেস্টার স্কয়ারে। ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে দীর্ঘতম সময় ধরে চলা ব্লকবাস্টার ছবি ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’-এর ৩০ বছর পূর্তি উদ্‌যাপন উপলক্ষে এই ভাস্কর্যটি স্থাপন করা হয়েছে।

বর্ষণমুখর আবহাওয়ার মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার ভাস্কর্যটির আনুষ্ঠানিক উন্মোচন করা হয়। এই ভাস্কর্যটি লেস্টার স্কয়ারের ‘সিনস ইন দ্য স্কয়ার’ ট্রেইলের অংশ হিসেবে হ্যারি পটার, প্যাডিংটন এবং ব্রিজেট জোনসের ভাস্কর্যের সঙ্গে যুক্ত হলো।

লন্ডনে ভাস্কর্য উন্মোচনের ফাঁকে শাহরুখ খানের কাছে নববিবাহিত দম্পতিদের জন্য তাঁর নিজস্ব পরামর্শ জানতে চাওয়া হয়। মজা করে জবাব দেন শাহরুখ।

শাহরুখ উত্তর দেওয়ার আগেই অভিনেত্রী কাজল রসিকতা করে বলে ওঠেন, ‘ওঁর সব ছবিই তো বিয়ের আগের প্রেম নিয়ে, বিয়ের পরের প্রেম নিয়ে নয়!’

কাজলের কথায় সম্মতি জানিয়ে শাহরুখ খান হাসতে হাসতে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত, তুমি ছিলে একজন যাকে আমি উপদেশ দিতে পারতাম। কিন্তু বিয়ের পর, তুমি তো এখন নিজের দায়িত্বে চলে গেছ!’ অবশ্য শাহরুখ গুরুত্বপূর্ণ কিছু উপদেশ দিতে ভোলেননি। তিনি বলেন, ‘ততদিন (বিয়ের আগে) পর্যন্ত, আমার মনে হয় আমি ঠিকই করেছি। আপনাদের রোমান্স থাকতে হবে, গান গাইতে হবে।’ কাজল সঙ্গে সঙ্গে যোগ করেন, ‘এবং অবশ্যই ডিডিএলজে দেখতে হবে।’

ছবিটি সম্পর্কে যশ রাজ ফিল্মসের সিইও অক্ষয় বিধানি এটিকে ‘গৌরবের বিশাল মুহূর্ত’ হিসেবে বর্ণনা করেন। অন্যদিকে, হার্ট অব লন্ডন বিজনেস অ্যালায়েন্সের প্রধান নির্বাহী রস মর্গ্যান বলেন, ‘ডিডিএলজে একটি সিনেমাটিক ঘটনা যা প্রজন্মকে প্রভাবিত করেছে, এবং লন্ডন এই প্রথম ভারতীয় সিনেমার আন্তর্জাতিক দর্শকদের মুগ্ধ করে চলা একটি গল্পকে সম্মান জানাল।’

তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে রাজত্ব করেছেন শাহরুখ খান। সম্প্রতি প্রথমবারের মতো বিলিয়নেয়ার ক্লাবে প্রবেশ করেছেন। এই ঘটনা তাঁকে আর্নল্ড শোয়ার্জনেগার এবং টেলর সুইফটের মতো বৈশ্বিক তারকাদের কাতারে নিয়ে এসেছে।

চার বছরের বিরতির পর ২০২৩ সালে চলচ্চিত্রে ফেরেন বলিউড বাদশাহ। সম্প্রতি তাঁর আসন্ন অ্যাকশন ফিল্ম ‘কিং’-এর টিজার উন্মুক্ত হয়েছে। তবে অ্যাকশন ঘরানার আরও ছবি বা পরবর্তী জেমস বন্ড হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রসিকতা করে শাহরুখ জবাব দেন: ‘না। আমার উচ্চারণ সেরকম নয়। আর আমি শেকেন মার্টিনি (বিশেষভাবে তৈরি ককটেল) পছন্দ করি না।’

এদিকে, চলচ্চিত্র জগতের বর্তমান পরিস্থিতি এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মের কারণে সিনেমা হলগুলোতে দর্শক কমে যাওয়া নিয়ে কাজল মনে করেন, এখন দর্শকদের হাতে বেছে নেওয়ার সুযোগ অনেক বেশি। তিনি বলেন, ‘মানুষের এখন সিনেমা হলে যাওয়া বা না যাওয়ার স্বাধীনতা আছে। যখন এত বিকল্প, তখন বেছে নেওয়া কঠিন হয়ে যায়।’

তবে শাহরুখ খান বিশ্বাস করেন, ‘কমিউনিটি ভিউয়িং...সবসময় থাকবে। আমরা একসঙ্গে কোনো জিনিস দেখতে এবং উপভোগ করতে ভালোবাসি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাক্ষস সিনেমায় অভিনয়ের গুঞ্জন নাকচ করলেন ইধিকা

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪২
ইধিকা পাল ছবি : সংগৃহীত
ইধিকা পাল ছবি : সংগৃহীত

শাকিব খানের বিপরীতে ' প্রিয়তমা ' সিনেমা দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক হয় পশ্চিমবঙ্গের ইধিকা পালের । প্রথম সিনেমাতেই নজর কাড়েন অভিনেত্রী । এ বছর রোজার ঈদে মুক্তি পাওয়া মেহেদী হাসান হৃদয় পরিচালিত ‘ বরবাদ ' সিনেমায়ও দেখা গেছে তাঁকে । খবর ছড়িয়েছে , মেহেদী হাসান হৃদয়ের নতুন সিনেমায়ও অভিনয় করবেন ইধিকা । এবার তাঁর নায়ক সিয়াম আহমেদ । ‘ রাক্ষস ’ নামের সিনেমায় জুটি হচ্ছেন তাঁরা । অথচ অভিনেত্রী জানালেন ভিন্ন কথা । এমন নামের কোনো সিনেমা নিয়ে তাঁর সঙ্গে নাকি কোনো কথাই হয়নি । রাক্ষস সিনেমায় ইধিকার অভিনয়ের এই গুঞ্জন কয়েক দিন ধরে । ইতিমধ্যে নাকি আলাপও হয়েছে নির্মাতাদের সঙ্গে , এমন খবরও প্রকাশিত হয়েছে সংবাদমাধ্যমে । কিন্তু , নতুন এই সিনেমা নিয়ে কথা বলতে যোগাযোগ করলে ইধিকা জানালেন ভিন্ন কথা । খুদে বার্তায় আজকের পত্রিকাকে ইধিকা লেখেন , “ এখন অবধি এ রকম ( রাক্ষস ) নামের কোনো সিনেমা নিয়ে আমার কোনো কথা হয়নি । ' একই কথা পশ্চিমবঙ্গের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারকেও জানিয়েছেন ইধিকা । অভিনেত্রী জানান , সিয়াম আহমেদের সঙ্গে অভিনয় নিয়ে কোনো কথা হয়নি ।

আনন্দবাজার জানাচ্ছে , ইধিকা না থাকলেও রাক্ষসে সিয়ামের সঙ্গে থাকবেন টালিউড নায়িকা সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায় । এর আগে এ সিনেমায় সাবিলা নূরের অভিনয়ের খবর ছড়িয়েছিল । রাক্ষস সিনেমায় দেশ - বিদেশের একাধিক অভিনেত্রীর নাম শোনা গেলেও এখন পর্যন্ত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান কিংবা নির্মাতার কাছ থেকে আসেনি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা । বরং প্রযোজক শাহরিনা সুলতানা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন , এই সিনেমা নিয়ে বেশ কয়েকজন নায়িকার সঙ্গে কথা হয়েছে । শেষ পর্যন্ত কে থাকছে , সেটা সময় বলে দেবে । রাক্ষসের আগে আবু হায়াত মাহমুদের ‘ প্রিন্স ' সিনেমার নায়িকা হিসেবেও শোনা গেছে ইধিকার নাম । সেই দৃশ্যপটও বদলে গেছে ।

এখন শোনা যাচ্ছে , ইধিকা নয় , টালিউডের আরেক নায়িকা জ্যোতির্ময়ী কুণ্ডুর নাম । তবে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তাসনিয়া ফারিণের থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও অন্য কারও নাম ঘোষণা হয়নি এখন পর্যন্ত । জানা গেছে , এ মাসেই শুরু হবে প্রিন্স ও রাক্ষস সিনেমার শুটিং । দুটি সিনেমার বেশির ভাগ শুটিং হবে দেশের বাইরে । সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছর রোজার ঈদে মুক্তি পাবে সিনেমা দুটি ।

এ ধরনের গুঞ্জনে অবাক হয়েছেন তিনি । গত বছরও শোনা গিয়েছিল ‘ সিকান্দার ' নামের একটি সিনেমায় জুটি হচ্ছেন সিয়াম - ইধিকা । সেই খবরও শেষ পর্যন্ত গুঞ্জনই থেকে গেছে । এদিকে

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রকাশিত হলো শিরোনামহীনের ‘এই অবেলায় ২’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘এই অবেলায় ২’ ও ‘রিমেম্বার মি’ গানের পোস্টার
‘এই অবেলায় ২’ ও ‘রিমেম্বার মি’ গানের পোস্টার

গত বছরের অক্টোবরে প্রকাশ পেয়েছিল শিরোনামহীন ব্যান্ডের ‘এই অবেলায় ২’ গানের টিজার। তবে স্পনসর জটিলতায় আটকে ছিল গানটি। অবশেষে গতকাল প্রকাশ পেল শিরোনামহীনের বহুল প্রতীক্ষিত এই অবেলায় গানের দ্বিতীয় পর্ব। এটি শিরোনামহীনের পঞ্চম অ্যালবাম বাতিঘরের শেষ গান।

‘যদি কোথাও/ কোনো দিন দূরে সরে যাই/ নিসর্গের আঁধারে হারাই/ সমুদ্রের ঢেউ দেখে আমায় রেখো মনে’—এমন কথার গানটি লিখেছেন শিরোনামহীনের দলনেতা জিয়াউর রহমান, সুর করেছেন ব্যান্ডের ড্রামার কাজী আহমাদ শাফিন। ভিডিও নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি। গেয়েছেন শেখ ইশতিয়াক। শুটিং হয়েছে থাইল্যান্ডের কো খাম, কো মাখ ও কো চ্যাং আইল্যান্ডে। মডেল হয়েছেন নীল হুরেজাহান।

২০১৯ সালের মে মাসে ‘এই অবেলায়’ দিয়ে নতুন করে জেগে উঠেছিল ব্যান্ড শিরোনামহীন। নতুন ভোকাল নিয়ে ভক্তদের প্রত্যাশা পূরণ করতে যখন হিমশিম খাচ্ছিল দলটি, তখন এই অবেলায় গানটি ছিল শিরোনামহীনের জন্য অক্সিজেনের মতো। ছয় বছর পর প্রকাশ পেল এ গানের সিকুয়েল এই অবেলায় ২।

শিরোনামহীনের ইউটিউব চ্যানেলে বাংলার পাশাপাশি এই অবেলায় প্রকাশ পেয়েছে ইংরেজি ভাষায়। এই ভার্সনের শিরোনাম দেওয়া হয়েছে ‘রিমেম্বার মি’। ইংরেজি ভার্সন নিয়ে শিরোনামহীনের দলনেতা জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, ‘এই অবেলায় গানটি বিদেশি ভাষার মানুষও পছন্দ করেছে। ইউটিউব চ্যানেলে অনেক মন্তব্য দেখেছি ইংরেজি, স্প্যানিশসহ বিভিন্ন ভাষায় লেখা, “আমি গানের ভাষা বুঝতে পারছি না। কিন্তু গানটির সুর খুব ভালো লাগছে।” তাই এই অবেলায় ২-এর ইংরেজি ভার্সন করা। আশা করছি, বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি ভার্সনটাও দেশ-বিদেশের শ্রোতাদের মন জয় করতে পারবে। সেটা হলে ভবিষ্যতে এ ধরনের উদ্যোগ আরও হতে পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত