বিভুরঞ্জন সরকার

আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টানা চতুর্থবারসহ মোট পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। শুধু বাংলাদেশের নয়, এটা হবে সারা বিশ্বেই একটি রেকর্ড। আর কোনো দেশে গণতান্ত্রিক উপায়ে এত দীর্ঘ সময় সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনের কোনো নজির নেই। পরপর টানা চার মেয়াদে এবং মোট পাঁচবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার রেকর্ড কেবল শেখ হাসিনাই গড়তে চলেছেন।
তিনি প্রথম প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন। এরপর দ্বিতীয় দফায় ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। এরপর ২০১৪ সালে তৃতীয়বার এবং ২০১৯ সালে চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। ২০২৪ সালে পঞ্চমবারের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে চলেছেন।
শেখ হাসিনার ঝুলিতে আরও অনেক রেকর্ড রয়েছে। দেশের বৃহত্তম এবং ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব তাঁর চেয়ে বেশি সময় আর কেউ পালন করেননি। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন ১৯৬৬ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত। তার আগে ১০ বছর অবশ্য তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন। অন্যদিকে, শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। চার দশকের বেশি সময়। এটাও একটি রেকর্ড।
সংসদীয় রাজনীতিতে বিরোধী দলের নেত্রী হিসেবেও সময়ের হিসাবে এগিয়ে শেখ হাসিনা। ১৯৮৬, ১৯৯১ এবং ২০০১ সালে তিনি জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেত্রী ছিলেন।
সরকার পরিচালনায় এবং বিরোধী রাজনীতিতে তিনি তাঁর যোগ্যতা, প্রজ্ঞা, সাহসিকতা এবং দূরদর্শিতার স্বাক্ষর রেখেছেন। তাঁর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেমন প্রবীণ নেতাদের চেয়ে নেতৃত্বগুণে এগিয়ে গিয়ে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হয়ে উঠেছিলেন, শেখ হাসিনাও তাঁর সময়ের সবাইকে ছাড়িয়ে নিজের নেতৃত্বকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন।
রাজনীতিতে শেখ হাসিনার চলার পথ ফুল বিছানো ছিল না। তাঁকে কেউ যেচে জায়গা ছেড়ে দেয়নি; বরং অনেক প্রতিকূলতা, প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করেই তাঁকে এগোতে হয়েছে। কখনো বা তিনি ছিলেন নিঃসঙ্গ শেরপা। বাবা-মা-ভাই-ভ্রাতৃবধূসহ অসংখ্য স্বজন হারিয়ে, পদে পদে বিপদ, এমনকি জীবননাশের হুমকি সত্ত্বেও তিনি দেশ এবং দেশের মানুষের কল্যাণব্রতী হয়ে বলিষ্ঠভাবে এগিয়েছেন বলেই আজ তিনি দেশবাসীর ভালোবাসায় সিক্ত হতে পেরেছেন।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে যে ধারার রাজনীতি শুরু হয়েছিল, সেখান থেকে দেশকে ফেরানো যাবে বলে অনেকেই মনে করতেন না। মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে ক্ষমতার বাইরে রাখার সব ধরনের অপচেষ্টাই বিভিন্ন মহল থেকে হয়েছে। দেশের ভেতরে এবং বাইরে শত্রুতা ছিল, আছে। দল হিসেবে আওয়ামী লীগের মধ্যেও সব সময়ই ছদ্মবেশী মতলববাজদের উপস্থিতি ছিল এবং এখনো আছে। সবকিছু সামাল দিয়ে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে জিতিয়ে ক্ষমতায় আনার একক কৃতিত্ব শেখ হাসিনার। তিনি রাজনীতির গতিপ্রকৃতি খুব কাছ থেকে দেখেছেন। শত্রু-মিত্রের চেহারা তাঁর দেখা। তিনি দেখেছেন, ঠকেছেন এবং শিখেছেন। তাই তাঁকে যারা হারাতে চেয়েছে, কৌশলে যারা তাঁকে অতিক্রম করতে চেয়েছে, তাদেরই তিনি হারিয়েছেন, পেছনে ফেলেছেন।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে নেতিবাচক প্রবণতা সব সময় প্রবল। বিরোধিতার রাজনীতি এখানে যতটা প্রভাব ফেলে, পক্ষের রাজনীতি ততটা নয়। আমাদের দেশে রাজনীতিতে ‘না’ বলে মানুষকে যতটা মাতানো যায়, ‘হ্যাঁ’তে ততটা সাড়া জাগানো যায় না। অথচ শেখ হাসিনা ‘হ্যাঁ’য়ের রাজনীতিতেই মানুষকে অভ্যস্ত করে তুলছেন।
রাজনীতি নিয়ে হতাশা, ক্ষোভ এখন প্রবল। রাজনীতি থেকে শুদ্ধতা বিদায় নিয়েছে বলে মনে করা হয়। লাভ ও লোভের কাঙাল এখন রাজনীতিতে বেশি। সরকারে থেকেই শুধু নয়, বিরোধী দলে থেকেও রাজনৈতিক ব্যবসায় পকেট ভারী করা সহজ।
বলা যায়, একটি খুব অস্থির ও জটিল সময়ে শেখ হাসিনা নতুন করে সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন। সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ। দেশের ভেতরে, দলের অভ্যন্তরে সমস্যা আছে, সর্বোপরি দেশের বাইরে থেকেও সমস্যা চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা আছে।
সবকিছু সত্ত্বেও এটাই ঠিক যে শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রিত্বের আগের বাংলাদেশ আর তাঁর শাসনের বাংলাদেশ এক নয়। একসময় বাংলাদেশ ছিল সম্পদশালী ও মোড়লিপনা করা দেশগুলোর করুণানির্ভর। তলাবিহীন ঝুড়ি। খাদ্যঘাটতি, ঝড়-বন্যা-জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের নিত্যসঙ্গী, ত্রাণ পাওয়ার আশায় হাত পেতে থাকা একটি দেশ। কিন্তু এখন বাংলাদেশ বিশ্বের অনেক দেশের কাছেই উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশকে অনুসরণ করতে বলার মতো মানুষ এখন অনেক আছেন।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়ন-অগ্রগতির ধারায় এনেছেন। ২০১৫ সালে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০১৮ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের স্বীকৃতি পেয়েছে। এখন উন্নত দেশের লক্ষ্য অর্জনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না’। তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যাওয়ার গল্প তৈরি করছি একের পর এক। কেউ দাবিয়ে রাখতে পারছে না।
বিএনপি-জামায়াত শাসনের সময় দেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে জঙ্গিবাদী অপশক্তি দেশকে প্রকাশ্যে মানুষ হত্যার মহড়া দিয়ে মধ্যযুগীয় বর্বরতা দেখাতে পেরেছে। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার দেশকে জঙ্গিবাদমুক্ত করার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছে।
রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ সরকারবিরোধিতার নামে সহিংসতার বিস্তার ঘটিয়ে মামুষকে ভীত-সন্ত্রস্ত করার চেষ্টা অতীতে করেছে, এখনো করছে। ২০১৩ সালের মে মাসে হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডব দমনে সরকার বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়ে বড় ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সক্ষম হয়েছে। এরপর ২০১৪ সালে বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে অংশ না নিয়ে এবং পরের বছর সরকার পতনের ডাক দিয়ে দেশজুড়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল। আগুন সন্ত্রাস ছড়িয়ে ভীতিকর অবস্থা তৈরি করা হয়েছিল। মানুষের মনে তৈরি হয়েছিল আতঙ্ক। সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবে কি না, সে প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল। কিন্তু সরকার দৃঢ়তার সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে মানুষকে স্বস্তি দিয়েছে।
গণতন্ত্রের সুযোগের অপব্যবহার করে সন্ত্রাস-সহিংসতার পথে হেঁটে বিএনপি ও তার সহযোগীরা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে এখন রাজনীতিতে খাবি খাচ্ছে। একের পর এক ভুল রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বিএনপি নামের দলটিকে এখন অস্তিত্ব-সংকটের মুখে এনে দাঁড় করিয়েছে। সরকার পতনের এক দফার অসফল আন্দোলন এবার বিএনপিকে আরও বিচ্ছিন্ন করেছে। ভোট বর্জনের ডাকের পরিণতি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশল এবং ব্যক্তিগত সাহসিকতা সামগ্রিক পরিস্থিতি তাঁর অনুকূলেই রেখেছে।
পদ্মা সেতু নির্মাণে দুর্নীতির আগাম অভিযোগ এনে অর্থসহায়তা না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে যারা বাংলাদেশকে বেকায়দায় ফেলতে চেয়েছিল, তারা এখন অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখছে এক নতুন সক্ষম বাংলাদেশকে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের মতো বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বলে অনেকেই মনে করেছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাহস দেখিয়েছেন। পদ্মা সেতু এখন আর স্বপ্নকল্পনা নয়। দৃশ্যমান সত্য।
পদ্মা সেতু ছাড়াও মেট্রোরেল, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মতো মেগা প্রকল্প এখন বাস্তব চিত্র। রূপপুরে ব্যয়বহুল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ শেষের দিকে।
বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মতো কাজগুলো হতে পেরেছে শেখ হাসিনার প্রজ্ঞা ও বলিষ্ঠতার কারণেই। শেখ হাসিনার শাসনকালেই প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে সন্দেহ-অবিশ্বাস দূর হয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে ঝুলে থাকা ছিটমহল সমস্যার সম্মানজনক নিষ্পত্তি হয়েছে। সমুদ্রসীমার বিরোধ মিটেছে আন্তর্জাতিক আদালতে। কয়েক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে মানবিক কারণে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে শেখ হাসিনা বিশ্ব দরবারে প্রশংসিত হয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ, তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে ক্রম অগ্রসরমাণতা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়কে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছে। দিনবদলের সনদ রূপকল্প ২০২১-এর পর ২০২১ থেকে ২১০০ সাল পর্যন্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। তিনি নিজে স্বপ্ন দেখেন এবং দেশের মানুষের সামনেও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন তুলে ধরেন।
দুর্নীতি-অনিয়ম, লুটপাটের ঘটনা দেশে ঘটছে না, তা নয়। বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগও বাড়ছে। তবে লুটপাট, অর্থ পাচারের কাহিনি কি শুধু শেখ হাসিনার সময়েরই, নাকি এর ধারাবাহিকতা আছে? শেখ হাসিনা সব সময় সবকিছু তাঁর মতো করে করতে পারেন তা-ও হয়তো নয়। দুনিয়ার কোনো দেশেই রাজনীতি একটি সরলরেখা ধরে চলে না। সরকার এবং সরকারের বিরোধিতা হলো রাজনীতির চিরায়ত খেলা। দ্বন্দ্ব-বিরোধ রাজনীতির স্বাভাবিক প্রবণতা। এর মধ্যে যে রাজনীতি বেশিসংখ্যক মানুষের উপকার নিশ্চিত করে, সেই রাজনীতিই টেকসই হয়। বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরি করে শেখ হাসিনার সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করছে। লাখ লাখ মানুষ বিনা মূল্যে বাসস্থান পেয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে লিখেছেন: আমাদের বাঙালিদের মধ্যে দুইটা দিক আছে। একটা হলো ‘আমরা মুসলমান, আর একটা হলো, আমরা বাঙালি।’ পরশ্রীকাতরতা এবং বিশ্বাসঘাতকতা আমাদের রক্তের মধ্যে আছে। বোধ হয় দুনিয়ার কোন ভাষায়ই এই কথাটা পাওয়া যাবে না, ‘পরশ্রীকাতরতা’।
ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে আমরা যদি উদার, অসাম্প্রদায়িক বাঙালি হয়ে উঠতে পারি এবং পরশ্রীকাতরতামুক্ত হতে পারি, তাহলে সত্যি আমাদের কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন যে সরকার গঠিত হতে যাচ্ছে, সেই সরকার যেন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে কোনো গাফিলতি না দেখায়—সেটাই এখন দেশবাসীর প্রত্যাশা।
বিভুরঞ্জন সরকার, জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টানা চতুর্থবারসহ মোট পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। শুধু বাংলাদেশের নয়, এটা হবে সারা বিশ্বেই একটি রেকর্ড। আর কোনো দেশে গণতান্ত্রিক উপায়ে এত দীর্ঘ সময় সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনের কোনো নজির নেই। পরপর টানা চার মেয়াদে এবং মোট পাঁচবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার রেকর্ড কেবল শেখ হাসিনাই গড়তে চলেছেন।
তিনি প্রথম প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন। এরপর দ্বিতীয় দফায় ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। এরপর ২০১৪ সালে তৃতীয়বার এবং ২০১৯ সালে চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। ২০২৪ সালে পঞ্চমবারের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে চলেছেন।
শেখ হাসিনার ঝুলিতে আরও অনেক রেকর্ড রয়েছে। দেশের বৃহত্তম এবং ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব তাঁর চেয়ে বেশি সময় আর কেউ পালন করেননি। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন ১৯৬৬ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত। তার আগে ১০ বছর অবশ্য তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন। অন্যদিকে, শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। চার দশকের বেশি সময়। এটাও একটি রেকর্ড।
সংসদীয় রাজনীতিতে বিরোধী দলের নেত্রী হিসেবেও সময়ের হিসাবে এগিয়ে শেখ হাসিনা। ১৯৮৬, ১৯৯১ এবং ২০০১ সালে তিনি জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেত্রী ছিলেন।
সরকার পরিচালনায় এবং বিরোধী রাজনীতিতে তিনি তাঁর যোগ্যতা, প্রজ্ঞা, সাহসিকতা এবং দূরদর্শিতার স্বাক্ষর রেখেছেন। তাঁর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেমন প্রবীণ নেতাদের চেয়ে নেতৃত্বগুণে এগিয়ে গিয়ে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হয়ে উঠেছিলেন, শেখ হাসিনাও তাঁর সময়ের সবাইকে ছাড়িয়ে নিজের নেতৃত্বকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন।
রাজনীতিতে শেখ হাসিনার চলার পথ ফুল বিছানো ছিল না। তাঁকে কেউ যেচে জায়গা ছেড়ে দেয়নি; বরং অনেক প্রতিকূলতা, প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করেই তাঁকে এগোতে হয়েছে। কখনো বা তিনি ছিলেন নিঃসঙ্গ শেরপা। বাবা-মা-ভাই-ভ্রাতৃবধূসহ অসংখ্য স্বজন হারিয়ে, পদে পদে বিপদ, এমনকি জীবননাশের হুমকি সত্ত্বেও তিনি দেশ এবং দেশের মানুষের কল্যাণব্রতী হয়ে বলিষ্ঠভাবে এগিয়েছেন বলেই আজ তিনি দেশবাসীর ভালোবাসায় সিক্ত হতে পেরেছেন।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে যে ধারার রাজনীতি শুরু হয়েছিল, সেখান থেকে দেশকে ফেরানো যাবে বলে অনেকেই মনে করতেন না। মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে ক্ষমতার বাইরে রাখার সব ধরনের অপচেষ্টাই বিভিন্ন মহল থেকে হয়েছে। দেশের ভেতরে এবং বাইরে শত্রুতা ছিল, আছে। দল হিসেবে আওয়ামী লীগের মধ্যেও সব সময়ই ছদ্মবেশী মতলববাজদের উপস্থিতি ছিল এবং এখনো আছে। সবকিছু সামাল দিয়ে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে জিতিয়ে ক্ষমতায় আনার একক কৃতিত্ব শেখ হাসিনার। তিনি রাজনীতির গতিপ্রকৃতি খুব কাছ থেকে দেখেছেন। শত্রু-মিত্রের চেহারা তাঁর দেখা। তিনি দেখেছেন, ঠকেছেন এবং শিখেছেন। তাই তাঁকে যারা হারাতে চেয়েছে, কৌশলে যারা তাঁকে অতিক্রম করতে চেয়েছে, তাদেরই তিনি হারিয়েছেন, পেছনে ফেলেছেন।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে নেতিবাচক প্রবণতা সব সময় প্রবল। বিরোধিতার রাজনীতি এখানে যতটা প্রভাব ফেলে, পক্ষের রাজনীতি ততটা নয়। আমাদের দেশে রাজনীতিতে ‘না’ বলে মানুষকে যতটা মাতানো যায়, ‘হ্যাঁ’তে ততটা সাড়া জাগানো যায় না। অথচ শেখ হাসিনা ‘হ্যাঁ’য়ের রাজনীতিতেই মানুষকে অভ্যস্ত করে তুলছেন।
রাজনীতি নিয়ে হতাশা, ক্ষোভ এখন প্রবল। রাজনীতি থেকে শুদ্ধতা বিদায় নিয়েছে বলে মনে করা হয়। লাভ ও লোভের কাঙাল এখন রাজনীতিতে বেশি। সরকারে থেকেই শুধু নয়, বিরোধী দলে থেকেও রাজনৈতিক ব্যবসায় পকেট ভারী করা সহজ।
বলা যায়, একটি খুব অস্থির ও জটিল সময়ে শেখ হাসিনা নতুন করে সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন। সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ। দেশের ভেতরে, দলের অভ্যন্তরে সমস্যা আছে, সর্বোপরি দেশের বাইরে থেকেও সমস্যা চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা আছে।
সবকিছু সত্ত্বেও এটাই ঠিক যে শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রিত্বের আগের বাংলাদেশ আর তাঁর শাসনের বাংলাদেশ এক নয়। একসময় বাংলাদেশ ছিল সম্পদশালী ও মোড়লিপনা করা দেশগুলোর করুণানির্ভর। তলাবিহীন ঝুড়ি। খাদ্যঘাটতি, ঝড়-বন্যা-জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের নিত্যসঙ্গী, ত্রাণ পাওয়ার আশায় হাত পেতে থাকা একটি দেশ। কিন্তু এখন বাংলাদেশ বিশ্বের অনেক দেশের কাছেই উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশকে অনুসরণ করতে বলার মতো মানুষ এখন অনেক আছেন।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়ন-অগ্রগতির ধারায় এনেছেন। ২০১৫ সালে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০১৮ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের স্বীকৃতি পেয়েছে। এখন উন্নত দেশের লক্ষ্য অর্জনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না’। তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যাওয়ার গল্প তৈরি করছি একের পর এক। কেউ দাবিয়ে রাখতে পারছে না।
বিএনপি-জামায়াত শাসনের সময় দেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে জঙ্গিবাদী অপশক্তি দেশকে প্রকাশ্যে মানুষ হত্যার মহড়া দিয়ে মধ্যযুগীয় বর্বরতা দেখাতে পেরেছে। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার দেশকে জঙ্গিবাদমুক্ত করার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছে।
রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ সরকারবিরোধিতার নামে সহিংসতার বিস্তার ঘটিয়ে মামুষকে ভীত-সন্ত্রস্ত করার চেষ্টা অতীতে করেছে, এখনো করছে। ২০১৩ সালের মে মাসে হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডব দমনে সরকার বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়ে বড় ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সক্ষম হয়েছে। এরপর ২০১৪ সালে বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে অংশ না নিয়ে এবং পরের বছর সরকার পতনের ডাক দিয়ে দেশজুড়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল। আগুন সন্ত্রাস ছড়িয়ে ভীতিকর অবস্থা তৈরি করা হয়েছিল। মানুষের মনে তৈরি হয়েছিল আতঙ্ক। সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবে কি না, সে প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল। কিন্তু সরকার দৃঢ়তার সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে মানুষকে স্বস্তি দিয়েছে।
গণতন্ত্রের সুযোগের অপব্যবহার করে সন্ত্রাস-সহিংসতার পথে হেঁটে বিএনপি ও তার সহযোগীরা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে এখন রাজনীতিতে খাবি খাচ্ছে। একের পর এক ভুল রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বিএনপি নামের দলটিকে এখন অস্তিত্ব-সংকটের মুখে এনে দাঁড় করিয়েছে। সরকার পতনের এক দফার অসফল আন্দোলন এবার বিএনপিকে আরও বিচ্ছিন্ন করেছে। ভোট বর্জনের ডাকের পরিণতি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশল এবং ব্যক্তিগত সাহসিকতা সামগ্রিক পরিস্থিতি তাঁর অনুকূলেই রেখেছে।
পদ্মা সেতু নির্মাণে দুর্নীতির আগাম অভিযোগ এনে অর্থসহায়তা না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে যারা বাংলাদেশকে বেকায়দায় ফেলতে চেয়েছিল, তারা এখন অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখছে এক নতুন সক্ষম বাংলাদেশকে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের মতো বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বলে অনেকেই মনে করেছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাহস দেখিয়েছেন। পদ্মা সেতু এখন আর স্বপ্নকল্পনা নয়। দৃশ্যমান সত্য।
পদ্মা সেতু ছাড়াও মেট্রোরেল, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মতো মেগা প্রকল্প এখন বাস্তব চিত্র। রূপপুরে ব্যয়বহুল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ শেষের দিকে।
বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মতো কাজগুলো হতে পেরেছে শেখ হাসিনার প্রজ্ঞা ও বলিষ্ঠতার কারণেই। শেখ হাসিনার শাসনকালেই প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে সন্দেহ-অবিশ্বাস দূর হয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে ঝুলে থাকা ছিটমহল সমস্যার সম্মানজনক নিষ্পত্তি হয়েছে। সমুদ্রসীমার বিরোধ মিটেছে আন্তর্জাতিক আদালতে। কয়েক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে মানবিক কারণে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে শেখ হাসিনা বিশ্ব দরবারে প্রশংসিত হয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ, তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে ক্রম অগ্রসরমাণতা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়কে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছে। দিনবদলের সনদ রূপকল্প ২০২১-এর পর ২০২১ থেকে ২১০০ সাল পর্যন্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। তিনি নিজে স্বপ্ন দেখেন এবং দেশের মানুষের সামনেও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন তুলে ধরেন।
দুর্নীতি-অনিয়ম, লুটপাটের ঘটনা দেশে ঘটছে না, তা নয়। বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগও বাড়ছে। তবে লুটপাট, অর্থ পাচারের কাহিনি কি শুধু শেখ হাসিনার সময়েরই, নাকি এর ধারাবাহিকতা আছে? শেখ হাসিনা সব সময় সবকিছু তাঁর মতো করে করতে পারেন তা-ও হয়তো নয়। দুনিয়ার কোনো দেশেই রাজনীতি একটি সরলরেখা ধরে চলে না। সরকার এবং সরকারের বিরোধিতা হলো রাজনীতির চিরায়ত খেলা। দ্বন্দ্ব-বিরোধ রাজনীতির স্বাভাবিক প্রবণতা। এর মধ্যে যে রাজনীতি বেশিসংখ্যক মানুষের উপকার নিশ্চিত করে, সেই রাজনীতিই টেকসই হয়। বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরি করে শেখ হাসিনার সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করছে। লাখ লাখ মানুষ বিনা মূল্যে বাসস্থান পেয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে লিখেছেন: আমাদের বাঙালিদের মধ্যে দুইটা দিক আছে। একটা হলো ‘আমরা মুসলমান, আর একটা হলো, আমরা বাঙালি।’ পরশ্রীকাতরতা এবং বিশ্বাসঘাতকতা আমাদের রক্তের মধ্যে আছে। বোধ হয় দুনিয়ার কোন ভাষায়ই এই কথাটা পাওয়া যাবে না, ‘পরশ্রীকাতরতা’।
ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে আমরা যদি উদার, অসাম্প্রদায়িক বাঙালি হয়ে উঠতে পারি এবং পরশ্রীকাতরতামুক্ত হতে পারি, তাহলে সত্যি আমাদের কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন যে সরকার গঠিত হতে যাচ্ছে, সেই সরকার যেন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে কোনো গাফিলতি না দেখায়—সেটাই এখন দেশবাসীর প্রত্যাশা।
বিভুরঞ্জন সরকার, জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
বিভুরঞ্জন সরকার

আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টানা চতুর্থবারসহ মোট পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। শুধু বাংলাদেশের নয়, এটা হবে সারা বিশ্বেই একটি রেকর্ড। আর কোনো দেশে গণতান্ত্রিক উপায়ে এত দীর্ঘ সময় সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনের কোনো নজির নেই। পরপর টানা চার মেয়াদে এবং মোট পাঁচবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার রেকর্ড কেবল শেখ হাসিনাই গড়তে চলেছেন।
তিনি প্রথম প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন। এরপর দ্বিতীয় দফায় ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। এরপর ২০১৪ সালে তৃতীয়বার এবং ২০১৯ সালে চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। ২০২৪ সালে পঞ্চমবারের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে চলেছেন।
শেখ হাসিনার ঝুলিতে আরও অনেক রেকর্ড রয়েছে। দেশের বৃহত্তম এবং ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব তাঁর চেয়ে বেশি সময় আর কেউ পালন করেননি। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন ১৯৬৬ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত। তার আগে ১০ বছর অবশ্য তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন। অন্যদিকে, শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। চার দশকের বেশি সময়। এটাও একটি রেকর্ড।
সংসদীয় রাজনীতিতে বিরোধী দলের নেত্রী হিসেবেও সময়ের হিসাবে এগিয়ে শেখ হাসিনা। ১৯৮৬, ১৯৯১ এবং ২০০১ সালে তিনি জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেত্রী ছিলেন।
সরকার পরিচালনায় এবং বিরোধী রাজনীতিতে তিনি তাঁর যোগ্যতা, প্রজ্ঞা, সাহসিকতা এবং দূরদর্শিতার স্বাক্ষর রেখেছেন। তাঁর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেমন প্রবীণ নেতাদের চেয়ে নেতৃত্বগুণে এগিয়ে গিয়ে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হয়ে উঠেছিলেন, শেখ হাসিনাও তাঁর সময়ের সবাইকে ছাড়িয়ে নিজের নেতৃত্বকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন।
রাজনীতিতে শেখ হাসিনার চলার পথ ফুল বিছানো ছিল না। তাঁকে কেউ যেচে জায়গা ছেড়ে দেয়নি; বরং অনেক প্রতিকূলতা, প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করেই তাঁকে এগোতে হয়েছে। কখনো বা তিনি ছিলেন নিঃসঙ্গ শেরপা। বাবা-মা-ভাই-ভ্রাতৃবধূসহ অসংখ্য স্বজন হারিয়ে, পদে পদে বিপদ, এমনকি জীবননাশের হুমকি সত্ত্বেও তিনি দেশ এবং দেশের মানুষের কল্যাণব্রতী হয়ে বলিষ্ঠভাবে এগিয়েছেন বলেই আজ তিনি দেশবাসীর ভালোবাসায় সিক্ত হতে পেরেছেন।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে যে ধারার রাজনীতি শুরু হয়েছিল, সেখান থেকে দেশকে ফেরানো যাবে বলে অনেকেই মনে করতেন না। মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে ক্ষমতার বাইরে রাখার সব ধরনের অপচেষ্টাই বিভিন্ন মহল থেকে হয়েছে। দেশের ভেতরে এবং বাইরে শত্রুতা ছিল, আছে। দল হিসেবে আওয়ামী লীগের মধ্যেও সব সময়ই ছদ্মবেশী মতলববাজদের উপস্থিতি ছিল এবং এখনো আছে। সবকিছু সামাল দিয়ে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে জিতিয়ে ক্ষমতায় আনার একক কৃতিত্ব শেখ হাসিনার। তিনি রাজনীতির গতিপ্রকৃতি খুব কাছ থেকে দেখেছেন। শত্রু-মিত্রের চেহারা তাঁর দেখা। তিনি দেখেছেন, ঠকেছেন এবং শিখেছেন। তাই তাঁকে যারা হারাতে চেয়েছে, কৌশলে যারা তাঁকে অতিক্রম করতে চেয়েছে, তাদেরই তিনি হারিয়েছেন, পেছনে ফেলেছেন।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে নেতিবাচক প্রবণতা সব সময় প্রবল। বিরোধিতার রাজনীতি এখানে যতটা প্রভাব ফেলে, পক্ষের রাজনীতি ততটা নয়। আমাদের দেশে রাজনীতিতে ‘না’ বলে মানুষকে যতটা মাতানো যায়, ‘হ্যাঁ’তে ততটা সাড়া জাগানো যায় না। অথচ শেখ হাসিনা ‘হ্যাঁ’য়ের রাজনীতিতেই মানুষকে অভ্যস্ত করে তুলছেন।
রাজনীতি নিয়ে হতাশা, ক্ষোভ এখন প্রবল। রাজনীতি থেকে শুদ্ধতা বিদায় নিয়েছে বলে মনে করা হয়। লাভ ও লোভের কাঙাল এখন রাজনীতিতে বেশি। সরকারে থেকেই শুধু নয়, বিরোধী দলে থেকেও রাজনৈতিক ব্যবসায় পকেট ভারী করা সহজ।
বলা যায়, একটি খুব অস্থির ও জটিল সময়ে শেখ হাসিনা নতুন করে সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন। সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ। দেশের ভেতরে, দলের অভ্যন্তরে সমস্যা আছে, সর্বোপরি দেশের বাইরে থেকেও সমস্যা চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা আছে।
সবকিছু সত্ত্বেও এটাই ঠিক যে শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রিত্বের আগের বাংলাদেশ আর তাঁর শাসনের বাংলাদেশ এক নয়। একসময় বাংলাদেশ ছিল সম্পদশালী ও মোড়লিপনা করা দেশগুলোর করুণানির্ভর। তলাবিহীন ঝুড়ি। খাদ্যঘাটতি, ঝড়-বন্যা-জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের নিত্যসঙ্গী, ত্রাণ পাওয়ার আশায় হাত পেতে থাকা একটি দেশ। কিন্তু এখন বাংলাদেশ বিশ্বের অনেক দেশের কাছেই উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশকে অনুসরণ করতে বলার মতো মানুষ এখন অনেক আছেন।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়ন-অগ্রগতির ধারায় এনেছেন। ২০১৫ সালে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০১৮ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের স্বীকৃতি পেয়েছে। এখন উন্নত দেশের লক্ষ্য অর্জনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না’। তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যাওয়ার গল্প তৈরি করছি একের পর এক। কেউ দাবিয়ে রাখতে পারছে না।
বিএনপি-জামায়াত শাসনের সময় দেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে জঙ্গিবাদী অপশক্তি দেশকে প্রকাশ্যে মানুষ হত্যার মহড়া দিয়ে মধ্যযুগীয় বর্বরতা দেখাতে পেরেছে। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার দেশকে জঙ্গিবাদমুক্ত করার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছে।
রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ সরকারবিরোধিতার নামে সহিংসতার বিস্তার ঘটিয়ে মামুষকে ভীত-সন্ত্রস্ত করার চেষ্টা অতীতে করেছে, এখনো করছে। ২০১৩ সালের মে মাসে হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডব দমনে সরকার বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়ে বড় ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সক্ষম হয়েছে। এরপর ২০১৪ সালে বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে অংশ না নিয়ে এবং পরের বছর সরকার পতনের ডাক দিয়ে দেশজুড়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল। আগুন সন্ত্রাস ছড়িয়ে ভীতিকর অবস্থা তৈরি করা হয়েছিল। মানুষের মনে তৈরি হয়েছিল আতঙ্ক। সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবে কি না, সে প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল। কিন্তু সরকার দৃঢ়তার সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে মানুষকে স্বস্তি দিয়েছে।
গণতন্ত্রের সুযোগের অপব্যবহার করে সন্ত্রাস-সহিংসতার পথে হেঁটে বিএনপি ও তার সহযোগীরা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে এখন রাজনীতিতে খাবি খাচ্ছে। একের পর এক ভুল রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বিএনপি নামের দলটিকে এখন অস্তিত্ব-সংকটের মুখে এনে দাঁড় করিয়েছে। সরকার পতনের এক দফার অসফল আন্দোলন এবার বিএনপিকে আরও বিচ্ছিন্ন করেছে। ভোট বর্জনের ডাকের পরিণতি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশল এবং ব্যক্তিগত সাহসিকতা সামগ্রিক পরিস্থিতি তাঁর অনুকূলেই রেখেছে।
পদ্মা সেতু নির্মাণে দুর্নীতির আগাম অভিযোগ এনে অর্থসহায়তা না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে যারা বাংলাদেশকে বেকায়দায় ফেলতে চেয়েছিল, তারা এখন অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখছে এক নতুন সক্ষম বাংলাদেশকে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের মতো বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বলে অনেকেই মনে করেছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাহস দেখিয়েছেন। পদ্মা সেতু এখন আর স্বপ্নকল্পনা নয়। দৃশ্যমান সত্য।
পদ্মা সেতু ছাড়াও মেট্রোরেল, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মতো মেগা প্রকল্প এখন বাস্তব চিত্র। রূপপুরে ব্যয়বহুল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ শেষের দিকে।
বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মতো কাজগুলো হতে পেরেছে শেখ হাসিনার প্রজ্ঞা ও বলিষ্ঠতার কারণেই। শেখ হাসিনার শাসনকালেই প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে সন্দেহ-অবিশ্বাস দূর হয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে ঝুলে থাকা ছিটমহল সমস্যার সম্মানজনক নিষ্পত্তি হয়েছে। সমুদ্রসীমার বিরোধ মিটেছে আন্তর্জাতিক আদালতে। কয়েক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে মানবিক কারণে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে শেখ হাসিনা বিশ্ব দরবারে প্রশংসিত হয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ, তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে ক্রম অগ্রসরমাণতা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়কে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছে। দিনবদলের সনদ রূপকল্প ২০২১-এর পর ২০২১ থেকে ২১০০ সাল পর্যন্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। তিনি নিজে স্বপ্ন দেখেন এবং দেশের মানুষের সামনেও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন তুলে ধরেন।
দুর্নীতি-অনিয়ম, লুটপাটের ঘটনা দেশে ঘটছে না, তা নয়। বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগও বাড়ছে। তবে লুটপাট, অর্থ পাচারের কাহিনি কি শুধু শেখ হাসিনার সময়েরই, নাকি এর ধারাবাহিকতা আছে? শেখ হাসিনা সব সময় সবকিছু তাঁর মতো করে করতে পারেন তা-ও হয়তো নয়। দুনিয়ার কোনো দেশেই রাজনীতি একটি সরলরেখা ধরে চলে না। সরকার এবং সরকারের বিরোধিতা হলো রাজনীতির চিরায়ত খেলা। দ্বন্দ্ব-বিরোধ রাজনীতির স্বাভাবিক প্রবণতা। এর মধ্যে যে রাজনীতি বেশিসংখ্যক মানুষের উপকার নিশ্চিত করে, সেই রাজনীতিই টেকসই হয়। বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরি করে শেখ হাসিনার সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করছে। লাখ লাখ মানুষ বিনা মূল্যে বাসস্থান পেয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে লিখেছেন: আমাদের বাঙালিদের মধ্যে দুইটা দিক আছে। একটা হলো ‘আমরা মুসলমান, আর একটা হলো, আমরা বাঙালি।’ পরশ্রীকাতরতা এবং বিশ্বাসঘাতকতা আমাদের রক্তের মধ্যে আছে। বোধ হয় দুনিয়ার কোন ভাষায়ই এই কথাটা পাওয়া যাবে না, ‘পরশ্রীকাতরতা’।
ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে আমরা যদি উদার, অসাম্প্রদায়িক বাঙালি হয়ে উঠতে পারি এবং পরশ্রীকাতরতামুক্ত হতে পারি, তাহলে সত্যি আমাদের কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন যে সরকার গঠিত হতে যাচ্ছে, সেই সরকার যেন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে কোনো গাফিলতি না দেখায়—সেটাই এখন দেশবাসীর প্রত্যাশা।
বিভুরঞ্জন সরকার, জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টানা চতুর্থবারসহ মোট পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। শুধু বাংলাদেশের নয়, এটা হবে সারা বিশ্বেই একটি রেকর্ড। আর কোনো দেশে গণতান্ত্রিক উপায়ে এত দীর্ঘ সময় সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনের কোনো নজির নেই। পরপর টানা চার মেয়াদে এবং মোট পাঁচবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার রেকর্ড কেবল শেখ হাসিনাই গড়তে চলেছেন।
তিনি প্রথম প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন। এরপর দ্বিতীয় দফায় ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। এরপর ২০১৪ সালে তৃতীয়বার এবং ২০১৯ সালে চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। ২০২৪ সালে পঞ্চমবারের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে চলেছেন।
শেখ হাসিনার ঝুলিতে আরও অনেক রেকর্ড রয়েছে। দেশের বৃহত্তম এবং ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব তাঁর চেয়ে বেশি সময় আর কেউ পালন করেননি। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন ১৯৬৬ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত। তার আগে ১০ বছর অবশ্য তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন। অন্যদিকে, শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। চার দশকের বেশি সময়। এটাও একটি রেকর্ড।
সংসদীয় রাজনীতিতে বিরোধী দলের নেত্রী হিসেবেও সময়ের হিসাবে এগিয়ে শেখ হাসিনা। ১৯৮৬, ১৯৯১ এবং ২০০১ সালে তিনি জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেত্রী ছিলেন।
সরকার পরিচালনায় এবং বিরোধী রাজনীতিতে তিনি তাঁর যোগ্যতা, প্রজ্ঞা, সাহসিকতা এবং দূরদর্শিতার স্বাক্ষর রেখেছেন। তাঁর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেমন প্রবীণ নেতাদের চেয়ে নেতৃত্বগুণে এগিয়ে গিয়ে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হয়ে উঠেছিলেন, শেখ হাসিনাও তাঁর সময়ের সবাইকে ছাড়িয়ে নিজের নেতৃত্বকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন।
রাজনীতিতে শেখ হাসিনার চলার পথ ফুল বিছানো ছিল না। তাঁকে কেউ যেচে জায়গা ছেড়ে দেয়নি; বরং অনেক প্রতিকূলতা, প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করেই তাঁকে এগোতে হয়েছে। কখনো বা তিনি ছিলেন নিঃসঙ্গ শেরপা। বাবা-মা-ভাই-ভ্রাতৃবধূসহ অসংখ্য স্বজন হারিয়ে, পদে পদে বিপদ, এমনকি জীবননাশের হুমকি সত্ত্বেও তিনি দেশ এবং দেশের মানুষের কল্যাণব্রতী হয়ে বলিষ্ঠভাবে এগিয়েছেন বলেই আজ তিনি দেশবাসীর ভালোবাসায় সিক্ত হতে পেরেছেন।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে যে ধারার রাজনীতি শুরু হয়েছিল, সেখান থেকে দেশকে ফেরানো যাবে বলে অনেকেই মনে করতেন না। মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে ক্ষমতার বাইরে রাখার সব ধরনের অপচেষ্টাই বিভিন্ন মহল থেকে হয়েছে। দেশের ভেতরে এবং বাইরে শত্রুতা ছিল, আছে। দল হিসেবে আওয়ামী লীগের মধ্যেও সব সময়ই ছদ্মবেশী মতলববাজদের উপস্থিতি ছিল এবং এখনো আছে। সবকিছু সামাল দিয়ে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে জিতিয়ে ক্ষমতায় আনার একক কৃতিত্ব শেখ হাসিনার। তিনি রাজনীতির গতিপ্রকৃতি খুব কাছ থেকে দেখেছেন। শত্রু-মিত্রের চেহারা তাঁর দেখা। তিনি দেখেছেন, ঠকেছেন এবং শিখেছেন। তাই তাঁকে যারা হারাতে চেয়েছে, কৌশলে যারা তাঁকে অতিক্রম করতে চেয়েছে, তাদেরই তিনি হারিয়েছেন, পেছনে ফেলেছেন।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে নেতিবাচক প্রবণতা সব সময় প্রবল। বিরোধিতার রাজনীতি এখানে যতটা প্রভাব ফেলে, পক্ষের রাজনীতি ততটা নয়। আমাদের দেশে রাজনীতিতে ‘না’ বলে মানুষকে যতটা মাতানো যায়, ‘হ্যাঁ’তে ততটা সাড়া জাগানো যায় না। অথচ শেখ হাসিনা ‘হ্যাঁ’য়ের রাজনীতিতেই মানুষকে অভ্যস্ত করে তুলছেন।
রাজনীতি নিয়ে হতাশা, ক্ষোভ এখন প্রবল। রাজনীতি থেকে শুদ্ধতা বিদায় নিয়েছে বলে মনে করা হয়। লাভ ও লোভের কাঙাল এখন রাজনীতিতে বেশি। সরকারে থেকেই শুধু নয়, বিরোধী দলে থেকেও রাজনৈতিক ব্যবসায় পকেট ভারী করা সহজ।
বলা যায়, একটি খুব অস্থির ও জটিল সময়ে শেখ হাসিনা নতুন করে সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন। সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ। দেশের ভেতরে, দলের অভ্যন্তরে সমস্যা আছে, সর্বোপরি দেশের বাইরে থেকেও সমস্যা চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা আছে।
সবকিছু সত্ত্বেও এটাই ঠিক যে শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রিত্বের আগের বাংলাদেশ আর তাঁর শাসনের বাংলাদেশ এক নয়। একসময় বাংলাদেশ ছিল সম্পদশালী ও মোড়লিপনা করা দেশগুলোর করুণানির্ভর। তলাবিহীন ঝুড়ি। খাদ্যঘাটতি, ঝড়-বন্যা-জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের নিত্যসঙ্গী, ত্রাণ পাওয়ার আশায় হাত পেতে থাকা একটি দেশ। কিন্তু এখন বাংলাদেশ বিশ্বের অনেক দেশের কাছেই উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশকে অনুসরণ করতে বলার মতো মানুষ এখন অনেক আছেন।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়ন-অগ্রগতির ধারায় এনেছেন। ২০১৫ সালে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০১৮ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের স্বীকৃতি পেয়েছে। এখন উন্নত দেশের লক্ষ্য অর্জনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না’। তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যাওয়ার গল্প তৈরি করছি একের পর এক। কেউ দাবিয়ে রাখতে পারছে না।
বিএনপি-জামায়াত শাসনের সময় দেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে জঙ্গিবাদী অপশক্তি দেশকে প্রকাশ্যে মানুষ হত্যার মহড়া দিয়ে মধ্যযুগীয় বর্বরতা দেখাতে পেরেছে। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার দেশকে জঙ্গিবাদমুক্ত করার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছে।
রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ সরকারবিরোধিতার নামে সহিংসতার বিস্তার ঘটিয়ে মামুষকে ভীত-সন্ত্রস্ত করার চেষ্টা অতীতে করেছে, এখনো করছে। ২০১৩ সালের মে মাসে হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডব দমনে সরকার বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়ে বড় ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সক্ষম হয়েছে। এরপর ২০১৪ সালে বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে অংশ না নিয়ে এবং পরের বছর সরকার পতনের ডাক দিয়ে দেশজুড়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল। আগুন সন্ত্রাস ছড়িয়ে ভীতিকর অবস্থা তৈরি করা হয়েছিল। মানুষের মনে তৈরি হয়েছিল আতঙ্ক। সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবে কি না, সে প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল। কিন্তু সরকার দৃঢ়তার সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে মানুষকে স্বস্তি দিয়েছে।
গণতন্ত্রের সুযোগের অপব্যবহার করে সন্ত্রাস-সহিংসতার পথে হেঁটে বিএনপি ও তার সহযোগীরা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে এখন রাজনীতিতে খাবি খাচ্ছে। একের পর এক ভুল রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বিএনপি নামের দলটিকে এখন অস্তিত্ব-সংকটের মুখে এনে দাঁড় করিয়েছে। সরকার পতনের এক দফার অসফল আন্দোলন এবার বিএনপিকে আরও বিচ্ছিন্ন করেছে। ভোট বর্জনের ডাকের পরিণতি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশল এবং ব্যক্তিগত সাহসিকতা সামগ্রিক পরিস্থিতি তাঁর অনুকূলেই রেখেছে।
পদ্মা সেতু নির্মাণে দুর্নীতির আগাম অভিযোগ এনে অর্থসহায়তা না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে যারা বাংলাদেশকে বেকায়দায় ফেলতে চেয়েছিল, তারা এখন অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখছে এক নতুন সক্ষম বাংলাদেশকে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের মতো বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বলে অনেকেই মনে করেছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাহস দেখিয়েছেন। পদ্মা সেতু এখন আর স্বপ্নকল্পনা নয়। দৃশ্যমান সত্য।
পদ্মা সেতু ছাড়াও মেট্রোরেল, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মতো মেগা প্রকল্প এখন বাস্তব চিত্র। রূপপুরে ব্যয়বহুল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ শেষের দিকে।
বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মতো কাজগুলো হতে পেরেছে শেখ হাসিনার প্রজ্ঞা ও বলিষ্ঠতার কারণেই। শেখ হাসিনার শাসনকালেই প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে সন্দেহ-অবিশ্বাস দূর হয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে ঝুলে থাকা ছিটমহল সমস্যার সম্মানজনক নিষ্পত্তি হয়েছে। সমুদ্রসীমার বিরোধ মিটেছে আন্তর্জাতিক আদালতে। কয়েক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে মানবিক কারণে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে শেখ হাসিনা বিশ্ব দরবারে প্রশংসিত হয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ, তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে ক্রম অগ্রসরমাণতা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়কে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছে। দিনবদলের সনদ রূপকল্প ২০২১-এর পর ২০২১ থেকে ২১০০ সাল পর্যন্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। তিনি নিজে স্বপ্ন দেখেন এবং দেশের মানুষের সামনেও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন তুলে ধরেন।
দুর্নীতি-অনিয়ম, লুটপাটের ঘটনা দেশে ঘটছে না, তা নয়। বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগও বাড়ছে। তবে লুটপাট, অর্থ পাচারের কাহিনি কি শুধু শেখ হাসিনার সময়েরই, নাকি এর ধারাবাহিকতা আছে? শেখ হাসিনা সব সময় সবকিছু তাঁর মতো করে করতে পারেন তা-ও হয়তো নয়। দুনিয়ার কোনো দেশেই রাজনীতি একটি সরলরেখা ধরে চলে না। সরকার এবং সরকারের বিরোধিতা হলো রাজনীতির চিরায়ত খেলা। দ্বন্দ্ব-বিরোধ রাজনীতির স্বাভাবিক প্রবণতা। এর মধ্যে যে রাজনীতি বেশিসংখ্যক মানুষের উপকার নিশ্চিত করে, সেই রাজনীতিই টেকসই হয়। বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরি করে শেখ হাসিনার সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করছে। লাখ লাখ মানুষ বিনা মূল্যে বাসস্থান পেয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে লিখেছেন: আমাদের বাঙালিদের মধ্যে দুইটা দিক আছে। একটা হলো ‘আমরা মুসলমান, আর একটা হলো, আমরা বাঙালি।’ পরশ্রীকাতরতা এবং বিশ্বাসঘাতকতা আমাদের রক্তের মধ্যে আছে। বোধ হয় দুনিয়ার কোন ভাষায়ই এই কথাটা পাওয়া যাবে না, ‘পরশ্রীকাতরতা’।
ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে আমরা যদি উদার, অসাম্প্রদায়িক বাঙালি হয়ে উঠতে পারি এবং পরশ্রীকাতরতামুক্ত হতে পারি, তাহলে সত্যি আমাদের কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন যে সরকার গঠিত হতে যাচ্ছে, সেই সরকার যেন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে কোনো গাফিলতি না দেখায়—সেটাই এখন দেশবাসীর প্রত্যাশা।
বিভুরঞ্জন সরকার, জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টানা চতুর্থবারসহ মোট পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। শুধু বাংলাদেশের নয়, এটা হবে সারা বিশ্বেই একটি রেকর্ড। আর কোনো দেশে গণতান্ত্রিক উপায়ে এত দীর্ঘ সময় সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনের কোনো নজির নেই। পরপর টানা চার মেয়াদে এবং
১০ জানুয়ারি ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টানা চতুর্থবারসহ মোট পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। শুধু বাংলাদেশের নয়, এটা হবে সারা বিশ্বেই একটি রেকর্ড। আর কোনো দেশে গণতান্ত্রিক উপায়ে এত দীর্ঘ সময় সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনের কোনো নজির নেই। পরপর টানা চার মেয়াদে এবং
১০ জানুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টানা চতুর্থবারসহ মোট পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। শুধু বাংলাদেশের নয়, এটা হবে সারা বিশ্বেই একটি রেকর্ড। আর কোনো দেশে গণতান্ত্রিক উপায়ে এত দীর্ঘ সময় সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনের কোনো নজির নেই। পরপর টানা চার মেয়াদে এবং
১০ জানুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টানা চতুর্থবারসহ মোট পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। শুধু বাংলাদেশের নয়, এটা হবে সারা বিশ্বেই একটি রেকর্ড। আর কোনো দেশে গণতান্ত্রিক উপায়ে এত দীর্ঘ সময় সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনের কোনো নজির নেই। পরপর টানা চার মেয়াদে এবং
১০ জানুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫