Ajker Patrika

৬ বছর ফাঁসির সেলে, হাইকোর্ট মুক্তি দিলেও অপেক্ষা ফুরোচ্ছে না এনামুলের

এস এম নূর মোহাম্মদ, ঢাকা
আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৫: ৫৬
৬ বছর ফাঁসির সেলে, হাইকোর্ট মুক্তি দিলেও অপেক্ষা ফুরোচ্ছে না এনামুলের

স্ত্রী সালমা বেগমকে হত্যার মামলায় ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার এনামুল হককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন বিচারিক আদালত। তাঁকে পাঠানো হয়েছিল কনডেম সেলে। দীর্ঘ ছয় বছর সেখানে শুধু মৃত্যুর প্রহর গুনেছেন তিনি। অবশেষে হাইকোর্ট তাঁকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে দায়রা জজের সেই রায়কে গুরুতর বেআইনি কাজ বলেও পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন উচ্চ আদালত। 

রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, সেটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ছিল না। পরিস্থিতির কারণে হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে আসামি এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। যা ৩০২ ধারায় নয়, ৩০৪ ধারার অপরাধ। ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা দায়রা জজের গুরুতর বেআইনি কাজ হয়েছে। এরই মধ্যে আসামির সাজা খাটা শেষ হওয়ায় অন্য কোনো অভিযোগ না থাকলে তাঁকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। 

এদিকে গত ২৩ নভেম্বর দেওয়া রায়ের কপি দুই বিচারপতির স্বাক্ষর শেষে ১২ ডিসেম্বর ডেথ রেফারেন্স শাখায় পাঠানো হয়। এরপর সেখান থেকে ১৪ ডিসেম্বর পাঠানো হয় ডেসপাস শাখায়। সেখান থেকে প্রয়োজনীয় কাজ শেষে তা পাঠানোর কথা বিচারিক আদালতে। এরপর তা যাবে সংশ্লিষ্ট কারাগারে। আর কারা কর্তৃপক্ষ রায়ের কাগজ পরীক্ষা করে আসামিকে মুক্তি দেবে। তবে ডেসপাস শাখায় রোববার (২৪ ডিসেম্বর) খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এটি এখনো পাঠানোর প্রক্রিয়ায় রয়েছে। 

রায় প্রকাশের এক মাস পরও তা কারাগারে না পৌঁছানোর বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সব আদেশ বা রায়ই পাঠানো হয়। এটিও শাখা থেকে পাঠানোর কথা। তবে না পাঠানো হলে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ 

এদিকে ৩৯ পৃষ্ঠার ওই রায় রোববার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্ত্রীকে খুনের কোনো পরিকল্পনা আসামির ছিল না। এটি আকস্মিকভাবে হয়ে গেছে। তাই হাইকোর্ট আসামিকে মৃত্যুদণ্ড থেকে কমিয়ে ১০ বছরের সাজা দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষ এই রায়ের বিরুদ্ধে কোনো আপিল করেনি।’ 

এরই মধ্যে আসামির সাজা খাটার মেয়াদ পার হয়ে গেছে। এর মধ্যে ছয় বছর তিনি থেকেছেন কনডেম সেলে। তাই অন্য কোনো অভিযোগ না থাকলে তাঁকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। 

রায়ের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ ফারুক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, প্রসিকিউশন এমনকি আদালত কেউই এর দায় এড়াতে পারে না। সবাইকে আরও সতর্ক হতে হবে। যাতে কারও ভুল বা অসতর্কতার কারণ কাউকে হয়রানির শিকার হতে না হয়।’ 

রায় এখনো না যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যাতে আদালতের সিদ্ধান্ত আরও দ্রুত পাঠানো যায় সে বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের উচিত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া। কেননা একদিনও অতিরিক্ত কারাবাস কাম্য নয়।’ 

মামলার নথি থেকে জানা যায়, এনামুল হক দিনমজুর ছিলেন। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন। ২৪ বছরের সংসার জীবনে দুই মেয়ে ও এক ছেলের জনক তিনি। 

 ২০১১ সালের ২০ এপ্রিল সস্ত্রীক বড় মেয়ের শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলেন। ওই দিন সন্ধ্যায় ফেরার পথে স্ত্রীর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে স্ত্রীর গলা চেপে ধরেন। এতে স্ত্রী মারা যান। পরে লাশ মাটিতে পুঁতে রেখে নিজের এলাকা দিনাজপুর পালিয়ে যান এনামুল। 

সালমা বেগমের কোনো খোঁজ না পেয়ে ২০১১ সালের ২৩ এপ্রিল থানায় জিডি করা হয়। আর লাশ উদ্ধারের পর ২৫ এপ্রিল হত্যা মামলা করেন তাঁর ভাই সফির উদ্দিন। দুই মাস পর ২৮ জুন গ্রেপ্তার হন এনামুল। তাঁর দেওয়া তথ্যমতে উদ্ধার করা হয় লাশ মাটিচাপা দেওয়ার কাজে ব্যবহৃত কোদাল। পরদিন ঘটনার বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন তিনি। এরপর তাঁকে পাঠানো হয় কারাগারে। ওই বছরের ৭ অক্টোবর চার্জশিট দেয় পুলিশ। 

বিচার শেষে ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট রায় দেন ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত। রায়ে এনামুলকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। আর মৃত্যুদণ্ড হওয়ায় তাঁকে পাঠানো হয় কনডেম সেলে। পরে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য রায়ের নথি পাঠানো হয় হাইকোর্টে। 

এরপর কারাগার থেকে ‘জেল আপিল’ করেন এনামুল হক। বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের বেঞ্চে এই বিষয়ে শুনানি হয়। এনামুলের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন নার্গীস আক্তার। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী। 

আদালতে স্বীকারোক্তিতে এনামুল বলেন, স্ত্রী সালমা এক–দুই বছর ধরে তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করে আসছিলেন। তিনি বলেন, ‘স্বামী হিসেবে আমার যে অধিকার সেটি দিত না। আমার খাবার–দাবারের ব্যাপারে খোঁজখবর নিত না। আমার সঙ্গে ঠিকমতো কথা বলত না। সকালের খাবার দুপুরে, দুপুরের খাবার রাতে খেতে দিত। আমার সঙ্গে মাঝে–মধ্যেই ঝগড়াঝাঁটি করত।’ 

ঘটনার দিন এনামুল বড় মেয়ের বাড়ি থেকে ফেরার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘সন্ধ্যা রাতে অন্ধকারে দুজন হেঁটে বাড়ি যাচ্ছিলাম। এ সময় তাকে বলি, তুই এমন ব্যবহার করিস ক্যান? আমি তোর স্বামী হই, অথচ তুই আমার সঙ্গে মেলামেশা করিস না। আমাকে আমার অধিকার দেইস না। আমার সেবাযত্ন করিস না। খালি ঝগড়া করিস। এটা কি ঠিক কাম! তুই ভালো হবা (হতে) পাইস না? তখন আমার স্ত্রী আমাকে বলে যে, “তোর কত সাধ হইছে আইজকা (আজকে) বাড়িত যাও আগে তারপর তোর সাধ মিটাইম (মেটাব)। বাড়িত যায়া (গিয়ে) এলাকাবাসীকে দিয়া আইজকা তোর হাড্ডি ফাটাইম, তোক বাঁশ ডলা দেইম”।’ 

এনামুল বলেন, ‘আমার মাথায় রাগ উঠে যায়। আমি রেগে গিয়ে বলি, আইজকা তোক মারি ফেলাইম ডাঙ্গে (পিটিয়ে মেরে ফেলব)। তখন আমার স্ত্রী বলে, “ফেলাও মারি, আইজকা মুই (আমি) তোর হাততে মরিম (মরব), আর না হইলে বাড়িত যায়া তোর হাড্ডি ফাটাইম”। তখন আমার রাগ আরও বেড়ে যায় এবং আমি আমার স্ত্রীর গলা দুই হাত দিয়ে টিপে ধরি। এভাবে প্রায় দশ মিনিট গলা টিপে ধরে যেই ছেড়ে দিয়েছি অমনি সে মাটিতে পড়ে যায়। আমি তখন দেখি যে সালমা মরে গেছে।’ 

লাশ গোপনের বর্ণনা দিয়ে এনামুল বলেন, ‘ওই সময় ভুট্টা খেতে সালমার লাশ ফেলে রেখে বাড়িতে যাই। একটি কোদাল নিয়ে এসে কলাই খেতে গর্ত করে লাশ মাটিচাপা দেই। আর কোদালটি পাশে বনবাড়ী ভাটাপোড়া জঙ্গলে ছুড়ে ফেলে দেই। আমি হঠাৎ করে রাগে সালমার গলা টিপে ধরেছিলাম। আমি ভাবতেই পারিনি যে আমার স্ত্রী মারা যাবে। আমি জীবনে এই প্রথম ভুল করলাম। আমি অনুতপ্ত। আমি আমার স্ত্রী সালমাকে মেরে ফেলতে চাই নাই। আমি আমার স্ত্রীকে ভালোবাসতাম। এত বছর সংসার করার পর আমার স্ত্রী এভাবে আমার হাতেই মারা যাবে, আমি ভাবতেই পারছি না। আমি ক্ষমা চাই। আমাকে যে শাস্তি দেওয়া হবে তা মেনে নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭ ঘণ্টা পর ঝালকাঠির অবরোধ প্রত্যাহার, যান চলাচল স্বাভাবিক

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা ও মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে এবং খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তাঁর নিজ জেলা ঝালকাঠিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। সাত ঘণ্টা পর পুলিশের অনুরোধে আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করা হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

আজ জুমার নামাজ শেষে বেলা আড়াইটার দিকে বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি কলেজ মোড় এলাকায় অবরোধ শুরু করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। অবরোধ চলাকালে মহাসড়কের উভয় পাশে বিপুলসংখ্যক যানবাহন আটকে পড়ে। ফলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তবে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, জরুরি ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচামাল বহনকারী যান চলাচলের সুযোগ দেওয়া হয়।

অবরোধ কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। এ সময় মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করা হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপির ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক মাইনুল ইসলাম মান্না, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক আল তৌফিক লিখন, যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি, সদস্যসচিব রাইয়ান বিন কামাল, গণঅধিকার পরিষদ ঝালকাঠি জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঝালকাঠি-২ আসনের মনোনীত প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম সাগরসহ অন্য নেতারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ সহযোদ্ধাকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করেছে। তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। হামলাকারীদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

ঝালকাঠি সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বেলায়েত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেলা আড়াইটায় অবরোধ শুরু হওয়ায় বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করা হলে তাঁরা রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহারে সম্মত হন। পরে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

দিনাজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৪
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছে একদল লোক। আজ শুক্রবার রাতে দুজনের বাড়িতে আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে বোচাগঞ্জ থানা-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় জনতা ও বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। তবে কারা আগুন দিয়েছে, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সাব-অফিসার শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘রাত সোয়া ৮টার দিকে সাবেক মেয়র আসলামের বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা সেখানে পৌঁছাই। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়েছে।’

এ ছাড়া খালিদ মাহমুদের বাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানার জন্য বোচাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৮
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাস (২৮) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা ও মরদেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার নিহত দিপুর ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে নিহত হন দিপু চন্দ্র দাস। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা হয়েছে।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ডুবালিয়াপাড়া এলাকার পাইওনিয়ার নিট কম্পোজিট কারখানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত দিপু চন্দ্র দাস জেলার তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়া কান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি ওই কোম্পানির শ্রমিক ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে যে হামলা চালিয়েছে, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন (র‍্যাক)।

অন্যদিকে, দুই গণমাধ্যমে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করতে গিয়ে নাজেহাল ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ এজের সম্পাদক প্রবীণ সাংবাদিক নূরুল কবীর। এ ঘটনারও তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে র‍্যাক। অবিলম্বে এসব ঘটনার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে র‍্যাক।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে সভাপতি আলাউদ্দিন আরিফ ও সাধারণ সম্পাদক তাবারুল হক বলেন, সংবাদমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান ভিত্তি। গণমাধ্যমের কণ্ঠ রুদ্ধ করতে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, হামলা কিংবা হেনস্তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার এবং আইনের শাসনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

১৮ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাত ১২টার দিকে উচ্ছৃঙ্খল কতিপয় ব্যক্তি প্রথমে দৈনিক প্রথম আলো, তারপর দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় পত্রিকা দুটির অনেক সাংবাদিক ভবনের ভেতরে আটকা পড়েছিলেন। খবর পেয়ে সেনা, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে হামলাকারীদের সরিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ভবনের ভেতরে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

পত্রিকা দুটির শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাতে আকস্মিক হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর কর্মীদের সবাইকে দ্রুত অফিস ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে শুক্রবার ছাপা পত্রিকা বের করা সম্ভব হয়নি।

র‍্যাক নেতারা বলেন, মনে হচ্ছে একটি গোষ্ঠী অত্যন্ত সচেতনভাবে প্রতিপক্ষ বানাতে গণমাধ্যমকে টার্গেট করে হামলা চালিয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী বর্তমান সরকারের সময় এমন ঘটনা ন্যক্কারজনক। ডিআরইউ মনে করে, ওসমান হাদি একজন দেশপ্রেমিক জুলাই যোদ্ধা ছিলেন। শহীদ ওসমান হাদিসহ ছাত্র-জনতার ত্যাগের কারণে তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকার দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

হাদির মৃত্যুকে পুঁজি করে যারা গণমাধ্যমের ওপর হামলা করেছে, তারা হাদির অনুসারী নয়, এটা স্পষ্ট। কতিপয় মহল হাদির মৃত্যুকে ব্যবহার করে নিজেদের কদর্য চেহারা প্রকাশ করেছে। অবিলম্বে এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃস্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত