Ajker Patrika

ইসরায়েলকে বোকা বানিয়ে চলেছিল প্রস্তুতি, আক্রমণের কথা জানতেন না হামাসের অনেক নেতাও

আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০২৩, ২১: ৪১
ইসরায়েলকে বোকা বানিয়ে চলেছিল প্রস্তুতি, আক্রমণের কথা জানতেন না হামাসের অনেক নেতাও

হামাস এমন চাতুর্য দেখিয়েছে যে মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থাও টের পায়নি। ইসরায়েলের একের পর এক অভিযানের পরও গত দুই বছর হামাস প্রকাশ্যে গাজায় পাল্টা সামরিক তৎপরতা দেখায়নি। দীর্ঘ সংঘাতে ক্লান্ত, তারা আর যুদ্ধ চায় না—ইসরায়েলকে এমন ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। 

কিন্তু গত শনিবার সকালে হামাস পাঁচ হাজার রকেট নিক্ষেপের সঙ্গে বুলডোজার, গ্লাইডার এবং মোটরবাইক নিয়ে ইসরায়েলে ঢুকে পড়ে। এটি নিঃসন্দেহে ১৯৭৩ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর ইসরায়েলের প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় সবচেয়ে বড় আঘাত। ৫০ বছর আগে সিরিয়া ও মিসর ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালিয়ে পুরো প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করে ফেলেছিল। সেই স্মৃতিই যেন ফিরিয়ে আনল হামাস। 

হামাসের একটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে, ইসরায়েলকে বিশ্বাস করানো হয়েছিল যে হামাস যুদ্ধ করতে করতে ক্লান্ত। তারা নতুন করে আর যুদ্ধ চায় না। তারা চায় গাজার অবকাঠামো উন্নয়ন, কর্মীদের জন্য টাকা। এই ফাঁকেই গোপনের যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ চলছিল। এমনকি উন্মুক্ত স্থানেই বড় বহর নিয়ে চলেছে প্রশিক্ষণ। হামাসের যোদ্ধারাও জানতেন না সামনে কী হতে চলেছে। 

সূত্রটি হামলার বিবরণ এবং প্রস্তুতির বিশদ তথ্য রয়টার্সকে দিয়েছে। ইসরায়েলের নিরাপত্তা সংস্থার তিনটি সূত্রও এ বিষয়ে তথ্য দিয়েছে সংবাদ সংস্থাটিকে। 

হামাসের ঘনিষ্ঠ সূত্রটি বলেছে, হামাস কয়েক মাস ধরে ইসরায়েলকে বিভ্রান্ত করার জন্য একটি অভূতপূর্ব গোয়েন্দা কৌশল ব্যবহার করেছে। হামাস ইসরায়েলকে ধারণা দিয়েছিল, তারা লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত নয়। কিন্তু তারা ব্যাপক অভিযানের প্রস্তুতি ঠিকই নিয়েছে। এমনকি এই দুই বছর ইসরায়েলের পক্ষ থেকে সামরিক নিপীড়ন ঠিকই চলেছে। এরপরও হামাসের পক্ষ থেকে কাঙ্ক্ষিত প্রতিক্রিয়া আসেনি। 

ইসরায়েল স্বীকার করেছে যে ইহুদিদের পবিত্র দিন সাবাথ ও ধর্মীয় ছুটির মধ্যে এমন হামলা সত্যিই তাদের অবাক করেছে। হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলের শহরগুলোতে ঝাঁপিয়ে পড়ে অন্তত ৭০০ ইসরায়েলিকে হত্যা করেছে। বহু ইসরায়েলি ও বিদেশিকে জিম্মি করেছে। এরপর প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক বোমা বর্ষণ শুরু করেছে। এ পর্যন্ত ৪০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। 

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র মেজর নির দিনার বলেছেন, ‘এটি আমাদের ৯/১১। তারা আমাদের গুঁড়িয়ে দিয়েছে। জল, স্থল ও আকাশপথে আক্রমণ চালিয়ে তারা আমাদের হতবাক করেছে।’ 

লেবাননে হামাসের প্রতিনিধি ওসামা হামদান রয়টার্সকে বলেছেন, ‘এই হামলায় ফিলিস্তিনিরা দেখিয়ে দিয়েছে লক্ষ্য অর্জনে তারা কিছুতেই পিছপা হবে না। ইসরায়েলের যত বড়ই সামরিক শক্তি ও সক্ষমতা থাকুক না কেন।’ 

গোপন প্রশিক্ষণ
হামলার কিছুদিন আগে হামাস গাজায় একটি অবৈধ ইসরায়েলি বসতির অনুকরণে একটি এলাকা তৈরি করেছিল। এরপর সেটি ধ্বংসের মহড়া দেওয়া হয়। সেটিরও ভিডিও তৈরি করে তারা। ইসরায়েল তাদের কার্যক্রম দেখেছে ঠিকই কিন্তু গুরুত্ব দেয়নি। তারা ভেবেছিল, হামাস কোনো সংঘর্ষে জড়াতে আগ্রহী নয়। 

একই সময়ে হামাস ইসরায়েলকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছিল যে তারা গাজার বেকার মানুষদের কর্মসংস্থান চায়। সীমান্তের ওপারে কীভাবে কাজ জোটাবে সে নিয়েই ব্যস্ত হামাস। 

হামাসের সঙ্গে ২০২১ সালের যুদ্ধের পর থেকে হাজার হাজার গাজাবাসীকে ইসরায়েলে ও পশ্চিম তীরে কাজ করার সুযোগ দিয়েছে তেল আবিব। যেখানে নির্মাণ, কৃষি বা সেবা খাতের চাকরিগুলোতে গাজার চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। 

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর আরেক মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম তারা উপার্জনের টাকায় গাজায় শান্তিপূর্ণভাবে বাস করবে। কিন্তু আমরা ভুল ছিলাম।’ 

ইসরায়েলের নিরাপত্তা বিভাগের সূত্র স্বীকার করেছে, ‘ইসরায়েলের গোয়েন্দা বিভাগ হামাসের দ্বারা প্রতারিত হয়েছে। আমাদের তারা বুঝিয়েছিল, তারা শুধু টাকা চায়। কিন্তু সর্বদা তারা সেই টাকা ব্যবহার করে হামলার প্রস্তুতি নিয়েছে।’ 

গত দুই বছরে হামাস নিষ্ক্রিয় থাকলেও গাজাভিত্তিক আরেকটি ইসলামপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদের উত্থান ঘটে। তারা বেশ কয়েকটি আক্রমণ ও সিরিজ রকেট হামলাও চালায়। 

হামলার কোনো আগাম তথ্য ছিল না
হামাসের এই দীর্ঘ সংযম অনেকের সন্দেহের জন্ম দিয়েছে, সেই সঙ্গে অনস্থা ও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। খোদ প্যালেস্টাইন লিবারেশন অরগাইনাইজেশনের (পিএলও) নেতারাও হামাসের সমালোচনা করেছে। যুদ্ধ ছেড়ে হামাস অর্থনৈতিক বিষয়কে গুরুত্ব দিচ্ছে—এমনটিও বলা হয়েছে। 

পশ্চিম তীরে অবস্থানরত ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এবং তাঁর ফাতাহ গোষ্ঠীও হামাসের শান্ত আচরণের নিন্দা করেছিল। ২০২২ সালের জুনে ফাতাহ এক বিবৃতিতে হামাস নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে, এরা গাজাবাসীকে দারিদ্র্যের মধ্যে ঠেলে দিয়ে নিজেরা আয়েশি জীবন যাপন করছে। তারা আরব দেশের রাজধানীগুলোতে গিয়ে বিলাসবহুল জীবন বেছে নিয়েছে। 

ইসরায়েলি নিরাপত্তা বিভাগের আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েল আগে ভাবত, হামাস নেতা ইয়াহিয়া আল-সিনওয়ার ইহুদিদের শায়েস্তা করার পরিবর্তে গাজা পরিচালনায় ব্যস্ত। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবীকরণের প্রক্রিয়ার মধ্যে ইসরায়েল হামাস থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিয়েছিল। 

শনিবার আকস্মিক হামলায় পর্যুদস্ত হয়ে পড়ে ইসরায়েলহামাসের সূত্রটি জানায়, ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলোর অনুপ্রবেশ ও তাদের কার্যকলাপ নিরীক্ষণের সক্ষমতা নিয়ে দম্ভ করেছে। এই আত্মবিশ্বাসই ইসরায়েলের কাল হয়েছে। শুরু থেকেই হামাস পরিকল্পনার তথ্য ফাঁস এড়াতে সতর্ক ছিল। অনেক হামাস নেতাও পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতেন না। হামলায় অংশ নেওয়া ১ হাজার যোদ্ধাও টের পায়নি কেন তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছিল। 

হামলার দিন শনিবার হামাস মুক্তিসেনাদের চার ভাগে বিভক্ত করা হয়। সেদিনই তাঁদের মিশনের কথা বিস্তারিত জানানো হয়। প্রথম পদক্ষেপটি ছিল গাজা থেকে ছোড়া তিন হাজার রকেটের সঙ্গে গ্লাইডার বা মোটরচালিত প্যারাগ্লাইডার দিয়ে হামাস যোদ্ধাদের ইসরায়েলের মাটিতে অবতরণ। হ্যাং গ্লাইডারের যোদ্ধারা মাটিতে নামার পর বেশ কয়েকটি এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ফেলেন। যোদ্ধারা বোমা বর্ষণ করে সব বাধা গুঁড়িয়ে দেন এবং মোটরবাইকে করে সীমানা অতিক্রম করেন। বুলডোজার দিয়ে প্রবেশপথগুলো আরও প্রসারিত করেন। 

ইসরায়েলের গোয়েন্দা ব্যর্থতা
হামাসের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, হামাসের একটি কমান্ডো ইউনিট ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দক্ষিণ গাজা সদর দপ্তরে আক্রমণ করে এবং এর যোগাযোগব্যবস্থা বিকল করে দেয়। এরপর জিম্মিদের গাজায় স্থানান্তর করা হয়। এসবের বেশির ভাগই আক্রমণের প্রথম দিকে করা হয়েছিল। 

জিম্মিদের ধরার একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, যোদ্ধারা গাজার কাছে নাচ-গানের পার্টি থেকে ইসরায়েলিদের জিম্মি করেন। এ সময় কয়েক ডজন লোককে মাঠের মধ্য দিয়ে এবং রাস্তার ওপর দিয়ে দৌড়াতে দেখা যায়।

ইসরায়েলি নিরাপত্তা বিভাগের সূত্রটি প্রশ্ন রেখে বলে, ‘কীভাবে এই পার্টি (গাজার) কাছেই আয়োজন করা হলো? যেখানে দক্ষিণ ইসরায়েলে সম্পূর্ণ সামরিক শক্তি নিয়োজিত ছিল না। ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের সুরক্ষার জন্য অধিকাংশই পশ্চিম তীরে মোতায়েন করা হয়েছিল। হামাস এর সুযোগ নিয়েছে।’ 

সাবেক মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ ও বর্তমানে ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউট ফর নিয়ার ইস্ট পলিসিতে কর্মরত ডেনিস রস বলেন, ‘ইসরায়েল পশ্চিম তীরে সহিংসতায় বিভ্রান্ত হয়েছে, ফলে দক্ষিণে নগণ্য সংখ্যক সামরিক বাহিনী মোতায়েন ছিল। হামাস সম্ভবত প্রত্যাশার চেয়েও বেশি সফলতা পেয়েছে। এখন তাদের বিনাশ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ইসরায়েলের সঙ্গে লড়াই করতে হবে।’ 

প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ইয়াকভ আমিদ্রর গতকাল রোববার সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘এই হামলা দক্ষিণে গোয়েন্দা তৎপরতা এবং সামরিক বিভাগের এক বড় ব্যর্থতা।’ 

আমিদ্রর ২০১১ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৩ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং এখন জেরুজালেম ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড সিকিউরিটির সিনিয়র ফেলো হিসেবে নিয়োজিত। 

তিনি আরও বলেছেন, ‘ইসরায়েলের কিছু মিত্র বলছে, হামাসকে এর চড়া মূল্য দিতে হবে। আমরা একটি ভুল করেছি, কিন্তু আর নয়। আমরা হামাসকে ধীরে ধীরে অবশ্যই ধ্বংস করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

চট্টগ্রামের ১৬ আসনের ৭টিতে বিএনপির চ্যালেঞ্জ বিএনপিই

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: উত্তেজনা বাড়ছে দ্রুত

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

নেছারাবাদে ছিনতাইকারী সন্দেহে যুবক আটক, দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাকিস্তানে ফিরতে চান ইমরান খানের দুই পুত্র, ভিসার আবেদন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৪৩
ইমরান খানের ছেলেরা দেশে ফিরে আসতে চান। ছবি: সংগৃহীত
ইমরান খানের ছেলেরা দেশে ফিরে আসতে চান। ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের দুই পুত্র দেশে ফিরতে চান। এরই মধ্যে তাঁরা ভিসার আবেদনও করেছেন। এমনটাই জানিয়েছেন পিটিআই ঘনিষ্ঠ জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বাবর আওয়ান।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বাবর আওয়ান জানিয়েছেন, পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের ওপর যদি এমন ‘নিপীড়ন’ চলতেই থাকে, তবে তাঁর ছেলেরা দেশে ফিরে আসতে পারেন। তিনি আরও জানান, তাঁরা ফেরার জন্য ইতিমধ্যে ভিসার আবেদনও করেছেন।

ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বাইরে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে বাবর আওয়ান বলেন, ‘ছেলেদের নিয়ে একটা উদ্বেগ আছে যে, যদি তাঁদের (ইমরান খানের সঙ্গে) কথা বলার অনুমতি দেওয়া হয়, তবে তাঁরা ফিরে আসতে পারেন। আমিও এই উদ্বেগের অংশীদার। যদি এই অবিচার চলতেই থাকে, তবে তাঁরা অবশ্যই ফিরে আসবেন।’

প্রবীণ এই আইনজীবী স্পষ্ট করে বলেন, পিটিআই প্রতিষ্ঠাতার ছেলেরা রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন। তিনি উল্লেখ করেন, ‘আইন অনুযায়ী সপ্তাহে অন্তত একবার তাঁদের বাবার সঙ্গে কথা বলতে দেওয়ার কথা, অথচ মাসের পর মাস কেটে গেলেও কোনো যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি।’

আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ও ওয়ানডে ফরম্যাটে পাকিস্তানের হয়ে একমাত্র বিশ্বকাপ জয়ী দলের নেতৃত্ব দেওয়া ইমরান খানের সঙ্গে কাউকে দেখা করতে দেওয়া হবে না বলে দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন আওয়ান। তিনি বলেন, এমন নির্দেশ দেওয়ার কোনো আইনি এখতিয়ার তাঁদের নেই। তাঁর ভাষ্যমতে, ‘আইন অনুযায়ী এটি দুটি অপরাধ—কর্তৃত্বের অপব্যবহার এবং সংবিধান লঙ্ঘন।’

আওয়ান ব্যাখ্যা করেন, কেবল আদালত—যিনি একজন বন্দীকে জেলে পাঠান—এবং জেল কর্তৃপক্ষেরই আইনগত অধিকার আছে সাক্ষাৎ নিয়ন্ত্রণ বা অনুমতি দেওয়ার। আওয়ান বলেন, ‘অন্য কারও এই ক্ষমতা নেই। কোন অধিকারে এই মন্ত্রীরা সাক্ষাৎ বন্ধ করেছেন?’

নওয়াজ শরিফ ও শাহবাজ শরিফের কারাবন্দী সময়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাঁরা জেলের ভেতর বৈঠক করেছেন এবং ন্যাব (ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরো) হেফাজতে থাকাকালীন একবারে ‘৫০ জন দর্শনার্থীর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পেয়েছেন। আওয়ান বলেন, ‘একমাত্র ভয় কেবল পিটিআই প্রতিষ্ঠাতাকে নিয়েই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

চট্টগ্রামের ১৬ আসনের ৭টিতে বিএনপির চ্যালেঞ্জ বিএনপিই

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: উত্তেজনা বাড়ছে দ্রুত

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

নেছারাবাদে ছিনতাইকারী সন্দেহে যুবক আটক, দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পুতিনের সঙ্গে সিরিয়ার মন্ত্রীদের বৈঠক, আলোচনায় প্রতিরক্ষা সহযোগিতা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মস্কোয় পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন সিরিয়ার পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা। ছবি: সংগৃহীত
মস্কোয় পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন সিরিয়ার পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা। ছবি: সংগৃহীত

সিরিয়ার নতুন প্রশাসনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী মস্কোয় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, এই বৈঠকে সামরিক শিল্প খাতে ‘কৌশলগত সহযোগিতা’ সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

সিরিয়ান আরব নিউজ এজেন্সি (সানা) জানিয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার পুতিনের সঙ্গে সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ হাসান আল-শাইবানি এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী মুরহাফ আবু কাসরার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক বিষয়গুলো গুরুত্ব পেলেও মূল আলোকপাত ছিল প্রতিরক্ষা খাতের ওপর।

সানার প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুতিন ও সিরিয়ার মন্ত্রীরা প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। এর মধ্যে সিরীয় সেনাবাহিনীর সক্ষমতা বাড়ানো, সামরিক সরঞ্জামের আধুনিকায়ন, অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে সহযোগিতার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল।

সানা আরও জানায়, বৈঠকে দুই পক্ষ সামরিক ও কারিগরি অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নেওয়ার উপায়গুলো পর্যালোচনা করেছে। এর লক্ষ্য হলো—সিরীয় আরব সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষা সক্ষমতা শক্তিশালী করা এবং সামরিক শিল্পের আধুনিক অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা।

সংবাদ সংস্থাটির তথ্যমতে, দুই পক্ষ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়েও কথা বলেছে। আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতে দামেস্ক ও মস্কোর মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সমন্বয়ের গুরুত্বের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে সেখানে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সিরিয়ার পুনর্গঠন প্রকল্প, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং বিনিয়োগসহ দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা সম্প্রসারণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

পুতিন সিরিয়ার আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি রাশিয়ার ‘অবিচল সমর্থন’ পুনর্ব্যক্ত করেন। একই সঙ্গে সিরিয়ার ভূখণ্ডে ইসরায়েলের বারবার হামলার নিন্দা জানিয়ে একে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য সরাসরি হুমকি হিসেবে অভিহিত করেন তিনি।

গত ডিসেম্বরে মস্কোর সাবেক মিত্র ও সিরিয়ার দীর্ঘকালীন শাসক বাশার আল-আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দামেস্কের নতুন কর্তৃপক্ষের এটিই সর্বশেষ মস্কো সফর। দীর্ঘ ১৪ বছরের গৃহযুদ্ধে আসাদ সরকারের প্রধান সহযোগী ছিল রাশিয়া। আসাদকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে তারা গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সহায়তা এবং বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে বিমান হামলা চালিয়েছে।

আসাদ ও তাঁর পরিবার রাশিয়ায় আশ্রয় নিলেও মস্কো এখন দামেস্কের নতুন সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী। বিশেষ করে ভূমধ্যসাগর উপকূলে অবস্থিত হামেইমিম বিমানঘাঁটি এবং তারতুস নৌঘাঁটি ব্যবহারের চুক্তিগুলো বহাল রাখতে চাইছে রাশিয়া, যেখানে এখনো তাদের সেন উপস্থিতি রয়েছে।

গত অক্টোবরে সিরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা রাশিয়া সফর করেন। সে সময় তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, দামেস্ক ও মস্কোর মধ্যে অতীতে হওয়া সব চুক্তি তার সরকার মেনে চলবে। এর মাধ্যমে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, আসাদ-পরবর্তী যুগেও রুশ সামরিক ঘাঁটিগুলো নিরাপদ থাকবে।

আল-শারার সফরের সময় পুতিন বলেছিলেন যে, দুই দেশের সম্পর্ক নবায়নের ক্ষেত্রে ‘অনেক আকর্ষণীয় ও দরকারী সূচনা’ নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং রাশিয়া এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। মঙ্গলবার রুশ রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সেদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, এই সফরের অংশ হিসেবে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভও সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আল-শাইবানির সঙ্গে বৈঠক করবেন।

এর আগে জুলাই মাসে মস্কো সফরের সময় আল-শাইবানি বলেছিলেন, তাঁর দেশ রাশিয়াকে ‘পাশে’ চায়। লাভরভকে তিনি তখন বলেন, ‘বর্তমান সময়টি নানা চ্যালেঞ্জ ও হুমকিতে ভরা, তবে এটি একটি ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী সিরিয়া গড়ার সুযোগও বটে। আর এই পথে আমরা অবশ্যই রাশিয়াকে আমাদের পাশে পেতে আগ্রহী।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

চট্টগ্রামের ১৬ আসনের ৭টিতে বিএনপির চ্যালেঞ্জ বিএনপিই

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: উত্তেজনা বাড়ছে দ্রুত

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

নেছারাবাদে ছিনতাইকারী সন্দেহে যুবক আটক, দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইউক্রেনের আরও এক শহর রাশিয়ার দখলে, মস্কোয় ড্রোন হামলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৩১
ইউক্রেনের সিভারস্ক শহরে টহলরত দেশটির সশস্ত্রবাহিনীর একটি ট্যাংক। ছবিটি ২০২৩ সালের শুরুর দিকে তোলা। ছবি: এএফপি
ইউক্রেনের সিভারস্ক শহরে টহলরত দেশটির সশস্ত্রবাহিনীর একটি ট্যাংক। ছবিটি ২০২৩ সালের শুরুর দিকে তোলা। ছবি: এএফপি

রাশিয়ার রাজধানী মস্কো ও দক্ষিণে অবস্থিত তুলার শিল্পাঞ্চলে রাতভর ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। বুধবার আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই হামলায় এক শিল্পাঞ্চলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এদিকে পূর্ব ইউক্রেনের কৌশলগত শহর সিভারস্ক থেকে সেনা সরিয়ে নিয়েছে ইউক্রেন। এর ফলে দেশটির আরও একটি শহর রাশিয়ার দখলে চলে গেল।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর, মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন টেলিগ্রামে জানান, রাজধানীর দিকে ধেয়ে আসা অন্তত তিনটি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। ড্রোনগুলোর ধ্বংসাবশেষ যেখানে পড়েছে, সেখানে জরুরি সেবা সংস্থাগুলো পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর তিনি দেননি।

রাশিয়ার বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ড্রোন হামলার কারণে মস্কোর চারটি প্রধান বিমানবন্দরের মধ্যে দুটিতে বিমান ওঠানামা সীমিত করা হয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিট রাতভর ১৭২টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ধ্বংস করেছে, যার প্রায় অর্ধেকই ইউক্রেন সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে।

তুলা অঞ্চলের গভর্নর দিমিত্রি মিলিয়ায়েভ টেলিগ্রামে জানান, একটি ড্রোন ভূপাতিত করার পর এর ধ্বংসাবশেষ থেকে স্থানীয় এক শিল্পাঞ্চলে আগুন ধরে যায়। তবে শিল্পাঞ্চলটি সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো তথ্য তিনি দেননি। তিনি আরও জানান, ওই অঞ্চলে ইউক্রেনের ১২টি ড্রোন ধ্বংস করেছে রুশ বাহিনী।

রাশিয়ার ক্রমাগত হামলার জবাবে ইউক্রেনও এখন রাশিয়ার অভ্যন্তরে সামরিক, জ্বালানি ও লজিস্টিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা জোরদার করেছে।

অন্যদিকে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী মঙ্গলবার জানিয়েছে, দীর্ঘদিনের লড়াইয়ের পর তারা পূর্ব ইউক্রেনের কৌশলগত শহর সিভারস্ক থেকে সেনা সরিয়ে নিয়েছে। রাশিয়ার সেনারা বর্তমানে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষাব্যবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে বড় ধরনের অভিযান চালাচ্ছে।

সিভারস্কের পতন এমন এক সময়ে ঘটল, যখন প্রায় চার বছরের এই যুদ্ধ বন্ধে দ্রুত শান্তি আলোচনায় বসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইউক্রেনের ওপর চাপ বাড়ছে। শহরটি দখলের ফলে রুশ বাহিনী এখন সলোভিয়ানস্কের আরও কাছাকাছি পৌঁছে গেল, যা পশ্চিম দিকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। দনবাস অঞ্চলের শিল্পশহরগুলোর সমন্বয়ে গঠিত তথাকথিত ‘দুর্গ বলয়ের’ উত্তর প্রান্তের প্রধান কেন্দ্র হলো এই সলোভিয়ানস্ক। যুদ্ধ বন্ধের শর্ত হিসেবে এই পুরো অঞ্চলটি আগেই দাবি করে আসছিল রাশিয়া।

ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে শত্রুপক্ষ তাদের বিশাল জনবল ও ছোট ছোট আক্রমণকারী দলের মাধ্যমে ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করে এগোতে সক্ষম হয়েছে।’ তারা আরও জানায়, সেনাদের জীবন ও সম্পদ রক্ষার্থেই এই পিছু হটার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যদিও তারা শত্রুপক্ষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধন করেছে।

চলতি মাসের শুরুর দিকেই রাশিয়া ১০ হাজার জনসংখ্যার এই শহরটি দখলের দাবি করেছিল, যা তখন কিয়েভ অস্বীকার করে। তবে মঙ্গলবার ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা শহরের ওপর চাপ অব্যাহত রাখবে এবং ভেতরে থাকা রুশ সেনাদের সরবরাহ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা চালাবে।

ইউক্রেনীয় ওপেন-সোর্স গ্রুপ ‘ডিপ স্টেট’ জানিয়েছে, চলতি মাসে সিভারস্কের আশপাশে রাশিয়া ধীরে ধীরে তাদের অবস্থান শক্তিশালী করেছে। এদিকে সাবেক লজিস্টিক হাব পোকরোভস্কের আশপাশে এখনো প্রচণ্ড লড়াই চলছে। ইউক্রেনীয় বাহিনী জানিয়েছে, তারা সেখানে রাশিয়ার একটি বিশাল যান্ত্রিক হামলা প্রতিহত করেছে।

অপারেশন টাস্কফোর্স ইস্ট ইউনিট মঙ্গলবার ফেসবুকে জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া পোকরোভস্কের উত্তর অংশ এখনো ইউক্রেনীয় বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পাশের মিরনোহরাদ শহরেও সেনারা প্রতিরক্ষা ব্যূহ বজায় রেখেছে এবং শহরের উপকণ্ঠে রুশ সেনাদের নির্মূল করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

চট্টগ্রামের ১৬ আসনের ৭টিতে বিএনপির চ্যালেঞ্জ বিএনপিই

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: উত্তেজনা বাড়ছে দ্রুত

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

নেছারাবাদে ছিনতাইকারী সন্দেহে যুবক আটক, দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৫
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ফাইল ছবি
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচ আইনপ্রণেতা। চিঠিতে তাঁরা কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে তাঁরা এটাও উল্লেখ করেছেন যে আওয়ামী আমলে ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি এবং গত বছরের জুলাইয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই ১ হাজার ৪০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। তবে এই অপরাধগুলো ব্যক্তিগত গণ্য করে গণতন্ত্রের স্বার্থে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানানো হয়েছে।

মার্কিন কংগ্রেসের ওয়েবসাইটে এই চিঠি প্রকাশ করা হয়েছে।

এই পাঁচ মার্কিন আইনপ্রণেতা হলেন গ্রেগরি ডব্লিউ মিকস, বিল হুইজেঙ্গা, সিডনি কামলাগার-ডোভ, জুলি জনসন এবং থমাস আর সুওজি। তাঁরা চিঠিতে লিখেছেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত রাজনৈতিক অঙ্গনের সব দলের সঙ্গে মিলে কাজ করা। এর মাধ্যমেই বাংলাদেশের মানুষের কণ্ঠস্বর ব্যালট বাক্সের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিফলিত হওয়া সম্ভব।’

তাঁরা আরও বলেন, ‘সেই সঙ্গে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সততা ও নিরপেক্ষতার ওপর আস্থা ফিরিয়ে আনার সংস্কারগুলোও জরুরি। আমরা শঙ্কিত যে সরকার যদি রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম স্থগিত করে কিংবা ত্রুটিপূর্ণ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আবারও চালু করে, তবে এই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে না।’

২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি বলে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর যে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে, তা উল্লেখ করে ওই আইনপ্রণেতারা বলেন, যদি কোনো একটি দলকে নিষিদ্ধ করা হয়, তবে আগামী নির্বাচনও অবাধ হবে না। চিঠিতে বলা হয়, ‘পররাষ্ট্র দপ্তর এবং অনেক আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক লক্ষ করেছেন, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু ছিল না। এ ছাড়া জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের কার্যালয়ের ফেব্রুয়ারি মাসের একটি তথ্যানুসন্ধানী প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টে বিক্ষোভ চলাকালে নিরাপত্তা বাহিনী প্রায় ১ হাজার ৪০০ মানুষকে হত্যা করেছে।’

আইনপ্রণেতারা মনে করেন, এই হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য ঘটনার প্রকৃত জবাবদিহি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের আদলে হওয়া উচিত, প্রতিশোধের চক্র অব্যাহত রেখে নয়। তাঁরা লিখেছেন, ‘সংগঠন করার স্বাধীনতা এবং সামষ্টিক অপরাধের বদলে ব্যক্তিগত অপরাধের দায়বদ্ধতা হলো মৌলিক মানবাধিকার। আইনের যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে মানবাধিকার লঙ্ঘন বা অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের ওপর মনোযোগ না দিয়ে, কোনো একটি রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড পুরোপুরি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত এই নীতিগুলোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’

চিঠির শেষাংশে বলা হয়েছে, ‘আমরা আশা করি, আপনার সরকার অথবা পরবর্তী কোনো নির্বাচিত সরকার এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে। দিন শেষে বাংলাদেশের মানুষ একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে নিজেদের পছন্দমতো সরকার গঠনের অধিকার রাখে, যেখানে সব রাজনৈতিক দল অংশ নিতে পারবে এবং মানুষের কণ্ঠস্বর প্রতিফলিত হবে।’

আইনপ্রণেতারা আরও যোগ করেন, ‘বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। সামনের মাসগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এবং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণকে সমর্থন করতে আমরা আপনার ও আপনার সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত আছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

চট্টগ্রামের ১৬ আসনের ৭টিতে বিএনপির চ্যালেঞ্জ বিএনপিই

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: উত্তেজনা বাড়ছে দ্রুত

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

নেছারাবাদে ছিনতাইকারী সন্দেহে যুবক আটক, দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত