Ajker Patrika

বিদেশে উচ্চশিক্ষা: সহশিক্ষা কার্যক্রমের গুরুত্ব আছে

শ্রেয়া ঘোষ
আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩: ৪৯
বিদেশে উচ্চশিক্ষা: সহশিক্ষা কার্যক্রমের গুরুত্ব আছে

২০১৫ সাল। আমি তখন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ি। বিজ্ঞান বিষয়ে ভালোবাসা ছিল ছোটবেলা থেকেই। সবাই যখন পরীক্ষায় ‘জীবনের লক্ষ্য’ রচনায় চিকিৎসক বা প্রকৌশলী হতে চাওয়ার ইচ্ছা লিখত, আমার খাতা ভরে উঠত বিজ্ঞানী হওয়ার এক স্বপ্নের গল্পে। তবে একাডেমিক জগৎ থেকে প্রতিযোগিতামূলক দুনিয়ায় টিকে থাকার লড়াইয়ে ছিলাম শূন্য। 

পথচলা শুরু 
একদিন উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় শ্রেণিশিক্ষক আমার নাম দিয়ে দেন। মাথায় যা ছিল, সেই অনুষ্ঠানে সব বলে দিয়েছিলাম। সেই প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হয়েছিলাম। তারপর থেকেই আমার সহশিক্ষা কার্যক্রমের পথচলা শুরু। আমেরিকায় বৃত্তি পাওয়ার পেছনে সহশিক্ষা কার্যক্রমগুলো খুব সহায়তা করেছে।

বাংলাদেশের ঘরে ঘরে একটা ভ্রান্ত ধারণা দেখা যায়, সহশিক্ষায় যুক্ত ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনা করে না। আমার বেলায়ও তাই হয়েছে। হাইস্কুলে পড়াকালীন ‘নষ্ট হয়ে যাচ্ছি’—এমন কথাও শুনতে হয়েছে। কিন্তু ২০১৭ সালে জাতীয় প্রতিযোগিতায় মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর কাছ থেকে বিতর্কের জন্য সেরা পুরস্কার পেয়েছিলাম!

সহশিক্ষা কার্যক্রমের উপযোগ
সহশিক্ষা কার্যক্রমগুলোর সঙ্গে অনেক কিছুই যুক্ত থাকে। বিতর্ক, নাচ, গান, আবৃত্তি, অভিনয়, বিভিন্ন সংগঠনে কাজ, গবেষণা, লেখালেখি, সাংবাদিকতা, অলিম্পিয়াডসহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া হয়। যারা স্নাতক করতে বিদেশে পাড়ি জমায়, কিংবা স্বপ্ন দেখে বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জনের; তাঁদের সহশিক্ষা (ইসিএ) বিষয়টির সঙ্গে জানাশোনা থাকার কথা।

আবেদনকারী কেন বাকিদের চেয়ে সেরা, আবেদনের পর অ্যাডমিশন অফিসার মূলত চুলচেরাভাবে ওই দিকগুলোই যাচাই-বাছাই করবেন। গ্রেড পয়েন্ট হয়তো অনেকের সমান থাকবে, সে জায়গায় দাঁড়িয়ে সহশিক্ষা কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা বা একটা অর্জন এগিয়ে রাখবে আবেদনকারীর নাম।

আবেদনের প্রক্রিয়া
যুক্তরাষ্ট্রে স্নাতক পর্যায়ে আবেদন করার জন্য ‘কমন অ্যাপ’ বেশ পরিচিত। এই অ্যাপকে সাজানোর মধ্য দিয়েই আবেদনকারী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করার সুযোগ পাবেন। কমন অ্যাপের অ্যাকটিভিটি বিভাগে আবেদনকারীর দশটি সহশিক্ষা কার্যক্রম যুক্ত করার সুযোগ মেলে।

এর মধ্যে বিতর্ক বা স্পিচ আছে। বিতর্ক ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত থাকলে কিংবা নিজে কোনো ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা হলে, সে কথা যুক্ত করা যাবে। মজার বিষয় হচ্ছে, পরিবারের সদস্যদের কোনো কাজে সহায়তা করার বিষয়টিও যুক্ত করা যাবে। মূলত পরিবারের খুঁটিনাটি কাজগুলোও ইসিএ হিসেবে দেখে তারা।

যার পেছনে যুক্তি হচ্ছে, আপনি সেই কাজগুলো ভালোবেসে করেন; পাশাপাশি আবেগ কাজ করে। সেই সঙ্গে লেখালেখি, গবেষণা—যেকোনো ধরনের কমিউনিটি সার্ভিসের কথাই লেখার মতো।

আরেকটু খুলে বলি। এলাকায় বন্যা হয়েছে, বন্ধুরা মিলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে তহবিল জমিয়ে সেই বন্যায় আটকে পড়া মানুষের সহায়তা করলেন; হতে পারে পথশিশুদের পড়াশোনার জন্য নিজ উদ্যোগে একটা স্কুল গড়ে তুললেন—এই কাজগুলো জানার মধ্য দিয়েই বৃত্তি দেবে বিশ্ববিদ্যালয়।

মূলত আবেদনকারীর পদক্ষেপ নেওয়ার সক্ষমতা আছে কি না এবং সেই পদক্ষেপ ঠিক কতটা কার্যকর, আশপাশের মানুষের জন্য আপনি কী করেছেন, ভবিষ্যতে আপনি যে জায়গায় পড়তে যাবেন, তার জন্য কী করতে পারবেন—এই বিষয়গুলোই যাচাই করে কর্তৃপক্ষ। আরও একটি বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি।

আবেদনকারী যদি বিজ্ঞানমনস্ক হয়ে থাকে, বিজ্ঞানের বিষয় পড়ার ইচ্ছা থাকে, তবে আপনার ইসিএগুলোও বিজ্ঞানভিত্তিক হতে হবে। হোক তা বিজ্ঞান বিতর্ক, সায়েন্স ফিকশন লেখা, বিজ্ঞানবিষয়ক উপস্থিত বক্তৃতা, আর্টিকেল, বিজ্ঞানবিষয়ক গবেষণাপত্র লেখা কিংবা বিভিন্ন অলিম্পিয়াড করা। তবে সব ধরনের সহশিক্ষা কার্যক্রমেরই গুরুত্ব আছে, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। 

সেরা পাঁচ অর্জন
কমন অ্যাপের অনার্স সেকশনে আবেদনকারীর জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি অর্জনের কথা লেখার নিয়ম। অ্যাকটিভিটিস সেকশনে লেখা বিভিন্ন ইসিএ থেকে পাওয়া পুরস্কারের নাম যুক্ত করতে পারবেন।

মোটকথা, আপনি বিতর্কে জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন, কোনো অলিম্পিয়াডে গোল্ড বা সিলভার পেয়েছেন কিংবা সমাজে অবদান রাখার জন্য আপনাকে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে, নিঃসংকোচে লিখতে পারেন সেসব কথা। 

সহশিক্ষা শুরু করবেন কবে, কীভাবে
ইসিএ শুরু করার তেমন কোনো ধরাবাঁধা সময় নেই। ইচ্ছা করলে প্রথম শ্রেণি থেকেও শুরু করতে পারেন, আবার কলেজে পড়াকালীনও। তবে কলেজে পড়াশোনার অনেক চাপ থাকে, যার সঙ্গে তাল মেলাতে সপ্তম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত কাজ করা তুলনামূলক সহজ।

এতে অভিজ্ঞতার পাশাপাশি ব্যক্তিপর্যায়ে সংগঠিত হয়ে ওঠার মতো এক অপার সম্ভাবনা জাগে। স্কুলের বিভিন্ন ক্লাব ও প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার মধ্য দিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের দিকে এগিয়ে যাওয়া বৃত্তি পাওয়ার বিষয়টি সহজ করে তোলে। বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রে আবেদনের বেলায় আন্তর্জাতিক অর্জন বা সম্মানের জুড়ি মেলা ভার।


ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেন পিচ পুরস্কারে মনোনীত হয়েছেন রংপুরের মেয়ে শ্রেয়া ঘোষ।

শ্রেয়া ঘোষ
ডিনস স্কলার, হবার্ট অ্যান্ড উইলিয়াম স্মিথ কলেজেস ডিনস স্কলারশিপ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

চট্টগ্রামের ১৬ আসনের ৭টিতে বিএনপির চ্যালেঞ্জ বিএনপিই

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: উত্তেজনা বাড়ছে দ্রুত

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

যে তিন শ্রেণির নামাজির জন্য রয়েছে দুর্ভোগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পূর্ণ অর্থায়িত সিএসসি বৃত্তি

শিক্ষা ডেস্ক
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ২২
বেইহাং ইউনিভার্সিটি, চীন
বেইহাং ইউনিভার্সিটি, চীন

চীনে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য এসেছে বড় সুযোগ। দেশটির বেইহাং ইউনিভার্সিটি চায়নিজ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপের আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। সম্পূর্ণ অর্থায়িত এই বৃত্তিতে অর্থায়ন করবে দেশটির সরকার। বৃত্তিটির আওতায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়টি থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পাবেন। ২০২৬-২৭ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রদত্ত এই বৃত্তি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য এক অনন্য সুযোগ।

চীনের শীর্ষস্থানীয় প্রকৌশল ও প্রযুক্তিনির্ভর উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বেইহাং ইউনিভার্সিটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ১৯৫২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয় বেইজিংয়ে অবস্থিত। এর পূর্ব নাম ছিল বেইজিং ইউনিভার্সিটি অব অ্যারোনটিকস অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোনটিকস। চীনের ‘ডাবল ফার্স্ট ক্লাস ইউনিভার্সিটি’ উদ্যোগের অন্তর্ভুক্ত এই প্রতিষ্ঠান আধুনিক গবেষণাগার, বিশ্বমানের ফ্যাকাল্টি এবং শক্তিশালী শিল্প-সহযোগিতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে বিবেচিত।

সুযোগ-সুবিধা

বেইহাং ইউনিভার্সিটি সিএসসি স্কলারশিপ চীনে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য সম্পূর্ণ অর্থায়িত একটি বৃত্তি। এই বৃত্তির আওতায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার প্রায় সব খরচ বহন করা হয়। এই বৃত্তির জন্য নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ টিউশন ফি মওকুফ করা হবে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিনা মূল্যে আবাসন অথবা আবাসন ভর্তুকির সুযোগ থাকবে। শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খরচ নির্বাহের জন্য দেওয়া হবে মাসিক ভাতা (স্টাইপেন্ড)। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অন্তর্ভুক্ত থাকবে সমন্বিত চিকিৎসাবিমা।

আবেদনের যোগ্যতা

বৃত্তিটির জন্য আবেদন করতে হলে প্রার্থীদের কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতার শর্ত পূরণ করতে হবে। আবেদনকারীকে অবশ্যই গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের বাইরে অন্য কোনো দেশের নাগরিক হতে হবে। প্রার্থীদের অবশ্যই শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বয়সের ক্ষেত্রে মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদনকারীদের স্নাতক ডিগ্রিধারী হতে হবে এবং বয়স ৩৫ বছরের নিচে থাকতে হবে। অন্যদিকে, ডক্টরাল (পিএইচডি) প্রোগ্রামে আবেদনকারীদের স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকতে হবে এবং বয়স ৪০ বছরের নিচে হতে হবে।

প্রয়োজনীয় তথ্য

বৃত্তিটিতে আবেদন করতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র প্রস্তুত ও জমা দিতে হবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে চায়নিজ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপের আবেদন ফরম (চীনা অথবা ইংরেজি ভাষায় পূরণকৃত), হালনাগাদ রেজুমে বা সিভি, পাসপোর্টের মূল তথ্য-পাতার কপি, সর্বোচ্চ ডিগ্রির নোটারাইজড সনদ এবং একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা সুপারভাইজরের অ্যাকসেপ্ট্যান্স লেটার, একটি সুস্পষ্ট স্টাডি প্ল্যান বা গবেষণা প্রস্তাবনা এবং দুটি সুপারিশপত্র জমা দিতে হবে। এ ছাড়া ফরেনার ফিজিক্যাল এক্সামিনেশন ফরমের কপি, নন-ক্রিমিনাল রেকর্ডের নথি এবং ইংরেজি ভাষা দক্ষতার সনদ সংযুক্ত করতে হবে।

অধ্যয়নের ক্ষেত্রসমূহ

স্কুল অব অ্যারোনটিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, অ্যাস্ট্রোনটিকস, অটোমেশন সায়েন্স অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রনিক ইনফরমেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অটোমেশন, ম্যাটেরিয়ালস সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং, সাইবার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যাথমেটিকস অ্যান্ড সিস্টেমস সায়েন্স, ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ইকোনমিকস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, হিউম্যানিটিজ অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস, ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজেস এবং স্কুল অব ল।

আবেদনের পদ্ধতি

আগ্রহী প্রার্থীরা লিংকে গিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের শেষ সময়

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৬।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

চট্টগ্রামের ১৬ আসনের ৭টিতে বিএনপির চ্যালেঞ্জ বিএনপিই

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: উত্তেজনা বাড়ছে দ্রুত

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

যে তিন শ্রেণির নামাজির জন্য রয়েছে দুর্ভোগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জকসু নির্বাচন: ইশতেহারে অগ্রাধিকার দ্বিতীয় ক্যাম্পাস

  • ছাত্রদলের প্যানেলের ১৩ দফা ও শিবিরের প্যানেলের ২১ দফা অঙ্গীকার।
  • নিরাপদ ক্যাম্পাসের প্রতিশ্রুতি উভয় প্যানেলের।
  • সরে দাঁড়ালেন তিন স্বতন্ত্র ভিপি পদপ্রার্থী।
  জবি প্রতিনিধি
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইশতেহার ঘোষণা করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল-সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ এবং ইসলামী ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেল।

ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের ১৩ দফার ইশতেহারে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস দ্রুত বাস্তবায়ন ও আবাসন-সংকট নিরসনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিশ্চিত করা কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে বর্তমান ক্যাম্পাসের ঐতিহ্য রক্ষা ও আধুনিকায়ন, নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতকরণসহ ২১ দফা অঙ্গীকার করেছে ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেল।

গতকাল মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী এ কে এম রাকিব ইশতেহার পাঠ করেন। পরে প্যানেলের অন্যান্য প্রার্থী পর্যায়ক্রমে ইশতেহারের বিভিন্ন দফা উপস্থাপন করেন।

ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের ১৩ দফার মধ্যে রয়েছে—গণতান্ত্রিক ও সুরক্ষিত ক্যাম্পাস নিশ্চিতকরণ; আবাসন-সংকটের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধান; মূল ক্যাম্পাসের অবকাঠামোগত সংস্কার, সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন; দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের নির্মাণ দ্রুত সম্পন্ন করা; পরিবহন ও যাতায়াতব্যবস্থার মানোন্নয়ন; স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিতকরণ; মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্যবিমা; শিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়ন; প্রশাসনিক সেবা সহজ ও দ্রুততর করা; কর্মসংস্থান ও ক্যারিয়ার উন্নয়ন; ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম সম্প্রসারণ; নারী শিক্ষার্থীর অধিকার সুরক্ষা; বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও সবুজায়ন; আর্থিকভাবে অসচ্ছল ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ।

এদিকে দুপুর ১২টার দিকে ভাষাশহীদ রফিক ভবনের সামনে ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মো. রিয়াজুল ইসলাম নিজেদের ইশতেহার পাঠ করেন। পরে প্যানেলের অন্যান্য প্রার্থী পর্যায়ক্রমে ইশতেহারের বিভিন্ন দফা উপস্থাপন করেন।

শিবির-সমর্থিত প্যানেলের ২১ দফার মধ্যে রয়েছে—স্বপ্নের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস, আবাসন-সংকট নিরসন, বর্তমান ক্যাম্পাসের ঐতিহ্য রক্ষা ও আধুনিকায়ন, নিরাপদ ক্যাম্পাস, বিশ্বমানের শিক্ষা, প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক শিক্ষা, গবেষণা ও উচ্চশিক্ষা, শিক্ষার্থীবান্ধব লাইব্রেরি ও সেমিনার, স্বাস্থ্যসেবা, নারীর জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস, ছাত্রী হল, ন্যায্যমূল্যে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার, পরিবহন সেবা, খেলাধুলা ও শরীরচর্চা, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন, সাহিত্য-সংস্কৃতির বিকাশ, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর অধিকার সংরক্ষণ, ধর্মীয় স্বাধীনতা, আইনি সেবা ও মানবাধিকার সুরক্ষা, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা, ক্যারিয়ার লঞ্চপ্যাড, অন্তর্ভুক্তিমূলক সংগঠন ব্যবস্থাপনা ও জবাবদিহি।

সরে দাঁড়ালেন তিন স্বতন্ত্র ভিপি পদপ্রার্থী

গতকাল ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের সংবাদ সম্মেলনে ভিপি পদপ্রার্থী এ কে এম রাকিবকে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী চন্দন কুমার দাস, রাকিব হাসান ও মাশরুফ আহম্মেদ। তাঁরা বলেন, জবিয়ানদের অধিকার রক্ষার এই লড়াইয়ে অনৈক্যের কোনো স্থান নেই। বৃহত্তর স্বার্থে শক্তিশালী নেতৃত্ব নিশ্চিত করতে তাঁরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। একই সঙ্গে তাঁরা এ কে এম রাকিবকে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন।

সরে দাঁড়ানো স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী মাশরুফ আহম্মেদ বলেন, ‘আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছিলাম, তবে রাকিব ভাই দীর্ঘদিন ধরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তাই শিক্ষার্থীদের ভালোবাসা তাঁর প্রাপ্য হোক।’

আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী রাকিব হাসান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায় ও দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের দাবিতে রাকিব ভাইয়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বৃহত্তর স্বার্থ ও ঐক্যের জন্য আমি তাঁর প্রতি সমর্থন জানিয়ে প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।’

ইশতেহারের বাস্তবায়ন চান শিক্ষার্থীরা

নির্বাচনের পর প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতিগুলো যেন যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হয়, সেই প্রত্যাশাই ব্যক্ত করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী নাদিয়া নোভা বলেন, ‘আমরা সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে শুধু আমাদের সমস্যাগুলোর সমাধান চাই। প্রার্থীরা যে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, তা যেন নির্বাচন শেষে বাস্তবায়িত হয়, এটাই আমাদের কামনা।’

আরেক শিক্ষার্থী আশিক বলেন, ‘আমরা শুধু কথা চাই না, আমরা চাই কাজ। নির্বাচনের আগে যেসব প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে, সেগুলো যেন বাস্তবে দেখা যায়।’

নতুন তফসিল অনুযায়ী ১৫ থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রচারণা চলবে। ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ৩০ ডিসেম্বর এবং ভোট গণনা ও ফল ঘোষণা হবে ৩০ অথবা ৩১ ডিসেম্বর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

চট্টগ্রামের ১৬ আসনের ৭টিতে বিএনপির চ্যালেঞ্জ বিএনপিই

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: উত্তেজনা বাড়ছে দ্রুত

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

যে তিন শ্রেণির নামাজির জন্য রয়েছে দুর্ভোগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীত করে প্রজ্ঞাপন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ৪৭
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীত করে প্রজ্ঞাপন

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের গেজেটেড কর্মকর্তার পদমর্যাদা দিয়ে তাঁদের বেতন একাদশ থেকে বাড়িয়ে দশম গ্রেডে নির্ধারণ করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

আজ মঙ্গলবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এতে স্বাক্ষর করেন উপসচিব (বিদ্যালয়-২) রাজীব কুমার সরকার।

এদিন এই প্রজ্ঞাপন জারি হলেও নতুন গ্রেডে বেতন ১৫ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৫ জন প্রধান শিক্ষককে গেল ২৭ অক্টোবর গেজেটেড কর্মকর্তার পদমর্যাদা দিয়ে তাঁদের বেতন দশম গ্রেডে উন্নীত করা হয়। এরপর ৬৫ হাজার ৫০২টি প্রধান শিক্ষকদের সবগুলো পদের বেতন দশম গ্রেডে নির্ধারণের উদ্যোগ নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

গত ২৮ জুলাই অর্থ বিভাগের ব্যয় ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ ও অক্টোবরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এসব প্রধান শিক্ষক পদের বেতন দশম গ্রেডে উন্নীত করার সম্মতি দিয়েছিল।

পরে গত ১১ নভেম্বর অর্থ বিভাগের বাস্তবায়ন অনুবিভাগ এ প্রস্তাবে সম্মতি জানায়।

৩ ডিসেম্বর প্রশাসনিক উন্নয়ন-সংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায়ও প্রধান শিক্ষকদের বেতন দশম গ্রেডে নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়।

এদিকে প্রধান শিক্ষকদের বেতন দশম গ্রেডে নির্ধারণের সিদ্ধান্তকে ‘যুগান্তকারী’ আখ্যা দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ উদ্যোগ প্রধান শিক্ষকদের ‘আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত’ এবং তাঁদের ‘সামাজিক মর্যাদা সুসংহত’ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

এর ফলে প্রধান শিক্ষকেরা প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে আরও ‘সৃজনশীল ও উদ্দীপ্ত’ ভূমিকা রাখবেন এবং শিক্ষার্থীদের জন্য ‘আরও উন্নত ও গতিশীল’ শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত হবে বলেও আশা প্রকাশ করা হয় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে।

মন্ত্রণালয় বলছে, প্রধান শিক্ষকেরা অন্যান্য শিক্ষক, অভিভাবক ও সব স্তরের অংশীজনদের সহায়তায় প্রাথমিক শিক্ষার মান ‘কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে’ উন্নীত করবেন বলে প্রত্যাশা করছে সরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

চট্টগ্রামের ১৬ আসনের ৭টিতে বিএনপির চ্যালেঞ্জ বিএনপিই

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: উত্তেজনা বাড়ছে দ্রুত

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

যে তিন শ্রেণির নামাজির জন্য রয়েছে দুর্ভোগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অবসর ভাতায় অনিয়ম, ক্ষতি ১২৫০ কোটি

রাহুল শর্মা, ঢাকা 
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৬
অবসর ভাতায় অনিয়ম, ক্ষতি ১২৫০ কোটি
ছবি: সংগৃহীত

অবসর ভাতার আবেদন করতে শিক্ষক-কর্মচারীদের অবশ্যই ইনডেক্স (পরিচয় শনাক্তকারী নম্বর) থাকতে হবে। এই শর্ত ঠিক রেখেই জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া ইনডেক্সধারীদের অবসর ভাতা দেওয়া হয়েছে। এমনকি আবেদন না করেও অনেকে এই ভাতা পেয়েছেন। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের অর্থ ব্যয় এবং পরিচালনায় এমন অনেক অনিয়ম ও অসংগতি পেয়েছে শিক্ষা অডিট অধিদপ্তর।

শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব অনিয়মে প্রায় ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে আইন লঙ্ঘন করে বেসরকারি ব্যাংকে রাখা আমানত ফেরত না পাওয়ায় বোর্ডের আর্থিক ক্ষতি ৬৩৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা। বাংলাদেশ মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের (সিএজি) অধীন শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের এই নিরীক্ষা প্রতিবেদন সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে জমা দেওয়া হয়েছে।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনটির সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (নিরীক্ষা ও আইন অনুবিভাগ) জহিরুল ইসলাম ১৪ ডিসেম্বর আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিরীক্ষা প্রতিবেদনটি এখনো হাতে পাননি। প্রতিবেদন পাওয়ার পর তা পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এমপিওভুক্ত বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের ১৯৯০ সাল থেকে কল্যাণ ট্রাস্টের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। অবসর সুবিধা দেওয়া শুরু হয়েছে ২০০৫ সাল থেকে। এই দুই সুবিধা বাবদ শিক্ষকেরা চাকরিকাল অনুযায়ী এককালীন অর্থ পান। সারা দেশে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন ৫ লাখের বেশি।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৭৭৫টি আবেদন অনিষ্পন্ন রয়েছে। এর মধ্যে স্কুলপর্যায়ের ২৭ হাজার ৮৬২টি, কলেজের ১৭ হাজার ২৭৮টি, মাদ্রাসার ১২ হাজার ৯৬৮টি এবং কারিগরির শিক্ষকদের ৬ হাজার ৬৬৭টি।

আইন অনুযায়ী, শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও (বেতনের সরকারি অংশ) থেকে চাঁদা হিসেবে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ কেটে রাখা হয়। এর মধ্যে অবসর সুবিধা বোর্ড ৬ শতাংশ এবং কল্যাণ ট্রাস্ট ৪ শতাংশ পায়। এর বাইরে বিশেষ বা থোক বরাদ্দ এবং বিভিন্ন সময়ে সরকারের দেওয়া সিড মানি বা গচ্ছিত অর্থের লভ্যাংশ পায় সংস্থা দুটি।

শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ১৮ জন ভুয়া ইনডেক্সধারীকে বোর্ড তহবিল থেকে ১ কোটি ৪২ লাখ ৭৮ হাজার ৫৬৭ টাকা দেওয়া হয়েছে। শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর সুবিধা পরিশোধের আগে ইনডেক্স যাচাই আবশ্যক। অথচ ইনডেক্স যাচাই না করে ভুয়া ইনডেক্সের বিপরীতে অর্থ পরিশোধ করায় বোর্ডের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এসব অর্থ আদায় করে বোর্ডের তহবিলে জমা দেওয়ার সুপারিশ করেছে নিরীক্ষা দল।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০ জন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর ভাতা প্রাপ্তির আবেদন না করলেও এবং বোর্ড থেকে ব্যাংকে কোনো অ্যাডভাইস না পাঠালেও তাঁদের অনুকূলে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৯৬ হাজার ৪৯৭ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া একই ইনডেক্সধারীকে একাধিকবার অবসর সুবিধা দেওয়ায় বোর্ডের ১ কোটি চার লাখ ৭২ হাজার ৮৬১ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

প্রতিবেদনে মিথ্যা তথ্য দিয়ে জাল আবেদনপত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন হিসাবে ৫৮ লাখ ৭৬ হাজার ৩৮ টাকা এবং ভুয়া ইনডেক্স নম্বর ব্যবহার করে সফটওয়্যার ভেন্ডরের মাধ্যমে ৩১ লাখ ৯০ হাজার ৭৭৫ টাকা পরিশোধের তথ্যও উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বোর্ডের আইন লঙ্ঘন করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে না রেখে বেসরকারি ব্যাংকে রাখা আমানতের টাকা ফেরত না পাওয়ায় বোর্ডের আর্থিক ক্ষতি ৬৩৯ কোটি ৬০ লাখ ৬১ হাজার ৭২৫ টাকা। এসব টাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে জমা করা আবশ্যক বলে সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিবেদনে অবসর সুবিধা বোর্ডের জন্য আদায় করা ২৮ কোটি ৬৫ লাখ ৭২ হাজার ৪৪০ টাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের তহবিল থেকে অবসর সুবিধা বোর্ডের তহবিলে জমা করার সুপারিশ করা হয়েছে।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমপিওর চেক নগদায়নপূর্বক নির্ধারিত সময়ে ৫২৩ কোটি ৭৩ লাখ ৯৮ হাজার ৪৭৩ টাকা জমা হয়নি। স্থায়ী তহবিলের প্রাপ্ত সুদ চলতি তহবিলে জমা না দেওয়ায় ৫৬ কোটি ৭১ লাখ ২১ হাজার ৫২৮ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া তহবিল যথাযথভাবে সংরক্ষণ না হওয়ায় ৯১ লাখ ৩৫ হাজার, যথাযথ নিয়মে হিসাবভুক্ত না করায় ২৯ কোটি ২০ লাখ ৬৯ হাজার ১৫৭ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

পরামর্শক বাবদ বিল পরিশোধ করায় অনিয়মিত ব্যয় ৪৫ লাখ ৩ হাজার ৪৮০ টাকা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এ ছাড়া প্রাপ্যতা না থাকলেও সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ৭ লাখ ৬৭ হাজার ৬৮০ টাকা পারিতোষিক দেওয়া হয়েছে। আবার অতিরিক্ত অবসর সুবিধা পরিশোধ করায় ৫ লাখ ৭৯ হাজার ৮২৪ টাকা, ভ্যাট না কাটায় ১ লাখ ৯২ হাজার ৫৫৩ টাকা, চেকের ব্যবহার না থাকলেও এ খাতে ব্যয় দেখিয়ে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৬৫ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এসব ব্যয়কে প্রতিবেদনে আর্থিক ক্ষতি হিসেবে উল্লেখ করে এসব অর্থ আদায় করে বোর্ড তহবিলে জমা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

এ ছাড়া প্রতিবেদনে উৎসে কর না কাটায় ১ লাখ ৬ হাজার ১১ টাকা, ক্রয় সিলিং না মেনে ২৬ লাখ ১৬ হাজার ৩০৪ টাকার অতিরিক্ত ব্যয়, বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা না মেনে ১ কোটি ৮ লাখ ২৮ হাজার ৭০৭ টাকা ব্যয় এবং আর্থিক ক্রয়সীমার অতিরিক্ত ৭ লাখ ৬১ হাজার ৯৪১ টাকা ব্যয়ের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে অবসর সুবিধা বোর্ডের তহবিল ব্যবস্থাপনা ও সম্পাদিত কার্যাবলির প্রতিবেদন প্রণয়ন না করা এবং অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রণয়ন বোর্ডের আইন ও প্রবিধান লঙ্ঘিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বোর্ড কর্তৃক ক্যাশবই ও স্টক রেজিস্ট্রার সংরক্ষণ করা হয়নি। তহবিল প্রাপ্তি নিশ্চিত না করে অধিক হারে পরিশোধের অঙ্গীকার করার অবসর সুবিধা বোর্ডের দায় উত্তরোত্তর বাড়ছে।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনের আপত্তিগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের সদস্যসচিব (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক মো. জাফর আহম্মদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিরীক্ষার আপত্তিগুলোর জবাব দেওয়া হয়েছে। সে আলোকে মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

চট্টগ্রামের ১৬ আসনের ৭টিতে বিএনপির চ্যালেঞ্জ বিএনপিই

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: উত্তেজনা বাড়ছে দ্রুত

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

যে তিন শ্রেণির নামাজির জন্য রয়েছে দুর্ভোগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত