মোনায়েম সরকার

প্রথমেই একটু ব্যক্তিগত বিষয় উল্লেখ করছি। আমি গত শতকের ষাটের দশকের শুরু থেকেই দেশের রাজনীতির একজন প্রত্যক্ষদর্শী। নিজে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ স্বাধীন বাংলাদেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছি। অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে থেকে আমি রাজনীতির অনেক উত্থান-পতন কাছ থেকে দেখেছি। এখন রাজনীতিতে প্রত্যক্ষভাবে সক্রিয় না থাকলেও প্রতিদিন দেশের বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিক পাঠ করে দেশ-বিদেশের সব খবরাখবর জানা-বোঝার চেষ্টা করি। আমি আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে এটা বলতে পারি যে আমরা এখন সত্যি একটি বিশেষ সময় অতিক্রম করছি। চোখ কান খোলা রেখে ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি বুঝে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে যে সম্ভাবনাময় অবস্থানে রয়েছে, তা থেকে ছিটকে যেতে পারে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দেশের রাজনীতি এখন পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষগুলোর পরস্পরবিরোধী আক্রমণাত্মক বক্তব্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও পরিস্থিতি আরও সহিংস হয়ে ওঠার আশঙ্কাই করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতায় আছে। টানা তিন মেয়াদ পূর্ণ করে চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় যাওয়ার আশা করছে দলটি। আর আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি চাইছে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে নিজেরা ক্ষমতায় যেতে। বিতর্ক শুরু হয়েছে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রশ্নে। বিএনপি মনে করে, দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়। তাই আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করে একটি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু এই দাবি সংবিধানসম্মত না হওয়ায় আওয়ামী লীগ বলছে, নির্বাচন হবে বর্তমান সরকারের অধীনেই। সরকারপক্ষ কোনো ছাড় না দিয়ে এই অবস্থানে অটল থাকলে বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিশ্চিত নয়।
বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য দলটির সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা বিভিন্ন মহল থেকে বলা হলেও আওয়ামী লীগ যে আলোচনায় আগ্রহী নয়, সেটা স্পষ্ট হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্য থেকে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ১৯তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিয়া পরিবারকে ‘খুনি পরিবার’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেছেন, এ দেশে খুনিদের রাজত্ব আর চলবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ হত্যা এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট দলের সমাবেশে বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নিশ্চিহ্ন করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছিল।
‘খুনি’দের দলের সঙ্গে আলোচনা হয় কী করে? এখন কেউ যদি বলেন, বিএনপি দেশের একটি বড় রাজনৈতিক দল। এই দলের প্রতি জনসমর্থনও আছে। তো এই দলকে খুনির দল বলে প্রধানমন্ত্রী ঠিক করেননি, তাহলে তার সঙ্গে তর্ক করা অনর্থক। শেখ হাসিনা যেটা বলেছেন, তা সঠিক এবং যুক্তিসংগত। আর যাঁরা এটাকে সঠিক মনে করছেন না, তাঁরা কি যুক্তির ধার ধারছেন? বিএনপির জনসমর্থন আছে বলেই এই দলের নেতারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হত্যা-খুনের মাধ্যমে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্রে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকতে পারেন না। বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জড়িত থাকার বিষয়টি কোনোভাবেই কল্পনাপ্রসূত নয়। আর ২১ আগস্টের ঘটনার সঙ্গে বিএনপি ও তার মিত্রদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি আদালতে প্রমাণিত। অথচ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনার জন্য অনুতপ্ত না হয়ে, দুঃখ প্রকাশ না করে এবারও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২১ আগস্টের ঘটনাকে আওয়ামী লীগের সাজানো নাটক বলে উল্লেখ করেছেন।
মির্জা ফখরুলকে অনেকে একজন সজ্জন ব্যক্তি বলে মনে করেন। অথচ তিনি যখন কুজনের মতো উক্তি করেন, তখন আর বিস্ময়ের শেষ থাকে না। যে ঘটনায় শেখ হাসিনার প্রাণনাশ হতে পারত, যে ঘটনায় ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, সে ঘটনাকে যিনি সাজানো নাটক বলতে পারেন, তিনি কীভাবে সজ্জন হতে পারেন?
এই পর্যায়ে আলোচনায় আমি আমার প্রিয়ভাজন দুজন সাংবাদিকের বক্তব্য উদ্ধৃত করতে চাই। হাসান মামুন তাঁর একটি লেখায় সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরতে গিয়ে লিখেছেন:
‘স্বাধীন দেশে আমরা কেন সুষ্ঠু নির্বাচনের বিধিব্যবস্থা গড়ে তুলতে ব্যর্থ হলাম? এ ক্ষেত্রে শুধু সেনাশাসকদের দায়ী করে পার পাওয়া যাবে না। নির্বাচিত সরকারের আমলেও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিধিব্যবস্থা নষ্ট করে দেওয়ার অভিজ্ঞতা আমাদের রয়েছে।
সুষ্ঠু ভোট অবশ্যই জনগণের জন্য জরুরি। সে জন্যই তো এর উপযুক্ত বিধিব্যবস্থা গড়ে উঠতে দেওয়া হয়নি। আর গোলেমালে তার ব্যবস্থা হলেও সুযোগ পেয়ে সব পক্ষই কমবেশি ওটা বানচাল করতে চেয়েছে। নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারব্যবস্থা নিয়ে অবশ্য গর্ব করার কিছু নেই। এটা আমাদের রাজনীতিকদের ব্যর্থতারই প্রকাশ। তা সত্ত্বেও ওটা ছিল জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের রক্ষাকবচ। পরে যেভাবেই হোক, সেটা উচ্ছেদ করে বিরোধী দলের ক্ষমতায় যাওয়ার সেতুটাই পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বললে কি ভুল হবে?
সুষ্ঠু ভোটে আসলে কী অর্জন করি? জবাব তো সহজ, জনগণের সম্মতিতে সরকার। এ ধরনের সরকার যে সুশাসন দেবেই—তেমন নিশ্চয়তা কিন্তু নেই। তবে সুষ্ঠু ভোট থাকলে এ নিশ্চয়তা অন্তত থাকবে, জনগণ নির্দিষ্ট সময় পর তাকে বিদায় করতে পারবে। সে ভয়েও সুষ্ঠুভাবে দেশ পরিচালনায় সরকারটি আগ্রহী হবে না–তা কিন্তু বলা যায় না।’
হাসান মামুনের বক্তব্যের জবাবে কিছু কথা লিখেছেন আরেক সাংবাদিক মাহবুব কামাল। তিনি লিখেছেন:
‘কথা হচ্ছে, বলা যাবে না কেন? অবশ্যই বলা যাবে। আমাদের চলমান রাজনৈতিক সংস্কৃতি যা, তাতে নির্বাচিত সরকার সুষ্ঠুভাবে দেশ পরিচালনা করবে না। ২০০১ ও ২০০৮ সালের সুষ্ঠু নির্বাচনে যে দুটি সরকার ক্ষমতায় এসেছিল, তারা সুষ্ঠুভাবে দেশ পরিচালনার পরিবর্তে বিরোধী দলকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা না করে পরবর্তী নির্বাচনে তাদের কীভাবে ঠেকিয়ে রাখা যায়, সেই চেষ্টাই করেছে। একদল নগ্নভাবে বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছে, আরেক দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে কাজটা করেছে কৌশলে। এমনকি ১৯৯১ সালে গঠিত সরকার মাগুরার একটি উপনির্বাচনে হারলে ক্ষমতা চলে যাবে না জানা সত্ত্বেও সেই নির্বাচনে সীমাহীন কারচুপি করেছে। আর ১৯৯৬ সালে গঠিত নির্বাচিত সরকার বিরোধী দলকে ঠ্যাঙ্গাতে গডফাদার সংস্কৃতির জন্ম দিয়েছে। হ্যাঁ, এমনটি আর হবে না, এমন লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কথাবার্তা আমাদের স্পষ্ট বার্তা দেয়। ১৯৫৪ কিংবা ১৯৭০ সালের সুষ্ঠু নির্বাচনের উদাহরণ বর্তমান বাংলাদেশে একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক। বুড়িগঙ্গায় গড়িয়ে গেছে অনেক জল।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে এক পাল্লায় উঠিয়ে মাপার একটি প্রবণতা লক্ষ করা যায়। আমি মনে করি, একটি দীর্ঘ ও কঠিন রাজনৈতিক সংগ্রাম, বহু ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং সর্বোপরি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ৫০ বছরের ব্যবধানে কেন আজকের অবস্থায় এসে দাঁড়াল, তার কারণ খোঁজা মনে হয় খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। একটি নির্মোহ মূল্যায়ন বর্তমানে সময়ের দাবি।
পাকিস্তানের সাম্প্রদায়িক, অগণতান্ত্রিক এবং সামরিক স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে ২৫ বছরের রাজনৈতিক সংগ্রাম ও সর্বশেষ ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্ম দিয়েছে। যার নেতৃত্বে ছিলেন অবিসংবাদী নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীনতার ছয় মাসের মধ্যেই তিনি দেশকে একটি আধুনিক সংবিধান দিয়েছিলেন। সেই সংবিধানের মূলনীতি ছিল গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং সমাজতন্ত্র। আমাদের দুর্ভাগ্য যে, দেশ স্বাধীন হওয়ার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় স্বাধীনতাবিরোধী কতিপয় দুর্বৃত্ত জাতির পিতাকে রাতের অন্ধকারে সপরিবারে হত্যা করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার মর্মমূলে আঘাত করল।
স্বাধীন বাঙালি জাতিকে আবার পাকিস্তানি ধারায় নিয়ে যেতে প্রচেষ্টা চালাল। তারই ধারাবাহিকতায় একটি গণতান্ত্রিক সংবিধানকে অঙ্গচ্ছেদ করে ধর্মনিরপেক্ষতাকে আবার নির্বাসনে পাঠায়। গণতন্ত্রের বদলে আবার চালু করা হলো সামরিক স্বৈরশাসন। জেনারেল জিয়া, জেনারেল এরশাদ আমাদের ঘাড়ে চেপে বসল। তাঁরা সংবিধানকে ছিন্নভিন্ন করল। অযাচিতভাবে ‘বিসমিল্লাহ’ সংবিধানে সংযোজন করে ধর্মভীরু মানুষকে স্বৈরশাসনের পক্ষে টানার অপচেষ্টা করল। পবিত্র ধর্ম ইসলামকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে ফায়দা লোটার জন্য রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করল। ক্ষমতা ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বেহিসেবি অর্থ ব্যয় করে জেনারেল জিয়া, জেনারেল এরশাদ রাজনীতি ও রাজনৈতিক দল নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছেন। স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার, আলবদর ও জামায়াতিদের এ দেশে রাজনীতিতে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। কিছু দলছুট আদর্শহীন, সুযোগসন্ধানী, হালুয়া-রুটিলোভী নেতা নিয়ে দল গঠন করে দেশ পরিচালনা করা হয়েছে।
সামরিক একনায়কেরা দেশে এমন এক দুর্বৃত্তায়নের রাজনৈতিক সংস্কৃতি সৃষ্টি করেছে, যাতে ত্যাগী, ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দলগুলোও রাজনীতিতে টিকে থাকার কৌশল হিসেবে নানা পন্থা অবলম্বন করতে গিয়ে কলুষিত হয়। এখন রাজনীতি আর দেশপ্রেম হিসেবে বিবেচিত হয় না। রাজনীতি পরিণত হয়েছে ব্যবসার হাতিয়ার হিসেবে। রাজনীতিতে যোগ দিয়ে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাট করে স্বল্পতম সময়ে এক-একজন হয়ে উঠছে আঙুল ফুলে কলাগাছ।
বহু ধর্ম, বর্ণের দেশে অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক নীতির বদলে যদি ধর্মীয় জাতীয়তাবাদকে রাষ্ট্র থেকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়, তাহলে জনগণের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা হয়। প্রকৃতপক্ষে ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দিয়ে গণতন্ত্রের কথা ফাঁকা বুলি মাত্র। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে প্রতিষ্ঠিত দেশ কখনো রাজাকারি আদর্শ দ্বারা উন্নয়ন, অগ্রগতি সম্ভব নয়। কাজেই এখন সময় এসেছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে ফিরে যাওয়ার। ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার পুনঃপ্রত্যাবর্তন করেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বাস্তবায়নে এগিয়ে যেতে হবে। তবেই লাইনচ্যুত ট্রেনটি সঠিক ট্র্যাকে প্রতিস্থাপিত হবে।
মোনায়েম সরকার, রাজনীতিক, লেখক; মহাপরিচালক, বিএফডিআর

প্রথমেই একটু ব্যক্তিগত বিষয় উল্লেখ করছি। আমি গত শতকের ষাটের দশকের শুরু থেকেই দেশের রাজনীতির একজন প্রত্যক্ষদর্শী। নিজে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ স্বাধীন বাংলাদেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছি। অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে থেকে আমি রাজনীতির অনেক উত্থান-পতন কাছ থেকে দেখেছি। এখন রাজনীতিতে প্রত্যক্ষভাবে সক্রিয় না থাকলেও প্রতিদিন দেশের বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিক পাঠ করে দেশ-বিদেশের সব খবরাখবর জানা-বোঝার চেষ্টা করি। আমি আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে এটা বলতে পারি যে আমরা এখন সত্যি একটি বিশেষ সময় অতিক্রম করছি। চোখ কান খোলা রেখে ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি বুঝে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে যে সম্ভাবনাময় অবস্থানে রয়েছে, তা থেকে ছিটকে যেতে পারে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দেশের রাজনীতি এখন পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষগুলোর পরস্পরবিরোধী আক্রমণাত্মক বক্তব্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও পরিস্থিতি আরও সহিংস হয়ে ওঠার আশঙ্কাই করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতায় আছে। টানা তিন মেয়াদ পূর্ণ করে চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় যাওয়ার আশা করছে দলটি। আর আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি চাইছে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে নিজেরা ক্ষমতায় যেতে। বিতর্ক শুরু হয়েছে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রশ্নে। বিএনপি মনে করে, দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়। তাই আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করে একটি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু এই দাবি সংবিধানসম্মত না হওয়ায় আওয়ামী লীগ বলছে, নির্বাচন হবে বর্তমান সরকারের অধীনেই। সরকারপক্ষ কোনো ছাড় না দিয়ে এই অবস্থানে অটল থাকলে বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিশ্চিত নয়।
বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য দলটির সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা বিভিন্ন মহল থেকে বলা হলেও আওয়ামী লীগ যে আলোচনায় আগ্রহী নয়, সেটা স্পষ্ট হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্য থেকে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ১৯তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিয়া পরিবারকে ‘খুনি পরিবার’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেছেন, এ দেশে খুনিদের রাজত্ব আর চলবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ হত্যা এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট দলের সমাবেশে বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নিশ্চিহ্ন করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছিল।
‘খুনি’দের দলের সঙ্গে আলোচনা হয় কী করে? এখন কেউ যদি বলেন, বিএনপি দেশের একটি বড় রাজনৈতিক দল। এই দলের প্রতি জনসমর্থনও আছে। তো এই দলকে খুনির দল বলে প্রধানমন্ত্রী ঠিক করেননি, তাহলে তার সঙ্গে তর্ক করা অনর্থক। শেখ হাসিনা যেটা বলেছেন, তা সঠিক এবং যুক্তিসংগত। আর যাঁরা এটাকে সঠিক মনে করছেন না, তাঁরা কি যুক্তির ধার ধারছেন? বিএনপির জনসমর্থন আছে বলেই এই দলের নেতারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হত্যা-খুনের মাধ্যমে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্রে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকতে পারেন না। বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জড়িত থাকার বিষয়টি কোনোভাবেই কল্পনাপ্রসূত নয়। আর ২১ আগস্টের ঘটনার সঙ্গে বিএনপি ও তার মিত্রদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি আদালতে প্রমাণিত। অথচ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনার জন্য অনুতপ্ত না হয়ে, দুঃখ প্রকাশ না করে এবারও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২১ আগস্টের ঘটনাকে আওয়ামী লীগের সাজানো নাটক বলে উল্লেখ করেছেন।
মির্জা ফখরুলকে অনেকে একজন সজ্জন ব্যক্তি বলে মনে করেন। অথচ তিনি যখন কুজনের মতো উক্তি করেন, তখন আর বিস্ময়ের শেষ থাকে না। যে ঘটনায় শেখ হাসিনার প্রাণনাশ হতে পারত, যে ঘটনায় ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, সে ঘটনাকে যিনি সাজানো নাটক বলতে পারেন, তিনি কীভাবে সজ্জন হতে পারেন?
এই পর্যায়ে আলোচনায় আমি আমার প্রিয়ভাজন দুজন সাংবাদিকের বক্তব্য উদ্ধৃত করতে চাই। হাসান মামুন তাঁর একটি লেখায় সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরতে গিয়ে লিখেছেন:
‘স্বাধীন দেশে আমরা কেন সুষ্ঠু নির্বাচনের বিধিব্যবস্থা গড়ে তুলতে ব্যর্থ হলাম? এ ক্ষেত্রে শুধু সেনাশাসকদের দায়ী করে পার পাওয়া যাবে না। নির্বাচিত সরকারের আমলেও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিধিব্যবস্থা নষ্ট করে দেওয়ার অভিজ্ঞতা আমাদের রয়েছে।
সুষ্ঠু ভোট অবশ্যই জনগণের জন্য জরুরি। সে জন্যই তো এর উপযুক্ত বিধিব্যবস্থা গড়ে উঠতে দেওয়া হয়নি। আর গোলেমালে তার ব্যবস্থা হলেও সুযোগ পেয়ে সব পক্ষই কমবেশি ওটা বানচাল করতে চেয়েছে। নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারব্যবস্থা নিয়ে অবশ্য গর্ব করার কিছু নেই। এটা আমাদের রাজনীতিকদের ব্যর্থতারই প্রকাশ। তা সত্ত্বেও ওটা ছিল জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের রক্ষাকবচ। পরে যেভাবেই হোক, সেটা উচ্ছেদ করে বিরোধী দলের ক্ষমতায় যাওয়ার সেতুটাই পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বললে কি ভুল হবে?
সুষ্ঠু ভোটে আসলে কী অর্জন করি? জবাব তো সহজ, জনগণের সম্মতিতে সরকার। এ ধরনের সরকার যে সুশাসন দেবেই—তেমন নিশ্চয়তা কিন্তু নেই। তবে সুষ্ঠু ভোট থাকলে এ নিশ্চয়তা অন্তত থাকবে, জনগণ নির্দিষ্ট সময় পর তাকে বিদায় করতে পারবে। সে ভয়েও সুষ্ঠুভাবে দেশ পরিচালনায় সরকারটি আগ্রহী হবে না–তা কিন্তু বলা যায় না।’
হাসান মামুনের বক্তব্যের জবাবে কিছু কথা লিখেছেন আরেক সাংবাদিক মাহবুব কামাল। তিনি লিখেছেন:
‘কথা হচ্ছে, বলা যাবে না কেন? অবশ্যই বলা যাবে। আমাদের চলমান রাজনৈতিক সংস্কৃতি যা, তাতে নির্বাচিত সরকার সুষ্ঠুভাবে দেশ পরিচালনা করবে না। ২০০১ ও ২০০৮ সালের সুষ্ঠু নির্বাচনে যে দুটি সরকার ক্ষমতায় এসেছিল, তারা সুষ্ঠুভাবে দেশ পরিচালনার পরিবর্তে বিরোধী দলকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা না করে পরবর্তী নির্বাচনে তাদের কীভাবে ঠেকিয়ে রাখা যায়, সেই চেষ্টাই করেছে। একদল নগ্নভাবে বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছে, আরেক দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে কাজটা করেছে কৌশলে। এমনকি ১৯৯১ সালে গঠিত সরকার মাগুরার একটি উপনির্বাচনে হারলে ক্ষমতা চলে যাবে না জানা সত্ত্বেও সেই নির্বাচনে সীমাহীন কারচুপি করেছে। আর ১৯৯৬ সালে গঠিত নির্বাচিত সরকার বিরোধী দলকে ঠ্যাঙ্গাতে গডফাদার সংস্কৃতির জন্ম দিয়েছে। হ্যাঁ, এমনটি আর হবে না, এমন লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কথাবার্তা আমাদের স্পষ্ট বার্তা দেয়। ১৯৫৪ কিংবা ১৯৭০ সালের সুষ্ঠু নির্বাচনের উদাহরণ বর্তমান বাংলাদেশে একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক। বুড়িগঙ্গায় গড়িয়ে গেছে অনেক জল।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে এক পাল্লায় উঠিয়ে মাপার একটি প্রবণতা লক্ষ করা যায়। আমি মনে করি, একটি দীর্ঘ ও কঠিন রাজনৈতিক সংগ্রাম, বহু ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং সর্বোপরি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ৫০ বছরের ব্যবধানে কেন আজকের অবস্থায় এসে দাঁড়াল, তার কারণ খোঁজা মনে হয় খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। একটি নির্মোহ মূল্যায়ন বর্তমানে সময়ের দাবি।
পাকিস্তানের সাম্প্রদায়িক, অগণতান্ত্রিক এবং সামরিক স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে ২৫ বছরের রাজনৈতিক সংগ্রাম ও সর্বশেষ ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্ম দিয়েছে। যার নেতৃত্বে ছিলেন অবিসংবাদী নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীনতার ছয় মাসের মধ্যেই তিনি দেশকে একটি আধুনিক সংবিধান দিয়েছিলেন। সেই সংবিধানের মূলনীতি ছিল গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং সমাজতন্ত্র। আমাদের দুর্ভাগ্য যে, দেশ স্বাধীন হওয়ার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় স্বাধীনতাবিরোধী কতিপয় দুর্বৃত্ত জাতির পিতাকে রাতের অন্ধকারে সপরিবারে হত্যা করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার মর্মমূলে আঘাত করল।
স্বাধীন বাঙালি জাতিকে আবার পাকিস্তানি ধারায় নিয়ে যেতে প্রচেষ্টা চালাল। তারই ধারাবাহিকতায় একটি গণতান্ত্রিক সংবিধানকে অঙ্গচ্ছেদ করে ধর্মনিরপেক্ষতাকে আবার নির্বাসনে পাঠায়। গণতন্ত্রের বদলে আবার চালু করা হলো সামরিক স্বৈরশাসন। জেনারেল জিয়া, জেনারেল এরশাদ আমাদের ঘাড়ে চেপে বসল। তাঁরা সংবিধানকে ছিন্নভিন্ন করল। অযাচিতভাবে ‘বিসমিল্লাহ’ সংবিধানে সংযোজন করে ধর্মভীরু মানুষকে স্বৈরশাসনের পক্ষে টানার অপচেষ্টা করল। পবিত্র ধর্ম ইসলামকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে ফায়দা লোটার জন্য রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করল। ক্ষমতা ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বেহিসেবি অর্থ ব্যয় করে জেনারেল জিয়া, জেনারেল এরশাদ রাজনীতি ও রাজনৈতিক দল নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছেন। স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার, আলবদর ও জামায়াতিদের এ দেশে রাজনীতিতে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। কিছু দলছুট আদর্শহীন, সুযোগসন্ধানী, হালুয়া-রুটিলোভী নেতা নিয়ে দল গঠন করে দেশ পরিচালনা করা হয়েছে।
সামরিক একনায়কেরা দেশে এমন এক দুর্বৃত্তায়নের রাজনৈতিক সংস্কৃতি সৃষ্টি করেছে, যাতে ত্যাগী, ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দলগুলোও রাজনীতিতে টিকে থাকার কৌশল হিসেবে নানা পন্থা অবলম্বন করতে গিয়ে কলুষিত হয়। এখন রাজনীতি আর দেশপ্রেম হিসেবে বিবেচিত হয় না। রাজনীতি পরিণত হয়েছে ব্যবসার হাতিয়ার হিসেবে। রাজনীতিতে যোগ দিয়ে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাট করে স্বল্পতম সময়ে এক-একজন হয়ে উঠছে আঙুল ফুলে কলাগাছ।
বহু ধর্ম, বর্ণের দেশে অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক নীতির বদলে যদি ধর্মীয় জাতীয়তাবাদকে রাষ্ট্র থেকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়, তাহলে জনগণের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা হয়। প্রকৃতপক্ষে ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দিয়ে গণতন্ত্রের কথা ফাঁকা বুলি মাত্র। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে প্রতিষ্ঠিত দেশ কখনো রাজাকারি আদর্শ দ্বারা উন্নয়ন, অগ্রগতি সম্ভব নয়। কাজেই এখন সময় এসেছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে ফিরে যাওয়ার। ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার পুনঃপ্রত্যাবর্তন করেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বাস্তবায়নে এগিয়ে যেতে হবে। তবেই লাইনচ্যুত ট্রেনটি সঠিক ট্র্যাকে প্রতিস্থাপিত হবে।
মোনায়েম সরকার, রাজনীতিক, লেখক; মহাপরিচালক, বিএফডিআর

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

প্রথমেই একটু ব্যক্তিগত বিষয় উল্লেখ করছি। আমি গত শতকের ষাটের দশকের শুরু থেকেই দেশের রাজনীতির একজন প্রত্যক্ষদর্শী। নিজে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ স্বাধীন বাংলাদেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছি। অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি
২৫ আগস্ট ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

প্রথমেই একটু ব্যক্তিগত বিষয় উল্লেখ করছি। আমি গত শতকের ষাটের দশকের শুরু থেকেই দেশের রাজনীতির একজন প্রত্যক্ষদর্শী। নিজে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ স্বাধীন বাংলাদেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছি। অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি
২৫ আগস্ট ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

প্রথমেই একটু ব্যক্তিগত বিষয় উল্লেখ করছি। আমি গত শতকের ষাটের দশকের শুরু থেকেই দেশের রাজনীতির একজন প্রত্যক্ষদর্শী। নিজে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ স্বাধীন বাংলাদেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছি। অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি
২৫ আগস্ট ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

প্রথমেই একটু ব্যক্তিগত বিষয় উল্লেখ করছি। আমি গত শতকের ষাটের দশকের শুরু থেকেই দেশের রাজনীতির একজন প্রত্যক্ষদর্শী। নিজে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ স্বাধীন বাংলাদেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছি। অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি
২৫ আগস্ট ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫