Ajker Patrika

কেরানীগঞ্জে সাইফুল হত্যায় জড়িত সাতজন গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০১ আগস্ট ২০২৩, ১৭: ৪৫
কেরানীগঞ্জে সাইফুল হত্যায় জড়িত সাতজন গ্রেপ্তার

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূল পরিকল্পনাকারী মো. রাজন হোসেনসহ (৩১) সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গতকাল রাতে র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‍্যাব-১০-এর একটি দল রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে। 

গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন জানে আলম (৩৬), মো. সুমন ওরফে গর্দা সুমন (২৫), লিটন হোসেন (২৬), মো. দিপু (২৩), সরোয়ার আকন্দ (২৬) ও মো. সজীব (২৯)। গ্রেপ্তারের সময় তাঁদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সুচালো লোহার রড, একটি ভাঙা ক্রিকেট ব্যাট, একটি ব্যাটন ও ৬টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে র‍্যাব। সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তার আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, চিহ্নিত মাদক কারবারি রাজন। গত ২৮ জুন গাড়ি চুরির মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি। রাজনের ধারণা, তাঁর এই গ্রেপ্তারের পেছনে ব্যবসায়ী সাইফুলের হাত রয়েছে। তাই জামিনে বেরিয়ে তিনি সাইফুলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৩০ জুলাই রাতে সহযোগীদের নিয়ে সাইফুলকে হত্যা করেন রাজন। 

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব জানায়, ঘটনার দিন রাতে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের খেজুরবাগ সাতপাখি এলাকায় সাইফুল ইসলাম নামে ওই পোশাক ব্যবসায়ীকে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে এবং চোখ উপড়ে ফেলেন রাজন ও তাঁর সহযোগীরা। স্থানীয়রা সাইফুলকে উদ্ধার করে রাজধানীর একটি সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহতের বড় বোন বাদী হয়ে রাজধানীর কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে র‍্যাব জানায়, ওই দিন রাতে রাজনের নেতৃত্বে জানে আলম, সুমন, লিটন, দিপু, সরোয়ার ও সজীবসহ ১০-১২ জন সাইফুল দোকান থেকে বাসায় ফেরার পথে রাত সাড়ে ১১টায় খেজুরবাগ স্কুল রোডে পৌঁছালে পথরোধ করেন। তাঁরা সাইফুলকে ক্রিকেট ব্যাট, ব্যাটন, লোহার রড ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন। মাটিতে পড়ে গেলে রাজন তাঁর চোখ উপড়ে ফেলেন। 

গ্রেপ্তার আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে কমান্ডার মঈন আরও বলেন, সাইফুল দীর্ঘদিন যাবৎ ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের খেজুরবাগ সাতপাখি এলাকায় পরিবারের সঙ্গে বসবাস করে আসছিলেন। সাতপাখি রোডে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে কাপড়ের ব্যবসা করতেন তিনি। গ্রেপ্তার আসামিরা রাজধানীর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকায় বসবাস করেন। 

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, সাইফুল ছিলেন এলাকায় সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদী কণ্ঠ। মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গঠনে তিনি বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতেন। তিনি বিভিন্ন সময় সন্ত্রাসী ও মাদক কারবার সম্পর্কে তথ্য দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও সহায়তা করতেন। এ কারণে বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় মাদক কারবারি ও অন্যান্যরা সাইফুলের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে ‘উচিত শিক্ষা’ দেওয়ার পরিকল্পনা করে। 
 
তিনি জানান, গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, রাজন গত ১৯ জুলাই মুক্তি পেয়ে জানে আলম, সুমন ও অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে সাইফুলকে ‘উচিত শিক্ষা’ দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। গত ৩০ জুলাই রাতে সাইফুলকে নৃশংসভাবে হত্যা করে পালিয়ে যান। রাজন স্থানীয় একটি রিকশা গ্যারেজ পরিচালনা করতেন। পাশাপাশি এলাকায় মাদক, ছিনতাই, ডাকাতি, গাড়ি চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। রাজনের বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক, বিস্ফোরক দ্রব্য ও চুরিসহ ৫টির বেশি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার অন্যদের বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...