প্রতিযোগিতাপূর্ণ বিশ্বে টিকে থাকতে গুণগতমান সম্পন্ন প্রাথমিক শিক্ষার বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
মো. তাজুল ইসলাম বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরপরই শিক্ষকদের বেতন জাতীয়করণ করেছিলেন। কারণ, তিনি জানতেন শিক্ষা ব্যতীত জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয়। বর্তমানে প্রতিযোগিতাপূর্ণ বিশ্বে প্রযুক্তির উৎকর্ষের যুগে টিকে থাকতে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন অপরিহার্য।
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ‘প্রাথমিক শিক্ষায় সরকারি বিনিয়োগ: স্থানীয় অভিজ্ঞতা ও করণীয়’ শীর্ষক জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্মেলনের আয়োজন করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ।
শিক্ষকদের পদমর্যাদা ও সামাজিক অবস্থান সম্পর্কে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, শিক্ষকদের কাজের মাধ্যমে নিজেদের সম্মান অর্জন করতে হবে এবং নেতিবাচক পথ পরিহার করতে হবে।
এ সময় প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে স্থানীয় সরকার সম্পৃক্তকরণ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ প্রাথমিক শিক্ষার সঙ্গে নানাভাবে জড়িত। তবে ইউনিয়ন পরিষদকে কীভাবে স্থানীয় বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়নে যুক্ত করা যায়—তা নিয়ে আমাদের চিন্তা করতে হবে।’
সরকারের সমালোচনাকে স্বাগত জানিয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘তবে সাফল্যের জন্য কর্মস্পৃহা বজায় রাখতে স্বীকৃতিও দরকার। আমাদের এখানে সাফল্যের স্বীকৃতি দেওয়ার রেওয়াজ কম।’
প্রাথমিক শিক্ষায় সরকারের অনেক সাফল্য রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি ছাত্রের সংখ্যা বর্তমানে ৯৮ শতাংশ হলেও তা শতভাগে উত্তীর্ণ করতে হবে এবং সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধ করতে হবে।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন জাতীয় বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে সেই সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রতিনিধি এডুকেশন অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট টিম প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাদিয়া রশীদ বলেন, করোনাকালীন প্রাথমিক শিক্ষায় ক্ষতি নিতে পুষিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। এ ছাড়া প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে কমিউনিটি সম্পৃক্ততা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রতিনিধি কাউন্সিলর ইউরাতে স্মলস্কাইট মার্ভিল বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন শিক্ষাকে প্রাধান্য দেয়—যেখানে মানসম্মত ও গুণগত শিক্ষাই পারে পৃথিবীকে সুন্দর ও বসবাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৬ শতাংশ শিক্ষার্থী এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর ঝরে পড়ে উল্লেখ করে তিনি এ হার কমানোর জন্য উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেন।
প্রাথমিক শিক্ষাবিষয়ক এই সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। এতে আরও বক্তব্য দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য শিরীন আখতার এমপি, ব্র্যাকের শিক্ষা উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের প্রোগ্রাম হেড সমীর রঞ্জন নাথ, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের এডুকেশন গ্লোবাল প্র্যাকটিসের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ সাঈদ রাশেদ আল জায়েদ যশ প্রমুখ।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে