রাজধানীর মিরপুরে কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ভর্তি রিয়াজুল হাসান রতনের দুটো কিডনিই নষ্ট। চার দিন ধরে হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিচ্ছেন মিরপুরের এ বাসিন্দা। চিকিৎসকের পরামর্শে স্বামীর জন্য ওষুধ কিনতে গিয়ে সর্বস্ব খোয়ালেন স্ত্রী মরিয়ম রহমান। প্রতারক চক্রের সদস্যরা তাঁর সঙ্গে কথা বলার অজুহাতে অজ্ঞান করে সঙ্গে থাকা মোবাইল টাকা পয়সা, গলার চেইন ও কানের দুল নিয়ে সটকে পড়েছে।
আজ রোববার সকালে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিষয়ে মরিয়ম বলেন, ‘বাইর থেকে ওষুধ নিয়ে হাসপাতালে প্রবেশের সময়ে তিনজন ব্যক্তি আমার সঙ্গে কথা বলতে চায়। এরপর আর আমার কোনো কিছু মনে নেই। পরে যখন স্বাভাবিক হলাম তখন দেখি গলার স্বর্ণের চেইন, কানের দুল ও হাতের ব্যাগে থাকা (দুটি মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা ছিল) কোনো কিছুই নেই।’
এরপর ওই নারী দ্রুত ছুটে যান মিরপুর মডেল থানায়। ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে একটি অভিযোগও করেছেন। ঘটনা তদন্তে মাঠে নেমেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিরপুর মডেল থানার ওসি মো. মহসিন বলেন, ‘আমরা ঘটনাটি শোনার পরই তাৎক্ষণিক তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছি।’
ভুক্তভোগী মরিয়মের মিরপুর মডেল থানায় করা অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সকালে মিরপুর মডেল থানার শিশু হাসপাতালে সামনে থেকে স্বামীর জন্য ওষুধ কিনে হেঁটে মিরপুর দুই নম্বরের কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে আসছিলেন। এ সময় তিনজন অপরিচিত ব্যক্তি (বয়স আনুমানিক ২৫ থেকে ৩০ বছর) মরিয়মের কাছে এসে গল্পের ছলে বিভিন্ন কথা বলে। এরপর কৌশলে হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের পেছনের গলিতে নিয়ে গিয়ে চেতনানাশক দ্রব্য দিয়ে অর্ধ অচেতন করে। এরপর গলা ও কানে থাকা দেড় ভরি ওজনের স্বর্ণের গয়না, ভ্যানিটি ব্যাগে থাকা নগদ টাকা ও সেলফোন নিয়ে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর স্বাভাবিক হয়ে দেখতে পান সবকিছু নিয়ে গেছে চক্রটি।
মরিয়ম রহমান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই আমার স্বামী কিডনির রোগে ভুগছেন। এখন তাঁর দুটো কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। চিকিৎসকেরা কিডনি পরিবর্তন করতে বলেছেন। এমন পরিস্থিতিতে আমার কাছ থেকে প্রায় দেড় লাখ টাকার মালামাল নিয়ে গেছে প্রতারকেরা। আমি কতটা খারাপ অবস্থায় আছি তা কাউকে বোঝাতে পারব না!’
ঘটনার পর থেকে তদন্ত কার্যক্রমে যুক্ত মিরপুর মডেল থানার এএসআই সোহাগ রানা বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। অপরাধীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে