Ajker Patrika

এ বছরও চ্যালেঞ্জ জলবায়ু কূটনীতি, সঙ্গে লা নিনার প্রভাব

আপডেট : ০৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১৫: ৫৯
এ বছরও চ্যালেঞ্জ জলবায়ু কূটনীতি, সঙ্গে লা নিনার প্রভাব

সাম্প্রতিক বছরগুলো এমনকি মাসগুলোতে গোটা পৃথিবীর বুকে আবহাওয়ার চরমভাবাপন্নতা বেশ কিছু ক্ষতচিহ্ন এঁকে গেছে। এতে বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রভাবও বাড়ছে। ২০২৩ সালেও এমন আরও ঘটনার মুখোমুখি হতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অনেক বন্যা, খরা, দাবানলের সৃষ্টি হবে কিংবা এগুলোর প্রভাব আরও বাড়বে। তেমনি নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে জলবায়ু কূটনীতি।

জলবায়ুর পরিবর্তন ধারাবাহিকভাবে গড় তাপমাত্রা বাড়াচ্ছে। তবে এল নিনো আর লা নিনার মতো জলবায়ুর বিভিন্ন প্রাকৃতিক নিয়ামকও বড় প্রভাব রাখছে পরিবেশে। মধ্য ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বেশি বৃষ্টির সৃষ্টি করে এল নিনো তেমনি অস্ট্রেলিয়ায় জন্ম দেয় খরার। অপর দিকে পূর্ব আফ্রিকায় খরা এবং পশ্চিম আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ায় বেশি বৃষ্টির কারণ লা নিনা।

অস্বাভাবিক হলেও বর্তমান লা নিনার তৃতীয় বছর অতিক্রম করেছে, যেটা শুরু হয়েছিল ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে। এই শতকে প্রথমবারের মতো টানা তিন বছর এটা চলল। ২০২২ সালের শেষ দিকে পূর্ব আফ্রিকায় কম বৃষ্টিপাত ২০২৩ সালে এ অঞ্চলে খাবারের দুষ্প্রাপ্যতা আরও বাড়াত পারে।

উষ্ণতার ওপর প্রভাব বিস্তার করে লা নিনা আর এল নিনো। লা নিনার প্রভাব বিস্তার করা বছরগুলোতে গড়ের চেয়ে একটু শীতল থাকে আবহাওয়া। তবে বর্তমান পরিস্থিতি বদলে গিয়ে ২০২৩ সালে লা নিনা ও এল নিনো মোটামুটি সাম্যাবস্থা থাকলে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা কিছুটা বাড়বে। আর এল নিনো প্রভাব বিস্তার করলে প্যারিস জলবায়ু চুক্তির উষ্ণতা বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে প্রায় ছুঁয়ে ফেলবে। এতে আবহাওয়ার আরও রুদ্রমূর্তি দেখা যেতে পারে।

প্রকৃতির এ ধরনের ধ্বংসযজ্ঞ ও এর ক্ষতি এড়াতে এবং পৃথিবীব্যাপী কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে জলবায়ুকে নিয়ন্ত্রণে রাখাই জলবায়ু নিয়ে বিশ্বের দেশগুলোর আলাপ-আলোচনার উদ্দেশ্য। ২০২২ সালের নভেম্বরে মিসরীয় শহর শার্ম আল শেখে এর শেষ পর্ব হয়। তবে কপ২৭ সম্মেলনে জলবায়ু কূটনীতির ওপর প্রভাব বিস্তার করে ইউক্রেন যুদ্ধ এবং এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়া জ্বালানি ও খাদ্যসংকট। জলবায়ু রাজনীতিকে সাধারণত অন্যান্য ভূ-রাজনীতি থেকে আলাদা করে দেখা হলেও হঠাৎ করেই যেন এগুলো এক সুরে বাধা হয়ে গেল। যেমন জ্বালানি নিরাপত্তাকে বেশি গুরুত্ব দিতে গিয়ে হঠাৎ কয়লার ব্যবহার বেড়ে গেছে।

ইউরোপিয়ান ক্লাইমেট ফাউন্ডেশনের লরেন্স টুবিয়ানা বলেন, মানুষের মধ্যে জমে থাকা দুশ্চিন্তার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে যুদ্ধ এবং আগের চুক্তিগুলো নিয়ে চিন্তা-ভাবনাও বদলে দিয়েছে।

জলবায়ু বিষয়ে পরের আলোচনা হবে ২০২৩ সালের নভেম্বরে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে। এ স্থান নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক উঠতেই পারে। আরব আমিরাতের জলবায়ুবিষয়ক মুখপাত্র সুলতান বিন আহমেদ আল জাবের সে দেশের একজন মন্ত্রী। আরব আমিরাতের সরকার মালিকানাধীন তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আবুধাবি ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানির প্রধানও তিনি। সুলতান বিন আহমেদ আল জাবের জনসমক্ষে এবং ব্যক্তিগত বিভিন্ন আলোচনায় কার্বনশূন্য অর্থনীতিতে তেল ও গ্যাস ভূমিকা রাখা অব্যাহত রাখবে বলে তাঁর বিশ্বাসের কথা জানিয়েছেন। পৃথিবীব্যাপী জ্বালানি রূপান্তর প্রক্রিয়ায় তেল ও গ্যাস কোম্পানিগুলোর সক্রিয় ভূমিকা থাকা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

একদিকে গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব হলেও কিছু জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো হতে পারে। এ ক্ষেত্রে গাড়ি ও ট্রেনকে বিদ্যুতায়িত করা অপেক্ষাকৃত সহজ হবে। আকাশপথে পরিবহন ও নৌপরিবহনের ক্ষেত্রে কার্বনমুক্তকরণ কঠিনতর হবে। সে ক্ষেত্রে কিছু জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করে নিঃসরিত কার্বনের সঙ্গে অন্য এলাকায় ভারসাম্য আনাটা মন্দের ভালো হতে পারে।

অপর দিকে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী উষ্ণতা বৃদ্ধি ১.৫-২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখতে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার দ্রুত কমানো জরুরি। কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনতে জীবাশ্ম জ্বালানির নতুন কোনো উন্নয়ন না করার কথা বলেছে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি। সে ক্ষেত্রে মোটের ওপর আরব আমিরাতে জলবায়ু সম্মেলন জ্বালানির রূপান্তরে তেল কোম্পানিগুলোর ভূমিকা কী হবে, তা নিয়ে বড় তর্কের জন্ম দেবে। শুধু তাই নয়, সমস্যার একটি অংশ না হয়েও তেল কোম্পানিগুলো সমাধানের একটি নিয়ামক হতে পারবে কি না, তা-ও দেখার বিষয়। 

দ্য ইকোনমিস্ট থেকে অনুবাদ করেছেন ইশতিয়াক হাসান

 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজ ঢাকার আবহাওয়া কেমন থাকবে জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানী ঢাকায় আজ শুক্রবার সকালে তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।

আজ সকাল ৭টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে এ কথা বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৬ শতাংশ।

পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। তবে আকাশ আংশিক মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৫ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৬ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন: দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ুদূষণে বছরে প্রাণ হারাচ্ছে ১০ লাখ মানুষ

  • ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের মধ্যে আছে বাংলাদেশও
  • অস্বাস্থ্যকর বায়ুতে শ্বাস নিচ্ছে কোটি কোটি মানুষ
  • ক্ষতি হচ্ছে জিডিপির ১০ শতাংশের সমপরিমাণ
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দক্ষিণ এশিয়ার গাঙ্গেয় সমভূমি ও হিমালয়ের পাদদেশ (আইজিপি-এইচএফ) অঞ্চলের প্রায় ১০০ কোটি মানুষ নিয়মিত অস্বাস্থ্যকর বায়ুতে শ্বাস নিচ্ছে। এতে বছরে এই অঞ্চলের প্রায় ১০ লাখ মানুষ অকালে প্রাণ হারাচ্ছে। বায়ুদূষণের ফলে অঞ্চলটির অর্থনীতিতে বছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১০ শতাংশের সমপরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে। এই দূষণের ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশও।

বিশ্বব্যাংকের ‘এ ব্রেথ অব চেঞ্জ: সলিউশনস ফর ক্লিনার এয়ার ইন দ্য ইন্দো-গেঞ্জেটিক প্লেইনস অ্যান্ড হিমালয়ান ফুটহিলস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। সংস্থাটির ঢাকা অফিস থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আইজিপি-এইচএফ অঞ্চলে বায়ুদূষণ এখনো অন্যতম বড় উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। সমন্বিত ও বাস্তবভিত্তিক কিছু পদক্ষেপ নিলে দূষণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব। এতে একই সঙ্গে জনস্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দুটোরই উন্নতি হবে।

গাঙ্গেয় সমভূমি ও হিমালয়ের পাদদেশ অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান ও ভুটানের অংশবিশেষ। প্রতিবেদনে বলা হয়, এ অঞ্চলের বায়ুদূষণের প্রধান পাঁচটি উৎস রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রান্না ও ঘর গরম করার কাজে লাকড়িজাতীয় কঠিন বস্তু ব্যবহার, শিল্পকারখানায় জীবাশ্ম জ্বালানি (তেল, গ্যাস, কয়লা) ও বায়োম্যাসের ফিল্টার ছাড়া অদক্ষ ব্যবহার, অনুন্নত প্রযুক্তির ইঞ্জিনের যানবাহন চালানো, কৃষকদের খেতের ফসলের অবশিষ্টাংশ পোড়ানো এবং রাসায়নিক সার ও গোবরের অদক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং গৃহস্থালি ও কারখানার বর্জ্য পোড়ানো।

দূষণ কমাতে কয়েকটি তুলনামূলকভাবে সহজে বাস্তবায়নযোগ্য কৌশলের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে। এগুলো হলো–বৈদ্যুতিক চুলায় রান্না, শিল্পকারখানার বয়লার, ফার্নেস ও ইটভাটার আধুনিকায়ন, নন-মোটরাইজড ও বৈদ্যুতিক পরিবহনব্যবস্থার প্রসার, কৃষিবর্জ্য ও পশুবর্জ্যের উন্নত ব্যবস্থাপনা এবং বর্জ্য পৃথক্‌করণ ও পুনর্ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া।

প্রতিবেদনে নির্মল বায়ু নিশ্চিত করার কৌশলকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ১. দূষণের উৎসেই নির্গমন কমানোর ব্যবস্থা। ২. স্বাস্থ্য ও শিক্ষাব্যবস্থা শক্তিশালী করে শিশু ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া। ৩. কার্যকর আইন, বাজারভিত্তিক প্রণোদনা ও আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তোলা।

বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ পরিবেশ অর্থনীতিবিদ মার্টিন হেগার বলেন, ‘নির্মল বায়ু নিশ্চিত করার সমাধানগুলো বাস্তবসম্মত ও কার্যকর। নীতিনির্ধারকদের জন্য এটি একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ দেয়। একই সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার পরিবার, কৃষক ও উদ্যোক্তাদের জন্য পরিচ্ছন্ন প্রযুক্তি ব্যবহারে আর্থিক ও অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক সুযোগ তৈরি করে।’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্মল বায়ু নিশ্চিত করতে ‘চারটি আই’ (ইংরেজি আদ্যক্ষর)—তথ্য, প্রণোদনা, প্রতিষ্ঠান এবং অবকাঠামোর ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। নির্ভরযোগ্য তথ্যভিত্তিক পরিকল্পনা, পরিচ্ছন্ন বিকল্পে বিনিয়োগে প্রণোদনা, কার্যকর প্রতিষ্ঠান এবং পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ও পরিবহন অবকাঠামো গড়ে তোলাই এই রূপান্তরের মূল চাবিকাঠি।

বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিবেশবিষয়ক প্র্যাকটিস ম্যানেজার অ্যান জিনেট গ্লাউবার বলেন, স্থানীয় থেকে আঞ্চলিক পর্যায় পর্যন্ত সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া নির্মল বায়ু অর্জন সম্ভব নয়। সরকারগুলো একসঙ্গে কাজ করলেই কেবল দূষণ কমানো, লাখো মানুষের জীবন রক্ষা এবং সবার জন্য নিরাপদ বায়ু নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকার বাতাস সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর, আজও দূষণে শীর্ষে দিল্লি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ০২
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বেশ কিছুদিন ধরে দিল্লির বাতাসের অবস্থা দুর্যোগপূর্ণ। আজ বৃহস্পতিবার দূষিত শহরের তালিকার শীর্ষে রয়েছে শহরটি। অন্যদিকে ঢাকার বায়ুমান আজ সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে সপ্তম স্থানে রয়েছে ঢাকা।

আইকিউএয়ারের সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী, ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ১৯০। যা নির্দেশ করে ঢাকার বাতাসের অবস্থা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর।

ঢাকার বেশ কিছু স্থানের বাতাসের অবস্থা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর থেকে খুব অস্বাস্থ্যকর। এর মধ্যে রয়েছে— কল্যাণপুর (২৬০), দক্ষিণ পল্লবী (২৫৬), বেজ এজওয়াটার আউটডোর (১৯৬), গোড়ান (১৯৬) ও বেচারাম দেউরি (১৯০)।

অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরেই দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে দিল্লি। শহরটির একিউআই স্কোর ৩১০। যা এই শহরের বাতাসকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে।

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর (২৭০, খুব অস্বাস্থ্যকর), তৃতীয় স্থানে বসনিয়া-হার্জেগোভিনার সারাজেভ (২২৭, খুব অস্বাস্থ্যকর), চতুর্থ স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের করাচি (২০১, খুব অস্বাস্থ্যকর) এবং পঞ্চম স্থানে রয়েছে মিসরের কায়রো (১৯৪, সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর)।

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশিমাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বাতাসের মূল ক্ষতিকারক উপাদান হলো ক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫। এটি এতই সূক্ষ্ম যে তা ফুসফুসে এমনকি রক্তপ্রবাহেও প্রবেশ করতে পারে।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বেড়েছে ঢাকার তাপমাত্রা, জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

পৌষ মাসের তৃতীয় দিন আজ। শীতের মৌসুম চলে এলেও রাজধানী ঢাকায় বাড়ছে তাপমাত্রা। আজ বৃহস্পতিবার সকালের আবহাওয়া বুলেটিনে দেখা যায়, গতকালের তুলনায় আজ সকালে তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল মঙ্গলবার ছিল ১৬ দশমিক ৬। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সকাল ৭টায় পরবর্তী ছয় ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। তবে আকাশ আংশিক মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৫ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৬ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত