ধর্ম ও জীবন ডেস্ক

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি সর্বাধিক জোর দেয় ইসলাম। ইসলামের মৌলিক ইবাদতগুলো পালন করতে পবিত্র হতে হয়। পাশাপাশি দৈহিক পরিচ্ছন্নতা অর্জনও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উদাসীন অপরিচ্ছন্ন জীবনযাপন ইসলামের শিক্ষা নয়। দৈহিক পরিচ্ছন্নতার যে শিষ্টাচারগুলো রয়েছে, সেগুলোকে হাদিসে নবী ইবরাহিম (আ.)-এর সুন্নত এবং মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হয়েছে।
হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, স্বভাবজাত কাজ ১০ টি। গোঁফ খাটো করা, দাড়ি লম্বা করা, মিসওয়াক করা, নাকে পানি দেওয়া, নখ কাটা, হাত ও পায়ের আঙুলের গিরাগুলো ধোয়া, বগলের পশম উপড়ে ফেলা, নাভির নিচের লোম মুণ্ডানো, এস্তেনজা করা এবং কুলি করা।’ (মিশকাত: পৃ.৪৪)
গোঁফ ও দাড়ির বিধান
হাদিসে গোঁফ খাটো রাখার এবং দাড়ি লম্বা রাখার আদেশ দেওয়া হয়েছে। ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা মুশরিকদের বিপরীত করো—গোঁফ খাটো করো এবং দাড়ি লম্বা করো।’ (মুয়াত্তা মালেক: ৯৪৭)
অন্য হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.) বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) দৈর্ঘ্যে-প্রস্থে সুন্দর করে দাড়ি রেখেছেন।’ (তিরমিজি: ২৭৬২)
সাহাবি ইবনে ওমর (রা.) গোঁফ এমনভাবে খাটো করতেন যে চামড়া দেখা যেত। তিনি দাড়ি ধরতেন এবং এক মুঠোর বেশি হলে হজ ও ওমরাহর সময় কেটে ফেলতেন। (বুখারি: ৫৮৯২)
মেসওয়াক করা
দাঁত পরিষ্কার রাখতে এবং মুখ দুর্গন্ধমুক্ত রাখতে মিসওয়াক করা উচিত। মহানবী (সা.) এ সুন্নত সব সময় পালন করতেন। এরশাদ হচ্ছে, ‘যদি আমার উম্মতের জন্য কষ্টের কারণ হবে বলে মনে না করতাম, তাহলে প্রতি নামাজে (অজুতে) মিসওয়াক আবশ্যক করে দিতাম।’ (বুখারি ও মুসলিমের সূত্রে মিশকাত: পৃ.৪৪)
মেসওয়াক করলে মুখ পরিচ্ছন্ন হয়, এতে আল্লাহ সন্তুষ্ট হন। মহানবী (সা.) বলেন, ‘মিসওয়াক মুখ পরিচ্ছন্ন করে এবং পালনকর্তাকে সন্তুষ্ট করে।’ (দারেমি ও নাসায়ির সূত্রে মিশকাত: পৃ.৪৪)
অজুর সময় ছাড়াও মহানবী (সা.) মিসওয়াক করতেন। আল-মিকদাদ ইবনে শুরাইহ থেকে তাঁর বাবার সূত্রে বর্ণিত, আমি আয়িশা (রা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, ‘মহানবী (সা.) ঘরে প্রবেশ করে প্রথম কোন কাজ করতেন?’ তিনি বলেন, মিসওয়াক দিয়ে দাঁত মাজতেন।’ (মুসলিম: ৩৭১)
সাধারণভাবে মিসওয়াক ব্যবহার করাই মহানবী (সা.)-এর সুন্নত। তবে কোনো কোনো আলেমের মতে, মিসওয়াকের পরিবর্তে প্রচলিত ব্রাশ ব্যবহার করলেও সুন্নত আদায় হবে। কারণ তাতে মিসওয়াকের আসল উদ্দেশ্য—দাঁত পরিষ্কার করা এবং মুখ দুর্গন্ধমুক্ত রাখার বিষয়টি অর্জিত হচ্ছে।
কুলি করা এবং নাকে পানি দেওয়া
অজুর সময় কুলি করা সুন্নত। ফরজ গোসলের জন্য গড়গড়া করে কুলি করা ফরজ। তবে রোজার সময় গড়গড়া করা যাবে না। কারণ এতে ভেতরে পানি প্রবেশের আশঙ্কা থাকে। মাইমুনা (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুল (সা.)-এর জন্য গোসলের পানি এনে একটি কাপড় দিয়ে পর্দা করলাম, তিনি পানি দিয়ে উভয় হাত ধৌত করলেন, এরপর বাঁ হাতে পানি নিয়ে গুপ্তাঙ্গ ধুয়ে মাটিতে হাত মাসেহ করে পানি দ্বারা হাত ধৌত করলেন। এরপর তিনি কুলি করলেন, নাকে পানি দিলেন এবং চেহারা ও হাত দুটো কনুই পর্যন্ত ধৌত করলেন। এরপর গোটা শরীরে পানি ঢাললেন, নাক সাফ করলেন এবং উভয় পা ধৌত করলেন। আমি তাঁর জন্য একটি কাপড় আনলে তিনি তা না নিয়ে হাত ঝাড়তে ঝাড়তে চলে গেলেন।’ (বুখারি ও মুসলিমের সূত্রে মিশকাত: পৃ.৪৮)
অজু করার সময় নাকে পানি দেওয়াও সুন্নত। ফরজ গোসলে নাকে পানি দেওয়া ফরজ। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন ঘুম থেকে জেগে অজু করে, তখন সে যেন তিনবার নাক পরিষ্কার করে। কেননা শয়তান নাকের ছিদ্রে রাতযাপন করে।’ (বুখারি ও মুসলিমের সূত্রে মিশকাত: পৃ.৪৫)
এস্তেনজার বিধান
প্রস্রাব ও পায়খানা করার পর মলদ্বার ও মূত্র দ্বার পরিষ্কার করা আবশ্যক। আর এ জন্য পানি ও ঢিলা উভয়ই ব্যবহার করা উত্তম। উভয়টি ব্যবহারের কারণেই কোরআনে কুফাবাসীর প্রশংসা করা হয়েছে। ঢিলার পরিবর্তে আধুনিক কালের টিস্যুও ব্যবহার করা যাবে। দুটির মধ্যে পানি দিয়ে এস্তেনজা করা উত্তম। আর ঢিলা বা টিস্যু ব্যবহার করা মুস্তাহাব। নাপাকি নির্গত হওয়ার স্থান অতিক্রম করে আশপাশে ছড়িয়ে গেলে পানি ব্যবহার করা ওয়াজিব।
হাদিসে এসেছে, মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন টয়লেটে যায়, তখন সে যেন তার সঙ্গে তিনটি পাথর নিয়ে যায়, যা দিয়ে সে পবিত্রতা অর্জন করবে এবং এটাই তার জন্য যথেষ্ট।’ (আবু দাউদ: ৪০)
অন্য হাদিসে আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) টয়লেটে যেতেন আর আমি ও আমার মতো আরেকটি ছেলে পানির পাত্র ও বর্শার মতো লাঠিসহ তাঁর জন্য পানি নিয়ে যেতাম। এই পানি দিয়ে তিনি শৌচকার্য সম্পন্ন করতেন।’ (বুখারি: ১৫১; মুসলিম: ২৭০ ও ২৭১)
অবাঞ্ছিত লোম পরিষ্কার করা
রাসুলুল্লাহ (সা.) বগলের পশম উপড়ে ফেলা এবং নাভির নিচের পশম মুণ্ডানোর নির্দেশনা দিয়েছেন। কেননা বগলের পশম সহজে ওপড়ানো যায়। পক্ষান্তরে নাভির নিচের পশম সহজে ওপড়ানো যায় না। এ বিধান পরিচ্ছন্নতার জন্য। যদি কেউ এর বিপরীত করে—অর্থাৎ বগলের পশম মুণ্ডায় এবং নাভির নিচের পশম উপড়ে ফেলে, এতেও সুন্নত আদায় হয়ে যাবে।
৪০ দিনের মধ্যে একবার হলেও অবাঞ্ছিত লোম পরিষ্কার করার কথা বলা হয়েছে। আনাস (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের গোঁফ খাটো করার, নখ কাটার, নাভির নিচের পশম মুণ্ডানোর এবং বগলের পশম ওপড়ানোর মেয়াদ নির্ধারণ করে দিয়েছেন, তা হলো ঊর্ধ্বে ৪০ দিন। (মুসলিম: ২৫৮; আবু দাউদ; ৪২০০)
কেউ অবহেলা করে ৪০ দিনের বেশি সময় অবাঞ্ছিত লোম পরিষ্কার করা থেকে বিরত থাকলে গুনাহগার হবে। তবে তা পরিষ্কার না করার কারণে শরীর নাপাক হয়ে যাবে না। বরং নামাজ, রোজা, তেলাওয়াত ইত্যাদি আদায় করা তখনো বৈধ হবে। কারণ এসব লোম শরিয়তের দৃষ্টিতে নাপাক নয়।
নখ কাটার বিধান
নখ কাটা সুন্নত। রাসুলুল্লাহ (সা.) জুমার নামাজে যাওয়ার আগে গোঁফ ও নখ কাটতেন। (আল-মাজমাহ: ২৫ / ১৮০)
রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা তোমাদের নখ কাটো, কর্তিত অংশ পুঁতে রাখো, হাত ও পায়ের গিরাগুলো ধৌত করো, মুখে লেগে থাকা খাদ্য দূর করো এবং মিসওয়াক করো। দুর্গন্ধ অবস্থায় আমার কাছে এসো না।’ (নাওয়াদেরুল উসুল: পৃ.১১৫)
তবে নখ কাটার কোনো সুনির্দিষ্ট নিয়ম হাদিসে বর্ণিত নেই। এ বিষয়ে প্রচলিত যে নিয়ম রয়েছে—ডান হাতের শাহাদাত আঙ্গুল থেকে শুরু করে কনিষ্ঠ আঙ্গুলে শেষ করা—এ ধরনের বিষয় পরবর্তী মুহাদ্দিস ও বুজর্গদের তৈরি। সুতরাং তাকে সুন্নত বলা যায় না। বড়জোর পরবর্তী বুজর্গদের বাতলানো পদ্ধতি ও নিয়ম বলা যায়। (আল-মাকাসিদ লিস-সাখাবি: পৃ.৩১৩ ও ৪২১; আল-আসরার লি-মুল্লা আলি কারি: পৃ.১৭০ ও ২৪১)
চুল রাখার বিধান
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চুল সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, কান পর্যন্ত চুল রাখতেন। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুল (সা.)-এর চুল মোবারক কানের অর্ধেক পর্যন্ত লম্বা ছিল।’ হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আমি ও মহানবী (সা.) একই পাত্রে গোসল করতাম। তাঁর চুলগুলো কানের লতি পর্যন্ত লম্বা থেকে খানিক লম্বা এবং কাঁধ পর্যন্ত লম্বা চুল থেকে খানিক খাটো ছিল। হজরত উম্মেহানি (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুল (সা.)-এর চুলকে চার ঝুঁটিবিশিষ্ট দেখেছি।’ (শামায়েলে তিরমিজি: ২৩-৩০)
হজ বা ওমরাহ ছাড়া মহানবী (সা.) কখনো মাথার চুল মুণ্ডন করেছেন বলে জানা যায় না। (যাদুল মাআদ: ১ / ১৬৭)
তাই হজ-ওমরাহ ছাড়া মাথা মুণ্ডন করা অনেকেই মাকরুহ বলেছেন। সাহাবিরা চুল ছোট রাখতেন, তবে মুণ্ডন করতেন না। রাসুল (সা.) বলেন, ‘হজ বা ওমরাহ ছাড়া মাথার চুল ফেলা যাবে না।’ (আল-মুজামুল আওসাত: ৯ / ১৮০)
তবে ছোট করে চুল রাখাও জায়েজ। মাথার সব অংশে তা সমান হতে হবে। কোথাও বড়, আবার কোথাও ছোট—এভাবে কাটা ইসলামসম্মত নয়। আর লম্বা চুল রাখলে তা নিয়মিত আঁচড়ে পরিপাটি করে রাখতে হবে। মহানবী (সা.) এমনটি নির্দেশনা দিয়েছেন। (নাসায়ি: ৮ / ১৮৪)
হাদিসে আরও এসেছে, চুলে তেল দেওয়া, সুগন্ধি মিশিয়ে তেল দেওয়া, পুরুষের জন্য আঁচড়িয়ে পরিপাটি রাখা, মাঝে সিঁথি করাও সুন্নত। (মুয়াত্তা মালিক: ২ / ৯৪৯)
চুল, নখ ও লোম কাটার নির্ধারিত সময় নেই। সপ্তাহের বিশেষ দিনে কাটতে হবে, অমুক দিন কাটা যাবে না, রাতে কাটা যাবে না—এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এগুলো সমাজের প্রচলিত সংস্কার।
আল্লাহ আমাদের দৈহিক পরিচ্ছন্নতা অর্জনে ইসলাম নির্দেশিত শিষ্টাচারগুলো যথাযথভাবে পালন করার তাওফিক দিন।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি সর্বাধিক জোর দেয় ইসলাম। ইসলামের মৌলিক ইবাদতগুলো পালন করতে পবিত্র হতে হয়। পাশাপাশি দৈহিক পরিচ্ছন্নতা অর্জনও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উদাসীন অপরিচ্ছন্ন জীবনযাপন ইসলামের শিক্ষা নয়। দৈহিক পরিচ্ছন্নতার যে শিষ্টাচারগুলো রয়েছে, সেগুলোকে হাদিসে নবী ইবরাহিম (আ.)-এর সুন্নত এবং মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হয়েছে।
হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, স্বভাবজাত কাজ ১০ টি। গোঁফ খাটো করা, দাড়ি লম্বা করা, মিসওয়াক করা, নাকে পানি দেওয়া, নখ কাটা, হাত ও পায়ের আঙুলের গিরাগুলো ধোয়া, বগলের পশম উপড়ে ফেলা, নাভির নিচের লোম মুণ্ডানো, এস্তেনজা করা এবং কুলি করা।’ (মিশকাত: পৃ.৪৪)
গোঁফ ও দাড়ির বিধান
হাদিসে গোঁফ খাটো রাখার এবং দাড়ি লম্বা রাখার আদেশ দেওয়া হয়েছে। ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা মুশরিকদের বিপরীত করো—গোঁফ খাটো করো এবং দাড়ি লম্বা করো।’ (মুয়াত্তা মালেক: ৯৪৭)
অন্য হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.) বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) দৈর্ঘ্যে-প্রস্থে সুন্দর করে দাড়ি রেখেছেন।’ (তিরমিজি: ২৭৬২)
সাহাবি ইবনে ওমর (রা.) গোঁফ এমনভাবে খাটো করতেন যে চামড়া দেখা যেত। তিনি দাড়ি ধরতেন এবং এক মুঠোর বেশি হলে হজ ও ওমরাহর সময় কেটে ফেলতেন। (বুখারি: ৫৮৯২)
মেসওয়াক করা
দাঁত পরিষ্কার রাখতে এবং মুখ দুর্গন্ধমুক্ত রাখতে মিসওয়াক করা উচিত। মহানবী (সা.) এ সুন্নত সব সময় পালন করতেন। এরশাদ হচ্ছে, ‘যদি আমার উম্মতের জন্য কষ্টের কারণ হবে বলে মনে না করতাম, তাহলে প্রতি নামাজে (অজুতে) মিসওয়াক আবশ্যক করে দিতাম।’ (বুখারি ও মুসলিমের সূত্রে মিশকাত: পৃ.৪৪)
মেসওয়াক করলে মুখ পরিচ্ছন্ন হয়, এতে আল্লাহ সন্তুষ্ট হন। মহানবী (সা.) বলেন, ‘মিসওয়াক মুখ পরিচ্ছন্ন করে এবং পালনকর্তাকে সন্তুষ্ট করে।’ (দারেমি ও নাসায়ির সূত্রে মিশকাত: পৃ.৪৪)
অজুর সময় ছাড়াও মহানবী (সা.) মিসওয়াক করতেন। আল-মিকদাদ ইবনে শুরাইহ থেকে তাঁর বাবার সূত্রে বর্ণিত, আমি আয়িশা (রা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, ‘মহানবী (সা.) ঘরে প্রবেশ করে প্রথম কোন কাজ করতেন?’ তিনি বলেন, মিসওয়াক দিয়ে দাঁত মাজতেন।’ (মুসলিম: ৩৭১)
সাধারণভাবে মিসওয়াক ব্যবহার করাই মহানবী (সা.)-এর সুন্নত। তবে কোনো কোনো আলেমের মতে, মিসওয়াকের পরিবর্তে প্রচলিত ব্রাশ ব্যবহার করলেও সুন্নত আদায় হবে। কারণ তাতে মিসওয়াকের আসল উদ্দেশ্য—দাঁত পরিষ্কার করা এবং মুখ দুর্গন্ধমুক্ত রাখার বিষয়টি অর্জিত হচ্ছে।
কুলি করা এবং নাকে পানি দেওয়া
অজুর সময় কুলি করা সুন্নত। ফরজ গোসলের জন্য গড়গড়া করে কুলি করা ফরজ। তবে রোজার সময় গড়গড়া করা যাবে না। কারণ এতে ভেতরে পানি প্রবেশের আশঙ্কা থাকে। মাইমুনা (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুল (সা.)-এর জন্য গোসলের পানি এনে একটি কাপড় দিয়ে পর্দা করলাম, তিনি পানি দিয়ে উভয় হাত ধৌত করলেন, এরপর বাঁ হাতে পানি নিয়ে গুপ্তাঙ্গ ধুয়ে মাটিতে হাত মাসেহ করে পানি দ্বারা হাত ধৌত করলেন। এরপর তিনি কুলি করলেন, নাকে পানি দিলেন এবং চেহারা ও হাত দুটো কনুই পর্যন্ত ধৌত করলেন। এরপর গোটা শরীরে পানি ঢাললেন, নাক সাফ করলেন এবং উভয় পা ধৌত করলেন। আমি তাঁর জন্য একটি কাপড় আনলে তিনি তা না নিয়ে হাত ঝাড়তে ঝাড়তে চলে গেলেন।’ (বুখারি ও মুসলিমের সূত্রে মিশকাত: পৃ.৪৮)
অজু করার সময় নাকে পানি দেওয়াও সুন্নত। ফরজ গোসলে নাকে পানি দেওয়া ফরজ। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন ঘুম থেকে জেগে অজু করে, তখন সে যেন তিনবার নাক পরিষ্কার করে। কেননা শয়তান নাকের ছিদ্রে রাতযাপন করে।’ (বুখারি ও মুসলিমের সূত্রে মিশকাত: পৃ.৪৫)
এস্তেনজার বিধান
প্রস্রাব ও পায়খানা করার পর মলদ্বার ও মূত্র দ্বার পরিষ্কার করা আবশ্যক। আর এ জন্য পানি ও ঢিলা উভয়ই ব্যবহার করা উত্তম। উভয়টি ব্যবহারের কারণেই কোরআনে কুফাবাসীর প্রশংসা করা হয়েছে। ঢিলার পরিবর্তে আধুনিক কালের টিস্যুও ব্যবহার করা যাবে। দুটির মধ্যে পানি দিয়ে এস্তেনজা করা উত্তম। আর ঢিলা বা টিস্যু ব্যবহার করা মুস্তাহাব। নাপাকি নির্গত হওয়ার স্থান অতিক্রম করে আশপাশে ছড়িয়ে গেলে পানি ব্যবহার করা ওয়াজিব।
হাদিসে এসেছে, মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন টয়লেটে যায়, তখন সে যেন তার সঙ্গে তিনটি পাথর নিয়ে যায়, যা দিয়ে সে পবিত্রতা অর্জন করবে এবং এটাই তার জন্য যথেষ্ট।’ (আবু দাউদ: ৪০)
অন্য হাদিসে আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) টয়লেটে যেতেন আর আমি ও আমার মতো আরেকটি ছেলে পানির পাত্র ও বর্শার মতো লাঠিসহ তাঁর জন্য পানি নিয়ে যেতাম। এই পানি দিয়ে তিনি শৌচকার্য সম্পন্ন করতেন।’ (বুখারি: ১৫১; মুসলিম: ২৭০ ও ২৭১)
অবাঞ্ছিত লোম পরিষ্কার করা
রাসুলুল্লাহ (সা.) বগলের পশম উপড়ে ফেলা এবং নাভির নিচের পশম মুণ্ডানোর নির্দেশনা দিয়েছেন। কেননা বগলের পশম সহজে ওপড়ানো যায়। পক্ষান্তরে নাভির নিচের পশম সহজে ওপড়ানো যায় না। এ বিধান পরিচ্ছন্নতার জন্য। যদি কেউ এর বিপরীত করে—অর্থাৎ বগলের পশম মুণ্ডায় এবং নাভির নিচের পশম উপড়ে ফেলে, এতেও সুন্নত আদায় হয়ে যাবে।
৪০ দিনের মধ্যে একবার হলেও অবাঞ্ছিত লোম পরিষ্কার করার কথা বলা হয়েছে। আনাস (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের গোঁফ খাটো করার, নখ কাটার, নাভির নিচের পশম মুণ্ডানোর এবং বগলের পশম ওপড়ানোর মেয়াদ নির্ধারণ করে দিয়েছেন, তা হলো ঊর্ধ্বে ৪০ দিন। (মুসলিম: ২৫৮; আবু দাউদ; ৪২০০)
কেউ অবহেলা করে ৪০ দিনের বেশি সময় অবাঞ্ছিত লোম পরিষ্কার করা থেকে বিরত থাকলে গুনাহগার হবে। তবে তা পরিষ্কার না করার কারণে শরীর নাপাক হয়ে যাবে না। বরং নামাজ, রোজা, তেলাওয়াত ইত্যাদি আদায় করা তখনো বৈধ হবে। কারণ এসব লোম শরিয়তের দৃষ্টিতে নাপাক নয়।
নখ কাটার বিধান
নখ কাটা সুন্নত। রাসুলুল্লাহ (সা.) জুমার নামাজে যাওয়ার আগে গোঁফ ও নখ কাটতেন। (আল-মাজমাহ: ২৫ / ১৮০)
রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা তোমাদের নখ কাটো, কর্তিত অংশ পুঁতে রাখো, হাত ও পায়ের গিরাগুলো ধৌত করো, মুখে লেগে থাকা খাদ্য দূর করো এবং মিসওয়াক করো। দুর্গন্ধ অবস্থায় আমার কাছে এসো না।’ (নাওয়াদেরুল উসুল: পৃ.১১৫)
তবে নখ কাটার কোনো সুনির্দিষ্ট নিয়ম হাদিসে বর্ণিত নেই। এ বিষয়ে প্রচলিত যে নিয়ম রয়েছে—ডান হাতের শাহাদাত আঙ্গুল থেকে শুরু করে কনিষ্ঠ আঙ্গুলে শেষ করা—এ ধরনের বিষয় পরবর্তী মুহাদ্দিস ও বুজর্গদের তৈরি। সুতরাং তাকে সুন্নত বলা যায় না। বড়জোর পরবর্তী বুজর্গদের বাতলানো পদ্ধতি ও নিয়ম বলা যায়। (আল-মাকাসিদ লিস-সাখাবি: পৃ.৩১৩ ও ৪২১; আল-আসরার লি-মুল্লা আলি কারি: পৃ.১৭০ ও ২৪১)
চুল রাখার বিধান
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চুল সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, কান পর্যন্ত চুল রাখতেন। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুল (সা.)-এর চুল মোবারক কানের অর্ধেক পর্যন্ত লম্বা ছিল।’ হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আমি ও মহানবী (সা.) একই পাত্রে গোসল করতাম। তাঁর চুলগুলো কানের লতি পর্যন্ত লম্বা থেকে খানিক লম্বা এবং কাঁধ পর্যন্ত লম্বা চুল থেকে খানিক খাটো ছিল। হজরত উম্মেহানি (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুল (সা.)-এর চুলকে চার ঝুঁটিবিশিষ্ট দেখেছি।’ (শামায়েলে তিরমিজি: ২৩-৩০)
হজ বা ওমরাহ ছাড়া মহানবী (সা.) কখনো মাথার চুল মুণ্ডন করেছেন বলে জানা যায় না। (যাদুল মাআদ: ১ / ১৬৭)
তাই হজ-ওমরাহ ছাড়া মাথা মুণ্ডন করা অনেকেই মাকরুহ বলেছেন। সাহাবিরা চুল ছোট রাখতেন, তবে মুণ্ডন করতেন না। রাসুল (সা.) বলেন, ‘হজ বা ওমরাহ ছাড়া মাথার চুল ফেলা যাবে না।’ (আল-মুজামুল আওসাত: ৯ / ১৮০)
তবে ছোট করে চুল রাখাও জায়েজ। মাথার সব অংশে তা সমান হতে হবে। কোথাও বড়, আবার কোথাও ছোট—এভাবে কাটা ইসলামসম্মত নয়। আর লম্বা চুল রাখলে তা নিয়মিত আঁচড়ে পরিপাটি করে রাখতে হবে। মহানবী (সা.) এমনটি নির্দেশনা দিয়েছেন। (নাসায়ি: ৮ / ১৮৪)
হাদিসে আরও এসেছে, চুলে তেল দেওয়া, সুগন্ধি মিশিয়ে তেল দেওয়া, পুরুষের জন্য আঁচড়িয়ে পরিপাটি রাখা, মাঝে সিঁথি করাও সুন্নত। (মুয়াত্তা মালিক: ২ / ৯৪৯)
চুল, নখ ও লোম কাটার নির্ধারিত সময় নেই। সপ্তাহের বিশেষ দিনে কাটতে হবে, অমুক দিন কাটা যাবে না, রাতে কাটা যাবে না—এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এগুলো সমাজের প্রচলিত সংস্কার।
আল্লাহ আমাদের দৈহিক পরিচ্ছন্নতা অর্জনে ইসলাম নির্দেশিত শিষ্টাচারগুলো যথাযথভাবে পালন করার তাওফিক দিন।
ধর্ম ও জীবন ডেস্ক

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি সর্বাধিক জোর দেয় ইসলাম। ইসলামের মৌলিক ইবাদতগুলো পালন করতে পবিত্র হতে হয়। পাশাপাশি দৈহিক পরিচ্ছন্নতা অর্জনও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উদাসীন অপরিচ্ছন্ন জীবনযাপন ইসলামের শিক্ষা নয়। দৈহিক পরিচ্ছন্নতার যে শিষ্টাচারগুলো রয়েছে, সেগুলোকে হাদিসে নবী ইবরাহিম (আ.)-এর সুন্নত এবং মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হয়েছে।
হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, স্বভাবজাত কাজ ১০ টি। গোঁফ খাটো করা, দাড়ি লম্বা করা, মিসওয়াক করা, নাকে পানি দেওয়া, নখ কাটা, হাত ও পায়ের আঙুলের গিরাগুলো ধোয়া, বগলের পশম উপড়ে ফেলা, নাভির নিচের লোম মুণ্ডানো, এস্তেনজা করা এবং কুলি করা।’ (মিশকাত: পৃ.৪৪)
গোঁফ ও দাড়ির বিধান
হাদিসে গোঁফ খাটো রাখার এবং দাড়ি লম্বা রাখার আদেশ দেওয়া হয়েছে। ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা মুশরিকদের বিপরীত করো—গোঁফ খাটো করো এবং দাড়ি লম্বা করো।’ (মুয়াত্তা মালেক: ৯৪৭)
অন্য হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.) বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) দৈর্ঘ্যে-প্রস্থে সুন্দর করে দাড়ি রেখেছেন।’ (তিরমিজি: ২৭৬২)
সাহাবি ইবনে ওমর (রা.) গোঁফ এমনভাবে খাটো করতেন যে চামড়া দেখা যেত। তিনি দাড়ি ধরতেন এবং এক মুঠোর বেশি হলে হজ ও ওমরাহর সময় কেটে ফেলতেন। (বুখারি: ৫৮৯২)
মেসওয়াক করা
দাঁত পরিষ্কার রাখতে এবং মুখ দুর্গন্ধমুক্ত রাখতে মিসওয়াক করা উচিত। মহানবী (সা.) এ সুন্নত সব সময় পালন করতেন। এরশাদ হচ্ছে, ‘যদি আমার উম্মতের জন্য কষ্টের কারণ হবে বলে মনে না করতাম, তাহলে প্রতি নামাজে (অজুতে) মিসওয়াক আবশ্যক করে দিতাম।’ (বুখারি ও মুসলিমের সূত্রে মিশকাত: পৃ.৪৪)
মেসওয়াক করলে মুখ পরিচ্ছন্ন হয়, এতে আল্লাহ সন্তুষ্ট হন। মহানবী (সা.) বলেন, ‘মিসওয়াক মুখ পরিচ্ছন্ন করে এবং পালনকর্তাকে সন্তুষ্ট করে।’ (দারেমি ও নাসায়ির সূত্রে মিশকাত: পৃ.৪৪)
অজুর সময় ছাড়াও মহানবী (সা.) মিসওয়াক করতেন। আল-মিকদাদ ইবনে শুরাইহ থেকে তাঁর বাবার সূত্রে বর্ণিত, আমি আয়িশা (রা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, ‘মহানবী (সা.) ঘরে প্রবেশ করে প্রথম কোন কাজ করতেন?’ তিনি বলেন, মিসওয়াক দিয়ে দাঁত মাজতেন।’ (মুসলিম: ৩৭১)
সাধারণভাবে মিসওয়াক ব্যবহার করাই মহানবী (সা.)-এর সুন্নত। তবে কোনো কোনো আলেমের মতে, মিসওয়াকের পরিবর্তে প্রচলিত ব্রাশ ব্যবহার করলেও সুন্নত আদায় হবে। কারণ তাতে মিসওয়াকের আসল উদ্দেশ্য—দাঁত পরিষ্কার করা এবং মুখ দুর্গন্ধমুক্ত রাখার বিষয়টি অর্জিত হচ্ছে।
কুলি করা এবং নাকে পানি দেওয়া
অজুর সময় কুলি করা সুন্নত। ফরজ গোসলের জন্য গড়গড়া করে কুলি করা ফরজ। তবে রোজার সময় গড়গড়া করা যাবে না। কারণ এতে ভেতরে পানি প্রবেশের আশঙ্কা থাকে। মাইমুনা (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুল (সা.)-এর জন্য গোসলের পানি এনে একটি কাপড় দিয়ে পর্দা করলাম, তিনি পানি দিয়ে উভয় হাত ধৌত করলেন, এরপর বাঁ হাতে পানি নিয়ে গুপ্তাঙ্গ ধুয়ে মাটিতে হাত মাসেহ করে পানি দ্বারা হাত ধৌত করলেন। এরপর তিনি কুলি করলেন, নাকে পানি দিলেন এবং চেহারা ও হাত দুটো কনুই পর্যন্ত ধৌত করলেন। এরপর গোটা শরীরে পানি ঢাললেন, নাক সাফ করলেন এবং উভয় পা ধৌত করলেন। আমি তাঁর জন্য একটি কাপড় আনলে তিনি তা না নিয়ে হাত ঝাড়তে ঝাড়তে চলে গেলেন।’ (বুখারি ও মুসলিমের সূত্রে মিশকাত: পৃ.৪৮)
অজু করার সময় নাকে পানি দেওয়াও সুন্নত। ফরজ গোসলে নাকে পানি দেওয়া ফরজ। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন ঘুম থেকে জেগে অজু করে, তখন সে যেন তিনবার নাক পরিষ্কার করে। কেননা শয়তান নাকের ছিদ্রে রাতযাপন করে।’ (বুখারি ও মুসলিমের সূত্রে মিশকাত: পৃ.৪৫)
এস্তেনজার বিধান
প্রস্রাব ও পায়খানা করার পর মলদ্বার ও মূত্র দ্বার পরিষ্কার করা আবশ্যক। আর এ জন্য পানি ও ঢিলা উভয়ই ব্যবহার করা উত্তম। উভয়টি ব্যবহারের কারণেই কোরআনে কুফাবাসীর প্রশংসা করা হয়েছে। ঢিলার পরিবর্তে আধুনিক কালের টিস্যুও ব্যবহার করা যাবে। দুটির মধ্যে পানি দিয়ে এস্তেনজা করা উত্তম। আর ঢিলা বা টিস্যু ব্যবহার করা মুস্তাহাব। নাপাকি নির্গত হওয়ার স্থান অতিক্রম করে আশপাশে ছড়িয়ে গেলে পানি ব্যবহার করা ওয়াজিব।
হাদিসে এসেছে, মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন টয়লেটে যায়, তখন সে যেন তার সঙ্গে তিনটি পাথর নিয়ে যায়, যা দিয়ে সে পবিত্রতা অর্জন করবে এবং এটাই তার জন্য যথেষ্ট।’ (আবু দাউদ: ৪০)
অন্য হাদিসে আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) টয়লেটে যেতেন আর আমি ও আমার মতো আরেকটি ছেলে পানির পাত্র ও বর্শার মতো লাঠিসহ তাঁর জন্য পানি নিয়ে যেতাম। এই পানি দিয়ে তিনি শৌচকার্য সম্পন্ন করতেন।’ (বুখারি: ১৫১; মুসলিম: ২৭০ ও ২৭১)
অবাঞ্ছিত লোম পরিষ্কার করা
রাসুলুল্লাহ (সা.) বগলের পশম উপড়ে ফেলা এবং নাভির নিচের পশম মুণ্ডানোর নির্দেশনা দিয়েছেন। কেননা বগলের পশম সহজে ওপড়ানো যায়। পক্ষান্তরে নাভির নিচের পশম সহজে ওপড়ানো যায় না। এ বিধান পরিচ্ছন্নতার জন্য। যদি কেউ এর বিপরীত করে—অর্থাৎ বগলের পশম মুণ্ডায় এবং নাভির নিচের পশম উপড়ে ফেলে, এতেও সুন্নত আদায় হয়ে যাবে।
৪০ দিনের মধ্যে একবার হলেও অবাঞ্ছিত লোম পরিষ্কার করার কথা বলা হয়েছে। আনাস (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের গোঁফ খাটো করার, নখ কাটার, নাভির নিচের পশম মুণ্ডানোর এবং বগলের পশম ওপড়ানোর মেয়াদ নির্ধারণ করে দিয়েছেন, তা হলো ঊর্ধ্বে ৪০ দিন। (মুসলিম: ২৫৮; আবু দাউদ; ৪২০০)
কেউ অবহেলা করে ৪০ দিনের বেশি সময় অবাঞ্ছিত লোম পরিষ্কার করা থেকে বিরত থাকলে গুনাহগার হবে। তবে তা পরিষ্কার না করার কারণে শরীর নাপাক হয়ে যাবে না। বরং নামাজ, রোজা, তেলাওয়াত ইত্যাদি আদায় করা তখনো বৈধ হবে। কারণ এসব লোম শরিয়তের দৃষ্টিতে নাপাক নয়।
নখ কাটার বিধান
নখ কাটা সুন্নত। রাসুলুল্লাহ (সা.) জুমার নামাজে যাওয়ার আগে গোঁফ ও নখ কাটতেন। (আল-মাজমাহ: ২৫ / ১৮০)
রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা তোমাদের নখ কাটো, কর্তিত অংশ পুঁতে রাখো, হাত ও পায়ের গিরাগুলো ধৌত করো, মুখে লেগে থাকা খাদ্য দূর করো এবং মিসওয়াক করো। দুর্গন্ধ অবস্থায় আমার কাছে এসো না।’ (নাওয়াদেরুল উসুল: পৃ.১১৫)
তবে নখ কাটার কোনো সুনির্দিষ্ট নিয়ম হাদিসে বর্ণিত নেই। এ বিষয়ে প্রচলিত যে নিয়ম রয়েছে—ডান হাতের শাহাদাত আঙ্গুল থেকে শুরু করে কনিষ্ঠ আঙ্গুলে শেষ করা—এ ধরনের বিষয় পরবর্তী মুহাদ্দিস ও বুজর্গদের তৈরি। সুতরাং তাকে সুন্নত বলা যায় না। বড়জোর পরবর্তী বুজর্গদের বাতলানো পদ্ধতি ও নিয়ম বলা যায়। (আল-মাকাসিদ লিস-সাখাবি: পৃ.৩১৩ ও ৪২১; আল-আসরার লি-মুল্লা আলি কারি: পৃ.১৭০ ও ২৪১)
চুল রাখার বিধান
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চুল সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, কান পর্যন্ত চুল রাখতেন। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুল (সা.)-এর চুল মোবারক কানের অর্ধেক পর্যন্ত লম্বা ছিল।’ হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আমি ও মহানবী (সা.) একই পাত্রে গোসল করতাম। তাঁর চুলগুলো কানের লতি পর্যন্ত লম্বা থেকে খানিক লম্বা এবং কাঁধ পর্যন্ত লম্বা চুল থেকে খানিক খাটো ছিল। হজরত উম্মেহানি (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুল (সা.)-এর চুলকে চার ঝুঁটিবিশিষ্ট দেখেছি।’ (শামায়েলে তিরমিজি: ২৩-৩০)
হজ বা ওমরাহ ছাড়া মহানবী (সা.) কখনো মাথার চুল মুণ্ডন করেছেন বলে জানা যায় না। (যাদুল মাআদ: ১ / ১৬৭)
তাই হজ-ওমরাহ ছাড়া মাথা মুণ্ডন করা অনেকেই মাকরুহ বলেছেন। সাহাবিরা চুল ছোট রাখতেন, তবে মুণ্ডন করতেন না। রাসুল (সা.) বলেন, ‘হজ বা ওমরাহ ছাড়া মাথার চুল ফেলা যাবে না।’ (আল-মুজামুল আওসাত: ৯ / ১৮০)
তবে ছোট করে চুল রাখাও জায়েজ। মাথার সব অংশে তা সমান হতে হবে। কোথাও বড়, আবার কোথাও ছোট—এভাবে কাটা ইসলামসম্মত নয়। আর লম্বা চুল রাখলে তা নিয়মিত আঁচড়ে পরিপাটি করে রাখতে হবে। মহানবী (সা.) এমনটি নির্দেশনা দিয়েছেন। (নাসায়ি: ৮ / ১৮৪)
হাদিসে আরও এসেছে, চুলে তেল দেওয়া, সুগন্ধি মিশিয়ে তেল দেওয়া, পুরুষের জন্য আঁচড়িয়ে পরিপাটি রাখা, মাঝে সিঁথি করাও সুন্নত। (মুয়াত্তা মালিক: ২ / ৯৪৯)
চুল, নখ ও লোম কাটার নির্ধারিত সময় নেই। সপ্তাহের বিশেষ দিনে কাটতে হবে, অমুক দিন কাটা যাবে না, রাতে কাটা যাবে না—এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এগুলো সমাজের প্রচলিত সংস্কার।
আল্লাহ আমাদের দৈহিক পরিচ্ছন্নতা অর্জনে ইসলাম নির্দেশিত শিষ্টাচারগুলো যথাযথভাবে পালন করার তাওফিক দিন।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি সর্বাধিক জোর দেয় ইসলাম। ইসলামের মৌলিক ইবাদতগুলো পালন করতে পবিত্র হতে হয়। পাশাপাশি দৈহিক পরিচ্ছন্নতা অর্জনও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উদাসীন অপরিচ্ছন্ন জীবনযাপন ইসলামের শিক্ষা নয়। দৈহিক পরিচ্ছন্নতার যে শিষ্টাচারগুলো রয়েছে, সেগুলোকে হাদিসে নবী ইবরাহিম (আ.)-এর সুন্নত এবং মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হয়েছে।
হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, স্বভাবজাত কাজ ১০ টি। গোঁফ খাটো করা, দাড়ি লম্বা করা, মিসওয়াক করা, নাকে পানি দেওয়া, নখ কাটা, হাত ও পায়ের আঙুলের গিরাগুলো ধোয়া, বগলের পশম উপড়ে ফেলা, নাভির নিচের লোম মুণ্ডানো, এস্তেনজা করা এবং কুলি করা।’ (মিশকাত: পৃ.৪৪)
গোঁফ ও দাড়ির বিধান
হাদিসে গোঁফ খাটো রাখার এবং দাড়ি লম্বা রাখার আদেশ দেওয়া হয়েছে। ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা মুশরিকদের বিপরীত করো—গোঁফ খাটো করো এবং দাড়ি লম্বা করো।’ (মুয়াত্তা মালেক: ৯৪৭)
অন্য হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.) বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) দৈর্ঘ্যে-প্রস্থে সুন্দর করে দাড়ি রেখেছেন।’ (তিরমিজি: ২৭৬২)
সাহাবি ইবনে ওমর (রা.) গোঁফ এমনভাবে খাটো করতেন যে চামড়া দেখা যেত। তিনি দাড়ি ধরতেন এবং এক মুঠোর বেশি হলে হজ ও ওমরাহর সময় কেটে ফেলতেন। (বুখারি: ৫৮৯২)
মেসওয়াক করা
দাঁত পরিষ্কার রাখতে এবং মুখ দুর্গন্ধমুক্ত রাখতে মিসওয়াক করা উচিত। মহানবী (সা.) এ সুন্নত সব সময় পালন করতেন। এরশাদ হচ্ছে, ‘যদি আমার উম্মতের জন্য কষ্টের কারণ হবে বলে মনে না করতাম, তাহলে প্রতি নামাজে (অজুতে) মিসওয়াক আবশ্যক করে দিতাম।’ (বুখারি ও মুসলিমের সূত্রে মিশকাত: পৃ.৪৪)
মেসওয়াক করলে মুখ পরিচ্ছন্ন হয়, এতে আল্লাহ সন্তুষ্ট হন। মহানবী (সা.) বলেন, ‘মিসওয়াক মুখ পরিচ্ছন্ন করে এবং পালনকর্তাকে সন্তুষ্ট করে।’ (দারেমি ও নাসায়ির সূত্রে মিশকাত: পৃ.৪৪)
অজুর সময় ছাড়াও মহানবী (সা.) মিসওয়াক করতেন। আল-মিকদাদ ইবনে শুরাইহ থেকে তাঁর বাবার সূত্রে বর্ণিত, আমি আয়িশা (রা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, ‘মহানবী (সা.) ঘরে প্রবেশ করে প্রথম কোন কাজ করতেন?’ তিনি বলেন, মিসওয়াক দিয়ে দাঁত মাজতেন।’ (মুসলিম: ৩৭১)
সাধারণভাবে মিসওয়াক ব্যবহার করাই মহানবী (সা.)-এর সুন্নত। তবে কোনো কোনো আলেমের মতে, মিসওয়াকের পরিবর্তে প্রচলিত ব্রাশ ব্যবহার করলেও সুন্নত আদায় হবে। কারণ তাতে মিসওয়াকের আসল উদ্দেশ্য—দাঁত পরিষ্কার করা এবং মুখ দুর্গন্ধমুক্ত রাখার বিষয়টি অর্জিত হচ্ছে।
কুলি করা এবং নাকে পানি দেওয়া
অজুর সময় কুলি করা সুন্নত। ফরজ গোসলের জন্য গড়গড়া করে কুলি করা ফরজ। তবে রোজার সময় গড়গড়া করা যাবে না। কারণ এতে ভেতরে পানি প্রবেশের আশঙ্কা থাকে। মাইমুনা (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুল (সা.)-এর জন্য গোসলের পানি এনে একটি কাপড় দিয়ে পর্দা করলাম, তিনি পানি দিয়ে উভয় হাত ধৌত করলেন, এরপর বাঁ হাতে পানি নিয়ে গুপ্তাঙ্গ ধুয়ে মাটিতে হাত মাসেহ করে পানি দ্বারা হাত ধৌত করলেন। এরপর তিনি কুলি করলেন, নাকে পানি দিলেন এবং চেহারা ও হাত দুটো কনুই পর্যন্ত ধৌত করলেন। এরপর গোটা শরীরে পানি ঢাললেন, নাক সাফ করলেন এবং উভয় পা ধৌত করলেন। আমি তাঁর জন্য একটি কাপড় আনলে তিনি তা না নিয়ে হাত ঝাড়তে ঝাড়তে চলে গেলেন।’ (বুখারি ও মুসলিমের সূত্রে মিশকাত: পৃ.৪৮)
অজু করার সময় নাকে পানি দেওয়াও সুন্নত। ফরজ গোসলে নাকে পানি দেওয়া ফরজ। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন ঘুম থেকে জেগে অজু করে, তখন সে যেন তিনবার নাক পরিষ্কার করে। কেননা শয়তান নাকের ছিদ্রে রাতযাপন করে।’ (বুখারি ও মুসলিমের সূত্রে মিশকাত: পৃ.৪৫)
এস্তেনজার বিধান
প্রস্রাব ও পায়খানা করার পর মলদ্বার ও মূত্র দ্বার পরিষ্কার করা আবশ্যক। আর এ জন্য পানি ও ঢিলা উভয়ই ব্যবহার করা উত্তম। উভয়টি ব্যবহারের কারণেই কোরআনে কুফাবাসীর প্রশংসা করা হয়েছে। ঢিলার পরিবর্তে আধুনিক কালের টিস্যুও ব্যবহার করা যাবে। দুটির মধ্যে পানি দিয়ে এস্তেনজা করা উত্তম। আর ঢিলা বা টিস্যু ব্যবহার করা মুস্তাহাব। নাপাকি নির্গত হওয়ার স্থান অতিক্রম করে আশপাশে ছড়িয়ে গেলে পানি ব্যবহার করা ওয়াজিব।
হাদিসে এসেছে, মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন টয়লেটে যায়, তখন সে যেন তার সঙ্গে তিনটি পাথর নিয়ে যায়, যা দিয়ে সে পবিত্রতা অর্জন করবে এবং এটাই তার জন্য যথেষ্ট।’ (আবু দাউদ: ৪০)
অন্য হাদিসে আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) টয়লেটে যেতেন আর আমি ও আমার মতো আরেকটি ছেলে পানির পাত্র ও বর্শার মতো লাঠিসহ তাঁর জন্য পানি নিয়ে যেতাম। এই পানি দিয়ে তিনি শৌচকার্য সম্পন্ন করতেন।’ (বুখারি: ১৫১; মুসলিম: ২৭০ ও ২৭১)
অবাঞ্ছিত লোম পরিষ্কার করা
রাসুলুল্লাহ (সা.) বগলের পশম উপড়ে ফেলা এবং নাভির নিচের পশম মুণ্ডানোর নির্দেশনা দিয়েছেন। কেননা বগলের পশম সহজে ওপড়ানো যায়। পক্ষান্তরে নাভির নিচের পশম সহজে ওপড়ানো যায় না। এ বিধান পরিচ্ছন্নতার জন্য। যদি কেউ এর বিপরীত করে—অর্থাৎ বগলের পশম মুণ্ডায় এবং নাভির নিচের পশম উপড়ে ফেলে, এতেও সুন্নত আদায় হয়ে যাবে।
৪০ দিনের মধ্যে একবার হলেও অবাঞ্ছিত লোম পরিষ্কার করার কথা বলা হয়েছে। আনাস (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের গোঁফ খাটো করার, নখ কাটার, নাভির নিচের পশম মুণ্ডানোর এবং বগলের পশম ওপড়ানোর মেয়াদ নির্ধারণ করে দিয়েছেন, তা হলো ঊর্ধ্বে ৪০ দিন। (মুসলিম: ২৫৮; আবু দাউদ; ৪২০০)
কেউ অবহেলা করে ৪০ দিনের বেশি সময় অবাঞ্ছিত লোম পরিষ্কার করা থেকে বিরত থাকলে গুনাহগার হবে। তবে তা পরিষ্কার না করার কারণে শরীর নাপাক হয়ে যাবে না। বরং নামাজ, রোজা, তেলাওয়াত ইত্যাদি আদায় করা তখনো বৈধ হবে। কারণ এসব লোম শরিয়তের দৃষ্টিতে নাপাক নয়।
নখ কাটার বিধান
নখ কাটা সুন্নত। রাসুলুল্লাহ (সা.) জুমার নামাজে যাওয়ার আগে গোঁফ ও নখ কাটতেন। (আল-মাজমাহ: ২৫ / ১৮০)
রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা তোমাদের নখ কাটো, কর্তিত অংশ পুঁতে রাখো, হাত ও পায়ের গিরাগুলো ধৌত করো, মুখে লেগে থাকা খাদ্য দূর করো এবং মিসওয়াক করো। দুর্গন্ধ অবস্থায় আমার কাছে এসো না।’ (নাওয়াদেরুল উসুল: পৃ.১১৫)
তবে নখ কাটার কোনো সুনির্দিষ্ট নিয়ম হাদিসে বর্ণিত নেই। এ বিষয়ে প্রচলিত যে নিয়ম রয়েছে—ডান হাতের শাহাদাত আঙ্গুল থেকে শুরু করে কনিষ্ঠ আঙ্গুলে শেষ করা—এ ধরনের বিষয় পরবর্তী মুহাদ্দিস ও বুজর্গদের তৈরি। সুতরাং তাকে সুন্নত বলা যায় না। বড়জোর পরবর্তী বুজর্গদের বাতলানো পদ্ধতি ও নিয়ম বলা যায়। (আল-মাকাসিদ লিস-সাখাবি: পৃ.৩১৩ ও ৪২১; আল-আসরার লি-মুল্লা আলি কারি: পৃ.১৭০ ও ২৪১)
চুল রাখার বিধান
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চুল সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, কান পর্যন্ত চুল রাখতেন। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুল (সা.)-এর চুল মোবারক কানের অর্ধেক পর্যন্ত লম্বা ছিল।’ হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আমি ও মহানবী (সা.) একই পাত্রে গোসল করতাম। তাঁর চুলগুলো কানের লতি পর্যন্ত লম্বা থেকে খানিক লম্বা এবং কাঁধ পর্যন্ত লম্বা চুল থেকে খানিক খাটো ছিল। হজরত উম্মেহানি (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুল (সা.)-এর চুলকে চার ঝুঁটিবিশিষ্ট দেখেছি।’ (শামায়েলে তিরমিজি: ২৩-৩০)
হজ বা ওমরাহ ছাড়া মহানবী (সা.) কখনো মাথার চুল মুণ্ডন করেছেন বলে জানা যায় না। (যাদুল মাআদ: ১ / ১৬৭)
তাই হজ-ওমরাহ ছাড়া মাথা মুণ্ডন করা অনেকেই মাকরুহ বলেছেন। সাহাবিরা চুল ছোট রাখতেন, তবে মুণ্ডন করতেন না। রাসুল (সা.) বলেন, ‘হজ বা ওমরাহ ছাড়া মাথার চুল ফেলা যাবে না।’ (আল-মুজামুল আওসাত: ৯ / ১৮০)
তবে ছোট করে চুল রাখাও জায়েজ। মাথার সব অংশে তা সমান হতে হবে। কোথাও বড়, আবার কোথাও ছোট—এভাবে কাটা ইসলামসম্মত নয়। আর লম্বা চুল রাখলে তা নিয়মিত আঁচড়ে পরিপাটি করে রাখতে হবে। মহানবী (সা.) এমনটি নির্দেশনা দিয়েছেন। (নাসায়ি: ৮ / ১৮৪)
হাদিসে আরও এসেছে, চুলে তেল দেওয়া, সুগন্ধি মিশিয়ে তেল দেওয়া, পুরুষের জন্য আঁচড়িয়ে পরিপাটি রাখা, মাঝে সিঁথি করাও সুন্নত। (মুয়াত্তা মালিক: ২ / ৯৪৯)
চুল, নখ ও লোম কাটার নির্ধারিত সময় নেই। সপ্তাহের বিশেষ দিনে কাটতে হবে, অমুক দিন কাটা যাবে না, রাতে কাটা যাবে না—এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এগুলো সমাজের প্রচলিত সংস্কার।
আল্লাহ আমাদের দৈহিক পরিচ্ছন্নতা অর্জনে ইসলাম নির্দেশিত শিষ্টাচারগুলো যথাযথভাবে পালন করার তাওফিক দিন।

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৪ ঘণ্টা আগে
মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
১০ ঘণ্টা আগে
পৃথিবীর এই ক্ষণস্থায়ী জীবনে প্রতিটি মানুষের জন্য একটি বিষয় নিশ্চিত ও অলঙ্ঘনীয়—তা হলো মৃত্যু। মানবজীবনের এই অনিবার্য পরিণতি সম্পর্কে পবিত্র কোরআন ও হাদিসে রয়েছে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা। এই চিরন্তন বাস্তবতাকে মেনে নেওয়ার শিক্ষাই পবিত্র কোরআন আমাদের দিয়েছে।
১৪ ঘণ্টা আগে
আজ জমাদিউস সানি মাসের চতুর্থ জুমা। এদিনটি একজন মুমিনের জীবনে আত্মসমালোচনা ও আত্মশুদ্ধির এক বিশেষ সুযোগ। এ বরকতময় দিনে নিজের ইমান, আমল ও চরিত্রকে নতুন করে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। আজকের জুমার বিশেষ আমলি দিকনির্দেশনাগুলো নিচে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো:
১৮ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ০৫ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ২৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১৪ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১৫ মিনিট | ০৬: ৩৫ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৫৭ মিনিট | ০৩: ৩৯ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪০ মিনিট | ০৫: ১৫ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৭ মিনিট | ০৬: ৩৬ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৭ মিনিট | ০৫: ১৪ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ০৫ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ২৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১৪ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১৫ মিনিট | ০৬: ৩৫ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৫৭ মিনিট | ০৩: ৩৯ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪০ মিনিট | ০৫: ১৫ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৭ মিনিট | ০৬: ৩৬ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৭ মিনিট | ০৫: ১৪ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

উদাসীন অপরিচ্ছন্ন জীবনযাপন ইসলামের শিক্ষা নয়। দৈহিক পরিচ্ছন্নতার যে শিষ্টাচারগুলো রয়েছে, সেগুলোকে হাদিসে নবী ইবরাহিম (আ.)-এর সুন্নত এবং মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হয়েছে।
২১ নভেম্বর ২০২২
মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
১০ ঘণ্টা আগে
পৃথিবীর এই ক্ষণস্থায়ী জীবনে প্রতিটি মানুষের জন্য একটি বিষয় নিশ্চিত ও অলঙ্ঘনীয়—তা হলো মৃত্যু। মানবজীবনের এই অনিবার্য পরিণতি সম্পর্কে পবিত্র কোরআন ও হাদিসে রয়েছে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা। এই চিরন্তন বাস্তবতাকে মেনে নেওয়ার শিক্ষাই পবিত্র কোরআন আমাদের দিয়েছে।
১৪ ঘণ্টা আগে
আজ জমাদিউস সানি মাসের চতুর্থ জুমা। এদিনটি একজন মুমিনের জীবনে আত্মসমালোচনা ও আত্মশুদ্ধির এক বিশেষ সুযোগ। এ বরকতময় দিনে নিজের ইমান, আমল ও চরিত্রকে নতুন করে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। আজকের জুমার বিশেষ আমলি দিকনির্দেশনাগুলো নিচে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো:
১৮ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন—‘তোমরা তোমাদের মৃতদের ভালো কাজগুলোর আলোচনা করো এবং মন্দ কাজের আলোচনা থেকে বিরত থাকো।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯০০)
কারও মৃত্যুর পর তাঁর পাশে উপস্থিত হলে লাশ দেখার সময় দোয়ার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হজরত উম্মে সালামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা রোগী কিংবা মৃতের কাছে উপস্থিত হলে ভালো কথা বলবে। কেননা তোমরা যা বলবে, ফেরেশতারা তার ওপর আমিন বলবেন।’
এই অবস্থায় এই দোয়া পড়া সুন্নত—‘আল্লাহুম্মাগফিরলি ওয়া লাহু ওয়া আকিবনি মিনহু উকবান হাসানাহ।’
অর্থ: ‘হে আল্লাহ, তুমি আমাকে ও তাকে ক্ষমা করো এবং আমাকে তার চেয়েও উত্তম প্রতিদান দাও।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৪৪৭)
পবিত্র কোরআনে পূর্ববর্তী নবীগণ নিজেদের এবং সমস্ত মুমিনের জন্য যেভাবে দোয়া করেছেন, তা আমাদের জন্য বড় শিক্ষা।
হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বানাগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিল মুমিনিনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব।’
অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, যেদিন হিসাব প্রতিষ্ঠিত হবে, সেদিন আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সব ইমানদারকে ক্ষমা করুন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৪১)
হজরত নুহ (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বিগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিমান দাখালা বাইতিয়া মুমিনাও-ওয়ালিল মুমিনিনা ওয়াল মুমিনাত।’
অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, আমাকে ক্ষমা করে দিন এবং আমার পিতা-মাতাকেও; আর যে ইমান অবস্থায় আমার ঘরে প্রবেশ করেছে এবং সমস্ত মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীকেও।’ (সুরা নুহ: ২৮)

মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন—‘তোমরা তোমাদের মৃতদের ভালো কাজগুলোর আলোচনা করো এবং মন্দ কাজের আলোচনা থেকে বিরত থাকো।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯০০)
কারও মৃত্যুর পর তাঁর পাশে উপস্থিত হলে লাশ দেখার সময় দোয়ার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হজরত উম্মে সালামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা রোগী কিংবা মৃতের কাছে উপস্থিত হলে ভালো কথা বলবে। কেননা তোমরা যা বলবে, ফেরেশতারা তার ওপর আমিন বলবেন।’
এই অবস্থায় এই দোয়া পড়া সুন্নত—‘আল্লাহুম্মাগফিরলি ওয়া লাহু ওয়া আকিবনি মিনহু উকবান হাসানাহ।’
অর্থ: ‘হে আল্লাহ, তুমি আমাকে ও তাকে ক্ষমা করো এবং আমাকে তার চেয়েও উত্তম প্রতিদান দাও।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৪৪৭)
পবিত্র কোরআনে পূর্ববর্তী নবীগণ নিজেদের এবং সমস্ত মুমিনের জন্য যেভাবে দোয়া করেছেন, তা আমাদের জন্য বড় শিক্ষা।
হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বানাগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিল মুমিনিনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব।’
অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, যেদিন হিসাব প্রতিষ্ঠিত হবে, সেদিন আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সব ইমানদারকে ক্ষমা করুন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৪১)
হজরত নুহ (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বিগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিমান দাখালা বাইতিয়া মুমিনাও-ওয়ালিল মুমিনিনা ওয়াল মুমিনাত।’
অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, আমাকে ক্ষমা করে দিন এবং আমার পিতা-মাতাকেও; আর যে ইমান অবস্থায় আমার ঘরে প্রবেশ করেছে এবং সমস্ত মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীকেও।’ (সুরা নুহ: ২৮)

উদাসীন অপরিচ্ছন্ন জীবনযাপন ইসলামের শিক্ষা নয়। দৈহিক পরিচ্ছন্নতার যে শিষ্টাচারগুলো রয়েছে, সেগুলোকে হাদিসে নবী ইবরাহিম (আ.)-এর সুন্নত এবং মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হয়েছে।
২১ নভেম্বর ২০২২
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৪ ঘণ্টা আগে
পৃথিবীর এই ক্ষণস্থায়ী জীবনে প্রতিটি মানুষের জন্য একটি বিষয় নিশ্চিত ও অলঙ্ঘনীয়—তা হলো মৃত্যু। মানবজীবনের এই অনিবার্য পরিণতি সম্পর্কে পবিত্র কোরআন ও হাদিসে রয়েছে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা। এই চিরন্তন বাস্তবতাকে মেনে নেওয়ার শিক্ষাই পবিত্র কোরআন আমাদের দিয়েছে।
১৪ ঘণ্টা আগে
আজ জমাদিউস সানি মাসের চতুর্থ জুমা। এদিনটি একজন মুমিনের জীবনে আত্মসমালোচনা ও আত্মশুদ্ধির এক বিশেষ সুযোগ। এ বরকতময় দিনে নিজের ইমান, আমল ও চরিত্রকে নতুন করে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। আজকের জুমার বিশেষ আমলি দিকনির্দেশনাগুলো নিচে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো:
১৮ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

পৃথিবীর এই ক্ষণস্থায়ী জীবনে প্রতিটি মানুষের জন্য একটি বিষয় নিশ্চিত ও অলঙ্ঘনীয়—তা হলো মৃত্যু। মানবজীবনের এই অনিবার্য পরিণতি সম্পর্কে পবিত্র কোরআন ও হাদিসে রয়েছে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা। এই চিরন্তন বাস্তবতাকে মেনে নেওয়ার শিক্ষাই পবিত্র কোরআন আমাদের দিয়েছে।
মহান আল্লাহ তাআলা এই দুনিয়াবি জীবনকে শুধু পরীক্ষার ক্ষেত্র হিসেবে প্রেরণ করেছেন, যেখানে মৃত্যুই হচ্ছে এই পরীক্ষার অবসান এবং পরকালীন জীবনের সূচনা।
মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেছেন, ‘প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। আর কেয়ামতের দিন তোমাদের পরিপূর্ণ প্রতিদান দেওয়া হবে। তারপর যাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, সেই সফলকাম। আর পার্থিব জীবন ধোঁকার বস্তু ছাড়া কিছুই নয়।’ (সুরা আলে ইমান: ১৮৫)
তিনি আরও বলেন, ‘তোমরা যেখানেই থাক না কেন, মৃত্যু কিন্তু তোমাদেরকে পাকড়াও করবেই। যদি তোমরা সুদৃঢ় দুর্গের ভেতরেও অবস্থান করো, তবুও।’ (সুরা নিন্দা: ৭৮)
মৃতদের জন্য দোয়া ও মাগফিরাত
প্রিয়জনের মৃত্যুতে মানুষের হৃদয় ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে। এই বিচ্ছেদ-কষ্টে ব্যথিত মন থেকে তাদের জন্য কল্যাণ কামনার অনুভূতি জাগা স্বাভাবিক। মৃতদের জন্য দোয়া ও মাগফিরাত কামনা করা ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ আমল।
রাসুলুল্লাহ (সাধারণ) বলেছেন, ‘যখন মানুষ মারা যায়, তার সব আমল বন্ধ হয়ে যায়। শুধু তিনটি আমল অব্যাহত থাকে—সাদকায়ে জারিয়া, এমন জ্ঞান যার দ্বারা মানুষ উপকৃত হয় এবং ওই সুসন্তান, যে তার জন্য দোয়া করে।’ (সহিহ্ মুসলিম: ১৬৩১)
রাসুল (সা.)-এর শেখানো দোয়া রাসুলুল্লাহ (সা.) মৃতদের জন্য যে দোয়া করতেন। দোয়াটি হলো—‘আল্লাহুম্মাগ ফিরলাহু ওয়ারহামহু, ওয়া আফিহি ওয়া ফু আনহু; ওয়া আকরিম নুজুলাহু, ওয়া ওয়াসসি মাদখালাহু; ওয়াগসিলহু বিল মায়ি ওয়াস সালজি ওয়াল বারাদি, ওয়ানাক্কিহি মিনাল খাতা-ইয়া কামা ইউননাককাস সাওবুল আব ইয়াযু মিনাদদানাসি; ওয়াবদিলহু দা-রান খায়রান মিন দারিহি, ওয়া আহলান খাইরান মিন আহলিহি; ওয়া যাওজান খাইরান মিন যাওজিহি। ওয়া আদখিলহুল জান্নাতা, ওয়া আইজহু মিন আজাবিল কাবরি ওয়ামিন আজাবিন নার।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ, তাকে ক্ষমা করুন এবং দয়া করুন। শান্তিতে রাখুন এবং তার থাকার স্থানটিকে মর্যাদাশীল করুন। তার কবর প্রশস্ত করে দিন। বরফ ও তুষারের শুভ্রতা দিয়ে তাকে গুনাহ থেকে এমনভাবে পরিচ্ছন্ন করে দিন—যেমন ময়লা থেকে সাদা কাপড় পরিষ্কার হয়। তাকে দুনিয়ার বাসস্থানের চেয়ে উত্তম বাসস্থান, পরিবার ও সঙ্গী দান করুন। হে মাবুদ, তাকে জান্নাতে দাখিল করুন এবং কবর ও দোজখের আজাব থেকে রক্ষা করুন।’

পৃথিবীর এই ক্ষণস্থায়ী জীবনে প্রতিটি মানুষের জন্য একটি বিষয় নিশ্চিত ও অলঙ্ঘনীয়—তা হলো মৃত্যু। মানবজীবনের এই অনিবার্য পরিণতি সম্পর্কে পবিত্র কোরআন ও হাদিসে রয়েছে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা। এই চিরন্তন বাস্তবতাকে মেনে নেওয়ার শিক্ষাই পবিত্র কোরআন আমাদের দিয়েছে।
মহান আল্লাহ তাআলা এই দুনিয়াবি জীবনকে শুধু পরীক্ষার ক্ষেত্র হিসেবে প্রেরণ করেছেন, যেখানে মৃত্যুই হচ্ছে এই পরীক্ষার অবসান এবং পরকালীন জীবনের সূচনা।
মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেছেন, ‘প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। আর কেয়ামতের দিন তোমাদের পরিপূর্ণ প্রতিদান দেওয়া হবে। তারপর যাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, সেই সফলকাম। আর পার্থিব জীবন ধোঁকার বস্তু ছাড়া কিছুই নয়।’ (সুরা আলে ইমান: ১৮৫)
তিনি আরও বলেন, ‘তোমরা যেখানেই থাক না কেন, মৃত্যু কিন্তু তোমাদেরকে পাকড়াও করবেই। যদি তোমরা সুদৃঢ় দুর্গের ভেতরেও অবস্থান করো, তবুও।’ (সুরা নিন্দা: ৭৮)
মৃতদের জন্য দোয়া ও মাগফিরাত
প্রিয়জনের মৃত্যুতে মানুষের হৃদয় ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে। এই বিচ্ছেদ-কষ্টে ব্যথিত মন থেকে তাদের জন্য কল্যাণ কামনার অনুভূতি জাগা স্বাভাবিক। মৃতদের জন্য দোয়া ও মাগফিরাত কামনা করা ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ আমল।
রাসুলুল্লাহ (সাধারণ) বলেছেন, ‘যখন মানুষ মারা যায়, তার সব আমল বন্ধ হয়ে যায়। শুধু তিনটি আমল অব্যাহত থাকে—সাদকায়ে জারিয়া, এমন জ্ঞান যার দ্বারা মানুষ উপকৃত হয় এবং ওই সুসন্তান, যে তার জন্য দোয়া করে।’ (সহিহ্ মুসলিম: ১৬৩১)
রাসুল (সা.)-এর শেখানো দোয়া রাসুলুল্লাহ (সা.) মৃতদের জন্য যে দোয়া করতেন। দোয়াটি হলো—‘আল্লাহুম্মাগ ফিরলাহু ওয়ারহামহু, ওয়া আফিহি ওয়া ফু আনহু; ওয়া আকরিম নুজুলাহু, ওয়া ওয়াসসি মাদখালাহু; ওয়াগসিলহু বিল মায়ি ওয়াস সালজি ওয়াল বারাদি, ওয়ানাক্কিহি মিনাল খাতা-ইয়া কামা ইউননাককাস সাওবুল আব ইয়াযু মিনাদদানাসি; ওয়াবদিলহু দা-রান খায়রান মিন দারিহি, ওয়া আহলান খাইরান মিন আহলিহি; ওয়া যাওজান খাইরান মিন যাওজিহি। ওয়া আদখিলহুল জান্নাতা, ওয়া আইজহু মিন আজাবিল কাবরি ওয়ামিন আজাবিন নার।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ, তাকে ক্ষমা করুন এবং দয়া করুন। শান্তিতে রাখুন এবং তার থাকার স্থানটিকে মর্যাদাশীল করুন। তার কবর প্রশস্ত করে দিন। বরফ ও তুষারের শুভ্রতা দিয়ে তাকে গুনাহ থেকে এমনভাবে পরিচ্ছন্ন করে দিন—যেমন ময়লা থেকে সাদা কাপড় পরিষ্কার হয়। তাকে দুনিয়ার বাসস্থানের চেয়ে উত্তম বাসস্থান, পরিবার ও সঙ্গী দান করুন। হে মাবুদ, তাকে জান্নাতে দাখিল করুন এবং কবর ও দোজখের আজাব থেকে রক্ষা করুন।’

উদাসীন অপরিচ্ছন্ন জীবনযাপন ইসলামের শিক্ষা নয়। দৈহিক পরিচ্ছন্নতার যে শিষ্টাচারগুলো রয়েছে, সেগুলোকে হাদিসে নবী ইবরাহিম (আ.)-এর সুন্নত এবং মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হয়েছে।
২১ নভেম্বর ২০২২
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৪ ঘণ্টা আগে
মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
১০ ঘণ্টা আগে
আজ জমাদিউস সানি মাসের চতুর্থ জুমা। এদিনটি একজন মুমিনের জীবনে আত্মসমালোচনা ও আত্মশুদ্ধির এক বিশেষ সুযোগ। এ বরকতময় দিনে নিজের ইমান, আমল ও চরিত্রকে নতুন করে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। আজকের জুমার বিশেষ আমলি দিকনির্দেশনাগুলো নিচে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো:
১৮ ঘণ্টা আগেডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ

আজ জমাদিউস সানি মাসের চতুর্থ জুমা। এদিনটি একজন মুমিনের জীবনে আত্মসমালোচনা ও আত্মশুদ্ধির এক বিশেষ সুযোগ। এ বরকতময় দিনে নিজের ইমান, আমল ও চরিত্রকে নতুন করে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। আজকের জুমার বিশেষ আমলি দিকনির্দেশনাগুলো নিচে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো:
১. জুমার দিনের মর্যাদা অনুধাবন: জুমা মুমিনের জন্য সাপ্তাহিক ঈদের দিন। এদিনে বেশি বেশি দরুদ পাঠ, দীর্ঘ দোয়ায় মগ্ন হওয়া এবং জুমার খুতবা গভীর মনোযোগ দিয়ে শোনা প্রতিটি মুসলমানের ইমানি দায়িত্ব।
২. সালাতে খুশু-খুজু অর্জন: পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সময়মতো আদায়ের পাশাপাশি জুমার নামাজে আগেভাগে মসজিদে উপস্থিত হওয়া জরুরি। নামাজকে কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয়; বরং আল্লাহর সঙ্গে আত্মিক সংযোগের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।
৩. কোরআনের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক: নিয়মিত তিলাওয়াতের পাশাপাশি কোরআনের অর্থ ও শিক্ষা বোঝার চেষ্টা করা উচিত। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে কোরআনের নির্দেশনা বাস্তবায়নের পাশাপাশি সন্তানদের কোরআন শিক্ষায় আগ্রহী করে তোলা আমাদের কর্তব্য।
৪. তাওবা ও আত্মপর্যালোচনা: অতীতের গুনাহের জন্য আন্তরিক অনুতাপ এবং প্রকাশ্য-গোপন সব পাপ থেকে ফিরে আসার দৃঢ়সংকল্প করতে হবে। প্রতিদিনের আমল নিজে নিজে মূল্যায়নের অভ্যাস গড়ে তোলা আত্মশুদ্ধির মূল চাবিকাঠি।
৫. সবর, তাওয়াক্কুল ও তাকওয়া চর্চা: বিপদ-আপদে ধৈর্য ধারণ করা এবং আল্লাহর ফয়সালায় সন্তুষ্ট থাকা ইমানের দাবি। নিজের সাধ্যমতো চেষ্টা করে ফলাফলের জন্য আল্লাহর ওপর ভরসা করতে হবে এবং সর্বদা আল্লাহভীতি (তাকওয়া) বজায় রাখতে হবে।
৬. পরিবারে ইসলামি পরিবেশ প্রতিষ্ঠা: পরিবারে ন্যায় ও ইনসাফ কায়েম করা এবং স্ত্রী-সন্তানের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ করা অত্যন্ত জরুরি। পারিবারিকভাবে নামাজ ও নিয়মিত দ্বীনি আলোচনার চর্চা করা একজন মুমিনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।
৭. সামাজিক দায়িত্ব ও মানবিকতা: প্রতিবেশীর হক আদায় করা, অসহায় ও দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং সমাজে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করা ইসলামের মৌলিক শিক্ষা।
৮. দুনিয়াবিমুখতা ও আত্মসংযম: অতিরিক্ত ভোগবিলাস ও অপচয় পরিহার করে সহজ-সরল ও সংযত জীবনযাপনে অভ্যস্ত হতে হবে। আল্লাহর সন্তুষ্টিকেই জীবনের সর্বোচ্চ লক্ষ্য হিসেবে স্থির করতে হবে।
৯. ইসলামের মহান মনীষীদের অনুসরণ: ইসলামের মহান মনীষী ও সালাফদের জীবন থেকে সংযম, ত্যাগ ও পবিত্রতার শিক্ষা গ্রহণ করে জীবনের মূল্যবোধ ও ইমান রক্ষায় সচেতন থাকা প্রয়োজন।
১০. নতুন আমলি অঙ্গীকার: প্রতিটি জুমাকে আত্মশুদ্ধির একটি মাইলফলক হিসেবে গ্রহণ করা উচিত। ছোট হলেও নিয়মিত ভালো আমলের অভ্যাস গড়ে তোলা এবং গুনাহমুক্ত জীবনের পথে অবিচল থাকার প্রতিজ্ঞাই হোক আজকের জুমার শিক্ষা।
হে আল্লাহ, আপনি আমাদের অন্তরকে পরিশুদ্ধ করে দিন। আমাদের গুনাহগুলো ক্ষমা করে দিন এবং আমাদের আমলগুলো কবুল করুন। জমাদিউস সানি মাসের এই বরকতময় চতুর্থ জুমাকে আমাদের জীবনে হেদায়েত ও কল্যাণের মাধ্যম হিসেবে কবুল করুন।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগীকল্যাণ সোসাইটি।

আজ জমাদিউস সানি মাসের চতুর্থ জুমা। এদিনটি একজন মুমিনের জীবনে আত্মসমালোচনা ও আত্মশুদ্ধির এক বিশেষ সুযোগ। এ বরকতময় দিনে নিজের ইমান, আমল ও চরিত্রকে নতুন করে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। আজকের জুমার বিশেষ আমলি দিকনির্দেশনাগুলো নিচে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো:
১. জুমার দিনের মর্যাদা অনুধাবন: জুমা মুমিনের জন্য সাপ্তাহিক ঈদের দিন। এদিনে বেশি বেশি দরুদ পাঠ, দীর্ঘ দোয়ায় মগ্ন হওয়া এবং জুমার খুতবা গভীর মনোযোগ দিয়ে শোনা প্রতিটি মুসলমানের ইমানি দায়িত্ব।
২. সালাতে খুশু-খুজু অর্জন: পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সময়মতো আদায়ের পাশাপাশি জুমার নামাজে আগেভাগে মসজিদে উপস্থিত হওয়া জরুরি। নামাজকে কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয়; বরং আল্লাহর সঙ্গে আত্মিক সংযোগের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।
৩. কোরআনের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক: নিয়মিত তিলাওয়াতের পাশাপাশি কোরআনের অর্থ ও শিক্ষা বোঝার চেষ্টা করা উচিত। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে কোরআনের নির্দেশনা বাস্তবায়নের পাশাপাশি সন্তানদের কোরআন শিক্ষায় আগ্রহী করে তোলা আমাদের কর্তব্য।
৪. তাওবা ও আত্মপর্যালোচনা: অতীতের গুনাহের জন্য আন্তরিক অনুতাপ এবং প্রকাশ্য-গোপন সব পাপ থেকে ফিরে আসার দৃঢ়সংকল্প করতে হবে। প্রতিদিনের আমল নিজে নিজে মূল্যায়নের অভ্যাস গড়ে তোলা আত্মশুদ্ধির মূল চাবিকাঠি।
৫. সবর, তাওয়াক্কুল ও তাকওয়া চর্চা: বিপদ-আপদে ধৈর্য ধারণ করা এবং আল্লাহর ফয়সালায় সন্তুষ্ট থাকা ইমানের দাবি। নিজের সাধ্যমতো চেষ্টা করে ফলাফলের জন্য আল্লাহর ওপর ভরসা করতে হবে এবং সর্বদা আল্লাহভীতি (তাকওয়া) বজায় রাখতে হবে।
৬. পরিবারে ইসলামি পরিবেশ প্রতিষ্ঠা: পরিবারে ন্যায় ও ইনসাফ কায়েম করা এবং স্ত্রী-সন্তানের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ করা অত্যন্ত জরুরি। পারিবারিকভাবে নামাজ ও নিয়মিত দ্বীনি আলোচনার চর্চা করা একজন মুমিনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।
৭. সামাজিক দায়িত্ব ও মানবিকতা: প্রতিবেশীর হক আদায় করা, অসহায় ও দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং সমাজে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করা ইসলামের মৌলিক শিক্ষা।
৮. দুনিয়াবিমুখতা ও আত্মসংযম: অতিরিক্ত ভোগবিলাস ও অপচয় পরিহার করে সহজ-সরল ও সংযত জীবনযাপনে অভ্যস্ত হতে হবে। আল্লাহর সন্তুষ্টিকেই জীবনের সর্বোচ্চ লক্ষ্য হিসেবে স্থির করতে হবে।
৯. ইসলামের মহান মনীষীদের অনুসরণ: ইসলামের মহান মনীষী ও সালাফদের জীবন থেকে সংযম, ত্যাগ ও পবিত্রতার শিক্ষা গ্রহণ করে জীবনের মূল্যবোধ ও ইমান রক্ষায় সচেতন থাকা প্রয়োজন।
১০. নতুন আমলি অঙ্গীকার: প্রতিটি জুমাকে আত্মশুদ্ধির একটি মাইলফলক হিসেবে গ্রহণ করা উচিত। ছোট হলেও নিয়মিত ভালো আমলের অভ্যাস গড়ে তোলা এবং গুনাহমুক্ত জীবনের পথে অবিচল থাকার প্রতিজ্ঞাই হোক আজকের জুমার শিক্ষা।
হে আল্লাহ, আপনি আমাদের অন্তরকে পরিশুদ্ধ করে দিন। আমাদের গুনাহগুলো ক্ষমা করে দিন এবং আমাদের আমলগুলো কবুল করুন। জমাদিউস সানি মাসের এই বরকতময় চতুর্থ জুমাকে আমাদের জীবনে হেদায়েত ও কল্যাণের মাধ্যম হিসেবে কবুল করুন।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগীকল্যাণ সোসাইটি।

উদাসীন অপরিচ্ছন্ন জীবনযাপন ইসলামের শিক্ষা নয়। দৈহিক পরিচ্ছন্নতার যে শিষ্টাচারগুলো রয়েছে, সেগুলোকে হাদিসে নবী ইবরাহিম (আ.)-এর সুন্নত এবং মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হয়েছে।
২১ নভেম্বর ২০২২
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৪ ঘণ্টা আগে
মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
১০ ঘণ্টা আগে
পৃথিবীর এই ক্ষণস্থায়ী জীবনে প্রতিটি মানুষের জন্য একটি বিষয় নিশ্চিত ও অলঙ্ঘনীয়—তা হলো মৃত্যু। মানবজীবনের এই অনিবার্য পরিণতি সম্পর্কে পবিত্র কোরআন ও হাদিসে রয়েছে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা। এই চিরন্তন বাস্তবতাকে মেনে নেওয়ার শিক্ষাই পবিত্র কোরআন আমাদের দিয়েছে।
১৪ ঘণ্টা আগে