Ajker Patrika

কেমন কাটল চরকির প্রথম বছর

কেমন কাটল চরকির প্রথম বছর

‘ছোট্ট একটা টিম আর অনেক বড় স্বপ্ন নিয়ে চরকির যাত্রা শুরু করি আমরা। যখন শুরু করলাম, বাংলাদেশের লোকাল মার্কেটে সাবস্ক্রিপশন বেইসড ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম সম্পর্কে না ছিলো কোনো তথ্য, না ছিলো কোন উদাহরণ। একরকম শুন্য থেকেই শুরু করা। প্রতিবার নতুন কিছু করেছি, সমস্যায় পড়েছি, সমাধান খুঁজেছি, আবার নতুন কিছু করার চেষ্টা করেছি। এভাবেই আমরা শিখতে শিখতে এগিয়ে গিয়েছি। প্রথম থেকেই একটা বিষয় আমরা বিশ্বাস করতাম, স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের জন্য ভালো বা খারাপ কনটেন্ট বলতে কিছু নেই। সঠিক দর্শকের কাছে সঠিক কনটেন্ট পৌঁছে দেয়াই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।’-কথাগুলো বলছিলেন চরকির ক্রিয়েটিভ প্রডিউসার ও ফাউন্ডিং মেম্বার আল-আমিন হাসান নির্ঝর। গল্পে গল্পে তিনি চরকির শুরুর দিকের নানা প্রতিকূলতা ও পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন।

তিনি আরও বলেন, ‘তাই কনটেন্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমরা যেমন একদিকে নতুনত্বকে প্রাধান্য দিয়েছি, অন্যদিকে সাধারণ দর্শকের জন্য নির্মল বিনোদনেরও ব্যবস্থা করেছি। এক বছর আগে যখন চরকির যাত্রা শুরু হয়, অনেকেই আমাদের প্রশ্ন করতেন, ‘পারবো তো?’ এখন মনে হচ্ছে, এই এক বছরে আমাদের নির্মাতা আর দর্শকেরাই সেই উত্তরটা দিয়ে দিয়েছেন।’

২০২১ সালের ১২ জুলাই করোনা মহামারীর এক দুর্বিষহ সময়েই চরকি যাত্রা শুরু করে। দেখতে দেখতে ১ বছরে পূর্ণ করে দ্বিতীয় বছরে পা রাখল বাংলাদেশের এই ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম। নানা জনে নানা কথা পেরিয়ে স্ট্রিমিং জগতে চরকি আজ পরিচিত একটা নাম।

চরকির যাত্রা শুরুর সময়ের আরেক সদস্য আদর রহমান। শুরুর সময়ের গল্প করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘খুব ছোট একটা টিম নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল চরকি। আমরা গুটিকয়েক মানুষ নিজেরাই কনটেন্ট, প্রডাক্ট, মার্কেটিং, অ্যাক্টিভেশন সব সামলে সবার সামনে তুলে ধরেছিলাম এই প্ল্যাটফর্মটি। এত অল্প সময়ে আমাদের প্রচেষ্টা সবাই এতটা ভালোবেসে আপন করে নেবে, তা আমরা ভাবিনি। বিশ্বের বুকে বাংলা কনটেন্টের রাজধানী হিসেবে তুলে ধরব- এই প্রত্যয় নিয়েই মাঠে নেমেছিলাম। ভেবে ভালো লাগছে যে, মাত্র এক বছরের মাথায় আমরা আমাদের সেই স্বপ্নের দিকে বেশ খানিকটা এগিয়ে গেছি। আরো অনেকটা পথ বাকি।’

চরকি অরিজিনালস

মাত্র একবছর সময়ের মধ্যেই চরকি প্রায় ৫০টির বেশি অরিজিনাল কনটেন্ট মুক্তি দিয়েছে। সিনেমা, সিরিজসহ চরকি নতুন একটি ক্যাটাগরি চালু করেছে যা 'ফ্লিক' নামে পরিচিত। চরকিতে প্রবীণ পরিচালকদের কাজ যেমন সমাদৃত হয়েছে তেমন নবীনদের কাজও আলোচিত ও প্রশংসিত হয়েছে। সিরিজ শাটিকাপ, নিখোঁজ, ফ্লিক হ্যাপি বার্থডে-সহ বেশ কিছু কাজ দুর্দান্তভাবে গ্রহণ করেছে দর্শক। সেই সাথে ঊনলৌকিক, খাঁচার ভেতর অচিন পাখি, মরিচীকা, তিথির অসুখ, জাগো বাহে, টান, রেডরাম, গুণিন, পেট কাটা ষ, দর্শকরা তুমুল আলোচনায় এনেছে।

চরকির আলোচিত কিছু কনটেন্টের পোস্টার। ছবি: চরকিচরকি অরিজিনাল কনটেন্টের পাশাপাশি বিদেশি ভাষার সিনেমা ও সিরিজ বাংলায় ডাব করে মুক্তি দেয়। ওয়েটলিফটিং ফেইরি, লুকা, পিগ জেন, কিংস্লেয়ার-সহ আরও অনেক সিনেমা বাংলায় চরকিতে দেখতে পারবে দর্শক।

পুরস্কার ও সম্মাননা

মাত্র ১ বছরেই চরকির ঝুলিতে এসেছে বেশ কিছু দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার। এই বছর মার্চ মাসে আয়োজিত আইসিটি ডিভিশন প্রেজেন্টস চ্যানেল আই স্ন্যাক কিপার ডিজিটাল মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০২১ এ চরকি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ও শ্রেষ্ঠ ওয়েব সিরিজসহ মোট ৮টি পুরস্কার জিতেছে।

সেই সাথে মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার ২০২১-এ সমালোচকের রায়ে সেরা তিনটি ও তারকা জরিপে ১টি পুরস্কার জিতেছে।

এক বছর পূর্ণ আগেই চরকি ইন্টারন্যাশনাল নিউজ মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশন (ইনমা) আয়োজিত ‘গ্লোবাল মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস ২০২২-এ বিশেষ সম্মানে ভূষিত হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধান ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে চরকি ‘বেস্ট ইনিশিয়েটিভ টু অ্যাকুয়ার সাবস্ক্রাইবার’ক্যাটাগরিতে সম্মানজনক এই স্বীকৃতি পেয়েছে। যা চরকির চলার পথকে করেছে আলোকিত ও অনুপ্রাণিত।

চরকির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা রেদওয়ান রনি বলেন, ‘চরকি প্রথম এক বছরেই দর্শকদের যে ভালোবাসা পেয়েছে, যে সাফল্য ও গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে তাতে আমরা ধন্য। এগুলো সম্ভব হয়েছে চরকির দুর্দান্ত সব কনটেন্টের কারণে। সেই সাথে চরকির পুরো টিম, স্পন্সর, শুভানুধ্যায়ীদের অবদানে চরকির পথচলা আরও সহজ ও সাবলীল হয়েছে। বাংলা কনটেন্টের রাজধানী হতে চরকি আরও দর্শক জনপ্রিয়তা পেতে থাকুক, দর্শক আরও ফিল্ম ফান ফুর্তিতে থাকুক এই কামনা করি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঈদে মুক্তি পাবে ‘ট্রাইব্যুনাল’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
(বাঁ থেকে) আদর আজাদ, মৌসুমী, ইভন ও তানিয়া বৃষ্টি। ছবি: সংগৃহীত
(বাঁ থেকে) আদর আজাদ, মৌসুমী, ইভন ও তানিয়া বৃষ্টি। ছবি: সংগৃহীত

নির্মাতা রায়হান খান ৯ ডিসেম্বর যখন ‘ট্রাইব্যুনাল’ সিনেমার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিচ্ছিলেন, সেদিনই ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর ক্যারিয়ারের দুই যুগ পূর্ণ হয়েছে। চিত্রগ্রাহক হিসেবে শোবিজে যাত্রা শুরু করেছিলেন। এরপর নাটক, টিভি অনুষ্ঠান পরিচালনা, চিত্রনাট্য লেখা—বিভিন্ন কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। তবে সিনেমা বানানোর কথা ভাবেননি কখনো। গত ঈদে তানিম নূরের ‘উৎসব’ দেখে বড় পর্দার প্রতি আগ্রহী হন তিনি।

সিনেমা বানানোর ইচ্ছা নতুন হলেও ট্রাইব্যুনাল গল্পটি অনেক বছর ধরে লালন করছেন বলে জানালেন রায়হান খান। একবার ব্যক্তিগত কারণে আইনজীবীর শরণাপন্ন হতে হয়েছিল তাঁকে। সেই আইনজীবীর কাছ থেকে শোনা একটি বাস্তব গল্প অবলম্বনে লেখা হয়েছে ট্রাইব্যুনাল সিনেমার চিত্রনাট্য। চট্টগ্রামে এক নারীকে তার স্বামী কেরোসিন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করে। ২৬ জন সাক্ষী এবং একজন প্রত্যক্ষদর্শী ছিল সেই মামলায়। পরে আদালতে মামলাটির গতিপথ কীভাবে ঘুরতে থাকে নানা দিকে, সেসব নিয়েই ট্রাইব্যুনালের কাহিনি।

নির্মাতা রায়হান খান বলেন, ‘২০১৭ সালে একবার মোশাররফ করিমকে গল্পটি শুনিয়ে এ নিয়ে একটি ধারাবাহিক নাটক বানানোর কথা বলি। তিনি পরামর্শ দেন, নাটক নয়, গল্পটি নিয়ে সিনেমা বানানোর। পরে বছরের পর বছর কেটে যায়, সিনেমা আর বানানো হয় না। গত বছর উৎসব দেখার পর মনে হয়, আমি সিনেমা করব এবং সেটা ট্রাইব্যুনাল। তারপর চিত্রনাট্য লিখতে শুরু করি। ট্রাইব্যুনাল হচ্ছে ফুলফর্ম কোর্ট স্টোরি। প্রতিটি সংলাপ আদালতের ভাষা অনুযায়ী এবং বাংলাদেশের আইনের মধ্যে থেকে লেখা হয়েছে। আইনগত কোনো অসংগতি নেই।’

ট্রাইব্যুনাল সিনেমায় অভিনয় করেছেন মৌসুমী হামিদ, তানিয়া বৃষ্টি, সায়রা আক্তার জাহান, তারিক আনাম খান, আদর আজাদ, রাকিব হোসেন ইভন, সাবেরি আলম, মিলন ভট্টাচার্য, শাহেদ আলী প্রমুখ। একটি বিশেষ চরিত্রে দেখা যাবে নুসরাত ফারিয়াকে।

মৌসুমী হামিদ বলেন, ‘আমার অভিনীত প্রথম সিরিয়াল রায়হান খানের সঙ্গে করা। এরপর একসঙ্গে অনেক কাজ হয়েছে আমাদের। এই সিনেমার গল্প শুনেই রাজি হই। অসাধারণ একটি চরিত্রে অভিনয় করেছি। মূলত গল্পের কারণেই ট্রাইব্যুনাল সিনেমার প্রতি দর্শক উৎসাহী হবে আশা করি। চিত্রনাট্য এত চমৎকারভাবে লেখা যে প্রতি মুহূর্তে আগ্রহ সৃষ্টি করে।’

রায়হান খান
রায়হান খান

তানিয়া বৃষ্টি বলেন, ‘আমি জেসমিন নামের একটি চরিত্রে অভিনয় করেছি, পুরো গল্প এই চরিত্রকে কেন্দ্র করে। মনে হয়েছিল, সিনেমায় আবার যদি ব্যাক করতে চাই, সে ক্ষেত্রে এটাই সবচেয়ে উপযুক্ত গল্প। এতে অভিনয়ের জন্য তারিক আনাম খান স্যারের কাছে এক মাস রিহার্সাল করেছি। চরিত্রের কষ্ট বোঝার জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়ে রোগীদের পাশে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটিয়েছি। যতটা পেরেছি, পুরোপুরি এফোর্ট দিয়েছি চরিত্রটির জন্য।’

সম্প্রতি অপু বিশ্বাসের সঙ্গে দুই সিনেমায় জুটি বেঁধেছেন আদর আজাদ। এই সিনেমায়ও তিনি থাকছেন কেন্দ্রীয় চরিত্রে।

থিয়েটার দিয়ে অভিনয় শুরু রাকিব হোসেন ইভনের। ‘ইতি চিত্রা’ দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক হয় তাঁর। এই সিনেমায় অভিনয় প্রসঙ্গে ইভন বলেন, ‘আমি থিয়েটার করা ছেলে। অভিনয় আমাকে টানে। এই সিনেমার চরিত্রটিতে অভিনয়ের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। আমি সেই চ্যালেঞ্জটা নিয়েছি। অন্যেরাও বেশ ভালো করেছেন। আশা করছি, সবার চেষ্টায় একটি সুন্দর সিনেমা উপহার দিতে পারব দর্শকদের।’

নির্মাতা রায়হান খান জানিয়েছেন, এরই মধ্যে ৭০ শতাংশ শুটিং শেষ হয়েছে। শিগগির আবার শুটিংয়ে যাবে ট্রাইব্যুনাল টিম। রোজার ঈদে ট্রাইব্যুনাল মুক্তির লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফেসবুক পোস্টের গল্প থেকে নাটক, কেন্দ্রীয় চরিত্রে অহনা

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
অহনা। ছবি: সংগৃহীত
অহনা। ছবি: সংগৃহীত

ফেসবুকের একটি পোস্টের গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নাটক নির্মাণ করলেন মহিন খান। নাটকের নাম ‘পতন’। নির্দেশনার পাশাপাশি পতনের চিত্রনাট্য রচনা করেছেন তিনি। নাটকের চিত্রনাট্য তৈরি হয়েছে এক নারীকে ঘিরে। এই চরিত্রে অভিনয় করেছেন অহনা, তার স্বামীর চরিত্রে রাশেদ সীমান্ত।

অহনা এখন আগের মতো নিয়মিত কাজ করছেন না। গল্প, চিত্রনাট্য আর চরিত্র পছন্দ হলে শুটিং করছেন। এই নাটকে অভিনয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মহিনের নির্দেশনায় আগেও বেশ কিছু নাটকে অভিনয় করেছি। এই নাটকের গল্প ভাবনা এবং চিত্রনাট্য দারুণ হয়েছে। আমার চরিত্রটি বেশ চ্যালেঞ্জিং। বেশ উত্থানপতন আছে। চেষ্টা করেছি চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলতে। আশা করছি, প্রচারে এলে নাটকটি দর্শকের ভালো লাগবে। ধন্যবাদ মহিনকে আমাকে সুন্দর একটি চরিত্রে কাজ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য।’

নাটকের গল্প প্রসঙ্গে মহিন খান বলেন, ‘ফেসবুকের একটি পোস্ট থেকে গল্পের ভাবনাটা নিয়েছি। সেই থিম থেকে নিজের মতো করে চিত্রনাট্য লিখেছি। গল্পে দেখা যাবে, স্বামীর সঙ্গে অহনার বেশ সুখের সংসার। একসময় চাকরি করার সিদ্ধান্ত নেয় অহনা। স্বামী তার আবদার মেনে নেয়। পাঁচ লাখ টাকা ম্যানেজ করে স্ত্রীকে একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়। চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর আচরণ বদলে যায় অহনার। স্বামীর সঙ্গেও সংসার করতে চায় না। গল্প যখন চরম নাটকীয়তায়, এমন সময় হুট করে চাকরি চলে যায় অহনার। দিশেহারা হয়ে পড়ে সে। জীবনের বাস্তবতা বুঝতে পারে সে। অহনা ও রাশেদ সীমান্ত—দুজনেই দারুণ অভিনয় করেছেন। তাঁদের অভিনয়গুণে গল্পটি আরও হৃদয়গ্রাহী হয়েছে।’

নির্মাতা জানিয়েছেন, পতন নাটকটি প্রকাশ করা হবে ইউটিউব চ্যানেলে। শিগগির এর প্রকাশের সময় এবং চ্যানেলের নাম জানানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে দেখা করলেন সোনিয়া, জানালেন কেমন আছেন নায়ক

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ইলিয়াস কাঞ্চনকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান সোনিয়া। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
ইলিয়াস কাঞ্চনকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান সোনিয়া। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে লন্ডনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সেখানে মেয়ের সঙ্গে আছেন তিনি। গত জুলাই মাসে ইলিয়াস কাঞ্চন লন্ডন গেলে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ হয় চিত্রনায়িকা রোজিনার। ওই সময় রোজিনা ছিলেন কানাডায়। সেখান থেকে ফিরে গত সেপ্টেম্বর অভিনেতাকে দেখেতে যান তিনি। তখন রোজিনা জানিয়েছিলেন, অসুস্থতার ধঁকলে কিছুটা বিধ্বস্ত দেখালেও কাঞ্চন দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ছেন নিয়মিত। ধীরে ধীরে কথা বলছেন। ব্রেনের সস্যার কারণে মাঝে মাঝে কথা ভুলে যান ইলিয়াস কাঞ্চন। ব্রেনের স্পর্শকাতর জায়গায় টিউমার হওয়ায় অস্ত্রোপচার করে সম্পূর্ণ টিউমার সরানো যায়নি। তবে কেমোথেরাপির মাধ্যমে তাঁর চিকিৎসা চলবে।

সম্প্রতি ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে দেখা করেছেন বাংলা সিনেমার নব্বই দশকের আরেক জনপ্রিয় নায়িকা সোনিয়া। অনেক বছর হলো স্বামী-সন্তান নিয়ে ইংল্যান্ডে স্থায়ী হয়েছেন সোনিয়া। ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে দেখা করে তিনি জানিয়েছেন, এখন আগের চেয়ে ভালো আছেন ইলিয়াস কাঞ্চন, ধীরে ধীরে সেরে উঠছেন তিনি।

গত সেপ্টেম্বরে ইলিয়াস কাঞ্চনকে দেখতে যান রোজিনা। ছবি: সংগৃহীত
গত সেপ্টেম্বরে ইলিয়াস কাঞ্চনকে দেখতে যান রোজিনা। ছবি: সংগৃহীত

ইলিয়াস কাঞ্চনকে দেখার অভিজ্ঞতা জানিয়ে ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন সোনিয়া। নায়কের শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ তথ্যসহ জানিয়েছেন চিকিৎসার খবর।

স্ট্যাটাসে সোনিয়া লেখেন, ‘ইংল্যান্ডের কর্মব্যস্ত জীবনের কারণে অনেকদিন ইলিয়াস কাঞ্চন ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া হয়নি। যোগাযোগ সবসময় হয়, তবে আজ প্রথম সুযোগ পেলাম তাকে দেখতে যাওয়ার। ভাইয়ার চলমান চিকিৎসায় কিছুদিনের বিরতি ছিল। আগামী সপ্তাহে আবার চিকিৎসা শুরু হবে।’

সোনিয়া জানিয়েছেন, ইলিয়াস কাঞ্চন এখন স্বাভাবিকভাবেই কথা বলছেন। সময় কাটাচ্ছেন স্বজনদের সঙ্গে। তবে শিগগির দেশে ফেরার সম্ভাবনা নেই তাঁর। এ বিষয়ে সোনিয়া লেখেন, ‘ভাইয়া আমার সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেছেন। উনার পরিবারের সঙ্গে কাটালাম ভালো সময়। তবে আপাতত বাংলাদেশে ফেরার কোনো সম্ভাবনা নেই তাঁর। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া পরবর্তী কোনো সিদ্ধান্ত জানানো যাচ্ছে না।’

সোনিয়া আরও জানিয়েছেন, ইলিয়াস কাঞ্চনের চিকিৎসা বেশ ভালোভাবেই চলছে। ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন নায়ক। পুরো চিকিৎসাপ্রক্রিয়া শেষে চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করেই দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেবেন অভিনেতা। সোনিয়া অনুরোধ করেছেন, কোনো ধরনের গুজব না ছড়িয়ে ইলিয়াস কাঞ্চনের সুস্থতার জন্য দোয়া করতে।

উল্লেখ্য, ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে ‘ভয়ংকর ৭ দিন’, ‘বিদ্রোহী কন্যা’, ‘বডিগার্ড’, ‘শেষ রক্ষা’সহ বেশ কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন সোনিয়া। তবে তাঁর নায়িকা হয়ে কোনো সিনেমায় অভিনয় করা হয়নি তাঁর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কাজাখস্তানে শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা জানালেন নিশো

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৫৩
আফরান নিশো। ছবি: সংগৃহীত
আফরান নিশো। ছবি: সংগৃহীত

৮ ডিসেম্বর ছিল অভিনেতা আফরান নিশোর জন্মদিন। প্রতিবছরের মতো এবারও তাঁর ভক্তরা দিনটি উদ্‌যাপন করলেন বিশেষ আয়োজনে। তবে ‘দম’ সিনেমার শুটিংয়ে কাজাখস্তানে থাকায় অনেকে ধরে নিয়েছিলেন, এই আয়োজনে উপস্থিত থাকতে পারবেন না নিশো। শেষ পর্যন্ত সবাইকে চমকে দিয়ে ভক্তদের সঙ্গে নিজের জন্মদিন উদ্‌যাপনে উপস্থিত হয়েছিলেন তিনি।

কাজাখস্তানে শুটিং শেষ হয়েছে ৬ ডিসেম্বর। দেশে ফিরেই ভক্তদের আমন্ত্রণে নিজের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে হাজির হন নিশো। এদিন তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দম সিনেমার পরিচালক রেদওয়ান রনি ও নায়িকা পূজা চেরি। স্বাভাবিকভাবে উঠে আসে দম সিনেমার প্রসঙ্গ। নির্মাতা জানালেন, কতটা কঠিন পরিস্থিতির মাঝে শুটিং করেছেন তাঁরা। একদিন পাহাড়ে শুটিং করতে গিয়ে হাত কেটে যায় নিশোর। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে উন্নত চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হয়নি। কারণ, শুটিং হয়েছে দুর্গম এলাকায়। তবু থেমে যাননি নিশো, আহত অবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ দৃশ্যের শুটিং চালিয়ে গেছেন।

দম সিনেমার শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা জানিয়ে নিশো বলেন, ‘আমরা সবাই চাই গল্প, চাই পারফরম্যান্স। দম সিনেমার মতো একটি গল্পের দায়িত্ব আমার কাঁধে, এটা আমার কাছে আশীর্বাদের মতো। এটা যদি ঠিকমতো পালন করতে না পারি, তাহলে কীভাবে হবে? আমি জানি, একজন সিনিয়র হিসেবে টিমের স্পিড অনেকটাই আমার ওপর নির্ভর করে। তখন এই হাত কাটা, পা কাটা, সেখানে মেডিকেল সাপোর্ট এল কি এল না, এসব কোনো বিষয় না। এ ছাড়া আমাদের খুব টাইট শিডিউল ছিল। সেখানে ১০ মিনিটের একটা বিরতি মানে শিডিউল ফেল করা। আমি দাবি নিয়ে বলতে পারি, এই সিনেমায় টিমের সবাই যতটা কষ্ট নিয়ে কাজ করেছে, এত কষ্ট কোনো প্রোডাকশনে করতে হয়নি। অনেক প্রতিবন্ধকতা ছিল সেখানে।’

নানা প্রতিবন্ধকতা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে কাজাখস্তানের শুটিং শেষ করেছে দম টিম। নিশো বলেন, ‘বয়স ও অভিজ্ঞতার সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্বটা বেড়ে যায়। এখানে নিজেকে শুধু অভিনেতা হিসেবে ভাবিনি। ভেবেছি, আমিও নির্মাতার একটি অংশ। আমরা যে ওয়েদারে কাজ করেছি, সেখানে ২টার সময় সূর্যের আলো থাকে না। আমরা কখনোই ভাবি নাই, সানলাইট ২টার সময় চলে যায়। এত জটিলতার পরেও আমরা এক দিনও বেশি শুটিং করি নাই। নির্ধারিত সময়েই কাজ শেষ করেছি। সিনেমাসংশ্লিষ্টদের কাছে আমরা আমাদের কথা রেখেছি।’

দম সিনেমার গল্প নিয়ে এখনই বিস্তারিত বলতে চান না এই অভিনেতা। শুধু জানালেন, বাংলাদেশের ইন্ডাস্ট্রিতে এ ধরনের গল্প নিয়ে আগে কাজ হয়নি। তিনি আশা করেন, গল্পটি সবাই উপভোগ করবে এবং সিনেমাটি দেখার পর সবাই গর্ব করবে যে এটি বাংলাদেশের সিনেমা।

কাজাখস্তানে শুটিং শেষে এবার দমের শুটিং হবে দেশে। কয়েকটা দিন বিশ্রাম নিয়ে আবার লাইট, ক্যামেরার সামনে দাঁড়াবেন অভিনয়শিল্পীরা। নিশো, পূজা চেরির সঙ্গে এতে আরও অভিনয় করছেন চঞ্চল চৌধুরী। আগামী বছর রোজার ঈদে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে দম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত