চিররঞ্জন সরকার

মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথি। দেবী সরস্বতীর পূজার দিন। সরস্বতী শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থে ‘সরস্+বতু’ স্ত্রী লিঙ্গে ‘ঈ’ প্রত্যয় যুক্ত যোগে ‘সরস্বতী’। ‘সতত রসে সমৃদ্ধা’। তিনি শুক্লবর্ণা, শুভ্র হংসবাহনা, ‘বীণা-রঞ্জিত পুস্তক হস্তে’ অর্থাৎ এক হাতে বীণা ও অন্য হাতে পুস্তক। শিক্ষার্থীরা দেবী সরস্বতীর পূজা বেশি করে। কেন? কারণ তিনি জ্ঞানদায়িনী বিদ্যার দেবী। বিদ্যা দান করেন তিনি। মানুষ জ্ঞানপিপাসু। সর্বদা জ্ঞানের সন্ধান করে। ‘নহি জ্ঞানেন সদৃশং পবিত্রমিহ বিদ্যতে’ (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা-৪/৩৯), অর্থাৎ ‘জ্ঞানের মতো পবিত্র আর কিছু নেই’।
ছোটবেলায় দেখতাম সরস্বতী পূজার সঙ্গে কৈশোরের একটা গভীর সংযোগ আছে। আর সব পূজা বড়দের, কেবল বাড়িতে সরস্বতী পূজার সকালে ছোটদের বইপূজা, অঞ্জলি দেওয়া, প্রসাদে বীরখণ্ডি (কেউবা বলে তিলে পাটালি) আর বছরের প্রথম কুল (বরই) খাওয়া। গুরুজনদের সতর্কবাণী থাকত: সরস্বতী পূজার আগে কুল খেলে বিদ্যে হবে না। ঔপনিবেশিক এই দেশে মধ্যবিত্ত আর নিম্নবিত্ত পরিবার-কাঠামোয় ‘বিদ্যা’ সম্পর্কে বড্ডই স্পর্শকাতরতা ছিল। সব পড়ুয়া-কিশোরের কাছে, গাধার সামনে মুলার মতো ওই একটা আপ্তবাক্য অদৃশ্য অক্ষরে লেখা থাকত: লেখাপড়া করে যে গাড়িঘোড়া চড়ে সে।
কথাটা এখন ক্ষয়ে গেছে, কিন্তু সে কালে ওইটাই কিন্তু ছিল উজ্জীবনের মূলমন্ত্র। সরস্বতীর বরপুত্র বলে একটা কথা শোনা যেত। কিন্তু অভিজ্ঞতা ঘেঁটে দেখছি, মা সরস্বতী সম্পর্কে গভীর আস্থা ছিল ততটা গুডবয়দের নয়, যতটা ‘বিদ্যাস্থানে ভয়ে বচঃ’দের। তারাই নিষ্ঠার সঙ্গে এই ‘বিদ্যাং দেহি’ দেবীকে ডাকত ভক্তি ভরে, খুব চেষ্টা করত কুল না খেতে, কিন্তু খেয়ে ফেলতই বনে-বাদাড়ে বা বেপাড়ায় গাছ ঝাঁকিয়ে, অবশ্য স্বীকার করত না। সারা বছর যাদের হারিকেনের আলোয় পড়তে বসে চোখ জুড়ে যেত শ্রান্তিতে, সারা বিকেল ধরে বল পেটানোর চোটে, তারাই এই অনধ্যায়ের একটি মাত্র দিনে ছিল মা সরস্বতীর একনিষ্ঠ ভক্ত। ওই দিন পড়া নিষিদ্ধ। পড়তে বসতে বললে যাদের জ্বর আসত, বইয়ের পাতার অক্ষরের জঙ্গলে যারা পথ হারাত, তারাই সরস্বতীর মূর্তির পায়ের কাছে ভক্তি ভরে রেখে দিত ক্লাসের পাঠ্যবই ডাঁই করে—যদি দেবী দয়া করে ওই দুর্বোধ্য বিষয়গুলো কোনোভাবে বিদ্যার্থীর স্থবির মগজে অন্তঃপ্রবিষ্ট করিয়ে দেন, সেই ভরসায়।
পূজার পর মূর্তির পদতল থেকে গাঁদা ফুলের ছেঁড়া টুকরো বইয়ের পৃষ্ঠার মধ্যে গুঁজে রেখে সে কী আত্মপ্রসাদ! ভাবটা, এবার কে আর ঠেকায় আমাকে! বাবার হাতের চড়, দাদাদের কানমলা, ক্লাস-টিচারের বেত বা নিল-ডাউন করানো, এত সব আয়োজন দিয়েও যাদের বিদ্যা ব্যাপারটা গেলানো যেত না কিছুতেই, তাদের কিন্তু দেবীর ওপর আস্থা টলতে দেখিনি কোনো দিন। তারাই রাত জেগে লাল নীল হলদে রঙের কাগজ কেটে শিকলি বানাত, দিদিদের বা পিসিদের দিয়ে আলপনা দেওয়াত মেঝেয়, জোগাড় করে আনত গাছে চড়ে পলাশ ফুল, কাঁধে করে কুমোরপাড়া থেকে ঠাকুর আনতে বা বিসর্জন দিতে তাদের উৎসাহের কিছু কমতি দেখিনি। অবশ্য পূজার চেয়ে প্রসাদ ভক্ষণের টানটা ছিল বেশি। কখনো লুচি-লাবড়া-পায়েস, পিতলের ডেগে রাঁধা মুগের ডালের খিচুড়ি, বাঁধাকপির তরকারি আর কুলের অম্বল—আহ, এখনো যেন জিবে জল আসে!
ভাবতে ভাবতে মনে এল, এসব দিন কি একেবারেই পালটে গেছে? সরস্বতী পূজার দিনটা নিয়ে বড্ড যে আনন্দ আর মাতামাতি ছিল আমাদের। সেই ভোরে ওঠা, রোদে দাঁড় করিয়ে খালি গায়ে তেল-হলুদবাটা মাখিয়ে মায়ের স্নান করিয়ে দেওয়া হি-হি করা শীতে—তার রোমাঞ্চ কি আজকে আর নেই? কিংবা দিদি বা ছোট বোন যে আবদার করে শাড়িতে হলুদ রং ছুপিয়ে নিত, তারপর সেই হলুদ শাড়ি আধগোছানো করে পরে সে কী ছুট স্কুলের দিকে! ‘কৈশোর-যৌবন যবে দোহে দেখা দিল’, সেই সময়ে পথে বেরিয়ে বন্ধুদের নিয়ে মেয়ে-স্কুলে ঠাকুর দেখতে যাওয়ার সেই অদম্য টানটা আজও কি ছেলেদের আছে? মাঘের উতলা হাওয়ায় কলেজের সহপাঠিনীদের শ্যাম্পু-করা চুলের ছড়ানো সুবাসে বুকের মধ্যে দামামা বাজার প্রহর কি আজও নেই? কী জানি!
শ্বেতপদ্মাসনা দেবীর দিকে চাইলে এখনো কত মধুর মধুর ধ্বনি বাজে। নিভৃতবাসিনী বীণাপাণির অমৃতমুরতিমতি বাণীর চেয়ে অনেক সজীব আমাদের সেই অভিমানী বিদ্যার্থী জীবনের শুভ্র স্মৃতি। শুভ্রই তো, তাতে এক ফোটা স্বার্থকলঙ্কের দাগ লাগেনি আজও।
আমাদের ছোটবেলায় সরস্বতীর মূর্তিপূজা কলেজে বা স্কুলে হলেও বাড়িতে হতো বইপূজা। একটা কাঠের জলচৌকিতে আসন পেতে তাতে রাখা হতো বই, দোয়াতে দুধ ভরে তাতে থাকত খাগের কলম আর যবের শিষগাছ। পুরুতমশাই এসে সংস্কৃত মন্ত্র পড়ে তাতেই আবেশ তৈরি করতেন। তার সঙ্গে বাড়ির পড়ুয়া ছেলেমেয়েরা সমস্বরে হেঁকে বলত:
সরস্বত্যৈঃ নমো নিত্যম্
ভদ্রকাল্যৈ নমো নমঃ।
বেদবেদাঙ্গ বেদান্ত
বিদ্যাস্থানেভ্য এব চ।।
তিনবার পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার জন্য ঝুরো ফুলের আয়োজন থাকতই। দূর থেকে যারা ফুল ছুড়ত বইকে লক্ষ্য করে, তাদের কারও কারও লক্ষ থাকত ঠাকুরমশাইয়ের মাথার দিকে। ফলে, গাঁদা ফুলের পাপড়িশোভিত সেই মানুষটিকে দেখে ভারী কৌতুক লাগত। আমাদের নজর থাকত অবশ্য বড় পরাতের প্রসাদের থালার দিকে। পরে তার থেকেই হবে প্রসাদ বিতরণ, যাতে থাকবে খই-চিড়ে-আখের টুকরো-খেজুর-কুল-সাদা বীরখণ্ডী-সাদা কদমা-সন্দেশ-মুড়কি। এই মুড়কি আবার দুই রকম। কনকচূড় ধান থেকে খই বানিয়ে তাতে চিনির রস আর এলাচের গন্ধ দিয়ে চিনির মুড়কি। আর এক রকম মুড়কি হতো নতুন খেজুরের গুড় দিয়ে। এখন আর এসব ভক্ষ্যের কীই-বা মহিমা আছে? ক্যাডবেরি-কোক-চিপস-চিকেন ফ্রাই-পিৎজা-বার্গারের স্বাদে এ কালের বাচ্চাদের রুচি পালটে গেছে। নতুন গুড়ের পায়েসের সাধ্য কী যে নবীন কিশোর-কিশোরীকে আকর্ষণ করে! তবে কি সরস্বতী পূজা আজ কেবল আমাদের দুর্মর স্মৃতিকাতরতা?
সত্যিই বছরে এই একটা দিনের সকাল দেখার মতো। দ্রুত ভ্রাম্যমাণ বা সাইকেলবিহারী পুরোহিত মুক্তকচ্ছ হয়ে ছুটছেন বাড়ি-বাড়ি আর তাকে আঁকশির মতো আটকে ধরে কাতর কণ্ঠে মিনতি: প্লিজ, ঠাকুরমশাই, একটুখানি ফুল ফেলে যান, প্লিজ, বাচ্চাগুলো অঞ্জলি দেবে বলে উপোস করে আছে। এক দিকে অনিচ্ছুক পূজারী, আরেক দিকে অসহায় গৃহস্থ। দেখার মতো সেই টানাপোড়েন। অমূল্যচরণ বিদ্যাভূষণের লেখা ‘সরস্বতী’ বইটিতে আছে, ‘সরস্বতী নিজে স্ত্রী দেবতা; কিন্তু স্ত্রীলোকেরা অঞ্জলি দিতে পাইত না। বাঙালির বোধ হয় ভয় ছিল, পাছে মেয়েরা দেবীর অনুগ্রহে লেখাপড়া শিখিয়া ফেলে।’
নারীবাদীরা এই ভেবে স্বস্তি পেতে পারেন যে এখন বিদ্যাদেবী কম্পিউটার-ট্যাব-ল্যাপটপ-মোবাইলের রূপ ধরে আমাদের সামনে হাজির হয়েছেন। এখনকার বিদ্যা ইন্টারনেটের বিশ্ববিদ্যা। তার কৃপায় কিন্তু লক্ষ্মী আর সরস্বতীকে একই সঙ্গে লাভ করা যায়। কাজেই, এ কালের মা সরস্বতীর পদতলে আর বই রেখে লাভ নেই, কারণ ভেতরে-ভেতরে এই হংসবাহনা মা যা হয়েছেন, তার বিগ্রহ হলো কম্পিউটার-ট্যাব-ল্যাপটপ-মোবাইলবাহনা বিশ্ববিদ্যাদায়িনী। সরস্বতীপূজার দিনে কম্পিউটার-ট্যাব-ল্যাপটপ-মোবাইল-ইন্টারনেটসহযোগে একটা নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে!
বাংলাদেশে এখন প্রায় পাঁচ কোটি মানুষের হাতের মুঠোয় দুনিয়া। এই মানুষগুলো স্মার্টফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। একটি ফোন সম্পূর্ণ জীবনকে কীভাবে বদলে দিতে পারে, কয়েক বছর আগে তা কল্পনারও অতীত ছিল। বস্তুত স্মার্টফোন কেড়ে নিলে এখন অনেকেরই জীবন থমকে যাবে। এখন অনেকেই নিজ নিজ স্মার্টফোনের স্ক্রিনে আঙুল চালিয়ে অনলাইন কেনাকাটা করছেন, নানা তথ্য আদান-প্রদান করছেন, দেশে-বিদেশে কথা বলছেন, এর সবই তো মা সরস্বতীর কৃপা!
এ কালের ছেলেমেয়েরা মা সরস্বতীর কাছে আর বিদ্যা প্রার্থনা করে না। তারা প্রার্থনা করে: মা, দ্রুতগতিসম্পন্ন ইন্টারনেট পরিষেবা দাও, বিনা পয়সায় ইন্টারনেট ওয়াই-ফাই দাও, মোবাইল ডেটা সস্তা করে দাও, আমাকে আমেরিকা-কানাডা-অস্ট্রেলিয়ায় লেখাপড়ার সুযোগ করে দাও। এখন ইন্টারনেট হয়ে উঠেছে বিদ্যা, কম্পিউটার-ট্যাব-ল্যাপটপ-মোবাইল হয়ে উঠেছে বিদ্যার বাহন!
প্রশ্ন হলো, আগামী দিনে শিশুরা কার পূজা করবে, দেবী সরস্বতীর, না ইন্টারনেট-কম্পিউটার-ট্যাব-ল্যাপটপ-মোবাইলের? নাকি অন্যকিছু এসে দখল করে নেবে নতুন প্রজন্মের মন ও মগজ?

মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথি। দেবী সরস্বতীর পূজার দিন। সরস্বতী শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থে ‘সরস্+বতু’ স্ত্রী লিঙ্গে ‘ঈ’ প্রত্যয় যুক্ত যোগে ‘সরস্বতী’। ‘সতত রসে সমৃদ্ধা’। তিনি শুক্লবর্ণা, শুভ্র হংসবাহনা, ‘বীণা-রঞ্জিত পুস্তক হস্তে’ অর্থাৎ এক হাতে বীণা ও অন্য হাতে পুস্তক। শিক্ষার্থীরা দেবী সরস্বতীর পূজা বেশি করে। কেন? কারণ তিনি জ্ঞানদায়িনী বিদ্যার দেবী। বিদ্যা দান করেন তিনি। মানুষ জ্ঞানপিপাসু। সর্বদা জ্ঞানের সন্ধান করে। ‘নহি জ্ঞানেন সদৃশং পবিত্রমিহ বিদ্যতে’ (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা-৪/৩৯), অর্থাৎ ‘জ্ঞানের মতো পবিত্র আর কিছু নেই’।
ছোটবেলায় দেখতাম সরস্বতী পূজার সঙ্গে কৈশোরের একটা গভীর সংযোগ আছে। আর সব পূজা বড়দের, কেবল বাড়িতে সরস্বতী পূজার সকালে ছোটদের বইপূজা, অঞ্জলি দেওয়া, প্রসাদে বীরখণ্ডি (কেউবা বলে তিলে পাটালি) আর বছরের প্রথম কুল (বরই) খাওয়া। গুরুজনদের সতর্কবাণী থাকত: সরস্বতী পূজার আগে কুল খেলে বিদ্যে হবে না। ঔপনিবেশিক এই দেশে মধ্যবিত্ত আর নিম্নবিত্ত পরিবার-কাঠামোয় ‘বিদ্যা’ সম্পর্কে বড্ডই স্পর্শকাতরতা ছিল। সব পড়ুয়া-কিশোরের কাছে, গাধার সামনে মুলার মতো ওই একটা আপ্তবাক্য অদৃশ্য অক্ষরে লেখা থাকত: লেখাপড়া করে যে গাড়িঘোড়া চড়ে সে।
কথাটা এখন ক্ষয়ে গেছে, কিন্তু সে কালে ওইটাই কিন্তু ছিল উজ্জীবনের মূলমন্ত্র। সরস্বতীর বরপুত্র বলে একটা কথা শোনা যেত। কিন্তু অভিজ্ঞতা ঘেঁটে দেখছি, মা সরস্বতী সম্পর্কে গভীর আস্থা ছিল ততটা গুডবয়দের নয়, যতটা ‘বিদ্যাস্থানে ভয়ে বচঃ’দের। তারাই নিষ্ঠার সঙ্গে এই ‘বিদ্যাং দেহি’ দেবীকে ডাকত ভক্তি ভরে, খুব চেষ্টা করত কুল না খেতে, কিন্তু খেয়ে ফেলতই বনে-বাদাড়ে বা বেপাড়ায় গাছ ঝাঁকিয়ে, অবশ্য স্বীকার করত না। সারা বছর যাদের হারিকেনের আলোয় পড়তে বসে চোখ জুড়ে যেত শ্রান্তিতে, সারা বিকেল ধরে বল পেটানোর চোটে, তারাই এই অনধ্যায়ের একটি মাত্র দিনে ছিল মা সরস্বতীর একনিষ্ঠ ভক্ত। ওই দিন পড়া নিষিদ্ধ। পড়তে বসতে বললে যাদের জ্বর আসত, বইয়ের পাতার অক্ষরের জঙ্গলে যারা পথ হারাত, তারাই সরস্বতীর মূর্তির পায়ের কাছে ভক্তি ভরে রেখে দিত ক্লাসের পাঠ্যবই ডাঁই করে—যদি দেবী দয়া করে ওই দুর্বোধ্য বিষয়গুলো কোনোভাবে বিদ্যার্থীর স্থবির মগজে অন্তঃপ্রবিষ্ট করিয়ে দেন, সেই ভরসায়।
পূজার পর মূর্তির পদতল থেকে গাঁদা ফুলের ছেঁড়া টুকরো বইয়ের পৃষ্ঠার মধ্যে গুঁজে রেখে সে কী আত্মপ্রসাদ! ভাবটা, এবার কে আর ঠেকায় আমাকে! বাবার হাতের চড়, দাদাদের কানমলা, ক্লাস-টিচারের বেত বা নিল-ডাউন করানো, এত সব আয়োজন দিয়েও যাদের বিদ্যা ব্যাপারটা গেলানো যেত না কিছুতেই, তাদের কিন্তু দেবীর ওপর আস্থা টলতে দেখিনি কোনো দিন। তারাই রাত জেগে লাল নীল হলদে রঙের কাগজ কেটে শিকলি বানাত, দিদিদের বা পিসিদের দিয়ে আলপনা দেওয়াত মেঝেয়, জোগাড় করে আনত গাছে চড়ে পলাশ ফুল, কাঁধে করে কুমোরপাড়া থেকে ঠাকুর আনতে বা বিসর্জন দিতে তাদের উৎসাহের কিছু কমতি দেখিনি। অবশ্য পূজার চেয়ে প্রসাদ ভক্ষণের টানটা ছিল বেশি। কখনো লুচি-লাবড়া-পায়েস, পিতলের ডেগে রাঁধা মুগের ডালের খিচুড়ি, বাঁধাকপির তরকারি আর কুলের অম্বল—আহ, এখনো যেন জিবে জল আসে!
ভাবতে ভাবতে মনে এল, এসব দিন কি একেবারেই পালটে গেছে? সরস্বতী পূজার দিনটা নিয়ে বড্ড যে আনন্দ আর মাতামাতি ছিল আমাদের। সেই ভোরে ওঠা, রোদে দাঁড় করিয়ে খালি গায়ে তেল-হলুদবাটা মাখিয়ে মায়ের স্নান করিয়ে দেওয়া হি-হি করা শীতে—তার রোমাঞ্চ কি আজকে আর নেই? কিংবা দিদি বা ছোট বোন যে আবদার করে শাড়িতে হলুদ রং ছুপিয়ে নিত, তারপর সেই হলুদ শাড়ি আধগোছানো করে পরে সে কী ছুট স্কুলের দিকে! ‘কৈশোর-যৌবন যবে দোহে দেখা দিল’, সেই সময়ে পথে বেরিয়ে বন্ধুদের নিয়ে মেয়ে-স্কুলে ঠাকুর দেখতে যাওয়ার সেই অদম্য টানটা আজও কি ছেলেদের আছে? মাঘের উতলা হাওয়ায় কলেজের সহপাঠিনীদের শ্যাম্পু-করা চুলের ছড়ানো সুবাসে বুকের মধ্যে দামামা বাজার প্রহর কি আজও নেই? কী জানি!
শ্বেতপদ্মাসনা দেবীর দিকে চাইলে এখনো কত মধুর মধুর ধ্বনি বাজে। নিভৃতবাসিনী বীণাপাণির অমৃতমুরতিমতি বাণীর চেয়ে অনেক সজীব আমাদের সেই অভিমানী বিদ্যার্থী জীবনের শুভ্র স্মৃতি। শুভ্রই তো, তাতে এক ফোটা স্বার্থকলঙ্কের দাগ লাগেনি আজও।
আমাদের ছোটবেলায় সরস্বতীর মূর্তিপূজা কলেজে বা স্কুলে হলেও বাড়িতে হতো বইপূজা। একটা কাঠের জলচৌকিতে আসন পেতে তাতে রাখা হতো বই, দোয়াতে দুধ ভরে তাতে থাকত খাগের কলম আর যবের শিষগাছ। পুরুতমশাই এসে সংস্কৃত মন্ত্র পড়ে তাতেই আবেশ তৈরি করতেন। তার সঙ্গে বাড়ির পড়ুয়া ছেলেমেয়েরা সমস্বরে হেঁকে বলত:
সরস্বত্যৈঃ নমো নিত্যম্
ভদ্রকাল্যৈ নমো নমঃ।
বেদবেদাঙ্গ বেদান্ত
বিদ্যাস্থানেভ্য এব চ।।
তিনবার পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার জন্য ঝুরো ফুলের আয়োজন থাকতই। দূর থেকে যারা ফুল ছুড়ত বইকে লক্ষ্য করে, তাদের কারও কারও লক্ষ থাকত ঠাকুরমশাইয়ের মাথার দিকে। ফলে, গাঁদা ফুলের পাপড়িশোভিত সেই মানুষটিকে দেখে ভারী কৌতুক লাগত। আমাদের নজর থাকত অবশ্য বড় পরাতের প্রসাদের থালার দিকে। পরে তার থেকেই হবে প্রসাদ বিতরণ, যাতে থাকবে খই-চিড়ে-আখের টুকরো-খেজুর-কুল-সাদা বীরখণ্ডী-সাদা কদমা-সন্দেশ-মুড়কি। এই মুড়কি আবার দুই রকম। কনকচূড় ধান থেকে খই বানিয়ে তাতে চিনির রস আর এলাচের গন্ধ দিয়ে চিনির মুড়কি। আর এক রকম মুড়কি হতো নতুন খেজুরের গুড় দিয়ে। এখন আর এসব ভক্ষ্যের কীই-বা মহিমা আছে? ক্যাডবেরি-কোক-চিপস-চিকেন ফ্রাই-পিৎজা-বার্গারের স্বাদে এ কালের বাচ্চাদের রুচি পালটে গেছে। নতুন গুড়ের পায়েসের সাধ্য কী যে নবীন কিশোর-কিশোরীকে আকর্ষণ করে! তবে কি সরস্বতী পূজা আজ কেবল আমাদের দুর্মর স্মৃতিকাতরতা?
সত্যিই বছরে এই একটা দিনের সকাল দেখার মতো। দ্রুত ভ্রাম্যমাণ বা সাইকেলবিহারী পুরোহিত মুক্তকচ্ছ হয়ে ছুটছেন বাড়ি-বাড়ি আর তাকে আঁকশির মতো আটকে ধরে কাতর কণ্ঠে মিনতি: প্লিজ, ঠাকুরমশাই, একটুখানি ফুল ফেলে যান, প্লিজ, বাচ্চাগুলো অঞ্জলি দেবে বলে উপোস করে আছে। এক দিকে অনিচ্ছুক পূজারী, আরেক দিকে অসহায় গৃহস্থ। দেখার মতো সেই টানাপোড়েন। অমূল্যচরণ বিদ্যাভূষণের লেখা ‘সরস্বতী’ বইটিতে আছে, ‘সরস্বতী নিজে স্ত্রী দেবতা; কিন্তু স্ত্রীলোকেরা অঞ্জলি দিতে পাইত না। বাঙালির বোধ হয় ভয় ছিল, পাছে মেয়েরা দেবীর অনুগ্রহে লেখাপড়া শিখিয়া ফেলে।’
নারীবাদীরা এই ভেবে স্বস্তি পেতে পারেন যে এখন বিদ্যাদেবী কম্পিউটার-ট্যাব-ল্যাপটপ-মোবাইলের রূপ ধরে আমাদের সামনে হাজির হয়েছেন। এখনকার বিদ্যা ইন্টারনেটের বিশ্ববিদ্যা। তার কৃপায় কিন্তু লক্ষ্মী আর সরস্বতীকে একই সঙ্গে লাভ করা যায়। কাজেই, এ কালের মা সরস্বতীর পদতলে আর বই রেখে লাভ নেই, কারণ ভেতরে-ভেতরে এই হংসবাহনা মা যা হয়েছেন, তার বিগ্রহ হলো কম্পিউটার-ট্যাব-ল্যাপটপ-মোবাইলবাহনা বিশ্ববিদ্যাদায়িনী। সরস্বতীপূজার দিনে কম্পিউটার-ট্যাব-ল্যাপটপ-মোবাইল-ইন্টারনেটসহযোগে একটা নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে!
বাংলাদেশে এখন প্রায় পাঁচ কোটি মানুষের হাতের মুঠোয় দুনিয়া। এই মানুষগুলো স্মার্টফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। একটি ফোন সম্পূর্ণ জীবনকে কীভাবে বদলে দিতে পারে, কয়েক বছর আগে তা কল্পনারও অতীত ছিল। বস্তুত স্মার্টফোন কেড়ে নিলে এখন অনেকেরই জীবন থমকে যাবে। এখন অনেকেই নিজ নিজ স্মার্টফোনের স্ক্রিনে আঙুল চালিয়ে অনলাইন কেনাকাটা করছেন, নানা তথ্য আদান-প্রদান করছেন, দেশে-বিদেশে কথা বলছেন, এর সবই তো মা সরস্বতীর কৃপা!
এ কালের ছেলেমেয়েরা মা সরস্বতীর কাছে আর বিদ্যা প্রার্থনা করে না। তারা প্রার্থনা করে: মা, দ্রুতগতিসম্পন্ন ইন্টারনেট পরিষেবা দাও, বিনা পয়সায় ইন্টারনেট ওয়াই-ফাই দাও, মোবাইল ডেটা সস্তা করে দাও, আমাকে আমেরিকা-কানাডা-অস্ট্রেলিয়ায় লেখাপড়ার সুযোগ করে দাও। এখন ইন্টারনেট হয়ে উঠেছে বিদ্যা, কম্পিউটার-ট্যাব-ল্যাপটপ-মোবাইল হয়ে উঠেছে বিদ্যার বাহন!
প্রশ্ন হলো, আগামী দিনে শিশুরা কার পূজা করবে, দেবী সরস্বতীর, না ইন্টারনেট-কম্পিউটার-ট্যাব-ল্যাপটপ-মোবাইলের? নাকি অন্যকিছু এসে দখল করে নেবে নতুন প্রজন্মের মন ও মগজ?

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথি। দেবী সরস্বতীর পূজার দিন। সরস্বতী শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থে ‘সরস্+বতু’ স্ত্রী লিঙ্গে ‘ঈ’ প্রত্যয় যুক্ত যোগে ‘সরস্বতী’। ‘সতত রসে সমৃদ্ধা’। তিনি শুক্লবর্ণা, শুভ্র হংসবাহনা, ‘বীণা-রঞ্জিত পুস্তক হস্তে’ অর্থাৎ এক হাতে বীণা ও অন্য হাতে পুস্তক। শিক্ষার্থীরা দেবী সরস্বতীর
০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথি। দেবী সরস্বতীর পূজার দিন। সরস্বতী শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থে ‘সরস্+বতু’ স্ত্রী লিঙ্গে ‘ঈ’ প্রত্যয় যুক্ত যোগে ‘সরস্বতী’। ‘সতত রসে সমৃদ্ধা’। তিনি শুক্লবর্ণা, শুভ্র হংসবাহনা, ‘বীণা-রঞ্জিত পুস্তক হস্তে’ অর্থাৎ এক হাতে বীণা ও অন্য হাতে পুস্তক। শিক্ষার্থীরা দেবী সরস্বতীর
০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথি। দেবী সরস্বতীর পূজার দিন। সরস্বতী শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থে ‘সরস্+বতু’ স্ত্রী লিঙ্গে ‘ঈ’ প্রত্যয় যুক্ত যোগে ‘সরস্বতী’। ‘সতত রসে সমৃদ্ধা’। তিনি শুক্লবর্ণা, শুভ্র হংসবাহনা, ‘বীণা-রঞ্জিত পুস্তক হস্তে’ অর্থাৎ এক হাতে বীণা ও অন্য হাতে পুস্তক। শিক্ষার্থীরা দেবী সরস্বতীর
০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথি। দেবী সরস্বতীর পূজার দিন। সরস্বতী শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থে ‘সরস্+বতু’ স্ত্রী লিঙ্গে ‘ঈ’ প্রত্যয় যুক্ত যোগে ‘সরস্বতী’। ‘সতত রসে সমৃদ্ধা’। তিনি শুক্লবর্ণা, শুভ্র হংসবাহনা, ‘বীণা-রঞ্জিত পুস্তক হস্তে’ অর্থাৎ এক হাতে বীণা ও অন্য হাতে পুস্তক। শিক্ষার্থীরা দেবী সরস্বতীর
০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫