Ajker Patrika

ক্রিকেট বিশ্বে পঞ্চম ধনী বিসিবি

রানা আব্বাস, ঢাকা
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২১, ১১: ১৫
ক্রিকেট বিশ্বে পঞ্চম ধনী বিসিবি

সত্তরের দশকে ক্রীড়া সংগঠকেরা গাঁটের পয়সা খরচ করে শুরু করেছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বা আজকের বিসিবি। তখন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের (ঢাকা স্টেডিয়াম) যে ছোট্ট কক্ষে এর কার্যালয় ছিল, সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ পর্যন্ত ছিল না। রাতের বেলা সংগঠকেরা কাজ করতেন মোমবাতি জ্বালিয়ে। বিসিবির আজকের বৈভবের কাছে সে গল্প সত্যিই বেমানান। সেদিনের মোমবাতির আলো ছাপিয়ে বিসিবি এখন অর্থের পাহাড়ে। সে পরিমাণও চমকে ওঠার মতো।

করোনা মহামারিতে লোকসানে পড়েনি–সারা পৃথিবীতে এমন প্রতিষ্ঠান বোধহয় কমই আছে। ব্যতিক্রম যা আছে, তাদের তালিকায় বিসিবি। তাদের আর্থিক অগ্রগতি এ সময়েও বেড়ে চলেছে।

বিসিবির গত ১০ বছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে আয়-ব্যয়, নিট উদ্বৃত্ত, নগদ ও ব্যাংক জমা, এফডিআর মিলে বিসিবির স্থায়ী মূলধন বা পুঞ্জিভূত তহবিলে আছে ৮৩২ কোটি ৬৮ লাখ ৮৭ হাজার টাকা। ২০১১-১২ অর্থবছরে যা ছিল ৩৯৭ কোটি ৫২ লাখ ৫১ হাজার টাকা।

করোনা মহামারিতে যেখানে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার মতো ধনী ক্রিকেট বোর্ডগুলো কর্মী ছাঁটাই, বেতন কমানো কিংবা ব্যয় সংকোচনের মতো পদক্ষেপ নিয়েছে, বিসিবিকে তার কোনো পথেই হাঁটতেই হয়নি। করোনাধাক্কায় কারও চাকরি যায়নি। দেশি-বিদেশি কোচসহ চার শতাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বেতন ছিল নিয়মিত। এর বাইরে কোভিড মহামারিতে বিসিবি প্রধানমন্ত্রী তহবিল, ত্রাণ, আম্পায়ার্স সমিতি, সাবেক-বর্তমান খেলোয়াড়দের চিকিৎসা, সাংবাদিক, ক্রিকেট সরঞ্জামাদি ও করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের অনুদান দিয়েছে প্রায় ৪ কোটি টাকা। ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডকে (ডব্লিউআইসিবি) ঋণও দিয়েছে ৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।

বিশ্বে বিসিবির অবস্থান
প্রশ্ন উঠতে পারে, মাত্র এক দশকে বিসিবি আর্থিকভাবে কী করে এত শক্তিশালী হলো? তার জবাব দিয়েছেন ক্রীড়া সংগঠকেরা। তাঁরা বলছেন, ক্রিকেট অর্থনীতিতে বিসিবি সবচেয়ে বড় লাফ দিয়েছে গত দশকের শুরুর দিকে। সাবেক বিসিবি সভাপতি (বর্তমানে অর্থমন্ত্রী) আ হ ম মুস্তফা কামালের (সেপ্টেম্বর ২০০৯ থেকে অক্টোবর ২০১২) সময়ে যে গতিটা পেয়েছিল, সেটা অব্যাহত রাখেন টানা নয় বছর বোর্ডের সভাপতির পদে থাকা নাজমুল হাসান পাপন।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন ও টেস্টখেলুড়ে ক্রিকেট বোর্ডগুলোর বার্ষিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বিসিবি এখন বিশ্বের পঞ্চম ধনী ক্রিকেট বোর্ড। অন্যান্য ক্রীড়া সংগঠনের তুলনায় দেশে তারা যে এক নম্বর, তা বলাই বাহুল্য। দেশের দ্বিতীয় বড় ক্রীড়া সংস্থা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারশনের (বাফুফে) আয় গত পাঁচ বছরে গড়ে ৪০ কোটি টাকাও ছাড়ায়নি। উদ্বৃত্ত দূরে থাক, গত চার বছরে বাফুফের বাজেট ঘাটতি ছিল ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকার মতো।

ধনী ক্রিকেট বোর্ডের তালিকায় চার নম্বরে থাকা পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) সঙ্গে খুব বেশি দূরত্ব নেই বিসিবির। সবার ওপরে থাকা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) তহবিলে আছে চার হাজার কোটি টাকার বেশি। এই তালিকায় দুইয়ে থাকা ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) আছে তিন হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি আর তৃতীয় ধনী ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। আর্থিক অবস্থানে বাংলাদেশ বড় ব্যবধানে পেছনে ফেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কাকে।

বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বললেন, ‘আমরা তহবিল ব্যবস্থাপনা (ফান্ড ম্যানেজমেন্ট) ঠিকভাবে করার চেষ্টা করছি। যেন আয় ও ব্যয়ে ভারসাম্য থাকে। আইসিসি থেকে শ্রীলঙ্কা-ওয়েস্ট ইন্ডিজ যে টাকা পায়, আমরাও সেটাই পাই। ম্যানেজমেন্ট এখানে বড় বিষয়। এরপরও যে কিছু হয় না, সেটি বলব না।’

বিসিবির আয়ের উৎস
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা আইসিসি ও আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা এসিসি থেকে পাওয়া লভ্যাংশ, ফান্ড, স্পনসরশিপ মানি, টেলিভিশনের সম্প্রচারস্বত্ব, ব্যাংক সুদ ও দেশের মাঠে হওয়া বিভিন্ন সিরিজ-টুর্নামেন্ট থেকেই মূলত আয় করে বিসিবি।

গত এক দশকে বিসিবির আর্থিকভাবে শক্তিশালী হয়ে ওঠার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে পাঁচটি বড় টুর্নামেন্ট। ২০১১ বিশ্বকাপের সহ-আয়োজক হিসেবে বিসিবি আইসিসি থেকে পেয়েছে ১৮৬ কোটি ৩৫ লাখ আর ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এককভাবে আয়োজন করে পেয়েছে ১৩০ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। ২০১২ থেকে ২০১৬—টানা তিনটি এশিয়া কাপ আয়োজন করে বিসিবির অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে ৬৪ কোটির বেশি টাকা। গত এক দশকে এই পাঁচ টুর্নামেন্ট থেকেই বিসিবির আয় প্রায় ৩৮০ কোটি টাকা।

নিজাম উদ্দিন বলেন, ঘরের মাঠে আয়োজিত আইসিসির টুর্নামেন্ট বিসিবির আর্থিক চেহারাটা বদলে দিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে, বিশেষ করে বিপিএল। তবে বড় অংশ এসেছে আইসিসি থেকেই।

গত চার বছরে বিসিবির বিপণন খাতেও আয় বেড়েছে। মিডিয়া, টিম স্পনসর ও অন্যান্য স্পনসর রাইটস ফি থেকে বোর্ডের আয় প্রায় ২.৯ কোটি ডলার বা প্রায় ২৫০ কোটি টাকা।

বিসিবির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আয়ের উৎস ফিক্সড ডিপোজিট (এফডিআর)। নিয়মিত বিভিন্ন শিডিউল ব্যাংকে এফডিআর বিনিয়োগ করে গত তিন অর্থবছরে এসেছে ১৫২ কোটি ১৯ লাখ টাকা। উল্লিখিত অর্থবছরে সুদ থেকে বিসিবির অর্জিত আয়ের ওপর কর রেয়াতি সুবিধা অনুমোদন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এই সময়ে বিসিবি ব্যাংকে বিনিয়োগকৃত অর্থের সুদবাবদ প্রাপ্ত আয়ের ওপর কর রেয়াতি বা ট্যাক্স এক্সাম্পশন সুবিধা বাবদ সাশ্রয় করেছে ১৬ কোটি ৯১ লাখ টাকা। 
 
মহামারিতেও বেড়েছে আয়
করোনা মহামারিতে যেখানে দেশ-বিদেশে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান আর্থিক লোকসানে পড়েছে, বিসিবির সেটির আঁচ খুব একটা লাগেনি। উল্টো চলতি অর্থবছরে গত বছরের তুলনায় সম্ভাব্য আয় ৪১ কোটি টাকার বেশি আশা করছে বিসিবি।

করোনায় খেলা বন্ধ থাকায় বিসিবিকে গত মৌসুমে আয়োজন করতে হয়নি ছেলে, মেয়ে ও বয়সভিত্তিক নানা পর্যায়ের ১৫টির বেশি লিগ বা টুর্নামেন্ট। স্থগিত হয়েছে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সিরিজ। যেগুলোয় লাভের চেয়ে ব্যয়ই হতো বেশি। অন্যদিকে আইসিসির ফান্ড, স্পনসর মানি কিংবা এফডিআর থেকে আয় অব্যাহত থেকেছে। 
বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বললেন, ‘গত দুই বছরে আইসিসির একটা ফান্ড বেড়ে গেছে। সে কারণে আমাদেরও বেড়েছে। এখন দেখা যাক আইসিসির টুর্নামেন্টগুলো হয় কি না! সামনে ভারত আর অস্ট্রেলিয়ার আয়োজনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হবে। আমরা কিন্তু খুবই ভেবেচিন্তে, নিশ্চিত হয়েই বাজেট করি।

কমছে বিসিবির উদ্বৃত্ত
চলতি অর্থবছরে বিসিবির আয়-ব্যয় প্রায় সমান হতে চলেছে। এতে কমতে শুরু করেছে উদ্বৃত্তের পরিমাণ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আয়-ব্যয় শেষে বেঁচেছিল ৫২ কোটি ১৪ লাখ টাকা। পরের বছরে উদ্বৃত্ত প্রায় সমানই থাকে। গত অর্থবছরে এটি কমে গেছে অর্ধেকেরও বেশি। চলতি অর্থবছরে বিসিবির সম্ভাব্য উদ্বৃত্ত ধরা হচ্ছে প্রায় ৫ কোটি টাকা। গত ১৫ জুন বিসিবির পরিচালনা পরিষদের দশম সভায় অনুমোদন হওয়া চলতি অর্থবছরে বিসিবির সম্ভাব্য আয় ধরা হয়েছে ২৬৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা আর ব্যয় ২৬০ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

মহামারিতে ক্রিকেট আয়োজনে জৈব সুরক্ষাবলয় তৈরি করতে হয়, যেটি বেশ ব্যয়বহুল। অন্য সময়ের তুলনায় বিসিবির খরচ বেড়ে যাওয়ার এটিও একটি কারণ। ব্যয় বৃদ্ধি নিয়ে নিজাম উদ্দিনের ব্যাখ্যা, ‘আন্তর্জাতিক সিরিজের সংখ্যা বেড়েছে। খরচও অনেক বেড়ে গেছে। বেশির ভাগ খরচ বিদেশ সফরে হচ্ছে। আমাদের কিন্তু ঘরোয়া প্রতিযোগিতাগুলো সেভাবে বাড়েনি। সুরক্ষাবলয়, ১৫ দিনের কোয়ারেন্টিন, যে দল বাংলাদেশে আসছে তাদের ক্ষেত্রে খরচ বেড়ে গেছে। এতেই ব্যয় বাড়ছে।’

তবে খরচ বেড়ে যতই উদ্বৃত্ত কমুক, এটা অবশ্য বিসিবিকে ধাক্কা দেওয়ার মতো কিছইু নয়।

বিসিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও এসিসির সাবেক প্রধান নির্বাহী সৈয়দ আশরাফুল হকের প্রত্যাশা, বিপুল এই অর্থ বিসিবি আরও বেশি কাজে লাগাবে ক্রিকেটের উন্নয়নে, ‘এটা ব্যবহার করা দরকার ক্রিকেট উন্নয়নে। আরও সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে। ক্রিকেটের জন্যই তো হয়েছে এই ফান্ড। আমাদের মূল আয় আইসিসি থেকে। আমরা যদি পূর্ণ সদস্য না হতাম, তাহলে আমাদের হয়তো এত টাকা থাকত না। তখন সরকারি বাজেটের ওপর নির্ভর করতে হতো। ক্রিকেটে আরও উন্নতি করতে হলে ঠিক জায়গায় টাকাটা খরচ করতে হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আম্পায়ারিং নিয়ে অসন্তুষ্ট ইংল্যান্ড, আইসিসির কাছে করবে নালিশ

ক্রীড়া ডেস্ক    
আউট না হওয়ার পরও আম্পায়ার কেন আউট দিয়েছেন, বুঝতে পারছেন না জেমি স্মিথ (ডানে)। ছবি: ক্রিকইনফো
আউট না হওয়ার পরও আম্পায়ার কেন আউট দিয়েছেন, বুঝতে পারছেন না জেমি স্মিথ (ডানে)। ছবি: ক্রিকইনফো

অ্যাডিলেডে অ্যাশেজের তৃতীয় টেস্টের শুরুর দিন থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রিভিউর পর যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হচ্ছে, সেটা যথেষ্ট প্রশ্নবিদ্ধ। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া দুই দলের ক্রিকেটাররাই রীতিমতো অসন্তুষ্ট। ব্যাপারটিকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থার (আইসিসি) পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা এখন ইংল্যান্ডের।

স্নিকোমিটার অপারেটরদের ভুলের সুযোগে গতকাল সেঞ্চুরি করেছেন অ্যালেক্স ক্যারি। আজ দ্বিতীয় দিনে জেমি স্মিথের আউটের পর এই প্রযুক্তিগত সমস্যাটা আরও বেশি করে স্পষ্ট হয়েছে। ইনিংসের ৪৬তম ওভারের প্রথম বলে জেমি স্মিথের উইকেট নেওয়ার পর প্যাট কামিন্স উদযাপন শুরু করেন। অজি উইকেটরক্ষক ক্যারি ঠিকমতো ক্যাচ ধরেছেন কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে মাঠের আম্পায়ার নিতিন মেতন তৃতীয় আম্পায়ার ক্রিস গ্যাফানির শরণাপন্ন হয়েছেন। ব্যাট-বলে অনেক গ্যাপ থাকার পরও আল্ট্রাএজে স্পাইক ধরা পড়েছে। স্মিথ তৎক্ষণাৎ রিভিউ করতে চাইলেও পারেননি। উল্টো হতাশা প্রকাশ করেছেন। ক্রিকইনফোর প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, প্রযুক্তিগত সমস্যা এড়াতে আইসিসির কাছে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)।

কামিন্সের বলেই দুই ওভার আগে আউট হতে হতে বেঁচে গিয়েছেন জেমি স্মিথ। ইনিংসের ৪৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলে প্রথম স্লিপে উসমান খাজা ক্যাচ ধরার পর দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলেন। তৃতীয় আম্পায়ার গ্যাফানি সেটা আউট দেননি। তবে অস্ট্রেলিয়া দলের মনে হয়েছিল সেটা আউট। জেমি স্মিথ আউট না হওয়ায় মিচেল স্টার্ক তৎক্ষণাৎ ক্ষোভ ঝেড়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার বাঁহাতি পেসার বলেছেন, ‘স্নিকোমিটার বাদ দেওয়া উচিত। সবচেয়ে বাজে প্রযুক্তি এটা। আগের দিনও তারা ভুল করেছে। আজ তারা আরেকটা ভুল করল।’ তাঁর এই কথা রেকর্ড হয়েছে স্টাম্প মাইকে।

ক্যারি গতকাল অ্যাডিলেড টেস্টের প্রথম দিনে ৭২ রানে আউট হতে পারতেন ক্যারি। ইনিংসের ৬৩তম ওভারের প্রথম বলে ক্যারির বিপক্ষে কট বিহাইন্ডের আবেদন করেন ইংলিশ পেসার জশ টাঙ। আম্পায়ার আউট না দেওয়ায় রিভিউ নেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস। স্পাইক ধরা পড়ার পরও ক্যারিকে আউট ঘোষণা করা হয়নি। ৭২ রানে বেঁচে যাওয়া ক্যারি তৃতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। ১৪৩ বলে ৮ চার ও ১ ছক্কায় অজি উইকেটরক্ষক ব্যাটার ১০৬ রান করেছেন। টানা পাঁচবার আইসিসির বর্ষসেরা আম্পায়ারের পুরস্কার পাওয়া সাইমন টফেল বলেন, ‘আম্পায়ারকে নিরপেক্ষ সিদ্ধান্ত নিতে দেখতে চাই। প্রযুক্তি অবশ্যই পাশে থাকবে। প্রযুক্তির মাধ্যমে তো সবকিছু বদলে ফেলা যাবে না।’ টফেলের মতে দুই বছর আগে আম্পায়ারের ‘সফট সিগনাল’-এর নিয়ম উঠিয়ে দিয়েই আইসিসি ভুলটা করেছে।

পার্থ, ব্রিসবেন দুই টেস্টেই ইংল্যান্ড হেরেছে ৮ উইকেটে। অ্যাডিলেডে তৃতীয় টেস্টে সিরিজ বাঁচাতে নেমে তারা বড্ড বেকায়দায় পড়েছে। আজ দ্বিতীয় দিনের খেলা ইংলিশরা শেষ করেছে ৮ উইকেটে ২১৩ রানে। নবম উইকেটে ৮৪ বলে ৪৫ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি গড়েন স্টোকস-আর্চার। ছয় নম্বরে নামা স্টোকস ১৫১ বলে ৪৫ রানে অপরাজিত। আর্চার ৩০ রানে ব্যাটিং করছেন। এরই মধ্যে তিনি ৪৮ বল খেলেছেন। অস্ট্রেলিয়া তাদের প্রথম ইনিংসে ৩৭১ রানে গুটিয়ে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হঠাৎ কেন চেয়ার ছুড়ে মারতে গিয়েছিলেন ম্যাকগ্রা

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ২১
নাথান লায়ন নতুন রেকর্ড গড়ার পর চেয়ার ছুড়ে মারতে গিয়েছিলেন গ্লেন ম্যাকগ্রা। ছবি: সংগৃহীত
নাথান লায়ন নতুন রেকর্ড গড়ার পর চেয়ার ছুড়ে মারতে গিয়েছিলেন গ্লেন ম্যাকগ্রা। ছবি: সংগৃহীত

অনেকের হয়তো মনে হতে পারে গ্লেন ম্যাকগ্রার হঠাৎ সহিংস হয়ে ওঠার কারণ কী। আসলে ব্যাপারটা তা নয়। রাগ থেকে নয় বরং মজা করেই চেয়ার ছুড়ে মারতে গিয়েছিলেন তিনি।

অ্যাডিলেডে চলমান অ্যাশেজের তৃতীয় টেস্টে ধারাভাষ্যকারের কাজ করছেন ম্যাকগ্রা। আজ দ্বিতীয় দিনে নিজের চোখের সামনে দেখলেন কীভাবে তাঁর রেকর্ড ভেঙে গেল। ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসের দশম ওভারের খেলা চলছে। সেই ওভারের তৃতীয় বলে ওলি পোপকে ফিরিয়ে ম্যাকগ্রার পাশে বসেন লায়ন। ম্যাকগ্রাকে টপকে যাওয়া লায়নের জন্য ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র। ম্যাকগ্রাও প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তাঁর রেকর্ডটা কখন ভেঙে যায়। সেই ওভারের শেষ বলে বেন ডাকেটকে বোল্ড করে লায়ন ছাড়িয়ে যান ম্যাকগ্রাকে। ধারাভাষ্যকক্ষে ম্যাকগ্রা এটা দেখার পর হো হো করে হাসতে থাকেন। আনন্দের আতিশয্যে একটা চেয়ার তুলে সেটা ছুড়ে মারতে গিয়েছিলেন। শেষ মুহূর্তে গিয়ে কী মনে করে যেন থেমে গেলেন অস্ট্রেলিয়ার এই বোলিং কিংবদন্তি।

লায়ন যে বলে ম্যাকগ্রার রেকর্ড ভেঙেছেন, সেটা অসাধারণ। দশম ওভারের শেষ বলটা মিডল স্টাম্প করিডরে করলেন লায়ন। ইংল্যান্ডের বাঁহাতি ব্যাটার ডাকেট সেটা সামনের পায়ে ডিফেন্স করতে যান। লায়নের বল একটু টার্ন নিয়ে অফ স্টাম্পে আঘাত হানে। ৩০ বলে ৫ চারে ২৯ রান করেন ডাকেট। আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে থাকা ডাকেটকে ফিরিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের ৫৬৪তম উইকেট নিলেন লায়ন। টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী এখন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের মধ্যে টেস্টে সর্বোচ্চ ৭০৮ উইকেট নিয়েছেন। ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণে ম্যাকগ্রা পেয়েছেন ৫৬৩ উইকেট।

লায়নের নতুন রেকর্ড গড়ার দিনটা নিজেদের করে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। অ্যাডিলেডে আজ তৃতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা ইংল্যান্ড শেষ করেছে ৮ উইকেটে ২১৩ রানে। নবম উইকেটে ৮৪ বলে ৪৫ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি গড়েন স্টোকস-আর্চার। ছয় নম্বরে নামা স্টোকস ১৫১ বলে ৪৫ রানে অপরাজিত। আর্চার ৩০ রানে ব্যাটিং করছেন। এরই মধ্যে তিনি ৪৮ বল খেলেছেন। অস্ট্রেলিয়া তাদের প্রথম ইনিংসে ৩৭১ রানে গুটিয়ে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইংল্যান্ডকে বড্ড বেকায়দায় ফেলেছে অস্ট্রেলিয়া

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৪৪
অ্যাডিলেডে অ্যাশেজের তৃতীয় টেস্টেও বেকায়দায় ইংল্যান্ড। ছবি: ক্রিকইনফো
অ্যাডিলেডে অ্যাশেজের তৃতীয় টেস্টেও বেকায়দায় ইংল্যান্ড। ছবি: ক্রিকইনফো

এবারের অ্যাশেজে নিজেদের সেভাবে মেলে ধরতে পারছে না ইংল্যান্ড। পার্থ, ব্রিসবেনে অস্ট্রেলিয়ার সামনে রীতিমতো মুখ থুবড়ে পড়েছে ইংলিশরা। অ্যাডিলেডেও চলছে অজিদের দাপট। দুই দিন শেষে ম্যাচের যে অবস্থা, তাতে ইংল্যান্ডের সিরিজ হারের সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রথম দুই টেস্টে ৮ উইকেটে হেরে যাওয়ায় ইংল্যান্ডের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। অ্যাশেজ জিততে হলে এখন শেষ তিন ম্যাচই জিততে হবে ইংলিশদের। অ্যাডিলেডে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে বড্ড বেকায়দায় পড়েছে ইংল্যান্ড। প্রথম ইনিংসে ৮ উইকেটে ২১৩ রানে আজ দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে বেন স্টোকসের নেতৃত্বাধীন ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে এখনো তারা ১৫৮ রানে পিছিয়ে।

প্রথম ইনিংসে ৮ উইকেটে ৩২৬ রানে আজ দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। স্বাগতিকদের নামের পাশে তখন ৮৩ ওভার। দিনের খেলা শুরুর ৫০ বলের মধ্যেই গুটিয়ে যায় অজিরা। প্রথম ইনিংসে সব উইকেট হারিয়ে ৩৭১ রান করেছে অস্ট্রেলিয়া। ইনিংস সর্বোচ্চ ১০৬ রান করেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার অ্যালেক্স ক্যারি। ইংল্যান্ডের জফরা আর্চার ৫৩ রানে নিয়েছেন ৫ উইকেট। টেস্টে এই নিয়ে ইনিংসে চারবার ৫ উইকেট শিকার করেছেন তিনি।

ব্যাটিংয়ে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকা ইংল্যান্ডের স্কোর হয়ে যায় ১৬.৪ ওভারে ৪ উইকেটে ৭১ রান। যেখানে ইনিংসের দশম ওভারে ওলি পোপ ও বেন ডাকেটকে ফিরিয়েছেন নাথান লায়ন। তাতে গ্লেন ম্যাকগ্রাকে টপকে টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী বনে গেলেন লায়ন। অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের মধ্যে টেস্টে সর্বোচ্চ ৭০৮ উইকেট নিয়েছেন। ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণে লায়ন ও ম্যাকগ্রা পেয়েছেন ৫৬৪ ও ৫৬৩ উইকেট।

বিপদে পড়া ইংল্যান্ডকে টেনে তোলার দায়িত্ব নেন হ্যারি ব্রুক ও স্টোকস। পঞ্চম উইকেটে ১১৯ বলে ৫৬ রানের জুটি গড়েন তাঁরা (ব্রুক-স্টোকস)। ৩৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ব্রুককে (৪৫) ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন ক্যামেরন গ্রিন। ব্রুক ফেরার পর ছোটখাটো ধস নামে ইংল্যান্ডের ইনিংসে। মুহূর্তেই ৫৪.১ ওভারে ৮ উইকেটে ১৬৮ রানে পরিণত হয় ইংলিশরা। সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝে একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলতে থাকেন স্টোকস। নবম উইকেটে ৮৪ বলে ৪৫ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি গড়েন স্টোকস-আর্চার। ছয় নম্বরে নামা স্টোকস ১৫১ বলে ৪৫ রানে অপরাজিত। আর্চার ৩০ রানে ব্যাটিং করছেন। এরই মধ্যে তিনি ৪৮ বল খেলেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিপিএলে লিটনদের কি টানা ম্যাচ খেলতে দেবে বিসিবি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এবারের বিপিএলে টানা ম্যাচ নাও খেলা হতে পারে লিটন-হৃদয়দের। ছবি: ক্রিকইনফো
এবারের বিপিএলে টানা ম্যাচ নাও খেলা হতে পারে লিটন-হৃদয়দের। ছবি: ক্রিকইনফো

১২তম বিপিএল শুরু হতে আর মাত্র এক সপ্তাহের অপেক্ষা। ২৬ ডিসেম্বর মাঠে গড়াবে নতুন মৌসুমের বিপিএল। লিটন দাস, তাওহীদ হৃদয়, তাসকিন আহমেদরা ২৮ দিনের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়বেন বাংলাদেশের এই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলতে। তবে এই টুর্নামেন্টে পুরোটা সময় নাও খেলতে পারেন লিটনরা।

সিলেটে শুরু হয়ে নতুন মৌসুমের বিপিএলের ফাইনাল হবে ২৩ জানুয়ারি। বাংলাদেশের এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট শেষ হতে না হতেই লিটন-তাসকিনদের ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। ৭ ফেব্রুয়ারি বিশ্বকাপের প্রথম দিনেই বাংলাদেশের ম্যাচ রয়েছে। টানা ম্যাচ খেলার ধকল সামলে নিজেদের সেরাটা দেওয়া তো চাট্টিখানি কথা নয়। সেই চাপ যেন না পড়ে, তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করে রেখেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। মিরপুরে আজ সাংবাদিকদের বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ইনচার্জ শাহরিয়ার নাফীস বলেন, ‘আমাদের বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে একজন ট্রেনার পুরো বিপিএল দেখভাল করবেন। জাতীয় দলে নিয়মিত ক্রিকেটারদের ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্ট হবে জিপিএসের মাধ্যমে। ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে যদি কোনো ক্রিকেটার রেড জোনে থাকে, সেই ফ্র্যাঞ্চাইজিকে সেটা জানিয়ে দেওয়া হবে। সেই ক্রিকেটারদের বিশ্রাম দিতে হবে।’

বিশ্রাম নীতি অনুযায়ী আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাসকিনকে টানা দুই ম্যাচে বেশির ভাগ সময়ই খেলানো হয় না। শুধু তাসকিনই নন, লিটন-হৃদয়দের ওপর বাড়তি যেন চাপ না পড়ে সেটা জাতীয় দলের ফিজিও এবং ফ্র্যাঞ্চাইজির ফিজিওরা তত্ত্বাবধান করবেন বিপিএলে। মিরপুরে আজ সাংবাদিকদের শাহরিয়ার নাফীস বলেন, ‘জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের নিয়ে পুরো বিপিএলেই ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের কাজ করব। এই কাজটা হবে বাইরের থেকে। বাংলাদেশ জাতীয় দলের ফিজিও-ট্রেনাররা সার্বক্ষণিক সেই ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। তাঁরা নিজেরাই সমন্বয় করবেন এই ব্যাপারটা।’

এবারের বিপিএলে সর্বোচ্চ ১ কোটি ১০ লাখ টাকায় নাঈম শেখকে কিনেছে চট্টগ্রাম রয়্যালস। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯২ লাখ টাকা দাম উঠেছে হৃদয়ের। তাঁকে কিনেছে রংপুর রাইডার্স। একই দল লিটনকে কিনেছে ৭০ লাখ টাকায়। তাসকিনকে সরাসরি চুক্তিতে নিয়েছে ঢাকা ক্যাপিটালস। এই বিপিএলেই প্রথমবারের মতো অংশ নিচ্ছে নোয়াখালী এক্সপ্রেস। তবে সর্বোচ্চ চারবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। নেই ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশালও। সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালকেও দেখা যাবে না ২০২৬ বিপিএলে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত