
অবশেষে মহাকাশে ভাসল জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। গতকাল শনিবার সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয় এই মহাকাশ টেলিস্কোপটি। ১০ বিলিয়ন (১ হাজার কোটি) ডলারের এই টেলিস্কোপ মহাবিশ্বের প্রথম নক্ষত্রের জন্মবৃত্তান্ত জানতে সহায়তা করবে।
মার্কিন গবেষণা সংস্থা নাসার তত্ত্বাবধানে নির্মিত বিশালাকৃতির এই মহাকাশ মানমন্দিরটিকে সবচেয়ে জটিল মিশনে পাঠানো হলো। এটি মহাকাশের গভীরতম দূরত্বেও প্রবেশ করবে।
ফ্রেঞ্চ গায়ানার কৌরু মহাকাশ কেন্দ্র আরিয়ান থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। উৎক্ষেপণের মাত্র আধা ঘণ্টার মধ্যে এটিকে নির্দিষ্ট কক্ষপথে স্থাপন করা হয়েছে। কেনিয়ার মালিন্দিতে স্থাপিত অ্যান্টেনায় সংকেত পাঠিয়ে সেটি নিশ্চিত করেছে জেমস ওয়েব।
জেমস ওয়েব ছিলেন নাসার চাঁদে অবতরণের ‘অ্যাপোলো মুন ল্যান্ডিং’ প্রকল্পের অন্যতম কারিগর। তাঁর নামেই এই টেলিস্কোপের নাম। নাসার বিখ্যাত হাবল টেলিস্কোপের পরই মহাকাশ পর্যবেক্ষণের দ্বিতীয় বৃহত্তম মানমন্দির এটি।
এই টেলিস্কোপটি বানাতে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় এবং কানাডীয় মহাকাশ সংস্থা যৌথভাবে কাজ করেছে। নতুন মানমন্দির আগের যে কোনোটির চাইতে ১০০ গুণ শক্তিশালী।
এই টেলিস্কোপ নিয়ে ছিল দীর্ঘ প্রত্যাশা। ফলে সঙ্গে ছিল চরম উৎকণ্ঠা আর উত্তেজনাও। বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার মানুষ এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলেন। ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে এই প্রকল্পটি নিয়ে কাজ চলেছে। এটি উৎক্ষেপণের সময় নাসার টিভি ধারাভাষ্যকার রব নাভিয়াস যেমনটি বলছিলেন, এক উষ্ণমণ্ডলীয় রেইন ফরেস্ট থেকে কালের সীমায় উৎক্ষেপণ, জেমস ওয়েব মহাবিশ্বের জন্ম ইতিহাস উদ্ঘাটনের এক মহাযাত্রার সূচনা করল।
জেমস ওয়েবের কাজের তালিকাটা বেশ দীর্ঘ ও জটিল। তবে আপাতত প্রাথমিক কিছু কাজ সারতেই তার ছয় মাস কেটে যাবে। মূল পর্যবেক্ষণ স্টেশনে থিতু হতে তাকে পৃথিবী থেকে প্রায় ১৫ লাখ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হবে। এই পথ ভ্রমণের সময় জেমস ওয়েব প্রজাপতির কোকুনের মতো তার খোলস ছেড়ে পাখা মেলবে। কারণ বিশাল ও ভঙ্গুর কাঠামোটিকে অক্ষত রেখে রকেটে করে উৎক্ষেপণের সময় টেলিস্কোপটিকে বিশেষভাবে ভাঁজ করে নেওয়া হয়েছে। এই ভাঁজ খুলে আসল অবয়ব পেতে তার বেশ সময় লাগবে।
নাসার প্রশাসক বিল নেলসন বলেন, উৎক্ষেপণ সফলভাবে করা গেছে মানেই আমাদের কাজ শেষ নয়। আরও বহু ও জটিল কাজ বাকি আছে। আর সেসব কাজ হতে হবে একেবারে নিখুঁত। একচুল ভুল হলেই পুরো প্রকল্প মাঠে মারা যাবে!
নতুন এই মহাকাশ টেলিস্কোপের মূল কাঠামোতে রয়েছে ৬ দশমিক ৫ মিটার প্রশস্ত স্বর্ণের আয়না (দর্পণ)। হাবলের মূল প্রতিফলকের চেয়ে এটি তিনগুণ প্রশস্ত।
বিশাল দর্পণ এবং চারটি অতি-সংবেদনশীল যন্ত্রের কারণে এই জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ দিয়ে মহাকাশবিজ্ঞানীরা মহাশূন্যের অনেক গভীর পর্যন্ত দেখতে পাবেন। ফলে মহাবিশ্বের জন্মতত্ত্ব অনুযায়ী, প্রথম যে নক্ষত্রগুলোর আলোয় সাড়ে ১৩শ কোটি বছর আগে ঘটা বিগ ব্যাং বা মহাবিস্ফোরণের পর নেমে আসা অন্ধকার কেটে গিয়েছিল-সেসবের বৃত্তান্ত জানা যাবে।
মহাকাশ সৃষ্টি তত্ত্ব অনুযায়ী, সেই সময় ঘটা পারমাণবিক প্রতিক্রিয়ার ফলে প্রথমবারের মতো কার্বন, নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, ফসফরাস এবং সালফারের মতো ভারী পরমাণুগুলো গঠিত হয়। প্রাণ সৃষ্টির জন্য এই প্রক্রিয়াটি অত্যাবশ্যক ছিল।
মহাবিশ্বের সৃষ্টি ইতিহাস সন্ধানের পাশাপাশি জেমস ওয়েব বহু দূরের গ্রহগুলোর পরিবেশও পর্যবেক্ষণ করবে। দূরবর্তী কোনো গ্রহে প্রাণীর বসবাসের মতো পরিবেশ আছে কি-না যাচাই করে দেখবে।
নাসার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, উৎক্ষেপণের পরে ওয়েব প্রায় ৩০ দিনের যাত্রা সম্পন্ন করে পৃথিবী থেকে ১৫ লাখ কিলোমিটার দূরে (চাঁদের চেয়েও দূরে) দ্বিতীয় লাগ্রঁজীয় বিন্দুতে পৌঁছাবে। সেখানে অবস্থান করে সব সময় পৃথিবীর অন্ধকার পাশে থেকে পৃথিবীর পাশাপাশিই বছরে একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করবে।
উল্লেখ্য, লাগ্রঁজীয় বিন্দু হলো সেই স্থান যেখানে পৃথিবী ও সূর্যের মহাকর্ষীয় লব্ধি বল এবং মহাকাশযানের কেন্দ্রাতিগ বল একে অপরকে নাকচ করে দেয়।
ওয়েবের মূল দর্পণটির নাম আলোকীয় দূরবীক্ষণ যন্ত্র। এটি ১৮টি ষড়ভূজাকৃতি দর্পণের সমন্বয়ে গঠিত। প্রতিটি দর্পণ অত্যন্ত পাতলা (মাত্র ১০০ ন্যানোমিটার পুরু) স্বর্ণের প্রলেপ দেওয়া বেরিলিয়াম ধাতু দিয়ে তৈরি। স্বর্ণ অবলোহিত বিকিরণের জন্য একটি অতি-উৎকৃষ্ট প্রতিফলক এবং রাসায়নিকভাবে তুলনামূলকভাবে নিষ্ক্রিয়। অন্যদিকে বেরিলিয়াম হালকা কিন্তু শক্ত ও অত্যন্ত নিম্ন তাপমাত্রাতেও সংকুচিত না হয়ে মূল আকৃতি ধরে রাখতে পারে। দূরবীক্ষণ যন্ত্রটির ভর প্রায় ৬ টন। যেখানে হাবলের ভর প্রায় ১২ টন।
দর্পণগুলো একত্রে মিলে একটি বৃহৎ, ৬ দশমিক ৫ মিটার ব্যাসবিশিষ্ট প্রায় ষড়ভূজাকৃতি একটি দর্পণ গঠন করবে। যেখানে হাবল দূরবীক্ষণ যন্ত্রের দর্পণটির ব্যাস ২ দশমিক ৪ মিটার। হাবলকে নিকট-অতিবেগুনি, দৃশ্যমান আলো ও নিকট-অবলোহিত বিকিরণ বর্ণালি পর্যবেক্ষণ করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। বিপরীতে ওয়েব অপেক্ষাকৃত নিম্নতর কম্পাঙ্কের পরিসীমার বিকিরণ পর্যবেক্ষণ করবে। ফলে এটি একই সঙ্গে হাবল মহাকাশ দূরবীক্ষণ যন্ত্র ও স্পিৎজার মহাকাশ দূরবীক্ষণ যন্ত্রের উন্নততর ভবিষ্যৎ উত্তরসূরি।
বহু প্রাচীন ও অনেক দূরে অবস্থিত আদীনক্ষত্র ও আদি ছায়াপথগুলো থেকে আগত রশ্মিগুলো দৃশ্যমান আলো নয়, এগুলো অদৃশ্য অবলোহিত রশ্মির আকারে আমাদের কাছে পৌঁছায়। অবলোহিত তরঙ্গগুলো গ্যাস ও ধূলিমেঘের ভেতর দিয়ে সহজেই অতিক্রম করে, কিন্তু সেগুলো ভূপৃষ্ঠস্থিত দূরবীক্ষণ যন্ত্র কিংবা হাবল দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে এ পর্যন্ত স্পষ্ট করে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয়নি।
অবলোহিত দূরবীক্ষণ যন্ত্র হওয়ায় জেমস ওয়েব এসব এসব পর্যবেক্ষণ করতে পারবে, যা আগে কখনো সম্ভব হয়নি। পুরো প্রক্রিয়াটি সঙ্গে এক্স-রে-এর মাধ্যমে মানবদেহের অভ্যন্তরীণ অঙ্গের ছবি তোলার মিল আছে। প্রাথমিকভাবে বৃহত্তর দর্পণটি আলোকরশ্মিগুলো প্রতিফলিত করে দ্বিতীয় ও অপেক্ষাকৃত ছোট একটি দর্পণে ফেলবে, যেটি আবার সেগুলোকে প্রতিফলিত করে আলোক-সংবেদী অংশের ওপর ফেলবে।
এখানে চ্যালেঞ্জ হলো, সঠিকভাবে কাজ করার জন্য ওয়েবের দুটি দর্পণ ও অন্যান্য তাপ-সংবেদী অংশগুলোকে অত্যন্ত শীতল অবস্থায় রাখতে হবে। এই অংশগুলোই অতি সূক্ষ্ম, দুর্বল সংকেতগুলো গ্রহণের জন্য তৈরি করা। সেই সংকেতগুলোকে নষ্ট করে দিতে পারে সৌরজগতের অন্যান্য বস্তু যেমন-সূর্য, পৃথিবী, চাঁদ এমনকি দূরবীক্ষণ যন্ত্রের নিজস্ব উত্তাপ। ফলে আলোকীয় ও তাপীয় বিকিরণের কারণে সৃষ্ট অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যতিচার থেকে এটিকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। এ কারণে প্রথমত এটিকে পৃথিবী থেকে বহু দূরে, প্রায় ১৫ লাখ কিলোমিটার দূরে দ্বিতীয় লাগ্রঁজীয় বিন্দুতে মোতায়েন করা হবে। যেখানে হাবল টেলিস্কোপ পৃথিবী থেকে মাত্র ৫৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
বেশি দূরে হওয়ার কারণে একবার মোতায়েন করার পরে জেমস ওয়েবের কোনো মেরামতি বা পুরোনো হয়ে যাওয়া যন্ত্রাংশ প্রতিস্থাপন করা প্রায় অসম্ভব হবে। দ্বিতীয়ত, যন্ত্রটিকে সূর্যের তাপ থেকে সুরক্ষা দিতে ১৫০ বর্গমিটার ক্ষেত্রফলের একটি সৌর ঢাল সংযুক্ত করা হয়েছে। সৌর ঢালটি সিলিকন ও অ্যালুমিনিয়ামে আবৃত পাঁচটি তাপ-অন্তরক ক্যাপটন পাত (বিশেষ ধরনের পলিথিনের মতো পাতলা পলিইমাইড ঝিল্লি) দিয়ে নির্মিত। সৌর ঢালের উত্তপ্ত পার্শ্বটির তাপমাত্রা ক্ষেত্রবিশেষে ৮৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠতে পারে। কিন্তু এটির শীতল পার্শ্বে দর্পণ ও অন্যান্য যন্ত্রাংশের তাপমাত্রা ৫০ কেলভিনের (মাইনাস ২২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস) নিচে থাকবে।
পর্যবেক্ষণ স্টেশনে স্থাপন ও ভাঁজ খোলার প্রক্রিয়াটি শেষ করতে উৎক্ষেপণ মুহূর্ত থেকে প্রায় ছয় মাস লাগবে। ২০২২ সালের জুলাই মাস থেকে টেলিস্কোপটি পৃথিবীতে বৈজ্ঞানিক উপাত্ত পাঠানো শুরু করবে। বয়ে নিয়ে যাওয়া জ্বালানিতে কমপক্ষে ১০ বছর কর্মক্ষম থাকবে এটি। যেখানে হাবল ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কর্মক্ষম আছে।
পৃথিবীতে বৈজ্ঞানিক তথ্যউপাত্ত পাঠানো ও পৃথিবীতে স্থাপিত স্টেশন থেকে নির্দেশ গ্রহণের জন্য পৃথিবীর দিকে মুখ করে একটি অ্যানটেনা আছে এতে। আর সূর্যের আলো থেকে বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদনের জন্য সূর্যের দিকে মুখ করে রাখা আছে এক সারি সৌরবিদ্যুৎকোষ। নির্দিষ্ট নক্ষত্র অঞ্চলের দিকে তাক করার জন্য কিছু ক্ষুদ্রাকায় দূরবীক্ষণ যন্ত্রও আছে।
১৯৯৬ সাল থেকে এ প্রকল্পের কাজ চলছে। নাসা নেতৃত্বে ১৪টি দেশ ও ২৯টি মার্কিন অঙ্গরাজ্যের তিন শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়, সংস্থা ও কোম্পানির পাশাপাশি শত শত বিজ্ঞানী ও হাজার হাজার প্রকৌশলী এ প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত। সব মিলিয়ে এই প্রকল্পটি শেষ করতে ১০০০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি অর্থ ব্যয় হয়েছে। এর মধ্যে নাসা দিয়েছে ৯৭০ কোটি ডলার। পুরো কাজ শেষ করতে সময় লেগেছে প্রায় ৩০ বছর। এ তুলনায় হাবলের পেছনে এ যাবৎ খরচ হয়েছে ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলার।

অবশেষে মহাকাশে ভাসল জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। গতকাল শনিবার সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয় এই মহাকাশ টেলিস্কোপটি। ১০ বিলিয়ন (১ হাজার কোটি) ডলারের এই টেলিস্কোপ মহাবিশ্বের প্রথম নক্ষত্রের জন্মবৃত্তান্ত জানতে সহায়তা করবে।
মার্কিন গবেষণা সংস্থা নাসার তত্ত্বাবধানে নির্মিত বিশালাকৃতির এই মহাকাশ মানমন্দিরটিকে সবচেয়ে জটিল মিশনে পাঠানো হলো। এটি মহাকাশের গভীরতম দূরত্বেও প্রবেশ করবে।
ফ্রেঞ্চ গায়ানার কৌরু মহাকাশ কেন্দ্র আরিয়ান থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। উৎক্ষেপণের মাত্র আধা ঘণ্টার মধ্যে এটিকে নির্দিষ্ট কক্ষপথে স্থাপন করা হয়েছে। কেনিয়ার মালিন্দিতে স্থাপিত অ্যান্টেনায় সংকেত পাঠিয়ে সেটি নিশ্চিত করেছে জেমস ওয়েব।
জেমস ওয়েব ছিলেন নাসার চাঁদে অবতরণের ‘অ্যাপোলো মুন ল্যান্ডিং’ প্রকল্পের অন্যতম কারিগর। তাঁর নামেই এই টেলিস্কোপের নাম। নাসার বিখ্যাত হাবল টেলিস্কোপের পরই মহাকাশ পর্যবেক্ষণের দ্বিতীয় বৃহত্তম মানমন্দির এটি।
এই টেলিস্কোপটি বানাতে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় এবং কানাডীয় মহাকাশ সংস্থা যৌথভাবে কাজ করেছে। নতুন মানমন্দির আগের যে কোনোটির চাইতে ১০০ গুণ শক্তিশালী।
এই টেলিস্কোপ নিয়ে ছিল দীর্ঘ প্রত্যাশা। ফলে সঙ্গে ছিল চরম উৎকণ্ঠা আর উত্তেজনাও। বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার মানুষ এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলেন। ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে এই প্রকল্পটি নিয়ে কাজ চলেছে। এটি উৎক্ষেপণের সময় নাসার টিভি ধারাভাষ্যকার রব নাভিয়াস যেমনটি বলছিলেন, এক উষ্ণমণ্ডলীয় রেইন ফরেস্ট থেকে কালের সীমায় উৎক্ষেপণ, জেমস ওয়েব মহাবিশ্বের জন্ম ইতিহাস উদ্ঘাটনের এক মহাযাত্রার সূচনা করল।
জেমস ওয়েবের কাজের তালিকাটা বেশ দীর্ঘ ও জটিল। তবে আপাতত প্রাথমিক কিছু কাজ সারতেই তার ছয় মাস কেটে যাবে। মূল পর্যবেক্ষণ স্টেশনে থিতু হতে তাকে পৃথিবী থেকে প্রায় ১৫ লাখ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হবে। এই পথ ভ্রমণের সময় জেমস ওয়েব প্রজাপতির কোকুনের মতো তার খোলস ছেড়ে পাখা মেলবে। কারণ বিশাল ও ভঙ্গুর কাঠামোটিকে অক্ষত রেখে রকেটে করে উৎক্ষেপণের সময় টেলিস্কোপটিকে বিশেষভাবে ভাঁজ করে নেওয়া হয়েছে। এই ভাঁজ খুলে আসল অবয়ব পেতে তার বেশ সময় লাগবে।
নাসার প্রশাসক বিল নেলসন বলেন, উৎক্ষেপণ সফলভাবে করা গেছে মানেই আমাদের কাজ শেষ নয়। আরও বহু ও জটিল কাজ বাকি আছে। আর সেসব কাজ হতে হবে একেবারে নিখুঁত। একচুল ভুল হলেই পুরো প্রকল্প মাঠে মারা যাবে!
নতুন এই মহাকাশ টেলিস্কোপের মূল কাঠামোতে রয়েছে ৬ দশমিক ৫ মিটার প্রশস্ত স্বর্ণের আয়না (দর্পণ)। হাবলের মূল প্রতিফলকের চেয়ে এটি তিনগুণ প্রশস্ত।
বিশাল দর্পণ এবং চারটি অতি-সংবেদনশীল যন্ত্রের কারণে এই জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ দিয়ে মহাকাশবিজ্ঞানীরা মহাশূন্যের অনেক গভীর পর্যন্ত দেখতে পাবেন। ফলে মহাবিশ্বের জন্মতত্ত্ব অনুযায়ী, প্রথম যে নক্ষত্রগুলোর আলোয় সাড়ে ১৩শ কোটি বছর আগে ঘটা বিগ ব্যাং বা মহাবিস্ফোরণের পর নেমে আসা অন্ধকার কেটে গিয়েছিল-সেসবের বৃত্তান্ত জানা যাবে।
মহাকাশ সৃষ্টি তত্ত্ব অনুযায়ী, সেই সময় ঘটা পারমাণবিক প্রতিক্রিয়ার ফলে প্রথমবারের মতো কার্বন, নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, ফসফরাস এবং সালফারের মতো ভারী পরমাণুগুলো গঠিত হয়। প্রাণ সৃষ্টির জন্য এই প্রক্রিয়াটি অত্যাবশ্যক ছিল।
মহাবিশ্বের সৃষ্টি ইতিহাস সন্ধানের পাশাপাশি জেমস ওয়েব বহু দূরের গ্রহগুলোর পরিবেশও পর্যবেক্ষণ করবে। দূরবর্তী কোনো গ্রহে প্রাণীর বসবাসের মতো পরিবেশ আছে কি-না যাচাই করে দেখবে।
নাসার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, উৎক্ষেপণের পরে ওয়েব প্রায় ৩০ দিনের যাত্রা সম্পন্ন করে পৃথিবী থেকে ১৫ লাখ কিলোমিটার দূরে (চাঁদের চেয়েও দূরে) দ্বিতীয় লাগ্রঁজীয় বিন্দুতে পৌঁছাবে। সেখানে অবস্থান করে সব সময় পৃথিবীর অন্ধকার পাশে থেকে পৃথিবীর পাশাপাশিই বছরে একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করবে।
উল্লেখ্য, লাগ্রঁজীয় বিন্দু হলো সেই স্থান যেখানে পৃথিবী ও সূর্যের মহাকর্ষীয় লব্ধি বল এবং মহাকাশযানের কেন্দ্রাতিগ বল একে অপরকে নাকচ করে দেয়।
ওয়েবের মূল দর্পণটির নাম আলোকীয় দূরবীক্ষণ যন্ত্র। এটি ১৮টি ষড়ভূজাকৃতি দর্পণের সমন্বয়ে গঠিত। প্রতিটি দর্পণ অত্যন্ত পাতলা (মাত্র ১০০ ন্যানোমিটার পুরু) স্বর্ণের প্রলেপ দেওয়া বেরিলিয়াম ধাতু দিয়ে তৈরি। স্বর্ণ অবলোহিত বিকিরণের জন্য একটি অতি-উৎকৃষ্ট প্রতিফলক এবং রাসায়নিকভাবে তুলনামূলকভাবে নিষ্ক্রিয়। অন্যদিকে বেরিলিয়াম হালকা কিন্তু শক্ত ও অত্যন্ত নিম্ন তাপমাত্রাতেও সংকুচিত না হয়ে মূল আকৃতি ধরে রাখতে পারে। দূরবীক্ষণ যন্ত্রটির ভর প্রায় ৬ টন। যেখানে হাবলের ভর প্রায় ১২ টন।
দর্পণগুলো একত্রে মিলে একটি বৃহৎ, ৬ দশমিক ৫ মিটার ব্যাসবিশিষ্ট প্রায় ষড়ভূজাকৃতি একটি দর্পণ গঠন করবে। যেখানে হাবল দূরবীক্ষণ যন্ত্রের দর্পণটির ব্যাস ২ দশমিক ৪ মিটার। হাবলকে নিকট-অতিবেগুনি, দৃশ্যমান আলো ও নিকট-অবলোহিত বিকিরণ বর্ণালি পর্যবেক্ষণ করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। বিপরীতে ওয়েব অপেক্ষাকৃত নিম্নতর কম্পাঙ্কের পরিসীমার বিকিরণ পর্যবেক্ষণ করবে। ফলে এটি একই সঙ্গে হাবল মহাকাশ দূরবীক্ষণ যন্ত্র ও স্পিৎজার মহাকাশ দূরবীক্ষণ যন্ত্রের উন্নততর ভবিষ্যৎ উত্তরসূরি।
বহু প্রাচীন ও অনেক দূরে অবস্থিত আদীনক্ষত্র ও আদি ছায়াপথগুলো থেকে আগত রশ্মিগুলো দৃশ্যমান আলো নয়, এগুলো অদৃশ্য অবলোহিত রশ্মির আকারে আমাদের কাছে পৌঁছায়। অবলোহিত তরঙ্গগুলো গ্যাস ও ধূলিমেঘের ভেতর দিয়ে সহজেই অতিক্রম করে, কিন্তু সেগুলো ভূপৃষ্ঠস্থিত দূরবীক্ষণ যন্ত্র কিংবা হাবল দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে এ পর্যন্ত স্পষ্ট করে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয়নি।
অবলোহিত দূরবীক্ষণ যন্ত্র হওয়ায় জেমস ওয়েব এসব এসব পর্যবেক্ষণ করতে পারবে, যা আগে কখনো সম্ভব হয়নি। পুরো প্রক্রিয়াটি সঙ্গে এক্স-রে-এর মাধ্যমে মানবদেহের অভ্যন্তরীণ অঙ্গের ছবি তোলার মিল আছে। প্রাথমিকভাবে বৃহত্তর দর্পণটি আলোকরশ্মিগুলো প্রতিফলিত করে দ্বিতীয় ও অপেক্ষাকৃত ছোট একটি দর্পণে ফেলবে, যেটি আবার সেগুলোকে প্রতিফলিত করে আলোক-সংবেদী অংশের ওপর ফেলবে।
এখানে চ্যালেঞ্জ হলো, সঠিকভাবে কাজ করার জন্য ওয়েবের দুটি দর্পণ ও অন্যান্য তাপ-সংবেদী অংশগুলোকে অত্যন্ত শীতল অবস্থায় রাখতে হবে। এই অংশগুলোই অতি সূক্ষ্ম, দুর্বল সংকেতগুলো গ্রহণের জন্য তৈরি করা। সেই সংকেতগুলোকে নষ্ট করে দিতে পারে সৌরজগতের অন্যান্য বস্তু যেমন-সূর্য, পৃথিবী, চাঁদ এমনকি দূরবীক্ষণ যন্ত্রের নিজস্ব উত্তাপ। ফলে আলোকীয় ও তাপীয় বিকিরণের কারণে সৃষ্ট অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যতিচার থেকে এটিকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। এ কারণে প্রথমত এটিকে পৃথিবী থেকে বহু দূরে, প্রায় ১৫ লাখ কিলোমিটার দূরে দ্বিতীয় লাগ্রঁজীয় বিন্দুতে মোতায়েন করা হবে। যেখানে হাবল টেলিস্কোপ পৃথিবী থেকে মাত্র ৫৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
বেশি দূরে হওয়ার কারণে একবার মোতায়েন করার পরে জেমস ওয়েবের কোনো মেরামতি বা পুরোনো হয়ে যাওয়া যন্ত্রাংশ প্রতিস্থাপন করা প্রায় অসম্ভব হবে। দ্বিতীয়ত, যন্ত্রটিকে সূর্যের তাপ থেকে সুরক্ষা দিতে ১৫০ বর্গমিটার ক্ষেত্রফলের একটি সৌর ঢাল সংযুক্ত করা হয়েছে। সৌর ঢালটি সিলিকন ও অ্যালুমিনিয়ামে আবৃত পাঁচটি তাপ-অন্তরক ক্যাপটন পাত (বিশেষ ধরনের পলিথিনের মতো পাতলা পলিইমাইড ঝিল্লি) দিয়ে নির্মিত। সৌর ঢালের উত্তপ্ত পার্শ্বটির তাপমাত্রা ক্ষেত্রবিশেষে ৮৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠতে পারে। কিন্তু এটির শীতল পার্শ্বে দর্পণ ও অন্যান্য যন্ত্রাংশের তাপমাত্রা ৫০ কেলভিনের (মাইনাস ২২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস) নিচে থাকবে।
পর্যবেক্ষণ স্টেশনে স্থাপন ও ভাঁজ খোলার প্রক্রিয়াটি শেষ করতে উৎক্ষেপণ মুহূর্ত থেকে প্রায় ছয় মাস লাগবে। ২০২২ সালের জুলাই মাস থেকে টেলিস্কোপটি পৃথিবীতে বৈজ্ঞানিক উপাত্ত পাঠানো শুরু করবে। বয়ে নিয়ে যাওয়া জ্বালানিতে কমপক্ষে ১০ বছর কর্মক্ষম থাকবে এটি। যেখানে হাবল ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কর্মক্ষম আছে।
পৃথিবীতে বৈজ্ঞানিক তথ্যউপাত্ত পাঠানো ও পৃথিবীতে স্থাপিত স্টেশন থেকে নির্দেশ গ্রহণের জন্য পৃথিবীর দিকে মুখ করে একটি অ্যানটেনা আছে এতে। আর সূর্যের আলো থেকে বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদনের জন্য সূর্যের দিকে মুখ করে রাখা আছে এক সারি সৌরবিদ্যুৎকোষ। নির্দিষ্ট নক্ষত্র অঞ্চলের দিকে তাক করার জন্য কিছু ক্ষুদ্রাকায় দূরবীক্ষণ যন্ত্রও আছে।
১৯৯৬ সাল থেকে এ প্রকল্পের কাজ চলছে। নাসা নেতৃত্বে ১৪টি দেশ ও ২৯টি মার্কিন অঙ্গরাজ্যের তিন শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়, সংস্থা ও কোম্পানির পাশাপাশি শত শত বিজ্ঞানী ও হাজার হাজার প্রকৌশলী এ প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত। সব মিলিয়ে এই প্রকল্পটি শেষ করতে ১০০০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি অর্থ ব্যয় হয়েছে। এর মধ্যে নাসা দিয়েছে ৯৭০ কোটি ডলার। পুরো কাজ শেষ করতে সময় লেগেছে প্রায় ৩০ বছর। এ তুলনায় হাবলের পেছনে এ যাবৎ খরচ হয়েছে ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলার।

কোনো বড় ধরনের সৌরঝড় বা প্রযুক্তিগত বিপর্যয়ের কারণে যদি পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা স্যাটেলাইটগুলো হঠাৎ নিজেদের গতিপথ পরিবর্তনের সক্ষমতা হারায়, তবে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা।
৩ দিন আগে
উত্তর ইতালির একটি ন্যাশনাল পার্কে ২১ কোটি বছর আগের ডাইনোসরের পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে। তাও আবার একটি-দুটি নয়, হাজার হাজার। এই পায়ের ছাপগুলোর কয়েকটির ব্যাস ১৫ ইঞ্চি পর্যন্ত। আর এগুলো সমান্তরাল সারিতে সাজানো। এসবের মধ্যে অনেকগুলোতে আঙুল ও নখের ছাপ স্পষ্ট বোঝা গেছে
৩ দিন আগে
ব্রিটিশ কলম্বিয়ার উপকূলে একদিন। স্যামন মাছের ঝাঁক পড়িমড়ি করে ছুটতে দেখা গেল। তাদের পিছেই চোখে পড়ল কিলার হোয়েল নামে পরিচিত অরকা ও হোয়াইট–সাইডেড ডলফিনের দলকে। তাও আবার একসঙ্গে! এই দুই শিকারী প্রাণীকে জোটবেঁধে স্যামন শিকারে ছুটতে দেখে যারপরনাই বিস্মিত বিজ্ঞানীরা।
৬ দিন আগে
ফ্রান্সের ব্রিতানি উপকূলের কাছে সমুদ্রের গভীরে এক বিশাল পাথরের প্রাচীরের সন্ধান মিলেছে। এই প্রাচীন প্রায় ৭ হাজার বছর আগে—অর্থাৎ ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে নির্মিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফরাসি সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিকেরা ধারণা করছেন, সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির কারণে যে প্রস্তর যুগের সমাজ এই এলাকা...
৮ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

কোনো বড় ধরনের সৌরঝড় বা প্রযুক্তিগত বিপর্যয়ের কারণে যদি পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা স্যাটেলাইটগুলো হঠাৎ নিজেদের গতিপথ পরিবর্তনের সক্ষমতা হারায়, তবে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। নতুন এক গবেষণা বলছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে সব স্যাটেলাইট একযোগে অচল হয়ে পড়লে প্রথম সংঘর্ষ ঘটতে সময় লাগবে গড়ে মাত্র ২.৮ দিন।
গত সাত বছরে পৃথিবীর কক্ষপথে স্যাটেলাইটের সংখ্যা তিনগুণেরও বেশি বেড়েছে। ২০১৮ সালে যেখানে প্রায় ৪ হাজার স্যাটেলাইট ছিল, এখন সেই সংখ্যা প্রায় ১৪ হাজারে পৌঁছেছে। এই বিস্ফোরণধর্মী বৃদ্ধির পেছনে প্রধান ভূমিকা রেখেছে স্পেসএক্সের স্টারলিংক প্রকল্প। নিম্ন-পৃথিবী কক্ষপথে (৩৪০ থেকে ৫৫০ কিলোমিটার উচ্চতায়) বর্তমানে স্টারলিংকের স্যাটেলাইটই রয়েছে ৯ হাজারের বেশি।
কক্ষপথে এত বেশি স্যাটেলাইট থাকার কারণে নিয়মিত সংঘর্ষ এড়াতে ‘কলিশন অ্যাভয়ডেন্স ম্যানুভার’ বা গতিপথ পরিবর্তনের কৌশল নিতে হয়। স্পেসএক্স জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ৩১ মে পর্যন্ত মাত্র ছয় মাসে তারা ১ লাখ ৪৪ হাজারেরও বেশি সংঘর্ষ এড়ানোর কৌশল প্রয়োগ করেছে।
গত মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে নিও সায়েন্টিস্ট জানিয়েছে, প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সারা থিয়েল ও তাঁর সহকর্মীরা স্যাটেলাইটের অবস্থানসংক্রান্ত উন্মুক্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে সংঘর্ষ ঝুঁকি পরিমাপের জন্য নতুন একটি সূচক তৈরি করেছেন। এই সূচকের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ক্র্যাশ ক্লক’।
গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৮ সালে যদি সব স্যাটেলাইট হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারাত, তবে প্রথম সংঘর্ষ হতে সময় লাগত প্রায় ১২১ দিন। কিন্তু বর্তমানে সেই সময় নেমে এসেছে মাত্র ২.৮ দিনে। এই তথ্য বিজ্ঞানীদেরও বিস্মিত করেছে।
সব স্যাটেলাইট একসঙ্গে অচল হয়ে পড়ার সম্ভাবনা কম হলেও ২০২৪ সালের মে মাসে শক্তিশালী সৌরঝড়ে স্টারলিংক স্যাটেলাইটগুলোতে অস্বাভাবিক ঢেউয়ের মতো প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল। ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী সৌরঝড় হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন—আগামী বছরগুলোতে স্পেসএক্স, অ্যামাজন ও চীনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আরও হাজার হাজার স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করতে যাচ্ছে। ফলে কক্ষপথে ভিড় আরও বাড়বে, আর ‘ক্র্যাশ ক্লক’-এর সময়সীমা আরও এগিয়ে আসবে। এই পরিস্থিতি মহাকাশ ব্যবস্থাপনা নিয়ে নতুন করে ভাবার প্রয়োজনীয়তা সামনে আনছে।

কোনো বড় ধরনের সৌরঝড় বা প্রযুক্তিগত বিপর্যয়ের কারণে যদি পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা স্যাটেলাইটগুলো হঠাৎ নিজেদের গতিপথ পরিবর্তনের সক্ষমতা হারায়, তবে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। নতুন এক গবেষণা বলছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে সব স্যাটেলাইট একযোগে অচল হয়ে পড়লে প্রথম সংঘর্ষ ঘটতে সময় লাগবে গড়ে মাত্র ২.৮ দিন।
গত সাত বছরে পৃথিবীর কক্ষপথে স্যাটেলাইটের সংখ্যা তিনগুণেরও বেশি বেড়েছে। ২০১৮ সালে যেখানে প্রায় ৪ হাজার স্যাটেলাইট ছিল, এখন সেই সংখ্যা প্রায় ১৪ হাজারে পৌঁছেছে। এই বিস্ফোরণধর্মী বৃদ্ধির পেছনে প্রধান ভূমিকা রেখেছে স্পেসএক্সের স্টারলিংক প্রকল্প। নিম্ন-পৃথিবী কক্ষপথে (৩৪০ থেকে ৫৫০ কিলোমিটার উচ্চতায়) বর্তমানে স্টারলিংকের স্যাটেলাইটই রয়েছে ৯ হাজারের বেশি।
কক্ষপথে এত বেশি স্যাটেলাইট থাকার কারণে নিয়মিত সংঘর্ষ এড়াতে ‘কলিশন অ্যাভয়ডেন্স ম্যানুভার’ বা গতিপথ পরিবর্তনের কৌশল নিতে হয়। স্পেসএক্স জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ৩১ মে পর্যন্ত মাত্র ছয় মাসে তারা ১ লাখ ৪৪ হাজারেরও বেশি সংঘর্ষ এড়ানোর কৌশল প্রয়োগ করেছে।
গত মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে নিও সায়েন্টিস্ট জানিয়েছে, প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সারা থিয়েল ও তাঁর সহকর্মীরা স্যাটেলাইটের অবস্থানসংক্রান্ত উন্মুক্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে সংঘর্ষ ঝুঁকি পরিমাপের জন্য নতুন একটি সূচক তৈরি করেছেন। এই সূচকের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ক্র্যাশ ক্লক’।
গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৮ সালে যদি সব স্যাটেলাইট হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারাত, তবে প্রথম সংঘর্ষ হতে সময় লাগত প্রায় ১২১ দিন। কিন্তু বর্তমানে সেই সময় নেমে এসেছে মাত্র ২.৮ দিনে। এই তথ্য বিজ্ঞানীদেরও বিস্মিত করেছে।
সব স্যাটেলাইট একসঙ্গে অচল হয়ে পড়ার সম্ভাবনা কম হলেও ২০২৪ সালের মে মাসে শক্তিশালী সৌরঝড়ে স্টারলিংক স্যাটেলাইটগুলোতে অস্বাভাবিক ঢেউয়ের মতো প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল। ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী সৌরঝড় হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন—আগামী বছরগুলোতে স্পেসএক্স, অ্যামাজন ও চীনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আরও হাজার হাজার স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করতে যাচ্ছে। ফলে কক্ষপথে ভিড় আরও বাড়বে, আর ‘ক্র্যাশ ক্লক’-এর সময়সীমা আরও এগিয়ে আসবে। এই পরিস্থিতি মহাকাশ ব্যবস্থাপনা নিয়ে নতুন করে ভাবার প্রয়োজনীয়তা সামনে আনছে।

এই টেলিস্কোপ নিয়ে ছিল দীর্ঘ প্রত্যাশা। ফলে সঙ্গে ছিল চরম উৎকণ্ঠা আর উত্তেজনাও। বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার মানুষ এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলেন। ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে এই প্রকল্পটি নিয়ে কাজ চলেছে।
২৬ ডিসেম্বর ২০২১
উত্তর ইতালির একটি ন্যাশনাল পার্কে ২১ কোটি বছর আগের ডাইনোসরের পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে। তাও আবার একটি-দুটি নয়, হাজার হাজার। এই পায়ের ছাপগুলোর কয়েকটির ব্যাস ১৫ ইঞ্চি পর্যন্ত। আর এগুলো সমান্তরাল সারিতে সাজানো। এসবের মধ্যে অনেকগুলোতে আঙুল ও নখের ছাপ স্পষ্ট বোঝা গেছে
৩ দিন আগে
ব্রিটিশ কলম্বিয়ার উপকূলে একদিন। স্যামন মাছের ঝাঁক পড়িমড়ি করে ছুটতে দেখা গেল। তাদের পিছেই চোখে পড়ল কিলার হোয়েল নামে পরিচিত অরকা ও হোয়াইট–সাইডেড ডলফিনের দলকে। তাও আবার একসঙ্গে! এই দুই শিকারী প্রাণীকে জোটবেঁধে স্যামন শিকারে ছুটতে দেখে যারপরনাই বিস্মিত বিজ্ঞানীরা।
৬ দিন আগে
ফ্রান্সের ব্রিতানি উপকূলের কাছে সমুদ্রের গভীরে এক বিশাল পাথরের প্রাচীরের সন্ধান মিলেছে। এই প্রাচীন প্রায় ৭ হাজার বছর আগে—অর্থাৎ ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে নির্মিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফরাসি সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিকেরা ধারণা করছেন, সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির কারণে যে প্রস্তর যুগের সমাজ এই এলাকা...
৮ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

উত্তর ইতালির একটি ন্যাশনাল পার্কে ২১ কোটি বছর আগের ডাইনোসরের পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে। তাও আবার একটি-দুটি নয়, হাজার হাজার। এই পায়ের ছাপগুলোর কয়েকটির ব্যাস ১৫ ইঞ্চি পর্যন্ত। আর এগুলো সমান্তরাল সারিতে সাজানো। এসবের মধ্যে অনেকগুলোতে আঙুল ও নখের ছাপ স্পষ্ট বোঝা গেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানা গেছে।
ধারণা করা হচ্ছে, এই ডাইনোসরগুলো ছিল ‘প্রোসাওরোপড’ (prosauropod) প্রজাতির। এ প্রজাতির ডাইনোসরের গলা লম্বা ও মাথা ছোট এবং ধারালো নখবিশিষ্ট তৃণভোজী প্রাণী ছিল।
মিলানভিত্তিক জীবাশ্মবিদ ক্রিস্টিয়ানো ডাল সাসো বলেন, ‘কখনো কল্পনাও করিনি, আমি যে অঞ্চলে বাস করি, সেখানেই এমন এক যুগান্তকারী আবিষ্কারের দেখা পাব।’
গত সেপ্টেম্বরে মিলানের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত স্টেলভিও ন্যাশনাল পার্কের একটি খাঁড়া পাহাড়ের গায়ে কয়েক শ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এই পায়ের ছাপগুলো একজন আলোকচিত্রীর চোখে ধরা পড়ে।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০ থেকে ২৫ কোটি বছর আগে ট্রায়াসিক যুগে এই পাহাড়ের অংশটি ছিল একটি সমুদ্র তীরবর্তী সমতল ভূমি, যা পরে আল্পাইন পর্বতমালায় রূপান্তরিত হয়।
ডাল সাসো আরও বলেন, এই জায়গা ডাইনোসরে পরিপূর্ণ ছিল; এটি একটি বিশাল বৈজ্ঞানিক সম্পদ।
ডাল সাসো আরও যোগ করেন, ডাইনোসরের দলগুলো সুশৃঙ্খলভাবে চলাচল করত এবং সেখানে আরও কিছু চিহ্ন পাওয়া গেছে, যেগুলো থেকে মনে হয়, পশুরা আত্মরক্ষার উদ্দেশ্যে দলবদ্ধ হয়ে বৃত্তাকারে অবস্থান নিত।
আবিষ্কারকেরা বলছেন, প্রোসাওরোপডগুলো ১০ মিটার বা ৩৩ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারত। তারা সাধারণত দুই পায়ে হাঁটত, তবে কিছু ক্ষেত্রে পায়ের ছাপের সামনে হাতের ছাপও পাওয়া গেছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, তারা সম্ভবত মাঝেমধ্যে থেমে বিশ্রাম নেওয়ার সময় তাদের সামনের পা মাটিতে রাখত।
আলোকচিত্রী এলিয়ো ডেলা ফেরেরা এই স্থান আবিষ্কার করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘এই আবিষ্কার আমাদের সবার মধ্যে ভাবনার খোরাক জোগাবে এবং আমরা যেখানে বাস করি, আমাদের ঘর, আমাদের পৃথিবী, এই জায়গাগুলো সম্পর্কে আমরা কতটা কম জানি, তা বোঝায়।’
ইতালির সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, এলাকাটি অত্যন্ত দুর্গম এবং যাতায়াতের কোনো পথ নেই। তাই গবেষণার কাজে ড্রোনের পাশাপাশি রিমোট সেন্সিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।
উল্লেখ্য, আগামী বছর ইতালিতে শীতকালীন অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আর ডাইনোসরের পায়ের ছাপ পাওয়া স্টেলভিও ন্যাশনাল পার্কটি সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে ইতালির সীমান্তবর্তী ফ্রায়েল উপত্যকায় অবস্থিত। মন্ত্রণালয় জানায়, এটি যেন অনেকটা এমন যে, স্বয়ং ইতিহাসই বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই ক্রীড়া ইভেন্টকে শ্রদ্ধা জানাতে চেয়েছে; প্রকৃতি ও ক্রীড়ার মধ্যে এক প্রতীকী সেতুবন্ধনের মাধ্যমে অতীত ও বর্তমানকে এক সুতায় গেঁথেছে।

উত্তর ইতালির একটি ন্যাশনাল পার্কে ২১ কোটি বছর আগের ডাইনোসরের পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে। তাও আবার একটি-দুটি নয়, হাজার হাজার। এই পায়ের ছাপগুলোর কয়েকটির ব্যাস ১৫ ইঞ্চি পর্যন্ত। আর এগুলো সমান্তরাল সারিতে সাজানো। এসবের মধ্যে অনেকগুলোতে আঙুল ও নখের ছাপ স্পষ্ট বোঝা গেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানা গেছে।
ধারণা করা হচ্ছে, এই ডাইনোসরগুলো ছিল ‘প্রোসাওরোপড’ (prosauropod) প্রজাতির। এ প্রজাতির ডাইনোসরের গলা লম্বা ও মাথা ছোট এবং ধারালো নখবিশিষ্ট তৃণভোজী প্রাণী ছিল।
মিলানভিত্তিক জীবাশ্মবিদ ক্রিস্টিয়ানো ডাল সাসো বলেন, ‘কখনো কল্পনাও করিনি, আমি যে অঞ্চলে বাস করি, সেখানেই এমন এক যুগান্তকারী আবিষ্কারের দেখা পাব।’
গত সেপ্টেম্বরে মিলানের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত স্টেলভিও ন্যাশনাল পার্কের একটি খাঁড়া পাহাড়ের গায়ে কয়েক শ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এই পায়ের ছাপগুলো একজন আলোকচিত্রীর চোখে ধরা পড়ে।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০ থেকে ২৫ কোটি বছর আগে ট্রায়াসিক যুগে এই পাহাড়ের অংশটি ছিল একটি সমুদ্র তীরবর্তী সমতল ভূমি, যা পরে আল্পাইন পর্বতমালায় রূপান্তরিত হয়।
ডাল সাসো আরও বলেন, এই জায়গা ডাইনোসরে পরিপূর্ণ ছিল; এটি একটি বিশাল বৈজ্ঞানিক সম্পদ।
ডাল সাসো আরও যোগ করেন, ডাইনোসরের দলগুলো সুশৃঙ্খলভাবে চলাচল করত এবং সেখানে আরও কিছু চিহ্ন পাওয়া গেছে, যেগুলো থেকে মনে হয়, পশুরা আত্মরক্ষার উদ্দেশ্যে দলবদ্ধ হয়ে বৃত্তাকারে অবস্থান নিত।
আবিষ্কারকেরা বলছেন, প্রোসাওরোপডগুলো ১০ মিটার বা ৩৩ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারত। তারা সাধারণত দুই পায়ে হাঁটত, তবে কিছু ক্ষেত্রে পায়ের ছাপের সামনে হাতের ছাপও পাওয়া গেছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, তারা সম্ভবত মাঝেমধ্যে থেমে বিশ্রাম নেওয়ার সময় তাদের সামনের পা মাটিতে রাখত।
আলোকচিত্রী এলিয়ো ডেলা ফেরেরা এই স্থান আবিষ্কার করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘এই আবিষ্কার আমাদের সবার মধ্যে ভাবনার খোরাক জোগাবে এবং আমরা যেখানে বাস করি, আমাদের ঘর, আমাদের পৃথিবী, এই জায়গাগুলো সম্পর্কে আমরা কতটা কম জানি, তা বোঝায়।’
ইতালির সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, এলাকাটি অত্যন্ত দুর্গম এবং যাতায়াতের কোনো পথ নেই। তাই গবেষণার কাজে ড্রোনের পাশাপাশি রিমোট সেন্সিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।
উল্লেখ্য, আগামী বছর ইতালিতে শীতকালীন অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আর ডাইনোসরের পায়ের ছাপ পাওয়া স্টেলভিও ন্যাশনাল পার্কটি সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে ইতালির সীমান্তবর্তী ফ্রায়েল উপত্যকায় অবস্থিত। মন্ত্রণালয় জানায়, এটি যেন অনেকটা এমন যে, স্বয়ং ইতিহাসই বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই ক্রীড়া ইভেন্টকে শ্রদ্ধা জানাতে চেয়েছে; প্রকৃতি ও ক্রীড়ার মধ্যে এক প্রতীকী সেতুবন্ধনের মাধ্যমে অতীত ও বর্তমানকে এক সুতায় গেঁথেছে।

এই টেলিস্কোপ নিয়ে ছিল দীর্ঘ প্রত্যাশা। ফলে সঙ্গে ছিল চরম উৎকণ্ঠা আর উত্তেজনাও। বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার মানুষ এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলেন। ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে এই প্রকল্পটি নিয়ে কাজ চলেছে।
২৬ ডিসেম্বর ২০২১
কোনো বড় ধরনের সৌরঝড় বা প্রযুক্তিগত বিপর্যয়ের কারণে যদি পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা স্যাটেলাইটগুলো হঠাৎ নিজেদের গতিপথ পরিবর্তনের সক্ষমতা হারায়, তবে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা।
৩ দিন আগে
ব্রিটিশ কলম্বিয়ার উপকূলে একদিন। স্যামন মাছের ঝাঁক পড়িমড়ি করে ছুটতে দেখা গেল। তাদের পিছেই চোখে পড়ল কিলার হোয়েল নামে পরিচিত অরকা ও হোয়াইট–সাইডেড ডলফিনের দলকে। তাও আবার একসঙ্গে! এই দুই শিকারী প্রাণীকে জোটবেঁধে স্যামন শিকারে ছুটতে দেখে যারপরনাই বিস্মিত বিজ্ঞানীরা।
৬ দিন আগে
ফ্রান্সের ব্রিতানি উপকূলের কাছে সমুদ্রের গভীরে এক বিশাল পাথরের প্রাচীরের সন্ধান মিলেছে। এই প্রাচীন প্রায় ৭ হাজার বছর আগে—অর্থাৎ ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে নির্মিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফরাসি সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিকেরা ধারণা করছেন, সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির কারণে যে প্রস্তর যুগের সমাজ এই এলাকা...
৮ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ব্রিটিশ কলম্বিয়ার উপকূলে একদিন। স্যামন মাছের ঝাঁক পড়িমড়ি করে ছুটতে দেখা গেল। তাদের পিছেই চোখে পড়ল কিলার হোয়েল নামে পরিচিত অরকা ও হোয়াইট–সাইডেড ডলফিনের দলকে। তাও আবার একসঙ্গে! এই দুই শিকারী প্রাণীকে জোটবেঁধে স্যামন শিকারে ছুটতে দেখে যারপরনাই বিস্মিত বিজ্ঞানীরা। শিকার একই হওয়ায় দুই শিকারী জোট বেঁধেছে বলে মনে করছেন তাঁরা।
এ নিয়ে একটি গবেষণাও প্রকাশিত হয়েছে। সায়েন্টিফিক রিপোর্টস সাময়িকীতে প্রকাশিত ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, এই দুই শিকারি প্রাণীর মধ্যে হয়তো একটি সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
গবেষকেরা বলছেন, ‘কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া উপকূলে প্যাসিফিক হোয়াইট–সাইডেড ডলফিন ও নর্দার্ন রেসিডেন্ট কিলার হোয়েলের মধ্যে এ ধরনের একটি রহস্যজনক সম্পর্ক দেখা যায়, যেখানে এই দুই সিটাসিয়ান প্রজাতিকে প্রায়ই একে অপরের কয়েক মিটারের মধ্যেই দেখা যায়।’
ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, লাইবনিজ ইনস্টিটিউট ও হাকাই ইনস্টিটিউটের সঙ্গে কাজ করা বিজ্ঞানীরা ড্রোন ভিডিও ও শব্দগত রেকর্ডিং সংগ্রহ করে তার ভিত্তিতে জানান, এই প্রথম অরকা ও ডলফিনের এভাবে খাদ্য চাহিদা পূরণে যৌথভাবে কাজ করতে দেখা গেল।
গবেষণার প্রধান লেখক সারা ফরচুন দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘স্যামন শিকারের পারদর্শিতায় শীর্ষস্থানে রয়েছে এই তিমিগুলো। তারা অত্যন্ত দক্ষ ও বিশেষায়িত শিকারি। মনে হচ্ছিল ডলফিনগুলো তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছে। অরকাদের এভাবে ডলফিনের অনুসরণ করতে দেখা ছিল একেবারেই অপ্রত্যাশিত আর ভীষণ রোমাঞ্চকর।’
দুই শিকারির মধ্যে সদ্য গড়ে ওঠা এই সম্পর্কের কারণ নিয়ে বিজ্ঞানীরা এখনো নিশ্চিত নন। একটি সম্ভাবনা হলো ক্লেপ্টোপ্যারাসিটিজম, যেখানে ডলফিনেরা অরকার শিকার ছিনিয়ে নিতে পারে।
আরেকটি ব্যাখ্যা হতে পারে, ডলফিনেরা স্তন্যপায়ীভোজী ট্রানসিয়েন্ট কিলার হোয়েল এবং কিছুটা কম মাত্রায় বড় হাঙরের হাত থেকে সুরক্ষা পেতে এই সম্পর্ক গড়ে তুলছে।
তবে সারা ফরচুনের মতে, যদি ডলফিনেরা পরজীবীর মতো আচরণ করত, তাহলে সদ্য ধরা শিকার নিয়ে সাধারণত অত্যন্ত রক্ষণশীল কিলার হোয়েলেরা এতটা শান্ত থাকত না, যেমনটি পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে। এতে গবেষকদের সামনে সবচেয়ে জোরালো ব্যাখ্যাটি উঠে এসেছে, এই দুই শিকারি আসলে পরস্পরকে সহযোগিতা করছে।
সারা ফরচুন আরও বলেন, ‘অরকাগুলো নিজেদের অবস্থান এমনভাবে নিচ্ছিল, যেন তারা ডলফিনদের অনুসরণ করছে। ফলে ডলফিনদেরই নেতৃত্বের ভূমিকায় দেখা যাচ্ছিল। বিষয়টি আমাদের আরও গভীরভাবে তথ্য বিশ্লেষণ করতে এবং আসলে কী ঘটছে তা বোঝার চেষ্টা করতে আগ্রহী করে তোলে।’
এই সহযোগিতা নিয়ে রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে, কারণ নর্দার্ন রেসিডেন্ট অরকারা মূলত স্যামন শিকারে বিশেষজ্ঞ আর হোয়াইট–সাইডেড ডলফিন সাধারণত হেরিং ও অ্যাঙ্কোভির মতো ছোট মাছ খেয়ে থাকে।

ব্রিটিশ কলম্বিয়ার উপকূলে একদিন। স্যামন মাছের ঝাঁক পড়িমড়ি করে ছুটতে দেখা গেল। তাদের পিছেই চোখে পড়ল কিলার হোয়েল নামে পরিচিত অরকা ও হোয়াইট–সাইডেড ডলফিনের দলকে। তাও আবার একসঙ্গে! এই দুই শিকারী প্রাণীকে জোটবেঁধে স্যামন শিকারে ছুটতে দেখে যারপরনাই বিস্মিত বিজ্ঞানীরা। শিকার একই হওয়ায় দুই শিকারী জোট বেঁধেছে বলে মনে করছেন তাঁরা।
এ নিয়ে একটি গবেষণাও প্রকাশিত হয়েছে। সায়েন্টিফিক রিপোর্টস সাময়িকীতে প্রকাশিত ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, এই দুই শিকারি প্রাণীর মধ্যে হয়তো একটি সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
গবেষকেরা বলছেন, ‘কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া উপকূলে প্যাসিফিক হোয়াইট–সাইডেড ডলফিন ও নর্দার্ন রেসিডেন্ট কিলার হোয়েলের মধ্যে এ ধরনের একটি রহস্যজনক সম্পর্ক দেখা যায়, যেখানে এই দুই সিটাসিয়ান প্রজাতিকে প্রায়ই একে অপরের কয়েক মিটারের মধ্যেই দেখা যায়।’
ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, লাইবনিজ ইনস্টিটিউট ও হাকাই ইনস্টিটিউটের সঙ্গে কাজ করা বিজ্ঞানীরা ড্রোন ভিডিও ও শব্দগত রেকর্ডিং সংগ্রহ করে তার ভিত্তিতে জানান, এই প্রথম অরকা ও ডলফিনের এভাবে খাদ্য চাহিদা পূরণে যৌথভাবে কাজ করতে দেখা গেল।
গবেষণার প্রধান লেখক সারা ফরচুন দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘স্যামন শিকারের পারদর্শিতায় শীর্ষস্থানে রয়েছে এই তিমিগুলো। তারা অত্যন্ত দক্ষ ও বিশেষায়িত শিকারি। মনে হচ্ছিল ডলফিনগুলো তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছে। অরকাদের এভাবে ডলফিনের অনুসরণ করতে দেখা ছিল একেবারেই অপ্রত্যাশিত আর ভীষণ রোমাঞ্চকর।’
দুই শিকারির মধ্যে সদ্য গড়ে ওঠা এই সম্পর্কের কারণ নিয়ে বিজ্ঞানীরা এখনো নিশ্চিত নন। একটি সম্ভাবনা হলো ক্লেপ্টোপ্যারাসিটিজম, যেখানে ডলফিনেরা অরকার শিকার ছিনিয়ে নিতে পারে।
আরেকটি ব্যাখ্যা হতে পারে, ডলফিনেরা স্তন্যপায়ীভোজী ট্রানসিয়েন্ট কিলার হোয়েল এবং কিছুটা কম মাত্রায় বড় হাঙরের হাত থেকে সুরক্ষা পেতে এই সম্পর্ক গড়ে তুলছে।
তবে সারা ফরচুনের মতে, যদি ডলফিনেরা পরজীবীর মতো আচরণ করত, তাহলে সদ্য ধরা শিকার নিয়ে সাধারণত অত্যন্ত রক্ষণশীল কিলার হোয়েলেরা এতটা শান্ত থাকত না, যেমনটি পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে। এতে গবেষকদের সামনে সবচেয়ে জোরালো ব্যাখ্যাটি উঠে এসেছে, এই দুই শিকারি আসলে পরস্পরকে সহযোগিতা করছে।
সারা ফরচুন আরও বলেন, ‘অরকাগুলো নিজেদের অবস্থান এমনভাবে নিচ্ছিল, যেন তারা ডলফিনদের অনুসরণ করছে। ফলে ডলফিনদেরই নেতৃত্বের ভূমিকায় দেখা যাচ্ছিল। বিষয়টি আমাদের আরও গভীরভাবে তথ্য বিশ্লেষণ করতে এবং আসলে কী ঘটছে তা বোঝার চেষ্টা করতে আগ্রহী করে তোলে।’
এই সহযোগিতা নিয়ে রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে, কারণ নর্দার্ন রেসিডেন্ট অরকারা মূলত স্যামন শিকারে বিশেষজ্ঞ আর হোয়াইট–সাইডেড ডলফিন সাধারণত হেরিং ও অ্যাঙ্কোভির মতো ছোট মাছ খেয়ে থাকে।

এই টেলিস্কোপ নিয়ে ছিল দীর্ঘ প্রত্যাশা। ফলে সঙ্গে ছিল চরম উৎকণ্ঠা আর উত্তেজনাও। বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার মানুষ এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলেন। ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে এই প্রকল্পটি নিয়ে কাজ চলেছে।
২৬ ডিসেম্বর ২০২১
কোনো বড় ধরনের সৌরঝড় বা প্রযুক্তিগত বিপর্যয়ের কারণে যদি পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা স্যাটেলাইটগুলো হঠাৎ নিজেদের গতিপথ পরিবর্তনের সক্ষমতা হারায়, তবে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা।
৩ দিন আগে
উত্তর ইতালির একটি ন্যাশনাল পার্কে ২১ কোটি বছর আগের ডাইনোসরের পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে। তাও আবার একটি-দুটি নয়, হাজার হাজার। এই পায়ের ছাপগুলোর কয়েকটির ব্যাস ১৫ ইঞ্চি পর্যন্ত। আর এগুলো সমান্তরাল সারিতে সাজানো। এসবের মধ্যে অনেকগুলোতে আঙুল ও নখের ছাপ স্পষ্ট বোঝা গেছে
৩ দিন আগে
ফ্রান্সের ব্রিতানি উপকূলের কাছে সমুদ্রের গভীরে এক বিশাল পাথরের প্রাচীরের সন্ধান মিলেছে। এই প্রাচীন প্রায় ৭ হাজার বছর আগে—অর্থাৎ ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে নির্মিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফরাসি সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিকেরা ধারণা করছেন, সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির কারণে যে প্রস্তর যুগের সমাজ এই এলাকা...
৮ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ফ্রান্সের ব্রিতানি উপকূলের কাছে সমুদ্রের গভীরে এক বিশাল পাথরের প্রাচীরের সন্ধান মিলেছে। এই প্রাচীন প্রায় ৭ হাজার বছর আগে—অর্থাৎ ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে নির্মিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফরাসি সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিকেরা ধারণা করছেন, সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির কারণে যে প্রস্তর যুগের সমাজ এই এলাকা থেকে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল, এই আবিষ্কার হয়তো সেই সমাজেরই প্রতিনিধিত্ব করছে। সেখানে তলিয়ে যাওয়া শহরের প্রচলিত কিংবদন্তির নিদর্শনও হতে পারে এই প্রাচীর।
১২০ মিটার দীর্ঘ এই প্রাচীর ফ্রান্সের জলসীমায় পাওয়া সমুদ্রতলের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো। প্রত্নতাত্ত্বিকদের অনুমান, এটি হয়তো মাছ ধরার জন্য এক ধরনের ফাঁদ হিসেবে ব্যবহৃত হতো, অথবা সমুদ্রের ক্রমবর্ধমান জলস্তর থেকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য বাঁধ হিসেবে নির্মিত হয়েছিল।
প্রাচীরটি ব্রিতানির পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত ইলে দে সঁ-এর উপকূলে আবিষ্কৃত হয়েছে। সমুদ্র সৈকতে জোয়ারের চিহ্ন এখনো বহন করছে এই প্রাচীর। বর্তমানে প্রাচীরটি প্রায় নয় মিটার গভীরে ডুবে আছে। দ্বীপটি আগের আকারের তুলনায় অনেকটাই ছোট হয়ে গেছে, সমুদ্রের পানিস্তর বৃদ্ধির এটি বড় প্রমাণ।
প্রাচীরটির গড় প্রস্থ প্রায় ২০ মিটার এবং উচ্চতা দুই মিটার। নিয়মিত ব্যবধানে ডুবুরিরা এর মধ্যে বড় গ্রানাইট পাথর বা মনোলিথ-এর অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন। এগুলো দুটি সমান্তরাল রেখায় প্রাচীরের ওপরে উঁচু হয়ে আছে। মনে করা হচ্ছে, এই মনোলিথগুলোই প্রাচীরের মূল ভিত্তি হিসেবে শিলাস্তরের ওপর স্থাপন করা হয়েছিল এবং পরবর্তীতে স্ল্যাব ও ছোট পাথর দিয়ে তাদের ঘিরে প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। যদি মাছ ধরার ফাঁদ হিসেবে ব্যবহারের অনুমানটি সঠিক হয়, তাহলে বলা যায়, মনোলিথগুলোতে জোয়ারের পানি নেমে যাওয়ার সময় মাছ ধরার জাল বেঁধে রাখা হতো।
প্রাচীরটির মোট ভর প্রায় ৩ হাজার ৩০০ টন। প্রত্নতাত্ত্বিক ইভান পাইয়ার বলেন, এই বিশাল নির্মাণ একটি সুসংগঠিত সমাজের কাজ হতে পারে। মূলত শিকারি-সংগ্রাহক (হান্টার গ্যাদারার) জনগোষ্ঠী এটি নির্মাণ করেছে, যারা সম্পদের প্রাচুর্য থাকায় স্থিতিশীল জীবনযাপন শুরু করেছিল। অথবা, এটি ছিল ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে এই অঞ্চলে আসা নব্যপ্রস্তর যুগের জনগোষ্ঠীর নির্মাণ।
পাইয়ারের মতে, মনোলিথগুলো নব্যপ্রস্তর যুগের বিখ্যাত মেনহিরগুলোর চেয়েও প্রাচীন। ফলে এটি পাথর উত্তোলন, কাটা এবং পরিবহনের জ্ঞান তৎকালীন শিকারি-সংগ্রাহক সমাজ থেকে পরবর্তী নব্যপ্রস্তর যুগের কৃষকদের কাছে স্থানান্তরিত হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব নটিক্যাল আর্কিওলজিতে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, এই আবিষ্কার স্থানীয় ব্রেটোন কিংবদন্তিগুলোর উৎস হতে পারে। যেমন, ব্রিতানির উপকূলে অবস্থিত বে অব দোয়ারনেনেজ-এর আশপাশে ডুবে যাওয়া শহর ইশ (Ys)-এর কিংবদন্তি। গবেষকদের মতে, একটি অত্যন্ত সুসংগঠিত সমাজ দ্বারা গঠিত অঞ্চলের বিলুপ্তি মানুষের স্মৃতিতে গভীরভাবে প্রোথিত হয়েছে। সমুদ্রের জলস্তর দ্রুত বৃদ্ধির ফলে মাছ ধরার কাঠামো, প্রতিরক্ষামূলক কাজ এবং বাস্তুচ্যুতির ঘটনাগুলো সম্ভবত স্থানীয় মানুষের মনে দীর্ঘস্থায়ী ছাপ ফেলেছিল।

ফ্রান্সের ব্রিতানি উপকূলের কাছে সমুদ্রের গভীরে এক বিশাল পাথরের প্রাচীরের সন্ধান মিলেছে। এই প্রাচীন প্রায় ৭ হাজার বছর আগে—অর্থাৎ ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে নির্মিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফরাসি সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিকেরা ধারণা করছেন, সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির কারণে যে প্রস্তর যুগের সমাজ এই এলাকা থেকে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল, এই আবিষ্কার হয়তো সেই সমাজেরই প্রতিনিধিত্ব করছে। সেখানে তলিয়ে যাওয়া শহরের প্রচলিত কিংবদন্তির নিদর্শনও হতে পারে এই প্রাচীর।
১২০ মিটার দীর্ঘ এই প্রাচীর ফ্রান্সের জলসীমায় পাওয়া সমুদ্রতলের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো। প্রত্নতাত্ত্বিকদের অনুমান, এটি হয়তো মাছ ধরার জন্য এক ধরনের ফাঁদ হিসেবে ব্যবহৃত হতো, অথবা সমুদ্রের ক্রমবর্ধমান জলস্তর থেকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য বাঁধ হিসেবে নির্মিত হয়েছিল।
প্রাচীরটি ব্রিতানির পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত ইলে দে সঁ-এর উপকূলে আবিষ্কৃত হয়েছে। সমুদ্র সৈকতে জোয়ারের চিহ্ন এখনো বহন করছে এই প্রাচীর। বর্তমানে প্রাচীরটি প্রায় নয় মিটার গভীরে ডুবে আছে। দ্বীপটি আগের আকারের তুলনায় অনেকটাই ছোট হয়ে গেছে, সমুদ্রের পানিস্তর বৃদ্ধির এটি বড় প্রমাণ।
প্রাচীরটির গড় প্রস্থ প্রায় ২০ মিটার এবং উচ্চতা দুই মিটার। নিয়মিত ব্যবধানে ডুবুরিরা এর মধ্যে বড় গ্রানাইট পাথর বা মনোলিথ-এর অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন। এগুলো দুটি সমান্তরাল রেখায় প্রাচীরের ওপরে উঁচু হয়ে আছে। মনে করা হচ্ছে, এই মনোলিথগুলোই প্রাচীরের মূল ভিত্তি হিসেবে শিলাস্তরের ওপর স্থাপন করা হয়েছিল এবং পরবর্তীতে স্ল্যাব ও ছোট পাথর দিয়ে তাদের ঘিরে প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। যদি মাছ ধরার ফাঁদ হিসেবে ব্যবহারের অনুমানটি সঠিক হয়, তাহলে বলা যায়, মনোলিথগুলোতে জোয়ারের পানি নেমে যাওয়ার সময় মাছ ধরার জাল বেঁধে রাখা হতো।
প্রাচীরটির মোট ভর প্রায় ৩ হাজার ৩০০ টন। প্রত্নতাত্ত্বিক ইভান পাইয়ার বলেন, এই বিশাল নির্মাণ একটি সুসংগঠিত সমাজের কাজ হতে পারে। মূলত শিকারি-সংগ্রাহক (হান্টার গ্যাদারার) জনগোষ্ঠী এটি নির্মাণ করেছে, যারা সম্পদের প্রাচুর্য থাকায় স্থিতিশীল জীবনযাপন শুরু করেছিল। অথবা, এটি ছিল ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে এই অঞ্চলে আসা নব্যপ্রস্তর যুগের জনগোষ্ঠীর নির্মাণ।
পাইয়ারের মতে, মনোলিথগুলো নব্যপ্রস্তর যুগের বিখ্যাত মেনহিরগুলোর চেয়েও প্রাচীন। ফলে এটি পাথর উত্তোলন, কাটা এবং পরিবহনের জ্ঞান তৎকালীন শিকারি-সংগ্রাহক সমাজ থেকে পরবর্তী নব্যপ্রস্তর যুগের কৃষকদের কাছে স্থানান্তরিত হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব নটিক্যাল আর্কিওলজিতে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, এই আবিষ্কার স্থানীয় ব্রেটোন কিংবদন্তিগুলোর উৎস হতে পারে। যেমন, ব্রিতানির উপকূলে অবস্থিত বে অব দোয়ারনেনেজ-এর আশপাশে ডুবে যাওয়া শহর ইশ (Ys)-এর কিংবদন্তি। গবেষকদের মতে, একটি অত্যন্ত সুসংগঠিত সমাজ দ্বারা গঠিত অঞ্চলের বিলুপ্তি মানুষের স্মৃতিতে গভীরভাবে প্রোথিত হয়েছে। সমুদ্রের জলস্তর দ্রুত বৃদ্ধির ফলে মাছ ধরার কাঠামো, প্রতিরক্ষামূলক কাজ এবং বাস্তুচ্যুতির ঘটনাগুলো সম্ভবত স্থানীয় মানুষের মনে দীর্ঘস্থায়ী ছাপ ফেলেছিল।

এই টেলিস্কোপ নিয়ে ছিল দীর্ঘ প্রত্যাশা। ফলে সঙ্গে ছিল চরম উৎকণ্ঠা আর উত্তেজনাও। বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার মানুষ এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলেন। ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে এই প্রকল্পটি নিয়ে কাজ চলেছে।
২৬ ডিসেম্বর ২০২১
কোনো বড় ধরনের সৌরঝড় বা প্রযুক্তিগত বিপর্যয়ের কারণে যদি পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা স্যাটেলাইটগুলো হঠাৎ নিজেদের গতিপথ পরিবর্তনের সক্ষমতা হারায়, তবে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা।
৩ দিন আগে
উত্তর ইতালির একটি ন্যাশনাল পার্কে ২১ কোটি বছর আগের ডাইনোসরের পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে। তাও আবার একটি-দুটি নয়, হাজার হাজার। এই পায়ের ছাপগুলোর কয়েকটির ব্যাস ১৫ ইঞ্চি পর্যন্ত। আর এগুলো সমান্তরাল সারিতে সাজানো। এসবের মধ্যে অনেকগুলোতে আঙুল ও নখের ছাপ স্পষ্ট বোঝা গেছে
৩ দিন আগে
ব্রিটিশ কলম্বিয়ার উপকূলে একদিন। স্যামন মাছের ঝাঁক পড়িমড়ি করে ছুটতে দেখা গেল। তাদের পিছেই চোখে পড়ল কিলার হোয়েল নামে পরিচিত অরকা ও হোয়াইট–সাইডেড ডলফিনের দলকে। তাও আবার একসঙ্গে! এই দুই শিকারী প্রাণীকে জোটবেঁধে স্যামন শিকারে ছুটতে দেখে যারপরনাই বিস্মিত বিজ্ঞানীরা।
৬ দিন আগে