Ajker Patrika

প্যাঁচের পাঁচালিতে মসলা

তানিয়া ফেরদৌস
প্যাঁচের পাঁচালিতে মসলা

পৃথিবীর কোনো কিছুই সোজা নয়। সবকিছুতেই আছে প্যাঁচ। প্যাঁচ আছে বলেই তার পাঁচালি আছে। পাঁচালি আছে বলেই না ঘ্রাণটা ছড়িয়ে পড়ে সবখানে। থাক অত কথা আর না বলি। বলি কী, এই কোরবানির পশুর মাংস রান্না করতে, কাবাব বানাতে যে জিনিসটি আগে দরকার সেটি কী, জানেন? মসলা। 

জিরার সুগন্ধ না এলে যেন মাংসের পদ পরিপূর্ণতাই পায় নাআদা–রসুন–পেঁয়াজ বাটা, কুচি করা পেঁয়াজ, হলুদ–মরিচ–জিরা–ধনে, আস্ত এলাচি, দারুচিনি, তেজপাতা—এই আটপৌরে মাংসের মসলাগুলোর স্বাদ, গন্ধ, আর ব্যবহারের উপযোগিতা আমরা সবাই কম–বেশি জানি। কিন্তু মাংসের বিশেষ পদ তৈরি করতে কিছু বিশিষ্ট মসলাপাতির ব্যবহার রয়েছে, যেগুলোর ফ্লেভার সম্পর্কে সবারই আগ্রহ রয়েছে। বিশেষত স্কুলে পড়া বাংলা ব্যাকরণের প্রায় সমোচ্চারিত শব্দগুলোর মতো কিছু মসলা স্বাদ,  গন্ধের দিক থেকে খুবই কাছাকাছি; অথচ একেবারেই আলাদা। সাধে কী আর বলেছিলাম, প্যাঁচ সবখানে আছে। যেমন ধরুন, পেঁয়াজ কুচি করে দিলে এক স্বাদ আবার একটা পেঁয়াজ চার ভাগ করে দিলে পাবেন আরেক স্বাদ। রসুনও গোটা কোয়ার এক স্বাদ, তো একটু থেঁতলে দিলে সেটা বদলে যাবে। সব মসলারই তাই। 

শাহিজিরা দুনিয়ার সবচেয়ে দামি ও দুষ্প্রাপ্য মসলাগুলোর একটিজিরা, শাহিজিরা, কালো জিরা আর মিষ্টিজিরা (মৌরি) 
আমাদের দেশের রান্নায় জিরার সুগন্ধ না এলে যেন মাংসের পদ পরিপূর্ণতাই পায় না।  বীজ জাতীয় মসলা জিরা (cumin) কিন্তু যুগ যুগ ধরে প্রাচীন মিসর, লাতিন আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও আরব দেশগুলোতেও খুব গুরুত্বপূর্ণ মাংস রান্নার জন্য। এর এক ধরনের সোঁদা-মেটে ফ্লেভার আছে, যা মাংসের সঙ্গে খুব সুন্দরভাবে খাপ খেয়ে যায়। আমাদের কোর্মা, রেজালা, ঝাল করে রাঁধা মাংস, কাবাব—সবকিছুতেই জিরার উষ্ণ স্বাদ অপরিহার্য। আবার বিরিয়ানি মসলাতেও জিরা থাকবেই। আস্ত জিরার ফোড়নে মাংসের ঝাল ফ্রাই, কড়াই, দোপিঁয়াজা অন্য মাত্রা পায়। আবার অন্য সব মসলার সঙ্গে জিরা বাটায় কষিয়েই মাংসের ভুনা, কষা, ঝোলের পদ জমে ভালো।  এদিকে, টালা বা ভাজা জিরা শেষে ছড়িয়ে মাংসের পদে আনা যায় অনন্য স্বাদ–গন্ধ। বিশেষত খাসি বা ভেড়ার মাংসে এভাবে জিরার ব্যবহার জরুরি। 

কালোজিরাঅন্যদিকে শাহিজিরা বা caraway seeds দুনিয়ার সবচেয়ে দামি ও দুষ্প্রাপ্য মসলাগুলোর একটি। এটি জিরার চেয়ে কালচে,  সরু,  মসৃণ একটু বাঁকানো আকৃতির।  শাহিজিরা সাধারণত মাংসের পদে আস্ত ফোড়নে বা বিরিয়ানির চাল ভাপাতে বেশি ব্যবহার হয়।  আমাদের দেশি রোস্ট, রেজালা, কালিয়া আর কড়াই মাংসেও আস্ত শাহিজিরা ব্যবহার হয়। বেশি দিলে তিতকুটে লাগবে বলে গুঁড়ো শাহিজিরা আবার খুব অল্প পরিমাণে দেওয়া হয় অনেক ইউরোপীয় মাংস রান্নায়। এর উদাহরণ বিফ গোলাশ।  এদিকে কিছু কাবাব মসলায় খুব অল্প পরিমাণে শাহিজিরা গুঁড়া দেওয়া হয়। কারণ, বেশি দিলে এর মুলেথি বা লিকরিশ। এর মতো কড়া ফ্লেভার আর কোনো মসলার গন্ধই পাওয়া যাবে না। 

কালো জিরা আর কালিজিরা কিন্তু একেবারেই আলাদাকালো জিরা আর কালিজিরা কিন্তু একেবারেই আলাদা। কালো রঙের জিরায় অনেক সময় সাধারণ জিরা মিশিয়ে ব্যবহার করা হয় ইউরোপের কোনো কোনো দেশে ও তুর্কিস্তানে। সেখানে আমাদের চিরচেনা জিরাকে রোমান কিউমিন বলে। এই কালো রঙের জিরার স্বাদ–গন্ধ জিরার মতোই; তবে কিছুটা মৃদু। 

মিষ্টি জিরা নাম দেওয়া হলেও মৌরি একেবারেই আলাদা জগতের মসলাজিরার মতো দেখতে বলে মিষ্টি জিরা নাম দেওয়া হলেও মৌরি (Fennel seeds) একেবারেই আলাদা জগতের মসলা। মৌরির বীজে এক ধরনের মিষ্টি গন্ধ আছে। স্বাদও মিঠে ধাঁচের।  আস্ত মৌরির মুখশুদ্ধি হিসেবে যেমন ব্যবহার আছে, তেমনি মালপোয়া বা অন্যান্য মিষ্টান্নে এর তুলনাহীন স্বাদ–গন্ধ মন কেড়ে নেয়। চাইনিজ ফাইভ স্পাইসে যেমন মৌরি গুঁড়া আছে, তেমনি এর আস্ত ব্যবহার হয় পাঁচফোড়নে। তাই মাংসের চাইনিজ পদ বা আচারী মাংসে এই মসলা দিতে হয়। খাসির গেলাসি হোক আর গরুর মেজবানি রান্না—মৌরি বাটা লাগবেই। 

ছোট, সবুজ, ফলসুলভ গন্ধের এলাচি তার সুবাসের জন্য বিখ্যাতএলাচি আর বড় এলাচ
ছোট, সবুজ, ফলসুলভ গন্ধের এলাচি তার সুবাসের জন্য বিখ্যাত পৃথিবীর সবখানে।  সব ধরনের মিষ্টান্ন ছাড়াও মাংসের যেকোনো পদেই ছোট এলাচি দিতে হয়।  গরম মসলা, কাবাব মসলা বা বিরিয়ানি মসলার ভিত্তি যে ক’টি মসলা, তার একটি এই এলাচি। কোর্মার প্রধান ফ্লেভারটিই এই এলাচির, গেলাসিরও। 

বড় এলাচ বা কালো এলাচের আছে এক গুরুগম্ভীর কর্পূরের মতো গন্ধএদিকে বড় এলাচ বা কালো এলাচ আসলেই বড়সড় আর কালো রঙের। এর আছে এক গুরুগম্ভীর কর্পূরের মতো গন্ধ। এই মসলা সব সময় আস্ত অবস্থায় বিরিয়ানি,  দই দিয়ে তৈরি মাংসের ডিশ, রোগান জোশ ইত্যাদি পদে খুবই অন্যরকম এক স্মোকি ফ্লেভার দেয়। 

কালো আর সাদা গোলমরিচ কিন্তু একই গাছের বীজকালো ও সাদা গোলমরিচ আর কাবাবচিনি
গোলমরিচ বহু যুগ ধরেই পৃথিবীর এ প্রান্তে রান্নায় ঝালের উপকরণ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। মাংস রান্নায় এটি ব্যবহার হয়ে আসছে। কালো আর সাদা গোলমরিচ কিন্তু একই গাছের বীজ।  ফল পাকতে শুরু করলেই তুলে নিয়ে অক্সিডাইজ বা ভাঁপিয়ে শুকিয়ে নিলে কুঁচকে থাকা ত্বকের কড়া স্বাদের ঝাল ও ঝাঁজালো কালো গোলমরিচ পাওয়া যায়। এই গোলমরিচ বাটায় দক্ষিণী কায়দায় বিফ কারি খুব জনপ্রিয় ভারতে। গরম মসলা, কাবাব মসলায় কালো গোলমরিচ অপরিহার্য। 

আমাদের দেশে কালো আর সাদা গোলমরিচের ব্যবহার বেশি হলেও ছয় ধরনের গোলমরিচের অস্তিত্ব আছে পৃথিবীতেআবার মসৃণ সাদা গোলমরিচ একই গাছের সুপক্ক ফল। এটি পানিতে ভিজিয়ে আবরণ তুলে ফেলে সাবধানে রোদে শুকিয়ে বানানো হয়। আস্ত সাদা গোলমরিচ মাংসের পদ এবং কাচ্চি বা পাক্কি বিরিয়ানিতে ব্যবহার হয়।  এর স্বাদ–গন্ধ খুবই রাজকীয় ও মৃদু ধরনের।  মুসাল্লাম, আফগানি পোলাও, উজবেক প্লভ,  আরব কাবসা, মান্দি,  পার্সি মালাই কোফতা,  আমাদের মালাই বা রেশমি কাবাবে এর গুঁড়ো বেশ ব্যবহার হয়।  এতে করে ঘি, তেল, চর্বির মধ্যে এক ধরনের চনমনে স্বাদ–গন্ধ আসে ঝালের মাত্রা না বাড়িয়েই এবং রঙে মখমলী ঘিয়ে ভাব রেখেই। আমাদের দেশে কালো আর সাদা গোলমরিচের ব্যবহার বেশি হলেও ছয় ধরনের গোলমরিচের অস্তিত্ব আছে পৃথিবীতে। 

কাবাবচিনি কিন্তু একেবারেই আলাদা স্বাদ–গন্ধের মসলাকাবাবচিনি কিন্তু একেবারেই আলাদা স্বাদ–গন্ধের মসলা। এর ব্যবহারও বিচিত্র। তারপরও এর আকার–আকৃতির সঙ্গে কালো গোলমরিচের মিল রয়েছে। তবে এর ছোট্ট শুঁড়টির দিকে খেয়াল করলে আর গন্ধ বুঝলে গুলিয়ে যাবে না এ দুটো। এই মসলাটিকে ইংরেজিতে অলস্পাইস বলে। কারণ, এর বিশিষ্ট সুবাসটি লবঙ্গ, গোলমরিচ,  দারুচিনি আর জায়ফলের সম্মিলিত ঘ্রাণের মতো। আরব,  তুর্কি আর মরক্কোসহ আফ্রিকার বহু দেশের প্রিয় মাংসের মসলা এই কাবাবচিনি। মাংসের তাজিন, বিভিন্ন কাবাব তৈরি করতে এই মসলার কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। দমপোখত বা হান্ডি গোশত–এর আটার বাঁধন খুললে প্রথমেই এই মসলার সুবাস নাকে আলোড়ন জাগায়। এ ক্ষেত্রে অবশ্য টেলে গুঁড়ো করে দিলে বেশি ভালো ফল পাওয়া যায়। 

রাঁধুনি নামের এ ছোট খসখসে দানাবিশিষ্ট মসলা মাংস রান্নায় জাদুকরী ভূমিকা রাখেরাঁধুনি আর জোয়ান
রাঁধুনি নামের এক ছোট খসখসে দানাবিশিষ্ট মসলা মাংস রান্নায় জাদুকরী ভূমিকা রাখে।  একে আঞ্চলিকভাবে এ দেশে কোথাও কোথাও ছোট ধনেও বলে। চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী গরুর মেজবানি মাংসের অতুলনীয় স্বাদ–গন্ধের ব্যাপারে এ মসলার কৃতিত্ব আছে বলে সেখানকার অভিজ্ঞ রন্ধনশিল্পীদের থেকে জানা যায়। এ ক্ষেত্রে রান্নার শেষ দিকে আলাদা করে জিরা, রাঁধুনি, গরম মসলার মিশ্রণের চূর্ণ দেওয়া হয় নিজস্ব পছন্দ অনুযায়ী। ইংরেজিতে ওয়াইল্ড সেলেরি সিডস বা হিন্দিতে আজমোদা বলে পরিচিত এটি। পাঁচফোড়নেও এর ব্যবহার আছে। মেটে, পাতা গন্ধী—এই আস্ত রাঁধুনির ফোড়ন দিলেও মাংসের ফ্লেভারকে খুলে মেলে ধরে। 

জোয়ান বা আজওয়াইন (Carom seeds) আমাদের উপমহাদেশে আস্ত ফোড়ন হিসেবে নিরামিষ খাবারে বেশি ব্যবহার হয়জোয়ান বা আজওয়াইন (Carom seeds) আমাদের উপমহাদেশে আস্ত ফোড়ন হিসেবে নিরামিষ খাবারে বেশি ব্যবহার হয়। মধ্যপ্রাচ্যে ও পারসি রান্নায় এর গুঁড়ো মাংসের এক বিশেষ মসলা হিসেবে খুব সমাদৃত। খেয়াল না করলে একে রাঁধুনির সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা বেশ সোজা। এটি কিন্তু আস্ত শুকনো ফল, গাছের বীজ নয়।  থাইম হার্বের সঙ্গে এর বেশ মিল আছে। আর মসলাটি খুব কম করে ব্যবহার করতে হয়। পেশোয়ারি মাংসের পদে এর লক্ষণীয় ব্যবহার দেখা যায়।  আজারবাইজান, ইরান, ইরাক, মধ্যপ্রাচ্যে আস্ত বা বেশ বড় টুকরো করে ভেড়া, দুম্বা ইত্যাদির মাংস রোস্ট করতে জোয়ানের গুঁড়া খুব ব্যবহার হয়।  হজমী গুণের বদৌলতে জোয়ান খুব উপকারী মাংস প্রেমীদের জন্য। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অনুষ্ঠানের আগে ত্বকের যত্ন নেবেন যেভাবে

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
ত্বকের ধরন বুঝে ক্লিনজিং করুন। ছবি: পেক্সেলস
ত্বকের ধরন বুঝে ক্লিনজিং করুন। ছবি: পেক্সেলস

সব ঠিক চলছিল। কিন্তু যেই অনুষ্ঠানের তারিখ পড়ে গেল, উঠল মুখে ব্রণ কিংবা লাল হয়ে উঠল র‍্যাশ! মেজাজ হয়ে উঠল তিরিক্ষি। কিন্তু অনুষ্ঠানে তো যেতে হবে। এমন অবস্থায় যে সব সময় পারলারেই যেতে হয়, তা নয়। ঘরে বসেও এর বিরুদ্ধ ব্যবস্থা নিতে পারেন। ত্বকের ধরন অনুযায়ী যত্ন নিলে নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানের দিন ত্বক অনেকটাই স্বাস্থ্য়োজ্জ্বল দেখাবে। অনুষ্ঠানের এক সপ্তাহ আগে থেকে যেভাবে ত্বকের যত্ন নিতে পারেন–

ত্বকের ধরন বুঝে ক্লিনজিং করুন

ত্বকের ধরন অনুযায়ী যত্ন নিন। ছবি: পেক্সেলস
ত্বকের ধরন অনুযায়ী যত্ন নিন। ছবি: পেক্সেলস

প্রতিদিন বাইরে থেকে ফিরে প্রথমে ভালো করে মুখ পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর ত্বকের ধরন অনুযায়ী যত্ন নিন। যত্ন নেওয়ার আগে অবশ্যই নিজের ত্বকের ধরন কেমন, সেটি জানা জরুরি। যাঁদের ত্বক স্বাভাবিক, তাঁরা শীতে ত্বকের হারানো উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে এক চা-চামচ চালের গুঁড়া, এক চা-চামচ ময়দা, এক চা-চামচ অ্যালোভেরা জেল ভালো করে মিশিয়ে পুরো মুখে দু-তিন মিনিট ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলতে পারেন। এরপর প্যাক ব্যবহার করতে হবে।

প্যাক তৈরিতে আপেল পেস্ট এক চা-চামচ, মসুরের ডালের বেসন এক চা-চামচ, অর্ধেক ডিমের কুসুম ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে।

শীতকালে শুষ্ক ত্বকের বেশি যত্নের প্রয়োজন। এ ধরনের ত্বকের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক ক্লিনজার হিসেবে মসুর ডাল বাটার সঙ্গে এক টেবিল চামচ গরম দুধ মিশিয়ে কুসুম গরম অবস্থায় পুরো মুখে লাগাতে হবে। এতে ত্বকের মরা কোষ উঠে আসবে ও রোমকূপগুলো পরিষ্কার হয়ে যাবে। এটা ফেসওয়াশের মতো ব্যবহার করতে হবে। পরে পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধোয়ার পর প্যাক লাগাতে হবে। ত্বক তৈলাক্ত হলে এক চা-চামচ গ্রিন টি গুঁড়া নিয়ে এর সঙ্গে এক চা-চামচ টক দই মিশিয়ে পুরো মুখে দু-তিন মিনিট ম্যাসাজ করে ধুয়ে নিতে হবে। এ ছাড়া দারুচিনি গুঁড়া এক চা-চামচ, এক চা-চামচ মুলতানি মাটি, ডিমের সাদা অংশ এগুলো ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে ত্বকে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে পারেন। এ প্যাক ব্যবহারের ফলে ময়শ্চারাইজারের ভারসাম্য ঠিক থাকবে।

ডিপ ক্লিনজিং

প্রথমে ক্লিনজার ব্যবহার করে ত্বক পরিষ্কার করে নিতে হবে। ত্বকের ধরন অনুযায়ী জেল, ফোম বা ক্রিম টাইপ ক্লিনজার বেছে নিতে পারেন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য জেল বা ফোম ক্লিনজার বেছে নিন। শুষ্ক বা সংবেদনশীল ত্বকের জন্য হাইড্রেটিং ক্লিনজার উপযুক্ত। ত্বক ভেজানোর জন্য হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন। এতে বন্ধ রোমকূপ খুলে যাবে। এক মিনিটের জন্য বৃত্তাকার গতিতে ক্লিনজার ঘষুন। হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ভালো করে ঘষুন এবং পরিষ্কার তোয়ালে ব্যবহার করে শুকিয়ে নিন।

ব্যবহার করুন এক্সফোলিয়েটর। ঘষে ঘষে ত্বকে ব্যবহার করে ধুয়ে ফেলুন। এরপর স্টিম করুন। পরের ধাপে ত্বকের উপযোগী ফেস মাস্ক দিয়ে ডিপ ক্লিন করুন। এ ক্ষেত্রে ক্লে ব্ল্যাক মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। মুখ ধুয়ে সব শেষে টোনার ও ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন।

স্কিন হোয়াইটনিং ট্রিটমেন্ট

মুখের ত্বকের সঙ্গে গলা, ঘাড়, হাত ও পুরো শরীরের রঙের সামঞ্জস্য বজায় রাখতে যত্ন নিতে হবে পুরো শরীরের ত্বকের। মসুর ডাল বাটা পরিমাণমতো নিয়ে এর সঙ্গে লেবুর খোসাবাটা, পরিমাণমতো টক দই ও নারকেল তেল মিশিয়ে পুরো শরীরে মেখে নিয়মিত ম্যাসাজ করে গোসল করে নিতে হবে। সপ্তাহে দুই দিন করতে হবে এটি। এতে করে ত্বকের মরা কোষ উঠে গিয়ে উজ্জ্বলতা বাড়বে। এ ছাড়া ত্বকের কোমলতা বজায় থাকবে।

হাত ও পায়ের যত্ন

সপ্তাহে অন্তত দুদিন বাড়িতে পেডিকিউর ও মেনিকিউর করতে হবে। অনুষ্ঠানের দিন পারলার থেকে একবার পেডিকিউর ও মেনিকিউর করিয়ে নিলে ভালো। কারণ, পারলারে ম্যাসাজ খুব ভালো হয়। ডিপ ক্লিনও করা সম্ভব।

সূত্র: স্টাইলক্রেজ ও স্কিনক্র‍্যাফট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডেটি ডিসেম্বর: বিশ্বের অন্যতম বড় উৎসব

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
সাধারণত ৬ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলে ডেটি ডিসেম্বর। ছবি: ট্রাভেল ট্যাংক
সাধারণত ৬ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলে ডেটি ডিসেম্বর। ছবি: ট্রাভেল ট্যাংক

নাইজেরিয়ার বড় শহর লাগোস সারা বছর ব্যস্ত থাকে। তবে বছরের শেষ দিকে এই বিশাল শহর যেন রূপ বদলে আরও বেশি সরগরম হয়ে ওঠে। এর কারণ ডেটি ডিসেম্বর। এটি শহরের বার্ষিক উৎসব। একে ঘিরে পুরো শহর সেজে ওঠে ঝলমলে আলোয়। রাত হয়ে ওঠে সংগীতময়, রাস্তাজুড়ে থাকে উৎসবমুখর মানুষের ঢল। সংগীত, খাদ্য, পানীয় ডিসেম্বরে সব যেন ফোয়ারা ছোটায় লাগোসে। হবে নাই-বা কেন। এটি যে পৃথিবীর অন্যতম বড় উৎসব!

তবে এ বছরের উৎসবের আবহে আনন্দের পাশাপাশি রয়েছে একধরনের অস্বস্তিকর সুর। অর্থনৈতিক চাপ, নিরাপত্তাহীনতা—সব মিলিয়ে উৎসবের উচ্ছ্বাসে খানিক ছেদই পড়ছে।

২০২৪ সালের ডেটি ডিসেম্বর থেকে লাগোস রাজ্য সরকার পর্যটন ও বিনোদন খাত থেকে আয় করেছে ৭ কোটি ১৬ লাখ ডলারের বেশি। ছবি: এএফপি
২০২৪ সালের ডেটি ডিসেম্বর থেকে লাগোস রাজ্য সরকার পর্যটন ও বিনোদন খাত থেকে আয় করেছে ৭ কোটি ১৬ লাখ ডলারের বেশি। ছবি: এএফপি

সাধারণত ৬ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলা ডেটি ডিসেম্বর কখনো কখনো গড়িয়ে যায় জানুয়ারি মাসেও। একটার পর একটা অনুষ্ঠান হয় দেশজুড়ে, যেখানে স্থানীয়রা তো বটেই, বিদেশি পর্যটকেরাও হাত খুলে খরচ করে।

এই সময় বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে দেশে ফেরেন নাইজেরিয়ার প্রবাসীরা। তাঁরা সঙ্গে নিয়ে আসেন মোটা অঙ্কের অর্থ। ফলে লাগোস পরিণত হয় এক বিশাল কার্নিভ্যালের নগরীতে। যেখানে রাস্তা থাকে যানজটে ঠাসা আর চলে রাতজুড়ে উচ্চ শব্দের গান।

‘ডেটি’ শব্দটির অর্থ ‘নোংরা’—অর্থাৎ সব নিয়ম ভেঙে মুক্তভাবে আনন্দ করা। আর ঠিক সেটাই ঘটে লাগোসে। উৎসব, কনসার্ট, পপ-আপ মার্কেট, সৈকত পার্টি আর বিয়ের অনুষ্ঠান সব একের পর এক চলতে থাকে। প্রতিটিই বড় ও জাঁকজমকপূর্ণ হওয়ার প্রতিযোগিতা।

২০২৪ সালে একের পর এক বড় আয়োজন ছিল। ছিল গ্র্যামি মনোনীত শিল্পী ডেভিডো ও ওলামিদেকে নিয়ে ফ্লাইটাইম ফেস্ট, সমুদ্রতীরে উইজকিডের ভাইবস অন দ্য বিচ এবং শহরজুড়ে ১৫টি আফ্রোবিটস পার্টি নিয়ে মাই আফ্রোবিটস ডেটি ডিসেম্বর উদ্‌যাপিত হয়।

এ বছরের আয়োজনও কম কিছু নয়। এবার আয়োজিত হচ্ছে পামওয়াইন মিউজিক ফেস্টিভ্যাল, পিক ডেটি ভাইবস, দ্য বনফায়ার এক্সপেরিয়েন্স, জুমা জুক্স লাইভ ইন লাগোস এবং ফুডি ইন লাগোস ফেস্টিভ্যাল।

সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণ

ডেটি ডিসেম্বর আফ্রিকার সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণে ভূমিকা রাখছে। ছবি: এএফপি
ডেটি ডিসেম্বর আফ্রিকার সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণে ভূমিকা রাখছে। ছবি: এএফপি

২০১৭ সালে পামওয়াইন মিউজিক ফেস্টিভ্যাল প্রতিষ্ঠা করেন ওয়ালে ডেভিস। তিনি বলেন, ‘ডেটি ডিসেম্বর নামটা আসার আগেও ডিসেম্বর আমাদের কাছে সব সময়ই ডেটি ছিল। এখন সেটা শুধু আরও বড় হয়েছে।’ দেশের ভেতর ও প্রবাস থেকে আসা দর্শনার্থীদের কারণে গত দুই বছর এই উৎসব আরও বড় হয়েছে। অনেক লাগোসবাসী সারা বছর পরিকল্পনা করেন এই সময়কে ঘিরে। ৩৫ বছর বয়সী উদ্যোক্তা ওমোটয়োসি আকিনকুয়াদে চীনে ব্যবসায়িক কাজে মাসের পর মাস ঘুরেছেন। তিনি বলেন, ‘ডেটি ডিসেম্বর মানেই কষ্টকর পরিশ্রম থেকে পুরোপুরি মুক্ত হওয়া।’

নিউইয়র্ক থেকে তৃতীয়বারের মতো আসা জনসংযোগ বিশেষজ্ঞ মিমি এগেসিওনু একে বলেন, ‘একটি অসাধারণ উৎসব এটি। প্রতিদিন যেন নতুন কোনো আন্তর্জাতিক তারকাকে দেখা যায়। এই অনুভূতি পৃথিবীর আর কোথাও নেই।’

বাড়ে মাছ আর পানীয়র দাম

ডেটি ডিসেম্বর নতুন কিছু নয়। দুই দশক ধরে নাইজেরিয়ার পূর্বাঞ্চলে কার্নিভ্যাল ক্যালাবার হয়ে আসছে। তবে বিশ্বজুড়ে আফ্রোবিটস সংগীতের জনপ্রিয়তার প্রভাব এই উৎসবে পড়েছে। পর্যটন বিশেষজ্ঞ ইকেচি উকোর মতে, প্রবাসীরা এই উৎসবে যোগ দিতে বড় অঙ্কের অর্থ খরচ করেন। ফলে এটি দিন দিন বিলাসবহুল হয়ে উঠছে।

এর প্রভাব পড়েছে দামে। আগস্ট থেকেই বিমানভাড়া বেড়ে যায়। নাইজেরিয়ার এয়ারলাইনসে ইকোনমি টিকিটের দাম দ্বিগুণ হয়ে ৩ লাখ ৫০ হাজার নাইরায় পৌঁছায়। পানীয়র দামও প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। চাহিদা শুধু নাইট লাইফেই সীমাবদ্ধ নয়। সেলুন, দরজির দোকান—সবখানেই চাপ। কুকুর হেয়ার সেলুন আগস্ট থেকেই বুকিং নেয় এবং ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুরোপুরি পূর্ণ।

উৎসবের ছায়ায় অন্ধকার বাস্তবতা

২০২৪ সালের ডেটি ডিসেম্বর থেকে লাগোস রাজ্য সরকার পর্যটন ও বিনোদন খাত থেকে আয় করেছে ৭ কোটি ১৬ লাখ ডলারের বেশি। এদিকে প্রবাসীদের ওপর ৫০০ ডলারের ‘ট্যুরিজম ট্যাক্স’ আরোপের প্রস্তাব ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে বাতিল করা হয়। সরকারকে এখানে হস্তক্ষেপ না করে নিরাপত্তা এবং ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা উচিত বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

তবে উৎসবের মধ্যেও অনেক অন্ধকার দিক রয়েছে। নাইজেরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে সহিংসতা, অপহরণ ও নিরাপত্তাহীনতা নিত্যসঙ্গী। তবু জীবন থেমে থাকে না। পর্যটন বিশেষজ্ঞ উকো বলেন, ‘কয়েক দিনের জন্য হলেও যদি এই উৎসব আমাদের দুঃখ ভুলতে সাহায্য করে, তাহলে সেটাই যথেষ্ট। ডেটি ডিসেম্বর বন্ধ করলে সমস্যাগুলো এমনিতেই মিটে যাবে, এমন নয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এক অগোছালো স্ক্র্যাপবুকের ফ্যাশন স্মৃতি: ২০০০ থেকে ২০২৫ এ প্রত্যাবর্তন

কাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা 
এখনকার পরিমিতি বোধের যুগে শূন্য দশকের  ফ্যাশন ফিরছে আবার। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি
এখনকার পরিমিতি বোধের যুগে শূন্য দশকের ফ্যাশন ফিরছে আবার। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি

একুশ শতকের প্রথম দশক, অর্থাৎ ২০০০ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সময়টা ছিল এক অদ্ভুত ফ্যাশনের সময়। তখন আভিজাত্যের চেয়ে আস্ফালন ছিল বেশি! সূক্ষ্মতা তখন প্রায় মৃত। চারদিকে শুধু পাপারাজ্জির ক্যামেরার ফ্ল্যাশ। মাই স্পেসের জন্য আয়নায় তোলা অগোছালো ছবি। আর ছিল আত্মবিশ্বাসের জয়গান। বলা যেতেই পারে, ২০০০ সালের দিকে আত্মবিশ্বাসই ছিল আসল স্টাইল। এখনকার পরিমিত ফ্যাশনের যুগে সেই বিশৃঙ্খলা আবার ফিরে আসছে। না, ঠিক বিশৃঙ্খলা নয়, একে বলা যেতে পারে শৃঙ্খলাবদ্ধ বিশৃঙ্খলা। ২০২৫ এর নতুন প্রজন্ম খুঁজছে সেই রঙিন উন্মাদনা। তারা চাইছে সেই কেয়ারফ্রি স্টাইল। সামাজিক মাধ্যমেও বিভিন্ন সময় অনেকে মজা করে ভিডিও বানান এমন ছবি তোলার স্টাইলে। কিংবা বড় বড় ব্র্যান্ডের বিলবোর্ডে এমনকি ফ্যাশন ম্যাগাজিনগুলোতেও আমরা এমন এলোমেলো স্টাইলে দাঁড়ানো ছবি দেখি এখন। তার মানে, দেড়-দুই দশকের পুরোনো ফ্যাশন ও স্টাইল ফিরছে আবার প্রবলভাবেই?

আনুষঙ্গিক যখন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু

সেই সময় চশমা মানেই ছিল চোখের ওপর এক রঙিন পর্দা। ছবি: পেক্সেলস
সেই সময় চশমা মানেই ছিল চোখের ওপর এক রঙিন পর্দা। ছবি: পেক্সেলস

সেই সময় চশমা মানেই ছিল বিশাল কিছু। নীল, গোলাপি বা বেগুনি লেন্স। চোখের ওপর যেন একটা রঙিন পর্দা। প্যারিস হিল্টনের সেই চশমাগুলো ছিল রাজকীয়। পুরো পৃথিবীটাই যেন সেই চশমার রঙে সুন্দর দেখাত। এখন আবারও ফিরে এসেছে সেই স্টাইল। সেই সময় ঠোঁটে ছিল গ্লসের ছটা। এত উজ্জ্বল যে একটু হলেই যেন আয়নার কাজ চলে যাবে। মার্কিন সংগীতশিল্পী, গীতিকার, অভিনেত্রী, নৃত্যশিল্পী, ব্যবসায়ী জেনিফার লোপেজ বা জে লো সেই গ্লসি ঠোঁটকে আইকনিক করেছিলেন। এমনকি তৎকালীন কিছু ফ্যাশন ম্যাগাজিনে এগুলো বোনাস হিসেবেও দেওয়া হতো। ‘গ্ল্যামার’ ম্যাগাজিনে বলা হয়েছে, ২০২৫ এ জে লো এই আঠালো টিউবগুলো আবারও জনপ্রিয় করে সবার হ্যান্ডব্যাগে পৌঁছে দেওয়ার পেছনে ভূমিকা রেখেছেন।

সেই সময়ের বেশ কিছু মোটিফও আবার ফিরে এসেছে। যেমন প্রজাপতি। এটি ছিল মেয়েলি ঢঙের এক চমৎকার প্রকাশ। ২০০০ সালের দিকে ফ্যাশন ট্রেন্ডের একটি বড় অংশজুড়ে চুলে ছিল প্রজাপতি ক্লিপ। মারিয়া ক্যারির সেই মায়াবী ট্রেন্ড। চোকার থেকে শুরু করে টপ পর্যন্ত ছিল প্রজাপতির উড়ে বেড়ানো। আবারও চুলের কাঁকড়া ব্যান্ড থেকে শুরু করে ছোট ক্লিপ পর্যন্ত প্রজাপতির সেই ওড়াউড়ি চোখে পড়ছে মার্কেটে ঘুরলে।

আবারও মিলেছে আরাম আর সাহস

সেই সময় ঠোঁটে ছিল গ্লসের ছটা। জেনিফার লোপেজ গ্লসি ঠোঁটকে আইকনিক করে তুলেছিলেন। ছবি: পেক্সেলস
সেই সময় ঠোঁটে ছিল গ্লসের ছটা। জেনিফার লোপেজ গ্লসি ঠোঁটকে আইকনিক করে তুলেছিলেন। ছবি: পেক্সেলস

অসম্ভব ছোট এই পার্সগুলো শূন্য দশকের শুরুর দিকে আইকন হয়ে উঠেছিল। সেগুলো এখন আবারও আমরা দেখছি। এখনকার একটা স্মার্টফোন সেখানে ঢোকানো সম্ভব নয়। তারপরেও আউটফিটের সঙ্গে মিলিয়ে ছোট ব্যাগ নেওয়াই এখন ফ্যাশন হয়ে উঠেছে। অনেকে মনে করেন, এটা নতুন ফ্যাশন ধারা। তাদের জন্য বলে রাখি, এটাও ফ্যাশন জগতে নতুন কিছু নয়, শূন্য দশকের ফ্যাশন। তখন ব্যাগগুলোতে একটি ফ্লিপ ফোন এবং লিপ গ্লসের বেশি কিছু আঁটত না। ২০০২ সালের প্রায় প্রতিটি পাপারাজ্জি শটে এগুলো অমর হয়ে আছে। এগুলো ছিল চপল, মেয়েলি এবং ব্যবহারিক উপযোগিতার প্রতি তোয়াক্কাহীন। গত বছরেই কাজলসহ বেশ কিছু বলিউড অভিনেত্রী শাড়ির সঙ্গে মোটা বেল্ট পরে একটি ফ্যাশন ট্রেন্ড তৈরি করেছিলেন। বলে রাখি, এটাও নতুন কিছু নয়। সেই প্রথম দশকে কোমরে ঝোলানো থাকত বিশাল সব বেল্ট। কখনো জিনসের নিচে, কখনো পোশাকের ওপর। বেল্টগুলো যেন ছিল একেকটা রহস্য।

ডেনিম আর মেটালিকের জাদু

ফ্যাশন জগৎ জুড়ে তখন ছিল ডেনিমের রাজত্ব। ছবি: পেক্সেলস
ফ্যাশন জগৎ জুড়ে তখন ছিল ডেনিমের রাজত্ব। ছবি: পেক্সেলস

একটা সময় জিনস ছিল বিস্ময়। তখন লো-রাইজ বা লো-কাট জিনস ছিল সবার প্রিয়। মার্কিন গায়িকা ব্রিটনি স্পিয়ার্সের হাত ধরে এটি ঘরে ঘরে পৌঁছে যায়। এর পাশাপাশি ছিল বুট কাট আর ফ্লেয়ার্ড জিনস। ফ্যাশন জগৎ জুড়ে তখন ডেনিমের রাজত্ব। সেই ঢিলেঢালা জিনস আবারও তরুণ-তরুণীদের আলমারিতে জায়গা করে নিয়েছে। কিশোর-কিশোরী থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আজ আবারও সেই ডেনিম জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। জিনসের পাশাপাশি শীতে ডেনিমের জ্যাকেট—সবই তাদের পছন্দের তালিকায় প্রথম সারিতে চলে এসেছে।

সেই সময় মানুষ ভবিষ্যতের নেশায় বুঁদ ছিল। চারদিকে শুধু রুপালি আর মেটালিকের ছোঁয়া। সিলভার জ্যাকেট বা হলোগ্রাফিক স্কার্ট। এমনকি চুলের রংও হয়ে গিয়েছিল রুপালি। যেন সবাই মহাকাশ ভ্রমণের জন্য তৈরি। এটি ছিল এক রঙিন আশাবাদ। আর জেন-জিদের হাত ধরে বর্তমানে সারা বিশ্ব বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন দেখছে। তাদের চোখেও রঙিন স্বপ্ন, বদলের একটা বিশেষ রং। তাই তাদের ফ্যাশনে আবারও মেটালিকের ছোঁয়া উঠে এসেছে।

লোগোম্যানিয়া আর লাক্সারি

সে সময়, অর্থাৎ সেই শূন্য দশকে ফ্যাশন যেন ফিসফিস করত না, চিৎকার করত। ব্র্যান্ডের নাম গায়ে জড়িয়ে রাখাই ছিল দস্তুর। ডিওরের স্যাডেল ব্যাগ কিংবা ফেন্ডির লোগো। লোকে যেন আধা মাইল দূর থেকেও ব্র্যান্ড চিনতে পারে। সেটাই ছিল আসল উদ্দেশ্য। সেই প্রবণতা আবারও ফিরে এসেছে। দাম বেশি হলেও ব্র্যান্ডেই মানুষের আরাম পৌঁছে গেছে। বিষয়টা অনেকটা সমাজে মুখ দেখানোর মতো বাড়াবাড়ির পর্যায়েও চলে যায় অনেক সময়।

সেই সময় টিনএজ ফ্যাশনে ছিল লেয়ার্ড ট্যাংকের ছড়াছড়ি। একটার ওপর একটা রঙিন কামিজ বা টপ। সঙ্গে ছোট ছোট গ্রাফিক টি-শার্ট। তাতে গ্লিটার দিয়ে লেখা থাকত অদ্ভুত সব কথা। প্রতিটি পোশাক ছিল ব্যক্তিত্বের এক-একটা ছোট সংস্করণ; যা আজও জনপ্রিয়। অবশ্য সব সময় ফ্যাশন ছিল প্রতিবাদের ভাষা।

অনুভূতির এক অগোছালো স্ক্র্যাপবুক

শূন্য দশক কোনো নিয়ম মানেনি। এটি ছিল স্বতঃস্ফূর্ত এক ফ্যাশন ধারা। কোনো ক্ষমা না চাওয়া পপসংস্কৃতির ফসল। সে সময় ফ্যাশন কালজয়ী হতে চায়নি। বড় বড় সিলুয়েট আর বড় বড় অনুভূতির গল্প ছিল সেটি। সেই অদম্য উৎসাহের কারণেই আজ ২০২৫-এ এসেও আমরা বারবার সেই দিনগুলোর দিকে ফিরে তাকাই।

সূত্র: শোবিজ ডেইলি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: প্রেমে বিয়ের কথা বললেই ব্লক খাবেন, দুঃখের পোস্টে হা হা পাবেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৫
আজকের রাশিফল: প্রেমে বিয়ের কথা বললেই ব্লক খাবেন, দুঃখের পোস্টে হা হা পাবেন

মেষ

আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে, কিন্তু পকেট তলানিতে। আজ আপনার সাহস দেখে পাড়ার কুকুরও কুর্নিশ করবে। ইন্টারভিউতে ডাক আসতে পারে; তবে যাওয়ার সময় পকেটে একটা চকলেট রাখবেন, যদি মাথা ঘুরে যায়! প্রেমে আজ ‘বিয়ে’ শব্দটা উচ্চারণ করবেন না, উল্টো দিক থেকে ব্লক খাওয়ার সম্ভাবনা ৯০ পারসেন্ট। টাকা লেনদেনে আজ বাঘের মতো সতর্ক থাকুন, না হলে বিড়ালের মতো কাঁদতে হবে।

বৃষ

পেশায় পালোয়ান, নেশায় ঘুমকাতুরে। আজ শেয়ার বাজার আপনার দিকে হাসবে। কিন্তু সাবধানে, হাসা মানেই যে লাভ তা নয়, উপহাসও হতে পারে! রাস্তায় ট্রাফিক সিগন্যাল ভাঙবেন না। আজ পুলিশ আপনাকে ‘স্পেশাল গেস্ট’ বানাতে খুব আগ্রহী। পুরোনো অসুখ নিয়ে সুসংবাদ পাবেন; হয়তো জানবেন ওটা আসলে অসুখই ছিল না, আলসেমি ছিল! দুপুরের পর কাজে গতি আসবে, তবে বিরিয়ানি খেলে সেই গতি আবার বিছানামুখী হবে।

মিথুন

সৃজনশীলতা ফেটে বেরোচ্ছে, কিন্তু কেউ পাত্তা দিচ্ছে না। আজ কাউকে ধার দেবেন না। ধার দেওয়া মানেই সেই বন্ধুকে চিরতরে হারিয়ে ফেলা। অফিসে আজ খুব মন দিয়ে কাজ করুন, বসের নজর আজ সিসিটিভির চেয়েও ধারালো। প্রেমে আজ কোনো আত্মীয়র কারণে অশান্তি হতে পারে। আত্মীয়দের থেকে দূরে থাকুন, শান্তিতে থাকুন। সৃজনশীল হোন, কিন্তু রান্নায় বেশি এক্সপেরিমেন্ট করতে যাবেন না।

কর্কট

আজ আপনি একটু বেশিই সেন্টিমেন্টাল। আজ চোখে জল আর নাকে সর্দি—দুটিই সমানতালে আসতে পারে। ব্যবসা শুরুর জন্য দিনটা ভালো, কিন্তু পার্টনার হিসেবে নিজের ছায়াকেও বিশ্বাস করবেন না। বিচক্ষণতা বজায় রাখুন, না হলে লোকজন আপনাকে ইমোশনাল ফুল বানিয়ে চলে যাবে। আজ ফেসবুকে দুঃখের পোস্ট দেবেন না। কেউ এসে সান্ত্বনা নয়, হা হা রিঅ্যাক্ট দিয়ে যাবে।

সিংহ

সকালে রাজা, সন্ধ্যায় ভিখারি (মানসিকভাবে)। সকালের দিকে সব জরুরি কাজ সেরে নিন। কারণ, সূর্য ডুবলে আপনার মেজাজও ডুববে। স্ত্রীর সঙ্গে তর্কে জেতার চেষ্টা করা মানে হলো আগ্নেয়গিরিতে ঝাঁপ দেওয়া। আজ আত্মবিশ্বাসের অভাবে কাজে একটু ব্যাঘাত ঘটতে পারে, তাই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দশবার বলুন, ‘আই অ্যাম দ্য বস!’ মায়ের শরীর ভালো থাকবে, তাই আজ একবেলা রান্না থেকে ছুটি পেতে পারেন।

কন্যা

নিখুঁত হতে গিয়ে জেরবার। বন্ধুদের সঙ্গে ট্যুর প্ল্যান ক্যানসেল হতে পারে। কারণ, সেই এক—আপনার খুঁতখুঁতে স্বভাব! পরীক্ষার ফল ভালো হবে, তবে তার আগে হার্টবিট কন্ট্রোল করুন। সম্পর্কের ক্ষেত্রে আজ একটু নমনীয় হোন, রোবটের মতো লজিক খুঁজলে একা থাকতে হবে। আজ পুরোনো কোনো বন্ধুর ফোন আসতে পারে, সম্ভবত সে টাকা ধার চাইবে।

তুলা

অর্থ আসছে, কিন্তু যাচ্ছে রকেটের গতিতে। আজ আপনার অর্থভাগ্য খুব ভালো, কিন্তু সমস্যা হলো খরচের হাতটা অক্টোপাসের মতো। স্ত্রী আপনার মনের কথা বুঝবে, কিন্তু আপনার ক্রেডিট কার্ডের বিলটা বুঝবে কি? সন্তানদের নিয়ে দুশ্চিন্তা ছাড়ুন, ওরা আপনার চেয়ে বেশি স্মার্ট। বিদেশের কারও সঙ্গে কথা হতে পারে, তবে সেটা স্ক্যাম কল কি না যাচাই করে নিন।

বৃশ্চিক

রহস্যময় হাসি আর পকেটভর্তি টাকা। ব্যবসায় আজ লক্ষ্মীলাভের যোগ আছে। বন্ধুদের আজ ডিনার খাওয়াতে হতে পারে, তাই পালানোর রাস্তা আগে থেকে ঠিক করে রাখুন। আধ্যাত্মিক চিন্তায় মনে শান্তি মিলবে, তবে সেটা যেন শুধু মশারির ভেতরেই সীমাবদ্ধ না থাকে। শেয়ার বাজারে আজ একটু ঝুঁকি নিতেই পারেন, তবে হারলে আমাকে দোষ দেবেন না!

ধনু

কঠোর পরিশ্রম, কিন্তু রেজাল্ট তথৈবচ। বকেয়া টাকা পাওয়ার যোগ আছে, তবে সেটা আদায় করতে গিয়ে গলা শুকিয়ে যাবে। প্রেমে আজ সত্যবাদী থাকুন, একটা মিথ্যা ধরা পড়লে কপালে শনির দশা নিশ্চিত। রূপচর্চার জন্য আজ বেশ কিছু টাকা গচ্চা যেতে পারে, কিন্তু তাতে মুখ কতটা চকচক করবে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। সন্ধ্যার পর হুট করে মন খারাপ হতে পারে; এক কাপ কড়া চা খান।

মকর

কাজের নেশায় বুঁদ, শরীর বলছে ‘আর না’। আজ আপনার পরিশ্রম দেখে পিঁপড়ারা লজ্জা পাবে। পরিবারে আপনার মতামতের দাম বাড়বে, তবে সেটা শুধু মেনু ঠিক করার ক্ষেত্রেই হতে পারে। তীর্থযাত্রার সুযোগ আসতে পারে, অন্তত পাড়ার মোড়ের মন্দির পর্যন্ত তো বটেই। বেশি ইমোশনাল হবেন না, বিশেষ করে অফিসের গ্রুপ চ্যাটে।

কুম্ভ

মনের ভেতর হাজার প্রশ্ন, উত্তর নেই একটাও। চাকরি বদলানোর চিন্তা আজ মাথায় ঘুরবে, কিন্তু ব্যাংক ব্যালেন্সের দিকে তাকালে সেই চিন্তা কর্পূরের মতো উবে যাবে। বন্ধুদের অবহেলা করবেন না, ওরাই বিপদের সময় চপ-মুড়ি নিয়ে হাজির হবে। ভোরে ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করুন, তাতে ভাগ্য না ফিরলেও শরীর ঠিক থাকবে। কোনো চুক্তিতে সই করার আগে অন্তত তিনবার বানানগুলো চেক করুন।

মীন

স্বপ্নের ঘোরে দিন কাটে, বাস্তবে শুধু ধাক্কা। পরিবারের কোনো বড় সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে আজ কনফিউজড হয়ে যাবেন। আজ আপনার মিষ্টি কথায় কাজ হাসিল হবে, এমনকি আজরাইলকেও বোধহয় কফি খাইয়ে ফেরত পাঠাতে পারবেন। ব্যবসায়িক কাজে বন্ধুদের পূর্ণ সহযোগিতা পাবেন। আজ আপনার মেধা চমকাবে, তবে সেটা যেন শুধু ফেসবুক কুইজেই শেষ না হয়ে যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত